Ajker Patrika

উত্তরণ

নমিনি টাকা পাওয়ার অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি, কিন্তু মালিক নন

ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ১৫: ৪৬
নমিনি টাকা পাওয়ার অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি, কিন্তু মালিক নন

প্রশ্ন: আমি হিন্দুধর্মাবলম্বী একজন বিবাহিত মেয়ে। কিছুদিন আগে আমার বাবা মারা গেছেন। আমার বাবা ব্যাংকে কিছু টাকা রেখে গেছেন, যার নমিনি আমার মা। আমি আমার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান।

আমার দাদু অর্থাৎ বাবার বাবা, মা, ভাই জীবিত আছেন। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর আমার কাকা ও দাদু দাবি করছেন, তাঁরা আমার বাবার টাকার ওয়ারিশ; যেহেতু আমি একমাত্র মেয়ে। তাঁরা টাকা দাবি করছেন। তাঁরা ব্যাংককে এ কথা জানিয়েছেন। ব্যাংক থেকে ওয়ারিশান সার্টিফিকেট চাওয়া হচ্ছে।

আমার প্রশ্ন, তাঁরা কি হিন্দু আইনমতে এই টাকার ওয়ারিশ হবেন? যেহেতু নমিনি আমার মা এবং তিনি জীবিত আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, যশোর।

উত্তর: আমাদের দেশে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন আছে।

আপনার বাবা ব্যাংকে যে টাকা রেখে গেছেন, তার নমিনি আপনার মা। নমিনি মানে টাকা পাওয়ার অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি, কিন্তু মালিক নন। অর্থাৎ, নমিনি টাকা তুলতে পারবেন। তবে সেটি উত্তরাধিকার আইনের অধীনে প্রকৃত ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগাভাগি হতে হবে, যদি উইল না থাকে।

হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে ক্লাস ১ ওয়ারিশরা হচ্ছে স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে এবং প্রয়োজনে ছেলে-মেয়ের সন্তানেরা। আপনি একমাত্র সন্তান এবং বিবাহিত মেয়ে হলেও ক্লাস ১ ওয়ারিশ।

আপনার কাকা ও দাদু ক্লাস ২ ওয়ারিশের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ তাঁদের অধিকার আসবে শুধু তখনই, যখন ক্লাস ১ ওয়ারিশ কেউ থাকবে না। কিন্তু আপনার মা এবং আপনি জীবিত আছেন। তাই তাঁদের কোনো অধিকার নেই।

ব্যাংক ও ওয়ারিশান সার্টিফিকেট প্রসঙ্গে বলি। যেহেতু নমিনি আপনার মা। তিনি ব্যাংকে টাকা তোলার জন্য আবেদন করতে পারেন। ব্যাংক সাধারণত ওয়ারিশান সার্টিফিকেট বা সার্টিফায়েড উত্তরাধিকার প্রমাণ চায় টাকা বিতরণের জন্য। এই সার্টিফিকেটে আপনাকে এবং আপনার মাকে একমাত্র ওয়ারিশ হিসেবে উল্লেখ থাকা উচিত।

কাজেই এ ক্ষেত্রে আপনার কাকা বা দাদু হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের অধীনে এই টাকার কোনো ওয়ারিশ নন। কারণ, ক্লাস ১ ওয়ারিশ হিসেবে আপনার মা ও আপনি জীবিত আছেন। নমিনি হিসেবে আপনার মা টাকা তুলতে পারবেন। কিন্তু উত্তরাধিকার আইনের ভিত্তিতে আপনি ও আপনার মা উভয়েই টাকার মালিক হবেন।

আপনাদের জন‍্য করণীয়

১. ওয়ারিশান সার্টিফিকেটের জন্য স্থানীয় সিভিল কোর্ট বা ম্যাজিস্ট্রেট অফিসে আবেদন করুন।

২. তাতে আপনার মা ও আপনাকে ওয়ারিশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রাখুন।

৩. যদি বিরোধ সৃষ্টি হয়, আইনজীবীর সহায়তা নিন। কারণ, আপনার এবং আপনার মায়ের অধিকার এখানে সুস্পষ্ট।

পরামর্শ দিয়েছেন: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে আছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা, ইসরায়েলকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরানকে ঘিরে ফেলছে একের পর এক মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান

পর্যটনে সেরা ১০ মুসলিমবান্ধব অমুসলিম দেশ

ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে কেন যুক্তরাষ্ট্রে ডেকেছিলেন ট্রাম্প, ইরান-ইসরায়েল নিয়ে কী আলোচনা হলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত