নূরুননবী শান্ত

১৯৯১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিয়েই আবৃত্তি সংগঠন স্বননে সম্পৃক্ত হলাম। ১৯৮১ সালে এই সংগঠনের গোড়াপত্তনের অন্যতম কুশীলব ছিলেন হাসান আজিজুল হক। স্বনন নামটি তাঁরই দেওয়া।
স্বনন সূত্রেই হাসান স্যারের সান্নিধ্য লাভ। মমতাজ উদ্দীন কলা ভবনের ১৩৭ নম্বর কক্ষটি ছিল হাসান স্যারের বসার ঘর। স্বননের প্রধান পুরুষ নাজিম মাহমুদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পর আমরা স্বননের বসার জায়গা হারিয়ে ফেললাম। বিশ্ববিদ্যালয় তখন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সন্ত্রাসী তৎপরতায় সন্ত্রস্ত। স্বননের কার্যক্রমসহ সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর বিবিধ বাধা আসছিল প্রশাসনের তরফ থেকে। একপর্যায়ে নিষিদ্ধ হয়ে গেল সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। সন্ধ্যার আগেই মেয়েদের হলে ফেরা বাধ্যতামূলক করা হলো। আড্ডা ও গানের শব্দ পেলেই প্রক্টরের বাহিনী এমনকি প্রক্টর নিজেও ধমক ও হুমকি দেওয়া শুরু করলেন। স্বনন বসার জায়গা হারাল। এমনকি আমাদের প্রিয় শিক্ষকগণ কবিতা পড়ার জন্য একটু জায়গা আমাদের দিতে পারছিলেন না ভয়ে। সেই ভীত-সন্ত্রস্ত ক্যাম্পাসে হাসান স্যার তাঁর মমতাজ উদ্দীন কলা ভবনের নিজ কক্ষের একটি চাবি আমাদের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, ‘যত দিন আমি আছি, আমার ঘরে বসবে তোমরা, আমি কাউকে ভয় পাই না।’
কেবল স্বনন নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি থিয়েটার গ্রুপ থেকে শুরু করে সব সাংস্কৃতিক সংগঠনের অভিভাবক ছিলেন তিনি। সে সময়কার ইসলামী ছাত্র শিবিরের ভয়াবহ হুমকিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রগতিশীল ছাত্র-ছাত্রীদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পরম প্রেরণা হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের। তাঁর বন্ধুদের অনেক সময়ই তাঁর বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করতে দেখেছি। তাঁরা মনে করতেন, হাসান এসব করতে গিয়ে লেখালেখির পেছনে কম সময় দিচ্ছেন! হ্যাঁ, কথা ঠিক। তবে তাঁর পরম বন্ধু নাজিম মাহমুদকে বলতে শুনেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দায়িত্ব পালন করার কথা, সে দায়িত্ব থেকে সরে গেছে। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে মানবিক, সাংস্কৃতিক ও মুক্তচিন্তা বিস্তারের বিকল্প প্রতিষ্ঠান করে তুলতে হাসান আজিজুল হক, নাজিম মাহমুদ, শহিদুল ইসলাম, রমেন্দ্রনাথ ঘোষ, আলী আনোয়ার, জুলফিকার মতিন, জাহেদুল হক টুকু, সনৎ কুমার সাহা, মলয় ভৌমিক, মোহাম্মদ নাসের প্রমুখ শিক্ষকদের স্বপ্রণোদিত ভূমিকা পালন করতে হয়েছে।
সত্যি বলতে কি হাসান আজিজুল ছিলেন হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর পথ প্রদর্শক। নতুন প্রজন্মকে ধর্মনিরপেক্ষ মুক্তচিন্তার পথ দেখাতে যত রকম বিকল্প খুঁজে পেয়েছেন, সব পদ্ধতিই অবলম্বন করেছেন হাসান আজিজুল হক ও তাঁর সতীর্থগণ। তাঁর ডাকনাম ‘কালো’। ওদিকে নাজিম মাহমুদের ডাকনাম ‘আলো’। নাজিম মাহমুদই সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খান সারোয়ার মুরশিদকে অনুরোধ করে হাসানকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছিলেন। তত দিনে হাসান তাঁর ‘শকুন’ গল্পের জন্য বিদ্বৎমহলে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। তা ছাড়া খান সারোয়ার মুরশিদ জানতেন তরুণ হাসানের পাণ্ডিত্য সম্পর্কে। কেননা, খুলনায় হাসান আজিজুল হক, কবি আবুবকর সিদ্দিক, খালেদ রশিদ গুরু, সাধন সরকারসহ এক ঝাঁক যুবক সন্দীপন নামক সংগঠনের মাধ্যমে ’৬৯-এর গণ-আন্দোলনের আগে থেকেই সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন। নাজিম মাহমুদ ও আবুবকর সিদ্দিক আগুনঝরা গান লিখছেন তখন, আর সাধন সরকার সুর করছেন। হাসান আজিজুল হক, খালেদ রশিদ গুরু বলিষ্ঠ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাঙালিকে জাগিয়ে তোলার কাজ করছেন—এসবই জানতেন খান সারোয়ার মুরশিদ। এ রকম মানুষ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা মানে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান আপনা থেকেই কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়া। হাসানকে খুলনার ফুলতলা কলেজ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে তিনি আর দেরি করেননি।
হ্যাঁ, কেবল ঘরে বসে সাহিত্য করে সন্তুষ্ট থাকেননি হাসান স্যার। তিনি সত্যিকারের পরিবর্তন চেয়েছেন। কূপমণ্ডূকতার অবসান ঘটিয়ে মুক্তবুদ্ধির বিকাশ ঘটাতে চেয়েছেন। বৈষম্যহীন, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিজের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ কর্মসাধনা করে গেছেন।
একদিন দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে দাঁড়িয়ে আছেন হাসান স্যার। আমি পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। স্যার দুজন স্থানীয় ব্যক্তির ঝগড়া শুনছেন ও দেখছেন মন দিয়ে। ঝগড়া করতে করতে তাঁরা পরস্পরকে এমন সব গালি দিচ্ছিলেন যে, স্যারের সামনে লজ্জা পাচ্ছিলাম। স্যার বুঝতে পেরে হাসি হাসি মুখ করে বলেছিলেন, ‘দেখ, মানুষ রেগে গেলে কেমন অঙ্গভঙ্গি করে, গালিগুলো শুনছ তো, আহা, শব্দ তো নয় যেন মুখ থেকে মধু ঝরছে। সবকিছু থেকেই শেখার আছে, বুঝলে!’ বলেই তাঁর আইকনিক হাসি ছড়িয়ে দিলেন কাজলা গেটের ওপারে। স্যারের সঙ্গে এক মিনিট বাক্য বিনিময় করলেও, তা সে যত সিরিয়াস বিষয়েই হোক, তিনি ওইটুকু সময়ের মধ্যে হাসিয়ে ছাড়বেন। অথচ, সাহিত্যে তিনি একেবারেই উল্টো। স্যারের ‘একাত্তর করতলে ছিন্নমাথা’ আমার কাছ থেকে নিয়ে পড়ার পর একবার আমার ক্লাস টেনের এক ছাত্রী বইটা ফেরত দেওয়ার সময় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। কান্নার কারণ জানতে চাইলে বলল—এত সুন্দর ভাষায় এমন ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা পড়ে ঠিক থাকতে পারছি না! এই তো হাসান আজিজুল হক।
আমরা অনেকেই জানি না, অনেক বড় মাপের অভিনয় শিল্পী ছিলেন হাসান স্যার। নাটক করেছেন মনোজ মিত্রের, রবীন্দ্রনাথের, নাজিম মাহমুদের। কেবল অভিনয় করেছেন তা নয়, নির্দেশনাও দিয়েছেন। আবৃত্তি করেছেন সাবলীল। নাজিম মাহমুদের চেতনার সৈকতে অ্যালবামে ভূমিকা বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে রেখেছেন পরম উৎকর্ষের ছাপ। হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে শিখিয়েছেন কীভাবে শব্দ ও বাক্যের অর্থ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে প্রকাশ করতে হয়!
হাসান আজিজুল হকের বক্তৃতা যারা একবার হলেও শুনেছেন, তাঁরা জানেন তাঁর কথায় কখনো পাণ্ডিত্যের প্রকাশ ছিল না। আমরা সবাই তাঁর প্রতিটি শব্দ বুঝতাম। সেগুলো এমনই সরস যে, আমরা হাসিতে ফেটে পড়তাম, রাগে জ্বলে উঠতাম। তবে তাঁর বক্তব্যে কোথাও কোনো সস্তা আবেগ ছিল না। হাস্যকৌতুকের উপমায় মৌলবাদীদের পিঠের ওপর শক্ত চাবুক চালাতেন তিনি অকুতোভয় যোদ্ধার মতো। যোদ্ধাই ছিলেন তিনি। কেবল তাঁর কথা শোনার জন্য নিজের ডিপার্টমেন্টের ক্লাস বাদ দিয়ে দর্শনের ক্লাসে গিয়ে বসে থাকতাম। আমাদের সময়ের অনেকেই করত কাজটা।
একবার অধ্যাপক আব্দুল খালেক যখন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা খালেক স্যারকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য কাজি নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। হাসান আজিজুল হক সে অনুষ্ঠানে বললেন, ‘সবাই স্বপ্ন দেখছেন যে, প্রফেসর আব্দুল খালেক উপাচার্য হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কালাকানুন রাতারাতি পাল্টে যাবে। আমি তেমন সম্ভাবনার ক্ষীণ আলো দেখলেও ততটা আশা করতে পারছি না। যে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা মাপা শুরু হয়েছে, সেটা দিয়েই ওঁকেও (আব্দুল খালেক) মাপামাপি করতে হবে। দাঁড়িপাল্লায় ত্রুটি থাকলে যত সৎ ব্যবসায়ীই হোন, জিনিস ঠিকঠাক মাপতে পারবেন না। দরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত পরিবর্তন।’
খালেক স্যার ও হাসান স্যার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তবু ঘনিষ্ঠজনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সবাই যখন তেলতেলে বক্তব্য দিয়ে হাততালি নিচ্ছিলেন, হাসান আজিজুল হক বেশ কঠোর বার্তাই দিয়েছিলেন সেদিনের নতুন উপাচার্যের বরাবর। তাঁর এসব প্রতিবাদী ও পথনির্দেশনামূলক ভূমিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ ছিল না। ছুটে যেতেন দেশের যেকোনো জেলা শহরে, এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামে, আদিবাসী পল্লিতে—সর্বত্র রয়েছে হাসান স্যারের উদ্দীপনাময় পদচ্ছাপ। কথাসাহিত্যিক হিসেবে হাসান আজিজুল হকের উচ্চতাই শেষ কথা নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে হাসান স্যারের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে কয়েক প্রজন্মের মানস গঠনে। মাঝেমধ্যে অবাক লাগত, এই যে এত সব কাজে জড়িয়ে থাকতেন, হই-হুল্লোড়-আড্ডায় মেতে থাকতেন, লিখতেন কখন! গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ছাড়াও তাঁকে লিখতে হতো অসংখ্য স্মরণিকা, লিফলেট, শুভেচ্ছা বার্তা, নতুন লেখকদের বইয়ের ভূমিকা, আরও কত কী, তার হিসেব নেই। এ রকম মানুষ এ দেশে আর কি দ্বিতীয়টি ছিলেন, যিনি রাজধানীর মোহে আকৃষ্ট হননি, অথচ প্রান্তে টেনে নিয়ে গেছেন বৃহত্তর বাংলাকে! বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বাংলার নানা প্রান্ত থেকে তাঁর কাছে যিনিই গিয়েছেন, তাঁকেই তিনি সময় দিয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন। বাংলাদেশের প্রথম থিয়েটার ওয়ার্কশপটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় বলেই জানি। সে ওয়ার্কশপের অন্যতম পুরোহিত ছিলেন হাসান স্যার। যত দূর জানা যায়, নাট্যজন মলয় ভৌমিক এবং অনুশীলন নাট্যদল সেই থিয়েটার ওয়ার্কশপেরই ফসল।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পর স্যার নিজের বাড়ি তৈরি করলেন শহর থেকে বেশ দূরে, বিহাস আবাসিক এলাকায়। বাড়ির নাম দিলেন উজান। জানতে পেরে কলকাতার বন্ধুরা (সুশীল সাহার উদ্যোগে) উজান নামে একটি স্যুভেনির ছাপিয়ে রাজশাহীতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় কি মহাশ্বেতা দেবী (আজ আর স্পষ্ট মনে করতে পারছি না) লিখেছেন, ‘হাসানের বাড়ি হলো মানে আমাদেরই বাড়ি হলো। আমাদের সবার আশ্রয় হলো!’ সুবিশাল ছিল হাসানের ভালোবাসার পরিসর।
হাসান স্যার নিজের জন্মদিন পালন করতেন না। আমরা একবার জানতে পারলাম (সম্ভবত ১৯৯৪) হাসান স্যারের জন্মদিন ২ ফেব্রুয়ারি। স্বনন আয়োজন করল তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠান। সেই প্রথম হাসান স্যারকে দেখলাম স্যুট-টাই পরেছেন। জন্মদিনের বক্তৃতায় নিজেকে নিয়ে রসিকতা করতে ছাড়লেন না। তিনি জানালেন, তাঁদের একান্নবর্তী পরিবারে জন্মদিন মনে রাখার সংস্কৃতি ছিল না। তাঁর জন্মদিন ২ ফেব্রুয়ারি কি-না, তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে যেহেতু লিখতে হয়, তাই এই তারিখটাকেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। আর বললেন, ডাকনাম ‘কালো’ হলেও গাঁয়ে আমাকে ‘কেলো’ বলে ডাকত।
হাসানের লাখো ভক্তের কাছে একটি সংবাদ অবিদিতই ছিল ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। আর তা হচ্ছে এই যে, তিনি কবিতাও লিখেছেন। ‘ওসব কিছু হয়নি’ বলে কখনো প্রকাশ করেননি। বড় ভাই কবি মোহাম্মদ কামালের সৌজন্যেই সম্ভবত হাসান আজিজুল হকের কবিতার খাতা আমাদের হস্তগত হয়। সরাসরি স্যারের খাতা থেকে আমার ডায়েরিতে একটি কবিতা টুকে রেখেছিলাম। কবিতাটির কোনো শিরোনাম ছিল না। সেই কবিতাটি উদ্ধৃত করছি:
কি কি বদলে নেওয়া যায় না?
আপন জন্ম আর অন্যের যৌবন
কপালের একেবারে ভিতরের দিকে
খোদাই করা খুদে খুদে অক্ষর
দুই চোখের পাশে চামড়ার উপর
কাকের পায়ের ছাপ
হয়তো আরও আছে
আঁকাবাঁকা আঙুল, ফাটা পায়ের ভিতরে শুকনো হাড়
ফিরে পাওয়া যায় না
মৃত্যুর পরে কাটিয়ে আসা জীবন
ফেরা যায় না উৎস-মুখে—
পাথরে, লবণে, মাটিতে জলের রেখায়
এরা সবই একমুখে বয়ে যায়
শূন্য থেকে শূন্যে।
এই কবিতাকে কি প্রকাশের অযোগ্য বলা সম্ভব! ‘ফিরে পাওয়া যায় না/ মৃত্যুর পরে কাটিয়ে আসা জীবন/ ফেরা যায় না উৎস-মুখে—/ পাথরে, লবণে, মাটিতে জলের রেখায়...।’ ভাবতে হয়। কিন্তু তিনি কবিতা প্রকাশ করার সামান্য উৎসাহও বোধ করেননি। কলকাতায় তাঁকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছিল ১৯৯০-এর দশকে। সেটি কে তৈরি করেছিলেন ভুলে গেছি। তবে হাসানের জন্মজগৎ চেনার জন্য তথ্যচিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই। বাংলাদেশে তা সংরক্ষণ করা আবশ্যক।
হাসান স্যারের সঙ্গে শেষ দেখা করতে গিয়ে কড়া বকা খেয়েছি। আদিবাসীদের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সুলতানা কামাল আপাসহ রাজশাহী থেকে ফেরার পথে স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। সুলতানা আপাও রাজি হলেন। উজানের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি তো আমার ছেলের মতোই, আমার কোনো সমালোচনা করতে হলে সরাসরি আমাকেই বলতে পারতে। অলক্ষ্যে সমালোচনা করা, আর পেছন থেকে ছুরি মারা তো একই কথা।’ আমি লজ্জা পেলাম। আমার মনে পড়ল, প্রথম আলোয় স্যারের একটি গল্প ছাপা হয়েছিল। যেটি গল্পকার হাসানের মানের নয় বলে আমার মনে হয়েছিল। ওনাকে সরাসরি না বলে ফেসবুকে লেখায় স্যার রাগ করেছিলেন। স্যার নিশ্চয় আমাকে ক্ষমা করেছিলেন। চা না খেয়ে তো আসতে দেননি। স্যারের কাছে এই শিক্ষা আমি নিয়েছি—কাউকে যদি কিছু বলার থাকে, সরাসরি তাকে বলাই সংগত।
স্যার, সংবাদমাধ্যমগুলো প্রচার করেছে যে, ‘হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন’। খুব কান্না পেয়েছে। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। হাসান আজিজুল হক মারা যেতে পারেন না। স্বার্থহীন সৃষ্টিশীল প্রাণ অমর। আপনি থাকছেন বাঙালির অন্তরে।
নূরুননবী শান্ত: গল্পকার, অনুবাদক

১৯৯১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিয়েই আবৃত্তি সংগঠন স্বননে সম্পৃক্ত হলাম। ১৯৮১ সালে এই সংগঠনের গোড়াপত্তনের অন্যতম কুশীলব ছিলেন হাসান আজিজুল হক। স্বনন নামটি তাঁরই দেওয়া।
স্বনন সূত্রেই হাসান স্যারের সান্নিধ্য লাভ। মমতাজ উদ্দীন কলা ভবনের ১৩৭ নম্বর কক্ষটি ছিল হাসান স্যারের বসার ঘর। স্বননের প্রধান পুরুষ নাজিম মাহমুদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পর আমরা স্বননের বসার জায়গা হারিয়ে ফেললাম। বিশ্ববিদ্যালয় তখন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সন্ত্রাসী তৎপরতায় সন্ত্রস্ত। স্বননের কার্যক্রমসহ সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর বিবিধ বাধা আসছিল প্রশাসনের তরফ থেকে। একপর্যায়ে নিষিদ্ধ হয়ে গেল সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। সন্ধ্যার আগেই মেয়েদের হলে ফেরা বাধ্যতামূলক করা হলো। আড্ডা ও গানের শব্দ পেলেই প্রক্টরের বাহিনী এমনকি প্রক্টর নিজেও ধমক ও হুমকি দেওয়া শুরু করলেন। স্বনন বসার জায়গা হারাল। এমনকি আমাদের প্রিয় শিক্ষকগণ কবিতা পড়ার জন্য একটু জায়গা আমাদের দিতে পারছিলেন না ভয়ে। সেই ভীত-সন্ত্রস্ত ক্যাম্পাসে হাসান স্যার তাঁর মমতাজ উদ্দীন কলা ভবনের নিজ কক্ষের একটি চাবি আমাদের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, ‘যত দিন আমি আছি, আমার ঘরে বসবে তোমরা, আমি কাউকে ভয় পাই না।’
কেবল স্বনন নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি থিয়েটার গ্রুপ থেকে শুরু করে সব সাংস্কৃতিক সংগঠনের অভিভাবক ছিলেন তিনি। সে সময়কার ইসলামী ছাত্র শিবিরের ভয়াবহ হুমকিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রগতিশীল ছাত্র-ছাত্রীদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পরম প্রেরণা হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের। তাঁর বন্ধুদের অনেক সময়ই তাঁর বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করতে দেখেছি। তাঁরা মনে করতেন, হাসান এসব করতে গিয়ে লেখালেখির পেছনে কম সময় দিচ্ছেন! হ্যাঁ, কথা ঠিক। তবে তাঁর পরম বন্ধু নাজিম মাহমুদকে বলতে শুনেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দায়িত্ব পালন করার কথা, সে দায়িত্ব থেকে সরে গেছে। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে মানবিক, সাংস্কৃতিক ও মুক্তচিন্তা বিস্তারের বিকল্প প্রতিষ্ঠান করে তুলতে হাসান আজিজুল হক, নাজিম মাহমুদ, শহিদুল ইসলাম, রমেন্দ্রনাথ ঘোষ, আলী আনোয়ার, জুলফিকার মতিন, জাহেদুল হক টুকু, সনৎ কুমার সাহা, মলয় ভৌমিক, মোহাম্মদ নাসের প্রমুখ শিক্ষকদের স্বপ্রণোদিত ভূমিকা পালন করতে হয়েছে।
সত্যি বলতে কি হাসান আজিজুল ছিলেন হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর পথ প্রদর্শক। নতুন প্রজন্মকে ধর্মনিরপেক্ষ মুক্তচিন্তার পথ দেখাতে যত রকম বিকল্প খুঁজে পেয়েছেন, সব পদ্ধতিই অবলম্বন করেছেন হাসান আজিজুল হক ও তাঁর সতীর্থগণ। তাঁর ডাকনাম ‘কালো’। ওদিকে নাজিম মাহমুদের ডাকনাম ‘আলো’। নাজিম মাহমুদই সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খান সারোয়ার মুরশিদকে অনুরোধ করে হাসানকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছিলেন। তত দিনে হাসান তাঁর ‘শকুন’ গল্পের জন্য বিদ্বৎমহলে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। তা ছাড়া খান সারোয়ার মুরশিদ জানতেন তরুণ হাসানের পাণ্ডিত্য সম্পর্কে। কেননা, খুলনায় হাসান আজিজুল হক, কবি আবুবকর সিদ্দিক, খালেদ রশিদ গুরু, সাধন সরকারসহ এক ঝাঁক যুবক সন্দীপন নামক সংগঠনের মাধ্যমে ’৬৯-এর গণ-আন্দোলনের আগে থেকেই সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন। নাজিম মাহমুদ ও আবুবকর সিদ্দিক আগুনঝরা গান লিখছেন তখন, আর সাধন সরকার সুর করছেন। হাসান আজিজুল হক, খালেদ রশিদ গুরু বলিষ্ঠ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাঙালিকে জাগিয়ে তোলার কাজ করছেন—এসবই জানতেন খান সারোয়ার মুরশিদ। এ রকম মানুষ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা মানে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান আপনা থেকেই কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়া। হাসানকে খুলনার ফুলতলা কলেজ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে তিনি আর দেরি করেননি।
হ্যাঁ, কেবল ঘরে বসে সাহিত্য করে সন্তুষ্ট থাকেননি হাসান স্যার। তিনি সত্যিকারের পরিবর্তন চেয়েছেন। কূপমণ্ডূকতার অবসান ঘটিয়ে মুক্তবুদ্ধির বিকাশ ঘটাতে চেয়েছেন। বৈষম্যহীন, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিজের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ কর্মসাধনা করে গেছেন।
একদিন দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে দাঁড়িয়ে আছেন হাসান স্যার। আমি পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। স্যার দুজন স্থানীয় ব্যক্তির ঝগড়া শুনছেন ও দেখছেন মন দিয়ে। ঝগড়া করতে করতে তাঁরা পরস্পরকে এমন সব গালি দিচ্ছিলেন যে, স্যারের সামনে লজ্জা পাচ্ছিলাম। স্যার বুঝতে পেরে হাসি হাসি মুখ করে বলেছিলেন, ‘দেখ, মানুষ রেগে গেলে কেমন অঙ্গভঙ্গি করে, গালিগুলো শুনছ তো, আহা, শব্দ তো নয় যেন মুখ থেকে মধু ঝরছে। সবকিছু থেকেই শেখার আছে, বুঝলে!’ বলেই তাঁর আইকনিক হাসি ছড়িয়ে দিলেন কাজলা গেটের ওপারে। স্যারের সঙ্গে এক মিনিট বাক্য বিনিময় করলেও, তা সে যত সিরিয়াস বিষয়েই হোক, তিনি ওইটুকু সময়ের মধ্যে হাসিয়ে ছাড়বেন। অথচ, সাহিত্যে তিনি একেবারেই উল্টো। স্যারের ‘একাত্তর করতলে ছিন্নমাথা’ আমার কাছ থেকে নিয়ে পড়ার পর একবার আমার ক্লাস টেনের এক ছাত্রী বইটা ফেরত দেওয়ার সময় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। কান্নার কারণ জানতে চাইলে বলল—এত সুন্দর ভাষায় এমন ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা পড়ে ঠিক থাকতে পারছি না! এই তো হাসান আজিজুল হক।
আমরা অনেকেই জানি না, অনেক বড় মাপের অভিনয় শিল্পী ছিলেন হাসান স্যার। নাটক করেছেন মনোজ মিত্রের, রবীন্দ্রনাথের, নাজিম মাহমুদের। কেবল অভিনয় করেছেন তা নয়, নির্দেশনাও দিয়েছেন। আবৃত্তি করেছেন সাবলীল। নাজিম মাহমুদের চেতনার সৈকতে অ্যালবামে ভূমিকা বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে রেখেছেন পরম উৎকর্ষের ছাপ। হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে শিখিয়েছেন কীভাবে শব্দ ও বাক্যের অর্থ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে প্রকাশ করতে হয়!
হাসান আজিজুল হকের বক্তৃতা যারা একবার হলেও শুনেছেন, তাঁরা জানেন তাঁর কথায় কখনো পাণ্ডিত্যের প্রকাশ ছিল না। আমরা সবাই তাঁর প্রতিটি শব্দ বুঝতাম। সেগুলো এমনই সরস যে, আমরা হাসিতে ফেটে পড়তাম, রাগে জ্বলে উঠতাম। তবে তাঁর বক্তব্যে কোথাও কোনো সস্তা আবেগ ছিল না। হাস্যকৌতুকের উপমায় মৌলবাদীদের পিঠের ওপর শক্ত চাবুক চালাতেন তিনি অকুতোভয় যোদ্ধার মতো। যোদ্ধাই ছিলেন তিনি। কেবল তাঁর কথা শোনার জন্য নিজের ডিপার্টমেন্টের ক্লাস বাদ দিয়ে দর্শনের ক্লাসে গিয়ে বসে থাকতাম। আমাদের সময়ের অনেকেই করত কাজটা।
একবার অধ্যাপক আব্দুল খালেক যখন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা খালেক স্যারকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য কাজি নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। হাসান আজিজুল হক সে অনুষ্ঠানে বললেন, ‘সবাই স্বপ্ন দেখছেন যে, প্রফেসর আব্দুল খালেক উপাচার্য হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কালাকানুন রাতারাতি পাল্টে যাবে। আমি তেমন সম্ভাবনার ক্ষীণ আলো দেখলেও ততটা আশা করতে পারছি না। যে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা মাপা শুরু হয়েছে, সেটা দিয়েই ওঁকেও (আব্দুল খালেক) মাপামাপি করতে হবে। দাঁড়িপাল্লায় ত্রুটি থাকলে যত সৎ ব্যবসায়ীই হোন, জিনিস ঠিকঠাক মাপতে পারবেন না। দরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত পরিবর্তন।’
খালেক স্যার ও হাসান স্যার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তবু ঘনিষ্ঠজনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সবাই যখন তেলতেলে বক্তব্য দিয়ে হাততালি নিচ্ছিলেন, হাসান আজিজুল হক বেশ কঠোর বার্তাই দিয়েছিলেন সেদিনের নতুন উপাচার্যের বরাবর। তাঁর এসব প্রতিবাদী ও পথনির্দেশনামূলক ভূমিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ ছিল না। ছুটে যেতেন দেশের যেকোনো জেলা শহরে, এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামে, আদিবাসী পল্লিতে—সর্বত্র রয়েছে হাসান স্যারের উদ্দীপনাময় পদচ্ছাপ। কথাসাহিত্যিক হিসেবে হাসান আজিজুল হকের উচ্চতাই শেষ কথা নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে হাসান স্যারের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে কয়েক প্রজন্মের মানস গঠনে। মাঝেমধ্যে অবাক লাগত, এই যে এত সব কাজে জড়িয়ে থাকতেন, হই-হুল্লোড়-আড্ডায় মেতে থাকতেন, লিখতেন কখন! গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ছাড়াও তাঁকে লিখতে হতো অসংখ্য স্মরণিকা, লিফলেট, শুভেচ্ছা বার্তা, নতুন লেখকদের বইয়ের ভূমিকা, আরও কত কী, তার হিসেব নেই। এ রকম মানুষ এ দেশে আর কি দ্বিতীয়টি ছিলেন, যিনি রাজধানীর মোহে আকৃষ্ট হননি, অথচ প্রান্তে টেনে নিয়ে গেছেন বৃহত্তর বাংলাকে! বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বাংলার নানা প্রান্ত থেকে তাঁর কাছে যিনিই গিয়েছেন, তাঁকেই তিনি সময় দিয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন। বাংলাদেশের প্রথম থিয়েটার ওয়ার্কশপটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় বলেই জানি। সে ওয়ার্কশপের অন্যতম পুরোহিত ছিলেন হাসান স্যার। যত দূর জানা যায়, নাট্যজন মলয় ভৌমিক এবং অনুশীলন নাট্যদল সেই থিয়েটার ওয়ার্কশপেরই ফসল।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পর স্যার নিজের বাড়ি তৈরি করলেন শহর থেকে বেশ দূরে, বিহাস আবাসিক এলাকায়। বাড়ির নাম দিলেন উজান। জানতে পেরে কলকাতার বন্ধুরা (সুশীল সাহার উদ্যোগে) উজান নামে একটি স্যুভেনির ছাপিয়ে রাজশাহীতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় কি মহাশ্বেতা দেবী (আজ আর স্পষ্ট মনে করতে পারছি না) লিখেছেন, ‘হাসানের বাড়ি হলো মানে আমাদেরই বাড়ি হলো। আমাদের সবার আশ্রয় হলো!’ সুবিশাল ছিল হাসানের ভালোবাসার পরিসর।
হাসান স্যার নিজের জন্মদিন পালন করতেন না। আমরা একবার জানতে পারলাম (সম্ভবত ১৯৯৪) হাসান স্যারের জন্মদিন ২ ফেব্রুয়ারি। স্বনন আয়োজন করল তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠান। সেই প্রথম হাসান স্যারকে দেখলাম স্যুট-টাই পরেছেন। জন্মদিনের বক্তৃতায় নিজেকে নিয়ে রসিকতা করতে ছাড়লেন না। তিনি জানালেন, তাঁদের একান্নবর্তী পরিবারে জন্মদিন মনে রাখার সংস্কৃতি ছিল না। তাঁর জন্মদিন ২ ফেব্রুয়ারি কি-না, তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে যেহেতু লিখতে হয়, তাই এই তারিখটাকেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। আর বললেন, ডাকনাম ‘কালো’ হলেও গাঁয়ে আমাকে ‘কেলো’ বলে ডাকত।
হাসানের লাখো ভক্তের কাছে একটি সংবাদ অবিদিতই ছিল ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। আর তা হচ্ছে এই যে, তিনি কবিতাও লিখেছেন। ‘ওসব কিছু হয়নি’ বলে কখনো প্রকাশ করেননি। বড় ভাই কবি মোহাম্মদ কামালের সৌজন্যেই সম্ভবত হাসান আজিজুল হকের কবিতার খাতা আমাদের হস্তগত হয়। সরাসরি স্যারের খাতা থেকে আমার ডায়েরিতে একটি কবিতা টুকে রেখেছিলাম। কবিতাটির কোনো শিরোনাম ছিল না। সেই কবিতাটি উদ্ধৃত করছি:
কি কি বদলে নেওয়া যায় না?
আপন জন্ম আর অন্যের যৌবন
কপালের একেবারে ভিতরের দিকে
খোদাই করা খুদে খুদে অক্ষর
দুই চোখের পাশে চামড়ার উপর
কাকের পায়ের ছাপ
হয়তো আরও আছে
আঁকাবাঁকা আঙুল, ফাটা পায়ের ভিতরে শুকনো হাড়
ফিরে পাওয়া যায় না
মৃত্যুর পরে কাটিয়ে আসা জীবন
ফেরা যায় না উৎস-মুখে—
পাথরে, লবণে, মাটিতে জলের রেখায়
এরা সবই একমুখে বয়ে যায়
শূন্য থেকে শূন্যে।
এই কবিতাকে কি প্রকাশের অযোগ্য বলা সম্ভব! ‘ফিরে পাওয়া যায় না/ মৃত্যুর পরে কাটিয়ে আসা জীবন/ ফেরা যায় না উৎস-মুখে—/ পাথরে, লবণে, মাটিতে জলের রেখায়...।’ ভাবতে হয়। কিন্তু তিনি কবিতা প্রকাশ করার সামান্য উৎসাহও বোধ করেননি। কলকাতায় তাঁকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছিল ১৯৯০-এর দশকে। সেটি কে তৈরি করেছিলেন ভুলে গেছি। তবে হাসানের জন্মজগৎ চেনার জন্য তথ্যচিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই। বাংলাদেশে তা সংরক্ষণ করা আবশ্যক।
হাসান স্যারের সঙ্গে শেষ দেখা করতে গিয়ে কড়া বকা খেয়েছি। আদিবাসীদের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সুলতানা কামাল আপাসহ রাজশাহী থেকে ফেরার পথে স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। সুলতানা আপাও রাজি হলেন। উজানের সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি তো আমার ছেলের মতোই, আমার কোনো সমালোচনা করতে হলে সরাসরি আমাকেই বলতে পারতে। অলক্ষ্যে সমালোচনা করা, আর পেছন থেকে ছুরি মারা তো একই কথা।’ আমি লজ্জা পেলাম। আমার মনে পড়ল, প্রথম আলোয় স্যারের একটি গল্প ছাপা হয়েছিল। যেটি গল্পকার হাসানের মানের নয় বলে আমার মনে হয়েছিল। ওনাকে সরাসরি না বলে ফেসবুকে লেখায় স্যার রাগ করেছিলেন। স্যার নিশ্চয় আমাকে ক্ষমা করেছিলেন। চা না খেয়ে তো আসতে দেননি। স্যারের কাছে এই শিক্ষা আমি নিয়েছি—কাউকে যদি কিছু বলার থাকে, সরাসরি তাকে বলাই সংগত।
স্যার, সংবাদমাধ্যমগুলো প্রচার করেছে যে, ‘হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন’। খুব কান্না পেয়েছে। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। হাসান আজিজুল হক মারা যেতে পারেন না। স্বার্থহীন সৃষ্টিশীল প্রাণ অমর। আপনি থাকছেন বাঙালির অন্তরে।
নূরুননবী শান্ত: গল্পকার, অনুবাদক

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
২ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে কিন্তু কখনো গহিন অরণ্যের আস্তানায় সশস্ত্র রক্ষীবেষ্টিত হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়নি। তাঁর মাদক কারবারের আয় গোটা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখত। আর তাঁকে কখনো জেলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়নি। কারণ, মাদক-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাঁদের ছিল, তাঁরা সবাই ছিলেন তাঁর বেতনভুক্ত কর্মচারী!
তিনি আর কেউ নন, তিনি রানি ভিক্টোরিয়া। তাঁর হাতে ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দণ্ড।
রানি ভিক্টোরিয়া শুধু সাম্রাজ্য পরিচালনাতেই মাদক ব্যবহার করেননি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের ভক্ত। সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।
ভিক্টোরিয়ার অন্যতম প্রিয় মাদক ছিল আফিম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে আফিম সেবনের ফ্যাশনেবল উপায় ছিল—অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশিয়ে লডেনাম আকারে পান করা। তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি দূর করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের জন্যও এটি সুপারিশ করতেন চিকিৎসকেরা। রানি ভিক্টোরিয়াও প্রতিদিন সকালে এক ঢোক লডেনাম পান করে দিন শুরু করতেন।
এ ছাড়া তিনি সেবন করতেন কোকেন। এটি তখন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈধ। দাঁতের ব্যথা উপশম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানি কোকেন মিশ্রিত চুইংগাম ও ওয়াইন পছন্দ করতেন। প্রসবের সময় অসহনীয় যন্ত্রণা কমাতে তিনি সানন্দে ক্লোরোফর্ম গ্রহণ করেন এবং এই অভিজ্ঞতাটিকে ‘স্বর্গীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
১৮৩৭ সালে যখন ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন, উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বড় সংকটের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চাপে—ব্রিটিশরা চীন থেকে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করত। এর ফলে ব্রিটেনের সব অর্থ চীনে চলে যাচ্ছিল। আর ওই সময় ব্রিটিশদের হাতে চীনে রপ্তানি করার মতো কিছু ছিল না। ব্রিটেন মরিয়া হয়ে এমন একটি পণ্যের সন্ধান করছিল, যা চীনের লোকেরা চাইবে।
এ সমস্যার সমাধান ছিল আফিম। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারতে প্রচুর আফিম উৎপাদিত হতো। এটি ছিল অত্যন্ত কার্যকর ব্যথানাশক এবং মারাত্মকভাবে আসক্তি সৃষ্টিকারী। ফলে চীনের লোকেরা এর জন্য প্রচুর দাম দিতে প্রস্তুত ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার শাসন শুরু হওয়ার পর, চীনে আফিমের চালান দ্রুত বাড়তে থাকে। আফিমের কল্যাণে রাতারাতি বাণিজ্য ভারসাম্য বদলে যায়। চীনই ব্রিটিশদের কাছে ঋণী হতে শুরু করে। মাদক কারবার থেকে আসা অর্থ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মোট বার্ষিক আয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়।
চীন সরকার মরিয়া হয়ে আফিমের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। চীনের সম্রাট এই কাজের জন্য প্রশাসক লিন জেক্সুকে নিয়োগ করেন। জেক্সু রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি চিঠি লিখে ব্রিটিশদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—চীন যেখানে চা, রেশম ও মৃৎপাত্রের মতো উপকারী পণ্য পাঠাচ্ছে, সেখানে ব্রিটেন কেন তার বিনিময়ে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিকর মাদক পাঠাচ্ছে?
রানি সেই চিঠি পড়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে ১৮৩৯ সালের বসন্তে লিন জেক্সু ব্রিটিশ জাহাজ বহর আটক করেন এবং প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড আফিম দক্ষিণ চীন সাগরে ফেলে দেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সী রানি ভিক্টোরিয়া এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। যেকোনো ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী কিশোরীর মতো তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতই—তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটিই ইতিহাসে প্রথম ‘আফিম যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ বাহিনী চীনা সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে এবং হাজার হাজার চীনা নাগরিককে হত্যা করে। সম্রাট বাধ্য হয়ে একটি অসম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। চীনে আফিম ঢোকার জন্য আরও বন্দর খুলে দেওয়া হয় এবং চীনে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকেরা আইনি সুরক্ষা পান।
এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে চীন সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়। এভাবেই একজন একগুঁয়ে কিশোরী রানি একটি প্রাচীন, মর্যাদাপূর্ণ সভ্যতাকে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। এই নির্মম, নির্লজ্জ আত্মস্বার্থই রানি ভিক্টোরিয়াকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মাদক সম্রাট বানিয়ে তোলে!
তথ্যসূত্র: টাইম

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে কিন্তু কখনো গহিন অরণ্যের আস্তানায় সশস্ত্র রক্ষীবেষ্টিত হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়নি। তাঁর মাদক কারবারের আয় গোটা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখত। আর তাঁকে কখনো জেলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়নি। কারণ, মাদক-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাঁদের ছিল, তাঁরা সবাই ছিলেন তাঁর বেতনভুক্ত কর্মচারী!
তিনি আর কেউ নন, তিনি রানি ভিক্টোরিয়া। তাঁর হাতে ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দণ্ড।
রানি ভিক্টোরিয়া শুধু সাম্রাজ্য পরিচালনাতেই মাদক ব্যবহার করেননি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের ভক্ত। সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।
ভিক্টোরিয়ার অন্যতম প্রিয় মাদক ছিল আফিম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে আফিম সেবনের ফ্যাশনেবল উপায় ছিল—অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশিয়ে লডেনাম আকারে পান করা। তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি দূর করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের জন্যও এটি সুপারিশ করতেন চিকিৎসকেরা। রানি ভিক্টোরিয়াও প্রতিদিন সকালে এক ঢোক লডেনাম পান করে দিন শুরু করতেন।
এ ছাড়া তিনি সেবন করতেন কোকেন। এটি তখন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈধ। দাঁতের ব্যথা উপশম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানি কোকেন মিশ্রিত চুইংগাম ও ওয়াইন পছন্দ করতেন। প্রসবের সময় অসহনীয় যন্ত্রণা কমাতে তিনি সানন্দে ক্লোরোফর্ম গ্রহণ করেন এবং এই অভিজ্ঞতাটিকে ‘স্বর্গীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
১৮৩৭ সালে যখন ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন, উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বড় সংকটের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চাপে—ব্রিটিশরা চীন থেকে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করত। এর ফলে ব্রিটেনের সব অর্থ চীনে চলে যাচ্ছিল। আর ওই সময় ব্রিটিশদের হাতে চীনে রপ্তানি করার মতো কিছু ছিল না। ব্রিটেন মরিয়া হয়ে এমন একটি পণ্যের সন্ধান করছিল, যা চীনের লোকেরা চাইবে।
এ সমস্যার সমাধান ছিল আফিম। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারতে প্রচুর আফিম উৎপাদিত হতো। এটি ছিল অত্যন্ত কার্যকর ব্যথানাশক এবং মারাত্মকভাবে আসক্তি সৃষ্টিকারী। ফলে চীনের লোকেরা এর জন্য প্রচুর দাম দিতে প্রস্তুত ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার শাসন শুরু হওয়ার পর, চীনে আফিমের চালান দ্রুত বাড়তে থাকে। আফিমের কল্যাণে রাতারাতি বাণিজ্য ভারসাম্য বদলে যায়। চীনই ব্রিটিশদের কাছে ঋণী হতে শুরু করে। মাদক কারবার থেকে আসা অর্থ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মোট বার্ষিক আয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়।
চীন সরকার মরিয়া হয়ে আফিমের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। চীনের সম্রাট এই কাজের জন্য প্রশাসক লিন জেক্সুকে নিয়োগ করেন। জেক্সু রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি চিঠি লিখে ব্রিটিশদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—চীন যেখানে চা, রেশম ও মৃৎপাত্রের মতো উপকারী পণ্য পাঠাচ্ছে, সেখানে ব্রিটেন কেন তার বিনিময়ে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিকর মাদক পাঠাচ্ছে?
রানি সেই চিঠি পড়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে ১৮৩৯ সালের বসন্তে লিন জেক্সু ব্রিটিশ জাহাজ বহর আটক করেন এবং প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড আফিম দক্ষিণ চীন সাগরে ফেলে দেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সী রানি ভিক্টোরিয়া এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। যেকোনো ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী কিশোরীর মতো তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতই—তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটিই ইতিহাসে প্রথম ‘আফিম যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ বাহিনী চীনা সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে এবং হাজার হাজার চীনা নাগরিককে হত্যা করে। সম্রাট বাধ্য হয়ে একটি অসম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। চীনে আফিম ঢোকার জন্য আরও বন্দর খুলে দেওয়া হয় এবং চীনে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকেরা আইনি সুরক্ষা পান।
এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে চীন সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়। এভাবেই একজন একগুঁয়ে কিশোরী রানি একটি প্রাচীন, মর্যাদাপূর্ণ সভ্যতাকে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। এই নির্মম, নির্লজ্জ আত্মস্বার্থই রানি ভিক্টোরিয়াকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মাদক সম্রাট বানিয়ে তোলে!
তথ্যসূত্র: টাইম

অধ্যাপক আব্দুল খালেক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাসান আজিজুল হক বলেছিলেন, ‘সবাই স্বপ্ন দেখছেন যে, প্রফেসর আব্দুল খালেক উপাচার্য হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কালাকানুনন রাতারাতি পাল্টে যাবে। আমি তেমন সম্ভাবনার ক্ষীণ আলো দেখলেও ততটা আশা করতে পারছি না। যে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে এ দে
১৬ নভেম্বর ২০২১
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
২ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া হবে।
বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিচারক প্যানেলে থাকবে শিশুরাও। বর্তমান চিলড্রেনস লরিয়েট শিশুসাহিত্যিক ফ্রাঙ্ক কটরেল-বয়েস বিচারকদের উদ্বোধনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক থাকবেন, যাঁরা প্রথমে আটটি বইয়ের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর বিজয়ী নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচিত হবেন।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিবছর চিলড্রেনস বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেড হওয়া এবং বিজয়ী বইগুলোর ৩০ হাজার কপি শিশুদের উপহার দেওয়া হবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট, দ্য রিডিং এজেন্সি, বুকব্যাংকস এবং চিলড্রেনস বুক প্রজেক্টসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে এ বইগুলো দেওয়া হবে। গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে শিশুদের ‘আনন্দ নিয়ে পড়া’র প্রবণতা। এমন সময় বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগটি নিল।
কটরেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কার শিশুদের উপভোগ করার মতো বই খুঁজে বের করা সহজ করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি শিশুরই বইয়ের জগতে ডুব দেওয়ার যে আনন্দ, তা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বিচারক প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এবং মনোনীত বইগুলো উপহার দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার শিশুকে বই পড়ার চমৎকার দুনিয়ায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা বেশ দারুণ আয়োজন হতে যাচ্ছে।’ তিনি মজা করে বলেন, ‘চলুন, হইচই শুরু করা যাক!’
শিশুসাহিত্য জগতের শীর্ষ লেখকদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এ ঘোষণা। সাবেক শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মালরি ব্ল্যাকম্যান, জ্যাকলিন উইলসন, মাইকেল মরপুরগো, ক্রেসিডা কাউয়েল, অ্যান ফাইন এবং জোসেফ কোয়েলোরা—সবাই নতুন এই পুরস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত সমসাময়িক শিশুসাহিত্যগুলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুকার এবং আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মতোই বিজয়ী লেখক ৫০ হাজার পাউন্ড এবং শর্টলিস্টেড লেখকেরা প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পাবেন।
প্রথম চিলড্রেনস বুকার পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২০২৬ সালের বসন্তে। বিচারক হতে শিশুদের আবেদন প্রক্রিয়াও এই সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই বছরের নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে শর্টলিস্ট এবং শিশু বিচারকদের নাম। বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তরুণ পাঠকদের জন্য আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে। ২০২৭ সালের পুরস্কারের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত বই হতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিল্পকলায় সমর্থন এবং জলবায়ু-সংকট মোকাবিলায় কাজ করা দাতব্য সংস্থা একেও ফাউন্ডেশনের (AKO Foundation) সহযোগিতায় এ পুরস্কার পরিচালিত হবে।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) গ্যাবি উড বলেন, ‘২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ চালুর পর গত ২০ বছরে আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ চিলড্রেনস বুকার। এর একাধিক লক্ষ্য রয়েছে। একদিকে এটি শিশুদের জন্য লেখা ভবিষ্যৎ ক্লাসিক সাহিত্যকে সম্মান জানাবে, অন্যদিকে এটি এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা তরুণদের আরও বেশি করে পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করবে। এর মাধ্যমেই আমরা এমন এক বীজ রোপণ করতে চাই, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আজীবন পাঠকেরা বিকশিত হবে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, শিশুদের বিশেষ করে শিশুসাহিত্যের আসল বিচারকদের মতামত শোনার জন্য।
একেও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ ল-ফোর্ড বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব ফাউন্ডেশনের সাক্ষরতা বৃদ্ধি ও সামাজিক গতিশীলতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা গর্বিত যে এমন একটি প্রকল্পে অবদান রাখতে পারছি, যা তরুণ পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করবে।’
বিনো ব্রেইন নামের একটি যুব গবেষণা সংস্থা ও ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের সহযোগিতায় নিয়মিত পরামর্শ সেশনের মাধ্যমে শিশুরা এই পুরস্কারের গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট শিশুদের পড়ার অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
বুকার ফাউন্ডেশনের মতে, এই নতুন পুরস্কারটি শিশুসাহিত্যকে ‘সংস্কৃতির কেন্দ্রে স্থাপন’ করার একটি প্রচেষ্টা। সিইও গ্যাবি উড বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু শিশুসাহিত্যে উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়, বরং আরও বেশি তরুণকে এমন গল্প ও চরিত্র আবিষ্কারে সহায়তা করা ‘যারা তাদের সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।’
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সাহিত্য পুরস্কার বুকার প্রাইজ প্রথম প্রদান করা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত ইংরেজিতে রচিত অসাধারণ কথাসাহিত্যকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হয়।

শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া হবে।
বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিচারক প্যানেলে থাকবে শিশুরাও। বর্তমান চিলড্রেনস লরিয়েট শিশুসাহিত্যিক ফ্রাঙ্ক কটরেল-বয়েস বিচারকদের উদ্বোধনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক থাকবেন, যাঁরা প্রথমে আটটি বইয়ের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর বিজয়ী নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচিত হবেন।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিবছর চিলড্রেনস বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেড হওয়া এবং বিজয়ী বইগুলোর ৩০ হাজার কপি শিশুদের উপহার দেওয়া হবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট, দ্য রিডিং এজেন্সি, বুকব্যাংকস এবং চিলড্রেনস বুক প্রজেক্টসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে এ বইগুলো দেওয়া হবে। গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে শিশুদের ‘আনন্দ নিয়ে পড়া’র প্রবণতা। এমন সময় বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগটি নিল।
কটরেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কার শিশুদের উপভোগ করার মতো বই খুঁজে বের করা সহজ করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি শিশুরই বইয়ের জগতে ডুব দেওয়ার যে আনন্দ, তা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বিচারক প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এবং মনোনীত বইগুলো উপহার দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার শিশুকে বই পড়ার চমৎকার দুনিয়ায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা বেশ দারুণ আয়োজন হতে যাচ্ছে।’ তিনি মজা করে বলেন, ‘চলুন, হইচই শুরু করা যাক!’
শিশুসাহিত্য জগতের শীর্ষ লেখকদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এ ঘোষণা। সাবেক শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মালরি ব্ল্যাকম্যান, জ্যাকলিন উইলসন, মাইকেল মরপুরগো, ক্রেসিডা কাউয়েল, অ্যান ফাইন এবং জোসেফ কোয়েলোরা—সবাই নতুন এই পুরস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত সমসাময়িক শিশুসাহিত্যগুলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুকার এবং আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মতোই বিজয়ী লেখক ৫০ হাজার পাউন্ড এবং শর্টলিস্টেড লেখকেরা প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পাবেন।
প্রথম চিলড্রেনস বুকার পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২০২৬ সালের বসন্তে। বিচারক হতে শিশুদের আবেদন প্রক্রিয়াও এই সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই বছরের নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে শর্টলিস্ট এবং শিশু বিচারকদের নাম। বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তরুণ পাঠকদের জন্য আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে। ২০২৭ সালের পুরস্কারের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত বই হতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিল্পকলায় সমর্থন এবং জলবায়ু-সংকট মোকাবিলায় কাজ করা দাতব্য সংস্থা একেও ফাউন্ডেশনের (AKO Foundation) সহযোগিতায় এ পুরস্কার পরিচালিত হবে।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) গ্যাবি উড বলেন, ‘২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ চালুর পর গত ২০ বছরে আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ চিলড্রেনস বুকার। এর একাধিক লক্ষ্য রয়েছে। একদিকে এটি শিশুদের জন্য লেখা ভবিষ্যৎ ক্লাসিক সাহিত্যকে সম্মান জানাবে, অন্যদিকে এটি এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা তরুণদের আরও বেশি করে পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করবে। এর মাধ্যমেই আমরা এমন এক বীজ রোপণ করতে চাই, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আজীবন পাঠকেরা বিকশিত হবে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, শিশুদের বিশেষ করে শিশুসাহিত্যের আসল বিচারকদের মতামত শোনার জন্য।
একেও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ ল-ফোর্ড বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব ফাউন্ডেশনের সাক্ষরতা বৃদ্ধি ও সামাজিক গতিশীলতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা গর্বিত যে এমন একটি প্রকল্পে অবদান রাখতে পারছি, যা তরুণ পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করবে।’
বিনো ব্রেইন নামের একটি যুব গবেষণা সংস্থা ও ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের সহযোগিতায় নিয়মিত পরামর্শ সেশনের মাধ্যমে শিশুরা এই পুরস্কারের গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট শিশুদের পড়ার অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
বুকার ফাউন্ডেশনের মতে, এই নতুন পুরস্কারটি শিশুসাহিত্যকে ‘সংস্কৃতির কেন্দ্রে স্থাপন’ করার একটি প্রচেষ্টা। সিইও গ্যাবি উড বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু শিশুসাহিত্যে উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়, বরং আরও বেশি তরুণকে এমন গল্প ও চরিত্র আবিষ্কারে সহায়তা করা ‘যারা তাদের সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।’
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সাহিত্য পুরস্কার বুকার প্রাইজ প্রথম প্রদান করা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত ইংরেজিতে রচিত অসাধারণ কথাসাহিত্যকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হয়।

অধ্যাপক আব্দুল খালেক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাসান আজিজুল হক বলেছিলেন, ‘সবাই স্বপ্ন দেখছেন যে, প্রফেসর আব্দুল খালেক উপাচার্য হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কালাকানুনন রাতারাতি পাল্টে যাবে। আমি তেমন সম্ভাবনার ক্ষীণ আলো দেখলেও ততটা আশা করতে পারছি না। যে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে এ দে
১৬ নভেম্বর ২০২১
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
২ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৪ দিন আগেসম্পাদকীয়

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে পারে অন্য জায়গার এসব খাবার। অন্তত ছায়ানীড়ের নিয়মিত ভক্ত-গ্রাহকেরা এমন দাবি করতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই।
তাই হয়তো এখনো রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় লেগে থাকে। ব্যস্ত সড়কের পাশ থেকে যখন মুরগি পোড়ার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়, তখন পথে যেতে অনেকেই হয়তো বিরতি নিয়ে কিনে নেন ছায়ানীড়ের শর্মা বা গ্রিল চিকেন। ভেতরে বসে খেতে হলে লম্বা লাইনে যেমন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার পার্সেল নিতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। প্রাত্যহিক এ দৃশ্য ছায়ানীড়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিরিয়ানি ও অন্যান্য ফাস্ট ফুড খাবারও পাওয়া যায় এখানে।
ছবি: ওমর ফারুক

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে পারে অন্য জায়গার এসব খাবার। অন্তত ছায়ানীড়ের নিয়মিত ভক্ত-গ্রাহকেরা এমন দাবি করতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই।
তাই হয়তো এখনো রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় লেগে থাকে। ব্যস্ত সড়কের পাশ থেকে যখন মুরগি পোড়ার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়, তখন পথে যেতে অনেকেই হয়তো বিরতি নিয়ে কিনে নেন ছায়ানীড়ের শর্মা বা গ্রিল চিকেন। ভেতরে বসে খেতে হলে লম্বা লাইনে যেমন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার পার্সেল নিতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। প্রাত্যহিক এ দৃশ্য ছায়ানীড়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিরিয়ানি ও অন্যান্য ফাস্ট ফুড খাবারও পাওয়া যায় এখানে।
ছবি: ওমর ফারুক

অধ্যাপক আব্দুল খালেক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাসান আজিজুল হক বলেছিলেন, ‘সবাই স্বপ্ন দেখছেন যে, প্রফেসর আব্দুল খালেক উপাচার্য হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কালাকানুনন রাতারাতি পাল্টে যাবে। আমি তেমন সম্ভাবনার ক্ষীণ আলো দেখলেও ততটা আশা করতে পারছি না। যে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে এ দে
১৬ নভেম্বর ২০২১
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৪ দিন আগেসম্পাদকীয়

আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান

আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান

অধ্যাপক আব্দুল খালেক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাসান আজিজুল হক বলেছিলেন, ‘সবাই স্বপ্ন দেখছেন যে, প্রফেসর আব্দুল খালেক উপাচার্য হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কালাকানুনন রাতারাতি পাল্টে যাবে। আমি তেমন সম্ভাবনার ক্ষীণ আলো দেখলেও ততটা আশা করতে পারছি না। যে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে এ দে
১৬ নভেম্বর ২০২১
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
২ দিন আগে