Ajker Patrika

চকরিয়ায় হত্যা মামলার আসামিকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯: ৩৬
Thumbnail image
দানু মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের চকরিয়ায় দানু মিয়া (৩৯) নামের হত্যা মামলার এক আসামিকে তুলে নিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মুবিনুল ইসলাম (২৩) নামের আরেকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদী রহমান।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামে নেওয়ার পথে পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকায় দানু মিয়ার মৃত্যু হয়। এর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের লালব্রিজ এলাকা থেকে একদল সন্ত্রাসী দানু মিয়াকে তুলে নিয়ে যায়।

দানু মিয়া মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মাহারাপাড়া গ্রামের মৃত কলমদন মিয়ার ছেলে। তিনি আসহাবুল করিম জিহাদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দানু মিয়া, মোবারক আলী ও মুবিন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চকরিয়া পৌরশহরে যাচ্ছিলেন। যখন তাঁদের গাড়ি লালব্রিজ এলাকায় পৌঁছায়, আগে থেকে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা গাড়ি থামিয়ে দানু মিয়া ও মুবিনকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁদের পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সিকদারপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।

চকরিয়া থানার টহল পুলিশ ৯৯৯ সেবায় ফোন পাওয়ার পর সেখানে গিয়ে মোবারককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে বিকেল ৫টার দিকে স্থানীয়রা দানু মিয়া ও মুবিনকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে নেওয়ার পথে পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকায় দানু মিয়ার মৃত্যু হয়।

চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম বলেন, দানু মিয়ার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে কী দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই বলা সম্ভব হবে।

নিহতের মেয়ের জামাই মো. রমিজ রানা দাবি করেছেন, জিহাদ হত্যা মামলায় দানু মিয়া, মুবিন ও মোবারক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছিলেন। তাঁরা লালব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাঁদের গাড়ি থামিয়ে অপহরণ করে পেকুয়া নিয়ে যায়। রানার অভিযোগ, জিহাদ হত্যা মামলার বাদী মকছুদুল করিম বাচ্চু ও সাঈদী রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতারা এই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

নিহত দানু মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আক্তারও একই অভিযোগ করেন, তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে।’

তবে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদী রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, কী ঘটেছে। এ ঘটনায় আমি কোনোভাবেই জড়িত নই।’

২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর কক্সবাজার সিটি কলেজের ছাত্র আসহাবুল করিম জিহাদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত জিহাদের বাবা মকছুদুল করিম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় দানু মিয়াসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুলিশ গুরুতর আহত দানু মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

চকরিয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য দানু মিয়ার লাশ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত