Ajker Patrika

ব্যানারে সাংসদের নাম নেই, তাই অনুষ্ঠান বর্জন আওয়ামী লীগের

তালতলি (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ২০: ০৭
ব্যানারে সাংসদের নাম নেই, তাই অনুষ্ঠান বর্জন আওয়ামী লীগের

বরগুনার তালতলীতে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি শপথগ্রহণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। ব্যানারে সভাপতি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নাম ছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সব সংগঠন অনুষ্ঠানটি বর্জন করে।

গতকাল বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। এই আয়োজনের আমন্ত্রণপত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান অতিথি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবিরকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানের ব্যানারে তাঁদের নাম ব্যবহার করা হয়নি। শুধু ইউএনও কাওছার হোসেনের নাম সভাপতি হিসেবে ব্যানারে উল্লেখ করা হয়। সকালের অনুষ্ঠানে এই ব্যানার ব্যবহার করা হয়নি। তাই দিনের সব অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠন অংশ নেয়। কিন্তু সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সময় ব্যানার টানানো হলে বিপত্তির শুরু। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখেন, ব্যানারে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির নাম নেই। ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা অনুষ্ঠান বর্জন করেন। এ ছাড়া সকালের অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসন দখল দিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে ইউএনওর আত্মীয় ও স্ত্রীর। আসন না পেয়ে ফিরে আসেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মু. তৌফিকউজ্জামান তনু, তালতলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

এদিকে তালতলী উপজেলা বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের সাবেক দুই সভাপতি সাইফুল ইসলাম মামুন ও আতিকুর রহমান অসিমকে ইউএনওর পাশে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ।

এ বিষয়ে তালতলী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মু. আ মোতালিব বলেন, ‘গতকালের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের অবমূল্যায়ন করেন ইউএনও। এ জন্য আমরাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে চলে আসছি। সংসদ সদস্যের নাম না থাকার বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক।’

উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মু. তৌফিকউজ্জামান তনু বলেন, ‘প্রধান অতিথি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম ব্যানারে না দিয়ে ইউএনও নিজের নাম সভাপতি হিসেবে দেওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠান বর্জন করেছে। কিছু ভিআইপি আসন নির্ধারিত রাখা হয়েছে, তা আবার ইউএনওর স্ত্রী-আত্মীয়রা দখল করে রাখেন। তাই আসন না পেয়ে চলে আসছি। আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠান বর্জন করলেও ছাত্রদলের দুই সাবেক সভাপতিকে পাশে বসিয়ে ইউএনও অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, ‘ব্যানার না দেখে সকালের সব অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় এসেছি। বিকেলের অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগেই খবর পাই, ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান অতিথি হিসেবে রাখা হয়নি। তাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সবাই অনুষ্ঠান বর্জন করে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসন না পেয়ে ফিরে আসার বিষয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন।’

এ বিষয়ে ইউএনও কাওসার হোসেন বলেন, ‘অনুষ্ঠান বর্জনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রধান অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্যের নাম থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি অনুপস্থিত থাকায় কোনো অতিথির নামই লেখা ছিল না। তাই সরকারের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম দেওয়া হয়েছে। বর্জন করলেও কিছু করার নেই। এটা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। তাঁরা যদি মনে করেন রাষ্ট্রের বাইরের কেউ, তাহলে বর্জনের প্রশ্ন আসতে পারে। কে আমার পাশে বসে অনুষ্ঠান দেখেছে, তা আমি কীভাবে বলব! আমি কাউকে চিনি না। তালতলীতে বিএনপি বলতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে চিনি।’

জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাই কোনো মন্তব্য করব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত