জাহাঙ্গীর আলম

নাম তাঁর ইদ্রিস গ্যালসিয়া হল। ১৯০৬ সালের ১৩ অক্টোবর কানাডার উইনিপেগ শহরে জন্ম। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হার্বার্ট হল এবং মার্গারেট হেডলি হল দম্পতির কন্যা। পরবর্তীতে অবশ্য অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল নামেই বিখ্যাত হয়েছেন।
১৯১৭ সালের জুনে যুদ্ধক্ষেত্রে বাবার মৃত্যুর পর মা ইদ্রিস গ্যালসিয়া ও তাঁর ছোট বোনকে নিয়ে ইউরোপে পাড়ি দেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে আগে ইদ্রিস ফ্রান্সের একটি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন।
বাবার মৃত্যু ইদ্রিসের কচি মনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। অত্যন্ত অস্থির প্রকৃতির ছিলেন। স্কুলে সিনিয়রদের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলায় জড়াতেন। ৬ ফুট উচ্চতার উচ্ছল প্রাণময় কিশোরী ইদ্রিসকে তারা ‘টমবয়’ বলে সম্বোধন করত। শান্ত সৌম্য সামাজিক কিশোরীতে রূপান্তরিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষার্থী ও মুরব্বিরা। কিন্তু ইদ্রিস এসব কখনোই গায়ে মাখেননি। বরং বাবার ছেলেবেলার প্রিয় সংগ্রহ থেকে চমৎকার গল্পের বইগুলোতে বুঁদ হয়ে থাকতেন। সেসব গল্প ছিল ‘পুরুষালি’ অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর। ইদ্রিস সেসব গল্পে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন। তখন থেকেই পৃথিবীর দূর প্রান্তে ভ্রমণে যাওয়া, অ্যাডভেঞ্চার আর নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন।
১৯২২ সালে ইদ্রিসের বয়স তখন মাত্র ১৬ বছর, প্যারিস হেরাল্ড পত্রিকার রিভেরা সংস্করণে একটি বিজ্ঞাপন তার নজর কাড়ে: ‘বুদ্ধি, সৌন্দর্য এবং পাজামা—ভাগ্যবান যুবতীর জন্য বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ...অ্যাডভেঞ্চারে যোগ দিতে চান...এশিয়া, আফ্রিকা...।’
কিশোরী ইদ্রিসের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে এই বিজ্ঞাপন। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ‘ক্যাপ্টেন’ ওয়াল্টার ওয়ান্ডারওয়েলের নেতৃত্বে একটি উচ্চাভিলাষী বিশ্ব ভ্রমণের জন্য সেক্রেটারি এবং ড্রাইভার পদে আবেদন করেন ইদ্রিস। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রকৃত নাম ভ্যালেরিয়ান জোহানেস পিসিনস্কি। পোল্যান্ডের নাগরিক তিনি।
একজন সাবেক নাবিক, বিশ্বমানের পর্বতারোহী এবং ভ্রমণকারী ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার। যুদ্ধের সময় গুপ্তচর বৃত্তির দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের জেলে কাটিয়েছেন কিছুদিন। বিশ্ব শান্তি ও লিগ অব নেশনসের (বর্তমানে জাতিসংঘ) প্রচারের অংশ হিসেবে ১৯১৯ সালে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন।
ওয়ার্ক অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল ক্লাব (ডব্লিউএডব্লিউই) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন ওয়াল্টার এবং তাঁর তৎকালীন স্ত্রী নেল। ‘মিলিয়ন ডলারের বাজির’ আয়োজন করেন তাঁরা।
নেল এবং ওয়াল্টার বিশ্বভ্রমণ অভিযানে প্রতিযোগী দলগুলোর নেতৃত্ব দিতেন। কোন দল সবচেয়ে বেশি মাইল ভ্রমণ করতে পারে—এটাই ছিল প্রতিযোগিতা। আর এই ভ্রমণের অর্থ জোগাড় করা হতো স্যুভেনির প্যাম্ফলেট বিক্রি, বক্তৃতা, রাস্তায় শুট ও সম্পাদনা করা চলচ্চিত্রগুলোর প্রদর্শন থেকে পাওয়া আয় দিয়ে।
১৯২২ সাল নাগাদ ইদ্রিস প্যারিস হেরাল্ডের বিজ্ঞাপনটির যখন জবাব দেন, তার অনেক আগেই ওয়াল্টার এবং নেল আলাদা হয়ে হয়ে গেছেন। নেলের দল তখন যুক্তরাষ্ট্রে সফর করছিল। ওয়াল্টার একটি কাস্টমাইজ করা ফোর্ড গাড়িতে ইউরোপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁর দরকার ছিল ফরাসি ভাষায় সাবলীল একজন নতুন ক্রু মেম্বার।
ইদ্রিসের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তাঁর উচ্ছলতা, আগ্রহ ও সাহস দেখে অভিভূত হন ওয়াল্টার। এক কথায় তাঁকে ক্রু হিসেবে নেন। ওই সময়ই ইদ্রিসের একটি নতুন মঞ্চ নাম দেন ওয়াল্টার: অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল।
মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
রাস্তায় রাস্তায় জীবনের কঠোরতার সঙ্গে সহজেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন অ্যালোহা। ভ্রমণের বিবরণ নির্মাণেও মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। অভিনেত্রী, ফটোগ্রাফার, সিনেমাটোগ্রাফার, ড্রাইভার, সেলাই, লন্ড্রি, চলচ্চিত্র সম্পাদনা, বিচিত্রানুষ্ঠানের পারফরমার, বিক্রয়কর্মী, দোভাষী, আলোচক, মেকানিক...এবং ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের চাপিয়ে দেওয়া অন্য যে কোনো কাজ দক্ষতার সঙ্গে করেছেন তিনি।
চারটি মহাদেশের ৪৩টি দেশের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেছেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা। ভয়ংকর দুঃসাহসিক কাজ ছিল সেটি।
তাঁরা ফ্রান্স এবং দেশটির যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছিলেন...মুসোলিনি এবং ফ্যাসিবাদীরা যখন শক্তি সুসংহত করছিল ঠিক তখনই ইতালির ভেতর দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া জার্মানিতে তখন খাদ্য সংকট নিয়ে দাঙ্গা এবং উগ্র আগ্রাসী জনতার দাপট, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী মিত্ররা তখন ক্ষতিপূরণ দাবি করছে—এ পরিস্থিতিতে জার্মানির ভেতর দিয়ে যাত্রা.মিসরেররের রাজাদের উপত্যকায় গ্রেট স্ফিংক্সের পাদদেশে তাঁরা শিবির স্থাপন করেছিলেন…ফিলিস্তিন যেখানে ইহুদিরা বসতি গড়ার চেষ্টা করছে… ভারতের বিস্তীর্ণ বালুময় এলাকা, তাঁদের ফোর্ড গাড়িটি নদী পার করিয়ে দিয়েছিল জল মহিষ।
অ্যালোহা পর্তুগিজ উপনিবেশ-পূর্ব আফ্রিকার ভূমি পেরিয়েছিলেন এবং সুদানের মরুভূমিতে তৃষ্ণায় প্রায় মরতে বসেছিলেন…এর মধ্যে পুরুষের ছদ্মবেশে মক্কায় গিয়েছিলেন, সেখানে ওমরাহ পালন করেন… ইন্দো-চীনে হাতি শিকার করেছিলেন, চীনা দস্যুদের সঙ্গে ভাব করেছিলেন এবং এমনকি সাইবেরিয়ার রেড আর্মিতে অনারারি কর্নেল উপাধি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে...হলিউড সফরের সময় মেরি পিকফোর্ড এবং ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কসের সঙ্গে গলায়-গলায় সম্পর্ক হয়েছিল।
অ্যালোহা পুরুষের বেশে মক্কায় ওমরাহ পালন করেন, কারণ ইসলামের বিধান অনুযায়ী কোনো নারী একা সফর করতে পারেন না।
এই দীর্ঘ ভ্রমণের মধ্যে অ্যালোহা ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রেমে পড়েন। তখনো কিন্তু ওয়াল্টার তাঁর প্রথম স্ত্রী নেলের কাছ থেকে ডিভোর্স পাননি। যুক্তরাষ্ট্রে আগমনের পর, ওয়াল্টারকে ‘শ্বেতাঙ্গ দাসত্বের’ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। বিবাহ বিচ্ছেদে সুবিধা আদায়ের জন্য নেলই যে এই চক্রান্ত করেছিলেন, সেটি পরে প্রমাণিত হয়।
অবশেষে অ্যালোহা এবং ওয়াল্টার ক্যালিফোর্নিয়ায় বিয়ে করেন। তাঁদের দুটি সন্তান হয়—নিল এবং ভ্যালরি।
১৯২৯ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে প্রাথমিক অভিযাত্রা শেষ করেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা জুটি। তাঁদের তথ্যচিত্র ‘উইথ কার অ্যান্ড ক্যামেরা অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’ প্রকাশের পর আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়।
প্রাথমিক অভিযানটি আমাজন অববাহিকার মাটা গ্রোসো অঞ্চলের গভীরে একটি অসাধারণ দুঃসাহসিক কাজ ছিল। তাঁদের বহনকারী বিমানটি অজানা জঙ্গলে অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছিল। অ্যালোহাকে একটি আদিবাসীর সঙ্গে থাকতে হয়েছিল। আর ওয়াল্টার ধীরে ধীরে সভ্যতার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় বের করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে তাঁদের কয়েক মাস লেগে গিয়েছিল।
চমৎকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী অ্যালোহা নেটিভদের মুগ্ধ করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রচুর ছবি তোলেন, তাঁদের জীবনযাপন নথিভুক্ত করেন। তাঁর চলচ্চিত্র—ফ্লাইট টু দ্য স্টোন এজ বোরোরোস, ছিল বোরোরো উপজাতির প্রথম চিত্রিত রেকর্ড। এটি এখন স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের মানব স্টাডিজ আর্কাইভের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৃতাত্ত্বিক সম্পদ।
১৯৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর ওয়াল্টার আরও অভিযান ও চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু এর আগেই ঘটে যায় এক ট্যাজেডি।
১৯৩২ সালের ডিসেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে অ্যালোহা দম্পতির ‘দ্য কারমা’ নামের প্রমোদতরীতে আততায়ী হামলা করে। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সন্দেহভাজন একজনকে আটকও করা হয়। কিন্তু পরে তিনি খালাস পান। ওয়াল্টার হত্যাকাণ্ড পশ্চিম উপকূলে সবচেয়ে বিখ্যাত অমীমাংসিত অপরাধগুলোর একটি।
ওয়াল্টারের মৃত্যুর পর অ্যালোহা ১৯৩৩ সালে ওয়াল্টার বেকারকে বিয়ে করেন। তিনি ডব্লিউএডব্লিউসি-এর সাবেক ক্যামেরাম্যান।
নতুন স্বামীর সঙ্গে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন অ্যালোহা। প্রচুর অনুসন্ধানী কাজ, তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দেন। ‘আলোহা ওয়ান্ডারওয়েল, দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট ট্রাভেলড গার্ল’ নামে খ্যাতি পান। তাঁর সময় একজন নারীর এমন দুঃসাহসিক কাজ ও বহুমুখী প্রতিভা একটি বিরল ঘটনা।
পরবর্তী বছরগুলোতে অ্যালোহা ভ্রমণের নেশা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র, ফটো, জার্নাল এবং অমূল্য শিল্পকর্ম সংগ্রহের দিকে ঝোঁকেন। তাঁর বেশিরভাগ কাজ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন জাদুঘর এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে।
১৯৯৬ সালের ৪ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার নিউপোর্ট বিচে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল ওরফে ইদ্রিস হল।

নাম তাঁর ইদ্রিস গ্যালসিয়া হল। ১৯০৬ সালের ১৩ অক্টোবর কানাডার উইনিপেগ শহরে জন্ম। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হার্বার্ট হল এবং মার্গারেট হেডলি হল দম্পতির কন্যা। পরবর্তীতে অবশ্য অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল নামেই বিখ্যাত হয়েছেন।
১৯১৭ সালের জুনে যুদ্ধক্ষেত্রে বাবার মৃত্যুর পর মা ইদ্রিস গ্যালসিয়া ও তাঁর ছোট বোনকে নিয়ে ইউরোপে পাড়ি দেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে আগে ইদ্রিস ফ্রান্সের একটি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন।
বাবার মৃত্যু ইদ্রিসের কচি মনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। অত্যন্ত অস্থির প্রকৃতির ছিলেন। স্কুলে সিনিয়রদের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলায় জড়াতেন। ৬ ফুট উচ্চতার উচ্ছল প্রাণময় কিশোরী ইদ্রিসকে তারা ‘টমবয়’ বলে সম্বোধন করত। শান্ত সৌম্য সামাজিক কিশোরীতে রূপান্তরিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষার্থী ও মুরব্বিরা। কিন্তু ইদ্রিস এসব কখনোই গায়ে মাখেননি। বরং বাবার ছেলেবেলার প্রিয় সংগ্রহ থেকে চমৎকার গল্পের বইগুলোতে বুঁদ হয়ে থাকতেন। সেসব গল্প ছিল ‘পুরুষালি’ অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর। ইদ্রিস সেসব গল্পে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন। তখন থেকেই পৃথিবীর দূর প্রান্তে ভ্রমণে যাওয়া, অ্যাডভেঞ্চার আর নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন।
১৯২২ সালে ইদ্রিসের বয়স তখন মাত্র ১৬ বছর, প্যারিস হেরাল্ড পত্রিকার রিভেরা সংস্করণে একটি বিজ্ঞাপন তার নজর কাড়ে: ‘বুদ্ধি, সৌন্দর্য এবং পাজামা—ভাগ্যবান যুবতীর জন্য বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ...অ্যাডভেঞ্চারে যোগ দিতে চান...এশিয়া, আফ্রিকা...।’
কিশোরী ইদ্রিসের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে এই বিজ্ঞাপন। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ‘ক্যাপ্টেন’ ওয়াল্টার ওয়ান্ডারওয়েলের নেতৃত্বে একটি উচ্চাভিলাষী বিশ্ব ভ্রমণের জন্য সেক্রেটারি এবং ড্রাইভার পদে আবেদন করেন ইদ্রিস। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রকৃত নাম ভ্যালেরিয়ান জোহানেস পিসিনস্কি। পোল্যান্ডের নাগরিক তিনি।
একজন সাবেক নাবিক, বিশ্বমানের পর্বতারোহী এবং ভ্রমণকারী ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার। যুদ্ধের সময় গুপ্তচর বৃত্তির দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের জেলে কাটিয়েছেন কিছুদিন। বিশ্ব শান্তি ও লিগ অব নেশনসের (বর্তমানে জাতিসংঘ) প্রচারের অংশ হিসেবে ১৯১৯ সালে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন।
ওয়ার্ক অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল ক্লাব (ডব্লিউএডব্লিউই) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন ওয়াল্টার এবং তাঁর তৎকালীন স্ত্রী নেল। ‘মিলিয়ন ডলারের বাজির’ আয়োজন করেন তাঁরা।
নেল এবং ওয়াল্টার বিশ্বভ্রমণ অভিযানে প্রতিযোগী দলগুলোর নেতৃত্ব দিতেন। কোন দল সবচেয়ে বেশি মাইল ভ্রমণ করতে পারে—এটাই ছিল প্রতিযোগিতা। আর এই ভ্রমণের অর্থ জোগাড় করা হতো স্যুভেনির প্যাম্ফলেট বিক্রি, বক্তৃতা, রাস্তায় শুট ও সম্পাদনা করা চলচ্চিত্রগুলোর প্রদর্শন থেকে পাওয়া আয় দিয়ে।
১৯২২ সাল নাগাদ ইদ্রিস প্যারিস হেরাল্ডের বিজ্ঞাপনটির যখন জবাব দেন, তার অনেক আগেই ওয়াল্টার এবং নেল আলাদা হয়ে হয়ে গেছেন। নেলের দল তখন যুক্তরাষ্ট্রে সফর করছিল। ওয়াল্টার একটি কাস্টমাইজ করা ফোর্ড গাড়িতে ইউরোপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁর দরকার ছিল ফরাসি ভাষায় সাবলীল একজন নতুন ক্রু মেম্বার।
ইদ্রিসের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তাঁর উচ্ছলতা, আগ্রহ ও সাহস দেখে অভিভূত হন ওয়াল্টার। এক কথায় তাঁকে ক্রু হিসেবে নেন। ওই সময়ই ইদ্রিসের একটি নতুন মঞ্চ নাম দেন ওয়াল্টার: অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল।
মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
রাস্তায় রাস্তায় জীবনের কঠোরতার সঙ্গে সহজেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন অ্যালোহা। ভ্রমণের বিবরণ নির্মাণেও মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। অভিনেত্রী, ফটোগ্রাফার, সিনেমাটোগ্রাফার, ড্রাইভার, সেলাই, লন্ড্রি, চলচ্চিত্র সম্পাদনা, বিচিত্রানুষ্ঠানের পারফরমার, বিক্রয়কর্মী, দোভাষী, আলোচক, মেকানিক...এবং ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের চাপিয়ে দেওয়া অন্য যে কোনো কাজ দক্ষতার সঙ্গে করেছেন তিনি।
চারটি মহাদেশের ৪৩টি দেশের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেছেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা। ভয়ংকর দুঃসাহসিক কাজ ছিল সেটি।
তাঁরা ফ্রান্স এবং দেশটির যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছিলেন...মুসোলিনি এবং ফ্যাসিবাদীরা যখন শক্তি সুসংহত করছিল ঠিক তখনই ইতালির ভেতর দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া জার্মানিতে তখন খাদ্য সংকট নিয়ে দাঙ্গা এবং উগ্র আগ্রাসী জনতার দাপট, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী মিত্ররা তখন ক্ষতিপূরণ দাবি করছে—এ পরিস্থিতিতে জার্মানির ভেতর দিয়ে যাত্রা.মিসরেররের রাজাদের উপত্যকায় গ্রেট স্ফিংক্সের পাদদেশে তাঁরা শিবির স্থাপন করেছিলেন…ফিলিস্তিন যেখানে ইহুদিরা বসতি গড়ার চেষ্টা করছে… ভারতের বিস্তীর্ণ বালুময় এলাকা, তাঁদের ফোর্ড গাড়িটি নদী পার করিয়ে দিয়েছিল জল মহিষ।
অ্যালোহা পর্তুগিজ উপনিবেশ-পূর্ব আফ্রিকার ভূমি পেরিয়েছিলেন এবং সুদানের মরুভূমিতে তৃষ্ণায় প্রায় মরতে বসেছিলেন…এর মধ্যে পুরুষের ছদ্মবেশে মক্কায় গিয়েছিলেন, সেখানে ওমরাহ পালন করেন… ইন্দো-চীনে হাতি শিকার করেছিলেন, চীনা দস্যুদের সঙ্গে ভাব করেছিলেন এবং এমনকি সাইবেরিয়ার রেড আর্মিতে অনারারি কর্নেল উপাধি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে...হলিউড সফরের সময় মেরি পিকফোর্ড এবং ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কসের সঙ্গে গলায়-গলায় সম্পর্ক হয়েছিল।
অ্যালোহা পুরুষের বেশে মক্কায় ওমরাহ পালন করেন, কারণ ইসলামের বিধান অনুযায়ী কোনো নারী একা সফর করতে পারেন না।
এই দীর্ঘ ভ্রমণের মধ্যে অ্যালোহা ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রেমে পড়েন। তখনো কিন্তু ওয়াল্টার তাঁর প্রথম স্ত্রী নেলের কাছ থেকে ডিভোর্স পাননি। যুক্তরাষ্ট্রে আগমনের পর, ওয়াল্টারকে ‘শ্বেতাঙ্গ দাসত্বের’ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। বিবাহ বিচ্ছেদে সুবিধা আদায়ের জন্য নেলই যে এই চক্রান্ত করেছিলেন, সেটি পরে প্রমাণিত হয়।
অবশেষে অ্যালোহা এবং ওয়াল্টার ক্যালিফোর্নিয়ায় বিয়ে করেন। তাঁদের দুটি সন্তান হয়—নিল এবং ভ্যালরি।
১৯২৯ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে প্রাথমিক অভিযাত্রা শেষ করেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা জুটি। তাঁদের তথ্যচিত্র ‘উইথ কার অ্যান্ড ক্যামেরা অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’ প্রকাশের পর আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়।
প্রাথমিক অভিযানটি আমাজন অববাহিকার মাটা গ্রোসো অঞ্চলের গভীরে একটি অসাধারণ দুঃসাহসিক কাজ ছিল। তাঁদের বহনকারী বিমানটি অজানা জঙ্গলে অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছিল। অ্যালোহাকে একটি আদিবাসীর সঙ্গে থাকতে হয়েছিল। আর ওয়াল্টার ধীরে ধীরে সভ্যতার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় বের করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে তাঁদের কয়েক মাস লেগে গিয়েছিল।
চমৎকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী অ্যালোহা নেটিভদের মুগ্ধ করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রচুর ছবি তোলেন, তাঁদের জীবনযাপন নথিভুক্ত করেন। তাঁর চলচ্চিত্র—ফ্লাইট টু দ্য স্টোন এজ বোরোরোস, ছিল বোরোরো উপজাতির প্রথম চিত্রিত রেকর্ড। এটি এখন স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের মানব স্টাডিজ আর্কাইভের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৃতাত্ত্বিক সম্পদ।
১৯৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর ওয়াল্টার আরও অভিযান ও চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু এর আগেই ঘটে যায় এক ট্যাজেডি।
১৯৩২ সালের ডিসেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে অ্যালোহা দম্পতির ‘দ্য কারমা’ নামের প্রমোদতরীতে আততায়ী হামলা করে। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সন্দেহভাজন একজনকে আটকও করা হয়। কিন্তু পরে তিনি খালাস পান। ওয়াল্টার হত্যাকাণ্ড পশ্চিম উপকূলে সবচেয়ে বিখ্যাত অমীমাংসিত অপরাধগুলোর একটি।
ওয়াল্টারের মৃত্যুর পর অ্যালোহা ১৯৩৩ সালে ওয়াল্টার বেকারকে বিয়ে করেন। তিনি ডব্লিউএডব্লিউসি-এর সাবেক ক্যামেরাম্যান।
নতুন স্বামীর সঙ্গে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন অ্যালোহা। প্রচুর অনুসন্ধানী কাজ, তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দেন। ‘আলোহা ওয়ান্ডারওয়েল, দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট ট্রাভেলড গার্ল’ নামে খ্যাতি পান। তাঁর সময় একজন নারীর এমন দুঃসাহসিক কাজ ও বহুমুখী প্রতিভা একটি বিরল ঘটনা।
পরবর্তী বছরগুলোতে অ্যালোহা ভ্রমণের নেশা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র, ফটো, জার্নাল এবং অমূল্য শিল্পকর্ম সংগ্রহের দিকে ঝোঁকেন। তাঁর বেশিরভাগ কাজ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন জাদুঘর এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে।
১৯৯৬ সালের ৪ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার নিউপোর্ট বিচে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল ওরফে ইদ্রিস হল।
জাহাঙ্গীর আলম

নাম তাঁর ইদ্রিস গ্যালসিয়া হল। ১৯০৬ সালের ১৩ অক্টোবর কানাডার উইনিপেগ শহরে জন্ম। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হার্বার্ট হল এবং মার্গারেট হেডলি হল দম্পতির কন্যা। পরবর্তীতে অবশ্য অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল নামেই বিখ্যাত হয়েছেন।
১৯১৭ সালের জুনে যুদ্ধক্ষেত্রে বাবার মৃত্যুর পর মা ইদ্রিস গ্যালসিয়া ও তাঁর ছোট বোনকে নিয়ে ইউরোপে পাড়ি দেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে আগে ইদ্রিস ফ্রান্সের একটি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন।
বাবার মৃত্যু ইদ্রিসের কচি মনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। অত্যন্ত অস্থির প্রকৃতির ছিলেন। স্কুলে সিনিয়রদের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলায় জড়াতেন। ৬ ফুট উচ্চতার উচ্ছল প্রাণময় কিশোরী ইদ্রিসকে তারা ‘টমবয়’ বলে সম্বোধন করত। শান্ত সৌম্য সামাজিক কিশোরীতে রূপান্তরিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষার্থী ও মুরব্বিরা। কিন্তু ইদ্রিস এসব কখনোই গায়ে মাখেননি। বরং বাবার ছেলেবেলার প্রিয় সংগ্রহ থেকে চমৎকার গল্পের বইগুলোতে বুঁদ হয়ে থাকতেন। সেসব গল্প ছিল ‘পুরুষালি’ অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর। ইদ্রিস সেসব গল্পে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন। তখন থেকেই পৃথিবীর দূর প্রান্তে ভ্রমণে যাওয়া, অ্যাডভেঞ্চার আর নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন।
১৯২২ সালে ইদ্রিসের বয়স তখন মাত্র ১৬ বছর, প্যারিস হেরাল্ড পত্রিকার রিভেরা সংস্করণে একটি বিজ্ঞাপন তার নজর কাড়ে: ‘বুদ্ধি, সৌন্দর্য এবং পাজামা—ভাগ্যবান যুবতীর জন্য বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ...অ্যাডভেঞ্চারে যোগ দিতে চান...এশিয়া, আফ্রিকা...।’
কিশোরী ইদ্রিসের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে এই বিজ্ঞাপন। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ‘ক্যাপ্টেন’ ওয়াল্টার ওয়ান্ডারওয়েলের নেতৃত্বে একটি উচ্চাভিলাষী বিশ্ব ভ্রমণের জন্য সেক্রেটারি এবং ড্রাইভার পদে আবেদন করেন ইদ্রিস। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রকৃত নাম ভ্যালেরিয়ান জোহানেস পিসিনস্কি। পোল্যান্ডের নাগরিক তিনি।
একজন সাবেক নাবিক, বিশ্বমানের পর্বতারোহী এবং ভ্রমণকারী ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার। যুদ্ধের সময় গুপ্তচর বৃত্তির দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের জেলে কাটিয়েছেন কিছুদিন। বিশ্ব শান্তি ও লিগ অব নেশনসের (বর্তমানে জাতিসংঘ) প্রচারের অংশ হিসেবে ১৯১৯ সালে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন।
ওয়ার্ক অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল ক্লাব (ডব্লিউএডব্লিউই) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন ওয়াল্টার এবং তাঁর তৎকালীন স্ত্রী নেল। ‘মিলিয়ন ডলারের বাজির’ আয়োজন করেন তাঁরা।
নেল এবং ওয়াল্টার বিশ্বভ্রমণ অভিযানে প্রতিযোগী দলগুলোর নেতৃত্ব দিতেন। কোন দল সবচেয়ে বেশি মাইল ভ্রমণ করতে পারে—এটাই ছিল প্রতিযোগিতা। আর এই ভ্রমণের অর্থ জোগাড় করা হতো স্যুভেনির প্যাম্ফলেট বিক্রি, বক্তৃতা, রাস্তায় শুট ও সম্পাদনা করা চলচ্চিত্রগুলোর প্রদর্শন থেকে পাওয়া আয় দিয়ে।
১৯২২ সাল নাগাদ ইদ্রিস প্যারিস হেরাল্ডের বিজ্ঞাপনটির যখন জবাব দেন, তার অনেক আগেই ওয়াল্টার এবং নেল আলাদা হয়ে হয়ে গেছেন। নেলের দল তখন যুক্তরাষ্ট্রে সফর করছিল। ওয়াল্টার একটি কাস্টমাইজ করা ফোর্ড গাড়িতে ইউরোপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁর দরকার ছিল ফরাসি ভাষায় সাবলীল একজন নতুন ক্রু মেম্বার।
ইদ্রিসের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তাঁর উচ্ছলতা, আগ্রহ ও সাহস দেখে অভিভূত হন ওয়াল্টার। এক কথায় তাঁকে ক্রু হিসেবে নেন। ওই সময়ই ইদ্রিসের একটি নতুন মঞ্চ নাম দেন ওয়াল্টার: অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল।
মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
রাস্তায় রাস্তায় জীবনের কঠোরতার সঙ্গে সহজেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন অ্যালোহা। ভ্রমণের বিবরণ নির্মাণেও মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। অভিনেত্রী, ফটোগ্রাফার, সিনেমাটোগ্রাফার, ড্রাইভার, সেলাই, লন্ড্রি, চলচ্চিত্র সম্পাদনা, বিচিত্রানুষ্ঠানের পারফরমার, বিক্রয়কর্মী, দোভাষী, আলোচক, মেকানিক...এবং ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের চাপিয়ে দেওয়া অন্য যে কোনো কাজ দক্ষতার সঙ্গে করেছেন তিনি।
চারটি মহাদেশের ৪৩টি দেশের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেছেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা। ভয়ংকর দুঃসাহসিক কাজ ছিল সেটি।
তাঁরা ফ্রান্স এবং দেশটির যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছিলেন...মুসোলিনি এবং ফ্যাসিবাদীরা যখন শক্তি সুসংহত করছিল ঠিক তখনই ইতালির ভেতর দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া জার্মানিতে তখন খাদ্য সংকট নিয়ে দাঙ্গা এবং উগ্র আগ্রাসী জনতার দাপট, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী মিত্ররা তখন ক্ষতিপূরণ দাবি করছে—এ পরিস্থিতিতে জার্মানির ভেতর দিয়ে যাত্রা.মিসরেররের রাজাদের উপত্যকায় গ্রেট স্ফিংক্সের পাদদেশে তাঁরা শিবির স্থাপন করেছিলেন…ফিলিস্তিন যেখানে ইহুদিরা বসতি গড়ার চেষ্টা করছে… ভারতের বিস্তীর্ণ বালুময় এলাকা, তাঁদের ফোর্ড গাড়িটি নদী পার করিয়ে দিয়েছিল জল মহিষ।
অ্যালোহা পর্তুগিজ উপনিবেশ-পূর্ব আফ্রিকার ভূমি পেরিয়েছিলেন এবং সুদানের মরুভূমিতে তৃষ্ণায় প্রায় মরতে বসেছিলেন…এর মধ্যে পুরুষের ছদ্মবেশে মক্কায় গিয়েছিলেন, সেখানে ওমরাহ পালন করেন… ইন্দো-চীনে হাতি শিকার করেছিলেন, চীনা দস্যুদের সঙ্গে ভাব করেছিলেন এবং এমনকি সাইবেরিয়ার রেড আর্মিতে অনারারি কর্নেল উপাধি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে...হলিউড সফরের সময় মেরি পিকফোর্ড এবং ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কসের সঙ্গে গলায়-গলায় সম্পর্ক হয়েছিল।
অ্যালোহা পুরুষের বেশে মক্কায় ওমরাহ পালন করেন, কারণ ইসলামের বিধান অনুযায়ী কোনো নারী একা সফর করতে পারেন না।
এই দীর্ঘ ভ্রমণের মধ্যে অ্যালোহা ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রেমে পড়েন। তখনো কিন্তু ওয়াল্টার তাঁর প্রথম স্ত্রী নেলের কাছ থেকে ডিভোর্স পাননি। যুক্তরাষ্ট্রে আগমনের পর, ওয়াল্টারকে ‘শ্বেতাঙ্গ দাসত্বের’ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। বিবাহ বিচ্ছেদে সুবিধা আদায়ের জন্য নেলই যে এই চক্রান্ত করেছিলেন, সেটি পরে প্রমাণিত হয়।
অবশেষে অ্যালোহা এবং ওয়াল্টার ক্যালিফোর্নিয়ায় বিয়ে করেন। তাঁদের দুটি সন্তান হয়—নিল এবং ভ্যালরি।
১৯২৯ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে প্রাথমিক অভিযাত্রা শেষ করেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা জুটি। তাঁদের তথ্যচিত্র ‘উইথ কার অ্যান্ড ক্যামেরা অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’ প্রকাশের পর আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়।
প্রাথমিক অভিযানটি আমাজন অববাহিকার মাটা গ্রোসো অঞ্চলের গভীরে একটি অসাধারণ দুঃসাহসিক কাজ ছিল। তাঁদের বহনকারী বিমানটি অজানা জঙ্গলে অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছিল। অ্যালোহাকে একটি আদিবাসীর সঙ্গে থাকতে হয়েছিল। আর ওয়াল্টার ধীরে ধীরে সভ্যতার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় বের করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে তাঁদের কয়েক মাস লেগে গিয়েছিল।
চমৎকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী অ্যালোহা নেটিভদের মুগ্ধ করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রচুর ছবি তোলেন, তাঁদের জীবনযাপন নথিভুক্ত করেন। তাঁর চলচ্চিত্র—ফ্লাইট টু দ্য স্টোন এজ বোরোরোস, ছিল বোরোরো উপজাতির প্রথম চিত্রিত রেকর্ড। এটি এখন স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের মানব স্টাডিজ আর্কাইভের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৃতাত্ত্বিক সম্পদ।
১৯৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর ওয়াল্টার আরও অভিযান ও চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু এর আগেই ঘটে যায় এক ট্যাজেডি।
১৯৩২ সালের ডিসেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে অ্যালোহা দম্পতির ‘দ্য কারমা’ নামের প্রমোদতরীতে আততায়ী হামলা করে। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সন্দেহভাজন একজনকে আটকও করা হয়। কিন্তু পরে তিনি খালাস পান। ওয়াল্টার হত্যাকাণ্ড পশ্চিম উপকূলে সবচেয়ে বিখ্যাত অমীমাংসিত অপরাধগুলোর একটি।
ওয়াল্টারের মৃত্যুর পর অ্যালোহা ১৯৩৩ সালে ওয়াল্টার বেকারকে বিয়ে করেন। তিনি ডব্লিউএডব্লিউসি-এর সাবেক ক্যামেরাম্যান।
নতুন স্বামীর সঙ্গে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন অ্যালোহা। প্রচুর অনুসন্ধানী কাজ, তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দেন। ‘আলোহা ওয়ান্ডারওয়েল, দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট ট্রাভেলড গার্ল’ নামে খ্যাতি পান। তাঁর সময় একজন নারীর এমন দুঃসাহসিক কাজ ও বহুমুখী প্রতিভা একটি বিরল ঘটনা।
পরবর্তী বছরগুলোতে অ্যালোহা ভ্রমণের নেশা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র, ফটো, জার্নাল এবং অমূল্য শিল্পকর্ম সংগ্রহের দিকে ঝোঁকেন। তাঁর বেশিরভাগ কাজ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন জাদুঘর এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে।
১৯৯৬ সালের ৪ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার নিউপোর্ট বিচে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল ওরফে ইদ্রিস হল।

নাম তাঁর ইদ্রিস গ্যালসিয়া হল। ১৯০৬ সালের ১৩ অক্টোবর কানাডার উইনিপেগ শহরে জন্ম। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হার্বার্ট হল এবং মার্গারেট হেডলি হল দম্পতির কন্যা। পরবর্তীতে অবশ্য অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল নামেই বিখ্যাত হয়েছেন।
১৯১৭ সালের জুনে যুদ্ধক্ষেত্রে বাবার মৃত্যুর পর মা ইদ্রিস গ্যালসিয়া ও তাঁর ছোট বোনকে নিয়ে ইউরোপে পাড়ি দেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে আগে ইদ্রিস ফ্রান্সের একটি মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন।
বাবার মৃত্যু ইদ্রিসের কচি মনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। অত্যন্ত অস্থির প্রকৃতির ছিলেন। স্কুলে সিনিয়রদের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলায় জড়াতেন। ৬ ফুট উচ্চতার উচ্ছল প্রাণময় কিশোরী ইদ্রিসকে তারা ‘টমবয়’ বলে সম্বোধন করত। শান্ত সৌম্য সামাজিক কিশোরীতে রূপান্তরিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষার্থী ও মুরব্বিরা। কিন্তু ইদ্রিস এসব কখনোই গায়ে মাখেননি। বরং বাবার ছেলেবেলার প্রিয় সংগ্রহ থেকে চমৎকার গল্পের বইগুলোতে বুঁদ হয়ে থাকতেন। সেসব গল্প ছিল ‘পুরুষালি’ অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর। ইদ্রিস সেসব গল্পে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন। তখন থেকেই পৃথিবীর দূর প্রান্তে ভ্রমণে যাওয়া, অ্যাডভেঞ্চার আর নতুন নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন।
১৯২২ সালে ইদ্রিসের বয়স তখন মাত্র ১৬ বছর, প্যারিস হেরাল্ড পত্রিকার রিভেরা সংস্করণে একটি বিজ্ঞাপন তার নজর কাড়ে: ‘বুদ্ধি, সৌন্দর্য এবং পাজামা—ভাগ্যবান যুবতীর জন্য বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ...অ্যাডভেঞ্চারে যোগ দিতে চান...এশিয়া, আফ্রিকা...।’
কিশোরী ইদ্রিসের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে এই বিজ্ঞাপন। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় ‘ক্যাপ্টেন’ ওয়াল্টার ওয়ান্ডারওয়েলের নেতৃত্বে একটি উচ্চাভিলাষী বিশ্ব ভ্রমণের জন্য সেক্রেটারি এবং ড্রাইভার পদে আবেদন করেন ইদ্রিস। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রকৃত নাম ভ্যালেরিয়ান জোহানেস পিসিনস্কি। পোল্যান্ডের নাগরিক তিনি।
একজন সাবেক নাবিক, বিশ্বমানের পর্বতারোহী এবং ভ্রমণকারী ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার। যুদ্ধের সময় গুপ্তচর বৃত্তির দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের জেলে কাটিয়েছেন কিছুদিন। বিশ্ব শান্তি ও লিগ অব নেশনসের (বর্তমানে জাতিসংঘ) প্রচারের অংশ হিসেবে ১৯১৯ সালে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন।
ওয়ার্ক অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল ক্লাব (ডব্লিউএডব্লিউই) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন ওয়াল্টার এবং তাঁর তৎকালীন স্ত্রী নেল। ‘মিলিয়ন ডলারের বাজির’ আয়োজন করেন তাঁরা।
নেল এবং ওয়াল্টার বিশ্বভ্রমণ অভিযানে প্রতিযোগী দলগুলোর নেতৃত্ব দিতেন। কোন দল সবচেয়ে বেশি মাইল ভ্রমণ করতে পারে—এটাই ছিল প্রতিযোগিতা। আর এই ভ্রমণের অর্থ জোগাড় করা হতো স্যুভেনির প্যাম্ফলেট বিক্রি, বক্তৃতা, রাস্তায় শুট ও সম্পাদনা করা চলচ্চিত্রগুলোর প্রদর্শন থেকে পাওয়া আয় দিয়ে।
১৯২২ সাল নাগাদ ইদ্রিস প্যারিস হেরাল্ডের বিজ্ঞাপনটির যখন জবাব দেন, তার অনেক আগেই ওয়াল্টার এবং নেল আলাদা হয়ে হয়ে গেছেন। নেলের দল তখন যুক্তরাষ্ট্রে সফর করছিল। ওয়াল্টার একটি কাস্টমাইজ করা ফোর্ড গাড়িতে ইউরোপ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁর দরকার ছিল ফরাসি ভাষায় সাবলীল একজন নতুন ক্রু মেম্বার।
ইদ্রিসের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তাঁর উচ্ছলতা, আগ্রহ ও সাহস দেখে অভিভূত হন ওয়াল্টার। এক কথায় তাঁকে ক্রু হিসেবে নেন। ওই সময়ই ইদ্রিসের একটি নতুন মঞ্চ নাম দেন ওয়াল্টার: অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল।
মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
রাস্তায় রাস্তায় জীবনের কঠোরতার সঙ্গে সহজেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন অ্যালোহা। ভ্রমণের বিবরণ নির্মাণেও মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। অভিনেত্রী, ফটোগ্রাফার, সিনেমাটোগ্রাফার, ড্রাইভার, সেলাই, লন্ড্রি, চলচ্চিত্র সম্পাদনা, বিচিত্রানুষ্ঠানের পারফরমার, বিক্রয়কর্মী, দোভাষী, আলোচক, মেকানিক...এবং ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের চাপিয়ে দেওয়া অন্য যে কোনো কাজ দক্ষতার সঙ্গে করেছেন তিনি।
চারটি মহাদেশের ৪৩টি দেশের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেছেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা। ভয়ংকর দুঃসাহসিক কাজ ছিল সেটি।
তাঁরা ফ্রান্স এবং দেশটির যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছিলেন...মুসোলিনি এবং ফ্যাসিবাদীরা যখন শক্তি সুসংহত করছিল ঠিক তখনই ইতালির ভেতর দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া জার্মানিতে তখন খাদ্য সংকট নিয়ে দাঙ্গা এবং উগ্র আগ্রাসী জনতার দাপট, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী মিত্ররা তখন ক্ষতিপূরণ দাবি করছে—এ পরিস্থিতিতে জার্মানির ভেতর দিয়ে যাত্রা.মিসরেররের রাজাদের উপত্যকায় গ্রেট স্ফিংক্সের পাদদেশে তাঁরা শিবির স্থাপন করেছিলেন…ফিলিস্তিন যেখানে ইহুদিরা বসতি গড়ার চেষ্টা করছে… ভারতের বিস্তীর্ণ বালুময় এলাকা, তাঁদের ফোর্ড গাড়িটি নদী পার করিয়ে দিয়েছিল জল মহিষ।
অ্যালোহা পর্তুগিজ উপনিবেশ-পূর্ব আফ্রিকার ভূমি পেরিয়েছিলেন এবং সুদানের মরুভূমিতে তৃষ্ণায় প্রায় মরতে বসেছিলেন…এর মধ্যে পুরুষের ছদ্মবেশে মক্কায় গিয়েছিলেন, সেখানে ওমরাহ পালন করেন… ইন্দো-চীনে হাতি শিকার করেছিলেন, চীনা দস্যুদের সঙ্গে ভাব করেছিলেন এবং এমনকি সাইবেরিয়ার রেড আর্মিতে অনারারি কর্নেল উপাধি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে...হলিউড সফরের সময় মেরি পিকফোর্ড এবং ডগলাস ফেয়ারব্যাঙ্কসের সঙ্গে গলায়-গলায় সম্পর্ক হয়েছিল।
অ্যালোহা পুরুষের বেশে মক্কায় ওমরাহ পালন করেন, কারণ ইসলামের বিধান অনুযায়ী কোনো নারী একা সফর করতে পারেন না।
এই দীর্ঘ ভ্রমণের মধ্যে অ্যালোহা ক্যাপ্টেন ওয়াল্টারের প্রেমে পড়েন। তখনো কিন্তু ওয়াল্টার তাঁর প্রথম স্ত্রী নেলের কাছ থেকে ডিভোর্স পাননি। যুক্তরাষ্ট্রে আগমনের পর, ওয়াল্টারকে ‘শ্বেতাঙ্গ দাসত্বের’ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। বিবাহ বিচ্ছেদে সুবিধা আদায়ের জন্য নেলই যে এই চক্রান্ত করেছিলেন, সেটি পরে প্রমাণিত হয়।
অবশেষে অ্যালোহা এবং ওয়াল্টার ক্যালিফোর্নিয়ায় বিয়ে করেন। তাঁদের দুটি সন্তান হয়—নিল এবং ভ্যালরি।
১৯২৯ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে প্রাথমিক অভিযাত্রা শেষ করেন ওয়াল্টার-অ্যালোহা জুটি। তাঁদের তথ্যচিত্র ‘উইথ কার অ্যান্ড ক্যামেরা অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’ প্রকাশের পর আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়।
প্রাথমিক অভিযানটি আমাজন অববাহিকার মাটা গ্রোসো অঞ্চলের গভীরে একটি অসাধারণ দুঃসাহসিক কাজ ছিল। তাঁদের বহনকারী বিমানটি অজানা জঙ্গলে অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছিল। অ্যালোহাকে একটি আদিবাসীর সঙ্গে থাকতে হয়েছিল। আর ওয়াল্টার ধীরে ধীরে সভ্যতার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় বের করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে তাঁদের কয়েক মাস লেগে গিয়েছিল।
চমৎকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী অ্যালোহা নেটিভদের মুগ্ধ করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রচুর ছবি তোলেন, তাঁদের জীবনযাপন নথিভুক্ত করেন। তাঁর চলচ্চিত্র—ফ্লাইট টু দ্য স্টোন এজ বোরোরোস, ছিল বোরোরো উপজাতির প্রথম চিত্রিত রেকর্ড। এটি এখন স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের মানব স্টাডিজ আর্কাইভের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৃতাত্ত্বিক সম্পদ।
১৯৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর ওয়াল্টার আরও অভিযান ও চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু এর আগেই ঘটে যায় এক ট্যাজেডি।
১৯৩২ সালের ডিসেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে অ্যালোহা দম্পতির ‘দ্য কারমা’ নামের প্রমোদতরীতে আততায়ী হামলা করে। ক্যাপ্টেন ওয়াল্টার গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সন্দেহভাজন একজনকে আটকও করা হয়। কিন্তু পরে তিনি খালাস পান। ওয়াল্টার হত্যাকাণ্ড পশ্চিম উপকূলে সবচেয়ে বিখ্যাত অমীমাংসিত অপরাধগুলোর একটি।
ওয়াল্টারের মৃত্যুর পর অ্যালোহা ১৯৩৩ সালে ওয়াল্টার বেকারকে বিয়ে করেন। তিনি ডব্লিউএডব্লিউসি-এর সাবেক ক্যামেরাম্যান।
নতুন স্বামীর সঙ্গে ভ্রমণ অব্যাহত রাখেন অ্যালোহা। প্রচুর অনুসন্ধানী কাজ, তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দেন। ‘আলোহা ওয়ান্ডারওয়েল, দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট ট্রাভেলড গার্ল’ নামে খ্যাতি পান। তাঁর সময় একজন নারীর এমন দুঃসাহসিক কাজ ও বহুমুখী প্রতিভা একটি বিরল ঘটনা।
পরবর্তী বছরগুলোতে অ্যালোহা ভ্রমণের নেশা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র, ফটো, জার্নাল এবং অমূল্য শিল্পকর্ম সংগ্রহের দিকে ঝোঁকেন। তাঁর বেশিরভাগ কাজ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন জাদুঘর এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে।
১৯৯৬ সালের ৪ জুন ক্যালিফোর্নিয়ার নিউপোর্ট বিচে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন অ্যালোহা ওয়ান্ডারওয়েল ওরফে ইদ্রিস হল।

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
৪ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
৫ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
৫ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে কিন্তু কখনো গহিন অরণ্যের আস্তানায় সশস্ত্র রক্ষীবেষ্টিত হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়নি। তাঁর মাদক কারবারের আয় গোটা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখত। আর তাঁকে কখনো জেলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়নি। কারণ, মাদক-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাঁদের ছিল, তাঁরা সবাই ছিলেন তাঁর বেতনভুক্ত কর্মচারী!
তিনি আর কেউ নন, তিনি রানি ভিক্টোরিয়া। তাঁর হাতে ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দণ্ড।
রানি ভিক্টোরিয়া শুধু সাম্রাজ্য পরিচালনাতেই মাদক ব্যবহার করেননি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের ভক্ত। সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।
ভিক্টোরিয়ার অন্যতম প্রিয় মাদক ছিল আফিম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে আফিম সেবনের ফ্যাশনেবল উপায় ছিল—অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশিয়ে লডেনাম আকারে পান করা। তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি দূর করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের জন্যও এটি সুপারিশ করতেন চিকিৎসকেরা। রানি ভিক্টোরিয়াও প্রতিদিন সকালে এক ঢোক লডেনাম পান করে দিন শুরু করতেন।
এ ছাড়া তিনি সেবন করতেন কোকেন। এটি তখন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈধ। দাঁতের ব্যথা উপশম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানি কোকেন মিশ্রিত চুইংগাম ও ওয়াইন পছন্দ করতেন। প্রসবের সময় অসহনীয় যন্ত্রণা কমাতে তিনি সানন্দে ক্লোরোফর্ম গ্রহণ করেন এবং এই অভিজ্ঞতাটিকে ‘স্বর্গীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
১৮৩৭ সালে যখন ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন, উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বড় সংকটের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চাপে—ব্রিটিশরা চীন থেকে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করত। এর ফলে ব্রিটেনের সব অর্থ চীনে চলে যাচ্ছিল। আর ওই সময় ব্রিটিশদের হাতে চীনে রপ্তানি করার মতো কিছু ছিল না। ব্রিটেন মরিয়া হয়ে এমন একটি পণ্যের সন্ধান করছিল, যা চীনের লোকেরা চাইবে।
এ সমস্যার সমাধান ছিল আফিম। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারতে প্রচুর আফিম উৎপাদিত হতো। এটি ছিল অত্যন্ত কার্যকর ব্যথানাশক এবং মারাত্মকভাবে আসক্তি সৃষ্টিকারী। ফলে চীনের লোকেরা এর জন্য প্রচুর দাম দিতে প্রস্তুত ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার শাসন শুরু হওয়ার পর, চীনে আফিমের চালান দ্রুত বাড়তে থাকে। আফিমের কল্যাণে রাতারাতি বাণিজ্য ভারসাম্য বদলে যায়। চীনই ব্রিটিশদের কাছে ঋণী হতে শুরু করে। মাদক কারবার থেকে আসা অর্থ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মোট বার্ষিক আয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়।
চীন সরকার মরিয়া হয়ে আফিমের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। চীনের সম্রাট এই কাজের জন্য প্রশাসক লিন জেক্সুকে নিয়োগ করেন। জেক্সু রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি চিঠি লিখে ব্রিটিশদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—চীন যেখানে চা, রেশম ও মৃৎপাত্রের মতো উপকারী পণ্য পাঠাচ্ছে, সেখানে ব্রিটেন কেন তার বিনিময়ে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিকর মাদক পাঠাচ্ছে?
রানি সেই চিঠি পড়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে ১৮৩৯ সালের বসন্তে লিন জেক্সু ব্রিটিশ জাহাজ বহর আটক করেন এবং প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড আফিম দক্ষিণ চীন সাগরে ফেলে দেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সী রানি ভিক্টোরিয়া এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। যেকোনো ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী কিশোরীর মতো তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতই—তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটিই ইতিহাসে প্রথম ‘আফিম যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ বাহিনী চীনা সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে এবং হাজার হাজার চীনা নাগরিককে হত্যা করে। সম্রাট বাধ্য হয়ে একটি অসম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। চীনে আফিম ঢোকার জন্য আরও বন্দর খুলে দেওয়া হয় এবং চীনে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকেরা আইনি সুরক্ষা পান।
এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে চীন সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়। এভাবেই একজন একগুঁয়ে কিশোরী রানি একটি প্রাচীন, মর্যাদাপূর্ণ সভ্যতাকে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। এই নির্মম, নির্লজ্জ আত্মস্বার্থই রানি ভিক্টোরিয়াকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মাদক সম্রাট বানিয়ে তোলে!
তথ্যসূত্র: টাইম

ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে কিন্তু কখনো গহিন অরণ্যের আস্তানায় সশস্ত্র রক্ষীবেষ্টিত হয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়নি। তাঁর মাদক কারবারের আয় গোটা দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখত। আর তাঁকে কখনো জেলে যাওয়ার চিন্তা করতে হয়নি। কারণ, মাদক-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা যাঁদের ছিল, তাঁরা সবাই ছিলেন তাঁর বেতনভুক্ত কর্মচারী!
তিনি আর কেউ নন, তিনি রানি ভিক্টোরিয়া। তাঁর হাতে ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দণ্ড।
রানি ভিক্টোরিয়া শুধু সাম্রাজ্য পরিচালনাতেই মাদক ব্যবহার করেননি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন বিভিন্ন ধরনের ড্রাগের ভক্ত। সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর।
ভিক্টোরিয়ার অন্যতম প্রিয় মাদক ছিল আফিম। ঊনবিংশ শতাব্দীর ব্রিটেনে আফিম সেবনের ফ্যাশনেবল উপায় ছিল—অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশিয়ে লডেনাম আকারে পান করা। তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি দূর করতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের জন্যও এটি সুপারিশ করতেন চিকিৎসকেরা। রানি ভিক্টোরিয়াও প্রতিদিন সকালে এক ঢোক লডেনাম পান করে দিন শুরু করতেন।
এ ছাড়া তিনি সেবন করতেন কোকেন। এটি তখন ছিল সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈধ। দাঁতের ব্যথা উপশম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য রানি কোকেন মিশ্রিত চুইংগাম ও ওয়াইন পছন্দ করতেন। প্রসবের সময় অসহনীয় যন্ত্রণা কমাতে তিনি সানন্দে ক্লোরোফর্ম গ্রহণ করেন এবং এই অভিজ্ঞতাটিকে ‘স্বর্গীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
১৮৩৭ সালে যখন ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসেন, উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বড় সংকটের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চাপে—ব্রিটিশরা চীন থেকে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করত। এর ফলে ব্রিটেনের সব অর্থ চীনে চলে যাচ্ছিল। আর ওই সময় ব্রিটিশদের হাতে চীনে রপ্তানি করার মতো কিছু ছিল না। ব্রিটেন মরিয়া হয়ে এমন একটি পণ্যের সন্ধান করছিল, যা চীনের লোকেরা চাইবে।
এ সমস্যার সমাধান ছিল আফিম। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারতে প্রচুর আফিম উৎপাদিত হতো। এটি ছিল অত্যন্ত কার্যকর ব্যথানাশক এবং মারাত্মকভাবে আসক্তি সৃষ্টিকারী। ফলে চীনের লোকেরা এর জন্য প্রচুর দাম দিতে প্রস্তুত ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার শাসন শুরু হওয়ার পর, চীনে আফিমের চালান দ্রুত বাড়তে থাকে। আফিমের কল্যাণে রাতারাতি বাণিজ্য ভারসাম্য বদলে যায়। চীনই ব্রিটিশদের কাছে ঋণী হতে শুরু করে। মাদক কারবার থেকে আসা অর্থ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মোট বার্ষিক আয়ের ১৫ থেকে ২০ শতাংশে দাঁড়ায়।
চীন সরকার মরিয়া হয়ে আফিমের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। চীনের সম্রাট এই কাজের জন্য প্রশাসক লিন জেক্সুকে নিয়োগ করেন। জেক্সু রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে একটি চিঠি লিখে ব্রিটিশদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন—চীন যেখানে চা, রেশম ও মৃৎপাত্রের মতো উপকারী পণ্য পাঠাচ্ছে, সেখানে ব্রিটেন কেন তার বিনিময়ে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিকর মাদক পাঠাচ্ছে?
রানি সেই চিঠি পড়ারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে ১৮৩৯ সালের বসন্তে লিন জেক্সু ব্রিটিশ জাহাজ বহর আটক করেন এবং প্রায় আড়াই মিলিয়ন পাউন্ড আফিম দক্ষিণ চীন সাগরে ফেলে দেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সী রানি ভিক্টোরিয়া এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। যেকোনো ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যবাদী কিশোরীর মতো তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল প্রত্যাশিতই—তিনি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এটিই ইতিহাসে প্রথম ‘আফিম যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ বাহিনী চীনা সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে এবং হাজার হাজার চীনা নাগরিককে হত্যা করে। সম্রাট বাধ্য হয়ে একটি অসম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে হংকংকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে হয়। চীনে আফিম ঢোকার জন্য আরও বন্দর খুলে দেওয়া হয় এবং চীনে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিকেরা আইনি সুরক্ষা পান।
এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে চীন সাম্রাজ্যের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়। এভাবেই একজন একগুঁয়ে কিশোরী রানি একটি প্রাচীন, মর্যাদাপূর্ণ সভ্যতাকে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। এই নির্মম, নির্লজ্জ আত্মস্বার্থই রানি ভিক্টোরিয়াকে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল মাদক সম্রাট বানিয়ে তোলে!
তথ্যসূত্র: টাইম

মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
০৮ মার্চ ২০২২
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
৫ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
৫ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৭ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া হবে।
বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিচারক প্যানেলে থাকবে শিশুরাও। বর্তমান চিলড্রেনস লরিয়েট শিশুসাহিত্যিক ফ্রাঙ্ক কটরেল-বয়েস বিচারকদের উদ্বোধনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক থাকবেন, যাঁরা প্রথমে আটটি বইয়ের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর বিজয়ী নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচিত হবেন।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিবছর চিলড্রেনস বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেড হওয়া এবং বিজয়ী বইগুলোর ৩০ হাজার কপি শিশুদের উপহার দেওয়া হবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট, দ্য রিডিং এজেন্সি, বুকব্যাংকস এবং চিলড্রেনস বুক প্রজেক্টসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে এ বইগুলো দেওয়া হবে। গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে শিশুদের ‘আনন্দ নিয়ে পড়া’র প্রবণতা। এমন সময় বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগটি নিল।
কটরেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কার শিশুদের উপভোগ করার মতো বই খুঁজে বের করা সহজ করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি শিশুরই বইয়ের জগতে ডুব দেওয়ার যে আনন্দ, তা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বিচারক প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এবং মনোনীত বইগুলো উপহার দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার শিশুকে বই পড়ার চমৎকার দুনিয়ায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা বেশ দারুণ আয়োজন হতে যাচ্ছে।’ তিনি মজা করে বলেন, ‘চলুন, হইচই শুরু করা যাক!’
শিশুসাহিত্য জগতের শীর্ষ লেখকদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এ ঘোষণা। সাবেক শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মালরি ব্ল্যাকম্যান, জ্যাকলিন উইলসন, মাইকেল মরপুরগো, ক্রেসিডা কাউয়েল, অ্যান ফাইন এবং জোসেফ কোয়েলোরা—সবাই নতুন এই পুরস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত সমসাময়িক শিশুসাহিত্যগুলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুকার এবং আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মতোই বিজয়ী লেখক ৫০ হাজার পাউন্ড এবং শর্টলিস্টেড লেখকেরা প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পাবেন।
প্রথম চিলড্রেনস বুকার পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২০২৬ সালের বসন্তে। বিচারক হতে শিশুদের আবেদন প্রক্রিয়াও এই সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই বছরের নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে শর্টলিস্ট এবং শিশু বিচারকদের নাম। বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তরুণ পাঠকদের জন্য আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে। ২০২৭ সালের পুরস্কারের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত বই হতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিল্পকলায় সমর্থন এবং জলবায়ু-সংকট মোকাবিলায় কাজ করা দাতব্য সংস্থা একেও ফাউন্ডেশনের (AKO Foundation) সহযোগিতায় এ পুরস্কার পরিচালিত হবে।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) গ্যাবি উড বলেন, ‘২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ চালুর পর গত ২০ বছরে আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ চিলড্রেনস বুকার। এর একাধিক লক্ষ্য রয়েছে। একদিকে এটি শিশুদের জন্য লেখা ভবিষ্যৎ ক্লাসিক সাহিত্যকে সম্মান জানাবে, অন্যদিকে এটি এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা তরুণদের আরও বেশি করে পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করবে। এর মাধ্যমেই আমরা এমন এক বীজ রোপণ করতে চাই, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আজীবন পাঠকেরা বিকশিত হবে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, শিশুদের বিশেষ করে শিশুসাহিত্যের আসল বিচারকদের মতামত শোনার জন্য।
একেও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ ল-ফোর্ড বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব ফাউন্ডেশনের সাক্ষরতা বৃদ্ধি ও সামাজিক গতিশীলতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা গর্বিত যে এমন একটি প্রকল্পে অবদান রাখতে পারছি, যা তরুণ পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করবে।’
বিনো ব্রেইন নামের একটি যুব গবেষণা সংস্থা ও ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের সহযোগিতায় নিয়মিত পরামর্শ সেশনের মাধ্যমে শিশুরা এই পুরস্কারের গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট শিশুদের পড়ার অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
বুকার ফাউন্ডেশনের মতে, এই নতুন পুরস্কারটি শিশুসাহিত্যকে ‘সংস্কৃতির কেন্দ্রে স্থাপন’ করার একটি প্রচেষ্টা। সিইও গ্যাবি উড বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু শিশুসাহিত্যে উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়, বরং আরও বেশি তরুণকে এমন গল্প ও চরিত্র আবিষ্কারে সহায়তা করা ‘যারা তাদের সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।’
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সাহিত্য পুরস্কার বুকার প্রাইজ প্রথম প্রদান করা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত ইংরেজিতে রচিত অসাধারণ কথাসাহিত্যকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হয়।

শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া হবে।
বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিচারক প্যানেলে থাকবে শিশুরাও। বর্তমান চিলড্রেনস লরিয়েট শিশুসাহিত্যিক ফ্রাঙ্ক কটরেল-বয়েস বিচারকদের উদ্বোধনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক থাকবেন, যাঁরা প্রথমে আটটি বইয়ের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করবেন। এরপর বিজয়ী নির্ধারণে সহায়তা করার জন্য তিনজন শিশু বিচারক নির্বাচিত হবেন।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিবছর চিলড্রেনস বুকার প্রাইজের জন্য শর্টলিস্টেড হওয়া এবং বিজয়ী বইগুলোর ৩০ হাজার কপি শিশুদের উপহার দেওয়া হবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট, দ্য রিডিং এজেন্সি, বুকব্যাংকস এবং চিলড্রেনস বুক প্রজেক্টসহ বিভিন্ন সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে এ বইগুলো দেওয়া হবে। গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে শিশুদের ‘আনন্দ নিয়ে পড়া’র প্রবণতা। এমন সময় বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশন এ উদ্যোগটি নিল।
কটরেল-বয়েস বলেন, এই পুরস্কার শিশুদের উপভোগ করার মতো বই খুঁজে বের করা সহজ করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি শিশুরই বইয়ের জগতে ডুব দেওয়ার যে আনন্দ, তা উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বিচারক প্যানেলে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে এবং মনোনীত বইগুলো উপহার দেওয়ার মাধ্যমে হাজার হাজার শিশুকে বই পড়ার চমৎকার দুনিয়ায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা বেশ দারুণ আয়োজন হতে যাচ্ছে।’ তিনি মজা করে বলেন, ‘চলুন, হইচই শুরু করা যাক!’
শিশুসাহিত্য জগতের শীর্ষ লেখকদের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে এ ঘোষণা। সাবেক শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মালরি ব্ল্যাকম্যান, জ্যাকলিন উইলসন, মাইকেল মরপুরগো, ক্রেসিডা কাউয়েল, অ্যান ফাইন এবং জোসেফ কোয়েলোরা—সবাই নতুন এই পুরস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ইংরেজিতে লেখা বা ইংরেজিতে অনূদিত এবং যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত সমসাময়িক শিশুসাহিত্যগুলোতে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুকার এবং আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারের মতোই বিজয়ী লেখক ৫০ হাজার পাউন্ড এবং শর্টলিস্টেড লেখকেরা প্রত্যেকে ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পাবেন।
প্রথম চিলড্রেনস বুকার পুরস্কারের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২০২৬ সালের বসন্তে। বিচারক হতে শিশুদের আবেদন প্রক্রিয়াও এই সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই বছরের নভেম্বরে ঘোষণা করা হবে শর্টলিস্ট এবং শিশু বিচারকদের নাম। বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তরুণ পাঠকদের জন্য আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে। ২০২৭ সালের পুরস্কারের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত বই হতে হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিল্পকলায় সমর্থন এবং জলবায়ু-সংকট মোকাবিলায় কাজ করা দাতব্য সংস্থা একেও ফাউন্ডেশনের (AKO Foundation) সহযোগিতায় এ পুরস্কার পরিচালিত হবে।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) গ্যাবি উড বলেন, ‘২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক বুকার প্রাইজ চালুর পর গত ২০ বছরে আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ চিলড্রেনস বুকার। এর একাধিক লক্ষ্য রয়েছে। একদিকে এটি শিশুদের জন্য লেখা ভবিষ্যৎ ক্লাসিক সাহিত্যকে সম্মান জানাবে, অন্যদিকে এটি এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ, যা তরুণদের আরও বেশি করে পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করবে। এর মাধ্যমেই আমরা এমন এক বীজ রোপণ করতে চাই, যেখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আজীবন পাঠকেরা বিকশিত হবে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, শিশুদের বিশেষ করে শিশুসাহিত্যের আসল বিচারকদের মতামত শোনার জন্য।
একেও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ ল-ফোর্ড বলেন, ‘এই অংশীদারত্ব ফাউন্ডেশনের সাক্ষরতা বৃদ্ধি ও সামাজিক গতিশীলতা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা গর্বিত যে এমন একটি প্রকল্পে অবদান রাখতে পারছি, যা তরুণ পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করবে।’
বিনো ব্রেইন নামের একটি যুব গবেষণা সংস্থা ও ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্টের সহযোগিতায় নিয়মিত পরামর্শ সেশনের মাধ্যমে শিশুরা এই পুরস্কারের গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট শিশুদের পড়ার অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
বুকার ফাউন্ডেশনের মতে, এই নতুন পুরস্কারটি শিশুসাহিত্যকে ‘সংস্কৃতির কেন্দ্রে স্থাপন’ করার একটি প্রচেষ্টা। সিইও গ্যাবি উড বলেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু শিশুসাহিত্যে উৎকর্ষকে স্বীকৃতি দেওয়া নয়, বরং আরও বেশি তরুণকে এমন গল্প ও চরিত্র আবিষ্কারে সহায়তা করা ‘যারা তাদের সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।’
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সাহিত্য পুরস্কার বুকার প্রাইজ প্রথম প্রদান করা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত ইংরেজিতে রচিত অসাধারণ কথাসাহিত্যকে সম্মান জানাতে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হয়।

মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
০৮ মার্চ ২০২২
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
৪ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
৫ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে পারে অন্য জায়গার এসব খাবার। অন্তত ছায়ানীড়ের নিয়মিত ভক্ত-গ্রাহকেরা এমন দাবি করতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই।
তাই হয়তো এখনো রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় লেগে থাকে। ব্যস্ত সড়কের পাশ থেকে যখন মুরগি পোড়ার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়, তখন পথে যেতে অনেকেই হয়তো বিরতি নিয়ে কিনে নেন ছায়ানীড়ের শর্মা বা গ্রিল চিকেন। ভেতরে বসে খেতে হলে লম্বা লাইনে যেমন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার পার্সেল নিতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। প্রাত্যহিক এ দৃশ্য ছায়ানীড়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিরিয়ানি ও অন্যান্য ফাস্ট ফুড খাবারও পাওয়া যায় এখানে।
ছবি: ওমর ফারুক

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে পারে অন্য জায়গার এসব খাবার। অন্তত ছায়ানীড়ের নিয়মিত ভক্ত-গ্রাহকেরা এমন দাবি করতেই পারেন। তাতে দোষের কিছু নেই।
তাই হয়তো এখনো রেস্তোরাঁটির সামনে ভিড় লেগে থাকে। ব্যস্ত সড়কের পাশ থেকে যখন মুরগি পোড়ার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়, তখন পথে যেতে অনেকেই হয়তো বিরতি নিয়ে কিনে নেন ছায়ানীড়ের শর্মা বা গ্রিল চিকেন। ভেতরে বসে খেতে হলে লম্বা লাইনে যেমন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার পার্সেল নিতে গেলেও অপেক্ষা করতে হয়। প্রাত্যহিক এ দৃশ্য ছায়ানীড়ের জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিরিয়ানি ও অন্যান্য ফাস্ট ফুড খাবারও পাওয়া যায় এখানে।
ছবি: ওমর ফারুক

মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
০৮ মার্চ ২০২২
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
৪ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
৫ দিন আগে
আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন।
৭ দিন আগেসম্পাদকীয়

আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান

আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতা-সংগ্রামী, কবি-লেখক চিত্তরঞ্জন দাশ ‘দেশবন্ধু’ নামেই বিখ্যাত। তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন শচীমোহন গোপ, যিনি পঞ্চাশের দশকে রাস্তার মোড়ে বিক্রি করতেন দুধ, দই আর মাঠা। ১৯৫৮ সালে হাটখোলা রোডে ইত্তেফাক মোড়ে রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। বলা হয়, চিত্তরঞ্জন দাশের জীবনদর্শনে প্রভাবিত হয়েই শচীমোহন রেস্তোরাঁটির নাম দেন ‘দেশবন্ধু সুইটমিট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’। এর উল্টো দিকে তখন ছিল ইত্তেফাক পত্রিকার অফিস।
সেখানকার সাংবাদিকেরা দেশবন্ধুর পরোটা-লুচি-ভাজি-হালুয়া খেতে যেতেন নিয়মিত। কবি-সাহিত্যিক-অভিনয়শিল্পীরাও পছন্দ করতেন এই রেস্তোরাঁর খাবার। এমনকি এফডিসিতে ফরমাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো দেশবন্ধুর নাশতা। এখন হয়তো মানিক মিয়া, রাজ্জাক, কবরী কিংবা শাবানাদের মতো বিখ্যাতরা সেখানে যান না কিন্তু তাতে দেশবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখনো ঢাকাবাসীর ভিড় দেখা যায় এই রেস্তোরাঁয়। ভাবা যায়, সারা দিনই এখানকার পরোটা-ভাজি বিক্রি হতে থাকে! দুপুরে অবশ্য খাবারের তালিকায় ভাত-মাছ-মাংসও আছে। ছবি: মেহেদী হাসান

মায়ের অনুমতি নিয়ে ওয়াল্টারের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন অ্যালোহা। দ্রুতই সবার আগ্রহের কেন্দ্রে চলে আসেন। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।
০৮ মার্চ ২০২২
ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত মাদক সম্রাট কে? হয়তো আপনি পাবলো এস্কোবার বা এল চ্যাপোর নাম বলবেন, কিন্তু আপনি ভুল! তাঁদের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে এমন একজন অবিশ্বাস্য ক্ষমতাধর নারী ছিলেন, যিনি বিশাল এক মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর কাছে একালের এস্কোবার এবং এল চ্যাপোকে ছ্যাঁচড়া মাদককারবারি মনে হবে।
৪ দিন আগে
শিশুসাহিত্যে চিলড্রেনস বুকার পুরস্কার চালু করেছে বুকার পুরস্কার ফাউন্ডেশন। আগামী বছর থেকে এই পুরস্কার চালু হবে এবং প্রথম বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২০২৭ সালের শুরুর দিকে। ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী পাঠকদের জন্য লেখা সেরা কথাসাহিত্যের জন্য ৫০ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৫ টাকা) দেওয়া
৫ দিন আগে
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকায় খুব কম দোকানেই মিলত গ্রিল চিকেন। এ তালিকার শীর্ষে হয়তো অনেকে রাখতে পারেন সায়েন্স ল্যাবের ছায়ানীড় কনফেকশনারি অ্যান্ড ফাস্ট ফুড নামের রেস্তোরাঁটিকে। এখন তো বহু রেস্তোরাঁতেই পাওয়া যায় খাবারটি। কিন্তু ছায়ানীড়ের গ্রিল চিকেন কিংবা চিকেন শর্মার কাছে হয়তো স্বাদে হেরে যেতে...
৫ দিন আগে