ইমতিয়াজ মাহমুদ

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই। নারীকে এখানে দেখা হয় পুরুষের তুলনায় অধম হিসেবে, একপ্রকার ঊনমানুষ হিসেবে এবং কেবলই পুরুষের মালিকানাধীন পুরুষের ভোগের নিমিত্তে সৃষ্ট প্রাণী হিসেবে। নারীর জন্য সমাজের নির্ধারিত ভূমিকা হচ্ছে পুরুষের সেবা করা, পুরুষের শারীরিক তৃপ্তি দেওয়া, পুরুষের জন্য সন্তান উৎপাদন করা এবং সন্তান দেখাশোনা করা। এই শিক্ষা প্রতিটি শিশুই পরিবার থেকে পায়—কন্যা ও পুত্ররাও। একটি ছেলেশিশু যেহেতু পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিতে পৃথিবীকে দেখতে শেখে, নারীকে দেখে সে নিতান্তই ভোগের বস্তু হিসেবে। এ কারণেই নারীকে হয়রানি করা, যৌন হয়রানি বা অন্য যেকোনো প্রকার হয়রানি, সেটাকে আমাদের সমাজে খুব গুরুতর কোনো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। ফলে নারীদের হয়রানি করা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে আর সেটা এখনো বিদ্যমান আছে।
আর এখন যেহেতু অনায়াস যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট মূল জায়গা দখল করে নিয়েছে, নারীকে হয়রানি করার প্রবণতা বাস্তব জগতের পাশাপাশি অনলাইনেও ছড়িয়ে গেছে। বছর দেড়েক আগে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৫০ ভাগ নারী জানিয়েছেন, তাঁরা কোনো না কোনো সময় অনলাইনে হেনস্তা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শতকরা ৬২ ভাগের বয়স ২৫ বছরের কম। অনলাইনে নারীকে হয়রানি করার এই ভয়াবহ বিস্তার সবাই উপলব্ধি করেন এবং এ রকম হয়রানি রোধে বিভিন্ন আইন করা, পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব ব্যবস্থা কাজ করে হয়রানির ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে। আইন করে হয়রানি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আর এই যে আইন করে শাস্তির বিধান করা বা পুলিশের বিশেষ ইউনিট ইত্যাদি গঠন করা, তাতে কিছু কাজ হয়তো হচ্ছে, অল্প কিছু অপরাধী পাকড়াও হচ্ছে, শাস্তিও পাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত অপরাধের সংখ্যার তুলনায় তা অতিসামান্য। ওই একই জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ২৫ ভাগ ভিকটিম কখনো তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধের পর প্রতিকার পাওয়ার কোনো চেষ্টা করেননি এবং শতকরা ৪৮ জন মনে করেন, আইনের কাছে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না।
পুলিশের কাছে নারী বা শিশুদের পিতা-মাতারা হয়রানির অভিযোগ নিয়ে না যাওয়ার আরেকটা কারণ নিহিত আছে—নারীকে ভোগের পণ্য হিসেবে দেখার পিতৃতান্ত্রিক প্রথার মধ্যেই। ফেসবুক বা ভার্চুয়াল বা অন্য কোনো মাধ্যমে হয়রানি বা হেনস্তার শিকার হলেও কম বয়সী নারীরা বা তাঁদের পিতা-মাতা অনেক সময় বিষয়টা গোপন রাখতে বেশি আগ্রহী হন।
কেননা হয়রানির কথা প্রকাশ হয়ে গেলে সমাজে নারীটিকেই দোষারোপ করা হয়। তাহলে অনলাইনে নারী হয়রানির প্রতিরোধ করার উপায় কী? সাধারণভাবে বলা যায়, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে না এবং এসব হয়রানি, হেনস্তাও বন্ধ হবে না। এ কথা যেমন সত্যি, তেমনি সত্যি যে সমাজ বদলে নারীর জন্য অনুকূল হয়ে ওঠা পর্যন্ত আপনি বসে থাকতে পারবেন না। বিদ্যমান সমাজকাঠামোর মধ্যেই কি প্রতিরোধের কোনো পথ নেই? নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সেই পথ খুব সংক্ষিপ্তও নয় বা খুব সহজও নয়।
প্রথমেই বলে নিতে হয় অনলাইনে নারীর উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, বন্ধ করা তো নয়ই। কেননা শুধু প্রতিদিনের ব্যবহারিক প্রয়োজনই নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের তথ্য বা সাধারণভাবে পাঠাভ্যাসও ধীরে ধীরে অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাবে। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের পূর্ণ সুযোগ রেখেই নারীর জন্য অনলাইনে সুরক্ষার ব্যবস্থা ভাবতে হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমাদের সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ দণ্ডবিধি এবং অন্যান্য আইনে যেসব বিধান আছে, সেগুলো মোটামুটি পর্যাপ্ত। কিন্তু প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে সম্ভাব্য অপরাধীর সংখ্যা কমাতে হবে। সেটা কীভাবে করবেন? শৈশব থেকেই স্কুলে নারী অধিকার বিষয়টা শেখাতে হবে ছেলেমেয়েদের। শেখাতে হবে যে নারী কোনোভাবেই পুরুষের তুলনায় কম নয়, ঊন নয় বা ছোট নয়। তাহলেই দেখবেন কয়েক বছরের মধ্যে সাইবার হয়রানি করে এমন লোকের সংখ্যা কমে যাবে।
আর নারী অধিকারের শিক্ষা যদি ছোটবেলা থেকেই ছেলেমেয়েদের শেখানো হয়, তাহলে সেই সব বাজে ধারণাও কেটে যাবে যে নারী হচ্ছেন রসগোল্লার মতো বা পাকা ফলের মতো, কেউ তাঁকে স্পর্শ করলে বা ধর্ষণ করলে বা যৌন হয়রানি করলে তিনি ‘বাতিল’ বলে গণ্য হবেন। একজন নারী যদি নির্যাতনের বা হয়রানির শিকার হন, হোক তা ধর্ষণ বা নগ্ন ছবি প্রকাশ করে দেওয়া বা এ রকম কিছু, এর ফলে যদি নারীর মনে এবং সাধারণভাবে সমাজের সবার মধ্যে তাঁকে দোষারোপ করা বা তিনি নষ্ট হয়ে গেছেন, এ রকম ধারণা পোষণ করা বন্ধ হয়, তাহলে দেখা যাবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সব নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বাবা-মায়েরা পুলিশের সহযোগিতা নিতে মোটেই দ্বিধা করবেন না। সেই সঙ্গে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনাটাও জরুরি। অ্যাকশনএইডের সেই জরিপে শতকরা ৩০ ভাগ নারী মনে করেন, পুলিশে রিপোর্ট করে কোনো লাভ হবে না। এ ধারণাটা ভাঙাতে হবে।
বিদ্যমান সমাজে বিরাজমান নারীর প্রতি বৈষম্য চূড়ান্তভাবে দূর না হলে নারীর প্রতি নির্যাতন দূর হবে না, হোক সে ভার্চুয়াল জগতে বা বস্তুগত জগতে। কিন্তু শিক্ষা ও চর্চার মাধ্যমে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি খানিকটা পরিবর্তন করা যায়। তাতেও প্রতিরোধ করা যাবে অনেকখানি।
লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই। নারীকে এখানে দেখা হয় পুরুষের তুলনায় অধম হিসেবে, একপ্রকার ঊনমানুষ হিসেবে এবং কেবলই পুরুষের মালিকানাধীন পুরুষের ভোগের নিমিত্তে সৃষ্ট প্রাণী হিসেবে। নারীর জন্য সমাজের নির্ধারিত ভূমিকা হচ্ছে পুরুষের সেবা করা, পুরুষের শারীরিক তৃপ্তি দেওয়া, পুরুষের জন্য সন্তান উৎপাদন করা এবং সন্তান দেখাশোনা করা। এই শিক্ষা প্রতিটি শিশুই পরিবার থেকে পায়—কন্যা ও পুত্ররাও। একটি ছেলেশিশু যেহেতু পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিতে পৃথিবীকে দেখতে শেখে, নারীকে দেখে সে নিতান্তই ভোগের বস্তু হিসেবে। এ কারণেই নারীকে হয়রানি করা, যৌন হয়রানি বা অন্য যেকোনো প্রকার হয়রানি, সেটাকে আমাদের সমাজে খুব গুরুতর কোনো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। ফলে নারীদের হয়রানি করা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে আর সেটা এখনো বিদ্যমান আছে।
আর এখন যেহেতু অনায়াস যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট মূল জায়গা দখল করে নিয়েছে, নারীকে হয়রানি করার প্রবণতা বাস্তব জগতের পাশাপাশি অনলাইনেও ছড়িয়ে গেছে। বছর দেড়েক আগে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৫০ ভাগ নারী জানিয়েছেন, তাঁরা কোনো না কোনো সময় অনলাইনে হেনস্তা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শতকরা ৬২ ভাগের বয়স ২৫ বছরের কম। অনলাইনে নারীকে হয়রানি করার এই ভয়াবহ বিস্তার সবাই উপলব্ধি করেন এবং এ রকম হয়রানি রোধে বিভিন্ন আইন করা, পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব ব্যবস্থা কাজ করে হয়রানির ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে। আইন করে হয়রানি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আর এই যে আইন করে শাস্তির বিধান করা বা পুলিশের বিশেষ ইউনিট ইত্যাদি গঠন করা, তাতে কিছু কাজ হয়তো হচ্ছে, অল্প কিছু অপরাধী পাকড়াও হচ্ছে, শাস্তিও পাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত অপরাধের সংখ্যার তুলনায় তা অতিসামান্য। ওই একই জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ২৫ ভাগ ভিকটিম কখনো তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধের পর প্রতিকার পাওয়ার কোনো চেষ্টা করেননি এবং শতকরা ৪৮ জন মনে করেন, আইনের কাছে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না।
পুলিশের কাছে নারী বা শিশুদের পিতা-মাতারা হয়রানির অভিযোগ নিয়ে না যাওয়ার আরেকটা কারণ নিহিত আছে—নারীকে ভোগের পণ্য হিসেবে দেখার পিতৃতান্ত্রিক প্রথার মধ্যেই। ফেসবুক বা ভার্চুয়াল বা অন্য কোনো মাধ্যমে হয়রানি বা হেনস্তার শিকার হলেও কম বয়সী নারীরা বা তাঁদের পিতা-মাতা অনেক সময় বিষয়টা গোপন রাখতে বেশি আগ্রহী হন।
কেননা হয়রানির কথা প্রকাশ হয়ে গেলে সমাজে নারীটিকেই দোষারোপ করা হয়। তাহলে অনলাইনে নারী হয়রানির প্রতিরোধ করার উপায় কী? সাধারণভাবে বলা যায়, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে না এবং এসব হয়রানি, হেনস্তাও বন্ধ হবে না। এ কথা যেমন সত্যি, তেমনি সত্যি যে সমাজ বদলে নারীর জন্য অনুকূল হয়ে ওঠা পর্যন্ত আপনি বসে থাকতে পারবেন না। বিদ্যমান সমাজকাঠামোর মধ্যেই কি প্রতিরোধের কোনো পথ নেই? নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সেই পথ খুব সংক্ষিপ্তও নয় বা খুব সহজও নয়।
প্রথমেই বলে নিতে হয় অনলাইনে নারীর উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, বন্ধ করা তো নয়ই। কেননা শুধু প্রতিদিনের ব্যবহারিক প্রয়োজনই নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের তথ্য বা সাধারণভাবে পাঠাভ্যাসও ধীরে ধীরে অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাবে। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের পূর্ণ সুযোগ রেখেই নারীর জন্য অনলাইনে সুরক্ষার ব্যবস্থা ভাবতে হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমাদের সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ দণ্ডবিধি এবং অন্যান্য আইনে যেসব বিধান আছে, সেগুলো মোটামুটি পর্যাপ্ত। কিন্তু প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে সম্ভাব্য অপরাধীর সংখ্যা কমাতে হবে। সেটা কীভাবে করবেন? শৈশব থেকেই স্কুলে নারী অধিকার বিষয়টা শেখাতে হবে ছেলেমেয়েদের। শেখাতে হবে যে নারী কোনোভাবেই পুরুষের তুলনায় কম নয়, ঊন নয় বা ছোট নয়। তাহলেই দেখবেন কয়েক বছরের মধ্যে সাইবার হয়রানি করে এমন লোকের সংখ্যা কমে যাবে।
আর নারী অধিকারের শিক্ষা যদি ছোটবেলা থেকেই ছেলেমেয়েদের শেখানো হয়, তাহলে সেই সব বাজে ধারণাও কেটে যাবে যে নারী হচ্ছেন রসগোল্লার মতো বা পাকা ফলের মতো, কেউ তাঁকে স্পর্শ করলে বা ধর্ষণ করলে বা যৌন হয়রানি করলে তিনি ‘বাতিল’ বলে গণ্য হবেন। একজন নারী যদি নির্যাতনের বা হয়রানির শিকার হন, হোক তা ধর্ষণ বা নগ্ন ছবি প্রকাশ করে দেওয়া বা এ রকম কিছু, এর ফলে যদি নারীর মনে এবং সাধারণভাবে সমাজের সবার মধ্যে তাঁকে দোষারোপ করা বা তিনি নষ্ট হয়ে গেছেন, এ রকম ধারণা পোষণ করা বন্ধ হয়, তাহলে দেখা যাবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সব নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বাবা-মায়েরা পুলিশের সহযোগিতা নিতে মোটেই দ্বিধা করবেন না। সেই সঙ্গে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনাটাও জরুরি। অ্যাকশনএইডের সেই জরিপে শতকরা ৩০ ভাগ নারী মনে করেন, পুলিশে রিপোর্ট করে কোনো লাভ হবে না। এ ধারণাটা ভাঙাতে হবে।
বিদ্যমান সমাজে বিরাজমান নারীর প্রতি বৈষম্য চূড়ান্তভাবে দূর না হলে নারীর প্রতি নির্যাতন দূর হবে না, হোক সে ভার্চুয়াল জগতে বা বস্তুগত জগতে। কিন্তু শিক্ষা ও চর্চার মাধ্যমে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি খানিকটা পরিবর্তন করা যায়। তাতেও প্রতিরোধ করা যাবে অনেকখানি।
লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট
ইমতিয়াজ মাহমুদ

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই। নারীকে এখানে দেখা হয় পুরুষের তুলনায় অধম হিসেবে, একপ্রকার ঊনমানুষ হিসেবে এবং কেবলই পুরুষের মালিকানাধীন পুরুষের ভোগের নিমিত্তে সৃষ্ট প্রাণী হিসেবে। নারীর জন্য সমাজের নির্ধারিত ভূমিকা হচ্ছে পুরুষের সেবা করা, পুরুষের শারীরিক তৃপ্তি দেওয়া, পুরুষের জন্য সন্তান উৎপাদন করা এবং সন্তান দেখাশোনা করা। এই শিক্ষা প্রতিটি শিশুই পরিবার থেকে পায়—কন্যা ও পুত্ররাও। একটি ছেলেশিশু যেহেতু পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিতে পৃথিবীকে দেখতে শেখে, নারীকে দেখে সে নিতান্তই ভোগের বস্তু হিসেবে। এ কারণেই নারীকে হয়রানি করা, যৌন হয়রানি বা অন্য যেকোনো প্রকার হয়রানি, সেটাকে আমাদের সমাজে খুব গুরুতর কোনো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। ফলে নারীদের হয়রানি করা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে আর সেটা এখনো বিদ্যমান আছে।
আর এখন যেহেতু অনায়াস যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট মূল জায়গা দখল করে নিয়েছে, নারীকে হয়রানি করার প্রবণতা বাস্তব জগতের পাশাপাশি অনলাইনেও ছড়িয়ে গেছে। বছর দেড়েক আগে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৫০ ভাগ নারী জানিয়েছেন, তাঁরা কোনো না কোনো সময় অনলাইনে হেনস্তা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শতকরা ৬২ ভাগের বয়স ২৫ বছরের কম। অনলাইনে নারীকে হয়রানি করার এই ভয়াবহ বিস্তার সবাই উপলব্ধি করেন এবং এ রকম হয়রানি রোধে বিভিন্ন আইন করা, পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব ব্যবস্থা কাজ করে হয়রানির ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে। আইন করে হয়রানি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আর এই যে আইন করে শাস্তির বিধান করা বা পুলিশের বিশেষ ইউনিট ইত্যাদি গঠন করা, তাতে কিছু কাজ হয়তো হচ্ছে, অল্প কিছু অপরাধী পাকড়াও হচ্ছে, শাস্তিও পাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত অপরাধের সংখ্যার তুলনায় তা অতিসামান্য। ওই একই জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ২৫ ভাগ ভিকটিম কখনো তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধের পর প্রতিকার পাওয়ার কোনো চেষ্টা করেননি এবং শতকরা ৪৮ জন মনে করেন, আইনের কাছে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না।
পুলিশের কাছে নারী বা শিশুদের পিতা-মাতারা হয়রানির অভিযোগ নিয়ে না যাওয়ার আরেকটা কারণ নিহিত আছে—নারীকে ভোগের পণ্য হিসেবে দেখার পিতৃতান্ত্রিক প্রথার মধ্যেই। ফেসবুক বা ভার্চুয়াল বা অন্য কোনো মাধ্যমে হয়রানি বা হেনস্তার শিকার হলেও কম বয়সী নারীরা বা তাঁদের পিতা-মাতা অনেক সময় বিষয়টা গোপন রাখতে বেশি আগ্রহী হন।
কেননা হয়রানির কথা প্রকাশ হয়ে গেলে সমাজে নারীটিকেই দোষারোপ করা হয়। তাহলে অনলাইনে নারী হয়রানির প্রতিরোধ করার উপায় কী? সাধারণভাবে বলা যায়, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে না এবং এসব হয়রানি, হেনস্তাও বন্ধ হবে না। এ কথা যেমন সত্যি, তেমনি সত্যি যে সমাজ বদলে নারীর জন্য অনুকূল হয়ে ওঠা পর্যন্ত আপনি বসে থাকতে পারবেন না। বিদ্যমান সমাজকাঠামোর মধ্যেই কি প্রতিরোধের কোনো পথ নেই? নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সেই পথ খুব সংক্ষিপ্তও নয় বা খুব সহজও নয়।
প্রথমেই বলে নিতে হয় অনলাইনে নারীর উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, বন্ধ করা তো নয়ই। কেননা শুধু প্রতিদিনের ব্যবহারিক প্রয়োজনই নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের তথ্য বা সাধারণভাবে পাঠাভ্যাসও ধীরে ধীরে অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাবে। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের পূর্ণ সুযোগ রেখেই নারীর জন্য অনলাইনে সুরক্ষার ব্যবস্থা ভাবতে হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমাদের সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ দণ্ডবিধি এবং অন্যান্য আইনে যেসব বিধান আছে, সেগুলো মোটামুটি পর্যাপ্ত। কিন্তু প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে সম্ভাব্য অপরাধীর সংখ্যা কমাতে হবে। সেটা কীভাবে করবেন? শৈশব থেকেই স্কুলে নারী অধিকার বিষয়টা শেখাতে হবে ছেলেমেয়েদের। শেখাতে হবে যে নারী কোনোভাবেই পুরুষের তুলনায় কম নয়, ঊন নয় বা ছোট নয়। তাহলেই দেখবেন কয়েক বছরের মধ্যে সাইবার হয়রানি করে এমন লোকের সংখ্যা কমে যাবে।
আর নারী অধিকারের শিক্ষা যদি ছোটবেলা থেকেই ছেলেমেয়েদের শেখানো হয়, তাহলে সেই সব বাজে ধারণাও কেটে যাবে যে নারী হচ্ছেন রসগোল্লার মতো বা পাকা ফলের মতো, কেউ তাঁকে স্পর্শ করলে বা ধর্ষণ করলে বা যৌন হয়রানি করলে তিনি ‘বাতিল’ বলে গণ্য হবেন। একজন নারী যদি নির্যাতনের বা হয়রানির শিকার হন, হোক তা ধর্ষণ বা নগ্ন ছবি প্রকাশ করে দেওয়া বা এ রকম কিছু, এর ফলে যদি নারীর মনে এবং সাধারণভাবে সমাজের সবার মধ্যে তাঁকে দোষারোপ করা বা তিনি নষ্ট হয়ে গেছেন, এ রকম ধারণা পোষণ করা বন্ধ হয়, তাহলে দেখা যাবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সব নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বাবা-মায়েরা পুলিশের সহযোগিতা নিতে মোটেই দ্বিধা করবেন না। সেই সঙ্গে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনাটাও জরুরি। অ্যাকশনএইডের সেই জরিপে শতকরা ৩০ ভাগ নারী মনে করেন, পুলিশে রিপোর্ট করে কোনো লাভ হবে না। এ ধারণাটা ভাঙাতে হবে।
বিদ্যমান সমাজে বিরাজমান নারীর প্রতি বৈষম্য চূড়ান্তভাবে দূর না হলে নারীর প্রতি নির্যাতন দূর হবে না, হোক সে ভার্চুয়াল জগতে বা বস্তুগত জগতে। কিন্তু শিক্ষা ও চর্চার মাধ্যমে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি খানিকটা পরিবর্তন করা যায়। তাতেও প্রতিরোধ করা যাবে অনেকখানি।
লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই। নারীকে এখানে দেখা হয় পুরুষের তুলনায় অধম হিসেবে, একপ্রকার ঊনমানুষ হিসেবে এবং কেবলই পুরুষের মালিকানাধীন পুরুষের ভোগের নিমিত্তে সৃষ্ট প্রাণী হিসেবে। নারীর জন্য সমাজের নির্ধারিত ভূমিকা হচ্ছে পুরুষের সেবা করা, পুরুষের শারীরিক তৃপ্তি দেওয়া, পুরুষের জন্য সন্তান উৎপাদন করা এবং সন্তান দেখাশোনা করা। এই শিক্ষা প্রতিটি শিশুই পরিবার থেকে পায়—কন্যা ও পুত্ররাও। একটি ছেলেশিশু যেহেতু পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিতে পৃথিবীকে দেখতে শেখে, নারীকে দেখে সে নিতান্তই ভোগের বস্তু হিসেবে। এ কারণেই নারীকে হয়রানি করা, যৌন হয়রানি বা অন্য যেকোনো প্রকার হয়রানি, সেটাকে আমাদের সমাজে খুব গুরুতর কোনো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। ফলে নারীদের হয়রানি করা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে আর সেটা এখনো বিদ্যমান আছে।
আর এখন যেহেতু অনায়াস যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট মূল জায়গা দখল করে নিয়েছে, নারীকে হয়রানি করার প্রবণতা বাস্তব জগতের পাশাপাশি অনলাইনেও ছড়িয়ে গেছে। বছর দেড়েক আগে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৫০ ভাগ নারী জানিয়েছেন, তাঁরা কোনো না কোনো সময় অনলাইনে হেনস্তা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শতকরা ৬২ ভাগের বয়স ২৫ বছরের কম। অনলাইনে নারীকে হয়রানি করার এই ভয়াবহ বিস্তার সবাই উপলব্ধি করেন এবং এ রকম হয়রানি রোধে বিভিন্ন আইন করা, পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব ব্যবস্থা কাজ করে হয়রানির ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে। আইন করে হয়রানি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আর এই যে আইন করে শাস্তির বিধান করা বা পুলিশের বিশেষ ইউনিট ইত্যাদি গঠন করা, তাতে কিছু কাজ হয়তো হচ্ছে, অল্প কিছু অপরাধী পাকড়াও হচ্ছে, শাস্তিও পাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত অপরাধের সংখ্যার তুলনায় তা অতিসামান্য। ওই একই জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ২৫ ভাগ ভিকটিম কখনো তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধের পর প্রতিকার পাওয়ার কোনো চেষ্টা করেননি এবং শতকরা ৪৮ জন মনে করেন, আইনের কাছে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না।
পুলিশের কাছে নারী বা শিশুদের পিতা-মাতারা হয়রানির অভিযোগ নিয়ে না যাওয়ার আরেকটা কারণ নিহিত আছে—নারীকে ভোগের পণ্য হিসেবে দেখার পিতৃতান্ত্রিক প্রথার মধ্যেই। ফেসবুক বা ভার্চুয়াল বা অন্য কোনো মাধ্যমে হয়রানি বা হেনস্তার শিকার হলেও কম বয়সী নারীরা বা তাঁদের পিতা-মাতা অনেক সময় বিষয়টা গোপন রাখতে বেশি আগ্রহী হন।
কেননা হয়রানির কথা প্রকাশ হয়ে গেলে সমাজে নারীটিকেই দোষারোপ করা হয়। তাহলে অনলাইনে নারী হয়রানির প্রতিরোধ করার উপায় কী? সাধারণভাবে বলা যায়, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে না এবং এসব হয়রানি, হেনস্তাও বন্ধ হবে না। এ কথা যেমন সত্যি, তেমনি সত্যি যে সমাজ বদলে নারীর জন্য অনুকূল হয়ে ওঠা পর্যন্ত আপনি বসে থাকতে পারবেন না। বিদ্যমান সমাজকাঠামোর মধ্যেই কি প্রতিরোধের কোনো পথ নেই? নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সেই পথ খুব সংক্ষিপ্তও নয় বা খুব সহজও নয়।
প্রথমেই বলে নিতে হয় অনলাইনে নারীর উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, বন্ধ করা তো নয়ই। কেননা শুধু প্রতিদিনের ব্যবহারিক প্রয়োজনই নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের তথ্য বা সাধারণভাবে পাঠাভ্যাসও ধীরে ধীরে অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাবে। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের পূর্ণ সুযোগ রেখেই নারীর জন্য অনলাইনে সুরক্ষার ব্যবস্থা ভাবতে হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমাদের সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ দণ্ডবিধি এবং অন্যান্য আইনে যেসব বিধান আছে, সেগুলো মোটামুটি পর্যাপ্ত। কিন্তু প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে সম্ভাব্য অপরাধীর সংখ্যা কমাতে হবে। সেটা কীভাবে করবেন? শৈশব থেকেই স্কুলে নারী অধিকার বিষয়টা শেখাতে হবে ছেলেমেয়েদের। শেখাতে হবে যে নারী কোনোভাবেই পুরুষের তুলনায় কম নয়, ঊন নয় বা ছোট নয়। তাহলেই দেখবেন কয়েক বছরের মধ্যে সাইবার হয়রানি করে এমন লোকের সংখ্যা কমে যাবে।
আর নারী অধিকারের শিক্ষা যদি ছোটবেলা থেকেই ছেলেমেয়েদের শেখানো হয়, তাহলে সেই সব বাজে ধারণাও কেটে যাবে যে নারী হচ্ছেন রসগোল্লার মতো বা পাকা ফলের মতো, কেউ তাঁকে স্পর্শ করলে বা ধর্ষণ করলে বা যৌন হয়রানি করলে তিনি ‘বাতিল’ বলে গণ্য হবেন। একজন নারী যদি নির্যাতনের বা হয়রানির শিকার হন, হোক তা ধর্ষণ বা নগ্ন ছবি প্রকাশ করে দেওয়া বা এ রকম কিছু, এর ফলে যদি নারীর মনে এবং সাধারণভাবে সমাজের সবার মধ্যে তাঁকে দোষারোপ করা বা তিনি নষ্ট হয়ে গেছেন, এ রকম ধারণা পোষণ করা বন্ধ হয়, তাহলে দেখা যাবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সব নারী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বাবা-মায়েরা পুলিশের সহযোগিতা নিতে মোটেই দ্বিধা করবেন না। সেই সঙ্গে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনাটাও জরুরি। অ্যাকশনএইডের সেই জরিপে শতকরা ৩০ ভাগ নারী মনে করেন, পুলিশে রিপোর্ট করে কোনো লাভ হবে না। এ ধারণাটা ভাঙাতে হবে।
বিদ্যমান সমাজে বিরাজমান নারীর প্রতি বৈষম্য চূড়ান্তভাবে দূর না হলে নারীর প্রতি নির্যাতন দূর হবে না, হোক সে ভার্চুয়াল জগতে বা বস্তুগত জগতে। কিন্তু শিক্ষা ও চর্চার মাধ্যমে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি খানিকটা পরিবর্তন করা যায়। তাতেও প্রতিরোধ করা যাবে অনেকখানি।
লেখক: আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আগের মতো এখন হয়তো সে রকম অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে কন্যাশিশু হয়ে জন্মানো খুব আনন্দদায়ক কিছুও নয়। সমাজে নারীর কল্যাণের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু সমাজ যেহেতু রয়ে গেছে পুরোদস্তুর পিতৃতান্ত্রিক, তাই নারীর প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যের সূচনা হয় একটি শিশুর শৈশব থেকেই
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে