Ajker Patrika

মধ্যপ্রাচ্যে গুরুত্ব কমিয়ে লাতিনে নজর যুক্তরাষ্ট্রের, নয়া নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্প প্রশাসন নয়া জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে লাতিনের দিকেই বেশি মনযোগ দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প প্রশাসন নয়া জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে লাতিনের দিকেই বেশি মনযোগ দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক আধিপত্যের ওপর জোর দেওয়ারই প্রতিচ্ছবি।

গত শুক্রবার প্রকাশিত এই ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি বা জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নথিতে চীনে সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখার এবং তাইওয়ান দখল করা থেকে চীনকে বিরত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ২০২২ সালে প্রকাশিত এর পূর্ববর্তী নথির মতো নতুন নথিতে চীনের ওপর নজর দেওয়া হয়নি কিংবা বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।

তার বদলে, মার্কিন প্রশাসন হস্তক্ষেপবিরোধী নীতির ওপর জোর দিয়েছে। এটি বহুপাক্ষিকতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি ট্রাম্পের অনীহার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর মৌলিক রাজনৈতিক একক হলো জাতি-রাষ্ট্র এবং এটি ভবিষ্যতেও জাতি-রাষ্ট্রই থাকবে।’

ট্রাম্পের প্রশাসন নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে যেসব পরিবর্তন এনেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো নিচে দেওয়া হলো—

পশ্চিম গোলার্ধে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা

যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম গোলার্ধে ‘মার্কিন প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ করতে চাইছে। এটি করতে গিয়ে তারা মনরো মতবাদকে (Monroe Doctrine) পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করছে। মনরো মতবাদ হলো ১৮০০ সালের দিকের এক মার্কিন নীতি, যা আমেরিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপন ও হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল। এই গোলার্ধে বিদেশি প্রভাব ঠেকানো ছাড়াও, মাদক ব্যবসা ও অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলা করার ওপর জোর দেবে এবং ‘বেসরকারি অর্থনীতিগুলো’-কে উৎসাহিত করবে।

নথিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এই অঞ্চলের সরকার, রাজনৈতিক দল এবং আন্দোলনগুলোকে পুরস্কৃত করব ও উৎসাহিত করব, যারা আমাদের নীতি ও কৌশলের সঙ্গে ব্যাপক অর্থে সংগতিপূর্ণ।’ ট্রাম্প ইতিমধ্যেই লাতিন আমেরিকায় রক্ষণশীল রাজনীতিকদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে এবং ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই-এর অধীনে আর্জেন্টাইন অর্থনীতিকে ৪০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে উদ্ধার করে এই পদ্ধতি কার্যকর করেছেন।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা এই-গোলার্ধের বাইরের প্রতিযোগীদের আমাদের গোলার্ধে সামরিক বা অন্যান্য হুমকিমূলক সক্ষমতা স্থাপন করা কিংবা কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলো নিজেদের দখলে নেওয়া বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অস্বীকার করব।’ মনরো মতবাদের এই ‘ট্রাম্পীয় অনুসিদ্ধান্ত’ হলো আমেরিকান শক্তি ও অগ্রাধিকারের একটি সাধারণ জ্ঞানসম্মত এবং শক্তিশালী পুনরুদ্ধার, যা আমেরিকান সুরক্ষার স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

নথিতে এও বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্পদ পশ্চিম গোলার্ধের দিকে সরিয়ে আনা হবে, ‘যেসব রণাঙ্গনের আপেক্ষিক গুরুত্ব সাম্প্রতিক দশকগুলোতে আমেরিকান জাতীয় সুরক্ষার কাছে কমে এসেছে, সেখান থেকে দূরে সরিয়ে আনা হবে।’

এই কৌশল এমন সময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরে সেসব নৌকার ওপর মারাত্মক হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি এসব নৌকা মাদক বহন করছে। ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার চারপাশেও সামরিক শক্তি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। আর এই নির্দেশ ওয়াশিংটন হয়তো বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে শক্তি প্রয়োগে উৎখাত করতে চাইছে—এমন জল্পনা বাড়িয়েছে।

তাইওয়ান নিয়ে সংঘাত ঠেকানো

এর আগের দুটি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে—যার মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম আমলে প্রকাশিত একটিও ছিল—চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। কিন্তু এই নতুন কৌশলে বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সামনে ও কেন্দ্রে রাখা হয়নি।

তবুও, এই নথিতে এশিয়াতে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় জেতা এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে, এটি বেইজিংয়ের মোকাবিলায় ভারসাম্য তৈরির জন্য এশীয় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে, যেখানে ভারতকে আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগরীয় সুরক্ষায় নয়াদিল্লিকে অবদান রাখতে উৎসাহিত করতে হলে আমাদের অবশ্যই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক (ও অন্যান্য) সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।’

নথিতে তাইওয়ানকে চীনের বলপূর্বক দখল করে নেওয়ার ঝুঁকিগুলো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই স্ব-শাসিত দ্বীপটি—যা বেইজিং নিজের বলে দাবি করে—কম্পিউটার চিপের অন্যতম প্রধান উৎপাদক। এতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, তাইওয়ান দখল করলে চীন এশিয়া প্যাসিফিকের দ্বিতীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশাধিকার পাবে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে এর অবস্থান জোরদার করবে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।

নথিতে বলা হয়েছে, ‘অতএব তাইওয়ান নিয়ে একটি সংঘাত ঠেকানো, আদর্শগতভাবে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মাধ্যমে, একটি অগ্রাধিকার।’ এই কৌশল সংঘাত এড়াতে এই অঞ্চলের মার্কিন অংশীদারদের তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এমন একটি সামরিক বাহিনী তৈরি করব যা প্রথম দ্বীপপুঞ্জের যেকোনো জায়গায় আগ্রাসন ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম কিন্তু আমেরিকান সামরিক বাহিনী একা এটি করতে পারে না, আর করা উচিতও নয়। আমাদের মিত্রদের সম্মিলিত সুরক্ষার জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে—এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, আরও অনেক বেশি কাজ করতে হবে।’

ইউরোপের সমালোচনা

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের সমালোচনামূলক বক্তব্যের ওপর কড়াকড়ি আরোপ এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের লক্ষ্য করতে বিচার বিভাগকে নির্দেশ দিলেও নতুন কৌশলপত্রে ইউরোপের ‘বাক্‌স্বাধীনতার ওপর সেন্সরশিপ এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার দমন’—এর জন্য তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এই কৌশল ঘোষণা করেছে, ইউরোপ অভিবাসন নীতি এবং ‘নিয়ন্ত্রণমূলক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির ওপর ব্যর্থ মনোযোগ’—এর কারণে ‘সভ্যতাগত বিলুপ্তির আশঙ্কা’র মুখোমুখি।

এতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের জন্য ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের ‘অবাস্তব প্রত্যাশার’ ওপরও আঘাত হানা হয়েছে। বলা হয়েছে যে সংঘাতের সমাপ্তি ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ‘মৌলিক স্বার্থ’ রয়েছে। যুদ্ধ শেষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব—যা রাশিয়াকে পূর্ব ইউক্রেনের বৃহৎ অঞ্চল ধরে রাখার সুযোগ দেবে—গত মাসে কিছু ইউরোপীয় নেতার কাছ থেকে বিরল সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল।

নথিতে কোনো উদাহরণ না দিয়েই ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে উল্টো পথে চালনার’ অভিযোগ আনা হয়েছে ইউরোপের ওপর। যার ফলে ইউরোপীয় সরকারগুলোর কিছু অংশের তাদের জনগণের শান্তির আকাঙ্ক্ষার প্রতি প্রতিক্রিয়া না দেখানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই নথিতে আরও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো সেই সুরক্ষা ছাতা প্রত্যাহার করে নিতে পারে যা দীর্ঘকাল ধরে মহাদেশের ওপর মেলে ধরে রাখা আছে।

নথিতে লেখা হয়েছে, তার বদলে ওয়াশিংটন অগ্রাধিকার দেবে ‘ইউরোপকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে এবং এক সারিতে থাকা সার্বভৌম জাতিগুলোর একটি গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করতে সক্ষম করার ওপর, যার মধ্যে রয়েছে কোনো প্রতিকূল শক্তি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে তার নিজস্ব সুরক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব নেওয়া।’

মধ্যপ্রাচ্য থেকে মনোযোগ সরানো

জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নথিতে জোর দেওয়া হয়েছে যে, মধ্যপ্রাচ্য আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কৌশলগত অগ্রাধিকার নয়। এতে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলকে এত গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা পূর্বের বিবেচনাগুলো—যথা, শক্তি উৎপাদন এবং ব্যাপক সংঘাত—‘আর কার্যকর নয়।’ যুক্তরাষ্ট্র নিজের শক্তি উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে, ‘মধ্যপ্রাচ্যের ওপর মনোযোগ দেওয়ার আমেরিকার ঐতিহাসিক কারণ কমে আসবে।’

বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে সংঘাত ও সহিংসতাও কমছে। যেমন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জুন মাসে ইরান-এর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, যা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস’ করেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সমস্যাসংকুল গতিশীলতা হিসেবে রয়ে গেছে, তবে বর্তমানে এই সমস্যা শিরোনামগুলো যতটা বিশ্বাস করতে উৎসাহিত করে, তার চেয়ে কম।’

মার্কিন প্রশাসন এই অঞ্চলের জন্য একটি সোনালি ভবিষ্যতের কল্পনা করেছে। বলছে, ওয়াশিংটনের স্বার্থে আধিপত্য বজায় রাখার পরিবর্তে, মধ্যপ্রাচ্য ‘ক্রমবর্ধমানভাবে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের উৎস এবং গন্তব্যে পরিণত হবে’, যার মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলকে ‘অংশীদারত্ব, বন্ধুত্ব এবং বিনিয়োগের স্থান হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

কিন্তু বাস্তবে, মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও সহিংসতায় জর্জরিত। গাজায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারী ও সেনাদের মারাত্মক অভিযান বাড়ছে। ইসরায়েল লেবাননেও তার বিমান হামলা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা দুর্বল হিজবুল্লাহকে বলপূর্বক নিরস্ত্র করতে দেশটির বিরুদ্ধে আরেকটি সর্বাত্মক হামলার ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।

সিরিয়ায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের এক বছর পরেও, ইসরায়েল দেশটির দক্ষিণে অধিকৃত গোলান মালভূমির বাইরে সামরিকভাবে আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টায় অনুপ্রবেশ এবং হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি তার আপসহীন অঙ্গীকার নিয়ে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া, ইরাক এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রেখে এই অঞ্চলে গভীরভাবে যুক্ত রয়েছে।

এই নথি স্বীকার করে যে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ এখনো রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ‘ইসরায়েল যেন সুরক্ষিত থাকে’ তা নিশ্চিত করা এবং জ্বালানি সরবরাহ ও শিপিং লেনগুলো রক্ষা করা। এতে বলা হয়েছে, ‘কিন্তু সেই দিনগুলি শেষ হয়েছে যখন মধ্যপ্রাচ্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং দৈনন্দিন কার্যকারিতা—উভয় ক্ষেত্রেই আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতিতে আধিপত্য বিস্তার করত—মধ্যপ্রাচ্য আর গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে নয়, বরং এটি এখন আর সেই স্থির জ্বালাতন, এবং আসন্ন বিপর্যয়ের সম্ভাব্য উৎস নয়, যা একসময় ছিল।’

ফ্লেক্সিবল রিয়্যালিজম বা নমনীয় বাস্তববাদ

এই নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে নিজের স্বার্থ অনুসরণ করবে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ওয়াশিংটন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রসারের জন্য চাপ দেবে না। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বের জাতিগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক এবং শান্তিপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাই, তাদের ঐতিহ্য ও ইতিহাস থেকে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে এমন গণতান্ত্রিক বা অন্যান্য সামাজিক পরিবর্তন তাদের ওপর চাপিয়ে না দিয়েই।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা স্বীকার ও নিশ্চিত করি যে—এমন একটি বাস্তবসম্মত মূল্যায়নের ভিত্তিতে কাজ করায় বা আমাদের শাসন ব্যবস্থা ও সমাজ থেকে ভিন্ন দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখায় কোনো অসংগতি বা ভণ্ডামি নেই, এমনকি যখন আমরা আমাদের অভিন্ন নিয়মগুলো বজায় রাখতে সমমনা বন্ধুদের ওপর চাপ সৃষ্টি করি, তখন তা করতে গিয়ে আমরা আমাদের স্বার্থকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই।’

তবে, এই কৌশল ইঙ্গিত দেয় যে যুক্তরাষ্ট্র এখনো কিছু দেশকে—বিশেষত পশ্চিমা অংশীদারদের—গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা মূল্যবোধের ওপর চাপ দেবে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ইউরোপ, অ্যাংলোস্ফিয়ার এবং বাকি গণতান্ত্রিক বিশ্বের অভিজাত-চালিত, মূল স্বাধীনতাগুলোর ওপর অগণতান্ত্রিক সীমাবদ্ধতার বিরোধিতা করব, বিশেষ করে আমাদের মিত্রদের মধ্যে।’

তথ্যসূত্র: আল–জাজিরা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...