Ajker Patrika

ঘসেটি বিবির মসজিদ

সম্পাদকীয়
ঘসেটি বিবির মসজিদ

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার শৌলা গ্রামে তেঁতুলিয়াতীরে দাঁড়িয়ে আছে রহস্যে ঘেরা এক স্থাপনা—ঘসেটি বিবির মসজিদ। দোতলা এই ছোট ইটের মসজিদ শুধু স্থাপত্যে নয়, গল্পগাথায়ও সমৃদ্ধ। প্রচলিত ধারণা, এটি নবাব সিরাজউদ্দৌলার খালা ঘসেটি বেগমের নামে নির্মিত। তবে স্থানীয়দের একাংশের মতে, এটি অন্য এক ঘসেটি বিবির নির্মাণ—যিনি মক্কা-মদিনা থেকে ফিরে ধর্মানুরাগে এই মসজিদ তৈরি করেছিলেন এবং ওপরতলায় বসবাস করতেন। মসজিদটি ঘিরে রয়েছে নানা লোককথা; একসময় নাকি আজানের সময় সাপ বের হতো—এমন জনশ্রুতি প্রচলিত।

সরকারি বিএম কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘ঘসেটি বিবির মসজিদ আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের ইসলামি স্থাপত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এর স্থাপত্যশৈলী ও নির্মাণরীতি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি মোগল আমলের শেষ ভাগে কিংবা তার কিছু পরে নির্মিত হতে পারে। স্থানীয় ইতিহাস গবেষণায় মনোযোগ বাড়ানো গেলে প্রকৃত তথ্য উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব।’ এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা না হলে ইতিহাসের এক অমূল্য অধ্যায় হারিয়ে যাবে।

তথ্য ও ছবি: আশিকুর রহমান তুষার, পটুয়াখালী

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জেমস গারফিল্ড। ছবি: ব্রিটানিকা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জেমস গারফিল্ড। ছবি: ব্রিটানিকা

উনিশ শতকের শেষভাগে মার্কিন ইতিহাসে এক ট্র্যাজিক অধ্যায় রচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জেমস এ. গারফিল্ড। ১৮৮১ সালের মার্চ মাসে শপথ গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তিনি আততায়ীর গুলিতে আহত হন। পরবর্তীকালে চিকিৎসকের চরম অবহেলা ও অজ্ঞতার শিকার হয়ে সেপসিসে (সংক্রমণ) ভুগে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনা, গারফিল্ডের জীবন ও তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে এবার নেটফ্লিক্স-এ আসছে চার পর্বের ড্রামা সিরিজ, ‘ডেথ বাই লাইটনিং’।

প্রেসিডেন্টের উত্থান ও প্রগতিশীল এজেন্ডা

১৮৮০ সালে আমেরিকা এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। সদ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির পর আফ্রিকান-আমেরিকানরা কি নাগরিক হিসেবে পূর্ণ অধিকার পাবেন? নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি চাকরি বণ্টনের সেই দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ‘পচে যাওয়ার ব্যবস্থা’ অব্যাহত থাকবে? রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ওহাইও-এর জনপ্রিয় কংগ্রেসম্যান জেমস গারফিল্ড এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার আহ্বান জানান। দারিদ্র্য থেকে উঠে আসা, গৃহযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখানো এই কমান্ডার নভেম্বরে দেশের ২০ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে গারফিল্ড উচ্চাভিলাষী এজেন্ডা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল: মার্কিন নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ, লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো এবং বিশেষত নাগরিক অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করা। তিনি সাবেক ক্রীতদাস ফ্রেডরিক ডগলাসকে ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার রেকর্ডার অব ডিডস পদে নিযুক্ত করেন। একজন আফ্রিকান-আমেরিকানের জন্য প্রথম সারির একটি কেন্দ্রীয় পদ পাওয়ার বিরল ঘটনা ছিল এটি।

হত্যার নেপথ্যে

১৮৮১ সালের ২ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসি-র রেলওয়ে স্টেশনে চার্লস এল. গুইটো নামক এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গারফিল্ডকে গুলি করে। গুইটো তার জীবনকাল ধরে একজন ব্যর্থ আইনজীবী, সাংবাদিক, ধর্মপ্রচারক এবং ফ্রি লাভ কমিউনের সদস্য হিসেবে এক ব্যর্থ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর তাকে মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গারফিল্ডের মনোনয়নের পর তিনি তাঁর সমর্থনের বিনিময়ে প্যারিসে গুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার পদ দাবি করে হোয়াইট হাউসে ধরনা করতেন। প্রেসিডেন্ট ‘প্যাট্রোনেজ সিস্টেম’-এর ঘোর বিরোধী হওয়ায় তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরই গুইটো সিদ্ধান্ত নেন—গারফিল্ডকে হত্যা করে ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থারকে ক্ষমতায় আনার ‘ঈশ্বর প্রদত্ত নির্দেশ’ তাঁর ওপর বর্তেছে।

আসল খুনি কে?

লেখক ক্যান্ডিস মিলার্ড তাঁর বেস্ট সেলিং বই ডেসটিনি অব দ্য রিপাবলিক-এ তুলে ধরেছেন, গারফিল্ডের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল চিকিৎসার চরম অব্যবস্থা। ড. উইলফ্রেড ব্লিস নামক দাম্ভিক চিকিৎসক গারফিল্ডের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তিনি ব্রিটিশ সার্জন জোসেফ লিস্টার কর্তৃক প্রবর্তিত আধুনিক অ্যান্টিসেপটিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেন। ব্লিস জীবাণুমুক্ত নয় এমন যন্ত্র এবং খালি হাত ব্যবহার করে প্রেসিডেন্টের মেরুদণ্ডের কাছে থাকা গুলিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এর ফলে সংক্রমণ (সেপসিস) ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, গুলি খুঁজতে আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তাঁর সদ্য আবিষ্কৃত প্রারম্ভিক মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করেছিলেন, কিন্তু ব্লিসের অসহযোগিতার কারণে সেটিও ব্যর্থ হয়। শট নেওয়ার প্রায় আশি দিন পর প্রেসিডেন্ট মারা যান এবং এই মৃত্যুর সম্পূর্ণ দায় ড. ব্লিসের ওপর বর্তায়।

রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব

প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও গারফিল্ডকে নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর রোসকো কনকলিং-এর বিরোধিতা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। কনকলিং প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক ছিলেন এবং গারফিল্ডের প্রগতিশীল ভাবধারা পছন্দ করতেন না। মাকোভস্কি বিবিসিকে জানান, এই সিরিজের মূল আকর্ষণ হলো ইতিহাসের সেই ‘যদি’ প্রশ্নটি—যদি প্রেসিডেন্ট গারফিল্ড বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি হয়তো আমেরিকার অন্যতম সেরা প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন। মাকোভস্কির মতে, ‘গারফিল্ডের অসাধারণ মেধা ছিল। তাঁকে যে আজ ইতিহাসে একটি অস্পষ্ট পাদটীকা হিসেবে স্থান দেওয়া হয়, তা এক ট্র্যাজেডি।’

অভিনেতা মাইকেল শ্যানন গারফিল্ডের ‘ঐশ্বর্য ও মর্যাদা, বিশেষ করে তাঁর শালীনতা’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক মিলার্ড।

গারফিল্ডের উত্তরাধিকার ও আইন সংস্কার

মাত্র ৪৯ বছর বয়সে গারফিল্ডের মৃত্যু পুরো জাতিকে নাড়িয়ে দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারি চাকরি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। জনগণের ক্ষোভের কারণেই ভাইস প্রেসিডেন্ট চেস্টার এ. আর্থার, যিনি একসময় প্যাট্রোনেজ সিস্টেমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনিই ১৮৮৩ সালে ‘পেন্ডলটন অ্যাক্ট’-এ স্বাক্ষর করেন। এই আইনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ‘যোগ্যতা-ভিত্তিক’ নিয়োগের নীতি শুরু হয়, যা মার্কিন সরকারি আমলাতন্ত্রের পেশাদারি নিশ্চিত করার পথ দেখায়। এইভাবে, এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড আমেরিকার শাসনব্যবস্থার ইতিহাসে এক স্থায়ী প্রগতিশীল পরিবর্তন এনে দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জল্লাদখানা বধ্যভূমি

সম্পাদকীয়
জল্লাদখানা বধ্যভূমি

ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ডি-ব্লকের বধ্যভূমিটি ‘জল্লাদখানা বধ্যভূমি’ নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর ও বিহারিরা এখানে বাঙালিদের ধরে এনে হত্যা করত। মিরপুর খালের পাশে এক নির্জন এলাকায় দুটি পয়োনিষ্কাশন ট্যাংকের ওপর ছিল একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস। ঘাতকেরা এ জায়গাকে বেছে নিয়েছিল বধ্যভূমি হিসেবে।

স্বাধীনতার পরপরই এই বধ্যভূমির সন্ধান যখন পাওয়া যায়, তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা সেখানে অসংখ্য বাঙালির কঙ্কাল দেখতে পান। স্থানীয় জনগণ জল্লাদখানার পাশে সে কঙ্কালগুলো দাফন করেন। এ পাম্পহাউসের ভেতরে উঁচু এক বেদিতে লেখা ছিল ‘জল্লাদখানা’। এখানে অনেক বাঙালিকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।

তথ্য: সংগ্রামের নোটবুক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিদলের স্বাদ

সম্পাদকীয়
সিদলের স্বাদ

উত্তরবঙ্গের ঘরোয়া রান্নার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যে খাবারটি জড়িয়ে আছে, তা হলো সিদল। শুঁটকি মাছ আর কচুশাকের মিশ্রণে তৈরি এই খাবার বহুদিন ধরেই জনপ্রিয়। একসময় শুধু গ্রামাঞ্চলে পরিচিত থাকলেও এখন সারা দেশেই এর স্বাদ ও সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে। সিদল বানানো হয় কচুশাক, শুঁটকি মাছ আর কিছু দেশি মসলা দিয়ে।

সবকিছু মেখে রোদে শুকিয়ে রাখা হয় কয়েক দিন। এতে শুধু স্বাদই বাড়ে না, দীর্ঘদিন সংরক্ষণও করা যায়। অনেকে আবার কাঁচা সিদল দিয়ে তরকারি রান্না করেন, তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো সিদল ভর্তা। ঠিকভাবে ভর্তা বানাতে পারলে এর স্বাদ মাছ-মাংসের যেকোনো পদকেও ছাড়িয়ে যায়—এমনটাই বিশ্বাস স্থানীয়দের। শীতকাল এলেই সিদল তৈরির ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এ সময় দেশি মাছ প্রচুর পাওয়া যায় আর সেই শুঁটকি দিয়ে বানানো সিদলের স্বাদই আলাদা।

তথ্য: আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)। ছবি: সংগৃহীত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার

সম্পাদকীয়
লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার এবং অন্যদের সামাজিক অঙ্গীকারের চরিত্রের মধ্যে কোনো মৌলিক পার্থক্য বলে কিছু নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যেকোনো মানুষই সমাজের ওপর সর্বতোভাবে নির্ভরশীল। কাজেই সমাজের প্রতি প্রত্যেকেরই করণীয় আছে। সমাজ বলতে অবশ্য সবার জন্য একই জিনিস বোঝায় না। আমাদের শ্রেণিবিভক্ত সমাজে শোষক, শোষিত আছে, ধনী-দরিদ্র আছে। যে মানুষ যে শ্রেণিভুক্ত সে সেই শ্রেণির স্বার্থই রক্ষা করে। তার জন্য তার একধরনের অঙ্গীকার থাকে। শ্রেণিবিভক্ত সমাজে লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ সবাই থাকেন। নিজের নিজের শ্রেণিবদ্ধ অবস্থায় তাঁদের সামাজিক দায়িত্ব, সামাজিক অঙ্গীকার থাকে। শোষকশ্রেণির প্রতিনিধি রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সাহিত্যিক সবাই একই অঙ্গীকারে আবদ্ধ, যদিও তাঁদের কর্মক্ষেত্র ভিন্ন। একই ধরনের অঙ্গীকারের জন্য কর্মক্ষেত্রের ভিন্নতা সত্ত্বেও শোষক ও শোষিত শ্রেণির অঙ্গীকারবদ্ধ লোকদের নিজেদের কাজের মধ্যে স্বতন্ত্র একটা যোগসূত্র থাকে।

দুই শ্রেণির অঙ্গীকার সম্পর্কে মোটা দাগে বলতে গেলে বলতে হয়, শোষকশ্রেণির লোকদের অঙ্গীকার হচ্ছে, শোষণ-নির্যাতনমূলক সমাজব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা। এভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে তারা সবাই কাজ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে বর্তমান বাংলাদেশের দক্ষিণ ও বাম বুর্জোয়া রাজনীতিবিদেরা যেমন এই শ্রেণিবিভক্ত সমাজ ও সাম্রাজ্যবাদের খেদমত করে, তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করে, যারা এ ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম শত্রুতা করতে দ্বিধা করে না। ঠিক তেমনই এই শ্রেণির অসংখ্য দালাল বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মীও তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে একই কাজ করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে।

যারা এ সমাজ পরিবর্তন করতে চায় তারাও নিজেদের অঙ্গীকার অনুযায়ী রাজনীতি, শিল্প, সাহিত্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজ করে। তাদের কাজের মধ্যেও একটা যোগসূত্র থাকে।

সূত্র: ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকার পক্ষে বদরুদ্দীন উমরের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১, বদরুদ্দীন উমরের ‘সাক্ষাৎকার সমগ্র’,

পৃষ্ঠা: ৪০-৪১।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত