Ajker Patrika

বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২১, ১২: ০৪
বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারি কর্মচারী সমিতি অফিসের দেয়াল ঘেঁষে একটা টেবিল ও কয়েকটি চেয়ার। এসবের মালিক চমেক হাসপাতাল বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতি। এখান থেকেই নির্ধারিত হয় বেসরকারিভাবে রোগী ও লাশ পরিবহনের বিভিন্ন গন্তব্যের ভাড়া। এটা নির্ধারিত ভাড়ার দুই–তিন গুণ।

চমেক হাসপাতালে এ টেবিলটা থেকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সমিতির একজন সদস্য ও চমেকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবায় নিয়োজিত মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, এখানে নেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া একটি চক্রের পকেটে ঢুকছে। ন্যায্য ভাড়া গাড়ির মালিকও পান না।

গত কয়েক দিন বিভিন্ন রোগীর স্বজন, হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়, অ্যাম্বুলেন্সের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। কেউ মারা গেলে মৃতের স্বজনেরা ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য হাসপাতালের দোতলায় ওয়ার্ড মাস্টারের কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। সেখানে দায়িত্বরতরা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য সমিতির টেবিলের লোকজনদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। সমিতির টেবিলের লোকজন ও ওয়ার্ডসংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে ভাড়া নির্ধারিত হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার চমেক হাসপাতালে মারা যাওয়া স্বজনের লাশ নেওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া কররেন মো. সাখাওয়াত হোসেন। তিনি জানান, সাড়ে তিন হাজার টাকা ভাড়া আদায় করে মিরসরাই পর্যন্ত।

সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ভাড়া নির্ধারণ করছেন টেবিলে থাকা কয়েকজন কর্মচারী। তাঁরা মজুরি বাবদ জনপ্রতি মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে পান। নূর মোহাম্মদ নুরু নামে সমিতির এক নেতার চক্র এসবের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য নূর মোহাম্মদ নুরু বলেন, ‘আমি জড়িত নই। সমিতির কয়েক জন সদস্য এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। টেবিলে যারা কাজ করে, আমরা গাড়ির মালিকেরা তাদের নিয়োগ দিয়েছি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি জানা নেই।’

সমিতির ১০৬ জন মালিকের বর্তমানে দেড় শ অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালে রোগী ও লাশ পরিবহন করছে। চমেকে ৮৪টি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অনুমোদন রয়েছে। জানা গেছে, অনুমোদন ছাড়াই বাকি অ্যাম্বুলেন্সগুলো চলছে। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, এখানে অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়েরও অভিযোগ আছে। আজ সমিতির নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত