ইশতিয়াক হাসান
অ্যান্টার্কটিকার টেইলর হিমবাহের মধ্যে আছে একটি জলপ্রপাত। খুব ধীরে ধীরে সেখান থেকে বের হয়ে আসে জল। আশ্চর্য ব্যাপার হলো, এই পানির রং রক্তের মতো লাল। বরফরাজ্যে এমন আশ্চর্য রঙের জলের রহস্য কী?
ব্লাড ফলস নামে পরিচিতি পাওয়া এই আজব জলপ্রপাত বিজ্ঞানীদের প্রথম নজর কাড়ে ১৯১১ সালে। তাঁরা অবাক হয়ে দেখলেন, হিমবাহের একটি অংশ রক্তের মতো লাল। যদ্দুর জানা যায়, ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ও অভিযাত্রী টমাস গ্রিফিথ টেইলর প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন। তাঁর নামেই হিমবাহটির নাম রাখা হয় টেইলর হিমবাহ। টেইলরসহ শুরুর দিকের অন্য গবেষকেরা ধরে নিয়েছিলেন, এমন বিচিত্র রঙের জন্য দায়ী কোনো শৈবাল বা শেওলা। তবে পরে জানা যায়, এই ধারণা ঠিক নয়।
অ্যান্টার্কটিকার ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালিতে টেইলর হিমবাহ এবং আজব এই জলপ্রপাতের অবস্থান। একে অবশ্য আমাদের দেখা সাধারণ জলপ্রপাতগুলোর সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। বরফরাজ্যের হিমবাহের ফাটল গলে চুঁইয়ে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসে রক্তের মতো তরল। এখানকার তাপমাত্রা ১.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা হিমাঙ্কের নিচে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই নিম্ন তাপমাত্রায় খুব সামন্যই গড়ায় জলপ্রপাতের লাল তরল। এ কারণে অনুসন্ধানের কাজটা ছিল আরও কঠিন।
অবশ্য জলপ্রপাতের জলের লাল রং ঘিরে যেমন রহস্য তৈরি হয়, তেমনি এই বরফরাজ্যে প্রবহমান পানি কীভাবে এল, তা নিয়েও কৌতূহল ছিল গবেষকদের। শেষ পর্যন্ত সমাধান হয় দুটি রহস্যেরই।
কয়েক বছর আগে জার্নাল অব গ্ল্যাসিওলজিতে ছাপা একটি জার্নালে বেরিয়ে আসে আসল সত্য। হিমবাহের তলের ছবি তোলা সম্ভব হওয়ায় রহস্যের সমাধান সহজ হয়। এতে দেখা যায়, হিমবাহের নিচে পাতাল নদী আর হ্রদ আছে। আনুমানিক ২০ লাখ বছর আগে এই হ্রদের পানি হিমবাহের নিচে আটকে যায়। আর এই হ্রদ আর নদীর জলে বেশ উচ্চমাত্রায় লবণ থাকে। এগুলো আয়রন বা লোহায়ও পূর্ণ।
পানি প্রবাহের পেছনে বড় ভূমিকা লবণের। আর লোহার কারণেই জলপ্রপাত থেকে রক্তলাল তরল বের হয়। গবেষণায় দেখা যায়, এই লবণের উপস্থিতির কারণে জমে না গিয়ে জলপ্রপাতের লাল তরল প্রবাহিত হয়।
কাজেই হিমবাহের নিচের অস্বাভাবিক লবণাক্ত হ্রদটি গোটা বিষয়টিতে একটি বড় ভূমিকা রাখে। নোনা জলের বিশুদ্ধ জলের চেয়ে হিমাঙ্ক বা ফ্রিজিং পয়েন্ট কম। এটি হিমায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপ ছেড়ে দেয়, যা বরফ গলিয়ে পানিকে প্রবাহিত করতে সাহায্য করে।
অর্থাৎ, পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল হিমবাহটিতেও জলের প্রবাহ আছে। কিন্তু এই পানিতে এতই বেশি লোহা আছে যে এটি আশ্চর্য লাল রঙের হয়ে ওঠে। সেই সূত্রেই জন্ম রক্তলাল এক জলপ্রপাতের। গবেষণায় দেখা যায় লবণপানির ১৫ লাখ বছর লাগে হিমবাহের নানা ফাটলের ভেতর দিয়ে গিয়ে রক্তলাল জলপ্রপাতের জন্ম দিতে।
গবেষণায় নদী-হ্রদের জলে লোহাসমৃদ্ধ লবণপানির পরিমাণ বের করারও চেষ্টা করা হয়। জলপ্রপাতের কাছাকাছি এই লৌহ বা আয়রন-সমৃদ্ধ লবণ জলের পরিমাণও বেশি। পানির তাপমাত্রার সঙ্গে লবণের পরিমাণেরও সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় বিজ্ঞানীদের গবেষণায়। হিমবাহের মধ্যে বিভিন্ন আকারের ফাটলগুলোর ভেতরে নোনা জল বা নোনা অংশ প্রবেশ করে। তার পরই লবণজল জমতে শুরু করে। এদিকে এর মধ্যে সুপ্ত উষ্ণতা চারপাশের বরফকে উত্তপ্ত করতে শুরু করে। আর এ সময় ফাটলের ভেতর থেকে জলপ্রপাতের জল হিসেবে বেরিয়ে আসে আয়রন বা লোহাসমৃদ্ধ লাল তরল।
তবে এই রক্তলাল জলপ্রপাতের কাছে পৌঁছানো মোটেই সহজ নয়। এটি ড্রাই ভ্যালি নামের যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানে যাওয়া যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকমার্ডো স্টেশন থেকে কিংবা নিউজিল্যান্ডের স্কট বেস থেকে হেলিকপ্টারে। কিংবা রোজ সাগর থেকে যেতে হয় জাহাজে চেপে। তাই সাধারণ পর্যটকদের এই বিস্ময়কর বিষয়টি দেখার সৌভাগ্য হয় না।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, এটলাস অবসকিউরা, আউটলুক ইন্ডিয়া
অ্যান্টার্কটিকার টেইলর হিমবাহের মধ্যে আছে একটি জলপ্রপাত। খুব ধীরে ধীরে সেখান থেকে বের হয়ে আসে জল। আশ্চর্য ব্যাপার হলো, এই পানির রং রক্তের মতো লাল। বরফরাজ্যে এমন আশ্চর্য রঙের জলের রহস্য কী?
ব্লাড ফলস নামে পরিচিতি পাওয়া এই আজব জলপ্রপাত বিজ্ঞানীদের প্রথম নজর কাড়ে ১৯১১ সালে। তাঁরা অবাক হয়ে দেখলেন, হিমবাহের একটি অংশ রক্তের মতো লাল। যদ্দুর জানা যায়, ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ও অভিযাত্রী টমাস গ্রিফিথ টেইলর প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন। তাঁর নামেই হিমবাহটির নাম রাখা হয় টেইলর হিমবাহ। টেইলরসহ শুরুর দিকের অন্য গবেষকেরা ধরে নিয়েছিলেন, এমন বিচিত্র রঙের জন্য দায়ী কোনো শৈবাল বা শেওলা। তবে পরে জানা যায়, এই ধারণা ঠিক নয়।
অ্যান্টার্কটিকার ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালিতে টেইলর হিমবাহ এবং আজব এই জলপ্রপাতের অবস্থান। একে অবশ্য আমাদের দেখা সাধারণ জলপ্রপাতগুলোর সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। বরফরাজ্যের হিমবাহের ফাটল গলে চুঁইয়ে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসে রক্তের মতো তরল। এখানকার তাপমাত্রা ১.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা হিমাঙ্কের নিচে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই নিম্ন তাপমাত্রায় খুব সামন্যই গড়ায় জলপ্রপাতের লাল তরল। এ কারণে অনুসন্ধানের কাজটা ছিল আরও কঠিন।
অবশ্য জলপ্রপাতের জলের লাল রং ঘিরে যেমন রহস্য তৈরি হয়, তেমনি এই বরফরাজ্যে প্রবহমান পানি কীভাবে এল, তা নিয়েও কৌতূহল ছিল গবেষকদের। শেষ পর্যন্ত সমাধান হয় দুটি রহস্যেরই।
কয়েক বছর আগে জার্নাল অব গ্ল্যাসিওলজিতে ছাপা একটি জার্নালে বেরিয়ে আসে আসল সত্য। হিমবাহের তলের ছবি তোলা সম্ভব হওয়ায় রহস্যের সমাধান সহজ হয়। এতে দেখা যায়, হিমবাহের নিচে পাতাল নদী আর হ্রদ আছে। আনুমানিক ২০ লাখ বছর আগে এই হ্রদের পানি হিমবাহের নিচে আটকে যায়। আর এই হ্রদ আর নদীর জলে বেশ উচ্চমাত্রায় লবণ থাকে। এগুলো আয়রন বা লোহায়ও পূর্ণ।
পানি প্রবাহের পেছনে বড় ভূমিকা লবণের। আর লোহার কারণেই জলপ্রপাত থেকে রক্তলাল তরল বের হয়। গবেষণায় দেখা যায়, এই লবণের উপস্থিতির কারণে জমে না গিয়ে জলপ্রপাতের লাল তরল প্রবাহিত হয়।
কাজেই হিমবাহের নিচের অস্বাভাবিক লবণাক্ত হ্রদটি গোটা বিষয়টিতে একটি বড় ভূমিকা রাখে। নোনা জলের বিশুদ্ধ জলের চেয়ে হিমাঙ্ক বা ফ্রিজিং পয়েন্ট কম। এটি হিমায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপ ছেড়ে দেয়, যা বরফ গলিয়ে পানিকে প্রবাহিত করতে সাহায্য করে।
অর্থাৎ, পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল হিমবাহটিতেও জলের প্রবাহ আছে। কিন্তু এই পানিতে এতই বেশি লোহা আছে যে এটি আশ্চর্য লাল রঙের হয়ে ওঠে। সেই সূত্রেই জন্ম রক্তলাল এক জলপ্রপাতের। গবেষণায় দেখা যায় লবণপানির ১৫ লাখ বছর লাগে হিমবাহের নানা ফাটলের ভেতর দিয়ে গিয়ে রক্তলাল জলপ্রপাতের জন্ম দিতে।
গবেষণায় নদী-হ্রদের জলে লোহাসমৃদ্ধ লবণপানির পরিমাণ বের করারও চেষ্টা করা হয়। জলপ্রপাতের কাছাকাছি এই লৌহ বা আয়রন-সমৃদ্ধ লবণ জলের পরিমাণও বেশি। পানির তাপমাত্রার সঙ্গে লবণের পরিমাণেরও সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় বিজ্ঞানীদের গবেষণায়। হিমবাহের মধ্যে বিভিন্ন আকারের ফাটলগুলোর ভেতরে নোনা জল বা নোনা অংশ প্রবেশ করে। তার পরই লবণজল জমতে শুরু করে। এদিকে এর মধ্যে সুপ্ত উষ্ণতা চারপাশের বরফকে উত্তপ্ত করতে শুরু করে। আর এ সময় ফাটলের ভেতর থেকে জলপ্রপাতের জল হিসেবে বেরিয়ে আসে আয়রন বা লোহাসমৃদ্ধ লাল তরল।
তবে এই রক্তলাল জলপ্রপাতের কাছে পৌঁছানো মোটেই সহজ নয়। এটি ড্রাই ভ্যালি নামের যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানে যাওয়া যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকমার্ডো স্টেশন থেকে কিংবা নিউজিল্যান্ডের স্কট বেস থেকে হেলিকপ্টারে। কিংবা রোজ সাগর থেকে যেতে হয় জাহাজে চেপে। তাই সাধারণ পর্যটকদের এই বিস্ময়কর বিষয়টি দেখার সৌভাগ্য হয় না।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, এটলাস অবসকিউরা, আউটলুক ইন্ডিয়া
ফ্যাশন জগৎ সব সময়ই নতুনত্বের খোঁজে থাকে। কখনো ক্ল্যাসিক, কখনো আবার উদ্ভট—ফ্যাশনের এই বিবর্তন যেন থামেই না কখনো। তবে মাঝে মাঝে এমন কিছু ট্রেন্ড সামনে আসে, যা দেখে চোখ কপালে ওঠে যায়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে এক পায়ের জিনস। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন—এক পায়ের জিনস!
২১ ঘণ্টা আগেএক টুকরো টোস্টে যিশুর অবয়ব দেখার কথা হয়তো শুনেছেন, কিন্তু একটি চিটো বা চিপস যদি দেখতে হয় জনপ্রিয় কার্টুন পোকেমন চরিত্রের মতো? সম্প্রতি চারিজার্ডের আকৃতির একটি ফ্লেমিন হট চিটো নিলামে ৮৭ হাজার ৮৪০ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা সংগ্রহশালার দুনিয়ায় আলোড়ন তুলেছে।
১ দিন আগেএক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে ঊর্ধ্বমুখী ডিমের বাজার। বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ৪ দশমিক ৯৫ ডলার; যা ২০২৪–এর ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। এমন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত পয়সা খরচ না করে ডিমের জোগান ঠিক রাখতে মুরগি পালনের দিকে ঝুঁকছেন অনেক মার্কিন।
৬ দিন আগেদক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় পপ ব্যান্ড বিটিএসের সদস্য জিনকে (কিম সক-জিন) জনসমক্ষে চুম্বন করে পুলিশি তদন্তের মুখে পড়েছেন এক জাপানি নারী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত বছরের জুনে সিউলে একটি ফ্যান ইভেন্টে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে জিন বিটিএসের ১ হাজার ভক্তকে আলিঙ্গন করেন। তবে ওই জাপানি..
৯ দিন আগে