শামীম আল মাহমুদ (শিমুল)

‘আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব, দেশের তত বেশি উপকার হবে। আমাদের মনে হয়, এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল কলেজের চাইতে একটু বেশি।’
প্রমথ চৌধুরীর বই পড়া প্রবন্ধের এ উদ্ধৃতিটি আমি ব্যবহার করেছিলাম ২০০৭ সালে, ‘ধনবাড়ী গণপাঠাগার স্থাপনে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে। এরপর গঙ্গা-যমুনায় অনেক পানি প্রবাহিত হয়েছে। অবশেষে, ধনবাড়ীতে আমরা পাঠাগার নামক এক কামরার একটি স্থাপনা পেলাম এই ২০২১ সালে।
পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই রাখার জায়গা’ আর পাঠাগার মানে হলো ‘বই পড়ার জায়গা’।
এ কথা স্বীকৃত যে, শুধু বই লেনদেনের তুলনায় একসঙ্গে বসে বই পড়া ও এরপর তা নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা বেশি ফলপ্রসূ। কেননা, বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আন্দ্রেই তারকোভস্কির মতে, ‘A book read by a thousand different people is a thousand different books. ’ তাই, মাত্র একটি বই পড়ে তাকে হাজার রকম দৃষ্টিভঙ্গির সমাবেশ ঘটানোর মাধ্যমে হাজার গুণ কার্যকর করার সুযোগ আছে কেবল সম্মিলিত পড়া ও পর্যালোচনার মাধ্যমেই।
এ ছাড়া এডগার ডেলের ‘কোন অব এক্সপেরিয়েন্স’ অনুযায়ী শুধু পড়ে শিখনফল অর্জিত হয় ১০ শতাংশ, যেখানে বলা ও পারস্পরিক আলোচনায় তা অর্জিত হতে পারে ৭০-৯০ শতাংশ। এভাবেই, ক্যাফেগুলোতে ইতিবাচক আড্ডা দিতে দিতে থিসিস ও অ্যান্টিথিসিসের সংঘর্ষে সিনথেসিস তৈরির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে খোদ ফরাসি সভ্যতা। তাই, গ্রন্থাগারের তুলনায় পাঠাগার বরাবরই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এ জন্যই সীমিত সাধ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহারে দিলারা দোলা আপুর সহযোগিতায় ৩০০–এর বেশি মানসম্মত বই নিয়ে ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বাঁশহাটিতে (খাদ্যগুদাম সংলগ্ন) গড়ে উঠেছে অভয়ারণ্য পাঠাগার। ৩০০ শুনে যদি মন দমে যায়, তবে বলি—জ্যাক স্নাইডার পরিচালিত ‘দ্য থ্রি হানড্রেড’ মুভির কথা, যেখানে থার্মোপাইলির যুদ্ধে মাত্র ৩০০ স্পার্টান যোদ্ধা রুখে দাঁড়ায় হাজার হাজার পারস্য সেনার বিরুদ্ধে। এ থেকেই বোঝা যায়, সংখ্যার তুলনায় মানে সমৃদ্ধ হওয়া উত্তম। তবে, সংখ্যাটি এখন আর ৩ অঙ্কে সীমাবদ্ধ নেই, বরং কালের পরিক্রমায় সবার সম্মিলিত সহায়তায় তা ৪ অঙ্কের সংখ্যায় পরিণত হয়েছে।
পাঠাগারের কথা বলতে গেলে আগে অভয়ারণ্য সংগঠনের কথা বলতে হবে। আমাদের একটা অভয়ারণ্য Sanctuary আছে, যার যাত্রা শুরু ৬ মার্চ ২০১৫, প্রথম বৈঠক হয় ২৬ আগস্ট ২০১৫ তারিখে। আর আমরা সবাই এক একজন ‘মারমিডন’। মারমিডনদের কথা মনে আছে তো? ওই যে, হোমারের ইলিয়াডে যারা অন্যান্য গ্রিক বীরদের মধ্যে শক্তি ও কৌশলে অনন্যসাধারণ ছিল। তারা নিজেদের সিংহ হিসেবে চিহ্নিত করত। তারা জানত তাদের অমরত্ব আসবে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে, তাই তারা মৃত্যুকে ভয় পেত না বরং ভালোবেসে আলিঙ্গন করত।
আর আমার অবস্থান এই অসীম সুপ্ত শক্তি ও মেধাবীদের এক ছায়াতলে আনার চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে সময়ের প্রয়োজনে তাদের সংগঠক অ্যাকিলিসের জায়গায় দাঁড়িয়ে। সে জানত ট্রয় যুদ্ধে তার মৃত্যু অনিবার্য, তবু সে সুখী জীবনযাপন ছেড়ে অমরত্বের আশায় ট্রয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
অবশ্য মারমিডনদের সংগঠক একজন হলেও আমরা ছিলাম ৫ জন, অভয়ারণ্যের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পঞ্চপাণ্ডব। ঈশ্বর ও শয়তানের দ্বারা ভালো-মন্দের যে প্রাগৈতিহাসিক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, আমরা তার বর্তমান সময়ের ভালো পক্ষের সৈনিক। তবে আমাদের অস্ত্র আদিকালের মতো অসি নয় বরং তার চেয়ে শক্তিশালী আধুনিক মসি। তাই এখানে পদাতিক বা অশ্বারোহী বলে যে ভাগাভাগি তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
ভারতীয়, পারসি বা আরবীয় সংস্কৃতিতে রাজার মৃত্যু মানেই যুদ্ধের সমাপ্তি যা ভারত থেকে উদ্ভূত দাবা খেলায়ও বিদ্যমান। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি Art of Deligation–এ যা দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিক বা রোমান সংস্কৃতিতে। যেখানে রাজা যুদ্ধের সময় প্রথমে একজন সৈনিক তারপর সেনাপতি। এমনকি রাজার সাধারণ সৈনিকদের চেয়ে আলাদা কোনো পোশাকও নেই। রাজা মারা গেলে তৎক্ষণাৎ তার পরবর্তী জন তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করে। ফলে নেতৃত্বের প্রবাহ এ ক্ষেত্রে অতীব জরুরি আর জয় বা পরাজয় সমগ্র জাতির, সমগ্র সাধারণ মানুষের।
যা হোক, ২১ আগস্ট ২০২১ সালে আমরা একটি জায়গার প্রতিশ্রুতি পাই ধনবাড়ীর মেয়র মো. মনিরুজ্জামান বকুলের কাছ থেকে। পরবর্তীতে তিল তিল করে সবার উপহারে ২২ সেপ্টেম্বর গড়ে ওঠে আমাদের স্বপ্নের অভয়ারণ্য পাঠাগারের কক্ষটি। বুদ্ধগয়ার কোনো এক অখ্যাত অশ্বত্থ গাছের নিচে বসে ৪৯ দিনের ধ্যান শেষে এক বৈশাখী পূর্ণিমায় ৩৫ বছর বয়সী যুবরাজ সিদ্ধার্থ বোধিলাভ করে বুদ্ধ হয়ে কী অমৃত অনুভূতি পেয়েছিলেন, আমার জানা নেই। কিন্তু, স্কুল জীবনে দেখা, নিজ এলাকায় একটি গণপাঠাগারের স্বপ্নের সম্যকভাবে বাস্তবায়ন সম্পন্ন হওয়ায়, সেদিন মধ্যরাতে পাকুড় গাছের নিচে ঘরছাড়া চাঁদের আলোয় আমিও এক অবর্ণনীয় অদ্ভুত আনন্দে ভেসে গিয়েছিলাম। আনমনেই বলে ফেললাম পালি ভাষার আবেদন ‘সাঙ্ঘাম শরণংগচ্ছামি’।
কিন্তু আনন্দের পর বেদনার স্মৃতিও এসেছে। ৩১ মার্চ ২০২২ অভয়ারণ্য পাঠাগারের জন্য একটি কালো দিবস। সেদিন কে বা কারা অভয়ারণ্য পাঠাগারে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৪১১ সালে পুড়িয়ে দেওয়া হয় গ্রিক দার্শনিক প্রোটাগোরাসের বইগুলো। মুসলিমদের প্রায় ৮০ হাজার বই পুড়িয়ে দেয় স্পেনের তৎকালীন খ্রিষ্টানেরা। সিরিয়া-ফিলিস্তিনের মুসলিমদের লাখ লাখ বই পুড়িয়ে দেয় খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা। এমনকি আলেকজান্দ্রিয়ার জ্ঞানের বাতিঘর রাজপাঠাগারটিও বাঁচেনি অগ্নিসংযোগের হাত থেকে।
কুখ্যাত মঙ্গল শাসক হালাকু খান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র ‘বায়তুল হিকমা’ ধ্বংস করায় মুসলিম তথা সমগ্র বিশ্ব কয়েকশ বছর অন্ধকারে ডুবে ছিল। বায়তুল হিকমাতে নাকি এত বইপুস্তক ও গবেষণাপত্র ছিল যে তা পোড়ানোয় আব্বাসীয় প্রাসাদ সংলগ্ন টাইগ্রিস নদীর পানি কালো হয়ে যায়। স্যামুয়েল পি. হান্টিংটনও এ কথা বলেছেন, ‘the fundamental source of conflict in this new world will not be primarily ideological or primarily economic. The great divisions among humankind and the dominating source of conflict will be cultural. ’।
জ্ঞানকে গলা টিপে ধরার এ রকম কাহিনির শিকার হলেও পরবর্তী সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষজন এ ঘটনার নিন্দাজ্ঞাপন করে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের সবার প্রতি অভয়ারণ্য গোষ্ঠী কৃতজ্ঞ।
পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির মতোই আমরা আবার পৃথিবীতে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করার তাড়নায় উঠে দাঁড়িয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত ৪ মার্চ ইস্টিশন পাঠাগার কর্তৃক পাঠাগার আন্দোলনে অবদান রাখায় অভয়ারণ্য পাঠাগার অর্জন করে ইস্টিশন পাঠাগার সম্মাননা ২০২৩।
আপনিও শামিল হতে পারেন আমাদের এ বিপ্লবে, দেখে যেতে পারেন আমাদের এ অব্যাহত সংগ্রামের বর্তমান অবস্থা, নিয়ে যেতে পারেন এক স্বর্গসুখ। কারণ হোর্হে লুইস বোর্হেস বলেন, ‘I have always imagined that Paradise will be a kind of library. ’
শুরু করেছিলাম প্রমথ চৌধুরীর ‘বই পড়া’ দিয়ে। শেষও সেখান থেকেই করি। ‘আমার বিশ্বাস, শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’। তাই, নিজেই নিজেকে শিক্ষিত করতে গ্রামের গৃহে গৃহে গড়ে উঠুক গণপাঠাগার।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, অভয়ারণ্য পাঠাগার, প্রভাষক (শিক্ষা), সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, রাজশাহী

‘আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব, দেশের তত বেশি উপকার হবে। আমাদের মনে হয়, এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল কলেজের চাইতে একটু বেশি।’
প্রমথ চৌধুরীর বই পড়া প্রবন্ধের এ উদ্ধৃতিটি আমি ব্যবহার করেছিলাম ২০০৭ সালে, ‘ধনবাড়ী গণপাঠাগার স্থাপনে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে। এরপর গঙ্গা-যমুনায় অনেক পানি প্রবাহিত হয়েছে। অবশেষে, ধনবাড়ীতে আমরা পাঠাগার নামক এক কামরার একটি স্থাপনা পেলাম এই ২০২১ সালে।
পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই রাখার জায়গা’ আর পাঠাগার মানে হলো ‘বই পড়ার জায়গা’।
এ কথা স্বীকৃত যে, শুধু বই লেনদেনের তুলনায় একসঙ্গে বসে বই পড়া ও এরপর তা নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা বেশি ফলপ্রসূ। কেননা, বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আন্দ্রেই তারকোভস্কির মতে, ‘A book read by a thousand different people is a thousand different books. ’ তাই, মাত্র একটি বই পড়ে তাকে হাজার রকম দৃষ্টিভঙ্গির সমাবেশ ঘটানোর মাধ্যমে হাজার গুণ কার্যকর করার সুযোগ আছে কেবল সম্মিলিত পড়া ও পর্যালোচনার মাধ্যমেই।
এ ছাড়া এডগার ডেলের ‘কোন অব এক্সপেরিয়েন্স’ অনুযায়ী শুধু পড়ে শিখনফল অর্জিত হয় ১০ শতাংশ, যেখানে বলা ও পারস্পরিক আলোচনায় তা অর্জিত হতে পারে ৭০-৯০ শতাংশ। এভাবেই, ক্যাফেগুলোতে ইতিবাচক আড্ডা দিতে দিতে থিসিস ও অ্যান্টিথিসিসের সংঘর্ষে সিনথেসিস তৈরির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে খোদ ফরাসি সভ্যতা। তাই, গ্রন্থাগারের তুলনায় পাঠাগার বরাবরই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এ জন্যই সীমিত সাধ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহারে দিলারা দোলা আপুর সহযোগিতায় ৩০০–এর বেশি মানসম্মত বই নিয়ে ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বাঁশহাটিতে (খাদ্যগুদাম সংলগ্ন) গড়ে উঠেছে অভয়ারণ্য পাঠাগার। ৩০০ শুনে যদি মন দমে যায়, তবে বলি—জ্যাক স্নাইডার পরিচালিত ‘দ্য থ্রি হানড্রেড’ মুভির কথা, যেখানে থার্মোপাইলির যুদ্ধে মাত্র ৩০০ স্পার্টান যোদ্ধা রুখে দাঁড়ায় হাজার হাজার পারস্য সেনার বিরুদ্ধে। এ থেকেই বোঝা যায়, সংখ্যার তুলনায় মানে সমৃদ্ধ হওয়া উত্তম। তবে, সংখ্যাটি এখন আর ৩ অঙ্কে সীমাবদ্ধ নেই, বরং কালের পরিক্রমায় সবার সম্মিলিত সহায়তায় তা ৪ অঙ্কের সংখ্যায় পরিণত হয়েছে।
পাঠাগারের কথা বলতে গেলে আগে অভয়ারণ্য সংগঠনের কথা বলতে হবে। আমাদের একটা অভয়ারণ্য Sanctuary আছে, যার যাত্রা শুরু ৬ মার্চ ২০১৫, প্রথম বৈঠক হয় ২৬ আগস্ট ২০১৫ তারিখে। আর আমরা সবাই এক একজন ‘মারমিডন’। মারমিডনদের কথা মনে আছে তো? ওই যে, হোমারের ইলিয়াডে যারা অন্যান্য গ্রিক বীরদের মধ্যে শক্তি ও কৌশলে অনন্যসাধারণ ছিল। তারা নিজেদের সিংহ হিসেবে চিহ্নিত করত। তারা জানত তাদের অমরত্ব আসবে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে, তাই তারা মৃত্যুকে ভয় পেত না বরং ভালোবেসে আলিঙ্গন করত।
আর আমার অবস্থান এই অসীম সুপ্ত শক্তি ও মেধাবীদের এক ছায়াতলে আনার চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে সময়ের প্রয়োজনে তাদের সংগঠক অ্যাকিলিসের জায়গায় দাঁড়িয়ে। সে জানত ট্রয় যুদ্ধে তার মৃত্যু অনিবার্য, তবু সে সুখী জীবনযাপন ছেড়ে অমরত্বের আশায় ট্রয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
অবশ্য মারমিডনদের সংগঠক একজন হলেও আমরা ছিলাম ৫ জন, অভয়ারণ্যের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পঞ্চপাণ্ডব। ঈশ্বর ও শয়তানের দ্বারা ভালো-মন্দের যে প্রাগৈতিহাসিক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, আমরা তার বর্তমান সময়ের ভালো পক্ষের সৈনিক। তবে আমাদের অস্ত্র আদিকালের মতো অসি নয় বরং তার চেয়ে শক্তিশালী আধুনিক মসি। তাই এখানে পদাতিক বা অশ্বারোহী বলে যে ভাগাভাগি তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
ভারতীয়, পারসি বা আরবীয় সংস্কৃতিতে রাজার মৃত্যু মানেই যুদ্ধের সমাপ্তি যা ভারত থেকে উদ্ভূত দাবা খেলায়ও বিদ্যমান। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি Art of Deligation–এ যা দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিক বা রোমান সংস্কৃতিতে। যেখানে রাজা যুদ্ধের সময় প্রথমে একজন সৈনিক তারপর সেনাপতি। এমনকি রাজার সাধারণ সৈনিকদের চেয়ে আলাদা কোনো পোশাকও নেই। রাজা মারা গেলে তৎক্ষণাৎ তার পরবর্তী জন তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করে। ফলে নেতৃত্বের প্রবাহ এ ক্ষেত্রে অতীব জরুরি আর জয় বা পরাজয় সমগ্র জাতির, সমগ্র সাধারণ মানুষের।
যা হোক, ২১ আগস্ট ২০২১ সালে আমরা একটি জায়গার প্রতিশ্রুতি পাই ধনবাড়ীর মেয়র মো. মনিরুজ্জামান বকুলের কাছ থেকে। পরবর্তীতে তিল তিল করে সবার উপহারে ২২ সেপ্টেম্বর গড়ে ওঠে আমাদের স্বপ্নের অভয়ারণ্য পাঠাগারের কক্ষটি। বুদ্ধগয়ার কোনো এক অখ্যাত অশ্বত্থ গাছের নিচে বসে ৪৯ দিনের ধ্যান শেষে এক বৈশাখী পূর্ণিমায় ৩৫ বছর বয়সী যুবরাজ সিদ্ধার্থ বোধিলাভ করে বুদ্ধ হয়ে কী অমৃত অনুভূতি পেয়েছিলেন, আমার জানা নেই। কিন্তু, স্কুল জীবনে দেখা, নিজ এলাকায় একটি গণপাঠাগারের স্বপ্নের সম্যকভাবে বাস্তবায়ন সম্পন্ন হওয়ায়, সেদিন মধ্যরাতে পাকুড় গাছের নিচে ঘরছাড়া চাঁদের আলোয় আমিও এক অবর্ণনীয় অদ্ভুত আনন্দে ভেসে গিয়েছিলাম। আনমনেই বলে ফেললাম পালি ভাষার আবেদন ‘সাঙ্ঘাম শরণংগচ্ছামি’।
কিন্তু আনন্দের পর বেদনার স্মৃতিও এসেছে। ৩১ মার্চ ২০২২ অভয়ারণ্য পাঠাগারের জন্য একটি কালো দিবস। সেদিন কে বা কারা অভয়ারণ্য পাঠাগারে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৪১১ সালে পুড়িয়ে দেওয়া হয় গ্রিক দার্শনিক প্রোটাগোরাসের বইগুলো। মুসলিমদের প্রায় ৮০ হাজার বই পুড়িয়ে দেয় স্পেনের তৎকালীন খ্রিষ্টানেরা। সিরিয়া-ফিলিস্তিনের মুসলিমদের লাখ লাখ বই পুড়িয়ে দেয় খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা। এমনকি আলেকজান্দ্রিয়ার জ্ঞানের বাতিঘর রাজপাঠাগারটিও বাঁচেনি অগ্নিসংযোগের হাত থেকে।
কুখ্যাত মঙ্গল শাসক হালাকু খান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র ‘বায়তুল হিকমা’ ধ্বংস করায় মুসলিম তথা সমগ্র বিশ্ব কয়েকশ বছর অন্ধকারে ডুবে ছিল। বায়তুল হিকমাতে নাকি এত বইপুস্তক ও গবেষণাপত্র ছিল যে তা পোড়ানোয় আব্বাসীয় প্রাসাদ সংলগ্ন টাইগ্রিস নদীর পানি কালো হয়ে যায়। স্যামুয়েল পি. হান্টিংটনও এ কথা বলেছেন, ‘the fundamental source of conflict in this new world will not be primarily ideological or primarily economic. The great divisions among humankind and the dominating source of conflict will be cultural. ’।
জ্ঞানকে গলা টিপে ধরার এ রকম কাহিনির শিকার হলেও পরবর্তী সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষজন এ ঘটনার নিন্দাজ্ঞাপন করে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের সবার প্রতি অভয়ারণ্য গোষ্ঠী কৃতজ্ঞ।
পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির মতোই আমরা আবার পৃথিবীতে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করার তাড়নায় উঠে দাঁড়িয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত ৪ মার্চ ইস্টিশন পাঠাগার কর্তৃক পাঠাগার আন্দোলনে অবদান রাখায় অভয়ারণ্য পাঠাগার অর্জন করে ইস্টিশন পাঠাগার সম্মাননা ২০২৩।
আপনিও শামিল হতে পারেন আমাদের এ বিপ্লবে, দেখে যেতে পারেন আমাদের এ অব্যাহত সংগ্রামের বর্তমান অবস্থা, নিয়ে যেতে পারেন এক স্বর্গসুখ। কারণ হোর্হে লুইস বোর্হেস বলেন, ‘I have always imagined that Paradise will be a kind of library. ’
শুরু করেছিলাম প্রমথ চৌধুরীর ‘বই পড়া’ দিয়ে। শেষও সেখান থেকেই করি। ‘আমার বিশ্বাস, শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’। তাই, নিজেই নিজেকে শিক্ষিত করতে গ্রামের গৃহে গৃহে গড়ে উঠুক গণপাঠাগার।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, অভয়ারণ্য পাঠাগার, প্রভাষক (শিক্ষা), সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, রাজশাহী
শামীম আল মাহমুদ (শিমুল)

‘আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব, দেশের তত বেশি উপকার হবে। আমাদের মনে হয়, এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল কলেজের চাইতে একটু বেশি।’
প্রমথ চৌধুরীর বই পড়া প্রবন্ধের এ উদ্ধৃতিটি আমি ব্যবহার করেছিলাম ২০০৭ সালে, ‘ধনবাড়ী গণপাঠাগার স্থাপনে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে। এরপর গঙ্গা-যমুনায় অনেক পানি প্রবাহিত হয়েছে। অবশেষে, ধনবাড়ীতে আমরা পাঠাগার নামক এক কামরার একটি স্থাপনা পেলাম এই ২০২১ সালে।
পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই রাখার জায়গা’ আর পাঠাগার মানে হলো ‘বই পড়ার জায়গা’।
এ কথা স্বীকৃত যে, শুধু বই লেনদেনের তুলনায় একসঙ্গে বসে বই পড়া ও এরপর তা নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা বেশি ফলপ্রসূ। কেননা, বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আন্দ্রেই তারকোভস্কির মতে, ‘A book read by a thousand different people is a thousand different books. ’ তাই, মাত্র একটি বই পড়ে তাকে হাজার রকম দৃষ্টিভঙ্গির সমাবেশ ঘটানোর মাধ্যমে হাজার গুণ কার্যকর করার সুযোগ আছে কেবল সম্মিলিত পড়া ও পর্যালোচনার মাধ্যমেই।
এ ছাড়া এডগার ডেলের ‘কোন অব এক্সপেরিয়েন্স’ অনুযায়ী শুধু পড়ে শিখনফল অর্জিত হয় ১০ শতাংশ, যেখানে বলা ও পারস্পরিক আলোচনায় তা অর্জিত হতে পারে ৭০-৯০ শতাংশ। এভাবেই, ক্যাফেগুলোতে ইতিবাচক আড্ডা দিতে দিতে থিসিস ও অ্যান্টিথিসিসের সংঘর্ষে সিনথেসিস তৈরির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে খোদ ফরাসি সভ্যতা। তাই, গ্রন্থাগারের তুলনায় পাঠাগার বরাবরই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এ জন্যই সীমিত সাধ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহারে দিলারা দোলা আপুর সহযোগিতায় ৩০০–এর বেশি মানসম্মত বই নিয়ে ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বাঁশহাটিতে (খাদ্যগুদাম সংলগ্ন) গড়ে উঠেছে অভয়ারণ্য পাঠাগার। ৩০০ শুনে যদি মন দমে যায়, তবে বলি—জ্যাক স্নাইডার পরিচালিত ‘দ্য থ্রি হানড্রেড’ মুভির কথা, যেখানে থার্মোপাইলির যুদ্ধে মাত্র ৩০০ স্পার্টান যোদ্ধা রুখে দাঁড়ায় হাজার হাজার পারস্য সেনার বিরুদ্ধে। এ থেকেই বোঝা যায়, সংখ্যার তুলনায় মানে সমৃদ্ধ হওয়া উত্তম। তবে, সংখ্যাটি এখন আর ৩ অঙ্কে সীমাবদ্ধ নেই, বরং কালের পরিক্রমায় সবার সম্মিলিত সহায়তায় তা ৪ অঙ্কের সংখ্যায় পরিণত হয়েছে।
পাঠাগারের কথা বলতে গেলে আগে অভয়ারণ্য সংগঠনের কথা বলতে হবে। আমাদের একটা অভয়ারণ্য Sanctuary আছে, যার যাত্রা শুরু ৬ মার্চ ২০১৫, প্রথম বৈঠক হয় ২৬ আগস্ট ২০১৫ তারিখে। আর আমরা সবাই এক একজন ‘মারমিডন’। মারমিডনদের কথা মনে আছে তো? ওই যে, হোমারের ইলিয়াডে যারা অন্যান্য গ্রিক বীরদের মধ্যে শক্তি ও কৌশলে অনন্যসাধারণ ছিল। তারা নিজেদের সিংহ হিসেবে চিহ্নিত করত। তারা জানত তাদের অমরত্ব আসবে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে, তাই তারা মৃত্যুকে ভয় পেত না বরং ভালোবেসে আলিঙ্গন করত।
আর আমার অবস্থান এই অসীম সুপ্ত শক্তি ও মেধাবীদের এক ছায়াতলে আনার চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে সময়ের প্রয়োজনে তাদের সংগঠক অ্যাকিলিসের জায়গায় দাঁড়িয়ে। সে জানত ট্রয় যুদ্ধে তার মৃত্যু অনিবার্য, তবু সে সুখী জীবনযাপন ছেড়ে অমরত্বের আশায় ট্রয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
অবশ্য মারমিডনদের সংগঠক একজন হলেও আমরা ছিলাম ৫ জন, অভয়ারণ্যের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পঞ্চপাণ্ডব। ঈশ্বর ও শয়তানের দ্বারা ভালো-মন্দের যে প্রাগৈতিহাসিক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, আমরা তার বর্তমান সময়ের ভালো পক্ষের সৈনিক। তবে আমাদের অস্ত্র আদিকালের মতো অসি নয় বরং তার চেয়ে শক্তিশালী আধুনিক মসি। তাই এখানে পদাতিক বা অশ্বারোহী বলে যে ভাগাভাগি তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
ভারতীয়, পারসি বা আরবীয় সংস্কৃতিতে রাজার মৃত্যু মানেই যুদ্ধের সমাপ্তি যা ভারত থেকে উদ্ভূত দাবা খেলায়ও বিদ্যমান। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি Art of Deligation–এ যা দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিক বা রোমান সংস্কৃতিতে। যেখানে রাজা যুদ্ধের সময় প্রথমে একজন সৈনিক তারপর সেনাপতি। এমনকি রাজার সাধারণ সৈনিকদের চেয়ে আলাদা কোনো পোশাকও নেই। রাজা মারা গেলে তৎক্ষণাৎ তার পরবর্তী জন তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করে। ফলে নেতৃত্বের প্রবাহ এ ক্ষেত্রে অতীব জরুরি আর জয় বা পরাজয় সমগ্র জাতির, সমগ্র সাধারণ মানুষের।
যা হোক, ২১ আগস্ট ২০২১ সালে আমরা একটি জায়গার প্রতিশ্রুতি পাই ধনবাড়ীর মেয়র মো. মনিরুজ্জামান বকুলের কাছ থেকে। পরবর্তীতে তিল তিল করে সবার উপহারে ২২ সেপ্টেম্বর গড়ে ওঠে আমাদের স্বপ্নের অভয়ারণ্য পাঠাগারের কক্ষটি। বুদ্ধগয়ার কোনো এক অখ্যাত অশ্বত্থ গাছের নিচে বসে ৪৯ দিনের ধ্যান শেষে এক বৈশাখী পূর্ণিমায় ৩৫ বছর বয়সী যুবরাজ সিদ্ধার্থ বোধিলাভ করে বুদ্ধ হয়ে কী অমৃত অনুভূতি পেয়েছিলেন, আমার জানা নেই। কিন্তু, স্কুল জীবনে দেখা, নিজ এলাকায় একটি গণপাঠাগারের স্বপ্নের সম্যকভাবে বাস্তবায়ন সম্পন্ন হওয়ায়, সেদিন মধ্যরাতে পাকুড় গাছের নিচে ঘরছাড়া চাঁদের আলোয় আমিও এক অবর্ণনীয় অদ্ভুত আনন্দে ভেসে গিয়েছিলাম। আনমনেই বলে ফেললাম পালি ভাষার আবেদন ‘সাঙ্ঘাম শরণংগচ্ছামি’।
কিন্তু আনন্দের পর বেদনার স্মৃতিও এসেছে। ৩১ মার্চ ২০২২ অভয়ারণ্য পাঠাগারের জন্য একটি কালো দিবস। সেদিন কে বা কারা অভয়ারণ্য পাঠাগারে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৪১১ সালে পুড়িয়ে দেওয়া হয় গ্রিক দার্শনিক প্রোটাগোরাসের বইগুলো। মুসলিমদের প্রায় ৮০ হাজার বই পুড়িয়ে দেয় স্পেনের তৎকালীন খ্রিষ্টানেরা। সিরিয়া-ফিলিস্তিনের মুসলিমদের লাখ লাখ বই পুড়িয়ে দেয় খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা। এমনকি আলেকজান্দ্রিয়ার জ্ঞানের বাতিঘর রাজপাঠাগারটিও বাঁচেনি অগ্নিসংযোগের হাত থেকে।
কুখ্যাত মঙ্গল শাসক হালাকু খান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র ‘বায়তুল হিকমা’ ধ্বংস করায় মুসলিম তথা সমগ্র বিশ্ব কয়েকশ বছর অন্ধকারে ডুবে ছিল। বায়তুল হিকমাতে নাকি এত বইপুস্তক ও গবেষণাপত্র ছিল যে তা পোড়ানোয় আব্বাসীয় প্রাসাদ সংলগ্ন টাইগ্রিস নদীর পানি কালো হয়ে যায়। স্যামুয়েল পি. হান্টিংটনও এ কথা বলেছেন, ‘the fundamental source of conflict in this new world will not be primarily ideological or primarily economic. The great divisions among humankind and the dominating source of conflict will be cultural. ’।
জ্ঞানকে গলা টিপে ধরার এ রকম কাহিনির শিকার হলেও পরবর্তী সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষজন এ ঘটনার নিন্দাজ্ঞাপন করে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের সবার প্রতি অভয়ারণ্য গোষ্ঠী কৃতজ্ঞ।
পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির মতোই আমরা আবার পৃথিবীতে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করার তাড়নায় উঠে দাঁড়িয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত ৪ মার্চ ইস্টিশন পাঠাগার কর্তৃক পাঠাগার আন্দোলনে অবদান রাখায় অভয়ারণ্য পাঠাগার অর্জন করে ইস্টিশন পাঠাগার সম্মাননা ২০২৩।
আপনিও শামিল হতে পারেন আমাদের এ বিপ্লবে, দেখে যেতে পারেন আমাদের এ অব্যাহত সংগ্রামের বর্তমান অবস্থা, নিয়ে যেতে পারেন এক স্বর্গসুখ। কারণ হোর্হে লুইস বোর্হেস বলেন, ‘I have always imagined that Paradise will be a kind of library. ’
শুরু করেছিলাম প্রমথ চৌধুরীর ‘বই পড়া’ দিয়ে। শেষও সেখান থেকেই করি। ‘আমার বিশ্বাস, শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’। তাই, নিজেই নিজেকে শিক্ষিত করতে গ্রামের গৃহে গৃহে গড়ে উঠুক গণপাঠাগার।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, অভয়ারণ্য পাঠাগার, প্রভাষক (শিক্ষা), সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, রাজশাহী

‘আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব, দেশের তত বেশি উপকার হবে। আমাদের মনে হয়, এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল কলেজের চাইতে একটু বেশি।’
প্রমথ চৌধুরীর বই পড়া প্রবন্ধের এ উদ্ধৃতিটি আমি ব্যবহার করেছিলাম ২০০৭ সালে, ‘ধনবাড়ী গণপাঠাগার স্থাপনে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে। এরপর গঙ্গা-যমুনায় অনেক পানি প্রবাহিত হয়েছে। অবশেষে, ধনবাড়ীতে আমরা পাঠাগার নামক এক কামরার একটি স্থাপনা পেলাম এই ২০২১ সালে।
পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই রাখার জায়গা’ আর পাঠাগার মানে হলো ‘বই পড়ার জায়গা’।
এ কথা স্বীকৃত যে, শুধু বই লেনদেনের তুলনায় একসঙ্গে বসে বই পড়া ও এরপর তা নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা বেশি ফলপ্রসূ। কেননা, বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আন্দ্রেই তারকোভস্কির মতে, ‘A book read by a thousand different people is a thousand different books. ’ তাই, মাত্র একটি বই পড়ে তাকে হাজার রকম দৃষ্টিভঙ্গির সমাবেশ ঘটানোর মাধ্যমে হাজার গুণ কার্যকর করার সুযোগ আছে কেবল সম্মিলিত পড়া ও পর্যালোচনার মাধ্যমেই।
এ ছাড়া এডগার ডেলের ‘কোন অব এক্সপেরিয়েন্স’ অনুযায়ী শুধু পড়ে শিখনফল অর্জিত হয় ১০ শতাংশ, যেখানে বলা ও পারস্পরিক আলোচনায় তা অর্জিত হতে পারে ৭০-৯০ শতাংশ। এভাবেই, ক্যাফেগুলোতে ইতিবাচক আড্ডা দিতে দিতে থিসিস ও অ্যান্টিথিসিসের সংঘর্ষে সিনথেসিস তৈরির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে খোদ ফরাসি সভ্যতা। তাই, গ্রন্থাগারের তুলনায় পাঠাগার বরাবরই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এ জন্যই সীমিত সাধ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহারে দিলারা দোলা আপুর সহযোগিতায় ৩০০–এর বেশি মানসম্মত বই নিয়ে ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বাঁশহাটিতে (খাদ্যগুদাম সংলগ্ন) গড়ে উঠেছে অভয়ারণ্য পাঠাগার। ৩০০ শুনে যদি মন দমে যায়, তবে বলি—জ্যাক স্নাইডার পরিচালিত ‘দ্য থ্রি হানড্রেড’ মুভির কথা, যেখানে থার্মোপাইলির যুদ্ধে মাত্র ৩০০ স্পার্টান যোদ্ধা রুখে দাঁড়ায় হাজার হাজার পারস্য সেনার বিরুদ্ধে। এ থেকেই বোঝা যায়, সংখ্যার তুলনায় মানে সমৃদ্ধ হওয়া উত্তম। তবে, সংখ্যাটি এখন আর ৩ অঙ্কে সীমাবদ্ধ নেই, বরং কালের পরিক্রমায় সবার সম্মিলিত সহায়তায় তা ৪ অঙ্কের সংখ্যায় পরিণত হয়েছে।
পাঠাগারের কথা বলতে গেলে আগে অভয়ারণ্য সংগঠনের কথা বলতে হবে। আমাদের একটা অভয়ারণ্য Sanctuary আছে, যার যাত্রা শুরু ৬ মার্চ ২০১৫, প্রথম বৈঠক হয় ২৬ আগস্ট ২০১৫ তারিখে। আর আমরা সবাই এক একজন ‘মারমিডন’। মারমিডনদের কথা মনে আছে তো? ওই যে, হোমারের ইলিয়াডে যারা অন্যান্য গ্রিক বীরদের মধ্যে শক্তি ও কৌশলে অনন্যসাধারণ ছিল। তারা নিজেদের সিংহ হিসেবে চিহ্নিত করত। তারা জানত তাদের অমরত্ব আসবে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে, তাই তারা মৃত্যুকে ভয় পেত না বরং ভালোবেসে আলিঙ্গন করত।
আর আমার অবস্থান এই অসীম সুপ্ত শক্তি ও মেধাবীদের এক ছায়াতলে আনার চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে সময়ের প্রয়োজনে তাদের সংগঠক অ্যাকিলিসের জায়গায় দাঁড়িয়ে। সে জানত ট্রয় যুদ্ধে তার মৃত্যু অনিবার্য, তবু সে সুখী জীবনযাপন ছেড়ে অমরত্বের আশায় ট্রয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
অবশ্য মারমিডনদের সংগঠক একজন হলেও আমরা ছিলাম ৫ জন, অভয়ারণ্যের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পঞ্চপাণ্ডব। ঈশ্বর ও শয়তানের দ্বারা ভালো-মন্দের যে প্রাগৈতিহাসিক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, আমরা তার বর্তমান সময়ের ভালো পক্ষের সৈনিক। তবে আমাদের অস্ত্র আদিকালের মতো অসি নয় বরং তার চেয়ে শক্তিশালী আধুনিক মসি। তাই এখানে পদাতিক বা অশ্বারোহী বলে যে ভাগাভাগি তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
ভারতীয়, পারসি বা আরবীয় সংস্কৃতিতে রাজার মৃত্যু মানেই যুদ্ধের সমাপ্তি যা ভারত থেকে উদ্ভূত দাবা খেলায়ও বিদ্যমান। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি Art of Deligation–এ যা দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিক বা রোমান সংস্কৃতিতে। যেখানে রাজা যুদ্ধের সময় প্রথমে একজন সৈনিক তারপর সেনাপতি। এমনকি রাজার সাধারণ সৈনিকদের চেয়ে আলাদা কোনো পোশাকও নেই। রাজা মারা গেলে তৎক্ষণাৎ তার পরবর্তী জন তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করে। ফলে নেতৃত্বের প্রবাহ এ ক্ষেত্রে অতীব জরুরি আর জয় বা পরাজয় সমগ্র জাতির, সমগ্র সাধারণ মানুষের।
যা হোক, ২১ আগস্ট ২০২১ সালে আমরা একটি জায়গার প্রতিশ্রুতি পাই ধনবাড়ীর মেয়র মো. মনিরুজ্জামান বকুলের কাছ থেকে। পরবর্তীতে তিল তিল করে সবার উপহারে ২২ সেপ্টেম্বর গড়ে ওঠে আমাদের স্বপ্নের অভয়ারণ্য পাঠাগারের কক্ষটি। বুদ্ধগয়ার কোনো এক অখ্যাত অশ্বত্থ গাছের নিচে বসে ৪৯ দিনের ধ্যান শেষে এক বৈশাখী পূর্ণিমায় ৩৫ বছর বয়সী যুবরাজ সিদ্ধার্থ বোধিলাভ করে বুদ্ধ হয়ে কী অমৃত অনুভূতি পেয়েছিলেন, আমার জানা নেই। কিন্তু, স্কুল জীবনে দেখা, নিজ এলাকায় একটি গণপাঠাগারের স্বপ্নের সম্যকভাবে বাস্তবায়ন সম্পন্ন হওয়ায়, সেদিন মধ্যরাতে পাকুড় গাছের নিচে ঘরছাড়া চাঁদের আলোয় আমিও এক অবর্ণনীয় অদ্ভুত আনন্দে ভেসে গিয়েছিলাম। আনমনেই বলে ফেললাম পালি ভাষার আবেদন ‘সাঙ্ঘাম শরণংগচ্ছামি’।
কিন্তু আনন্দের পর বেদনার স্মৃতিও এসেছে। ৩১ মার্চ ২০২২ অভয়ারণ্য পাঠাগারের জন্য একটি কালো দিবস। সেদিন কে বা কারা অভয়ারণ্য পাঠাগারে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ৪১১ সালে পুড়িয়ে দেওয়া হয় গ্রিক দার্শনিক প্রোটাগোরাসের বইগুলো। মুসলিমদের প্রায় ৮০ হাজার বই পুড়িয়ে দেয় স্পেনের তৎকালীন খ্রিষ্টানেরা। সিরিয়া-ফিলিস্তিনের মুসলিমদের লাখ লাখ বই পুড়িয়ে দেয় খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা। এমনকি আলেকজান্দ্রিয়ার জ্ঞানের বাতিঘর রাজপাঠাগারটিও বাঁচেনি অগ্নিসংযোগের হাত থেকে।
কুখ্যাত মঙ্গল শাসক হালাকু খান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র ‘বায়তুল হিকমা’ ধ্বংস করায় মুসলিম তথা সমগ্র বিশ্ব কয়েকশ বছর অন্ধকারে ডুবে ছিল। বায়তুল হিকমাতে নাকি এত বইপুস্তক ও গবেষণাপত্র ছিল যে তা পোড়ানোয় আব্বাসীয় প্রাসাদ সংলগ্ন টাইগ্রিস নদীর পানি কালো হয়ে যায়। স্যামুয়েল পি. হান্টিংটনও এ কথা বলেছেন, ‘the fundamental source of conflict in this new world will not be primarily ideological or primarily economic. The great divisions among humankind and the dominating source of conflict will be cultural. ’।
জ্ঞানকে গলা টিপে ধরার এ রকম কাহিনির শিকার হলেও পরবর্তী সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষজন এ ঘটনার নিন্দাজ্ঞাপন করে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের সবার প্রতি অভয়ারণ্য গোষ্ঠী কৃতজ্ঞ।
পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির মতোই আমরা আবার পৃথিবীতে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করার তাড়নায় উঠে দাঁড়িয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত ৪ মার্চ ইস্টিশন পাঠাগার কর্তৃক পাঠাগার আন্দোলনে অবদান রাখায় অভয়ারণ্য পাঠাগার অর্জন করে ইস্টিশন পাঠাগার সম্মাননা ২০২৩।
আপনিও শামিল হতে পারেন আমাদের এ বিপ্লবে, দেখে যেতে পারেন আমাদের এ অব্যাহত সংগ্রামের বর্তমান অবস্থা, নিয়ে যেতে পারেন এক স্বর্গসুখ। কারণ হোর্হে লুইস বোর্হেস বলেন, ‘I have always imagined that Paradise will be a kind of library. ’
শুরু করেছিলাম প্রমথ চৌধুরীর ‘বই পড়া’ দিয়ে। শেষও সেখান থেকেই করি। ‘আমার বিশ্বাস, শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত’। তাই, নিজেই নিজেকে শিক্ষিত করতে গ্রামের গৃহে গৃহে গড়ে উঠুক গণপাঠাগার।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, অভয়ারণ্য পাঠাগার, প্রভাষক (শিক্ষা), সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, রাজশাহী

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
১ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে কিন্তু কখনো গহিন অরণ্যের আস্তানায় সশস্ত্র রক্ষীবেষ্টিত হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়নি। তাঁর মাদক কারবারের আয় গোটা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখত। আর তাঁকে কখনো জেলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়নি। কারণ, মাদক-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাঁদের ছিল, তাঁরা সবাই ছিলেন তাঁর বেতনভুক্ত কর্মচারী!
তিনি আর কেউ নন, তিনি রানি ভিক্টোরিয়া। তাঁর হাতে ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দণ্ড।
রানি ভিক্টোরিয়া শুধু সাম্রাজ্য পরিচালনাতেই মাদক ব্যবহার করেননি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের ভক্ত। সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।
ভিক্টোরিয়ার অন্যতম প্রিয় মাদক ছিল আফিম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে আফিম সেবনের ফ্যাশনেবল উপায় ছিল—অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশিয়ে লডেনাম আকারে পান করা। তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি দূর করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের জন্যও এটি সুপারিশ করতেন চিকিৎসকেরা। রানি ভিক্টোরিয়াও প্রতিদিন সকালে এক ঢোক লডেনাম পান করে দিন শুরু করতেন।
এ ছাড়া তিনি সেবন করতেন কোকেন। এটি তখন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈধ। দাঁতের ব্যথা উপশম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানি কোকেন মিশ্রিত চুইংগাম ও ওয়াইন পছন্দ করতেন। প্রসবের সময় অসহনীয় যন্ত্রণা কমাতে তিনি সানন্দে ক্লোরোফর্ম গ্রহণ করেন এবং এই অভিজ্ঞতাটিকে ‘স্বর্গীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
১৮৩৭ সালে যখন ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন, উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বড় সংকটের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চাপে—ব্রিটিশরা চীন থেকে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করত। এর ফলে ব্রিটেনের সব অর্থ চীনে চলে যাচ্ছিল। আর ওই সময় ব্রিটিশদের হাতে চীনে রপ্তানি করার মতো কিছু ছিল না। ব্রিটেন মরিয়া হয়ে এমন একটি পণ্যের সন্ধান করছিল, যা চীনের লোকেরা চাইবে।
এ সমস্যার সমাধান ছিল আফিম। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারতে প্রচুর আফিম উৎপাদিত হতো। এটি ছিল অত্যন্ত কার্যকর ব্যথানাশক এবং মারাত্মকভাবে আসক্তি সৃষ্টিকারী। ফলে চীনের লোকেরা এর জন্য প্রচুর দাম দিতে প্রস্তুত ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার শাসন শুরু হওয়ার পর, চীনে আফিমের চালান দ্রুত বাড়তে থাকে। আফিমের কল্যাণে রাতারাতি বাণিজ্য ভারসাম্য বদলে যায়। চীনই ব্রিটিশদের কাছে ঋণী হতে শুরু করে। মাদক কারবার থেকে আসা অর্থ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মোট বার্ষিক আয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়।
চীন সরকার মরিয়া হয়ে আফিমের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। চীনের সম্রাট এই কাজের জন্য প্রশাসক লিন জেক্সুকে নিয়োগ করেন। জেক্সু রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি চিঠি লিখে ব্রিটিশদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—চীন যেখানে চা, রেশম ও মৃৎপাত্রের মতো উপকারী পণ্য পাঠাচ্ছে, সেখানে ব্রিটেন কেন তার বিনিময়ে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিকর মাদক পাঠাচ্ছে?
রানি সেই চিঠি পড়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে ১৮৩৯ সালের বসন্তে লিন জেক্সু ব্রিটিশ জাহাজ বহর আটক করেন এবং প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড আফিম দক্ষিণ চীন সাগরে ফেলে দেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সী রানি ভিক্টোরিয়া এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। যেকোনো ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী কিশোরীর মতো তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতই—তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটিই ইতিহাসে প্রথম ‘আফিম যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ বাহিনী চীনা সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে এবং হাজার হাজার চীনা নাগরিককে হত্যা করে। সম্রাট বাধ্য হয়ে একটি অসম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। চীনে আফিম ঢোকার জন্য আরও বন্দর খুলে দেওয়া হয় এবং চীনে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকেরা আইনি সুরক্ষা পান।
এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে চীন সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়। এভাবেই একজন একগুঁয়ে কিশোরী রানি একটি প্রাচীন, মর্যাদাপূর্ণ সভ্যতাকে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। এই নির্মম, নির্লজ্জ আত্মস্বার্থই রানি ভিক্টোরিয়াকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মাদক সম্রাট বানিয়ে তোলে!
তথ্যসূত্র: টাইম

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে কিন্তু কখনো গহিন অরণ্যের আস্তানায় সশস্ত্র রক্ষীবেষ্টিত হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়নি। তাঁর মাদক কারবারের আয় গোটা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখত। আর তাঁকে কখনো জেলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়নি। কারণ, মাদক-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাঁদের ছিল, তাঁরা সবাই ছিলেন তাঁর বেতনভুক্ত কর্মচারী!
তিনি আর কেউ নন, তিনি রানি ভিক্টোরিয়া। তাঁর হাতে ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দণ্ড।
রানি ভিক্টোরিয়া শুধু সাম্রাজ্য পরিচালনাতেই মাদক ব্যবহার করেননি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের ভক্ত। সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।
ভিক্টোরিয়ার অন্যতম প্রিয় মাদক ছিল আফিম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে আফিম সেবনের ফ্যাশনেবল উপায় ছিল—অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশিয়ে লডেনাম আকারে পান করা। তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি দূর করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের জন্যও এটি সুপারিশ করতেন চিকিৎসকেরা। রানি ভিক্টোরিয়াও প্রতিদিন সকালে এক ঢোক লডেনাম পান করে দিন শুরু করতেন।
এ ছাড়া তিনি সেবন করতেন কোকেন। এটি তখন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈধ। দাঁতের ব্যথা উপশম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানি কোকেন মিশ্রিত চুইংগাম ও ওয়াইন পছন্দ করতেন। প্রসবের সময় অসহনীয় যন্ত্রণা কমাতে তিনি সানন্দে ক্লোরোফর্ম গ্রহণ করেন এবং এই অভিজ্ঞতাটিকে ‘স্বর্গীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
১৮৩৭ সালে যখন ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন, উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বড় সংকটের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চাপে—ব্রিটিশরা চীন থেকে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করত। এর ফলে ব্রিটেনের সব অর্থ চীনে চলে যাচ্ছিল। আর ওই সময় ব্রিটিশদের হাতে চীনে রপ্তানি করার মতো কিছু ছিল না। ব্রিটেন মরিয়া হয়ে এমন একটি পণ্যের সন্ধান করছিল, যা চীনের লোকেরা চাইবে।
এ সমস্যার সমাধান ছিল আফিম। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারতে প্রচুর আফিম উৎপাদিত হতো। এটি ছিল অত্যন্ত কার্যকর ব্যথানাশক এবং মারাত্মকভাবে আসক্তি সৃষ্টিকারী। ফলে চীনের লোকেরা এর জন্য প্রচুর দাম দিতে প্রস্তুত ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার শাসন শুরু হওয়ার পর, চীনে আফিমের চালান দ্রুত বাড়তে থাকে। আফিমের কল্যাণে রাতারাতি বাণিজ্য ভারসাম্য বদলে যায়। চীনই ব্রিটিশদের কাছে ঋণী হতে শুরু করে। মাদক কারবার থেকে আসা অর্থ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মোট বার্ষিক আয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়।
চীন সরকার মরিয়া হয়ে আফিমের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। চীনের সম্রাট এই কাজের জন্য প্রশাসক লিন জেক্সুকে নিয়োগ করেন। জেক্সু রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি চিঠি লিখে ব্রিটিশদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—চীন যেখানে চা, রেশম ও মৃৎপাত্রের মতো উপকারী পণ্য পাঠাচ্ছে, সেখানে ব্রিটেন কেন তার বিনিময়ে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিকর মাদক পাঠাচ্ছে?
রানি সেই চিঠি পড়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে ১৮৩৯ সালের বসন্তে লিন জেক্সু ব্রিটিশ জাহাজ বহর আটক করেন এবং প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড আফিম দক্ষিণ চীন সাগরে ফেলে দেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সী রানি ভিক্টোরিয়া এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। যেকোনো ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী কিশোরীর মতো তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতই—তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটিই ইতিহাসে প্রথম ‘আফিম যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ বাহিনী চীনা সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে এবং হাজার হাজার চীনা নাগরিককে হত্যা করে। সম্রাট বাধ্য হয়ে একটি অসম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। চীনে আফিম ঢোকার জন্য আরও বন্দর খুলে দেওয়া হয় এবং চীনে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকেরা আইনি সুরক্ষা পান।
এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে চীন সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়। এভাবেই একজন একগুঁয়ে কিশোরী রানি একটি প্রাচীন, মর্যাদাপূর্ণ সভ্যতাকে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। এই নির্মম, নির্লজ্জ আত্মস্বার্থই রানি ভিক্টোরিয়াকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মাদক সম্রাট বানিয়ে তোলে!
তথ্যসূত্র: টাইম

পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই র
০৫ মার্চ ২০২৩
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
১ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া হবে।
বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিচারক প্যানেলে থাকবে শিশুরাও। বর্তমান চিলড্রেনস লরিয়েট শিশুসাহিত্যিক ফ্রাঙ্ক কটরেল-বয়েস বিচারকদের উদ্বোধনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক থাকবেন, যাঁরা প্রথমে আটটি বইয়ের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর বিজয়ী নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচিত হবেন।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিবছর চিলড্রেনস বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেড হওয়া এবং বিজয়ী বইগুলোর ৩০ হাজার কপি শিশুদের উপহার দেওয়া হবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট, দ্য রিডিং এজেন্সি, বুকব্যাংকস এবং চিলড্রেনস বুক প্রজেক্টসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে এ বইগুলো দেওয়া হবে। গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে শিশুদের ‘আনন্দ নিয়ে পড়া’র প্রবণতা। এমন সময় বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগটি নিল।
কটরেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কার শিশুদের উপভোগ করার মতো বই খুঁজে বের করা সহজ করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি শিশুরই বইয়ের জগতে ডুব দেওয়ার যে আনন্দ, তা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বিচারক প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এবং মনোনীত বইগুলো উপহার দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার শিশুকে বই পড়ার চমৎকার দুনিয়ায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা বেশ দারুণ আয়োজন হতে যাচ্ছে।’ তিনি মজা করে বলেন, ‘চলুন, হইচই শুরু করা যাক!’
শিশুসাহিত্য জগতের শীর্ষ লেখকদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এ ঘোষণা। সাবেক শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মালরি ব্ল্যাকম্যান, জ্যাকলিন উইলসন, মাইকেল মরপুরগো, ক্রেসিডা কাউয়েল, অ্যান ফাইন এবং জোসেফ কোয়েলোরা—সবাই নতুন এই পুরস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত সমসাময়িক শিশুসাহিত্যগুলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুকার এবং আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মতোই বিজয়ী লেখক ৫০ হাজার পাউন্ড এবং শর্টলিস্টেড লেখকেরা প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পাবেন।
প্রথম চিলড্রেনস বুকার পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২০২৬ সালের বসন্তে। বিচারক হতে শিশুদের আবেদন প্রক্রিয়াও এই সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই বছরের নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে শর্টলিস্ট এবং শিশু বিচারকদের নাম। বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তরুণ পাঠকদের জন্য আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে। ২০২৭ সালের পুরস্কারের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত বই হতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিল্পকলায় সমর্থন এবং জলবায়ু-সংকট মোকাবিলায় কাজ করা দাতব্য সংস্থা একেও ফাউন্ডেশনের (AKO Foundation) সহযোগিতায় এ পুরস্কার পরিচালিত হবে।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) গ্যাবি উড বলেন, ‘২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ চালুর পর গত ২০ বছরে আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ চিলড্রেনস বুকার। এর একাধিক লক্ষ্য রয়েছে। একদিকে এটি শিশুদের জন্য লেখা ভবিষ্যৎ ক্লাসিক সাহিত্যকে সম্মান জানাবে, অন্যদিকে এটি এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা তরুণদের আরও বেশি করে পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করবে। এর মাধ্যমেই আমরা এমন এক বীজ রোপণ করতে চাই, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আজীবন পাঠকেরা বিকশিত হবে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, শিশুদের বিশেষ করে শিশুসাহিত্যের আসল বিচারকদের মতামত শোনার জন্য।
একেও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ ল-ফোর্ড বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব ফাউন্ডেশনের সাক্ষরতা বৃদ্ধি ও সামাজিক গতিশীলতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা গর্বিত যে এমন একটি প্রকল্পে অবদান রাখতে পারছি, যা তরুণ পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করবে।’
বিনো ব্রেইন নামের একটি যুব গবেষণা সংস্থা ও ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের সহযোগিতায় নিয়মিত পরামর্শ সেশনের মাধ্যমে শিশুরা এই পুরস্কারের গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট শিশুদের পড়ার অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
বুকার ফাউন্ডেশনের মতে, এই নতুন পুরস্কারটি শিশুসাহিত্যকে ‘সংস্কৃতির কেন্দ্রে স্থাপন’ করার একটি প্রচেষ্টা। সিইও গ্যাবি উড বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু শিশুসাহিত্যে উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়, বরং আরও বেশি তরুণকে এমন গল্প ও চরিত্র আবিষ্কারে সহায়তা করা ‘যারা তাদের সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।’
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সাহিত্য পুরস্কার বুকার প্রাইজ প্রথম প্রদান করা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত ইংরেজিতে রচিত অসাধারণ কথাসাহিত্যকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হয়।

শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া হবে।
বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিচারক প্যানেলে থাকবে শিশুরাও। বর্তমান চিলড্রেনস লরিয়েট শিশুসাহিত্যিক ফ্রাঙ্ক কটরেল-বয়েস বিচারকদের উদ্বোধনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক থাকবেন, যাঁরা প্রথমে আটটি বইয়ের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর বিজয়ী নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচিত হবেন।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিবছর চিলড্রেনস বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেড হওয়া এবং বিজয়ী বইগুলোর ৩০ হাজার কপি শিশুদের উপহার দেওয়া হবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট, দ্য রিডিং এজেন্সি, বুকব্যাংকস এবং চিলড্রেনস বুক প্রজেক্টসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে এ বইগুলো দেওয়া হবে। গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে শিশুদের ‘আনন্দ নিয়ে পড়া’র প্রবণতা। এমন সময় বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগটি নিল।
কটরেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কার শিশুদের উপভোগ করার মতো বই খুঁজে বের করা সহজ করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি শিশুরই বইয়ের জগতে ডুব দেওয়ার যে আনন্দ, তা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বিচারক প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এবং মনোনীত বইগুলো উপহার দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার শিশুকে বই পড়ার চমৎকার দুনিয়ায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা বেশ দারুণ আয়োজন হতে যাচ্ছে।’ তিনি মজা করে বলেন, ‘চলুন, হইচই শুরু করা যাক!’
শিশুসাহিত্য জগতের শীর্ষ লেখকদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এ ঘোষণা। সাবেক শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মালরি ব্ল্যাকম্যান, জ্যাকলিন উইলসন, মাইকেল মরপুরগো, ক্রেসিডা কাউয়েল, অ্যান ফাইন এবং জোসেফ কোয়েলোরা—সবাই নতুন এই পুরস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত সমসাময়িক শিশুসাহিত্যগুলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুকার এবং আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মতোই বিজয়ী লেখক ৫০ হাজার পাউন্ড এবং শর্টলিস্টেড লেখকেরা প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পাবেন।
প্রথম চিলড্রেনস বুকার পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২০২৬ সালের বসন্তে। বিচারক হতে শিশুদের আবেদন প্রক্রিয়াও এই সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই বছরের নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে শর্টলিস্ট এবং শিশু বিচারকদের নাম। বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তরুণ পাঠকদের জন্য আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে। ২০২৭ সালের পুরস্কারের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত বই হতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিল্পকলায় সমর্থন এবং জলবায়ু-সংকট মোকাবিলায় কাজ করা দাতব্য সংস্থা একেও ফাউন্ডেশনের (AKO Foundation) সহযোগিতায় এ পুরস্কার পরিচালিত হবে।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) গ্যাবি উড বলেন, ‘২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ চালুর পর গত ২০ বছরে আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ চিলড্রেনস বুকার। এর একাধিক লক্ষ্য রয়েছে। একদিকে এটি শিশুদের জন্য লেখা ভবিষ্যৎ ক্লাসিক সাহিত্যকে সম্মান জানাবে, অন্যদিকে এটি এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা তরুণদের আরও বেশি করে পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করবে। এর মাধ্যমেই আমরা এমন এক বীজ রোপণ করতে চাই, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আজীবন পাঠকেরা বিকশিত হবে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, শিশুদের বিশেষ করে শিশুসাহিত্যের আসল বিচারকদের মতামত শোনার জন্য।
একেও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ ল-ফোর্ড বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব ফাউন্ডেশনের সাক্ষরতা বৃদ্ধি ও সামাজিক গতিশীলতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা গর্বিত যে এমন একটি প্রকল্পে অবদান রাখতে পারছি, যা তরুণ পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করবে।’
বিনো ব্রেইন নামের একটি যুব গবেষণা সংস্থা ও ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের সহযোগিতায় নিয়মিত পরামর্শ সেশনের মাধ্যমে শিশুরা এই পুরস্কারের গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট শিশুদের পড়ার অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
বুকার ফাউন্ডেশনের মতে, এই নতুন পুরস্কারটি শিশুসাহিত্যকে ‘সংস্কৃতির কেন্দ্রে স্থাপন’ করার একটি প্রচেষ্টা। সিইও গ্যাবি উড বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু শিশুসাহিত্যে উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়, বরং আরও বেশি তরুণকে এমন গল্প ও চরিত্র আবিষ্কারে সহায়তা করা ‘যারা তাদের সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।’
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সাহিত্য পুরস্কার বুকার প্রাইজ প্রথম প্রদান করা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত ইংরেজিতে রচিত অসাধারণ কথাসাহিত্যকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হয়।

পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই র
০৫ মার্চ ২০২৩
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
১ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৩ দিন আগেসম্পাদকীয়

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে পারে অন্য জায়গার এসব খাবার। অন্তত ছায়ানীড়ের নিয়মিত ভক্ত-গ্রাহকেরা এমন দাবি করতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই।
তাই হয়তো এখনো রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় লেগে থাকে। ব্যস্ত সড়কের পাশ থেকে যখন মুরগি পোড়ার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়, তখন পথে যেতে অনেকেই হয়তো বিরতি নিয়ে কিনে নেন ছায়ানীড়ের শর্মা বা গ্রিল চিকেন। ভেতরে বসে খেতে হলে লম্বা লাইনে যেমন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার পার্সেল নিতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। প্রাত্যহিক এ দৃশ্য ছায়ানীড়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিরিয়ানি ও অন্যান্য ফাস্ট ফুড খাবারও পাওয়া যায় এখানে।
ছবি: ওমর ফারুক

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে পারে অন্য জায়গার এসব খাবার। অন্তত ছায়ানীড়ের নিয়মিত ভক্ত-গ্রাহকেরা এমন দাবি করতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই।
তাই হয়তো এখনো রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় লেগে থাকে। ব্যস্ত সড়কের পাশ থেকে যখন মুরগি পোড়ার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়, তখন পথে যেতে অনেকেই হয়তো বিরতি নিয়ে কিনে নেন ছায়ানীড়ের শর্মা বা গ্রিল চিকেন। ভেতরে বসে খেতে হলে লম্বা লাইনে যেমন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার পার্সেল নিতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। প্রাত্যহিক এ দৃশ্য ছায়ানীড়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিরিয়ানি ও অন্যান্য ফাস্ট ফুড খাবারও পাওয়া যায় এখানে।
ছবি: ওমর ফারুক

পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই র
০৫ মার্চ ২০২৩
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৩ দিন আগেসম্পাদকীয়

আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান

আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান

পাঠাগার ও গ্রন্থাগার শাব্দিকভাবে সমার্থক হলেও উৎসগত বিবেচনায় কিছুটা ভিন্ন। অবশ্য, এ দেশে গ্রন্থবিপণী বা বইয়ের দোকান বোঝাতেও ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্প্যানিশ ভাষায় গ্রন্থাগার হলো ‘Biblioteca’ আর গ্রন্থবিপণী হলো ‘Libreria’. একইভাবে উৎস অনুসারে বলা যায়, গ্রন্থাগার মানে ‘বহু বই র
০৫ মার্চ ২০২৩
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
১ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
১ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
১ দিন আগে