আব্দুর রহমান

একটা সময় পশ্চিমা বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সৌদি আরবের পরিচিতি ছিল ‘মূল্যবোধ বিবর্জিত’ এক রাষ্ট্র হিসেবে। একসময় দেশটিকে বিশ্ব থেকে ‘একঘরে’ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই সৌদিই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে একধরনের লুকোচুরিপূর্ণ মনোভাব দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) সঙ্গে পশ্চিমা নেতাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। ঢাক গুড়গুড় শুরু হয় তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে। সেই তালিকায় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি এমবিএসকে খাসোগি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলেও অভিযোগ করেছিলেন।
ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানির সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র ও বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব দেশটির জন্য অন্যতম ভরসা হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে মূল কারিগর একজনই—এমবিএস। বাইডেন কি সম্পর্কের উন্নয়ন করতে গিয়ে তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে আসবেন?
যদিও বাইডেন বলেছেন, তিনি তাঁর অবস্থান বদলাবেন না এবং তিনি সৌদি আরবে যাচ্ছেন দেশটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে; কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে নয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বাইডেন বলেছিলেন, ‘আমি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি না। আমি একটি আন্তর্জাতিক আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছি এবং মোহাম্মদ বিন সালমান এই আলোচনার একটি অংশ হতে যাচ্ছেন।’
বাইডেনের এই কৌশলী বক্তব্য তাঁর অসহায় অবস্থা লুকাতে পারেনি। জ্বালানি ও নিরাপত্তা ইস্যু এই তিক্ত স্মৃতি ভুলে আবারও মৈত্রীর পথে হাঁটতে অনেকটা বাধ্য করেছে বাইডেন প্রশাসনকে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা তাঁকে সৌদি ইস্যুতে নমনীয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সৌদি ইস্যুতে বাইডেন এতটা অসহায় কেন? পুরোনো মৈত্রী পুনঃস্থাপন তো কোনো দোষের বিষয় নয়। তাহলে? হ্যাঁ, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নির্বাচন-পূর্ব জো বাইডেনের নানা বক্তব্য, ট্রাম্প জমানায় ডোনাল্ড ট্রাম্প, জ্যারেড কুশনারসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিন সালমানের সম্পর্ক নিয়ে করা নানা মন্তব্য, জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমবিএসকে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতিসহ নানা বিষয়। বাইডেন সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন। এর সঙ্গে ইসরায়েলের জেরুজেলেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের প্রসঙ্গ এবং সে ঘটনায় বাইডেনের অবস্থানকে স্মরণে আনলে এবারের সফর নিয়ে তাঁর অস্বস্তির কারণটি বোঝা যাবে। কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি এমনই যে, বাইডেন নাচার হয়ে পড়েছেন।
জো বাইডেন শুক্রবার দেড় দিনের সফরে সৌদি আরবে পৌঁছান। সফরের প্রথম দিনেই বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকের কথা আছে। চলমান আন্তর্জাতিক সংকটের মধ্যে সম্পর্ক ঢেলে সাজানোই বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী ও শীর্ষ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশটির সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা ক্রমেই বাড়ছে। রাশিয়ার সঙ্গে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের আগামী ৩ আগস্ট বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওপেক প্লাসের অঘোষিত নেতা যে আবার সৌদি আরব। এই অবস্থায় বাইডেন কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাকব সুলিভান মনে করেন, সৌদি আরব জ্বালানি তেল সরবরাহ বাড়াতে সম্মত হতে সময় নেবে। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির হার চার দশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়ানো জরুরি, কিন্তু খুব দ্রুতই এর সমাধান হবে না বলে মনে হচ্ছে।’
 মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক থাকলেও ইসরায়েলের পর দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ধরা হয় সৌদি আরবকে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই অঞ্চলের কোনো দেশই রাশিয়ার ওপর নিষেধজ্ঞা দেয়নি। বরং জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও সৌদি নেতৃত্বাধীন জ্বালানি তেল উত্তোলনকারীদের সংগঠন ‘ওপেক প্লাসকে’ বেশি তেল উত্তোলনে সম্মত করানো যায়নি। উল্টো রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে লেনদেন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি ও অঞ্চলটির দু-একটি দেশ।
মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক থাকলেও ইসরায়েলের পর দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ধরা হয় সৌদি আরবকে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই অঞ্চলের কোনো দেশই রাশিয়ার ওপর নিষেধজ্ঞা দেয়নি। বরং জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও সৌদি নেতৃত্বাধীন জ্বালানি তেল উত্তোলনকারীদের সংগঠন ‘ওপেক প্লাসকে’ বেশি তেল উত্তোলনে সম্মত করানো যায়নি। উল্টো রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে লেনদেন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি ও অঞ্চলটির দু-একটি দেশ। 
এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নিজ স্বার্থেই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন জরুরি। কিন্তু সৌদি আরব কি এতে সম্মত হবে? কিংবা মোহাম্মদ বিন সালমান প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও বাইডেনের যে অতীত মনোভাব, তা কি এই এক সাক্ষাতেই বদলে যাবে? এর উত্তর সম্ভবত ‘না’। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত সৌদি রাষ্ট্রদূত রীমা বিনতে বন্দর আল-সৌদ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দরকার, আমাদের দরকার নিরাপত্তার। তার মানে এই নয় যে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে স্রেফ “তেলের বিনিময়ে নিরাপত্তা” হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা দ্রুত যেভাবে বদলাচ্ছে, তাতে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ভূমিকা আছে।’
সৌদি বাইডেনের দূতিয়ালিতে ইসরায়েলি বিমানের জন্য আকাশসীমা খুলে দিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেও সৌদির তরফ থেকে বাইডেনের সফর নিয়ে অতটা উচ্ছ্বসিত মনোভাব না দেখানোয় এটা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে দেশটি, আরও নির্দিষ্ট করে বললে এমবিএস ‘নরম বাইডেন’ দেখতে চান।
সৌদি কূটনীতিক রিমা বিনতে বন্দর আল-সৌদের কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে, সৌদি আরবের চাহিদা নিরাপত্তার বাইরে আরও বেশি কিছু। বেশি কিছু কী, তা এখনই স্পষ্ট না হলেও ধারণা করা যেতে পারে, বিশ্বের তেলের বাজারে আধিপত্য এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে নেতৃত্বের বিষয়টি সামনে আসতে পারে। আর এসব বিষয় যদি যুক্তরাষ্ট্রকে পূরণ করতে হয়, তবে বাইডেন নাচতে নেমে ঘোমটা দিলে চলবে না। তাঁকে ঘোমটা খুলেই নাচতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন ও রয়টার্স

একটা সময় পশ্চিমা বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সৌদি আরবের পরিচিতি ছিল ‘মূল্যবোধ বিবর্জিত’ এক রাষ্ট্র হিসেবে। একসময় দেশটিকে বিশ্ব থেকে ‘একঘরে’ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সেই সৌদিই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে একধরনের লুকোচুরিপূর্ণ মনোভাব দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদির ডি-ফ্যাক্টো শাসক মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) সঙ্গে পশ্চিমা নেতাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। ঢাক গুড়গুড় শুরু হয় তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে। সেই তালিকায় ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি এমবিএসকে খাসোগি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলেও অভিযোগ করেছিলেন।
ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানির সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র ও বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব দেশটির জন্য অন্যতম ভরসা হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে মূল কারিগর একজনই—এমবিএস। বাইডেন কি সম্পর্কের উন্নয়ন করতে গিয়ে তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে আসবেন?
যদিও বাইডেন বলেছেন, তিনি তাঁর অবস্থান বদলাবেন না এবং তিনি সৌদি আরবে যাচ্ছেন দেশটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে; কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে নয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বাইডেন বলেছিলেন, ‘আমি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি না। আমি একটি আন্তর্জাতিক আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছি এবং মোহাম্মদ বিন সালমান এই আলোচনার একটি অংশ হতে যাচ্ছেন।’
বাইডেনের এই কৌশলী বক্তব্য তাঁর অসহায় অবস্থা লুকাতে পারেনি। জ্বালানি ও নিরাপত্তা ইস্যু এই তিক্ত স্মৃতি ভুলে আবারও মৈত্রীর পথে হাঁটতে অনেকটা বাধ্য করেছে বাইডেন প্রশাসনকে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা তাঁকে সৌদি ইস্যুতে নমনীয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সৌদি ইস্যুতে বাইডেন এতটা অসহায় কেন? পুরোনো মৈত্রী পুনঃস্থাপন তো কোনো দোষের বিষয় নয়। তাহলে? হ্যাঁ, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নির্বাচন-পূর্ব জো বাইডেনের নানা বক্তব্য, ট্রাম্প জমানায় ডোনাল্ড ট্রাম্প, জ্যারেড কুশনারসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিন সালমানের সম্পর্ক নিয়ে করা নানা মন্তব্য, জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমবিএসকে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতিসহ নানা বিষয়। বাইডেন সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন। এর সঙ্গে ইসরায়েলের জেরুজেলেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের প্রসঙ্গ এবং সে ঘটনায় বাইডেনের অবস্থানকে স্মরণে আনলে এবারের সফর নিয়ে তাঁর অস্বস্তির কারণটি বোঝা যাবে। কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি এমনই যে, বাইডেন নাচার হয়ে পড়েছেন।
জো বাইডেন শুক্রবার দেড় দিনের সফরে সৌদি আরবে পৌঁছান। সফরের প্রথম দিনেই বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকের কথা আছে। চলমান আন্তর্জাতিক সংকটের মধ্যে সম্পর্ক ঢেলে সাজানোই বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী ও শীর্ষ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশটির সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা ক্রমেই বাড়ছে। রাশিয়ার সঙ্গে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের আগামী ৩ আগস্ট বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওপেক প্লাসের অঘোষিত নেতা যে আবার সৌদি আরব। এই অবস্থায় বাইডেন কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাকব সুলিভান মনে করেন, সৌদি আরব জ্বালানি তেল সরবরাহ বাড়াতে সম্মত হতে সময় নেবে। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতির হার চার দশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্বালানি তেলের সরবরাহ বাড়ানো জরুরি, কিন্তু খুব দ্রুতই এর সমাধান হবে না বলে মনে হচ্ছে।’
 মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক থাকলেও ইসরায়েলের পর দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ধরা হয় সৌদি আরবকে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই অঞ্চলের কোনো দেশই রাশিয়ার ওপর নিষেধজ্ঞা দেয়নি। বরং জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও সৌদি নেতৃত্বাধীন জ্বালানি তেল উত্তোলনকারীদের সংগঠন ‘ওপেক প্লাসকে’ বেশি তেল উত্তোলনে সম্মত করানো যায়নি। উল্টো রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে লেনদেন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি ও অঞ্চলটির দু-একটি দেশ।
মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক থাকলেও ইসরায়েলের পর দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ধরা হয় সৌদি আরবকে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই অঞ্চলের কোনো দেশই রাশিয়ার ওপর নিষেধজ্ঞা দেয়নি। বরং জাতিসংঘসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও সৌদি নেতৃত্বাধীন জ্বালানি তেল উত্তোলনকারীদের সংগঠন ‘ওপেক প্লাসকে’ বেশি তেল উত্তোলনে সম্মত করানো যায়নি। উল্টো রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে লেনদেন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি ও অঞ্চলটির দু-একটি দেশ। 
এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নিজ স্বার্থেই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন জরুরি। কিন্তু সৌদি আরব কি এতে সম্মত হবে? কিংবা মোহাম্মদ বিন সালমান প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও বাইডেনের যে অতীত মনোভাব, তা কি এই এক সাক্ষাতেই বদলে যাবে? এর উত্তর সম্ভবত ‘না’। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত সৌদি রাষ্ট্রদূত রীমা বিনতে বন্দর আল-সৌদ রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দরকার, আমাদের দরকার নিরাপত্তার। তার মানে এই নয় যে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে স্রেফ “তেলের বিনিময়ে নিরাপত্তা” হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা দ্রুত যেভাবে বদলাচ্ছে, তাতে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ ভূমিকা আছে।’
সৌদি বাইডেনের দূতিয়ালিতে ইসরায়েলি বিমানের জন্য আকাশসীমা খুলে দিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেও সৌদির তরফ থেকে বাইডেনের সফর নিয়ে অতটা উচ্ছ্বসিত মনোভাব না দেখানোয় এটা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে দেশটি, আরও নির্দিষ্ট করে বললে এমবিএস ‘নরম বাইডেন’ দেখতে চান।
সৌদি কূটনীতিক রিমা বিনতে বন্দর আল-সৌদের কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে, সৌদি আরবের চাহিদা নিরাপত্তার বাইরে আরও বেশি কিছু। বেশি কিছু কী, তা এখনই স্পষ্ট না হলেও ধারণা করা যেতে পারে, বিশ্বের তেলের বাজারে আধিপত্য এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে নেতৃত্বের বিষয়টি সামনে আসতে পারে। আর এসব বিষয় যদি যুক্তরাষ্ট্রকে পূরণ করতে হয়, তবে বাইডেন নাচতে নেমে ঘোমটা দিলে চলবে না। তাঁকে ঘোমটা খুলেই নাচতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন ও রয়টার্স


ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সম্প্রতি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে এখন তাঁর দেশের লাখো মানুষ অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত। গত আগস্টে মাদুরো বলেন, তাঁর সরকার আধা সামরিক বাহিনীর ৪৫ লাখ সদস্যকে ‘বলিভারিয়ান মিলিশিয়া’ নামে সক্রিয় করেছে।
২ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় ফিরবে। তাঁর এই ঘোষণা দেশটির দীর্ঘদিনের নীতিতে এক বিশাল পরিবর্তন। ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যেহেতু অন্যান্য দেশগুলোও পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমিও অন্যদের সঙ্গে সমানতাল
১১ ঘণ্টা আগে
বিশ্ব রাজনীতিতে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শীতল যুদ্ধের পর বিশ্বে যে পারমাণবিক ভারসাম্য তৈরি হয়েছিল, তা এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
১ দিন আগে
বিরল খনিজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের এই টানাপোড়েন আগেও ছিল। চীন বহু বছর ধরে তার বৃহত্তর শিল্পনীতির অংশ হিসেবে এই খনিজগুলোর ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে চীনের কৌশলগত বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার বিপরীতে ট্রাম্প প্রশাসনও পাল্টা খেলায় নেমেছে।
১ দিন আগেদ্য ন্যাশনাল ইন্টারেস্টের প্রতিবেদন
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সম্প্রতি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে এখন তাঁর দেশের লাখো মানুষ অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত। গত আগস্টে মাদুরো বলেন, তাঁর সরকার আধা সামরিক বাহিনীর ৪৫ লাখ সদস্যকে ‘বলিভারিয়ান মিলিশিয়া’ নামে সক্রিয় করেছে। তাঁদের মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে তিনি আবার দাবি করেছেন, অন্তত ৩ মিলিয়ন বা ৩০ লাখ ভেনেজুয়েলান নাগরিক এরই মধ্যে অস্ত্র হাতে নিয়েছেন।
২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের আগে যেমন সাদ্দাম হোসেন তাঁর ফেদাইন বাহিনী গঠন করেছিলেন, তেমনই এবার মাদুরোও আগেভাগে তাঁর মিলিশিয়াদের প্রস্তুত করছেন। তবে সাদ্দামের তুলনায় মাদুরোর বাহিনীর সদস্যসংখ্যা অনেক বেশি।
তবে সিবিএস নিউজ বলছে, মাদুরোর দাবি অতিরঞ্জিত। আসলে সক্রিয় মিলিশিয়া সদস্যসংখ্যা ৩ লাখ ৪৩ হাজারের মতো, যা সাদ্দামের অনানুষ্ঠানিক বাহিনীর চেয়ে বেশি হলেও মাদুরোর ঘোষণার তুলনায় অনেক কম।
কারাকাস জানে, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য শুধু মাদকবিরোধী অভিযান নয়, মার্কিন আক্রমণ হলে সেটি আসলে পূর্ণাঙ্গ শাসন পরিবর্তনের জন্যই হবে। এ কারণেই মাদুরো এখন রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। মস্কো ভেনেজুয়েলাকে বিপুল অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে, এমনকি ওয়াগনার গ্রুপের প্রায় ২০০ ভাড়াটে সেনা দেশটিতে পাঠানো হয়েছে।

এখানে প্রশ্ন উঠেছে, এই বলিভারিয়ান মিলিশিয়ারা আদৌ মার্কিন বাহিনীর জন্য হুমকি কি না। আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণে সমৃদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হলে তাদের টিকতে পারা কঠিন। তবে গেরিলা ধাঁচের যুদ্ধ, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মিলিশিয়া বাহিনী এবং ভূপ্রকৃতি মার্কিন অভিযানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অনেক ভেনেজুয়েলান অবশ্য যুদ্ধের আহ্বানে সাড়া দিতে অনাগ্রহী। ফলে মাদুরোর ‘অস্ত্র ধারণের ডাক’ কতটা বাস্তবে রূপ পাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তবু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিষয়টি সহজ নয়, শাসক পরিবর্তন করতে গেলে দেশ মেরামতের দায়ভারও নিতে হবে। তাই ইরাকের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ট্রাম্পের লক্ষ্য পশ্চিম গোলার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি মনরো নীতির পুনরুত্থান চান, অর্থাৎ পশ্চিম গোলার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব নিশ্চিত করা। তাঁর মতে, চীন, রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই ওয়াশিংটনের বড় মাথাব্যথা।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, মাদুরো সরকারের পতনের পর ভেনেজুয়েলা যদি চীন বা রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে।
ভেনেজুয়েলার জঙ্গলে যুদ্ধ করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হবে। দেশটির সেনারা মূলত মরুভূমি বা ইউরোপীয় বনাঞ্চলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বলিভিয়ার ভূপ্রকৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই অভিযান হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতা দেবে, তবে তা কতটা সফল হবে, তা এখনই বলা কঠিন।
বেশির ভাগ বিশ্লেষক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র সহজে মাদুরোর বাহিনীকে পরাজিত করতে পারবে; কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী গেরিলা বিদ্রোহই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—ফলে পরিস্থিতি ইরাকের মতো হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, মাদুরোর ‘যুদ্ধের আহ্বান’ জনগণের মধ্যে খুব একটা সাড়া জাগায়নি।
যাহোক, ট্রাম্পের উদ্দেশ্য স্পষ্ট, আমেরিকার প্রভাব পুনরুদ্ধার করা। তবে পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এ পথে হেঁটে সত্যিই কি পশ্চিম গোলার্ধে স্থিতিশীলতা আসবে, নাকি আরও এক ‘লাতিন লিবিয়া’ তৈরি হবে?

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সম্প্রতি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে এখন তাঁর দেশের লাখো মানুষ অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত। গত আগস্টে মাদুরো বলেন, তাঁর সরকার আধা সামরিক বাহিনীর ৪৫ লাখ সদস্যকে ‘বলিভারিয়ান মিলিশিয়া’ নামে সক্রিয় করেছে। তাঁদের মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে তিনি আবার দাবি করেছেন, অন্তত ৩ মিলিয়ন বা ৩০ লাখ ভেনেজুয়েলান নাগরিক এরই মধ্যে অস্ত্র হাতে নিয়েছেন।
২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের আগে যেমন সাদ্দাম হোসেন তাঁর ফেদাইন বাহিনী গঠন করেছিলেন, তেমনই এবার মাদুরোও আগেভাগে তাঁর মিলিশিয়াদের প্রস্তুত করছেন। তবে সাদ্দামের তুলনায় মাদুরোর বাহিনীর সদস্যসংখ্যা অনেক বেশি।
তবে সিবিএস নিউজ বলছে, মাদুরোর দাবি অতিরঞ্জিত। আসলে সক্রিয় মিলিশিয়া সদস্যসংখ্যা ৩ লাখ ৪৩ হাজারের মতো, যা সাদ্দামের অনানুষ্ঠানিক বাহিনীর চেয়ে বেশি হলেও মাদুরোর ঘোষণার তুলনায় অনেক কম।
কারাকাস জানে, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য শুধু মাদকবিরোধী অভিযান নয়, মার্কিন আক্রমণ হলে সেটি আসলে পূর্ণাঙ্গ শাসন পরিবর্তনের জন্যই হবে। এ কারণেই মাদুরো এখন রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। মস্কো ভেনেজুয়েলাকে বিপুল অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে, এমনকি ওয়াগনার গ্রুপের প্রায় ২০০ ভাড়াটে সেনা দেশটিতে পাঠানো হয়েছে।

এখানে প্রশ্ন উঠেছে, এই বলিভারিয়ান মিলিশিয়ারা আদৌ মার্কিন বাহিনীর জন্য হুমকি কি না। আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণে সমৃদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হলে তাদের টিকতে পারা কঠিন। তবে গেরিলা ধাঁচের যুদ্ধ, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মিলিশিয়া বাহিনী এবং ভূপ্রকৃতি মার্কিন অভিযানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অনেক ভেনেজুয়েলান অবশ্য যুদ্ধের আহ্বানে সাড়া দিতে অনাগ্রহী। ফলে মাদুরোর ‘অস্ত্র ধারণের ডাক’ কতটা বাস্তবে রূপ পাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তবু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিষয়টি সহজ নয়, শাসক পরিবর্তন করতে গেলে দেশ মেরামতের দায়ভারও নিতে হবে। তাই ইরাকের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ট্রাম্পের লক্ষ্য পশ্চিম গোলার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি মনরো নীতির পুনরুত্থান চান, অর্থাৎ পশ্চিম গোলার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব নিশ্চিত করা। তাঁর মতে, চীন, রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই ওয়াশিংটনের বড় মাথাব্যথা।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, মাদুরো সরকারের পতনের পর ভেনেজুয়েলা যদি চীন বা রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে।
ভেনেজুয়েলার জঙ্গলে যুদ্ধ করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হবে। দেশটির সেনারা মূলত মরুভূমি বা ইউরোপীয় বনাঞ্চলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বলিভিয়ার ভূপ্রকৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই অভিযান হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতা দেবে, তবে তা কতটা সফল হবে, তা এখনই বলা কঠিন।
বেশির ভাগ বিশ্লেষক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র সহজে মাদুরোর বাহিনীকে পরাজিত করতে পারবে; কিন্তু যুদ্ধ-পরবর্তী গেরিলা বিদ্রোহই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—ফলে পরিস্থিতি ইরাকের মতো হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, মাদুরোর ‘যুদ্ধের আহ্বান’ জনগণের মধ্যে খুব একটা সাড়া জাগায়নি।
যাহোক, ট্রাম্পের উদ্দেশ্য স্পষ্ট, আমেরিকার প্রভাব পুনরুদ্ধার করা। তবে পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এ পথে হেঁটে সত্যিই কি পশ্চিম গোলার্ধে স্থিতিশীলতা আসবে, নাকি আরও এক ‘লাতিন লিবিয়া’ তৈরি হবে?


ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানি সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র এবং বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ...
১৬ জুলাই ২০২২
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় ফিরবে। তাঁর এই ঘোষণা দেশটির দীর্ঘদিনের নীতিতে এক বিশাল পরিবর্তন। ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যেহেতু অন্যান্য দেশগুলোও পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমিও অন্যদের সঙ্গে সমানতাল
১১ ঘণ্টা আগে
বিশ্ব রাজনীতিতে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শীতল যুদ্ধের পর বিশ্বে যে পারমাণবিক ভারসাম্য তৈরি হয়েছিল, তা এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
১ দিন আগে
বিরল খনিজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের এই টানাপোড়েন আগেও ছিল। চীন বহু বছর ধরে তার বৃহত্তর শিল্পনীতির অংশ হিসেবে এই খনিজগুলোর ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে চীনের কৌশলগত বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার বিপরীতে ট্রাম্প প্রশাসনও পাল্টা খেলায় নেমেছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় ফিরবে। তাঁর এই ঘোষণা দেশটির দীর্ঘদিনের নীতিতে এক বিশাল পরিবর্তন। ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যেহেতু অন্যান্য দেশগুলোও পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমিও অন্যদের সঙ্গে সমানতালে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে আমাদের যুদ্ধ দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া খুব শিগগির শুরু হয়ে যাবে।’
বিশ্বে বেশ কয়েকটি দেশ আছে পারমাণবিক শক্তিধর। এই দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘নিউক্লিয়ার ক্লাবের’ সদস্য বলে বিবেচনা করা হয়। তবে এই ক্লাবের সদস্য সংখ্যা স্পষ্ট নয়। এসব দেশ নিয়মিতভাবে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে থাকে। তবে ১৯৯০-এর দশকের পর থেকে এখন পর্যন্ত একমাত্র উত্তর কোরিয়াই প্রকাশ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, সেটাও হয়েছে ২০১৭ সালে।
হোয়াইট হাউস এখনো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। তাই এটি স্পষ্ট নয় যে, তিনি ‘পারমাণবিক পরীক্ষা’ বলতে পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা বোঝাচ্ছেন, নাকি অস্ত্রগুলোরই ধ্বংসাত্মক বিস্ফোরণ পরীক্ষা বোঝাচ্ছেন। ট্রাম্প পরে বলেছেন, পারমাণবিক পরীক্ষার স্থান পরে নির্ধারণ করা হবে।
বিবিসি এই বিষয়ে ছয়জন নীতি বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের বেশির ভাগই বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা এখনকার উত্তেজনাপূর্ণ সময়কে আরও বিপজ্জনক করে তুলবে। তাদের মতে, বিশ্ব এমন এক অবস্থার দিকে এগোচ্ছে, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু না হলেও, আশঙ্কা প্রবল। তবে এক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ট্রাম্পের বক্তব্য বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না। আরেকজন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছে করে প্রতিযোগিতা উসকে দিচ্ছে না।’ তবে সবাই একমত যে, বিশ্বে পারমাণবিক ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
মার্কিন থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের নিউক্লিয়ার পলিসি প্রোগ্রামের ফেলো জেমি কুয়াং বলেন, ‘বিগত কয়েক দশকে উত্তর কোরিয়া ছাড়া পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো আসল পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। তাই এখন কেউ যদি শুরু করে, সেটি অন্যদেরও উসকে দিতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন হয়তো নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতার দ্বারপ্রান্তে।’
লন্ডনভিত্তিক প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (রুসি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো দারিয়া দলজিকোভা বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্যে পরিস্থিতিতে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে বলে তিনি মনে করেন না। তবে তাঁর মতে, ‘বিশ্বজুড়ে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে যা পারমাণবিক সংঘাত ও অস্ত্র বিস্তারের ঝুঁকি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় নিয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্পের বার্তা বিশাল এক সমস্যার সমুদ্রে এক ফোঁটা মাত্র, কিন্তু সমুদ্রটা এরই মধ্যে উপচে পড়ার উপক্রম।’
বিশেষজ্ঞরা উদাহরণ হিসেবে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের মতো সংঘাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একাধিকবার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন। তা ছাড়া, ভারত-পাকিস্তানের এ বছরের সংঘাত, কিংবা ইসরায়েলের ইরান হামলার ঘটনা বৈশ্বিক অস্থিরতা বাড়িয়েছে। যদিও ইসরায়েল কখনো প্রকাশ্যে তার পারমাণবিক অস্ত্রের কথা স্বীকার করেনি। পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার অভিযোগ করে আসছে। তবে তেহরান তা বারবার অস্বীকার করেছে।
কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা ও তাইওয়ান নিয়ে চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাও বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান শেষ পারমাণবিক অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তিটি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদোত্তীর্ণ হবে।
ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেখানে বলেছেন—যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা অন্য সব দেশের চেয়ে বেশি। তবে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) হালনাগাদ তথ্য এর সঙ্গে মেলে না। সিপ্রির তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে ৫ হাজার ৪৫৯টি। এর পরেই যুক্তরাষ্ট্র, যার ওয়ারহেড ৫ হাজার ১৭৭টি। চীন অনেক পিছিয়ে, তাদের রয়েছে ৬০০টি ওয়ারহেড। অন্য গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্যও প্রায় একই।
সম্প্রতি রাশিয়া জানিয়েছে, তারা নতুন পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। ক্রেমলিন দাবি করেছে, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। এ ছাড়া, তাদের এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র আছে, যা পানির নিচ দিয়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাশিয়ার এই ঘোষণাই ট্রাম্পের বক্তব্যের কারণ হতে পারে। যদিও রাশিয়া বলেছে, এসব পরীক্ষা ‘পারমাণবিক নয়।’ অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর গভীর নজর রাখছে।
তাদের আশঙ্কা, চীনও দ্রুত ‘সমমানের পারমাণবিক শক্তি’ অর্জনের পথে। এতে তৈরি হচ্ছে ‘দুই-প্রতিদ্বন্দ্বী পারমাণবিক ঝুঁকি।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবার পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করে, তাহলে রাশিয়া ও চীনও একই পথে যেতে পারে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র সতর্ক করে বলেছেন, ‘কেউ যদি পরীক্ষার নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে, রাশিয়া তার জবাব দেবে।’ চীন জানিয়েছে, তারা আশা করে যুক্তরাষ্ট্র ‘কমপ্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট–ব্যান ট্রিটি’র প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশই চুক্তিতে সই করেছে, কিন্তু অনুমোদন দেয়নি।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল কিমবলের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবার পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়, তা হবে ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ইতিহাসে ভয়াবহ ভুল।’ তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি ক্রমেই বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যদি নতুন চুক্তিতে না পৌঁছায়, তাহলে তিন দিক থেকে—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন—এক বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হবে।’
ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের পারমাণবিক তথ্য প্রকল্পের পরিচালক হান্স ক্রিস্টেনসেন বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রথমবারের মতো ওয়ারহেড সংখ্যা বেড়েছে—শীতল যুদ্ধের পর এমনটা হয়নি। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষেরও উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, ” বলেন তিনি।’
যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছিল ১৯৯২ সালে, নেভাদায়। কিমবলের মতে, সেই কেন্দ্র আবার চালু করতে কমপক্ষে ৩৬ মাস লাগবে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কম্পিউটার সিমুলেশন ও অন্যান্য অ-বিস্ফোরক পদ্ধতিতে অস্ত্র পরীক্ষা করে। তাই নতুন বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষার বাস্তব প্রয়োজন নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়ে কুয়াং বলেন, ভূগর্ভস্থ পরীক্ষাতেও ঝুঁকি থাকে—বিকিরণ যেন মাটির ওপর বা ভূগর্ভস্থ পানিতে ছড়ায় না, তা নিশ্চিত করতে হয়।
ট্রাম্পের এমন ঘোষণার পেছনে রাশিয়া ও চীনকে দায়ী করে হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের গবেষক রবার্ট পিটার্স বলেন, বৈজ্ঞানিক কারণ না থাকলেও, ‘রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার জন্য’ এমন পরীক্ষা দরকার হতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘বিশ্বাসযোগ্যতা দেখাতে কোনো প্রেসিডেন্টের—ট্রাম্প, বা অন্য যে কেউ—পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো প্রয়োজন হতে পারে।’ তাঁর মতে, ‘এটি অযৌক্তিক অবস্থান নয়।’
তবে অনেক বিশেষজ্ঞই এতে একমত নন। তাদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিস ক্রিলি বলেন, ‘নতুন এক পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা যদি ইতিমধ্যেই শুরু না হয়ে থাকে, তবে আমরা তার একদম দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিনই আমি এই আশঙ্কায় থাকি যে, যেকোনো সময় পৃথিবী আবার পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্র প্রথম পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করে ১৯৪৫ সালের জুলাইয়ে, নিউ মেক্সিকোর আলমাগোর্ডো মরুভূমিতে। তারপর আগস্টে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তারা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল, যা মানব ইতিহাসে এখনো একমাত্র পারমাণবিক হামলা।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় ফিরবে। তাঁর এই ঘোষণা দেশটির দীর্ঘদিনের নীতিতে এক বিশাল পরিবর্তন। ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যেহেতু অন্যান্য দেশগুলোও পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমিও অন্যদের সঙ্গে সমানতালে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে আমাদের যুদ্ধ দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া খুব শিগগির শুরু হয়ে যাবে।’
বিশ্বে বেশ কয়েকটি দেশ আছে পারমাণবিক শক্তিধর। এই দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘নিউক্লিয়ার ক্লাবের’ সদস্য বলে বিবেচনা করা হয়। তবে এই ক্লাবের সদস্য সংখ্যা স্পষ্ট নয়। এসব দেশ নিয়মিতভাবে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে থাকে। তবে ১৯৯০-এর দশকের পর থেকে এখন পর্যন্ত একমাত্র উত্তর কোরিয়াই প্রকাশ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, সেটাও হয়েছে ২০১৭ সালে।
হোয়াইট হাউস এখনো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। তাই এটি স্পষ্ট নয় যে, তিনি ‘পারমাণবিক পরীক্ষা’ বলতে পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা বোঝাচ্ছেন, নাকি অস্ত্রগুলোরই ধ্বংসাত্মক বিস্ফোরণ পরীক্ষা বোঝাচ্ছেন। ট্রাম্প পরে বলেছেন, পারমাণবিক পরীক্ষার স্থান পরে নির্ধারণ করা হবে।
বিবিসি এই বিষয়ে ছয়জন নীতি বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের বেশির ভাগই বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা এখনকার উত্তেজনাপূর্ণ সময়কে আরও বিপজ্জনক করে তুলবে। তাদের মতে, বিশ্ব এমন এক অবস্থার দিকে এগোচ্ছে, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু না হলেও, আশঙ্কা প্রবল। তবে এক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ট্রাম্পের বক্তব্য বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না। আরেকজন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছে করে প্রতিযোগিতা উসকে দিচ্ছে না।’ তবে সবাই একমত যে, বিশ্বে পারমাণবিক ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
মার্কিন থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের নিউক্লিয়ার পলিসি প্রোগ্রামের ফেলো জেমি কুয়াং বলেন, ‘বিগত কয়েক দশকে উত্তর কোরিয়া ছাড়া পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো আসল পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। তাই এখন কেউ যদি শুরু করে, সেটি অন্যদেরও উসকে দিতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন হয়তো নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতার দ্বারপ্রান্তে।’
লন্ডনভিত্তিক প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (রুসি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো দারিয়া দলজিকোভা বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্যে পরিস্থিতিতে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে বলে তিনি মনে করেন না। তবে তাঁর মতে, ‘বিশ্বজুড়ে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে যা পারমাণবিক সংঘাত ও অস্ত্র বিস্তারের ঝুঁকি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় নিয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্পের বার্তা বিশাল এক সমস্যার সমুদ্রে এক ফোঁটা মাত্র, কিন্তু সমুদ্রটা এরই মধ্যে উপচে পড়ার উপক্রম।’
বিশেষজ্ঞরা উদাহরণ হিসেবে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের মতো সংঘাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একাধিকবার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন। তা ছাড়া, ভারত-পাকিস্তানের এ বছরের সংঘাত, কিংবা ইসরায়েলের ইরান হামলার ঘটনা বৈশ্বিক অস্থিরতা বাড়িয়েছে। যদিও ইসরায়েল কখনো প্রকাশ্যে তার পারমাণবিক অস্ত্রের কথা স্বীকার করেনি। পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার অভিযোগ করে আসছে। তবে তেহরান তা বারবার অস্বীকার করেছে।
কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা ও তাইওয়ান নিয়ে চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাও বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান শেষ পারমাণবিক অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তিটি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদোত্তীর্ণ হবে।
ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেখানে বলেছেন—যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা অন্য সব দেশের চেয়ে বেশি। তবে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) হালনাগাদ তথ্য এর সঙ্গে মেলে না। সিপ্রির তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে ৫ হাজার ৪৫৯টি। এর পরেই যুক্তরাষ্ট্র, যার ওয়ারহেড ৫ হাজার ১৭৭টি। চীন অনেক পিছিয়ে, তাদের রয়েছে ৬০০টি ওয়ারহেড। অন্য গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্যও প্রায় একই।
সম্প্রতি রাশিয়া জানিয়েছে, তারা নতুন পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। ক্রেমলিন দাবি করেছে, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম। এ ছাড়া, তাদের এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র আছে, যা পানির নিচ দিয়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাশিয়ার এই ঘোষণাই ট্রাম্পের বক্তব্যের কারণ হতে পারে। যদিও রাশিয়া বলেছে, এসব পরীক্ষা ‘পারমাণবিক নয়।’ অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর গভীর নজর রাখছে।
তাদের আশঙ্কা, চীনও দ্রুত ‘সমমানের পারমাণবিক শক্তি’ অর্জনের পথে। এতে তৈরি হচ্ছে ‘দুই-প্রতিদ্বন্দ্বী পারমাণবিক ঝুঁকি।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবার পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করে, তাহলে রাশিয়া ও চীনও একই পথে যেতে পারে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র সতর্ক করে বলেছেন, ‘কেউ যদি পরীক্ষার নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে, রাশিয়া তার জবাব দেবে।’ চীন জানিয়েছে, তারা আশা করে যুক্তরাষ্ট্র ‘কমপ্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট–ব্যান ট্রিটি’র প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশই চুক্তিতে সই করেছে, কিন্তু অনুমোদন দেয়নি।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল কিমবলের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবার পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়, তা হবে ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ইতিহাসে ভয়াবহ ভুল।’ তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি ক্রমেই বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যদি নতুন চুক্তিতে না পৌঁছায়, তাহলে তিন দিক থেকে—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন—এক বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হবে।’
ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের পারমাণবিক তথ্য প্রকল্পের পরিচালক হান্স ক্রিস্টেনসেন বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রথমবারের মতো ওয়ারহেড সংখ্যা বেড়েছে—শীতল যুদ্ধের পর এমনটা হয়নি। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষেরও উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, ” বলেন তিনি।’
যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছিল ১৯৯২ সালে, নেভাদায়। কিমবলের মতে, সেই কেন্দ্র আবার চালু করতে কমপক্ষে ৩৬ মাস লাগবে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কম্পিউটার সিমুলেশন ও অন্যান্য অ-বিস্ফোরক পদ্ধতিতে অস্ত্র পরীক্ষা করে। তাই নতুন বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষার বাস্তব প্রয়োজন নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়ে কুয়াং বলেন, ভূগর্ভস্থ পরীক্ষাতেও ঝুঁকি থাকে—বিকিরণ যেন মাটির ওপর বা ভূগর্ভস্থ পানিতে ছড়ায় না, তা নিশ্চিত করতে হয়।
ট্রাম্পের এমন ঘোষণার পেছনে রাশিয়া ও চীনকে দায়ী করে হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের গবেষক রবার্ট পিটার্স বলেন, বৈজ্ঞানিক কারণ না থাকলেও, ‘রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার জন্য’ এমন পরীক্ষা দরকার হতে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘বিশ্বাসযোগ্যতা দেখাতে কোনো প্রেসিডেন্টের—ট্রাম্প, বা অন্য যে কেউ—পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো প্রয়োজন হতে পারে।’ তাঁর মতে, ‘এটি অযৌক্তিক অবস্থান নয়।’
তবে অনেক বিশেষজ্ঞই এতে একমত নন। তাদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিস ক্রিলি বলেন, ‘নতুন এক পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা যদি ইতিমধ্যেই শুরু না হয়ে থাকে, তবে আমরা তার একদম দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিনই আমি এই আশঙ্কায় থাকি যে, যেকোনো সময় পৃথিবী আবার পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্র প্রথম পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করে ১৯৪৫ সালের জুলাইয়ে, নিউ মেক্সিকোর আলমাগোর্ডো মরুভূমিতে। তারপর আগস্টে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তারা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল, যা মানব ইতিহাসে এখনো একমাত্র পারমাণবিক হামলা।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান


ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানি সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র এবং বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ...
১৬ জুলাই ২০২২
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সম্প্রতি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে এখন তাঁর দেশের লাখো মানুষ অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত। গত আগস্টে মাদুরো বলেন, তাঁর সরকার আধা সামরিক বাহিনীর ৪৫ লাখ সদস্যকে ‘বলিভারিয়ান মিলিশিয়া’ নামে সক্রিয় করেছে।
২ ঘণ্টা আগে
বিশ্ব রাজনীতিতে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শীতল যুদ্ধের পর বিশ্বে যে পারমাণবিক ভারসাম্য তৈরি হয়েছিল, তা এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
১ দিন আগে
বিরল খনিজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের এই টানাপোড়েন আগেও ছিল। চীন বহু বছর ধরে তার বৃহত্তর শিল্পনীতির অংশ হিসেবে এই খনিজগুলোর ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে চীনের কৌশলগত বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার বিপরীতে ট্রাম্প প্রশাসনও পাল্টা খেলায় নেমেছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্ব রাজনীতিতে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শীতল যুদ্ধের পর বিশ্বে যে পারমাণবিক ভারসাম্য তৈরি হয়েছিল, তা এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কর্মসূচি আবারও শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘অন্য দেশগুলো যেহেতু পরীক্ষায় ব্যস্ত, আমরাও সমানভাবে আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করব।’ তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যে স্পষ্ট নয়—তিনি সরাসরি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার কথা বলেছেন, নাকি পরমাণু সক্ষম অস্ত্রের মহড়ার কথা বলেছেন।
এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই মস্কোর এক সামরিক হাসপাতালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরেকটি ‘অজেয়’ অস্ত্র পরীক্ষার দাবি করেন। তিনি জানান, রাশিয়া সফলভাবে ‘পোসাইডন’ নামের পরমাণু-চালিত টর্পেডো পরীক্ষায় সফল হয়েছে। ধারণা করা হয়, এই টর্পেডো প্রায় ৯ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যেতে পারে এবং তা কোনোভাবেই প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। পুতিনের ভাষায়, ‘পোসাইডন’ পৃথিবীর যে কোনো আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী।’
তিনি আরও জানান, বহু প্রতীক্ষিত ‘সারমাত’ বা ‘স্যাটান ২’ ক্ষেপণাস্ত্রও শিগগিরই রুশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হতে পারে।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত রাখার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আর তার আগেই দুই দেশই নতুন অস্ত্র প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
সপ্তাহখানেক আগে পুতিন ঘোষণা দিয়েছিলেন, রাশিয়া সফলভাবে ‘বুরেভেস্টনিক’ নামের পরমাণু-চালিত ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষাও সম্পন্ন করেছে। এই মিসাইল দীর্ঘ সময় ধরে সাবসনিক গতিতে উড়তে পারে বলে দাবি রুশ সামরিক বাহিনীর। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পরমাণু-চালিত অস্ত্র প্রযুক্তিগতভাবে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ, বাস্তবে ব্যবহারের জন্য এখনো অপ্রস্তুত।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাশিয়ার এই ‘পারমাণবিক ঝনঝনানি’ মূলত সামরিক নয়, কূটনৈতিক চাপের কৌশল। ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ও পশ্চিমা বিশ্বের কঠোর অবস্থানের কারণে মস্কো চায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তার দাবিগুলোর প্রতি মনোযোগী হোক।
কিন্তু পুতিনের এই প্রদর্শনের জবাবে ট্রাম্পের নির্দেশ বিশ্বকে নতুন এক অনিশ্চিত পথে ঠেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দুই শক্তিধর দেশের এই পাল্টাপাল্টি হুমকি পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে আবারও উসকে দেবে। এর ফলে বিশ্বে শীতল-যুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে ভয়ংকর অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যেখানে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি বা অসতর্ক কোনো পদক্ষেপ মানবসভ্যতাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেবে।

বিশ্ব রাজনীতিতে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শীতল যুদ্ধের পর বিশ্বে যে পারমাণবিক ভারসাম্য তৈরি হয়েছিল, তা এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কর্মসূচি আবারও শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘অন্য দেশগুলো যেহেতু পরীক্ষায় ব্যস্ত, আমরাও সমানভাবে আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করব।’ তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যে স্পষ্ট নয়—তিনি সরাসরি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার কথা বলেছেন, নাকি পরমাণু সক্ষম অস্ত্রের মহড়ার কথা বলেছেন।
এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই মস্কোর এক সামরিক হাসপাতালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরেকটি ‘অজেয়’ অস্ত্র পরীক্ষার দাবি করেন। তিনি জানান, রাশিয়া সফলভাবে ‘পোসাইডন’ নামের পরমাণু-চালিত টর্পেডো পরীক্ষায় সফল হয়েছে। ধারণা করা হয়, এই টর্পেডো প্রায় ৯ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যেতে পারে এবং তা কোনোভাবেই প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। পুতিনের ভাষায়, ‘পোসাইডন’ পৃথিবীর যে কোনো আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী।’
তিনি আরও জানান, বহু প্রতীক্ষিত ‘সারমাত’ বা ‘স্যাটান ২’ ক্ষেপণাস্ত্রও শিগগিরই রুশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হতে পারে।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত রাখার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আর তার আগেই দুই দেশই নতুন অস্ত্র প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
সপ্তাহখানেক আগে পুতিন ঘোষণা দিয়েছিলেন, রাশিয়া সফলভাবে ‘বুরেভেস্টনিক’ নামের পরমাণু-চালিত ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষাও সম্পন্ন করেছে। এই মিসাইল দীর্ঘ সময় ধরে সাবসনিক গতিতে উড়তে পারে বলে দাবি রুশ সামরিক বাহিনীর। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পরমাণু-চালিত অস্ত্র প্রযুক্তিগতভাবে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ, বাস্তবে ব্যবহারের জন্য এখনো অপ্রস্তুত।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাশিয়ার এই ‘পারমাণবিক ঝনঝনানি’ মূলত সামরিক নয়, কূটনৈতিক চাপের কৌশল। ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ও পশ্চিমা বিশ্বের কঠোর অবস্থানের কারণে মস্কো চায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তার দাবিগুলোর প্রতি মনোযোগী হোক।
কিন্তু পুতিনের এই প্রদর্শনের জবাবে ট্রাম্পের নির্দেশ বিশ্বকে নতুন এক অনিশ্চিত পথে ঠেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দুই শক্তিধর দেশের এই পাল্টাপাল্টি হুমকি পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে আবারও উসকে দেবে। এর ফলে বিশ্বে শীতল-যুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে ভয়ংকর অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যেখানে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি বা অসতর্ক কোনো পদক্ষেপ মানবসভ্যতাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেবে।


ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানি সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র এবং বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ...
১৬ জুলাই ২০২২
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সম্প্রতি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে এখন তাঁর দেশের লাখো মানুষ অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত। গত আগস্টে মাদুরো বলেন, তাঁর সরকার আধা সামরিক বাহিনীর ৪৫ লাখ সদস্যকে ‘বলিভারিয়ান মিলিশিয়া’ নামে সক্রিয় করেছে।
২ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় ফিরবে। তাঁর এই ঘোষণা দেশটির দীর্ঘদিনের নীতিতে এক বিশাল পরিবর্তন। ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যেহেতু অন্যান্য দেশগুলোও পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমিও অন্যদের সঙ্গে সমানতাল
১১ ঘণ্টা আগে
বিরল খনিজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের এই টানাপোড়েন আগেও ছিল। চীন বহু বছর ধরে তার বৃহত্তর শিল্পনীতির অংশ হিসেবে এই খনিজগুলোর ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে চীনের কৌশলগত বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার বিপরীতে ট্রাম্প প্রশাসনও পাল্টা খেলায় নেমেছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের একটি বড় বিতর্কিত বিষয় হলো বিরল খনিজ উপাদান। এই সমস্যার সমাধান করতেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার আলোচনা চলছে।
কয়েক মাস ধরে মার্কিন বাণিজ্য আলোচকদের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় আলোচনা হলেও চীন গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজ উপাদান সরবরাহের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে গড়িমসি করে যাচ্ছিল। এমনকি, মার্কিন কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বিরল খনিজ লাইসেন্স দেওয়ার আগের নিশ্চয়তাও বাস্তবায়ন করেনি। উল্টো বেইজিং এই মাসের শুরুতে বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন করে বিধিনিষেধ দেয়, যার ফলে নিষেধাজ্ঞার পরিধি ব্যাপক হারে বাড়ে।
আজ বৃহস্পতিবারের চুক্তির আওতায় চীন নতুন করে চাপানো এসব নিয়ম শিথিল করতে সম্মত হয়েছে। তবে এপ্রিলে ঘোষিত প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্ভবত এখনো বহাল আছে।
বিরল খনিজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের এই টানাপোড়েন আগেও ছিল। চীন বহু বছর ধরে তার বৃহত্তর শিল্পনীতির অংশ হিসেবে এই খনিজগুলোর ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে চীনের কৌশলগত বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার বিপরীতে ট্রাম্প প্রশাসনও পাল্টা খেলায় নেমেছে।
বিরল খনিজ আসলে কী?
রেয়ার আর্থ মিনারেলস বা বিরল মৃত্তিকা খনিজ বলতে পর্যায় সারণির ১৭টি ধাতব উপাদানকে বোঝায়, যার মধ্যে স্ক্যান্ডিয়াম, ইট্রিয়াম এবং ল্যান্থানাইডস অন্তর্ভুক্ত। এগুলো রকেট, যুদ্ধবিমান, স্মার্টফোন, ইলেকট্রিক গাড়ির মোটর, উইন্ড টারবাইন, সোলার প্যানেল, স্যাটেলাইট যোগাযোগব্যবস্থা, এমনকি মিসাইল গাইডেন্স সিস্টেমসহ নানা যন্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। একুশ শতকের শিল্প ও সামরিক শক্তির ভিত্তি হিসেবে এই খনিজগুলো পুরোপুরি নির্ভরশীল।
‘বিরল খনিজ’ নামটি কিছুটা ভুল। কারণ, এই উপাদানগুলো পৃথিবীর ভূত্বকের প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়। এগুলো সোনার চেয়েও বেশি পরিমাণে রয়েছে, কিন্তু এগুলোর নিষ্কাশন ও প্রক্রিয়াকরণ করা কঠিন, ব্যয়বহুল এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে খনন করা বিরল খনিজ উৎপাদনের ৬১ শতাংশই আসে চীন থেকে। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ৯২ শতাংশ আউটপুট নিয়ন্ত্রণ করে দেশটি।
বিরল খনিজের ব্যবহার
বিরল খনিজ দৈনন্দিন প্রযুক্তিতে সব জায়গায় ব্যবহৃত হয়—স্মার্টফোন থেকে শুরু করে উইন্ড টারবাইন, এলইডি লাইট এবং ফ্ল্যাট-স্ক্রিন টিভি পর্যন্ত। বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি, সেই সঙ্গে এমআরআই স্ক্যানার এবং ক্যানসার চিকিৎসার জন্যও এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্যও বিরল খনিজ অপরিহার্য। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) ২০২৫ সালের এক গবেষণা অনুসারে, এগুলো এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, সাবমেরিন, লেজার, স্যাটেলাইট, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র এবং আরও অনেক কিছুতে ব্যবহৃত হয়।
উৎস ও বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রণ
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, খনন করা বিরল খনিজ উৎপাদনের ৬১ শতাংশ আসে চীন থেকে। এর পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে বিরল খনিজ প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ৯২ শতাংশ আউটপুট নিয়ন্ত্রণ করে দেশটি।
আণবিক ওজন অনুসারে বিরল খনিজ দুই প্রকার—ভারী ও হালকা। ভারী বিরল খনিজগুলো আরও দুর্লভ। নিষ্কাশনের পর এই বিরল খনিজগুলো আলাদা করার সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের নেই।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ক্রিটিক্যাল মিনারেলস সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক গ্রেসলিন ভাস্করান সিএনএনকে বলেন, ‘বছরের শুরু পর্যন্ত, ক্যালিফোর্নিয়ায় আমরা যে ভারী বিরল খনিজগুলো উত্তোলন করেছি, সেগুলোকে আলাদা করার জন্য চীনে পাঠাতে হতো।’
তবে, এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন চীন থেকে আমদানি পণ্যের ওপর চড়া শুল্ক ঘোষণার পর এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, চীন বিরল খনিজ আলাদা করার ক্ষেত্রে আমেরিকার নির্ভরতাকে ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে’।
ভাস্করান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বিরল খনিজের মাত্র একটি খনি চালু আছে। অর্থাৎ চীন এই বিরল খনিজে যতটা স্বয়ংসম্পূর্ণ, যুক্তরাষ্ট্র তার ধারেকাছে নেই।
বাণিজ্যযুদ্ধে এর গুরুত্ব কেন
বাণিজ্যযুদ্ধে বেইজিং বিরল খনিজকে দর-কষাকষির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। আজ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত অ্যাপেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে সি চিন পিং ও ট্রাম্পের বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় এই বিরল খনিজ।
এই মাসের শুরুতে চীন আরও পাঁচটি বিরল খনিজ উপাদান—হোলমিয়াম, এরবিয়াম, থুলিয়াম, ইউরোপিয়াম, ইটারবিয়াম এবং সম্পর্কিত ম্যাগনেট ও উপকরণগুলোকে বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যুক্ত করে, যার জন্য রপ্তানি লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে নিয়ন্ত্রিত বিরল খনিজের মোট সংখ্যা ১২-তে পৌঁছায়। চীন বিরল খনিজ উৎপাদন প্রযুক্তিও দেশের বাইরে রপ্তানির জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করেছে।
তবে বিরল খনিজ নিয়ন্ত্রণে চীনা বিধিনিষেধের বিষয়ে এবারই প্রথম ক্ষুব্ধ হননি ট্রাম্প। গত জুনে ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেছিলেন, চীন সাতটি বিরল খনিজ এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এরপর তিনি চীনের ওপর আরও শুল্ক আরোপের হুমকি দেন।
বাণিজ্য বিশ্লেষকদের ধারণা, বিরল খনিজের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে চীনের বিধিনিষেধ বিশ্ববাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এই বস্তুটির জন্য যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বিরল খনিজ যৌগ ও ধাতুর ৭০ শতাংশই এসেছিল চীন থেকে। তাই বিরল খনিজ নিয়ে বৃহৎ দুই অর্থনীতির দ্বন্দ্ব পুরো বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের একটি বড় বিতর্কিত বিষয় হলো বিরল খনিজ উপাদান। এই সমস্যার সমাধান করতেই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার আলোচনা চলছে।
কয়েক মাস ধরে মার্কিন বাণিজ্য আলোচকদের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় আলোচনা হলেও চীন গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজ উপাদান সরবরাহের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে গড়িমসি করে যাচ্ছিল। এমনকি, মার্কিন কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বিরল খনিজ লাইসেন্স দেওয়ার আগের নিশ্চয়তাও বাস্তবায়ন করেনি। উল্টো বেইজিং এই মাসের শুরুতে বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন করে বিধিনিষেধ দেয়, যার ফলে নিষেধাজ্ঞার পরিধি ব্যাপক হারে বাড়ে।
আজ বৃহস্পতিবারের চুক্তির আওতায় চীন নতুন করে চাপানো এসব নিয়ম শিথিল করতে সম্মত হয়েছে। তবে এপ্রিলে ঘোষিত প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্ভবত এখনো বহাল আছে।
বিরল খনিজ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের এই টানাপোড়েন আগেও ছিল। চীন বহু বছর ধরে তার বৃহত্তর শিল্পনীতির অংশ হিসেবে এই খনিজগুলোর ওপর প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই বিরল খনিজকে কেন্দ্র করে চীনের কৌশলগত বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার বিপরীতে ট্রাম্প প্রশাসনও পাল্টা খেলায় নেমেছে।
বিরল খনিজ আসলে কী?
রেয়ার আর্থ মিনারেলস বা বিরল মৃত্তিকা খনিজ বলতে পর্যায় সারণির ১৭টি ধাতব উপাদানকে বোঝায়, যার মধ্যে স্ক্যান্ডিয়াম, ইট্রিয়াম এবং ল্যান্থানাইডস অন্তর্ভুক্ত। এগুলো রকেট, যুদ্ধবিমান, স্মার্টফোন, ইলেকট্রিক গাড়ির মোটর, উইন্ড টারবাইন, সোলার প্যানেল, স্যাটেলাইট যোগাযোগব্যবস্থা, এমনকি মিসাইল গাইডেন্স সিস্টেমসহ নানা যন্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। একুশ শতকের শিল্প ও সামরিক শক্তির ভিত্তি হিসেবে এই খনিজগুলো পুরোপুরি নির্ভরশীল।
‘বিরল খনিজ’ নামটি কিছুটা ভুল। কারণ, এই উপাদানগুলো পৃথিবীর ভূত্বকের প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়। এগুলো সোনার চেয়েও বেশি পরিমাণে রয়েছে, কিন্তু এগুলোর নিষ্কাশন ও প্রক্রিয়াকরণ করা কঠিন, ব্যয়বহুল এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে খনন করা বিরল খনিজ উৎপাদনের ৬১ শতাংশই আসে চীন থেকে। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ৯২ শতাংশ আউটপুট নিয়ন্ত্রণ করে দেশটি।
বিরল খনিজের ব্যবহার
বিরল খনিজ দৈনন্দিন প্রযুক্তিতে সব জায়গায় ব্যবহৃত হয়—স্মার্টফোন থেকে শুরু করে উইন্ড টারবাইন, এলইডি লাইট এবং ফ্ল্যাট-স্ক্রিন টিভি পর্যন্ত। বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি, সেই সঙ্গে এমআরআই স্ক্যানার এবং ক্যানসার চিকিৎসার জন্যও এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্যও বিরল খনিজ অপরিহার্য। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) ২০২৫ সালের এক গবেষণা অনুসারে, এগুলো এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, সাবমেরিন, লেজার, স্যাটেলাইট, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র এবং আরও অনেক কিছুতে ব্যবহৃত হয়।
উৎস ও বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রণ
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, খনন করা বিরল খনিজ উৎপাদনের ৬১ শতাংশ আসে চীন থেকে। এর পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে বিরল খনিজ প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ৯২ শতাংশ আউটপুট নিয়ন্ত্রণ করে দেশটি।
আণবিক ওজন অনুসারে বিরল খনিজ দুই প্রকার—ভারী ও হালকা। ভারী বিরল খনিজগুলো আরও দুর্লভ। নিষ্কাশনের পর এই বিরল খনিজগুলো আলাদা করার সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের নেই।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ক্রিটিক্যাল মিনারেলস সিকিউরিটি প্রোগ্রামের পরিচালক গ্রেসলিন ভাস্করান সিএনএনকে বলেন, ‘বছরের শুরু পর্যন্ত, ক্যালিফোর্নিয়ায় আমরা যে ভারী বিরল খনিজগুলো উত্তোলন করেছি, সেগুলোকে আলাদা করার জন্য চীনে পাঠাতে হতো।’
তবে, এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন চীন থেকে আমদানি পণ্যের ওপর চড়া শুল্ক ঘোষণার পর এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, চীন বিরল খনিজ আলাদা করার ক্ষেত্রে আমেরিকার নির্ভরতাকে ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে’।
ভাস্করান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বিরল খনিজের মাত্র একটি খনি চালু আছে। অর্থাৎ চীন এই বিরল খনিজে যতটা স্বয়ংসম্পূর্ণ, যুক্তরাষ্ট্র তার ধারেকাছে নেই।
বাণিজ্যযুদ্ধে এর গুরুত্ব কেন
বাণিজ্যযুদ্ধে বেইজিং বিরল খনিজকে দর-কষাকষির প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। আজ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত অ্যাপেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে সি চিন পিং ও ট্রাম্পের বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় এই বিরল খনিজ।
এই মাসের শুরুতে চীন আরও পাঁচটি বিরল খনিজ উপাদান—হোলমিয়াম, এরবিয়াম, থুলিয়াম, ইউরোপিয়াম, ইটারবিয়াম এবং সম্পর্কিত ম্যাগনেট ও উপকরণগুলোকে বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যুক্ত করে, যার জন্য রপ্তানি লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে নিয়ন্ত্রিত বিরল খনিজের মোট সংখ্যা ১২-তে পৌঁছায়। চীন বিরল খনিজ উৎপাদন প্রযুক্তিও দেশের বাইরে রপ্তানির জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করেছে।
তবে বিরল খনিজ নিয়ন্ত্রণে চীনা বিধিনিষেধের বিষয়ে এবারই প্রথম ক্ষুব্ধ হননি ট্রাম্প। গত জুনে ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেছিলেন, চীন সাতটি বিরল খনিজ এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এরপর তিনি চীনের ওপর আরও শুল্ক আরোপের হুমকি দেন।
বাণিজ্য বিশ্লেষকদের ধারণা, বিরল খনিজের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে চীনের বিধিনিষেধ বিশ্ববাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এই বস্তুটির জন্য যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা বিরল খনিজ যৌগ ও ধাতুর ৭০ শতাংশই এসেছিল চীন থেকে। তাই বিরল খনিজ নিয়ে বৃহৎ দুই অর্থনীতির দ্বন্দ্ব পুরো বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে।


ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ইউরোপ-আমেরিকা জ্বালানি সংকটসহ কৌশলগত মিত্রের সংকটে ভুগছে। ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত মিত্র এবং বন্ধুর প্রয়োজন। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ...
১৬ জুলাই ২০২২
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো সম্প্রতি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে এখন তাঁর দেশের লাখো মানুষ অস্ত্র ধরতে প্রস্তুত। গত আগস্টে মাদুরো বলেন, তাঁর সরকার আধা সামরিক বাহিনীর ৪৫ লাখ সদস্যকে ‘বলিভারিয়ান মিলিশিয়া’ নামে সক্রিয় করেছে।
২ ঘণ্টা আগে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর দেশ আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় ফিরবে। তাঁর এই ঘোষণা দেশটির দীর্ঘদিনের নীতিতে এক বিশাল পরিবর্তন। ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যেহেতু অন্যান্য দেশগুলোও পরীক্ষা চালাচ্ছে, তাই আমিও অন্যদের সঙ্গে সমানতাল
১১ ঘণ্টা আগে
বিশ্ব রাজনীতিতে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শীতল যুদ্ধের পর বিশ্বে যে পারমাণবিক ভারসাম্য তৈরি হয়েছিল, তা এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
১ দিন আগে