Ajker Patrika

আমতলীতে লাম্পি স্কিন রোগে তিন শতাধিক গরুর মৃত্যু, ওষুধ সংকটে খামারিরা বিপাকে

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি 
গরুর শরীরে গোটা ওঠে, প্রচণ্ড জ্বর হয়। পরে সেসব গোটা ফেটে রক্ত ও পুঁজ বের হয়, একপর্যায়ে গরু মারা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গরুর শরীরে গোটা ওঠে, প্রচণ্ড জ্বর হয়। পরে সেসব গোটা ফেটে রক্ত ও পুঁজ বের হয়, একপর্যায়ে গরু মারা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরগুনার আমতলী উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজের (এলএসডি) ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত তিন মাসে উপজেলায় তিন শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন খামারি ও কৃষকেরা। তাঁরা দ্রুত সরকারি ওষুধ ও ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ দিকে আমতলী উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ দেখা দেয়। মশা-মাছিবাহিত এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার সর্বত্র। কয়েক হাজার গরু ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানিয়েছে, গত তিন মাসে মোট ২৬৫টি গরুর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. আশিষ বাবু বলেন, ‘উপজেলায় অনেক গরু এলএসডিতে আক্রান্ত হয়েছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা কম। এখন পর্যন্ত আমরা ২৬৫টি গরুর চিকিৎসা দিয়েছি। এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন এখনো উৎপাদন হয়নি, ওষুধও পর্যাপ্ত নেই।’

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা জানান, গরুর শরীরে গোটা উঠে প্রচণ্ড জ্বর হয়। পরে সেসব গোটা ফেটে রক্ত ও পুঁজ বের হয়, একপর্যায়ে গরু মারা যায়। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ব্যবস্থাপত্র মিললেও ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না, ফলে বাধ্য হয়ে ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। কৃষকেরা দ্রুত সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ওষুধ ও ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।

লদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষক বজলু মোল্লা ও তাঁর ভাই ফজলু মোল্লা জানান, তাঁদের দুটি বাছুর এলএসডিতে মারা গেছে। একই এলাকার নুর আলম মুসুল্লি বলেন, ‘লাখ টাকার দুটি গরু মারা গেছে। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ব্যবস্থাপত্র পেলেও কোনো ওষুধ মেলেনি।’

পৌর শহরের কবির গাজী বলেন, ‘একটি ষাঁড় ১৫ দিন ধরে এ রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসা করিয়ে কোনো উন্নতি হয়নি।’ খামারি আলমগীর ঘরামী জানান, প্রাণিসম্পদ অফিসে গিয়ে চিকিৎসা নিলেও ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।

হলদিয়া ইউনিয়নের শিবলী শরিফ জানান, গত ১৫ দিনে উত্তর তক্তাবুনিয়া, হলদিয়া, কালীগঞ্জসহ শতাধিক গরু মারা গেছে।

উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, ‘হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর গরুর চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। অনেক গরু হাসপাতালে না এনে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, যার হিসাব আমাদের কাছেও নেই।’

এ বিষয়ে খামারিরা দ্রুত সরকারি পর্যায়ে পর্যাপ্ত ওষুধ ও ভ্যাকসিন সরবরাহের জোর দাবি জানিয়েছেন, যাতে প্রাণিসম্পদের এই সংকট সামাল দেওয়া সম্ভব হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত