Ajker Patrika

টাইমের নিবন্ধ

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকেও কেন থামবে না ইউক্রেন যুদ্ধ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: এএফপি
ছবি: এএফপি

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক শুরু হবে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, বৈঠক হলেও ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কর্মকর্তা এরিক গ্রিন বলছেন, ‘পুতিনের লক্ষ্য বরাবরই এক—ইউক্রেনের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করা।’

চার বছর আগে, ২০২১ সালের জুনে, জেনেভায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পুতিনের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তখনো রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ হামলা চালায়নি। কিন্তু সেই বছরের শেষের দিকেই পুতিন ইউক্রেন সীমান্তে হাজার হাজার সেনা পাঠান এবং যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার হামলা চালানো হয়। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক চুক্তিও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পথে ছিল। এই পরিস্থিতিতে বাইডেন পুতিনকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানান।

সাবেক ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের রাশিয়া ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক পরিচালক এরিক গ্রিন মনে করিয়ে দেন, তখন প্রেক্ষাপট ছিল একেবারে আলাদা। রাশিয়া তখনো ইউক্রেনে আক্রমণ করেনি, কিন্তু পুতিনের ইউক্রেন বিষয়ে অবস্থান সব সময় একই ছিল—দেশটির স্বাধীনতা সীমিত করা ও প্রভাব খাটানো।

এ কারণেই ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ‘অঞ্চল বিনিময়’ বা আংশিক যুদ্ধবিরতির মতো সমাধান পুতিনের মূল দাবিকে স্পর্শ করবে না। এরিক গ্রিনের ভাষায়, যখন তিনি ‘মূল কারণ’ বলেন, তিনি বোঝান, ‘ইউক্রেন যেন একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে না থাকে।’ আর এটা ট্রাম্পের দেওয়ার মতো কিছু নয়।

২০২১ সালের জেনেভা বৈঠকে রাশিয়া সাময়িকভাবে সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে শান্তি আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু আলোচনার পর দুই দেশের অবস্থান এতটাই ভিন্ন ছিল যে বাইডেন ও পুতিন যৌথ সংবাদ সম্মেলন করতেও রাজি হননি। অল্প কিছুদিন পর পুতিন এক দীর্ঘ প্রবন্ধে লেখেন, ইউক্রেন প্রকৃতপক্ষে রাশিয়ার অংশ এবং স্বাধীনভাবে টিকে থাকতে হলে রাশিয়ার সঙ্গে অংশীদারত্বে থাকতে হবে।

বছর শেষে রাশিয়া আরও বেশি সেনা সীমান্তে পাঠায়। তখন বাইডেন ন্যাটো জোট ও ইউরোপের নিরাপত্তা ইস্যুতেও আলোচনা প্রস্তাব করেন। কিন্তু রাশিয়ার শর্ত ছিল—ন্যাটোকে পূর্ব ইউরোপ থেকে সরে গিয়ে ১৯৯৭ সালের অবস্থানে ফিরে যেতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র এই শর্ত প্রত্যাখ্যান করে এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনীয় সেনারা পশ্চিমা অস্ত্রের সহায়তায় রাশিয়ার অগ্রযাত্রা থামিয়ে রেখেছে। কিয়েভ, খারকিভ ও খেরসন হারানোর পরও পুতিনের লক্ষ্য অপরিবর্তিত—পুরো ইউক্রেন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে আনা। বর্তমানে যুদ্ধ মূলত পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসে রক্তক্ষয়ী অবস্থানে আটকে আছে, যেখানে রুশ সেনারা ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুখে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।

পুতিন এখনো বলছেন, ‘মূল কারণ’ অর্থাৎ ইউক্রেনের ওপর রুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত না হলে শান্তি আসবে না। চলতি মাসের ১ আগস্ট তিনি আবারও বলেন, ‘ইউক্রেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারে না। ইউক্রেনের সত্যিকারের সার্বভৌমত্ব কেবল রাশিয়ার সঙ্গে অংশীদারত্বেই সম্ভব।’

এরিক গ্রিনের মতে, পুতিন এ বিষয়ে সব সময় এক অবস্থানে—তিনি পুরো ইউক্রেন চান এবং তা অর্জনে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। ট্রাম্পের বৈঠক হয়তো সাময়িক যুদ্ধবিরতির সুযোগ করে দিতে পারে, কিন্তু ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারবে না। সেই কাজ ইউক্রেনকেই করতে হবে এবং তা মিত্রদের সহায়তায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত