শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
বলছি ঔপনিবেশিক শাসনের তলায় চাপা পড়ে যাওয়া এক নারী সেনাদলের কথা। তার নাম দাহোমি আমাজন।
আফ্রিকাকে বলা হয় ‘মানব জাতির দোলনা’। কেননা, জীবাশ্মবিদ্যা ও প্রত্নতত্ত্বের সর্বাধুনিক ব্যাখ্যা অনুসারে, আজ থেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর আগে হোমিনিডদের অস্তিত্বশীলতার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া যায় আফ্রিকায়। তবু পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহাদেশের ইতিহাসের কয়েক শতকের কোনো দলিল পাওয়া যায় না। কারণ চিরকাল বিজয়ীরাই ইতিহাস লিখেছে। এটি আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষেত্রে অমোঘ নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় সত্তর বছরের ঔপনিবেশিক শাসনামলে মহাদেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে তার গৌরবময় ইতিহাস।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উপনিবেশবাদের পতন ঘটলে ঔপনিবেশিক অঞ্চলগুলোর ইতিহাস পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমাজনদের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য দশকের পর দশক ধরে গবেষণা করে চলেছেন ইউরোপ ও পশ্চিম আফ্রিকার গবেষকেরা।
আমাজনদের বিস্মৃত ইতিহাস
প্রায় ৪০০ বছর আগে বর্তমান আফ্রিকার বেনিন শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে একটি রাজ্য। তার নাম দাহোমি। ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র নারী সেনাদল প্রতিষ্ঠা করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসে দাহোমি রাজ্যের নাম কিছুটা হলেও পরিচিত। এই সেনাবাহিনীর সব সদস্যই ছিল নারী। এই নারী সেনাদল পরিচিত ছিল আমাজন, আগুজি, মিনো ইত্যাদি নামে।
ঠিক কখন এবং কেন দাহোমিরা নারী সৈন্যদল তৈরি করে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। জনপ্রিয় মত অনুসারে, দাহোমি সাম্রাজ্যের তৃতীয় রাজা ওয়েগবাজা হাতি শিকারের জন্য নারীদের সমন্বয়ে এই সৈন্যদল গঠন করেন। যাদের বলা হতো জিবেতো।
আবার কোনো কোনো ঐতিহাসিকের ধারণা, রানি হাংবি প্রথম আমাজনদের নিয়ে নারী সেনাদল গঠন করেন। রানি হাংবি তাঁর যমজ ভাইয়ের সঙ্গে মিলে আঠারো শতকের প্রথম দিকে রাজ্য শাসন করতেন। তিনি সব সময় একদল নারী দেহরক্ষী সঙ্গে রাখতেন।
ধারণা করা হয়, দাহোমিদের শত্রুসংখ্যা এতই বেশি ছিল যে শুধু পুরুষ সেনাদল নিয়ে প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর্থার আর্ডলি উইলমট নামে এক ব্রিটিশ নৌ কর্মকর্তার লেখা থেকে ধারণা পাওয়া যায়, দাহোমিদের নারী সেনাদল তৈরির কারণ ছিল যুদ্ধ ও দাস ব্যবসার কারণে পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া। ফলে দাহোমির রাজাদের কাছে নারী শক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া অন্য উপায় ছিল না।
যোদ্ধা নিযুক্তিকরণ
বেশির ভাগ ইতিহাসবিদের মতে, দাহোমি আমাজনে যেসব নারীকে যোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করা হতো, তাদের প্রায় সবাই ছিল দাস শ্রেণির। তবে সাধারণ দাহোমি নারীরা যে এই দলে ছিল না, এমনটাও নয়। ৮ থেকে ১০ বছরের মেয়েকেও যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। রাজার যেসব স্ত্রী যথেষ্ট সুন্দরী হতো না, তারাও নিয়োগ পেত এই দলে। প্রায় বেশির ভাগ নারী যোদ্ধা সারা জীবন অবিবাহিত রয়ে যেত এবং জীবন উৎসর্গ করত দাহোমি রাজ্যের জন্য। তাদের সন্তান ধারণ করাও নিষেধ ছিল।
দাহোমি আমাজনের বিশেষত্ব
দাহোমির নারী যোদ্ধারাই শুধু সে সময় যুদ্ধে অংশ নিত এমন নয়; তার আগেও অনেক নারী যোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছে বলে সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস। তবে এক-দুজন নয়, বিশাল নারী দলকে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং সেনাবাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় দাহোমিরাই প্রথম। প্রশিক্ষণার্থী যোদ্ধারা ১৬ ফুট উঁচু একটি বেদিতে দাঁড়িয়ে ঝুড়িতে বাঁধা অবস্থায় একজন করে যুদ্ধবন্দী নিয়ে নিচে দাঁড়ানো জনতার দিকে ছুড়ে মারত। এমন বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো দাহোমি যোদ্ধাদের।
দাহোমি আমাজনের পতন দাহোমি রাজ্যের পতন ঘটে ১৮৯৪ সালে, ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। ১৮৭০ সাল থেকে নিজেদের সৈন্যদল নিয়ে দাহোমিদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে। দুর্ধর্ষ নারী যোদ্ধাদের ওপর ভিত্তি করেই একের পর এক গোত্রের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকেন দাহোমির রাজারা। কিন্তু বিপত্তিটা হয়, যখন এক নারী যোদ্ধা ফ্রান্সের এক ঔপনিবেশিক গোত্রপ্রধানের মাথা কেটে ফ্রান্সের পতাকায় মুড়ে তা নিয়ে আসে তাদের রাজার সামনে। এ ঘটনায় ফ্রান্স স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয় এবং দাহোমিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ফ্রান্স এটা বুঝতে পেরেছিল যে, দাহোমিদের নারী যোদ্ধারা দুর্ধর্ষ হলেও আধুনিক অস্ত্রবিজ্ঞানে তাদের দখল নেই। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় ফ্রান্স। তাদের আধুনিক গুলি ও বেয়নেটের সামনে ভূপাতিত হয় দাহোমি আমাজনের সদস্যরা।
ঐতিহাসিকদের মতে, ফ্রান্সের সঙ্গে সেই যুদ্ধ ছিল দাহোমি আমাজনের শেষ যুদ্ধ। তাতে প্রায় ১ হাজার ৪৫০ জন নারী সেনা নিহত হয় এবং মাত্র ৫০ জন বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়।
১৮৯৪ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে ঘটা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর দাহোমিরা ফ্রান্সের উপনিবেশের মধ্যে চলে আসে। ফ্রান্স দাহোমি আমাজনও ভেঙে দেয়। এক ইতিহাসবিদকে সাক্ষাৎকার দেওয়া নাওয়ি নামের এক নারী নিজেকে ১৮৯২ সালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা দাহোমি আমাজনের সদস্য হিসেবে দাবি করেন। তাঁকে সর্বশেষ দাহোমি নারী যোদ্ধা হিসেবে ধারণা করা হয়। ১৯৭৯ সালে ১০০ বছরের বেশি বয়সে সেই নারীর মৃত্যু হয়। তাঁর সঙ্গে শেষ হয়ে যায় অকুতোভয় নারী যোদ্ধাদের দল দাহোমি আমাজন।

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
বলছি ঔপনিবেশিক শাসনের তলায় চাপা পড়ে যাওয়া এক নারী সেনাদলের কথা। তার নাম দাহোমি আমাজন।
আফ্রিকাকে বলা হয় ‘মানব জাতির দোলনা’। কেননা, জীবাশ্মবিদ্যা ও প্রত্নতত্ত্বের সর্বাধুনিক ব্যাখ্যা অনুসারে, আজ থেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর আগে হোমিনিডদের অস্তিত্বশীলতার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া যায় আফ্রিকায়। তবু পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহাদেশের ইতিহাসের কয়েক শতকের কোনো দলিল পাওয়া যায় না। কারণ চিরকাল বিজয়ীরাই ইতিহাস লিখেছে। এটি আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষেত্রে অমোঘ নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় সত্তর বছরের ঔপনিবেশিক শাসনামলে মহাদেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে তার গৌরবময় ইতিহাস।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উপনিবেশবাদের পতন ঘটলে ঔপনিবেশিক অঞ্চলগুলোর ইতিহাস পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমাজনদের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য দশকের পর দশক ধরে গবেষণা করে চলেছেন ইউরোপ ও পশ্চিম আফ্রিকার গবেষকেরা।
আমাজনদের বিস্মৃত ইতিহাস
প্রায় ৪০০ বছর আগে বর্তমান আফ্রিকার বেনিন শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে একটি রাজ্য। তার নাম দাহোমি। ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র নারী সেনাদল প্রতিষ্ঠা করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসে দাহোমি রাজ্যের নাম কিছুটা হলেও পরিচিত। এই সেনাবাহিনীর সব সদস্যই ছিল নারী। এই নারী সেনাদল পরিচিত ছিল আমাজন, আগুজি, মিনো ইত্যাদি নামে।
ঠিক কখন এবং কেন দাহোমিরা নারী সৈন্যদল তৈরি করে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। জনপ্রিয় মত অনুসারে, দাহোমি সাম্রাজ্যের তৃতীয় রাজা ওয়েগবাজা হাতি শিকারের জন্য নারীদের সমন্বয়ে এই সৈন্যদল গঠন করেন। যাদের বলা হতো জিবেতো।
আবার কোনো কোনো ঐতিহাসিকের ধারণা, রানি হাংবি প্রথম আমাজনদের নিয়ে নারী সেনাদল গঠন করেন। রানি হাংবি তাঁর যমজ ভাইয়ের সঙ্গে মিলে আঠারো শতকের প্রথম দিকে রাজ্য শাসন করতেন। তিনি সব সময় একদল নারী দেহরক্ষী সঙ্গে রাখতেন।
ধারণা করা হয়, দাহোমিদের শত্রুসংখ্যা এতই বেশি ছিল যে শুধু পুরুষ সেনাদল নিয়ে প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর্থার আর্ডলি উইলমট নামে এক ব্রিটিশ নৌ কর্মকর্তার লেখা থেকে ধারণা পাওয়া যায়, দাহোমিদের নারী সেনাদল তৈরির কারণ ছিল যুদ্ধ ও দাস ব্যবসার কারণে পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া। ফলে দাহোমির রাজাদের কাছে নারী শক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া অন্য উপায় ছিল না।
যোদ্ধা নিযুক্তিকরণ
বেশির ভাগ ইতিহাসবিদের মতে, দাহোমি আমাজনে যেসব নারীকে যোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করা হতো, তাদের প্রায় সবাই ছিল দাস শ্রেণির। তবে সাধারণ দাহোমি নারীরা যে এই দলে ছিল না, এমনটাও নয়। ৮ থেকে ১০ বছরের মেয়েকেও যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। রাজার যেসব স্ত্রী যথেষ্ট সুন্দরী হতো না, তারাও নিয়োগ পেত এই দলে। প্রায় বেশির ভাগ নারী যোদ্ধা সারা জীবন অবিবাহিত রয়ে যেত এবং জীবন উৎসর্গ করত দাহোমি রাজ্যের জন্য। তাদের সন্তান ধারণ করাও নিষেধ ছিল।
দাহোমি আমাজনের বিশেষত্ব
দাহোমির নারী যোদ্ধারাই শুধু সে সময় যুদ্ধে অংশ নিত এমন নয়; তার আগেও অনেক নারী যোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছে বলে সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস। তবে এক-দুজন নয়, বিশাল নারী দলকে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং সেনাবাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় দাহোমিরাই প্রথম। প্রশিক্ষণার্থী যোদ্ধারা ১৬ ফুট উঁচু একটি বেদিতে দাঁড়িয়ে ঝুড়িতে বাঁধা অবস্থায় একজন করে যুদ্ধবন্দী নিয়ে নিচে দাঁড়ানো জনতার দিকে ছুড়ে মারত। এমন বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো দাহোমি যোদ্ধাদের।
দাহোমি আমাজনের পতন দাহোমি রাজ্যের পতন ঘটে ১৮৯৪ সালে, ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। ১৮৭০ সাল থেকে নিজেদের সৈন্যদল নিয়ে দাহোমিদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে। দুর্ধর্ষ নারী যোদ্ধাদের ওপর ভিত্তি করেই একের পর এক গোত্রের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকেন দাহোমির রাজারা। কিন্তু বিপত্তিটা হয়, যখন এক নারী যোদ্ধা ফ্রান্সের এক ঔপনিবেশিক গোত্রপ্রধানের মাথা কেটে ফ্রান্সের পতাকায় মুড়ে তা নিয়ে আসে তাদের রাজার সামনে। এ ঘটনায় ফ্রান্স স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয় এবং দাহোমিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ফ্রান্স এটা বুঝতে পেরেছিল যে, দাহোমিদের নারী যোদ্ধারা দুর্ধর্ষ হলেও আধুনিক অস্ত্রবিজ্ঞানে তাদের দখল নেই। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় ফ্রান্স। তাদের আধুনিক গুলি ও বেয়নেটের সামনে ভূপাতিত হয় দাহোমি আমাজনের সদস্যরা।
ঐতিহাসিকদের মতে, ফ্রান্সের সঙ্গে সেই যুদ্ধ ছিল দাহোমি আমাজনের শেষ যুদ্ধ। তাতে প্রায় ১ হাজার ৪৫০ জন নারী সেনা নিহত হয় এবং মাত্র ৫০ জন বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়।
১৮৯৪ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে ঘটা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর দাহোমিরা ফ্রান্সের উপনিবেশের মধ্যে চলে আসে। ফ্রান্স দাহোমি আমাজনও ভেঙে দেয়। এক ইতিহাসবিদকে সাক্ষাৎকার দেওয়া নাওয়ি নামের এক নারী নিজেকে ১৮৯২ সালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা দাহোমি আমাজনের সদস্য হিসেবে দাবি করেন। তাঁকে সর্বশেষ দাহোমি নারী যোদ্ধা হিসেবে ধারণা করা হয়। ১৯৭৯ সালে ১০০ বছরের বেশি বয়সে সেই নারীর মৃত্যু হয়। তাঁর সঙ্গে শেষ হয়ে যায় অকুতোভয় নারী যোদ্ধাদের দল দাহোমি আমাজন।
শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
বলছি ঔপনিবেশিক শাসনের তলায় চাপা পড়ে যাওয়া এক নারী সেনাদলের কথা। তার নাম দাহোমি আমাজন।
আফ্রিকাকে বলা হয় ‘মানব জাতির দোলনা’। কেননা, জীবাশ্মবিদ্যা ও প্রত্নতত্ত্বের সর্বাধুনিক ব্যাখ্যা অনুসারে, আজ থেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর আগে হোমিনিডদের অস্তিত্বশীলতার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া যায় আফ্রিকায়। তবু পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহাদেশের ইতিহাসের কয়েক শতকের কোনো দলিল পাওয়া যায় না। কারণ চিরকাল বিজয়ীরাই ইতিহাস লিখেছে। এটি আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষেত্রে অমোঘ নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় সত্তর বছরের ঔপনিবেশিক শাসনামলে মহাদেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে তার গৌরবময় ইতিহাস।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উপনিবেশবাদের পতন ঘটলে ঔপনিবেশিক অঞ্চলগুলোর ইতিহাস পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমাজনদের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য দশকের পর দশক ধরে গবেষণা করে চলেছেন ইউরোপ ও পশ্চিম আফ্রিকার গবেষকেরা।
আমাজনদের বিস্মৃত ইতিহাস
প্রায় ৪০০ বছর আগে বর্তমান আফ্রিকার বেনিন শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে একটি রাজ্য। তার নাম দাহোমি। ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র নারী সেনাদল প্রতিষ্ঠা করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসে দাহোমি রাজ্যের নাম কিছুটা হলেও পরিচিত। এই সেনাবাহিনীর সব সদস্যই ছিল নারী। এই নারী সেনাদল পরিচিত ছিল আমাজন, আগুজি, মিনো ইত্যাদি নামে।
ঠিক কখন এবং কেন দাহোমিরা নারী সৈন্যদল তৈরি করে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। জনপ্রিয় মত অনুসারে, দাহোমি সাম্রাজ্যের তৃতীয় রাজা ওয়েগবাজা হাতি শিকারের জন্য নারীদের সমন্বয়ে এই সৈন্যদল গঠন করেন। যাদের বলা হতো জিবেতো।
আবার কোনো কোনো ঐতিহাসিকের ধারণা, রানি হাংবি প্রথম আমাজনদের নিয়ে নারী সেনাদল গঠন করেন। রানি হাংবি তাঁর যমজ ভাইয়ের সঙ্গে মিলে আঠারো শতকের প্রথম দিকে রাজ্য শাসন করতেন। তিনি সব সময় একদল নারী দেহরক্ষী সঙ্গে রাখতেন।
ধারণা করা হয়, দাহোমিদের শত্রুসংখ্যা এতই বেশি ছিল যে শুধু পুরুষ সেনাদল নিয়ে প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর্থার আর্ডলি উইলমট নামে এক ব্রিটিশ নৌ কর্মকর্তার লেখা থেকে ধারণা পাওয়া যায়, দাহোমিদের নারী সেনাদল তৈরির কারণ ছিল যুদ্ধ ও দাস ব্যবসার কারণে পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া। ফলে দাহোমির রাজাদের কাছে নারী শক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া অন্য উপায় ছিল না।
যোদ্ধা নিযুক্তিকরণ
বেশির ভাগ ইতিহাসবিদের মতে, দাহোমি আমাজনে যেসব নারীকে যোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করা হতো, তাদের প্রায় সবাই ছিল দাস শ্রেণির। তবে সাধারণ দাহোমি নারীরা যে এই দলে ছিল না, এমনটাও নয়। ৮ থেকে ১০ বছরের মেয়েকেও যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। রাজার যেসব স্ত্রী যথেষ্ট সুন্দরী হতো না, তারাও নিয়োগ পেত এই দলে। প্রায় বেশির ভাগ নারী যোদ্ধা সারা জীবন অবিবাহিত রয়ে যেত এবং জীবন উৎসর্গ করত দাহোমি রাজ্যের জন্য। তাদের সন্তান ধারণ করাও নিষেধ ছিল।
দাহোমি আমাজনের বিশেষত্ব
দাহোমির নারী যোদ্ধারাই শুধু সে সময় যুদ্ধে অংশ নিত এমন নয়; তার আগেও অনেক নারী যোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছে বলে সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস। তবে এক-দুজন নয়, বিশাল নারী দলকে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং সেনাবাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় দাহোমিরাই প্রথম। প্রশিক্ষণার্থী যোদ্ধারা ১৬ ফুট উঁচু একটি বেদিতে দাঁড়িয়ে ঝুড়িতে বাঁধা অবস্থায় একজন করে যুদ্ধবন্দী নিয়ে নিচে দাঁড়ানো জনতার দিকে ছুড়ে মারত। এমন বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো দাহোমি যোদ্ধাদের।
দাহোমি আমাজনের পতন দাহোমি রাজ্যের পতন ঘটে ১৮৯৪ সালে, ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। ১৮৭০ সাল থেকে নিজেদের সৈন্যদল নিয়ে দাহোমিদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে। দুর্ধর্ষ নারী যোদ্ধাদের ওপর ভিত্তি করেই একের পর এক গোত্রের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকেন দাহোমির রাজারা। কিন্তু বিপত্তিটা হয়, যখন এক নারী যোদ্ধা ফ্রান্সের এক ঔপনিবেশিক গোত্রপ্রধানের মাথা কেটে ফ্রান্সের পতাকায় মুড়ে তা নিয়ে আসে তাদের রাজার সামনে। এ ঘটনায় ফ্রান্স স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয় এবং দাহোমিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ফ্রান্স এটা বুঝতে পেরেছিল যে, দাহোমিদের নারী যোদ্ধারা দুর্ধর্ষ হলেও আধুনিক অস্ত্রবিজ্ঞানে তাদের দখল নেই। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় ফ্রান্স। তাদের আধুনিক গুলি ও বেয়নেটের সামনে ভূপাতিত হয় দাহোমি আমাজনের সদস্যরা।
ঐতিহাসিকদের মতে, ফ্রান্সের সঙ্গে সেই যুদ্ধ ছিল দাহোমি আমাজনের শেষ যুদ্ধ। তাতে প্রায় ১ হাজার ৪৫০ জন নারী সেনা নিহত হয় এবং মাত্র ৫০ জন বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়।
১৮৯৪ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে ঘটা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর দাহোমিরা ফ্রান্সের উপনিবেশের মধ্যে চলে আসে। ফ্রান্স দাহোমি আমাজনও ভেঙে দেয়। এক ইতিহাসবিদকে সাক্ষাৎকার দেওয়া নাওয়ি নামের এক নারী নিজেকে ১৮৯২ সালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা দাহোমি আমাজনের সদস্য হিসেবে দাবি করেন। তাঁকে সর্বশেষ দাহোমি নারী যোদ্ধা হিসেবে ধারণা করা হয়। ১৯৭৯ সালে ১০০ বছরের বেশি বয়সে সেই নারীর মৃত্যু হয়। তাঁর সঙ্গে শেষ হয়ে যায় অকুতোভয় নারী যোদ্ধাদের দল দাহোমি আমাজন।

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
বলছি ঔপনিবেশিক শাসনের তলায় চাপা পড়ে যাওয়া এক নারী সেনাদলের কথা। তার নাম দাহোমি আমাজন।
আফ্রিকাকে বলা হয় ‘মানব জাতির দোলনা’। কেননা, জীবাশ্মবিদ্যা ও প্রত্নতত্ত্বের সর্বাধুনিক ব্যাখ্যা অনুসারে, আজ থেকে প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর আগে হোমিনিডদের অস্তিত্বশীলতার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া যায় আফ্রিকায়। তবু পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহাদেশের ইতিহাসের কয়েক শতকের কোনো দলিল পাওয়া যায় না। কারণ চিরকাল বিজয়ীরাই ইতিহাস লিখেছে। এটি আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষেত্রে অমোঘ নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় সত্তর বছরের ঔপনিবেশিক শাসনামলে মহাদেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে তার গৌরবময় ইতিহাস।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উপনিবেশবাদের পতন ঘটলে ঔপনিবেশিক অঞ্চলগুলোর ইতিহাস পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমাজনদের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য দশকের পর দশক ধরে গবেষণা করে চলেছেন ইউরোপ ও পশ্চিম আফ্রিকার গবেষকেরা।
আমাজনদের বিস্মৃত ইতিহাস
প্রায় ৪০০ বছর আগে বর্তমান আফ্রিকার বেনিন শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে একটি রাজ্য। তার নাম দাহোমি। ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র নারী সেনাদল প্রতিষ্ঠা করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসে দাহোমি রাজ্যের নাম কিছুটা হলেও পরিচিত। এই সেনাবাহিনীর সব সদস্যই ছিল নারী। এই নারী সেনাদল পরিচিত ছিল আমাজন, আগুজি, মিনো ইত্যাদি নামে।
ঠিক কখন এবং কেন দাহোমিরা নারী সৈন্যদল তৈরি করে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। জনপ্রিয় মত অনুসারে, দাহোমি সাম্রাজ্যের তৃতীয় রাজা ওয়েগবাজা হাতি শিকারের জন্য নারীদের সমন্বয়ে এই সৈন্যদল গঠন করেন। যাদের বলা হতো জিবেতো।
আবার কোনো কোনো ঐতিহাসিকের ধারণা, রানি হাংবি প্রথম আমাজনদের নিয়ে নারী সেনাদল গঠন করেন। রানি হাংবি তাঁর যমজ ভাইয়ের সঙ্গে মিলে আঠারো শতকের প্রথম দিকে রাজ্য শাসন করতেন। তিনি সব সময় একদল নারী দেহরক্ষী সঙ্গে রাখতেন।
ধারণা করা হয়, দাহোমিদের শত্রুসংখ্যা এতই বেশি ছিল যে শুধু পুরুষ সেনাদল নিয়ে প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর্থার আর্ডলি উইলমট নামে এক ব্রিটিশ নৌ কর্মকর্তার লেখা থেকে ধারণা পাওয়া যায়, দাহোমিদের নারী সেনাদল তৈরির কারণ ছিল যুদ্ধ ও দাস ব্যবসার কারণে পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া। ফলে দাহোমির রাজাদের কাছে নারী শক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া অন্য উপায় ছিল না।
যোদ্ধা নিযুক্তিকরণ
বেশির ভাগ ইতিহাসবিদের মতে, দাহোমি আমাজনে যেসব নারীকে যোদ্ধা হিসেবে প্রস্তুত করা হতো, তাদের প্রায় সবাই ছিল দাস শ্রেণির। তবে সাধারণ দাহোমি নারীরা যে এই দলে ছিল না, এমনটাও নয়। ৮ থেকে ১০ বছরের মেয়েকেও যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। রাজার যেসব স্ত্রী যথেষ্ট সুন্দরী হতো না, তারাও নিয়োগ পেত এই দলে। প্রায় বেশির ভাগ নারী যোদ্ধা সারা জীবন অবিবাহিত রয়ে যেত এবং জীবন উৎসর্গ করত দাহোমি রাজ্যের জন্য। তাদের সন্তান ধারণ করাও নিষেধ ছিল।
দাহোমি আমাজনের বিশেষত্ব
দাহোমির নারী যোদ্ধারাই শুধু সে সময় যুদ্ধে অংশ নিত এমন নয়; তার আগেও অনেক নারী যোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছে বলে সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস। তবে এক-দুজন নয়, বিশাল নারী দলকে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং সেনাবাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় দাহোমিরাই প্রথম। প্রশিক্ষণার্থী যোদ্ধারা ১৬ ফুট উঁচু একটি বেদিতে দাঁড়িয়ে ঝুড়িতে বাঁধা অবস্থায় একজন করে যুদ্ধবন্দী নিয়ে নিচে দাঁড়ানো জনতার দিকে ছুড়ে মারত। এমন বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো দাহোমি যোদ্ধাদের।
দাহোমি আমাজনের পতন দাহোমি রাজ্যের পতন ঘটে ১৮৯৪ সালে, ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। ১৮৭০ সাল থেকে নিজেদের সৈন্যদল নিয়ে দাহোমিদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে। দুর্ধর্ষ নারী যোদ্ধাদের ওপর ভিত্তি করেই একের পর এক গোত্রের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকেন দাহোমির রাজারা। কিন্তু বিপত্তিটা হয়, যখন এক নারী যোদ্ধা ফ্রান্সের এক ঔপনিবেশিক গোত্রপ্রধানের মাথা কেটে ফ্রান্সের পতাকায় মুড়ে তা নিয়ে আসে তাদের রাজার সামনে। এ ঘটনায় ফ্রান্স স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয় এবং দাহোমিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ফ্রান্স এটা বুঝতে পেরেছিল যে, দাহোমিদের নারী যোদ্ধারা দুর্ধর্ষ হলেও আধুনিক অস্ত্রবিজ্ঞানে তাদের দখল নেই। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় ফ্রান্স। তাদের আধুনিক গুলি ও বেয়নেটের সামনে ভূপাতিত হয় দাহোমি আমাজনের সদস্যরা।
ঐতিহাসিকদের মতে, ফ্রান্সের সঙ্গে সেই যুদ্ধ ছিল দাহোমি আমাজনের শেষ যুদ্ধ। তাতে প্রায় ১ হাজার ৪৫০ জন নারী সেনা নিহত হয় এবং মাত্র ৫০ জন বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়।
১৮৯৪ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে ঘটা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর দাহোমিরা ফ্রান্সের উপনিবেশের মধ্যে চলে আসে। ফ্রান্স দাহোমি আমাজনও ভেঙে দেয়। এক ইতিহাসবিদকে সাক্ষাৎকার দেওয়া নাওয়ি নামের এক নারী নিজেকে ১৮৯২ সালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা দাহোমি আমাজনের সদস্য হিসেবে দাবি করেন। তাঁকে সর্বশেষ দাহোমি নারী যোদ্ধা হিসেবে ধারণা করা হয়। ১৯৭৯ সালে ১০০ বছরের বেশি বয়সে সেই নারীর মৃত্যু হয়। তাঁর সঙ্গে শেষ হয়ে যায় অকুতোভয় নারী যোদ্ধাদের দল দাহোমি আমাজন।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৬ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৬ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
২৮ জুন ২০২৩
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৬ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৬ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৬ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
২৮ জুন ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৬ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৬ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
২৮ জুন ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৬ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৬ দিন আগেফিচার ডেস্ক

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

তলোয়ারের এক কোপে যেকোনো মানুষের মাথা শরীর থেকে মাটিতে নামিয়ে দিতে পারত তারা। বেয়ে উঠে যেতে পারত কাঁটাযুক্ত খাঁড়া দেয়াল। রাজার জীবন সুরক্ষিত রাখতে নিজেরা উৎসর্গ করেছিল নিজেদের জীবন।
২৮ জুন ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৬ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৬ দিন আগে