Ajker Patrika

মেহেন্দীগঞ্জে মহিলা দলের সভায় ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

বরিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১: ৩৭
Thumbnail image

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে মহিলা দলের কর্মিসভায় স্থানীয় ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌর এলাকার ৯ নম্বর চুনারচর ওয়ার্ডের শুক্কুর ব্যাপারীর বাড়ির উঠানে আয়োজিত কর্মিসভায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

মহিলা দল অভিযোগ করেছে, হামলাকারীরা নারী কর্মীদের ন্যক্কারজনকভাবে লাঞ্ছিত ও গালিগালাজ করেছে। ফোন ও স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়েছে। 

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে। 

হামলায় আহতরা হলেন—মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও উপজেলা মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদা বেগম বিউটি, রাবেয়া বেগম, শিল্পী বেগম, নগর মহিলা দলের সাবেক সভাপতি শরীফ তাসলিমা কালাম কলি, হোসনে আরা বেবি, আরজু বেগম, সাবেক ছাত্রদল নেতা নূরে আলম বাবু, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মামুন রশিদ জমাদ্দার, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন পোদ্দারসহ ১০ জন। 
 
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টায় মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার স্টিমারঘাট-সংলগ্ন শুক্কুর ব্যাপারীর বাড়ির উঠানে উপজেলা মহিলা দলের কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। সভা শুরুর পরপরই ২০-২৫ জন যুবক অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা সভায় অংশগ্রহণকারী মহিলা দলের নেতাকর্মীদের পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটায়। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 
 
বরিশাল উত্তর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক হোসনে আরা বেবি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি বাড়িতে সভায় অংশ নেন শতাধিক নারী। হঠাৎ একদল পুরুষ এসে নারীদের ওপর চড়াও হন। তাঁরা নেত্রীদের গায়ে ন্যক্কারজনকভাবে হাত দিয়েছেন এবং গালিগালাজ করেছেন। তাঁরা সভানেত্রী মুমুর মোবাইল ও সোনার চেইন ছিনিয়ে নিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের লোকজন নারীকে চরমভাবে অসম্মান করেছেন।’
 
কর্মিসভার সভাপতি মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক বিলকিস বেগম বলেন, ‘স্থানীয় ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা আকস্মিক হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে সভা বানচাল করে দেন। এ সময় জেলা থেকে আসা নারী নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় নারীদের লাঞ্ছিত ও রক্তাক্ত জখম করা হয়।’

হামলায় আহত মহিলা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদা বেগম বিউটি বলেন, মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর শ্রমিক লীগের সভাপতি আমির চৌকিদারের নেতৃত্বে উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার, পৌর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাম্বু রফিক, মো. রাকিব, আলীসহ ২০-২৫ জন এই হামলায় জড়িত। তাঁরা সবাই স্থানীয় সাংসদ পঙ্কজ নাথের অনুসারী। 

তবে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘মহিলা দলের দুই গ্রুপে ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে। তাঁরা নিজেরাই এই হামলা করেছেন। এ বিষয়ে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত নন।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উত্তর জেলা মহিলা দলের সভাপতি শায়লা শারমিন মিমু বলেন, নারীদের ওপর এমন ন্যক্কারজনক হামলা করা হয়েছে। যেভাবে নারীদের মারধর করা হয়েছে, তা বর্ণনা করার মতো নয়। 

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথের ঘনিষ্ঠ সহচর মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. খোরশেদ আলম ভুলু বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নন। মেহেন্দীগঞ্জে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেন্দীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওনারা যদি কারও বাসায় বসে লোকজন নিয়ে সভা করেন, সেই সভায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ঝামেলা হয়, তাহলে ওসি হিসেবে তাঁর কিছুই করার নেই।’ মেহেন্দীগঞ্জে মহিলা দল নামে কোনো রাজনৈতিক দল সভা করেছে সেটাই তাঁর জানা নেই বলেও উল্লেখ করেন ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত