Ajker Patrika

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই আমতলীতে বসছে পশুহাট, নিরব উপজেলা প্রশাসন

প্রতিনিধি, আমতলী (বরগুনা) 
স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই আমতলীতে বসছে পশুহাট, নিরব উপজেলা প্রশাসন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার কঠোর লকডাউন দিয়েছেন। সরকারের সেই নির্দেশনা না মেনে প্রভাবশালী একটি মহল আমতলী উপজেলা শহর ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে পশুহাট বসাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই বাজারগুলোতে ভারতীয় সীমান্তবর্তী পশু ব্যবসায়ীরা আসায় ডেলটা ভেরিয়েন্ট ছাড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। অপরদিকে, পশুহাট বসানোর খবর জেনেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন বলেও জানান স্থানীয়রা।

জানা গেছে-আমতলী পৌর শহর, চুনাখালী বাজার, গাজীপুর বন্দর ও কলাগাছিয়া বাজারে উপজেলা সর্ববৃহৎ পশুহাট বসে। প্রত্যেক সপ্তাহে আমতলী পৌরশহরে বুধবার, গাজীপুর বন্দর ও কলাগাছিয়া বাজারে শুক্রবার ও চুনাখালী বাজারে শনিবার এ হাট অনুষ্ঠিত হয়। এ হাটগুলোতে হাজার হাজার পশু এবং মানুষের সমাগম হয়। ফলে কঠোর লকডাউনের মধ্যে ওই হাটগুলো বসানোতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা না মেনে পশু ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে। একটি প্রভাবশালী মহল উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ হাট বসাচ্ছেন। হাটগুলোতে কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না এবং মাস্ক না পরেই গাদাগাদি করে লোকজন দাঁড়িয়ে থাকছেন। ফলে করোনা সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

অপরদিকে ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা যশোর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, খুলনা ও পাবনাসহ এলাকার শতাধিক গরু ব্যবসায়ীরা ওই হাটগুলোতে এসে পশু ক্রয়-বিক্রয় করছেন। ওই গরু ব্যবসায়ীদের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ডেলটা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকেরা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা হাটগুলোতে এসে মাস্ক ছাড়াই অহরহ চলাচল করছে। তাঁদেরকে মাস্ক পড়তে ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বললেও তাঁরা মানছেন না। একটি প্রভাবশালী মহল উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ হাট বসাচ্ছেন। তাই দ্রুত ওই সব হাট ইজারাদারদের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আমতলী পৌর শহরের পশুহাটে আসা কয়েকজন ক্রেতা বলেন, পশুর হাটে প্রবেশের সুযোগ নেই। মানুষ গায়ে গায়ে মিশে গরু দেখাশোনা করছেন। তাঁদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ভয় নেই। বাজার কমিটি স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। অন্যদিকে, প্রশাসনের লোকজন দেখেও না দেখার ভান করছে। ফলে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

আমতলী পৌরসভা সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন বিশ্বাস বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে উপজেলা প্রশাসন ও বাজার কমিটি পশুহাট বসাচ্ছেন। এতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সর্বত্র দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অপরদিকে, ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পশু ব্যবসায়ীরা অহরহ বাজারে এসে পশু ক্রয়-বিক্রয় করছেন। এতে ভারতীয় ডেলটা ভেরিয়েন্ট দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 

আমতলী গরু হাটের ইজারাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, পশুহাট বসাতে মন্ত্রিসভায় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হাট পরিচালনা করছি।

আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট বসানোর নির্দেশনা রয়েছে। তবে হাটে সামাজিক দূরত্ব রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, শতভাগ মাস্ক পরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রবেশ করতে হবে। ক্রেতা-বিক্রেতা ছাড়া অন্য কেউ হাটে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ ছাড়া পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সামাজিক দূরত্ব রেখে বাঁশের বেড়া দিয়ে দিতে হবে বলেও হাট ইজারাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি এসব না মানা হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত