মীর মহিবুল্লাহ, পটুয়াখালী
রাখাইন জনগোষ্ঠী উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর কুয়াকাটার অন্যতম পুরোনো অধিবাসী। তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিসহ শত শত বছরের ঐতিহ্য। কিন্তু আধুনিকায়ন, অভিবাসন এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের সংস্কৃতির প্রভাবসহ নানা কারণে রাখাইনদের ভাষা ও সংস্কৃতি আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাখাইন ভাষার বিলুপ্তি শুধু এ জনগোষ্ঠীর জন্যই নয়; বরং দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্যও একটি বড় ক্ষতি হবে। নিজেদের ভাষা টিকিয়ে রাখতে পাঠ্যপুস্তকে এর ব্যবহারসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন কুয়াকাটার রাখাইনরা।
রাখাইনরা সাবেক ব্রহ্মদেশ বা বার্মার (বর্তমানে মিয়ানমার) আরাকান রাজ্য থেকে আসা একটি জনগোষ্ঠী। ১৭৮৪ সালের পর তারা আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। একটি বড় অংশ বর্তমান পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এসে বসতি স্থাপন করে। রাখাইনরা এখানে প্রথম বসতি স্থাপন করার সময় সুপেয় পানির অভাব মেটাতে কূপ বা কুয়া খনন করেছিল। সেই কুয়া খনন থেকেই এ জায়গার নাম হয় কুয়াকাটা।
গত কয়েক দশকে কুয়াকাটায় রাখাইন ভাষার ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। একসময় রাখাইনরা নিজেদের মধ্যে মাতৃভাষাতেই কথা বলত; কিন্তু বর্তমানে তাদের শিশুদের মধ্যে এ ভাষার ব্যবহার কমে যাচ্ছে।
স্থানীয় প্রবীণ সমাজসচেতন রাখাইনরা মনে করেন, তাঁদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে মাতৃভাষায় আগ্রহহীনতা বা দুর্বলতার মূল কারণ আধুনিক শিক্ষা ও যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব। বর্তমানে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলা ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক। স্কুলপর্যায়ে কয়েকটি নৃগোষ্ঠীর ভাষায় পাঠদানের ব্যবস্থা থাকলেও তার মধ্যে রাখাইন ভাষা নেই। ফলে রাখাইন শিশুরা স্কুলে যাওয়ার পর তাদের মাতৃভাষার ব্যবহার কমে যায়। বৃহত্তর সমাজে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশায় বাংলার ব্যবহার করতে হয় তাদের। এভাবে নতুন প্রজন্ম রাখাইন ভাষার চর্চা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
কুয়াকাটার গোরা আমখলাপাড়ার পুরোহিত উসুছিথ মহাথেরো বলেন, রাখাইন ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা থাকলেও তা চর্চার সুযোগ নেই বললেই চলে। কুয়াকাটায় রাখাইন ভাষার কোনো স্কুল নেই। তবে পাড়ার মন্দিরে পুরোহিতের মাধ্যমে স্বল্পসংখ্যক শিশু মাতৃভাষায় শিক্ষা করছে। এ ভাষাটির কথ্য ও লিখিত উভয় রূপ সংরক্ষণে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে তা অচিরেই হারিয়ে যাবে।’
গোরা আমখলাপাড়ার মাতব্বর ম্যা থুইন বলেন, ‘আমাদের এই এলাকায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করলে মাতৃভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে রাখাইন শিশুরা নিজেদের ভাষায় পড়াশোনা করতে পারবে। এ ধরনের উদ্যোগ মিয়ানমারে দেখা গেলেও বাংলাদেশে নেই। সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় রাখাইন ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলে এ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে আমাদের ভাষা।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাখাইন ভাষা সংরক্ষণের জন্য সরকারের কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া উচিত। রাখাইন ভাষার স্কুল ও পাঠ্যক্রম চালু করা যেতে পারে। সেখানে রাখাইন ভাষায় সাহিত্য, গান ও নাটক প্রচারের ব্যবস্থা থাকবে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে রাখাইন ভাষার কিছু ব্যবহার নিশ্চিত করা যেতে পারে। রাখাইন ভাষার অভিধান, সাহিত্য ও লোকগাথা ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষণ করা দরকার। এ ছাড়া ভাষাবিদদের গবেষণাকর্ম ও ভাষার প্রচারের জন্য সরকারি অনুদানের মাধ্যমে ভাষাটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো যেতে পারে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘রাখাইন শিশুদের মাতৃভাষা শেখার জন্য বুড্ডিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ৪টি পাঠদানকেন্দ্র চালু রয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় পরিচালিত হয়। আমরা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরি। তবে কুয়াকাটা এলাকায় একটি স্কুল করা যায় কি না, এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে আমরা শিগগিরই উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
রাখাইন জনগোষ্ঠী উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর কুয়াকাটার অন্যতম পুরোনো অধিবাসী। তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিসহ শত শত বছরের ঐতিহ্য। কিন্তু আধুনিকায়ন, অভিবাসন এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের সংস্কৃতির প্রভাবসহ নানা কারণে রাখাইনদের ভাষা ও সংস্কৃতি আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাখাইন ভাষার বিলুপ্তি শুধু এ জনগোষ্ঠীর জন্যই নয়; বরং দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্যও একটি বড় ক্ষতি হবে। নিজেদের ভাষা টিকিয়ে রাখতে পাঠ্যপুস্তকে এর ব্যবহারসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন কুয়াকাটার রাখাইনরা।
রাখাইনরা সাবেক ব্রহ্মদেশ বা বার্মার (বর্তমানে মিয়ানমার) আরাকান রাজ্য থেকে আসা একটি জনগোষ্ঠী। ১৭৮৪ সালের পর তারা আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। একটি বড় অংশ বর্তমান পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এসে বসতি স্থাপন করে। রাখাইনরা এখানে প্রথম বসতি স্থাপন করার সময় সুপেয় পানির অভাব মেটাতে কূপ বা কুয়া খনন করেছিল। সেই কুয়া খনন থেকেই এ জায়গার নাম হয় কুয়াকাটা।
গত কয়েক দশকে কুয়াকাটায় রাখাইন ভাষার ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। একসময় রাখাইনরা নিজেদের মধ্যে মাতৃভাষাতেই কথা বলত; কিন্তু বর্তমানে তাদের শিশুদের মধ্যে এ ভাষার ব্যবহার কমে যাচ্ছে।
স্থানীয় প্রবীণ সমাজসচেতন রাখাইনরা মনে করেন, তাঁদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে মাতৃভাষায় আগ্রহহীনতা বা দুর্বলতার মূল কারণ আধুনিক শিক্ষা ও যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব। বর্তমানে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলা ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক। স্কুলপর্যায়ে কয়েকটি নৃগোষ্ঠীর ভাষায় পাঠদানের ব্যবস্থা থাকলেও তার মধ্যে রাখাইন ভাষা নেই। ফলে রাখাইন শিশুরা স্কুলে যাওয়ার পর তাদের মাতৃভাষার ব্যবহার কমে যায়। বৃহত্তর সমাজে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশায় বাংলার ব্যবহার করতে হয় তাদের। এভাবে নতুন প্রজন্ম রাখাইন ভাষার চর্চা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
কুয়াকাটার গোরা আমখলাপাড়ার পুরোহিত উসুছিথ মহাথেরো বলেন, রাখাইন ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা থাকলেও তা চর্চার সুযোগ নেই বললেই চলে। কুয়াকাটায় রাখাইন ভাষার কোনো স্কুল নেই। তবে পাড়ার মন্দিরে পুরোহিতের মাধ্যমে স্বল্পসংখ্যক শিশু মাতৃভাষায় শিক্ষা করছে। এ ভাষাটির কথ্য ও লিখিত উভয় রূপ সংরক্ষণে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে তা অচিরেই হারিয়ে যাবে।’
গোরা আমখলাপাড়ার মাতব্বর ম্যা থুইন বলেন, ‘আমাদের এই এলাকায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করলে মাতৃভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে রাখাইন শিশুরা নিজেদের ভাষায় পড়াশোনা করতে পারবে। এ ধরনের উদ্যোগ মিয়ানমারে দেখা গেলেও বাংলাদেশে নেই। সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় রাখাইন ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলে এ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে আমাদের ভাষা।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক মো. মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাখাইন ভাষা সংরক্ষণের জন্য সরকারের কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়া উচিত। রাখাইন ভাষার স্কুল ও পাঠ্যক্রম চালু করা যেতে পারে। সেখানে রাখাইন ভাষায় সাহিত্য, গান ও নাটক প্রচারের ব্যবস্থা থাকবে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে রাখাইন ভাষার কিছু ব্যবহার নিশ্চিত করা যেতে পারে। রাখাইন ভাষার অভিধান, সাহিত্য ও লোকগাথা ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষণ করা দরকার। এ ছাড়া ভাষাবিদদের গবেষণাকর্ম ও ভাষার প্রচারের জন্য সরকারি অনুদানের মাধ্যমে ভাষাটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো যেতে পারে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘রাখাইন শিশুদের মাতৃভাষা শেখার জন্য বুড্ডিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ৪টি পাঠদানকেন্দ্র চালু রয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় পরিচালিত হয়। আমরা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরি। তবে কুয়াকাটা এলাকায় একটি স্কুল করা যায় কি না, এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে আমরা শিগগিরই উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
পার্বত্য খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী পানছড়ির বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এতে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি চক্র এই পাহাড় কাটায় জড়িত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
৫ ঘণ্টা আগেমৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার। তবে তীব্র জনবল-সংকটে এখানে চিকিৎসাসেবা পাওয়া দুরূহ। সাতজন চিকিৎসা কর্মকর্তা (মেডিকেল অফিসার) থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র একজন। ২৩ চিকিৎসকের জায়গায় রয়েছেন ১০ জন। চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা
৫ ঘণ্টা আগেনানা সমস্যায় জর্জরিত দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভা। দীর্ঘদিন ধরে পৌর এলাকার রাস্তা ও ড্রেনের নাজুক অবস্থা, নেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন। ফলে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে পৌরবাসীর। নাগরিকদের অভিযোগ, নামে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও বাড়েনি সেবার মান। তাই রাস্তা ও ড্রেনগুলো দ্রুত সংস্ক
৫ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ৫ কোটির বেশি টাকায় নেওয়া শতাধিক প্রকল্পে লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার ও উপজেলা প্রকৌশলী আয়েশা আখতার নিয়ম-বহির্ভূতভাবে প্রকল্প গ্রহণ ও ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে এই অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি আড়াল করতে প্রকল্পের কাগজপত্র
৫ ঘণ্টা আগে