Ajker Patrika

জলাবদ্ধ স্কুলের মাঠ, ভোগান্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি  
বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া রহিমাবাদ বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। আজ মঙ্গলবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া রহিমাবাদ বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। আজ মঙ্গলবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পানি নিষ্কাশনের কোনো সুব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের এলাকার পানি গড়িয়ে প্রায় সারা বছরই জলাবদ্ধ থাকে বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া রহিমাবাদ বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি। বৃষ্টি বেশি হলে মাঠের পানি শ্রেণিকক্ষ পর্যন্ত তলিয়ে যায়। স্কুলের মাঠ নোংরা পানিতে তলিয়ে থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ।

গত আট বছরের বেশি সময় ধরে স্কুলটিতে এমন জলাবদ্ধতার সমস্যা চলেছে। গত চার বছরে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়েছে। আর গত দুই মাস ধরে জমে থাকা পানি স্কুলের বারান্দা ছুঁইছুঁই করছে।

জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সালমা খাতুন বন্যা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুলের মাঠ অপেক্ষাকৃত নিচু। আশপাশের সমস্ত পানি গড়িয়ে মাঠে জমা হয়। এতে স্কুলের মাঠ ভরে পানি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে যায়। গত আট বছরের বেশি সময় ধরে আমরা এই সমস্যায় রয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হওয়ার ফলে স্কুলের পাশের ড্রেন সড়কের ভেতরে চলে গেছে। এখন পানি নিষ্কাশনের আর কোনো ব্যবস্থা নেই। গত চার বছর ধরে পানি জমার এই সমস্যা প্রকট হয়েছে। আমরা নারী শিক্ষকেরা স্কুলে ঢুকতে পারছি না। ছাত্ররাও পানি মাড়িয়ে স্কুলে আসতে চায় না। এলেও ঝুঁকি থাকে।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রীনা আক্তার বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় আমরা বিপদে পড়েছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও সাহায্যে এগিয়ে আসছেন না। সমস্যা সমাধানে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। ঢাকা অফিস থেকে গত বছর লোকজন এসে পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু সমাধান এখনো পাই নাই।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরিষদে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘পানির ভেতরে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে না পারলেও শিক্ষকদের অবশ্যই আসতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

এ বিষয়ে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাইফুর রহমান বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, শিগগির একটা ব্যবস্থা হবে। প্রকৌশলীসহ স্থানটি পরিদর্শন করে দ্রুত একটা উপায় বের করার চেষ্টা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাজাহানপুরে পিস্তলসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা আটক

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৮
: উদ্ধারকৃত পিস্তল। ছবি: আজকের পত্রিকা
: উদ্ধারকৃত পিস্তল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বেজোড়া এলাকায় পিস্তলসহ স্থানীয় জনগণের হাতে আটক হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা ফেরদৌস করিম সনি। একটি শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে দাওয়াত না পাওয়ার জেরে তিনি গুলি করার চেষ্টা করলে জনতা তাঁকে আটক করে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার বেজোড়া দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে ‘বেজোড়া যুবসংঘ’ শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিল।

আয়োজক কমিটির সদস্য রুবেল হোসেন বলেন, ‘দাওয়াত না পাওয়ায় রাত ১১টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা সনি এসে মোটরসাইকেল আমাদের সাউন্ড বক্সের ওপরে তুলে দেন। তখন উপস্থিত লোকজন বাধা দিলে সনি পাশেই নিজের বাড়িতে গিয়ে পিস্তল হাতে ফিরে এসে আমাকে গুলি করার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় শত শত জনতা সনিকে পিস্তলসহ আটক করে পিটুনি দেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়ার কৈগাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পিস্তলসহ সনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।’

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সনি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধে জড়িত।

ঘটনাস্থলে থাকা কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবু সুফিয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পিস্তলসহ সনিকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। পিস্তলটি সম্ভবত আসল না। পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পৌরসভার বর্জ্যে নদী পরিণত হচ্ছে নর্দমায়

গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৮
পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীতে। সম্প্রতি তোলা ছবি। 	আজকের পত্রিকা
পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীতে। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাঁচকৈড় রসুনহাট, গরুর হাট ও গুরুদাসপুর বাজারঘাট এলাকার আবর্জনা গাড়িতে তুলে এনে নদীর তীরে বা সরাসরি পানিতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু ঘরবাড়ির বর্জ্য নয়, বিভিন্ন কারখানা ও ক্লিনিক থেকে আসা রাসায়নিক বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা-পাইপের বর্জ্যও নন্দকুঁজা নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।

রসুনহাটসংলগ্ন নদীপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরজুড়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফেলা নানান আবর্জনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেসব বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার গাড়িতে করে এনে নদীর ধারে ফেলে রাখেন। এতে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে আশপাশে বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন নদীপারের বাসিন্দা জানান, একসময় এই নদীতে দল বেঁধে গোসল করতেন তাঁরা, মাছ ধরতেন, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা ছিল এটি। এখন নদীতে নামাই যায় না। দূষিত পানিতে শরীর চুলকায়, আগের মতো মাছও আর মেলে না। নদীর প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে, তারা চান, আগের সেই স্বাভাবিক নদী ফিরে আসুক।

জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষায় বহুবার আন্দোলন করেছি, পৌর মেয়রকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম; তবু নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। এখন তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশ দেবেন, যেন নদীতে আর আবর্জনা ফেলা না হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঠান্ডাজনিত রোগে সাত দিনে পাঁচ শিশুর মৃত্যু

মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, সুবর্ণচর (নোয়াখালী) 
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৬
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায়ও ভর্তি রোগীর ভিড়। গতকাল তোলা ছবি। 	আজকের পত্রিকা
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায়ও ভর্তি রোগীর ভিড়। গতকাল তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। এক সপ্তাহে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ শিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে উপজেলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম আট দিনে (১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত) মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৮৪ জনের মধ্যে শিশু ৬৭২ জন। এদের সবাই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই আট দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬১৯টি শিশু। গতকাল সোমবার ভর্তি ছিল ৪৮ জন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নার্সরা ব্যস্ত রোগীর চাপ সামলাতে। শিশু ওয়ার্ডে কথা হয় গৃহবধূ আসমা আক্তারের সঙ্গে। চার দিন ধরে তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে মুনতাহা জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে বাড়িতে রেখে পল্লিচিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা দিলেও জ্বর কমেনি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রেখে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।

আসমা বলেন, ‘বাচ্চাটা চার দিনের জ্বরে কাহিল হয়ে গেছে। ঘাড় তুলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঠান্ডাজনিত রোগ (নিউমোনিয়া) প্রতিদিন অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। এখন ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। শয্যা পাচ্ছি না। বলতে পারছি না কবে সন্তানকে সুস্থ করে বাড়িতে ফিরতে পারব।’

চর আলাউদ্দিনের বাসিন্দা শেফালী আক্তারের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সৈকত ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জোসনার চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। তিনি জানান, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে, আগে বুঝতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর। কিন্তু হাসপাতালে দুই দফায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা চলছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. সোহেল সারওয়ার জানান, সুবর্ণচরের চরাঞ্চল থেকে শিশুরা বেশি আসছে। প্রতিবছরের মতো এ বছর তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগও দেখা দিয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, ‘যে শিশুগুলো মারা যাচ্ছে, বেশির ভাগ নবজাতক ও পাঁচ বছরের মধ্যে। পল্লিচিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে তাদের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হয়, তখন হাসপাতালে আসেন এতে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করছি।’

এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের কাছে তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) জানাতে পারব।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা সেসব শিশুকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাই। অনেক রোগীর অভিভাবক আছেন, জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তখন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে মারা যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাওরের ফসল রক্ষা: বাঁধের কাজে কচ্ছপগতি

  • পিআইসি গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি।
  • শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও।
  • কাজের এই গতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে: বিশেষজ্ঞ
  • ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরুর কথা জানান পাউবো কর্মকর্তা।

বিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ
তাহিরপুরের সাহেবনগর গ্রামের পূর্ব দিকে শনির হাওরের ভয়ংকর একটি ক্লোজার (ভাঙন)। শুক্রবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
তাহিরপুরের সাহেবনগর গ্রামের পূর্ব দিকে শনির হাওরের ভয়ংকর একটি ক্লোজার (ভাঙন)। শুক্রবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুনামগঞ্জের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম যেন চলছে কচ্ছপগতিতে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। শেষ হয়নি জরিপ এবং প্রাক্কলনের কাজও। হাওরের অনেক জায়গা বাঁধ করার উপযোগী মনে হলেও ধীরগতির কারণে যথাসময়ে শেষ না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত শুক্রবার তাহিরপুরের শনির হাওর এবং জামালগঞ্জের হালি হাওর ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গা দিয়ে পানি নামছে নদীতে। অধিকাংশ বাঁধ এলাকায় কাজ শুরুর মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। শনির হাওরের সাহেবনগর, জালালপুর, নয়ানগর, মারালা, ইগ্রামপুর, নিশ্চিন্তপুর, মুরাদনগর, শ্রীপুর হয়ে তাহিরপুর পর্যন্ত যেসব জায়গায় প্রতিবছর বাঁধের কাজ হয়, সেসব জায়গায় বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার মতো কোনো আলামত চোখে পড়েনি। শুধু তা-ই নয়, হালি হাওরের একাংশ ঘুরে একই রকম পরিস্থিতি দেখা গেছে।

হাওর-সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাওরের রাজধানীখ্যাত সুনামগঞ্জ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ওই বোরো ফসল হাতছাড়া হলে দুঃখের সীমা থাকে না এখানকার মানুষের। টেকসই ঝুঁকিমুক্ত বাঁধই পারে এক ফসলি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখতে। এর মধ্যে বাঁধের কাজে ব্যত্যয় ঘটলে গোটা হাওরাঞ্চল ঝুঁকিতে পড়বে।

কথা হয় তাহিরপুরের শনির হাওর পারের নয়ানগর গ্রামের কৃষক বাপ্পি মিয়ার সঙ্গে। বাঁধের প্রাক্কলন-জরিপের কাজ হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরার গেরামের আশপাশে প্রতিবছরই পিআইসিরা বাঁধের কাজ করে। এই বছর জরিপের কাজ এখনো হইছে না, কয়দিনের মধ্যে হয়তো করব। সময় তো চইল্যা যাইতাছে (চলে যাচ্ছে)। তাড়াতাড়ি (দ্রুত) কাজ না করলে তো পরে আমরার দৌড়াদৌড়ি করন (করা) লাগে।’

জানা যায়, ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ হাওর বিপর্যয়ের পর নড়েচড়ে বসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ওই বছর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়। সেই দুর্নীতি ঠেকাতে নতুন কাবিটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। এই নীতিমালার আলোকে বিলুপ্ত হয় আগের ঠিকাদারি প্রথা। হাওরপারের কৃষিজীবী মানুষের সমন্বয়ে পিআইসি গঠন করে বাঁধের কাজ এগিয়ে নেওয়ার নতুন নির্দেশনা জারি করা হয় নীতিমালায়। কিন্তু পুরোনো প্রথাই বলবৎ আছে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে।

নীতিমালায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন; ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার কথা বলা আছে। কিন্তু পিআইসি গঠন দূরের কথা, এখন পর্যন্ত প্রাক্কলন ও জরিপের কাজই শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে কৃষক ও হাওর-সচেতন মানুষের মাঝে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও মেরামতে এ বছর ৬৯০টি পিআইসি গঠন করা হতে পারে। এ কাজে প্রাথমিক বরাদ্দ হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। জেলার ৯৫টি হাওরের মধ্যে বাঁধের কাজ হবে ৫৩টি হাওরে। চলতি বছরে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বাঁধ এলাকায় সংস্কার ও মেরামতের কাজ হবে। ধর্মপাশা ও শাল্লায় বাঁধের কাজ সবচেয়ে বেশি।

শাল্লা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি তরুণ কান্তি দাস বলেন, ‘২০১৭ সালের প্রলয়ংকরী হাওর বিপর্যয়ের পর বড় ধরনের কোনো দুর্যোগ আসেনি। যে কারণে বাঁধ হওয়া না হওয়া নিয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। যদি অকালবন্যা পেয়ে বসে, তাহলে কৃষকের সর্বনাশ হবে। এখনো প্রাক্কলন-জরিপের কাজই চলছে। কাজের এই মন্থরগতি বিপদে ফেলতে পারে হাওরবাসীকে।’

পিআইসি গঠনপ্রক্রিয়া চলমান আছে জানিয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, হাওরে এখন পর্যন্ত ৮৬টি ক্লোজার (বাঁধের বড় ভাঙা) শনাক্ত করা হয়েছে। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলার ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার বাঁধে জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রাক্কলনের কাজও ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত