Ajker Patrika

কাঠালিয়ায় গাছে তার ঝুলিয়ে বিদ্যুৎ সাপ্লাই, ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

প্রতিনিধি, কাঠালিয়া (ঝালকাঠি) 
কাঠালিয়ায় গাছে তার ঝুলিয়ে বিদ্যুৎ সাপ্লাই, ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জীবন্ত গাছের সঙ্গে খোলা তার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। গ্রামে বছরের পর বছর ধরে বিদ্যুতের এমন সংযোগ বিদ্যমান থাকায় জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছেন এসব এলাকার মানুষ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিম আউরা, বটতলার আনইলবুনিয়া (খালের পূর্বপাড়) জিতনগর, শৌলজালিয়া ইউনিয়নের আমরাতলা বাজার হতে আব্দুল ছোমেদ স্কুল ও মুন্সী বাড়ি পর্যন্ত, বিনাপানি, আমুয়া ইউনিয়নের ছোনউটা ফাজিল মাদ্রাসা এলাকা, মোল্লাখালী ও ধোপা বাড়ি হতে মৃধা বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় জীবন্ত গাছে-গাছে অসংখ্য বিদ্যুতের সংযোগ ও ঝুলন্ত লাইন। কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক তার ঝুলে মাথার ওপর বা রাস্তার মাটির সঙ্গে মিশে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সব এলাকার লোকজন ও পথচারীদের প্রাণহানিসহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। 

জানা যায়, উপজেলার পশ্চিম আউরা, জিতনগর, আমুয়ার ছোনউটা, মোল্লাখালী, ধোপা পাড়া, আমরাতলা বাজার-আব্দুল ছোমেদ স্কুল-মুন্সী বাড়ি ও বিনাপানিসহ পাটিখালঘাটার বিভিন্ন গ্রামে বছরের পর বছর ধরে এই অবস্থা চলে আসছে। এসব এলাকার তিন-চার কিলোমিটার দূরত্বে প্রায় ২০০ পরিবারকে বিদ্যুতের এই সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমুয়া ইউনিয়নে ছোনাউটা গ্রামের ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কো. লি. কাঠালিয়া অফিসের আওতাধীন ৮০টি পরিবারকে জীবন্ত গাছে গাছে বিদ্যুতের তাঁর ঝুলিয়ে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০০৭ সাল শৌলজালিয়ার বীনাপানি-কচুয়া ও দোগনা গ্রামে এক ফেইজ লাইনে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তি ও ঝুঁকিতে রয়েছে ওই সব গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। 

ছোটাউটা ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক ফেরদৌস জমাদ্দার জানান, ২০০৭ সালে নভেম্বরে প্রলয়ংকরী সিডরে বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ লাইন বিধ্বস্ত হয়। পরে স্থানীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে জীবিত গাছে গাছে তার বেঁধে ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ দেন। এলাকাবাসী মনে করেছিলেন এটি সাময়িক সময়ের জন্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের জোর দাবি সত্ত্বেও কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও অবস্থার কোন পরিবর্তন পাননি এলাকাবাসী। 

গাছের সঙ্গে বাঁধা হয়েছে বিদ্যুতের তারএকই গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, `মাঝে মাঝেই এই লাইনে সমস্যা হয়। বিদ্যুতের খুঁটি না থাকার কারণে প্রায়ই তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। কয়েক দিন আগে বাতাসে তার ছিঁড়ে পড়ে যাওয়ায় ফলে দুটি তার মিলে ভোল্টেজ অনেক বেড়ে যায়। ফলে আমাদের এলাকার অনেকের ফ্রিজ, টিভি, পানির মোটর, ফ্যান ও লাইট পুড়ে যায়। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাই আমাদের দাবি অতি দ্রুত যেন লাইনটি গাছে থেকে সরিয়ে খুঁটি দিয়ে মেরামত করা হয়।' 

কাঠালিয়া উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগের (ওজোপাটিকো) আবাসিক প্রকৌশলী দিপক মিস্ত্রি জানান, এটি পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতার কাজ। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে। 

কাঠালিয়া উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগের (ওজোপাটিকো) উপ-সহকারী আবাসিক প্রকৌশলী তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা ও সম্প্রসারণ প্রকল্প কর্তৃক উক্ত লাইনের সংরক্ষণ ও মেরামতের কাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজটি হয়নি। বর্তমানে রেনিভিশন ওয়ার্ক এর মাধ্যমে অতি দ্রুত এসব এলাকার বিদ্যুতের লাইটি মেরামত করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত