Ajker Patrika

বান্দরবানের ৪ পাহাড়ে যুবদল নেতার কোপ

বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবান সদরে এক্সকাভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছে মাটি। ছবি: আজকের পত্রিকা
বান্দরবান সদরে এক্সকাভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছে মাটি। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানে একসঙ্গে চারটি পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে যুবদলের স্থানীয় নেতা মো. নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এসব পাহাড়ের মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে জেলা শহরের বালাঘাটায় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের জমি ভরাটের কাজে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নাজিমের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলার বালাঘাটা, বাকিছড়া ও থোয়াইংগ্যাপাড়া এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে আটটি ট্রাক ও চারটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে চারটি পাহাড়ের কয়েক লাখ ঘনফুট মাটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসব মাটি বালাঘাটা স্বর্ণমন্দির-সংলগ্ন নির্মাণাধীন ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিডের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের জমি ভরাটে বিক্রি করা হয়েছে।

থোয়াইংগ্যাপাড়ার বাসিন্দা আ প্রু মারমা ও লেমুঝিরির হেলাল জানান, নাজিম থোয়াইংগ্যাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের পাহাড়, বদুরুনেছা বেগমের পাহাড়, বাকিছড়া এলাকার খায়রুর পাহাড় ও লেমুঝিরি ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের পাশের মোজাফফরের পাহাড় কেটেছেন দিনদুপুরে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুযায়ী, পাহাড় কাটা আমলযোগ্য অপরাধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি পাহাড় কাটতে বা নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। যদি কেউ এটি অমান্য করে, তবে তাঁকে অথবা ওই প্রতিষ্ঠানকে দুই বছর কারাদণ্ড অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। ফের একই অপরাধ করলে, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড অথবা ১০ লাখ জরিমানা গুনতে হবে।

থোয়াইংগ্যাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন কান্তি দেবনাথ বলেন, ‘বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় সারা দিন ধরে পাহাড় কাটা হচ্ছে। মাটিবোঝাই ট্রাকগুলো বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে চলাচল করার কারণে বৃষ্টিতে কাঁচা রাস্তা খুব পিচ্ছিল হয়ে যায়। একদিকে এক্সকাভেটর মেশিনের বিকট শব্দে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।’

পাহাড় থেকে মাটি নেওয়ার ট্রাকের চালক মামুন ও সাইফুল ইসলাম রিমন জানান, তিন দিন ধরে তাঁরা মাটি পরিবহন করছেন। প্রতিদিন প্রতি ট্রাক দিয়ে ৪০-৫০ বার মাটি সরানো হচ্ছে।

এক্সকাভেটরচালক জামাল উদ্দিন জানান, বালাঘাটার যুবদল নেতা নাজিম ও পৌর বিএনপির নেতা মামুন পাহাড় থেকে মাটি নিতে বলেছেন। প্রতি ট্রাকে মাটি ভরতে তিনি ১৩০ টাকা করে নিচ্ছেন।

জানতে চাইলে নাজিম বলেন, বিদ্যুৎ গ্রিড উপকেন্দ্রের জমি ভরাটে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে মাটি কেনা হচ্ছে। তিনি পাহাড় কাটার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।

যোগাযোগ করা হলে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, থোয়াইংগ্যাপাড়া এলাকায় পাহাড় কাটায় যাঁরা জড়িত, সবার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত