মারুফ ইসলাম
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটের জয় নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। তার মানে আবারও প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন এক সময়ের ডাকসাইটে এই নেতা। সবচেয়ে বেশি সময় দেশটির প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বপালনের রেকর্ডও তাঁর ঝুলিতেই।
নিজ দেশে ‘বিবি’ নামে পরিচিত ৭৩ বছর বয়সী এই নেতা এর আগে দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রথমবার ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত এবং দ্বিতীয়বার ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত। সর্বশেষ একটানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত বছর নির্বাচনে হেরে যান নেতানিয়াহু। পরে ইয়ার লাপিদের মধ্যপন্থী দল ইয়েস আতিদের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করে ইয়েমিনা পার্টি।
কিন্তু সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ও ইয়ার লাপিদের জোটে ফাটল দেখা দিলে আবারও নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। এই নির্বাচনে ১২০ সদস্যের পার্লামেন্টে (নেসেট) সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহেই নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে ইসরায়েলে।
ভূ-রাজনৈতিক কারণে পৃথিবীর মানচিত্রে ইসরায়েল গুরুত্বপূর্ণ দেশ। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, পরমাণু প্রকল্প, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক- ইত্যাদি কারণে ইসরায়েলের নেতৃত্বে কে থাকছেন, সেটি সব সময়ই বিশ্বের কাছে আগ্রহ পেয়ে এসেছে।
নেতানিয়াহু যেহেতু পরীক্ষিত নেতা, এর আগেও দীর্ঘ মেয়াদে তিনি দেশ পরিচালনা করেছেন, তাঁর দেশ পরিচালনার ধরন সম্পর্কে বিশ্ববাসী মোটামুটি ওয়াকিবহাল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি আগের মতোই ইসরায়েল পরিচালনা করবেন, না কি নীতি-কৌশলে পরিবর্তন আনবেন, সেটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
নেতানিয়াহুর জোটে এবার বেশ কয়েকটি কট্টর ডানপন্থী দল যুক্ত হয়েছে। তাদের অন্তর্ভুক্তির প্রভাব দলে ও সরকারের নীতি-কৌশলে পড়বে বলেই বিশ্বাস বিশ্লেষকদের। আর তাই এবার তার বিষয়ে জোরালো আলোচনা চলছে।
বিগত সময়ে নেতানিয়াহু কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একজন সতর্ক নেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তবে ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ইস্যুতে ছাড় দিতে তাঁর অনমনীয়তার জন্য বেশ খানিকটা সমালোচিতও ছিলেন। তখন নেতানিয়াহু চাননি পশ্চিম তীরে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হোক।
নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর নেতানিয়াহুর ওই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে কী? পশ্চিমা বিশ্লেষকদের ধারণা, তাঁর কাছে পরিবর্তন আশা করা বোকামি। তিনি জোট বেঁধেছেন বেন গাভির সঙ্গে। বেন গাভি হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যিনি ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে নানাভাবে সংঘাত উসকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বেন গাভির বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ- জেরুজালেমের টেম্পল মাউন্ট কমপ্লেক্সকে কেন্দ্র করে সংঘাত উসকে দিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করেছেন তিনি। টেম্পল মাউন্ট কমপ্লেক্স, যার আরেক নাম আল হারাম আল শরিফ এবং যেটি মুসলিম ও ইহুদি—উভয় সম্প্রদায়ের জন্য পবিত্র স্থান। সেখানে সংঘাত সৃষ্টি হলে, তা দাবানলের মতো সারা ইসরায়েলে ছড়িয়ে পড়বে, তাতে সন্দেহ নেই।
আগের নেতানিয়াহুর সঙ্গে এবারের নেতানিয়াহুর একটি সুস্পষ্ট পার্থক্য হচ্ছে, এবার তিনি ও তাঁর জোটের মিত্ররা ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থার সংস্কার চেয়েছেন। নির্বাচনের প্রচারণার শুরুর দিন থেকেই তাঁরা বিচারব্যবস্থার সংস্কার ইস্যুকে সামনে এনেছেন। নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থী জোট এবার বিচার বিভাগের রাজনীতিকরণ চান। তাঁদের দাবি, বিচারকদের নিয়োগ দেবে রাজনৈতিক নেতারা।
নেতানিয়াহুর জোটের এই চাওয়া যদি পূরণ হয়, নিঃসন্দেহে সরকারের ভারসাম্য দুর্বল হবে। অনেকেই ভাবছেন, নেতানিয়াহু কেন এমন সংস্কার চান? মূলত তাঁর বিরুদ্ধে চলমান ফৌজদারি মামলার বিচার থেকে পালাতেই নেতানিয়াহু বিচার বিভাগের সংস্কার চান। সোজা কথায়, সরাসরি নিজে হস্তক্ষেপ করতে চান। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে কূটনৈতিক বন্ধন দৃঢ় করেছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর প্রত্যাবর্তন সেসব সম্পর্ককে কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের জেরুজালেম ব্যুরো প্রধান প্যাট্রিক কিংসলে তো স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছেন, নেতানিয়াহু ইসরায়েলকে একটি অজানা ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবেন।
পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ফিলিস্তিনে সংঘাত আরও বাড়বে। কারণ তাঁর অতীত ইতিহাস তেমন ইঙ্গিতই দেয়। তাঁর সঙ্গে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে অতি কট্টর ডানপন্থী দলগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে, নেতানিয়াহুর জোট অংশীদারদের সম্পর্কে বাইডেন প্রশাসনের আপত্তি রয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের দিকে বাহরাইন, মরক্কো এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের যুগান্তকারী কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন নেতানিয়াহু। সেই সম্পর্কগুলোই নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। কারণ ওই একটাই—অতি ডানদের সঙ্গে জোট।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের এতজন প্রভাবশালী শিক্ষাবিদ আবদুল খালেক আবদুল্লাহ বলেছেন, ডানপন্থীদের উত্থান ইসরায়েল ও আরব আমিরাতের সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করবে। এমনকি ইসরায়েলের মিত্র দেশ সৌদি আরবের সঙ্গেও ইসরায়েলের সম্পর্ক নাজুক হতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
ইতিমধ্যে ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে খবর বেরিয়েছে, বেজালেল স্মোট্রিচ নতুন সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হতে চান। অন্যদিকে বেন গাভি পুলিশ বাহিনীর তত্ত্বাবধান করতে চান। সত্যিই যদি এই কট্টরপন্থী নেতারা এসব পদে দায়িত্ব পান, তবে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো, বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলো ব্যাপারটিকে মোটেও সহজভাবে নেবে না।
বেন গাভি ফিলিস্তিনের হেবরন শহরে বাস করেন। তিনি ইসরায়েলি চরমপন্থীদের রক্ষার জন্য আইন তৈরি করতে আগ্রহী। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অধিগ্রহণকেও তিনি মনেপ্রাণে সমর্থন করেন। ইসরায়েল থেকে যারা ফিলিস্তিনে গিয়ে জোরপূর্বক বসতি স্থাপন করছেন, তাদের সমর্থন দেওয়ার অগ্রভাগে রয়েছেন বেন গাভি। তাঁকে একসময় বন্দুক নিয়ে জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকায় দেখা গিয়েছিল। এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সরকারে ঠাঁই দিতে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু।
সুতরাং আগের নেতানিয়াহু এবং ১৪ মাস পরে বিরোধী দলের নেতা থেকে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া নেতানিয়াহু এক নন। তাঁকে এবার আগের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। একই সঙ্গে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত ইসরায়েলকে সামাল দেওয়াও বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, ব্রিটানিকা ও টাইমস অব ইসরায়েল
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটের জয় নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। তার মানে আবারও প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন এক সময়ের ডাকসাইটে এই নেতা। সবচেয়ে বেশি সময় দেশটির প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বপালনের রেকর্ডও তাঁর ঝুলিতেই।
নিজ দেশে ‘বিবি’ নামে পরিচিত ৭৩ বছর বয়সী এই নেতা এর আগে দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রথমবার ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত এবং দ্বিতীয়বার ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত। সর্বশেষ একটানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত বছর নির্বাচনে হেরে যান নেতানিয়াহু। পরে ইয়ার লাপিদের মধ্যপন্থী দল ইয়েস আতিদের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করে ইয়েমিনা পার্টি।
কিন্তু সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ও ইয়ার লাপিদের জোটে ফাটল দেখা দিলে আবারও নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। এই নির্বাচনে ১২০ সদস্যের পার্লামেন্টে (নেসেট) সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহেই নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে ইসরায়েলে।
ভূ-রাজনৈতিক কারণে পৃথিবীর মানচিত্রে ইসরায়েল গুরুত্বপূর্ণ দেশ। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, পরমাণু প্রকল্প, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক- ইত্যাদি কারণে ইসরায়েলের নেতৃত্বে কে থাকছেন, সেটি সব সময়ই বিশ্বের কাছে আগ্রহ পেয়ে এসেছে।
নেতানিয়াহু যেহেতু পরীক্ষিত নেতা, এর আগেও দীর্ঘ মেয়াদে তিনি দেশ পরিচালনা করেছেন, তাঁর দেশ পরিচালনার ধরন সম্পর্কে বিশ্ববাসী মোটামুটি ওয়াকিবহাল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি আগের মতোই ইসরায়েল পরিচালনা করবেন, না কি নীতি-কৌশলে পরিবর্তন আনবেন, সেটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
নেতানিয়াহুর জোটে এবার বেশ কয়েকটি কট্টর ডানপন্থী দল যুক্ত হয়েছে। তাদের অন্তর্ভুক্তির প্রভাব দলে ও সরকারের নীতি-কৌশলে পড়বে বলেই বিশ্বাস বিশ্লেষকদের। আর তাই এবার তার বিষয়ে জোরালো আলোচনা চলছে।
বিগত সময়ে নেতানিয়াহু কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একজন সতর্ক নেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তবে ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ইস্যুতে ছাড় দিতে তাঁর অনমনীয়তার জন্য বেশ খানিকটা সমালোচিতও ছিলেন। তখন নেতানিয়াহু চাননি পশ্চিম তীরে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হোক।
নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর নেতানিয়াহুর ওই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে কী? পশ্চিমা বিশ্লেষকদের ধারণা, তাঁর কাছে পরিবর্তন আশা করা বোকামি। তিনি জোট বেঁধেছেন বেন গাভির সঙ্গে। বেন গাভি হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যিনি ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে নানাভাবে সংঘাত উসকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বেন গাভির বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ- জেরুজালেমের টেম্পল মাউন্ট কমপ্লেক্সকে কেন্দ্র করে সংঘাত উসকে দিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করেছেন তিনি। টেম্পল মাউন্ট কমপ্লেক্স, যার আরেক নাম আল হারাম আল শরিফ এবং যেটি মুসলিম ও ইহুদি—উভয় সম্প্রদায়ের জন্য পবিত্র স্থান। সেখানে সংঘাত সৃষ্টি হলে, তা দাবানলের মতো সারা ইসরায়েলে ছড়িয়ে পড়বে, তাতে সন্দেহ নেই।
আগের নেতানিয়াহুর সঙ্গে এবারের নেতানিয়াহুর একটি সুস্পষ্ট পার্থক্য হচ্ছে, এবার তিনি ও তাঁর জোটের মিত্ররা ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থার সংস্কার চেয়েছেন। নির্বাচনের প্রচারণার শুরুর দিন থেকেই তাঁরা বিচারব্যবস্থার সংস্কার ইস্যুকে সামনে এনেছেন। নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থী জোট এবার বিচার বিভাগের রাজনীতিকরণ চান। তাঁদের দাবি, বিচারকদের নিয়োগ দেবে রাজনৈতিক নেতারা।
নেতানিয়াহুর জোটের এই চাওয়া যদি পূরণ হয়, নিঃসন্দেহে সরকারের ভারসাম্য দুর্বল হবে। অনেকেই ভাবছেন, নেতানিয়াহু কেন এমন সংস্কার চান? মূলত তাঁর বিরুদ্ধে চলমান ফৌজদারি মামলার বিচার থেকে পালাতেই নেতানিয়াহু বিচার বিভাগের সংস্কার চান। সোজা কথায়, সরাসরি নিজে হস্তক্ষেপ করতে চান। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে কূটনৈতিক বন্ধন দৃঢ় করেছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর প্রত্যাবর্তন সেসব সম্পর্ককে কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের জেরুজালেম ব্যুরো প্রধান প্যাট্রিক কিংসলে তো স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছেন, নেতানিয়াহু ইসরায়েলকে একটি অজানা ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবেন।
পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ফিলিস্তিনে সংঘাত আরও বাড়বে। কারণ তাঁর অতীত ইতিহাস তেমন ইঙ্গিতই দেয়। তাঁর সঙ্গে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে অতি কট্টর ডানপন্থী দলগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে, নেতানিয়াহুর জোট অংশীদারদের সম্পর্কে বাইডেন প্রশাসনের আপত্তি রয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের দিকে বাহরাইন, মরক্কো এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের যুগান্তকারী কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন নেতানিয়াহু। সেই সম্পর্কগুলোই নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। কারণ ওই একটাই—অতি ডানদের সঙ্গে জোট।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের এতজন প্রভাবশালী শিক্ষাবিদ আবদুল খালেক আবদুল্লাহ বলেছেন, ডানপন্থীদের উত্থান ইসরায়েল ও আরব আমিরাতের সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করবে। এমনকি ইসরায়েলের মিত্র দেশ সৌদি আরবের সঙ্গেও ইসরায়েলের সম্পর্ক নাজুক হতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
ইতিমধ্যে ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে খবর বেরিয়েছে, বেজালেল স্মোট্রিচ নতুন সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হতে চান। অন্যদিকে বেন গাভি পুলিশ বাহিনীর তত্ত্বাবধান করতে চান। সত্যিই যদি এই কট্টরপন্থী নেতারা এসব পদে দায়িত্ব পান, তবে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো, বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলো ব্যাপারটিকে মোটেও সহজভাবে নেবে না।
বেন গাভি ফিলিস্তিনের হেবরন শহরে বাস করেন। তিনি ইসরায়েলি চরমপন্থীদের রক্ষার জন্য আইন তৈরি করতে আগ্রহী। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অধিগ্রহণকেও তিনি মনেপ্রাণে সমর্থন করেন। ইসরায়েল থেকে যারা ফিলিস্তিনে গিয়ে জোরপূর্বক বসতি স্থাপন করছেন, তাদের সমর্থন দেওয়ার অগ্রভাগে রয়েছেন বেন গাভি। তাঁকে একসময় বন্দুক নিয়ে জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকায় দেখা গিয়েছিল। এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সরকারে ঠাঁই দিতে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু।
সুতরাং আগের নেতানিয়াহু এবং ১৪ মাস পরে বিরোধী দলের নেতা থেকে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া নেতানিয়াহু এক নন। তাঁকে এবার আগের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। একই সঙ্গে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত ইসরায়েলকে সামাল দেওয়াও বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, ব্রিটানিকা ও টাইমস অব ইসরায়েল
ভারতের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। দীর্ঘ সময় আলোচনার পর এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও এর বাণিজ্যিক গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম। কারণ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দুই দেশের মোট রপ্তানির ২ দশমিক ৫ শতাংশের কম। তা সত্ত্বেও দুই সরকার একে ‘ঐতিহাসিক’ বলে প্রচার করছ
৬ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের প্রথমার্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির গতি কিছুটা কমে এলেও তা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু গত শুক্রবার প্রকাশিত জুলাই মাসের পরিসংখ্যানে চাকরির হার ব্যাপক কম দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ট্রাম্প। ওই পরিসংখ্যানকে ‘জাল’ দাবি করে এর জন্য দায়িত্বশীল সরকারি সংস্থার প্রধানকে
৯ ঘণ্টা আগেভারতের অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা সামরিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর চীনা জে-১০সি যুদ্ধবিমানের হামলায় ফরাসি রাফালের পতন পশ্চিমা সামরিক প্রযুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তবে রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এর মূল কারণ ছিল ভারতের
১১ ঘণ্টা আগেগত এপ্রিলে ‘লিবারেশন ডে’ ঘোষণা দিয়ে বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এশিয়ার অর্থনীতি। দীর্ঘদিনের পুরোনো মার্কিন মিত্র জাপান থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আসিয়ান জোটের দেশগুলোসহ যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ওপর নির্ভরশ
২ দিন আগে