Ajker Patrika

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ক্ষত ১৯ বছর ধরে বয়ে বেড়াচ্ছেন সিদ্দিক

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১৮: ২১
Thumbnail image

১৯ বছর ধরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার পায়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন সিদ্দিক তালুকদার (৫০)। প্রায়ই ব্যথায় কাতরে ওঠেন। তিনি বরগুনার তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। কলারং গ্রামের নুরুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে সিদ্দিক। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় অন্যদের সঙ্গে তিনিও আহত হন। 

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হলে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে সাহায্যের আবেদন করেন সিদ্দিক। তাঁর চাওয়া একটাই—চিকিৎসা করে যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। সিদ্দিক জানান, টাকার অভাবে তিনি চিকিৎসা করাতে পারছেন না। 

সিদ্দিক জানান, ১৯৯৬ সালের দিকে জীবিকার খোঁজে ঢাকায় যান তিনি। রাজধানীতে শুরু করেন রিকশা চালানো। কিশোর বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত সিদ্দিক। আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশের খবর শুনলেই ছুটে যেতেন। এখনো সেই অভ্যাস রয়ে গেছে তাঁর। আওয়ামী লীগের সমর্থন করায় বিএনপি জোট সরকারের আমলে হামলা-মামলার শিকারও হয়েছেন। 

গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিক তালুকদার বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশ হয়। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুরুর পরপরই চারদিকে বিকট শব্দে কানে তালা লেগে যাওয়ার দশা। শুরু হয় মানুষের দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি। গ্রেনেডের স্প্লিন্টার তাঁর পায়ে বিদ্ধ হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। দুই দিন সেখানে চিকিৎসা বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর আর ঢাকায় যাননি। 

নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে সিদ্দিক বলেন, ‘পায়ের স্প্লিন্টার এখন মাংসের সঙ্গে মিশে গেছে। প্রায়ই পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্যের দাবি জানাই। তিনি সাহায্য করলে আমি হয়তো পুরোপুরি সেরে উঠতে পারব।’ 

সিদ্দিকের প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘গ্রেনেড হামলায় সিদ্দিকের আহত হওয়ার খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যাই। ওই হাসপাতালে তাঁর পাশে থেকে সেবা-শুশ্রূষা করেছি।’ 

তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার বলেন, সিদ্দিক পচাকোড়ালিয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিককে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। 

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সমাবেশ আয়োজন করে নিজেরাই শিকার হয়েছিল ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার। সেদিনকার মূল লক্ষ্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও জীবন দিতে হয়েছিল নারীনেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মীকে।

তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে করা এই হামলার তদন্ত নিয়ে অনেক জলঘোলা/// শেষে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে এই হামলার পরিকল্পনাসহ ভয়াবহ সব তথ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত