Ajker Patrika

খুলনা বিভাগে করোনায় মৃত্যু ২৭০০ ছাড়াল, টিকা কেন্দ্রে উপেক্ষিত স্বাস্থ্য বিধি

প্রতিনিধি, খুলনা
খুলনা বিভাগে করোনায় মৃত্যু ২৭০০ ছাড়াল, টিকা কেন্দ্রে উপেক্ষিত স্বাস্থ্য বিধি

খুলনা বিভাগে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ২৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৭৫৭ জন। আর এই নিয়ে বিভাগে এই পর্যন্ত মারা গেছেন দুই হাজার ৭০৬ জন। আর আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ১৬২ জন। 

এ দিকে করোনা ভ্যাকসিন কেন্দ্রে মানা হচ্ছে না ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি। টিকা দিতে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে মানুষদের। কেন্দ্র ও বুথ সংখ্যা কম থাকার কারণে এই ভোগান্তি হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে আজ মঙ্গলবার থেকে থাকছে না লকডাউন। আর এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। 

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, খুলনা জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪৬ জনের। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৫ হাজার ২৫২ জনের। মারা গেছেন ৬৮৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ২০ হাজার ৫২৩ জন। 

বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ছয় হাজার ৫৮১ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৮৯৯ জন। 

সাতক্ষীরায় নতুন শনাক্ত ৪৭ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত ছয় হাজার ১৭৫ জন এবং মারা গেছেন ৮৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচ হাজার জন। 

যশোরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৩৯ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২০ হাজার ১৫ জন। মোট মারা গেছেন ৪০৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ২৯৩ জন। 

 ২৪ ঘণ্টায় নড়াইলে নতুন শনাক্ত ৪৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত চার হাজার ৪৫৮ জন। মোট মারা গেছেন ১০০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৫৩৭ জন। 

মাগুরায় করোনায় নতুন শনাক্ত ৮০ জন। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৬০৬ জন। মোট মারা গেছেন ৭৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ২৮৯ জন। 

ঝিনাইদহে নতুন শনাক্ত ৩৭ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ২৮০ জনের। মোট মারা গেছেন ২৩৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৪৩০ জন। 

কুষ্টিয়ায় করোনায় নতুন শনাক্ত ১৬৬ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ১১৪ জনের। মোট মারা গেছেন ৬৪৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৬১৬ জন। 

চুয়াডাঙ্গায় করোনায় নতুন শনাক্ত ২৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৩৮৪ জনের। মোট মারা গেছেন ১৮০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৭৩৭ জন। 

মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছেন চার হাজার ২৯৭ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৬১০ জন। 

এ দিকে খুলনার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল এবং নৌ বাহিনীর হাসপাতালে করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল নগরীর সদর এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেওয়ার দীর্ঘ লাইন গিয়ে দেখা যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গা ঘেঁষে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আগ্রহীদের। ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউই। 

খুলনা জেনারেল হাসপাতালে কথা হয় মো. মুরাদ হোসেন নামে একজন বলেন, টিকা নিতে তিনি সকাল সাড়ে ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সাড়ে ১১টা পার হলেও তিনি টিকা নিতে পারেননি। একটি লাইন না করে যদি একাধিক লাইন এবং বুথ হতো তাহলে হয়তো ভোগান্তি কমতো। 

এ দিকে সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, লোকবল সংকটের কারণে কেন্দ্র ও বুথ বৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী কেন্দ্র বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে। টিকা দিতে যারা আসছেন তাঁদের উচিত স্বাস্থ্যবিধি মানা। স্বাস্থ্য বিধি না মানলে সকলের বিপদ। 

অপরদিকে আগামীকাল থেকে লকডাউন থাকছে না। আর তাই অন্যান্য দিনের তুলনায় মঙ্গলবার নগরীতে যান চলাচল ছিল বেশি। ছিল মানুষের উপস্থিতিও। আর তা নিয়েই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। 

এ প্রসঙ্গে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর মানুষ সচেতন না হলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। তিনি সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত