Ajker Patrika

নকশিকাঁথায় ভাগ্যবদল খাদিজার

আল আমিন
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

কোভিড ইফেক্ট তাঁকেও আক্রান্ত করেছিল। উচ্চশিক্ষিত খাদিজা ভালো বেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। কোভিডকালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা ভালো যাচ্ছিল না। সে সময় খাদিজা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। নিয়মমাফিক অফিস থেকে ছুটি চাইলে অফিস জানিয়ে দিল, চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারেন। খাদিজা চাকরিটা ছেড়ে দিলেন। খাদিজা জানতেন, তিনি কাজ করে আয় করতে পারবেন। শুরু করলেন নকশিকাঁথার ব্যবসা। যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ এবং আগের চাকরি করার অভিজ্ঞতায় হয়ে উঠলেন যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষক।

কয়েকজন নারী নিয়ে খাদিজা শুরু করলেন ‘সফলতা নকশি ঘর’ নামের অনলাইন ব্যবসা। লোকজন নানা কথা বলা শুরু করল। যখন স্বয়ংক্রিয় মেশিনে সুন্দর নকশার নকশিকাঁথা পাওয়া যায় কম দামে, তখন খাদিজার নকশিকাঁথা কিনবে কে?

এই চিন্তা ছিল খাদিজারও। তবে তিনি জানতেন, হাতের কাজের নিপুণ ছোঁয়ার চাহিদা দেশে ও বিদেশে আছে। নিজের চেষ্টায় দেশেই পেলেন অল্প কিছু অর্ডার। এভাবে চলছিল পঞ্চগড় শহরের রওশনবাগ এলাকার উদ্যমী নারী খাজিদা আকতারের জীবন।

এরপর প্রথমে ইন্দোনেশিয়া থেকে ১০ লাখ টাকার নকশিকাঁথার অর্ডার পেলেন খাদিজা। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একে একে ইতালি, জাপান, তুরস্ক থেকে কোটি টাকার বেশি নকশিকাঁথার অর্ডার পান। খাদিজা জানান, এই অর্জনে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন তাঁর স্বামী আওরঙ্গজেব। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকেও পেয়েছেন নানা সহযোগিতা।

খাদিজার কারখানায় কাজ করে আয় করছেন শতাধিক নারী। যাঁদের অধিকাংশ গৃহিণী, শিক্ষার্থী কিংবা বিধবা। তাঁর অর্জনে পঞ্চগড়ের নারী উদ্যোক্তারা পাচ্ছেন অনুপ্রেরণা। এখন নিজের সাফল্যে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাচ্ছেন ঋণ সহায়তা।

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী বিভাগে জেলা পর্যায়ে জয়িতা পদক পেয়েছেন খাদিজা আকতার। গত ৯ ডিসেম্বর পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী এই পদক তুলে দেন তাঁর হাতে।

প্রতিষ্ঠানটির জন্য নিজস্ব আউটলেট স্থাপন করা এবং নিজের কারখানায় হাজারো নারীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাই এখন খাদিজা আকতারের স্বপ্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত