Ajker Patrika

জাপানে সবুজ ট্রাফিক সিগন্যাল ‘নীল’ কেন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, ১৬: ৩১
বিশেষ করে পুরোনো সিগনাল লাইটগুলোতে অনেকটাই নীলচে বাতি দেখা যায়। ছবি: অন দ্য রোডস ট্রেন্ডস
বিশেষ করে পুরোনো সিগনাল লাইটগুলোতে অনেকটাই নীলচে বাতি দেখা যায়। ছবি: অন দ্য রোডস ট্রেন্ডস

দুর্ঘটনা ও জ্যাম এড়াতে শহরের রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক বাতি স্থাপন করা হয়। লাল বাতি জ্বলার সময় গাড়িগুলো থামে। হলুদ বাতি দেখলে অপেক্ষা করে। আর সবুজ বাতি জ্বললেই গাড়ি অবাধে এগিয়ে চলে। এই সিগন্যাল সারা বিশ্বেই স্বীকৃত। তবে জাপানে গিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হন, কারণ সবুজ বাতির বদলে সেখানে দেখা যায় স্পষ্ট নীলাভ আভা।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো জাপানেও ট্রাফিক লাইট সাধারণভাবে লাল, হলুদ ও সবুজ রঙেই ব্যবহৃত হয়। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। বিশেষ করে পুরোনো সিগন্যাল লাইটগুলোতে ‘গো’ বা ‘এগিয়ে যাও’ সংকেতের বাতিটি দেখতে একদমই সবুজ নয়, বরং অনেকটাই নীলচে। এই নীল-সবুজের রহস্য লুকিয়ে আছে জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতির গভীরে।

জাপানি ভাষায় ‘আও’ শব্দটি দিয়ে একসময় সবুজ, সায়ান (সবুজাভাব নীল) ও নীল—তিনটিকেই বোঝানো হতো। অর্থাৎ, ভাষাগতভাবে এই তিন রঙের মাঝে পরিষ্কার কোনো সীমারেখা ছিল না। আজকের দিনে ‘মিদোরি শব্দটি দিয়ে শুধু সবুজ বোঝালেও, ‘আও’ শব্দটি এখনো বহুল ব্যবহৃত। উদাহরণস্বরূপ, সবুজ আপেলকে এখনো বলা হয় ‘আওরিঙ্গো’ আর পাহাড়ের রং বোঝাতেও ব্যবহার হয় ‘আওইয়ামা’—অর্থাৎ নীল পাহাড়।

নীল-সবুজের এই অস্পষ্ট সীমারেখা একপর্যায়ে জাপানি সংস্কৃতির গর্বে পরিণত হয়। ১৯৭৩ সালে সরকার যখন ট্রাফিক লাইটের জন্য রং নির্ধারণ করে, তখন এমন একটি সবুজ বেছে নেওয়া হয়, যা দেখতে অনেকটাই নীলের কাছাকাছি। ফলে দেশের কিছু জায়গায়, অনেক ক্ষেত্রে ‘গো’ বা ‘এগিয়ে চলো’ সংকেতের বাতি নীলাভ দেখায়। বিশেষ করে বিদেশিদের চোখে।

আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৬৮ সালে স্বাক্ষরিত ভিয়েনা কনভেনশন অন রোড সাইনস অ্যান্ড সিগন্যালসের সঙ্গে মিল না থাকলেও জাপান নিজের সাংস্কৃতিক পরিচয় অক্ষুণ্ন রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রও ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।

তবে শুধু জাপান নয়, আমাদের প্রত্যেকের রং-দৃষ্টিভঙ্গিতেই রয়েছে ভিন্নতা। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া একটি কুইজ—‘ismy. blue’—দেখায় কীভাবে মানুষ নীল ও সবুজের মাঝখানের রংগুলোকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে। একই রংকে কেউ সায়ান (সবুজাভাব নীল), কেউ টিল, কেউ সবুজ, আর কেউ নীল বলে।

এতে বোঝা যায়, এক ভাষাভাষী হয়েও আমরা নীল, সায়ান (সবুজাভাব নীল), টিল, সবুজ—এসব রঙের সীমা কতটা ভিন্নভাবে বুঝি।

তথ্যসূত্র: আইএফএল সায়েন্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত