Ajker Patrika

পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী-শাশুড়ি আটক

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
Thumbnail image
আটক মনির খান। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার আমতলীতে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে তিন্নি আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মনির খান (২২) ও শাশুড়ি লাইলি বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার তারিকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গৃহবধূ নিহতের তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, নিহত তিন্নির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে নিহতের স্বামী ও শাশুড়িকে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার চাওড়া চন্দ্রা গ্রামের নিজাম হাওলাদারের মেয়ে তিন্নির সঙ্গে একই উপজেলার তারিকাটা গ্রামের হারুন খানের ছেলে মনির খানের চলতি বছরের এপিল মাসে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মনির খান অটোরিকশা কিনবে বলে টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিন্নি দরিদ্র বাবার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই টাকা না পেয়ে মনির খান স্ত্রী তিন্নির বিরুদ্ধে পরকীয়ার অপবাদ দেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিন্নির বাবা নিজাম হাওলাদার।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিন্নিকে মনির খান পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে তিন্নিকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসেন মনির খান। এ সময় তিন্নিকে মৃত ঘোষণা করেন হাসপাতালের চিকিৎসক মনিরুজ্জামান খান।

হাসপাতালে স্ত্রীর মরদেহ রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ মনির খানকে ও তাঁর মা লাইলি বেগমকে আটক করেছে। আজ বুধবার সকালে নিহত তিন্নির মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে তিন্নির মরদেহ বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় আমতলী থানার হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, মনির খান প্রায়ই স্ত্রী তিন্নিকে বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করতেন।

নিহত তিন্নির বাবা নিজাম হাওলাদার বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবিসহ বিভিন্ন অজুহাতে তিন্নির ওপর নির্যাতন করেছে জামাতা মনির খান ও তাঁর পরিবারের লোকজন। গত ছয় মাস অটোরিকশা কিনবে বলে জামাতা মনির খান আমার মেয়ের কাছে টাকা দাবি করে। টাকা এনে দিতে রাজি না হওয়ায় জামাতা আমার মেয়ের ওপর পরকীয়ার অপবাদ রটনা করেছে। মঙ্গলবার আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

মনির খান বলেন, আমার স্ত্রী তিন্নি আক্তার গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমার অনুপস্থিতে মোবাইলে কথা বলতেছিল। এ নিয়ে আমার সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আমি তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করি। এতে তিন্নি চেয়ার থেকে ঘুরে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক আমি তাঁকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মনিরুজ্জামান খান বলেন, হাসপাতালের আনার আগেই তিন্নি মারা গেছেন। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত