আজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে (সিআইএ) অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, মার্কিন প্রশাসনের কৌশল মূলত ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ওপর কেন্দ্রীভূত।
ট্রাম্প আরও বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার নৌযানের ওপর একাধিক মার্কিন হামলার পর এবং সেখানে মার্কিন সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পর, তাঁর প্রশাসন এখন ভেনেজুয়েলায় স্থল আক্রমণের কথাও বিবেচনা করছে।
তবে বুধবার রাতে জাতীয় টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে মাদুরো পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানান এবং আরও উত্তেজনা না বাড়ানোর সতর্কতা দেন। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়ার মতো ব্যর্থ যুদ্ধের স্মৃতি জাগানো সরকার পরিবর্তনের (রেজিম চেঞ্জ) পরিকল্পনা চাই না… সিআইএ–নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানও চাই না… লাতিন আমেরিকা এগুলো চায় না, প্রয়োজন নেই এবং তা প্রত্যাখ্যান করছে।’
ট্রাম্প আসলে কী ঘোষণা দিয়েছেন
এক সাংবাদিক হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কেন সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় যেতে অনুমোদন দিয়েছেন?’ ট্রাম্প জবাব দেন, ‘দুটি কারণেই আমি অনুমোদন দিয়েছি। প্রথমত, তারা (ভেনেজুয়েলা) তাদের কারাগারগুলো খালি করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, মাদক—আমাদের দেশে প্রচুর মাদক আসছে ভেনেজুয়েলা থেকে। এর বেশির ভাগই সমুদ্রপথে আসে। আমরা সেগুলো সমুদ্রপথে ঠেকাব, তবে এখন স্থলপথেও ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সাংবাদিক জানতে চান, সিআইএ কি ‘মাদুরোকে সরানোর ক্ষমতা পেয়েছে?’ জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না… এটা অদ্ভুত প্রশ্ন নয়, তবে আমার উত্তর দেওয়া বোকামি হবে। আমি শুধু বলব, ভেনেজুয়েলা এখন চাপ অনুভব করছে।’
যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কী কী অভিযান চালিয়েছে
যুক্তরাষ্ট্র অন্তত পাঁচটি হামলা চালিয়েছে ভেনেজুয়েলার জলসীমায় থাকা নৌযানে, যেগুলোকে ‘মাদকবাহী নৌকা’ বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটন। এসব হামলায় মোট ২৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প জানান, সর্বশেষ হামলাটি মঙ্গলবার হয়েছে।
তিনি নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ‘কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে আমার ক্ষমতা অনুযায়ী আজ সকালে যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এক প্রাণঘাতী হামলার নির্দেশ দিয়েছেন, যা ভেনেজুয়েলার উপকূলে ‘নির্ধারিত সন্ত্রাসী সংগঠন’-এর সঙ্গে যুক্ত একটি নৌযানের ওপর চালানো হয়েছিল।’ ট্রাম্প দাবি করেন, নৌযানটিতে থাকা ছয় ‘পুরুষ মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে।
প্রথম হামলাটি হয় ২ সেপ্টেম্বর, তাতে ১১ জন নিহত হয়। এরপর ১৫ ও ১৯ সেপ্টেম্বর দুটি হামলা হয়, প্রত্যেকটিতে তিনজন করে নিহত হন। ৩ অক্টোবর চতুর্থ হামলায় নিহত হন আরও চারজন। এ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন এই নৌযানগুলোতে মাদক ছিল—এমন কোনো প্রমাণ হাজির করেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট কি কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই দেশের বাইরে গোপন বা সামরিক অভিযান চালাতে পারেন
বিশেষজ্ঞরা আল–জাজিরাকে বলেছেন, ভেনেজুয়েলার নৌযানে মার্কিন হামলাগুলো আন্তর্জাতিক আইন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান উভয়েরই লঙ্ঘন হতে পারে। ভেনেজুয়েলার স্থলভাগে সিআইএ বা মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হলে তা আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা পরীক্ষা করবে।
নেদারল্যান্ডসের লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সালভাদর সান্তিনো রেজিলমে আল–জাজিরাকে বলেন, ‘সমুদ্রপথে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে জীবনের অধিকার, আইন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা এবং সামঞ্জস্যের নীতিমালা মেনে চলতে হয়। জাতিসংঘের সমুদ্র আইন (আনক্লস) ও ১৯৮৮ সালের জাতিসংঘের মাদক পাচারবিরোধী কনভেনশন স্পষ্টভাবে সহযোগিতা, তল্লাশি এবং সম্মতি–ভিত্তিক পদক্ষেপের কথা বলে, ধ্বংস বা হত্যা নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক আইনজীবী ব্রুস ফাইন আরও স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আত্মরক্ষার পরিস্থিতি ছাড়া কোনো সামরিক পদক্ষেপ নিতে হলে কংগ্রেসের প্রকাশ্য অনুমোদন জরুরি। ভেনেজুয়েলার কথিত মাদকবাহী নৌকায় হামলা ছিল অসাংবিধানিক।’
১৯৭৩ সালের ওয়ার পাওয়ারস রেজ্যুলেশন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আগে কংগ্রেসের অনুমোদন নিতে হয়, এবং পদক্ষেপের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কংগ্রেসকে তা জানাতে হয়। ফাইন বলেন, এমন কোনো ভোট কংগ্রেসে অনুষ্ঠিত হয়নি। দায়িত্বের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার মাদক চক্রগুলোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেন। কিন্তু ফাইন বলেন, এই ঘোষণা ‘আইনবিরোধী, কারণ এটি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার জন্য নির্ধারিত সাংবিধানিক মানদণ্ড পূরণ করে না।’
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, কোনো গোষ্ঠীকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হলে সেটি অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ভিত্তিক হতে হবে, সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকতে হবে এবং মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা বা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে হবে।
কিন্তু ট্রাম্প বহুবার অভিযোগ করেছেন, মাদুরোর সরকারই এসব মাদক চক্রের পেছনে রয়েছে—যদিও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিজেরাই বলেছে, এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।
ভেনেজুয়েলার প্রতিক্রিয়া
ভেনেজুয়েলা সরকার যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো ভেনেজুয়েলায় সরকার পরিবর্তনের জন্য একটি বৈধতা তৈরি করা, যাতে তারা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।’
মাদুরো সিআইএ–এর বিশ্বজুড়ে সম্পৃক্ততার সমালোচনা করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করছে, আর এখন ভেনেজুয়েলাতেও একই কৌশল নিচ্ছে।’
ভেনেজুয়েলার রাজনীতি বিশ্লেষক কার্লোস পিনা বলেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণা মাদুরোর রাজনৈতিক ঘাঁটিকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আজ মাদুরো আবারও যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের নিন্দা জানালেন এবং লাতিন আমেরিকার বামপন্থী দেশগুলোর ঐতিহ্যবাহী ‘ঔপনিবেশিক বিরোধী’ বক্তব্যকেই জোরদার করলেন।’
তবে পিনা সতর্ক করে বলেন, ‘বাস্তবে এই ঘোষণা ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ নজরদারি ও দমননীতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি করবে।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে (সিআইএ) অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, মার্কিন প্রশাসনের কৌশল মূলত ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ওপর কেন্দ্রীভূত।
ট্রাম্প আরও বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার নৌযানের ওপর একাধিক মার্কিন হামলার পর এবং সেখানে মার্কিন সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পর, তাঁর প্রশাসন এখন ভেনেজুয়েলায় স্থল আক্রমণের কথাও বিবেচনা করছে।
তবে বুধবার রাতে জাতীয় টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে মাদুরো পরিস্থিতি শান্ত রাখার আহ্বান জানান এবং আরও উত্তেজনা না বাড়ানোর সতর্কতা দেন। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়ার মতো ব্যর্থ যুদ্ধের স্মৃতি জাগানো সরকার পরিবর্তনের (রেজিম চেঞ্জ) পরিকল্পনা চাই না… সিআইএ–নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানও চাই না… লাতিন আমেরিকা এগুলো চায় না, প্রয়োজন নেই এবং তা প্রত্যাখ্যান করছে।’
ট্রাম্প আসলে কী ঘোষণা দিয়েছেন
এক সাংবাদিক হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কেন সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় যেতে অনুমোদন দিয়েছেন?’ ট্রাম্প জবাব দেন, ‘দুটি কারণেই আমি অনুমোদন দিয়েছি। প্রথমত, তারা (ভেনেজুয়েলা) তাদের কারাগারগুলো খালি করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, মাদক—আমাদের দেশে প্রচুর মাদক আসছে ভেনেজুয়েলা থেকে। এর বেশির ভাগই সমুদ্রপথে আসে। আমরা সেগুলো সমুদ্রপথে ঠেকাব, তবে এখন স্থলপথেও ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সাংবাদিক জানতে চান, সিআইএ কি ‘মাদুরোকে সরানোর ক্ষমতা পেয়েছে?’ জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না… এটা অদ্ভুত প্রশ্ন নয়, তবে আমার উত্তর দেওয়া বোকামি হবে। আমি শুধু বলব, ভেনেজুয়েলা এখন চাপ অনুভব করছে।’
যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কী কী অভিযান চালিয়েছে
যুক্তরাষ্ট্র অন্তত পাঁচটি হামলা চালিয়েছে ভেনেজুয়েলার জলসীমায় থাকা নৌযানে, যেগুলোকে ‘মাদকবাহী নৌকা’ বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটন। এসব হামলায় মোট ২৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প জানান, সর্বশেষ হামলাটি মঙ্গলবার হয়েছে।
তিনি নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ‘কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে আমার ক্ষমতা অনুযায়ী আজ সকালে যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এক প্রাণঘাতী হামলার নির্দেশ দিয়েছেন, যা ভেনেজুয়েলার উপকূলে ‘নির্ধারিত সন্ত্রাসী সংগঠন’-এর সঙ্গে যুক্ত একটি নৌযানের ওপর চালানো হয়েছিল।’ ট্রাম্প দাবি করেন, নৌযানটিতে থাকা ছয় ‘পুরুষ মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে।
প্রথম হামলাটি হয় ২ সেপ্টেম্বর, তাতে ১১ জন নিহত হয়। এরপর ১৫ ও ১৯ সেপ্টেম্বর দুটি হামলা হয়, প্রত্যেকটিতে তিনজন করে নিহত হন। ৩ অক্টোবর চতুর্থ হামলায় নিহত হন আরও চারজন। এ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন এই নৌযানগুলোতে মাদক ছিল—এমন কোনো প্রমাণ হাজির করেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট কি কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই দেশের বাইরে গোপন বা সামরিক অভিযান চালাতে পারেন
বিশেষজ্ঞরা আল–জাজিরাকে বলেছেন, ভেনেজুয়েলার নৌযানে মার্কিন হামলাগুলো আন্তর্জাতিক আইন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান উভয়েরই লঙ্ঘন হতে পারে। ভেনেজুয়েলার স্থলভাগে সিআইএ বা মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হলে তা আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা পরীক্ষা করবে।
নেদারল্যান্ডসের লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সালভাদর সান্তিনো রেজিলমে আল–জাজিরাকে বলেন, ‘সমুদ্রপথে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে জীবনের অধিকার, আইন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা এবং সামঞ্জস্যের নীতিমালা মেনে চলতে হয়। জাতিসংঘের সমুদ্র আইন (আনক্লস) ও ১৯৮৮ সালের জাতিসংঘের মাদক পাচারবিরোধী কনভেনশন স্পষ্টভাবে সহযোগিতা, তল্লাশি এবং সম্মতি–ভিত্তিক পদক্ষেপের কথা বলে, ধ্বংস বা হত্যা নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক আইনজীবী ব্রুস ফাইন আরও স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আত্মরক্ষার পরিস্থিতি ছাড়া কোনো সামরিক পদক্ষেপ নিতে হলে কংগ্রেসের প্রকাশ্য অনুমোদন জরুরি। ভেনেজুয়েলার কথিত মাদকবাহী নৌকায় হামলা ছিল অসাংবিধানিক।’
১৯৭৩ সালের ওয়ার পাওয়ারস রেজ্যুলেশন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আগে কংগ্রেসের অনুমোদন নিতে হয়, এবং পদক্ষেপের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কংগ্রেসকে তা জানাতে হয়। ফাইন বলেন, এমন কোনো ভোট কংগ্রেসে অনুষ্ঠিত হয়নি। দায়িত্বের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার মাদক চক্রগুলোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেন। কিন্তু ফাইন বলেন, এই ঘোষণা ‘আইনবিরোধী, কারণ এটি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার জন্য নির্ধারিত সাংবিধানিক মানদণ্ড পূরণ করে না।’
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, কোনো গোষ্ঠীকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হলে সেটি অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ভিত্তিক হতে হবে, সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকতে হবে এবং মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা বা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে হবে।
কিন্তু ট্রাম্প বহুবার অভিযোগ করেছেন, মাদুরোর সরকারই এসব মাদক চক্রের পেছনে রয়েছে—যদিও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিজেরাই বলেছে, এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।
ভেনেজুয়েলার প্রতিক্রিয়া
ভেনেজুয়েলা সরকার যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো ভেনেজুয়েলায় সরকার পরিবর্তনের জন্য একটি বৈধতা তৈরি করা, যাতে তারা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।’
মাদুরো সিআইএ–এর বিশ্বজুড়ে সম্পৃক্ততার সমালোচনা করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করছে, আর এখন ভেনেজুয়েলাতেও একই কৌশল নিচ্ছে।’
ভেনেজুয়েলার রাজনীতি বিশ্লেষক কার্লোস পিনা বলেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণা মাদুরোর রাজনৈতিক ঘাঁটিকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আজ মাদুরো আবারও যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের নিন্দা জানালেন এবং লাতিন আমেরিকার বামপন্থী দেশগুলোর ঐতিহ্যবাহী ‘ঔপনিবেশিক বিরোধী’ বক্তব্যকেই জোরদার করলেন।’
তবে পিনা সতর্ক করে বলেন, ‘বাস্তবে এই ঘোষণা ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ নজরদারি ও দমননীতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি করবে।’
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিল সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে নতুন বিরোধ তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা এখন বড় রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
মামদানির হুমকির তোয়াক্কা না করে ৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক সফরের ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। যেকোনো সময় তিনি নিউইয়র্ক সফর করতেন পারেন বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিটি মেয়রের কি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আছে?
৯ ঘণ্টা আগে
পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক আধিপত্যের ওপর জোর দেওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
২ দিন আগে
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ভেনেজুয়েলায় মাদক পাচারের অভিযোগে অন্তত ২১টি নৌযানে মার্কিন সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিল সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে নতুন বিরোধ তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা এখন বড় রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ইউক্রেন ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি জার্মানির ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের সঙ্গে দেখা করেন। তবে সিদ্ধান্তমূলক আলোচনা হচ্ছে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে, যেখানে ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তর অবস্থিত। আর রাশিয়ার জব্দ সম্পদ ইউক্রেনের হাতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেলজিয়াম।
ইউরোপীয় কমিশন গত ৩ ডিসেম্বর ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনকে প্রায় ৯০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ দিতে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ (মোট প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো) ব্যবহার করা হবে। ভবিষ্যতে এই ঋণ আরও বাড়তে পারে। ইউক্রেনের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি, কারণ আগামী মার্চ বা এপ্রিলে দেশটি তহবিল সংকটে পড়তে পারে।
কিন্তু এই পরিকল্পনায় সবচেয়ে কঠোর আপত্তি জানাচ্ছে বেলজিয়াম এবং সেখানেই সবচেয়ে বেশি রাশিয়ান সম্পদ রয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বার্ট দ্য ওয়েভার আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর রাশিয়া সম্পদ ফেরত চাইলে বেলজিয়ামকে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, এই পরিকল্পনায় ঝুঁকি কোনো একক দেশ নেবে না, বরং পুরো ব্লক নেবে।
তারপরও ওয়েভারের ভয় কাটেনি। তাঁর ধারণা এর ফলে রাশিয়া বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে। এ ছাড়া বেলজিয়ামে এই বিষয়ে জনসমর্থন তাঁর পক্ষে এবং বিরোধীদলও তাঁর অবস্থানের বিরোধিতা করেনি।
এ অবস্থায় ইউরোপের শীর্ষ নেতারা ওয়েভারকে রাজি করাতে চেষ্টা করছেন। জার্মান রাজনীতিবিদ ফ্রিডরিখ মের্ৎস ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লিয়েন গত ৫ ডিসেম্বর ব্রাসেলসে ওয়েভারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু সেই বৈঠক থেকে কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।
এদিকে রাশিয়ার জব্দ সম্পদ ইউক্রেনকে দেওয়ার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লবিং করছে যুক্তরাষ্ট্রও। তাদের যুক্তি—জব্দ সম্পদ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাশিয়াকে শান্তি আলোচনায় আনতে ‘চাপ নয়, বরং প্রলোভন’ হিসেবে ব্যবহার করা উচিত।
এই সংকটের কারণে ইউক্রেনকে তহবিল দেওয়ার চাপ এখন ইউরোপের দেশগুলোর জাতীয় বাজেটের ওপর পড়ছে। গত সপ্তাহে জার্মানি ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো মেরামতে ১০০ মিলিয়ন ইউরো এবং নেদারল্যান্ডস অস্ত্র কেনার জন্য ২৫০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে। এই ধরনের সহায়তা অনেক দেশকে অসন্তুষ্টির সঙ্গে দিতে হচ্ছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ জানিয়েছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের ইইউ সম্মেলনে রাশিয়ার জব্দ সম্পদ ইউক্রেনকে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রস্তাব ব্যর্থ হলে বিকল্প হিসেবে যৌথভাবে ঋণ তহবিল গঠনের চিন্তা চলছে।
তবে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে—ইউক্রেনের পরবর্তী কিস্তির অর্থ পাওয়া এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে বেলজিয়ামের অবস্থান পরিবর্তনের ওপর।

ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিল সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে নতুন বিরোধ তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা এখন বড় রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ইউক্রেন ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি জার্মানির ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের সঙ্গে দেখা করেন। তবে সিদ্ধান্তমূলক আলোচনা হচ্ছে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে, যেখানে ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তর অবস্থিত। আর রাশিয়ার জব্দ সম্পদ ইউক্রেনের হাতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেলজিয়াম।
ইউরোপীয় কমিশন গত ৩ ডিসেম্বর ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনকে প্রায় ৯০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ দিতে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ (মোট প্রায় ২১০ বিলিয়ন ইউরো) ব্যবহার করা হবে। ভবিষ্যতে এই ঋণ আরও বাড়তে পারে। ইউক্রেনের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি, কারণ আগামী মার্চ বা এপ্রিলে দেশটি তহবিল সংকটে পড়তে পারে।
কিন্তু এই পরিকল্পনায় সবচেয়ে কঠোর আপত্তি জানাচ্ছে বেলজিয়াম এবং সেখানেই সবচেয়ে বেশি রাশিয়ান সম্পদ রয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বার্ট দ্য ওয়েভার আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর রাশিয়া সম্পদ ফেরত চাইলে বেলজিয়ামকে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, এই পরিকল্পনায় ঝুঁকি কোনো একক দেশ নেবে না, বরং পুরো ব্লক নেবে।
তারপরও ওয়েভারের ভয় কাটেনি। তাঁর ধারণা এর ফলে রাশিয়া বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে। এ ছাড়া বেলজিয়ামে এই বিষয়ে জনসমর্থন তাঁর পক্ষে এবং বিরোধীদলও তাঁর অবস্থানের বিরোধিতা করেনি।
এ অবস্থায় ইউরোপের শীর্ষ নেতারা ওয়েভারকে রাজি করাতে চেষ্টা করছেন। জার্মান রাজনীতিবিদ ফ্রিডরিখ মের্ৎস ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লিয়েন গত ৫ ডিসেম্বর ব্রাসেলসে ওয়েভারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু সেই বৈঠক থেকে কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।
এদিকে রাশিয়ার জব্দ সম্পদ ইউক্রেনকে দেওয়ার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লবিং করছে যুক্তরাষ্ট্রও। তাদের যুক্তি—জব্দ সম্পদ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাশিয়াকে শান্তি আলোচনায় আনতে ‘চাপ নয়, বরং প্রলোভন’ হিসেবে ব্যবহার করা উচিত।
এই সংকটের কারণে ইউক্রেনকে তহবিল দেওয়ার চাপ এখন ইউরোপের দেশগুলোর জাতীয় বাজেটের ওপর পড়ছে। গত সপ্তাহে জার্মানি ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো মেরামতে ১০০ মিলিয়ন ইউরো এবং নেদারল্যান্ডস অস্ত্র কেনার জন্য ২৫০ মিলিয়ন ইউরো দিয়েছে। এই ধরনের সহায়তা অনেক দেশকে অসন্তুষ্টির সঙ্গে দিতে হচ্ছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ জানিয়েছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের ইইউ সম্মেলনে রাশিয়ার জব্দ সম্পদ ইউক্রেনকে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রস্তাব ব্যর্থ হলে বিকল্প হিসেবে যৌথভাবে ঋণ তহবিল গঠনের চিন্তা চলছে।
তবে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে—ইউক্রেনের পরবর্তী কিস্তির অর্থ পাওয়া এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে বেলজিয়ামের অবস্থান পরিবর্তনের ওপর।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে (সিআইএ) অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, মার্কিন প্রশাসনের কৌশল মূলত
১৭ অক্টোবর ২০২৫
মামদানির হুমকির তোয়াক্কা না করে ৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক সফরের ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। যেকোনো সময় তিনি নিউইয়র্ক সফর করতেন পারেন বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিটি মেয়রের কি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আছে?
৯ ঘণ্টা আগে
পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক আধিপত্যের ওপর জোর দেওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
২ দিন আগে
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ভেনেজুয়েলায় মাদক পাচারের অভিযোগে অন্তত ২১টি নৌযানে মার্কিন সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে গেলে তাঁকে গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জোহরান মামদানি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে মামদানি এই মন্তব্য করেছেন। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে আইসিসি তাঁর বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করেন।
তবে মামদানির হুমকির তোয়াক্কা না করে ৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক সফরের ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। যেকোনো সময় তিনি নিউইয়র্ক সফর করতে পারেন বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিটি মেয়রের কি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে প্রথমে জানতে হবে আইসিসির রোম সংবিধি সম্পর্কে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল কেউই রোম সংবিধির সদস্য রাষ্ট্র নয়। ইসরায়েল প্রথমে স্বাক্ষর করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে রোম সংবিধি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির পরোয়ানা কার্যকর করতে আইনত বাধ্য নয়।
তবে ফিলিস্তিন ২০১৫ সালে রোম সংবিধিতে যুক্ত হয় এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার নিশ্চিত করে যে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সংঘটিত অপরাধের ওপর আদালতের এখতিয়ার রয়েছে। এর বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ও ফিলিস্তিনে মার্কিন এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কথিত যুদ্ধাপরাধ তদন্তে বাধা দিতে আইসিসির কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তবে পরোয়ানা কার্যকরে বাধা সৃষ্টি হলেও আন্তর্জাতিক আইনে ‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নামে একটি বিকল্প পথ খোলা আছে।
এই আইন অনুযায়ী, যেকোনো রাষ্ট্র গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ—যেমন গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার করতে পারে, অপরাধটি যেখানেই ঘটুক বা অপরাধীর জাতীয়তা যা-ই হোক না কেন।
আন্তর্জাতিক বিচার-সংক্রান্ত সংস্থাগুলো মনে করে, যিনি এ ধরনের গুরুতর অপরাধ করেন, তাঁর রাজনৈতিক পদমর্যাদার কারণে তিনি ডিপ্লোমেটিক ইমিউনিটি বা কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা বা আইনি সুরক্ষা পাবেন না। কারণ, এই অপরাধগুলো বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
সর্বজনীন এখতিয়ারের অধীনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের কিছু নজিরও আছে। যেমন—১৯৫০-এর দশকে নাৎসি হলোকাস্টের জন্য দায়ী অ্যাডলফ আইখম্যানকে ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ আর্জেন্টিনা থেকে অপহরণ করে জেরুজালেমে নিয়ে আসে। এরপর বিচার করে ফাঁসি দেয়। ইসরায়েল সে সময় এই কাজের যৌক্তিকতা দিতে সর্বজনীন এখতিয়ারের নীতি ব্যবহার করেছিল।
গণহত্যা, গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগে চিলির সাবেক সামরিক একনায়ক জেনারেল অগাস্টো পিনোশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল স্পেন। এর ভিত্তিতে ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে লন্ডনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে।
গাম্বিয়ার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উসমান সোনকোকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সুইজারল্যান্ডের একটি আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন।
আইখম্যান ও পিনোশের গ্রেপ্তারের নজির দেখিয়ে আইনি বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ও ডিপ্লোমেটিক ইমিউনিটি বা কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা তাঁকে সর্বজনীন এখতিয়ারের আওতায় গ্রেপ্তার হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে না।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার একচেটিয়া ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত। ফলে স্থানীয় পুলিশ বা সিটি মেয়রের এমন একটি আন্তর্জাতিক পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষমতা আইনগতভাবে নেই। থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকার সেটি প্রত্যাখ্যান করবে। নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুলও বলছেন, মেয়রের এই ক্ষমতা নেই।
কেউ কেউ যুক্তি দেন, যুক্তরাষ্ট্রে সর্বজনীন এখতিয়ার প্রয়োগের জন্য যুদ্ধাপরাধ আইনের (War Crimes Act-18 U.S.C.§ 2441) অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন, যা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
তবে অপর পক্ষের আইনি বিশ্লেষকেরা মনে করেন, যেহেতু এ ধরনের গুরুতর অপরাধ মোকাবিলার নীতিগুলো আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইনের সর্বোচ্চ মানদণ্ড (Jus cogens) দ্বারা সমর্থিত, তাই সর্বজনীন এখতিয়ার প্রয়োগের জন্য পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
অর্থাৎ মামদানির হাতে স্থানীয়ভাবে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের আইনি ক্ষমতা আছে। কিন্তু এ নিয়ে গুরুতর সাংবিধানিক ও আইনি বিতর্কও রয়েছে। আর আন্তর্জাতিক আইন ও এর ঐতিহাসিক নজিরগুলো দেখায়, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান-নির্বিশেষে আন্তর্জাতিক বিচার থেকে সুরক্ষা পান না।
মিডল ইস্ট মনিটর থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে গেলে তাঁকে গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জোহরান মামদানি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে মামদানি এই মন্তব্য করেছেন। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে আইসিসি তাঁর বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করেন।
তবে মামদানির হুমকির তোয়াক্কা না করে ৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক সফরের ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। যেকোনো সময় তিনি নিউইয়র্ক সফর করতে পারেন বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিটি মেয়রের কি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে প্রথমে জানতে হবে আইসিসির রোম সংবিধি সম্পর্কে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল কেউই রোম সংবিধির সদস্য রাষ্ট্র নয়। ইসরায়েল প্রথমে স্বাক্ষর করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে রোম সংবিধি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির পরোয়ানা কার্যকর করতে আইনত বাধ্য নয়।
তবে ফিলিস্তিন ২০১৫ সালে রোম সংবিধিতে যুক্ত হয় এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার নিশ্চিত করে যে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সংঘটিত অপরাধের ওপর আদালতের এখতিয়ার রয়েছে। এর বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ও ফিলিস্তিনে মার্কিন এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কথিত যুদ্ধাপরাধ তদন্তে বাধা দিতে আইসিসির কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তবে পরোয়ানা কার্যকরে বাধা সৃষ্টি হলেও আন্তর্জাতিক আইনে ‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নামে একটি বিকল্প পথ খোলা আছে।
এই আইন অনুযায়ী, যেকোনো রাষ্ট্র গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ—যেমন গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার করতে পারে, অপরাধটি যেখানেই ঘটুক বা অপরাধীর জাতীয়তা যা-ই হোক না কেন।
আন্তর্জাতিক বিচার-সংক্রান্ত সংস্থাগুলো মনে করে, যিনি এ ধরনের গুরুতর অপরাধ করেন, তাঁর রাজনৈতিক পদমর্যাদার কারণে তিনি ডিপ্লোমেটিক ইমিউনিটি বা কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা বা আইনি সুরক্ষা পাবেন না। কারণ, এই অপরাধগুলো বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
সর্বজনীন এখতিয়ারের অধীনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের কিছু নজিরও আছে। যেমন—১৯৫০-এর দশকে নাৎসি হলোকাস্টের জন্য দায়ী অ্যাডলফ আইখম্যানকে ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ আর্জেন্টিনা থেকে অপহরণ করে জেরুজালেমে নিয়ে আসে। এরপর বিচার করে ফাঁসি দেয়। ইসরায়েল সে সময় এই কাজের যৌক্তিকতা দিতে সর্বজনীন এখতিয়ারের নীতি ব্যবহার করেছিল।
গণহত্যা, গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগে চিলির সাবেক সামরিক একনায়ক জেনারেল অগাস্টো পিনোশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল স্পেন। এর ভিত্তিতে ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে লন্ডনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে।
গাম্বিয়ার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উসমান সোনকোকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সুইজারল্যান্ডের একটি আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন।
আইখম্যান ও পিনোশের গ্রেপ্তারের নজির দেখিয়ে আইনি বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ও ডিপ্লোমেটিক ইমিউনিটি বা কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা তাঁকে সর্বজনীন এখতিয়ারের আওতায় গ্রেপ্তার হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে না।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার একচেটিয়া ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত। ফলে স্থানীয় পুলিশ বা সিটি মেয়রের এমন একটি আন্তর্জাতিক পরোয়ানা কার্যকর করার ক্ষমতা আইনগতভাবে নেই। থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকার সেটি প্রত্যাখ্যান করবে। নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুলও বলছেন, মেয়রের এই ক্ষমতা নেই।
কেউ কেউ যুক্তি দেন, যুক্তরাষ্ট্রে সর্বজনীন এখতিয়ার প্রয়োগের জন্য যুদ্ধাপরাধ আইনের (War Crimes Act-18 U.S.C.§ 2441) অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন, যা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
তবে অপর পক্ষের আইনি বিশ্লেষকেরা মনে করেন, যেহেতু এ ধরনের গুরুতর অপরাধ মোকাবিলার নীতিগুলো আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইনের সর্বোচ্চ মানদণ্ড (Jus cogens) দ্বারা সমর্থিত, তাই সর্বজনীন এখতিয়ার প্রয়োগের জন্য পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
অর্থাৎ মামদানির হাতে স্থানীয়ভাবে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের আইনি ক্ষমতা আছে। কিন্তু এ নিয়ে গুরুতর সাংবিধানিক ও আইনি বিতর্কও রয়েছে। আর আন্তর্জাতিক আইন ও এর ঐতিহাসিক নজিরগুলো দেখায়, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান-নির্বিশেষে আন্তর্জাতিক বিচার থেকে সুরক্ষা পান না।
মিডল ইস্ট মনিটর থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে (সিআইএ) অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, মার্কিন প্রশাসনের কৌশল মূলত
১৭ অক্টোবর ২০২৫
ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিল সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে নতুন বিরোধ তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা এখন বড় রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক আধিপত্যের ওপর জোর দেওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
২ দিন আগে
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ভেনেজুয়েলায় মাদক পাচারের অভিযোগে অন্তত ২১টি নৌযানে মার্কিন সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক আধিপত্যের ওপর জোর দেওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
গত শুক্রবার প্রকাশিত এই ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি বা জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নথিতে চীনে সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখার এবং তাইওয়ান দখল করা থেকে চীনকে বিরত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ২০২২ সালে প্রকাশিত এর পূর্ববর্তী নথির মতো নতুন নথিতে চীনের ওপর নজর দেওয়া হয়নি কিংবা বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
তার বদলে, মার্কিন প্রশাসন হস্তক্ষেপবিরোধী নীতির ওপর জোর দিয়েছে। এটি বহুপাক্ষিকতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি ট্রাম্পের অনীহার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর মৌলিক রাজনৈতিক একক হলো জাতি-রাষ্ট্র এবং এটি ভবিষ্যতেও জাতি-রাষ্ট্রই থাকবে।’
ট্রাম্পের প্রশাসন নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে যেসব পরিবর্তন এনেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো নিচে দেওয়া হলো—
পশ্চিম গোলার্ধে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা
যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম গোলার্ধে ‘মার্কিন প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ করতে চাইছে। এটি করতে গিয়ে তারা মনরো মতবাদকে (Monroe Doctrine) পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করছে। মনরো মতবাদ হলো ১৮০০ সালের দিকের এক মার্কিন নীতি, যা আমেরিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপন ও হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল। এই গোলার্ধে বিদেশি প্রভাব ঠেকানো ছাড়াও, মাদক ব্যবসা ও অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলা করার ওপর জোর দেবে এবং ‘বেসরকারি অর্থনীতিগুলো’-কে উৎসাহিত করবে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এই অঞ্চলের সরকার, রাজনৈতিক দল এবং আন্দোলনগুলোকে পুরস্কৃত করব ও উৎসাহিত করব, যারা আমাদের নীতি ও কৌশলের সঙ্গে ব্যাপক অর্থে সংগতিপূর্ণ।’ ট্রাম্প ইতিমধ্যেই লাতিন আমেরিকায় রক্ষণশীল রাজনীতিকদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে এবং ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই-এর অধীনে আর্জেন্টাইন অর্থনীতিকে ৪০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে উদ্ধার করে এই পদ্ধতি কার্যকর করেছেন।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা এই-গোলার্ধের বাইরের প্রতিযোগীদের আমাদের গোলার্ধে সামরিক বা অন্যান্য হুমকিমূলক সক্ষমতা স্থাপন করা কিংবা কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলো নিজেদের দখলে নেওয়া বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অস্বীকার করব।’ মনরো মতবাদের এই ‘ট্রাম্পীয় অনুসিদ্ধান্ত’ হলো আমেরিকান শক্তি ও অগ্রাধিকারের একটি সাধারণ জ্ঞানসম্মত এবং শক্তিশালী পুনরুদ্ধার, যা আমেরিকান সুরক্ষার স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
নথিতে এও বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্পদ পশ্চিম গোলার্ধের দিকে সরিয়ে আনা হবে, ‘যেসব রণাঙ্গনের আপেক্ষিক গুরুত্ব সাম্প্রতিক দশকগুলোতে আমেরিকান জাতীয় সুরক্ষার কাছে কমে এসেছে, সেখান থেকে দূরে সরিয়ে আনা হবে।’
এই কৌশল এমন সময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরে সেসব নৌকার ওপর মারাত্মক হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি এসব নৌকা মাদক বহন করছে। ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার চারপাশেও সামরিক শক্তি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। আর এই নির্দেশ ওয়াশিংটন হয়তো বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে শক্তি প্রয়োগে উৎখাত করতে চাইছে—এমন জল্পনা বাড়িয়েছে।
তাইওয়ান নিয়ে সংঘাত ঠেকানো
এর আগের দুটি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে—যার মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম আমলে প্রকাশিত একটিও ছিল—চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। কিন্তু এই নতুন কৌশলে বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সামনে ও কেন্দ্রে রাখা হয়নি।
তবুও, এই নথিতে এশিয়াতে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় জেতা এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে, এটি বেইজিংয়ের মোকাবিলায় ভারসাম্য তৈরির জন্য এশীয় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে, যেখানে ভারতকে আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগরীয় সুরক্ষায় নয়াদিল্লিকে অবদান রাখতে উৎসাহিত করতে হলে আমাদের অবশ্যই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক (ও অন্যান্য) সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।’
নথিতে তাইওয়ানকে চীনের বলপূর্বক দখল করে নেওয়ার ঝুঁকিগুলো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই স্ব-শাসিত দ্বীপটি—যা বেইজিং নিজের বলে দাবি করে—কম্পিউটার চিপের অন্যতম প্রধান উৎপাদক। এতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, তাইওয়ান দখল করলে চীন এশিয়া প্যাসিফিকের দ্বিতীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশাধিকার পাবে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে এর অবস্থান জোরদার করবে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘অতএব তাইওয়ান নিয়ে একটি সংঘাত ঠেকানো, আদর্শগতভাবে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মাধ্যমে, একটি অগ্রাধিকার।’ এই কৌশল সংঘাত এড়াতে এই অঞ্চলের মার্কিন অংশীদারদের তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এমন একটি সামরিক বাহিনী তৈরি করব যা প্রথম দ্বীপপুঞ্জের যেকোনো জায়গায় আগ্রাসন ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম কিন্তু আমেরিকান সামরিক বাহিনী একা এটি করতে পারে না, আর করা উচিতও নয়। আমাদের মিত্রদের সম্মিলিত সুরক্ষার জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে—এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, আরও অনেক বেশি কাজ করতে হবে।’
ইউরোপের সমালোচনা
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের সমালোচনামূলক বক্তব্যের ওপর কড়াকড়ি আরোপ এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের লক্ষ্য করতে বিচার বিভাগকে নির্দেশ দিলেও নতুন কৌশলপত্রে ইউরোপের ‘বাক্স্বাধীনতার ওপর সেন্সরশিপ এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার দমন’—এর জন্য তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এই কৌশল ঘোষণা করেছে, ইউরোপ অভিবাসন নীতি এবং ‘নিয়ন্ত্রণমূলক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির ওপর ব্যর্থ মনোযোগ’—এর কারণে ‘সভ্যতাগত বিলুপ্তির আশঙ্কা’র মুখোমুখি।
এতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের জন্য ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের ‘অবাস্তব প্রত্যাশার’ ওপরও আঘাত হানা হয়েছে। বলা হয়েছে যে সংঘাতের সমাপ্তি ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ‘মৌলিক স্বার্থ’ রয়েছে। যুদ্ধ শেষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব—যা রাশিয়াকে পূর্ব ইউক্রেনের বৃহৎ অঞ্চল ধরে রাখার সুযোগ দেবে—গত মাসে কিছু ইউরোপীয় নেতার কাছ থেকে বিরল সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল।
নথিতে কোনো উদাহরণ না দিয়েই ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে উল্টো পথে চালনার’ অভিযোগ আনা হয়েছে ইউরোপের ওপর। যার ফলে ইউরোপীয় সরকারগুলোর কিছু অংশের তাদের জনগণের শান্তির আকাঙ্ক্ষার প্রতি প্রতিক্রিয়া না দেখানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই নথিতে আরও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো সেই সুরক্ষা ছাতা প্রত্যাহার করে নিতে পারে যা দীর্ঘকাল ধরে মহাদেশের ওপর মেলে ধরে রাখা আছে।
নথিতে লেখা হয়েছে, তার বদলে ওয়াশিংটন অগ্রাধিকার দেবে ‘ইউরোপকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে এবং এক সারিতে থাকা সার্বভৌম জাতিগুলোর একটি গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করতে সক্ষম করার ওপর, যার মধ্যে রয়েছে কোনো প্রতিকূল শক্তি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে তার নিজস্ব সুরক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব নেওয়া।’
মধ্যপ্রাচ্য থেকে মনোযোগ সরানো
জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নথিতে জোর দেওয়া হয়েছে যে, মধ্যপ্রাচ্য আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কৌশলগত অগ্রাধিকার নয়। এতে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলকে এত গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা পূর্বের বিবেচনাগুলো—যথা, শক্তি উৎপাদন এবং ব্যাপক সংঘাত—‘আর কার্যকর নয়।’ যুক্তরাষ্ট্র নিজের শক্তি উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে, ‘মধ্যপ্রাচ্যের ওপর মনোযোগ দেওয়ার আমেরিকার ঐতিহাসিক কারণ কমে আসবে।’
বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে সংঘাত ও সহিংসতাও কমছে। যেমন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জুন মাসে ইরান-এর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, যা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস’ করেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সমস্যাসংকুল গতিশীলতা হিসেবে রয়ে গেছে, তবে বর্তমানে এই সমস্যা শিরোনামগুলো যতটা বিশ্বাস করতে উৎসাহিত করে, তার চেয়ে কম।’
মার্কিন প্রশাসন এই অঞ্চলের জন্য একটি সোনালি ভবিষ্যতের কল্পনা করেছে। বলছে, ওয়াশিংটনের স্বার্থে আধিপত্য বজায় রাখার পরিবর্তে, মধ্যপ্রাচ্য ‘ক্রমবর্ধমানভাবে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের উৎস এবং গন্তব্যে পরিণত হবে’, যার মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলকে ‘অংশীদারত্ব, বন্ধুত্ব এবং বিনিয়োগের স্থান হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে, মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও সহিংসতায় জর্জরিত। গাজায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারী ও সেনাদের মারাত্মক অভিযান বাড়ছে। ইসরায়েল লেবাননেও তার বিমান হামলা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা দুর্বল হিজবুল্লাহকে বলপূর্বক নিরস্ত্র করতে দেশটির বিরুদ্ধে আরেকটি সর্বাত্মক হামলার ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সিরিয়ায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের এক বছর পরেও, ইসরায়েল দেশটির দক্ষিণে অধিকৃত গোলান মালভূমির বাইরে সামরিকভাবে আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টায় অনুপ্রবেশ এবং হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি তার আপসহীন অঙ্গীকার নিয়ে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া, ইরাক এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রেখে এই অঞ্চলে গভীরভাবে যুক্ত রয়েছে।
এই নথি স্বীকার করে যে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ এখনো রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ‘ইসরায়েল যেন সুরক্ষিত থাকে’ তা নিশ্চিত করা এবং জ্বালানি সরবরাহ ও শিপিং লেনগুলো রক্ষা করা। এতে বলা হয়েছে, ‘কিন্তু সেই দিনগুলি শেষ হয়েছে যখন মধ্যপ্রাচ্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং দৈনন্দিন কার্যকারিতা—উভয় ক্ষেত্রেই আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতিতে আধিপত্য বিস্তার করত—মধ্যপ্রাচ্য আর গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে নয়, বরং এটি এখন আর সেই স্থির জ্বালাতন, এবং আসন্ন বিপর্যয়ের সম্ভাব্য উৎস নয়, যা একসময় ছিল।’
ফ্লেক্সিবল রিয়্যালিজম বা নমনীয় বাস্তববাদ
এই নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে নিজের স্বার্থ অনুসরণ করবে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ওয়াশিংটন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রসারের জন্য চাপ দেবে না। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বের জাতিগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক এবং শান্তিপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাই, তাদের ঐতিহ্য ও ইতিহাস থেকে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে এমন গণতান্ত্রিক বা অন্যান্য সামাজিক পরিবর্তন তাদের ওপর চাপিয়ে না দিয়েই।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা স্বীকার ও নিশ্চিত করি যে—এমন একটি বাস্তবসম্মত মূল্যায়নের ভিত্তিতে কাজ করায় বা আমাদের শাসন ব্যবস্থা ও সমাজ থেকে ভিন্ন দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখায় কোনো অসংগতি বা ভণ্ডামি নেই, এমনকি যখন আমরা আমাদের অভিন্ন নিয়মগুলো বজায় রাখতে সমমনা বন্ধুদের ওপর চাপ সৃষ্টি করি, তখন তা করতে গিয়ে আমরা আমাদের স্বার্থকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই।’
তবে, এই কৌশল ইঙ্গিত দেয় যে যুক্তরাষ্ট্র এখনো কিছু দেশকে—বিশেষত পশ্চিমা অংশীদারদের—গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা মূল্যবোধের ওপর চাপ দেবে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ইউরোপ, অ্যাংলোস্ফিয়ার এবং বাকি গণতান্ত্রিক বিশ্বের অভিজাত-চালিত, মূল স্বাধীনতাগুলোর ওপর অগণতান্ত্রিক সীমাবদ্ধতার বিরোধিতা করব, বিশেষ করে আমাদের মিত্রদের মধ্যে।’
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা

পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক আধিপত্যের ওপর জোর দেওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
গত শুক্রবার প্রকাশিত এই ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি বা জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নথিতে চীনে সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখার এবং তাইওয়ান দখল করা থেকে চীনকে বিরত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ২০২২ সালে প্রকাশিত এর পূর্ববর্তী নথির মতো নতুন নথিতে চীনের ওপর নজর দেওয়া হয়নি কিংবা বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
তার বদলে, মার্কিন প্রশাসন হস্তক্ষেপবিরোধী নীতির ওপর জোর দিয়েছে। এটি বহুপাক্ষিকতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি ট্রাম্পের অনীহার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর মৌলিক রাজনৈতিক একক হলো জাতি-রাষ্ট্র এবং এটি ভবিষ্যতেও জাতি-রাষ্ট্রই থাকবে।’
ট্রাম্পের প্রশাসন নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে যেসব পরিবর্তন এনেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো নিচে দেওয়া হলো—
পশ্চিম গোলার্ধে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা
যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম গোলার্ধে ‘মার্কিন প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ করতে চাইছে। এটি করতে গিয়ে তারা মনরো মতবাদকে (Monroe Doctrine) পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করছে। মনরো মতবাদ হলো ১৮০০ সালের দিকের এক মার্কিন নীতি, যা আমেরিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপন ও হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল। এই গোলার্ধে বিদেশি প্রভাব ঠেকানো ছাড়াও, মাদক ব্যবসা ও অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলা করার ওপর জোর দেবে এবং ‘বেসরকারি অর্থনীতিগুলো’-কে উৎসাহিত করবে।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এই অঞ্চলের সরকার, রাজনৈতিক দল এবং আন্দোলনগুলোকে পুরস্কৃত করব ও উৎসাহিত করব, যারা আমাদের নীতি ও কৌশলের সঙ্গে ব্যাপক অর্থে সংগতিপূর্ণ।’ ট্রাম্প ইতিমধ্যেই লাতিন আমেরিকায় রক্ষণশীল রাজনীতিকদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে এবং ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই-এর অধীনে আর্জেন্টাইন অর্থনীতিকে ৪০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে উদ্ধার করে এই পদ্ধতি কার্যকর করেছেন।
নথিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা এই-গোলার্ধের বাইরের প্রতিযোগীদের আমাদের গোলার্ধে সামরিক বা অন্যান্য হুমকিমূলক সক্ষমতা স্থাপন করা কিংবা কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলো নিজেদের দখলে নেওয়া বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অস্বীকার করব।’ মনরো মতবাদের এই ‘ট্রাম্পীয় অনুসিদ্ধান্ত’ হলো আমেরিকান শক্তি ও অগ্রাধিকারের একটি সাধারণ জ্ঞানসম্মত এবং শক্তিশালী পুনরুদ্ধার, যা আমেরিকান সুরক্ষার স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
নথিতে এও বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্পদ পশ্চিম গোলার্ধের দিকে সরিয়ে আনা হবে, ‘যেসব রণাঙ্গনের আপেক্ষিক গুরুত্ব সাম্প্রতিক দশকগুলোতে আমেরিকান জাতীয় সুরক্ষার কাছে কমে এসেছে, সেখান থেকে দূরে সরিয়ে আনা হবে।’
এই কৌশল এমন সময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরে সেসব নৌকার ওপর মারাত্মক হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি এসব নৌকা মাদক বহন করছে। ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার চারপাশেও সামরিক শক্তি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। আর এই নির্দেশ ওয়াশিংটন হয়তো বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে শক্তি প্রয়োগে উৎখাত করতে চাইছে—এমন জল্পনা বাড়িয়েছে।
তাইওয়ান নিয়ে সংঘাত ঠেকানো
এর আগের দুটি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে—যার মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম আমলে প্রকাশিত একটিও ছিল—চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। কিন্তু এই নতুন কৌশলে বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সামনে ও কেন্দ্রে রাখা হয়নি।
তবুও, এই নথিতে এশিয়াতে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় জেতা এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে, এটি বেইজিংয়ের মোকাবিলায় ভারসাম্য তৈরির জন্য এশীয় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে, যেখানে ভারতকে আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগরীয় সুরক্ষায় নয়াদিল্লিকে অবদান রাখতে উৎসাহিত করতে হলে আমাদের অবশ্যই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক (ও অন্যান্য) সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।’
নথিতে তাইওয়ানকে চীনের বলপূর্বক দখল করে নেওয়ার ঝুঁকিগুলো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই স্ব-শাসিত দ্বীপটি—যা বেইজিং নিজের বলে দাবি করে—কম্পিউটার চিপের অন্যতম প্রধান উৎপাদক। এতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, তাইওয়ান দখল করলে চীন এশিয়া প্যাসিফিকের দ্বিতীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশাধিকার পাবে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে এর অবস্থান জোরদার করবে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।
নথিতে বলা হয়েছে, ‘অতএব তাইওয়ান নিয়ে একটি সংঘাত ঠেকানো, আদর্শগতভাবে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মাধ্যমে, একটি অগ্রাধিকার।’ এই কৌশল সংঘাত এড়াতে এই অঞ্চলের মার্কিন অংশীদারদের তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এমন একটি সামরিক বাহিনী তৈরি করব যা প্রথম দ্বীপপুঞ্জের যেকোনো জায়গায় আগ্রাসন ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম কিন্তু আমেরিকান সামরিক বাহিনী একা এটি করতে পারে না, আর করা উচিতও নয়। আমাদের মিত্রদের সম্মিলিত সুরক্ষার জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে—এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, আরও অনেক বেশি কাজ করতে হবে।’
ইউরোপের সমালোচনা
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের সমালোচনামূলক বক্তব্যের ওপর কড়াকড়ি আরোপ এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের লক্ষ্য করতে বিচার বিভাগকে নির্দেশ দিলেও নতুন কৌশলপত্রে ইউরোপের ‘বাক্স্বাধীনতার ওপর সেন্সরশিপ এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার দমন’—এর জন্য তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এই কৌশল ঘোষণা করেছে, ইউরোপ অভিবাসন নীতি এবং ‘নিয়ন্ত্রণমূলক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির ওপর ব্যর্থ মনোযোগ’—এর কারণে ‘সভ্যতাগত বিলুপ্তির আশঙ্কা’র মুখোমুখি।
এতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের জন্য ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের ‘অবাস্তব প্রত্যাশার’ ওপরও আঘাত হানা হয়েছে। বলা হয়েছে যে সংঘাতের সমাপ্তি ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ‘মৌলিক স্বার্থ’ রয়েছে। যুদ্ধ শেষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব—যা রাশিয়াকে পূর্ব ইউক্রেনের বৃহৎ অঞ্চল ধরে রাখার সুযোগ দেবে—গত মাসে কিছু ইউরোপীয় নেতার কাছ থেকে বিরল সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল।
নথিতে কোনো উদাহরণ না দিয়েই ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে উল্টো পথে চালনার’ অভিযোগ আনা হয়েছে ইউরোপের ওপর। যার ফলে ইউরোপীয় সরকারগুলোর কিছু অংশের তাদের জনগণের শান্তির আকাঙ্ক্ষার প্রতি প্রতিক্রিয়া না দেখানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই নথিতে আরও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো সেই সুরক্ষা ছাতা প্রত্যাহার করে নিতে পারে যা দীর্ঘকাল ধরে মহাদেশের ওপর মেলে ধরে রাখা আছে।
নথিতে লেখা হয়েছে, তার বদলে ওয়াশিংটন অগ্রাধিকার দেবে ‘ইউরোপকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে এবং এক সারিতে থাকা সার্বভৌম জাতিগুলোর একটি গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করতে সক্ষম করার ওপর, যার মধ্যে রয়েছে কোনো প্রতিকূল শক্তি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে তার নিজস্ব সুরক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব নেওয়া।’
মধ্যপ্রাচ্য থেকে মনোযোগ সরানো
জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নথিতে জোর দেওয়া হয়েছে যে, মধ্যপ্রাচ্য আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কৌশলগত অগ্রাধিকার নয়। এতে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলকে এত গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা পূর্বের বিবেচনাগুলো—যথা, শক্তি উৎপাদন এবং ব্যাপক সংঘাত—‘আর কার্যকর নয়।’ যুক্তরাষ্ট্র নিজের শক্তি উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে, ‘মধ্যপ্রাচ্যের ওপর মনোযোগ দেওয়ার আমেরিকার ঐতিহাসিক কারণ কমে আসবে।’
বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে সংঘাত ও সহিংসতাও কমছে। যেমন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জুন মাসে ইরান-এর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, যা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস’ করেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সমস্যাসংকুল গতিশীলতা হিসেবে রয়ে গেছে, তবে বর্তমানে এই সমস্যা শিরোনামগুলো যতটা বিশ্বাস করতে উৎসাহিত করে, তার চেয়ে কম।’
মার্কিন প্রশাসন এই অঞ্চলের জন্য একটি সোনালি ভবিষ্যতের কল্পনা করেছে। বলছে, ওয়াশিংটনের স্বার্থে আধিপত্য বজায় রাখার পরিবর্তে, মধ্যপ্রাচ্য ‘ক্রমবর্ধমানভাবে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের উৎস এবং গন্তব্যে পরিণত হবে’, যার মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলকে ‘অংশীদারত্ব, বন্ধুত্ব এবং বিনিয়োগের স্থান হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে, মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও সহিংসতায় জর্জরিত। গাজায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারী ও সেনাদের মারাত্মক অভিযান বাড়ছে। ইসরায়েল লেবাননেও তার বিমান হামলা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা দুর্বল হিজবুল্লাহকে বলপূর্বক নিরস্ত্র করতে দেশটির বিরুদ্ধে আরেকটি সর্বাত্মক হামলার ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সিরিয়ায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের এক বছর পরেও, ইসরায়েল দেশটির দক্ষিণে অধিকৃত গোলান মালভূমির বাইরে সামরিকভাবে আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টায় অনুপ্রবেশ এবং হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি তার আপসহীন অঙ্গীকার নিয়ে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া, ইরাক এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রেখে এই অঞ্চলে গভীরভাবে যুক্ত রয়েছে।
এই নথি স্বীকার করে যে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ এখনো রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ‘ইসরায়েল যেন সুরক্ষিত থাকে’ তা নিশ্চিত করা এবং জ্বালানি সরবরাহ ও শিপিং লেনগুলো রক্ষা করা। এতে বলা হয়েছে, ‘কিন্তু সেই দিনগুলি শেষ হয়েছে যখন মধ্যপ্রাচ্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং দৈনন্দিন কার্যকারিতা—উভয় ক্ষেত্রেই আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতিতে আধিপত্য বিস্তার করত—মধ্যপ্রাচ্য আর গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে নয়, বরং এটি এখন আর সেই স্থির জ্বালাতন, এবং আসন্ন বিপর্যয়ের সম্ভাব্য উৎস নয়, যা একসময় ছিল।’
ফ্লেক্সিবল রিয়্যালিজম বা নমনীয় বাস্তববাদ
এই নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে নিজের স্বার্থ অনুসরণ করবে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ওয়াশিংটন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রসারের জন্য চাপ দেবে না। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বের জাতিগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক এবং শান্তিপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাই, তাদের ঐতিহ্য ও ইতিহাস থেকে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে এমন গণতান্ত্রিক বা অন্যান্য সামাজিক পরিবর্তন তাদের ওপর চাপিয়ে না দিয়েই।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা স্বীকার ও নিশ্চিত করি যে—এমন একটি বাস্তবসম্মত মূল্যায়নের ভিত্তিতে কাজ করায় বা আমাদের শাসন ব্যবস্থা ও সমাজ থেকে ভিন্ন দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখায় কোনো অসংগতি বা ভণ্ডামি নেই, এমনকি যখন আমরা আমাদের অভিন্ন নিয়মগুলো বজায় রাখতে সমমনা বন্ধুদের ওপর চাপ সৃষ্টি করি, তখন তা করতে গিয়ে আমরা আমাদের স্বার্থকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই।’
তবে, এই কৌশল ইঙ্গিত দেয় যে যুক্তরাষ্ট্র এখনো কিছু দেশকে—বিশেষত পশ্চিমা অংশীদারদের—গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা মূল্যবোধের ওপর চাপ দেবে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ইউরোপ, অ্যাংলোস্ফিয়ার এবং বাকি গণতান্ত্রিক বিশ্বের অভিজাত-চালিত, মূল স্বাধীনতাগুলোর ওপর অগণতান্ত্রিক সীমাবদ্ধতার বিরোধিতা করব, বিশেষ করে আমাদের মিত্রদের মধ্যে।’
তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে (সিআইএ) অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, মার্কিন প্রশাসনের কৌশল মূলত
১৭ অক্টোবর ২০২৫
ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিল সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে নতুন বিরোধ তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা এখন বড় রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
মামদানির হুমকির তোয়াক্কা না করে ৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক সফরের ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। যেকোনো সময় তিনি নিউইয়র্ক সফর করতেন পারেন বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিটি মেয়রের কি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আছে?
৯ ঘণ্টা আগে
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ভেনেজুয়েলায় মাদক পাচারের অভিযোগে অন্তত ২১টি নৌযানে মার্কিন সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতি বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে চড়া হচ্ছে রাজনৈতিক বক্তব্য। এমন পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার ওপর সম্ভাব্য মার্কিন সামরিক হামলার আশঙ্কা ক্রমে ঘনিয়ে আসছে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ভেনেজুয়েলায় মাদক পাচারের অভিযোগে অন্তত ২১টি নৌযানে মার্কিন সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দেয়নি। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, কোকেনসহ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর প্রধান উৎস ভেনেজুয়েলা নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো বলেছেন, ভেনেজুয়েলার ভেতরে স্থল অভিযান বিবেচনায় নেই, আবার কখনো বলেছেন, তিনি তা বাতিলও করছেন না। তবে তিনি সিআইএকে ভেনেজুয়েলার ভেতরে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো দাবি করছেন, ট্রাম্পের উদ্দেশ্য হলো তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানো। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, তাঁর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের সব চেষ্টা প্রতিহত করবে।
ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হামলা কীভাবে হতে পারে
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে ভেনেজুয়েলাকে লক্ষ্য করে একাধিক সামরিক বিকল্প রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই স্থলবাহিনীর পরিবর্তে বিমান ও নৌশক্তি ব্যবহার করা হতে পারে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান সাগরে নৌ ও বিমানবাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়েছে। এর মধ্যে আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইসি) উপদেষ্টা এবং সাবেক মেরিন কর্নেল মার্ক ক্যানসিয়ান আল জাজিরাকে বলেন, বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। তবে ভেনেজুয়েলার শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থার কারণে প্রথম হামলা সম্ভবত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন সাম্প্রতিক বক্তব্যে মাদুরো সরকারের সঙ্গে কথিত ড্রাগ কার্টেল-সংযোগের কথা বলছে। বিশ্লেষকদের মতে, মাদকসম্পর্কিত অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালালে আন্তর্জাতিকভাবে সহজেই এটিকে ন্যায্যতা দেওয়া যাবে এবং দ্রুত অভিযান শেষ করাও সহজ।
স্থলযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রায় নেই
প্রায় সব বিশেষজ্ঞ স্থল আক্রমণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। অরিনোকো রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা এলিয়াস ফেরর বলেন, এই মুহূর্তে হামলার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, এই অঞ্চলে স্থল আক্রমণের জন্য মার্কিন বাহিনীর যথেষ্ট শক্তি নেই।
নেদারল্যান্ডসের লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, ‘স্থল অভিযান আইনগত জটিলতা, কংগ্রেসের বিরোধিতা এবং ইরাক-আফগানিস্তানের অভিজ্ঞতার কারণে খুব একটা সমর্থন পাবে না।’
সান্তিনো রেজিলমে আরও বলেন, বিষয়টি ‘হামলা হবে’ নাকি ‘হবে না’, এই দ্বৈততার বদলে ‘সীমিত কিন্তু ক্রমবর্ধমান সামরিক ব্যবহারের বিস্তৃত পরিসর’ হিসেবে দেখা উচিত।
ভেনেজুয়েলার জন্য এর অর্থ কী
ওয়াশিংটনের কিছু নীতিনির্ধারক মনে করেন, হামলা হলে দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসতে পারে। তবে বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছেন, এটি বরং অস্থিরতা বাড়াবে।
ফেরর বলেন, এমন হামলা ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দেবে। সশস্ত্র গোষ্ঠী ক্ষমতাশালী হয়ে উঠবে। সেনাবাহিনী বা রাজনৈতিক অপরাধী প্যারামিলিশিয়ারা দেশের বিভিন্ন অংশ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তাঁর মতে, এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিরোধী দল; কারণ, তাদের কোনো সশস্ত্র শাখা নেই।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, কোনো দেশে বাইরের আগ্রাসন সাধারণত ওই দেশের সরকারকে শক্তিশালী করে। এর ফলে ‘র্যালি-অ্যারাউন্ড-দ্য-ফ্ল্যাগ এফেক্ট’ তৈরি হবে। এটি জাতীয়তাবাদী সমর্থন তৈরি করবে এবং সরকার ভিন্নমত দমন করার অজুহাত পাবে।
লিবিয়া, ইরাকসহ বহু দেশের উদাহরণ দেখিয়ে সান্তিনো রেজিলমে বলেন, বহিরাগত হস্তক্ষেপ খুব কম দেশেই স্থিতিশীল গণতন্ত্র এনেছে।
মাদুরো সরকারও প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জিং ভঙ্গি নিয়েছে। নভেম্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিওসদাদো কাবেলো বলেন, ‘তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) মনে করে, বোমা ফেলে সব শেষ করবে। এখানে? এই দেশে?’
মাদুরোও বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, কিন্তু দাসের মতো শান্তি নয়। সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ভিত্তিতে শান্তি চাই।’
মার্কিন কৌশল কী
সিএসআইসির উপদেষ্টা এবং সাবেক মেরিন কর্নেল মার্ক ক্যানসিয়ান জানান, মাদুরোর প্রতি ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনীর যে আনুগত্য, সেটা দুর্বল করতে কাজ করছে সিআইএ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীকে বার্তা দিতে পারে, তারা যদি লড়াই না করে ব্যারাকে থাকে, তাহলে তাদের ওপর হামলা হবে না।
১৯৯১ সালের ডেজার্ট স্টর্মে (উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়) যুক্তরাষ্ট্র একই কৌশল ব্যবহার করেছিল। এখানে মার্কিন কর্মকর্তারা গোপনে কিছু ইরাকি ইউনিটকে সংকেত দিয়েছিলেন যে তারা যদি লড়াই না করে ব্যারাকে থাকে, তবে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হবে না। এই কৌশল প্রতিরোধের মাত্রা কমাতে সাহায্য করেছিল।
তবে ক্যানসিয়ান মনে করেন, মাদুরোর সরকার ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী থেকে তাদের বিরোধী মতাদর্শীদের সরিয়ে ফেলেছে এবং লড়াইয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনী কী করতে পারে
অরিনোকো রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা এলিয়াস ফেরর বলেন, সবকিছু নির্ভর করবে হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কী বার্তা দেয় তার ওপর।
ওয়াশিংটনের সামনে দুটি পথ রয়েছে। প্রথমত, তারা সামরিক বাহিনীকে বলবে, ‘আমরা সফল হলে তোমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, ব্যবসা ও ক্ষমতায় থাকতে পারবে।’ দ্বিতীয়ত, ইরাকে ‘ডি-বাথিফিকেশনের’ মতো সব অফিসার-সৈন্যকে সরিয়ে দেওয়া।
ফেররের মতে, সামরিক বাহিনীকে কোণঠাসা করলে দেশজুড়ে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ দেখা দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, ডি-বাথিফিকেশন (De-Ba’athification) হলো ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন প্রোভিশনাল অথরিটির (সিপিএ) একটি নীতি। এর লক্ষ্য ছিল সাদ্দাম হোসেনের বাথ পার্টির (Ba’ath Party) সব সদস্যকে সরকারি পদ, প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী থেকে অপসারণ করে ইরাকের সমাজকে বাথবাদী প্রভাবমুক্ত করা।
সাধারণ ভেনেজুয়েলানদের প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে
বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হবে। হাইপারইনফ্লেশন বা চরম মুদ্রাস্ফীতি, দীর্ঘমেয়াদি সংকট, আর্থিক পতন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাস্তু সংকট তৈরি হতে পারে।
২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার ৭৯ লাখ অর্থাৎ ২৮-৩০ শতাংশ মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, এমন অবস্থায় মার্কিন হামলা জনগণের কাছে হবে ভয়াবহ নিরাপত্তাহীনতা। খাদ্য, ওষুধ, বিদ্যুৎ ও মৌলিক সেবার ওপর আরও চাপ তৈরি হবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কেমন হবে
চীন ভেনেজুয়েলার অন্যতম বড় অর্থনৈতিক অংশীদার ও ঋণদাতা। বিশ্লেষকদের মতে, তারা মাদুরোর প্রতি কূটনৈতিক সমর্থন বজায় রাখবে, কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে সরাসরি ভূমিকা সীমিত থাকবে।
ভেনেজুয়েলান বিশ্লেষক কার্লোস পিনা বলেন, সশস্ত্র সংঘাত শুরু হলে চীনের প্রভাব সীমিত হবে। অন্যদিকে রাশিয়া ভেনেজুয়েলার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা সহায়তাসহ সামরিক সহযোগিতা বজায় রেখেছে। পিনার মতে, রাশিয়া সামরিক পরামর্শে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে দুই দেশই রাজনৈতিকভাবে মাদুরোর পাশে থাকবে।
মার্কিন আক্রমণ কি অন্য দেশেও ছড়াতে পারে
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, ভেনেজুয়েলার ঘটনাকে সামনে রেখে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশেও একই মডেল প্রয়োগ করা হতে পারে। চলতি সপ্তাহে এক বৈঠকে ট্রাম্প সতর্ক করেন, যেকোনো মাদক উৎপাদনকারী দেশই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি কলম্বিয়ার কোকেন উৎপাদনের কথা তুলে ধরেন।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে মার্কিন পদক্ষেপ একক দেশের নীতি নয়; বরং জটিল রাজনৈতিক সংকটগুলোকে ‘নার্কো-টেররিস্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করে সামরিক হস্তক্ষেপ বৈধ করার এক নতুন ছক। যদি এই পদ্ধতি অন্যান্য দেশে প্রয়োগ করা হয়, তবে আন্তর্জাতিক আইন ও আঞ্চলিক শান্তি প্রক্রিয়া আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, এতে ড্রাগ ট্রাফিকিং, অভিবাসন সংকটসহ আরও অনেক সমস্যার সমাধান সামরিকীকরণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এগুলো আর সামাজিক-অর্থনৈতিক সমস্যা থাকবে না।
(কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন জগৎপতি বর্মা)

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতি বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে চড়া হচ্ছে রাজনৈতিক বক্তব্য। এমন পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার ওপর সম্ভাব্য মার্কিন সামরিক হামলার আশঙ্কা ক্রমে ঘনিয়ে আসছে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ভেনেজুয়েলায় মাদক পাচারের অভিযোগে অন্তত ২১টি নৌযানে মার্কিন সামরিক বাহিনী হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব নৌকা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচার করছিল এবং তা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দেয়নি। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, কোকেনসহ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর প্রধান উৎস ভেনেজুয়েলা নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো বলেছেন, ভেনেজুয়েলার ভেতরে স্থল অভিযান বিবেচনায় নেই, আবার কখনো বলেছেন, তিনি তা বাতিলও করছেন না। তবে তিনি সিআইএকে ভেনেজুয়েলার ভেতরে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো দাবি করছেন, ট্রাম্পের উদ্দেশ্য হলো তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানো। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, তাঁর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের সব চেষ্টা প্রতিহত করবে।
ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হামলা কীভাবে হতে পারে
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে ভেনেজুয়েলাকে লক্ষ্য করে একাধিক সামরিক বিকল্প রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই স্থলবাহিনীর পরিবর্তে বিমান ও নৌশক্তি ব্যবহার করা হতে পারে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান সাগরে নৌ ও বিমানবাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়েছে। এর মধ্যে আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইসি) উপদেষ্টা এবং সাবেক মেরিন কর্নেল মার্ক ক্যানসিয়ান আল জাজিরাকে বলেন, বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। তবে ভেনেজুয়েলার শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থার কারণে প্রথম হামলা সম্ভবত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন সাম্প্রতিক বক্তব্যে মাদুরো সরকারের সঙ্গে কথিত ড্রাগ কার্টেল-সংযোগের কথা বলছে। বিশ্লেষকদের মতে, মাদকসম্পর্কিত অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালালে আন্তর্জাতিকভাবে সহজেই এটিকে ন্যায্যতা দেওয়া যাবে এবং দ্রুত অভিযান শেষ করাও সহজ।
স্থলযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রায় নেই
প্রায় সব বিশেষজ্ঞ স্থল আক্রমণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। অরিনোকো রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা এলিয়াস ফেরর বলেন, এই মুহূর্তে হামলার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, এই অঞ্চলে স্থল আক্রমণের জন্য মার্কিন বাহিনীর যথেষ্ট শক্তি নেই।
নেদারল্যান্ডসের লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, ‘স্থল অভিযান আইনগত জটিলতা, কংগ্রেসের বিরোধিতা এবং ইরাক-আফগানিস্তানের অভিজ্ঞতার কারণে খুব একটা সমর্থন পাবে না।’
সান্তিনো রেজিলমে আরও বলেন, বিষয়টি ‘হামলা হবে’ নাকি ‘হবে না’, এই দ্বৈততার বদলে ‘সীমিত কিন্তু ক্রমবর্ধমান সামরিক ব্যবহারের বিস্তৃত পরিসর’ হিসেবে দেখা উচিত।
ভেনেজুয়েলার জন্য এর অর্থ কী
ওয়াশিংটনের কিছু নীতিনির্ধারক মনে করেন, হামলা হলে দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসতে পারে। তবে বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছেন, এটি বরং অস্থিরতা বাড়াবে।
ফেরর বলেন, এমন হামলা ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দেবে। সশস্ত্র গোষ্ঠী ক্ষমতাশালী হয়ে উঠবে। সেনাবাহিনী বা রাজনৈতিক অপরাধী প্যারামিলিশিয়ারা দেশের বিভিন্ন অংশ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তাঁর মতে, এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিরোধী দল; কারণ, তাদের কোনো সশস্ত্র শাখা নেই।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, কোনো দেশে বাইরের আগ্রাসন সাধারণত ওই দেশের সরকারকে শক্তিশালী করে। এর ফলে ‘র্যালি-অ্যারাউন্ড-দ্য-ফ্ল্যাগ এফেক্ট’ তৈরি হবে। এটি জাতীয়তাবাদী সমর্থন তৈরি করবে এবং সরকার ভিন্নমত দমন করার অজুহাত পাবে।
লিবিয়া, ইরাকসহ বহু দেশের উদাহরণ দেখিয়ে সান্তিনো রেজিলমে বলেন, বহিরাগত হস্তক্ষেপ খুব কম দেশেই স্থিতিশীল গণতন্ত্র এনেছে।
মাদুরো সরকারও প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জিং ভঙ্গি নিয়েছে। নভেম্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিওসদাদো কাবেলো বলেন, ‘তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) মনে করে, বোমা ফেলে সব শেষ করবে। এখানে? এই দেশে?’
মাদুরোও বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, কিন্তু দাসের মতো শান্তি নয়। সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ভিত্তিতে শান্তি চাই।’
মার্কিন কৌশল কী
সিএসআইসির উপদেষ্টা এবং সাবেক মেরিন কর্নেল মার্ক ক্যানসিয়ান জানান, মাদুরোর প্রতি ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনীর যে আনুগত্য, সেটা দুর্বল করতে কাজ করছে সিআইএ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীকে বার্তা দিতে পারে, তারা যদি লড়াই না করে ব্যারাকে থাকে, তাহলে তাদের ওপর হামলা হবে না।
১৯৯১ সালের ডেজার্ট স্টর্মে (উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়) যুক্তরাষ্ট্র একই কৌশল ব্যবহার করেছিল। এখানে মার্কিন কর্মকর্তারা গোপনে কিছু ইরাকি ইউনিটকে সংকেত দিয়েছিলেন যে তারা যদি লড়াই না করে ব্যারাকে থাকে, তবে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হবে না। এই কৌশল প্রতিরোধের মাত্রা কমাতে সাহায্য করেছিল।
তবে ক্যানসিয়ান মনে করেন, মাদুরোর সরকার ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী থেকে তাদের বিরোধী মতাদর্শীদের সরিয়ে ফেলেছে এবং লড়াইয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনী কী করতে পারে
অরিনোকো রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা এলিয়াস ফেরর বলেন, সবকিছু নির্ভর করবে হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কী বার্তা দেয় তার ওপর।
ওয়াশিংটনের সামনে দুটি পথ রয়েছে। প্রথমত, তারা সামরিক বাহিনীকে বলবে, ‘আমরা সফল হলে তোমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, ব্যবসা ও ক্ষমতায় থাকতে পারবে।’ দ্বিতীয়ত, ইরাকে ‘ডি-বাথিফিকেশনের’ মতো সব অফিসার-সৈন্যকে সরিয়ে দেওয়া।
ফেররের মতে, সামরিক বাহিনীকে কোণঠাসা করলে দেশজুড়ে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ দেখা দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, ডি-বাথিফিকেশন (De-Ba’athification) হলো ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন প্রোভিশনাল অথরিটির (সিপিএ) একটি নীতি। এর লক্ষ্য ছিল সাদ্দাম হোসেনের বাথ পার্টির (Ba’ath Party) সব সদস্যকে সরকারি পদ, প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী থেকে অপসারণ করে ইরাকের সমাজকে বাথবাদী প্রভাবমুক্ত করা।
সাধারণ ভেনেজুয়েলানদের প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে
বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হবে। হাইপারইনফ্লেশন বা চরম মুদ্রাস্ফীতি, দীর্ঘমেয়াদি সংকট, আর্থিক পতন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাস্তু সংকট তৈরি হতে পারে।
২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার ৭৯ লাখ অর্থাৎ ২৮-৩০ শতাংশ মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, এমন অবস্থায় মার্কিন হামলা জনগণের কাছে হবে ভয়াবহ নিরাপত্তাহীনতা। খাদ্য, ওষুধ, বিদ্যুৎ ও মৌলিক সেবার ওপর আরও চাপ তৈরি হবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কেমন হবে
চীন ভেনেজুয়েলার অন্যতম বড় অর্থনৈতিক অংশীদার ও ঋণদাতা। বিশ্লেষকদের মতে, তারা মাদুরোর প্রতি কূটনৈতিক সমর্থন বজায় রাখবে, কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে সরাসরি ভূমিকা সীমিত থাকবে।
ভেনেজুয়েলান বিশ্লেষক কার্লোস পিনা বলেন, সশস্ত্র সংঘাত শুরু হলে চীনের প্রভাব সীমিত হবে। অন্যদিকে রাশিয়া ভেনেজুয়েলার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা সহায়তাসহ সামরিক সহযোগিতা বজায় রেখেছে। পিনার মতে, রাশিয়া সামরিক পরামর্শে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে দুই দেশই রাজনৈতিকভাবে মাদুরোর পাশে থাকবে।
মার্কিন আক্রমণ কি অন্য দেশেও ছড়াতে পারে
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, ভেনেজুয়েলার ঘটনাকে সামনে রেখে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশেও একই মডেল প্রয়োগ করা হতে পারে। চলতি সপ্তাহে এক বৈঠকে ট্রাম্প সতর্ক করেন, যেকোনো মাদক উৎপাদনকারী দেশই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি কলম্বিয়ার কোকেন উৎপাদনের কথা তুলে ধরেন।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সান্তিনো রেজিলমে বলেন, ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে মার্কিন পদক্ষেপ একক দেশের নীতি নয়; বরং জটিল রাজনৈতিক সংকটগুলোকে ‘নার্কো-টেররিস্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করে সামরিক হস্তক্ষেপ বৈধ করার এক নতুন ছক। যদি এই পদ্ধতি অন্যান্য দেশে প্রয়োগ করা হয়, তবে আন্তর্জাতিক আইন ও আঞ্চলিক শান্তি প্রক্রিয়া আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, এতে ড্রাগ ট্রাফিকিং, অভিবাসন সংকটসহ আরও অনেক সমস্যার সমাধান সামরিকীকরণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এগুলো আর সামাজিক-অর্থনৈতিক সমস্যা থাকবে না।
(কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন জগৎপতি বর্মা)

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে (সিআইএ) অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, মার্কিন প্রশাসনের কৌশল মূলত
১৭ অক্টোবর ২০২৫
ইউক্রেন যুদ্ধের তহবিল সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে নতুন বিরোধ তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপে জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা এখন বড় রাজনৈতিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
মামদানির হুমকির তোয়াক্কা না করে ৩ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক সফরের ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। যেকোনো সময় তিনি নিউইয়র্ক সফর করতেন পারেন বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিটি মেয়রের কি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আছে?
৯ ঘণ্টা আগে
পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক আধিপত্যের ওপর জোর দেওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
২ দিন আগে