Ajker Patrika

স্পিভাকের নারীবাদী ভাবনা

সম্পাদকীয়
স্পিভাকের নারীবাদী ভাবনা

আমি মনে করি, পৃথিবীতে ‘সব প্রতিষ্ঠানের বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে লিঙ্গায়ন’। এটা নীরবেই অনেক আগেই বিশ্বায়িত...। অনেক আগে হাজার হাজার বছর আগে...বিশ্ব নিয়ে লোকে তখনো ভাবতেই শেখেনি। লিঙ্গ থেকে যা আলাদা হচ্ছে একমাত্র অভিজ্ঞতালব্ধ পার্থক্য, যা প্রত্যেকেই আঁচ করতে পারে আর তাই আপনারা জানতে পারবেন, যেকোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিরই একটা পার্থক্য দরকার, যাকে ঘিরে সে নিজেকে নির্মাণ করবে। লিঙ্গায়ন হচ্ছে আমাদের বিমূর্ততার প্রথম ও সবচেয়ে জগদ্দল হাতিয়ার। ওটা হচ্ছে আদিমতম তাত্ত্বিক হাতিয়ার।

শ্রমিক ও ধনপতি উভয়ে, উপনিবেশকারী ও উপনিবেশিত উভয়েই এর নিগড়বন্দী। ওই জাতীয় ফারাকগুলো আর থাকে না, উবে যায়। লৈঙ্গিক পরিচয়ের দিকটা মাথায় না নিলে যেকোনো একাডেমিক কাজই অশুদ্ধ হতে বাধ্য। এমন লোকও আছে যারা মনে করে, এসব নিয়ে কথা বলবে কেবল নারী ও সমকামীরাই। আমার কাছে ওই ধারণাটাই গলদে ভরা। আমি আমার ছাত্রছাত্রীদের বলে থাকি—স্রেফ এটা মনে রেখো যে, যা নিয়েই তুমি গবেষণা করো না কেন, তা অযথার্থ হতে বাধ্য, যদি তুমি

এটা মাথায় না রাখো: একে লৈঙ্গিক প্রেক্ষাপট থেকে বিচার করো। ব্যাপারটা নারীবাদী কি না আমি জানি না। এটা এক চিন্তাশীল চিন্তার বিষয়, ঠিক কিনা? অন্যদিক থেকে দেখলে, লৈঙ্গিক বৈষম্য দূর করবে, এমন ভালো ভালো আইনের জন্য কাজ করাটা আলাদা ব্যাপার। আমি মনে করি এটা গুরুত্বপূর্ণ; আর এটা বিষয়ের যে ধারণা তা আমার পছন্দ নয়। ওই কাজটাকে অবশ্য ‘নিজেই নিজের যেন একটা একক ইস্যুতে পর্যবসিত হয়ে না পড়ে। নারীদের ভোট বা এ-জাতীয় লক্ষ্য’—হিসেবে গণ্য করা যায় না; কেননা আইন প্রতিষ্ঠার অর্থ এই নয় যে, সব জায়গায় তার বাস্তবায়ন হবে। জনস্বার্থবিষয়ক বহু মামলার সঙ্গে আমি জড়িত।

সূত্র: আমি খোদ সাব-অল্টার্নদের কাছ থেকে শিখি, গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, অনুবাদ: জুয়েল মাজহার, ভিন্নচোখ সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, আলী আফজাল খান সম্পাদিত, পৃষ্ঠা-১৮৮

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত