Ajker Patrika

বরিশালের বস্তি এলাকা: ভোট এলে কদর বাড়ে, মধ্যরাতে টাকা ওড়ে

সাখাওয়াত ফাহাদ, বরিশাল থেকে
আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, ০৯: ৪৮
Thumbnail image

বরিশাল লঞ্চঘাটের পাশ থেকে নৌকায় চড়ে ওপারের রসুলপুর কলোনিতে যাচ্ছিলেন শরীফ মিয়া। হাতে চারটি পাঙাশ মাছ। হেসে হেসে মাঝিকে বললেন, ‘ডেইলি রাইতে যে টাহা আইয়ে, ওইডি যায় কোম্বে?’ মাঝির জবাব, ‘টাহা আইয়ে খালি শুনি, পহেডে তো ঢোকে না। তাইলে বুজব কেমবায়?’

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের আগের দিন গতকাল রোববার এ ধরনের আলাপই বেশি শোনা গেছে নগরীর আওতাধীন বস্তি এলাকাগুলোয়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল নগরীর ৫, ৬ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কলাপট্টি, রিফিউজি কলোনি, গগন গলি বস্তি, স্টেডিয়াম বস্তি, পলাশপুর কলোনি, রসুলপুরসহ বেশ কয়েকটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার ভোট এবার নির্বাচনে প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে। কারণ, এসব এলাকায় ১০ হাজারের বেশি ভোটার রয়েছেন। তাই প্রার্থীদের বিশেষ নজর এই এলাকাগুলোয়। শেষ মুহূর্তে এসে ভোট কিনতে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ আছে।  

গতকাল দুপুরে শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে ধুন্ধুমার ভোটের আমেজ। চায়ের দোকানগুলোতে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা, ভোটের হিসাব-নিকাশ। নানান সমস্যায় জর্জর এই চরের মানুষ জানিয়েছেন, বিগত ১০ বছরে তাঁরা প্রত্যাশিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।

তবে এসব এলাকার নিম্নবিত্ত ভোটারদের অর্থের বিনিময়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। মাদক ও সন্ত্রাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সিন্ডিকেট করে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন বলে জানান তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ভোটার জানান, রসুলপুরের অধিকাংশ মানুষ নিম্নবিত্ত। তাদের সহজেই অর্থের বিনিময়ে প্রভাবিত করা যায়। এখানে যে বেশি টাকা দেবেন, লোকজন তাঁকেই ভোট দেবেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বরিশাল জেলা শাখার সম্পাদক রফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে  বলেন, ‘আচরণবিধিতে স্পষ্ট বলা আছে, ভোটারদের লোভ, ভয় বা প্রভাবিত করা আচরণবিধি লঙ্ঘন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যারা বস্তিবাসী বা নিম্নবিত্ত, তাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো হয়ে থাকে। তারাও চায় “নগদ নারায়ণ”, আবার প্রার্থীরাও তাদের টাকা দিয়ে সহজেই আকৃষ্ট করতে পারে। পুরো প্রক্রিয়াটা দ্বিপক্ষীয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত