নাজমুল ইসলাম, ঢাকা

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা কী?
কোনো কোনো বিজ্ঞজন অবশ্য বলছেন, এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে ভালো অবস্থানে আসে না, তার দোষ তো বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। দোষ হলো যারা র্যাংকিং তৈরি করে, তাদের। তারা যেসব মানদণ্ড দিয়ে র্যাংকিং করে, দোষ সেই মানদণ্ডের। ওই সব মানের দণ্ডগুলো পরিবর্তন করলেই বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় এক লাফে প্রথমে চলে আসবে। এতে নাকি কোনো সন্দেহ নেই। অক্সফোর্ড কিংবা হার্ভার্ডের স্থান বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনায়াসেই দখল করতে পারবে। র্যাংকিংয়ে ‘২ নম্বর’ অক্সফোর্ড, ‘১ নম্বর’ অক্সফোর্ডের আগে চলে আসতে পারে। তার জন্য দরকার শুধু মানদণ্ডের পরিবর্তন।
তাই বাংলাদেশ থেকে মানদণ্ডগুলো পরিবর্তনের জোর দাবি জানানো দরকার। এসব নিয়ে রাজপথেও নামা উচিত। আশা করি এ নিয়ে আন্দোলন একদিন না একদিন হবে এবং গড়া হবে বিশ্বরেকর্ড। নতুন মানদণ্ড কী হতে পারে, তার কিছু নমুনা নিচে দেওয়া হলো—
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে রাতের মিছিলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি রাতে যেই অসাধারণ মিছিল হয়, তা কি হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ডে হয়? মনে হয় সেখানে হয় না। রাত যখন গভীর হয়, হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হয়তো পড়াশোনা করে। কিন্তু এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো এত বোকা নয় যে, তারা রাতে বসে বই পড়বে বা পড়তে পারবে! অনেকে তখন নেমে যায় শারীরিক কসরত দেখাতে। রাতে যেভাবে গলা উচিয়ে মিছিল হয়, পৃথিবীর আর কোথাও হয় বলে মনে হয় না। মিছিলের শব্দে যেকোনো পথ কাঁপতে থাকে। মিছিল করতে করতে তাদের গলা পর্যন্ত বসে যায়, কিন্তু তারা বসে না। হাঁটার ধরন তামিল সিনেমার অ্যাকশনকেও হার মানায়। তারা হাঁটার সময় পুরো রাস্তা নিয়ে হাঁটে, বিপরীত দিক থেকে আসা মানুষ নামক অন্য প্রাণীগুলো তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অভিব্যক্তি দেখলে মনে হবে, তাদের প্রত্যেকে একেকজন ড্যানিয়েল ক্রেইগ কিংবা টম ক্রজ অথবা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। এই বুঝি পুরো পৃথিবী তাদের দখলে চলে এল! বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল আছে বলেই তো এত শত শত ড্যানিয়েল ক্রেইগ, টম ক্রজ বা আলেকজান্ডারদের একদম ফাও ফাও (বিনা টাকায়) দেখতে পাওয়া যায়। এটা জাতির জন্য কত বড় গর্বের, ঐতিহ্যের—একবার ভাবুন তো! তাহলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড কেন হবে না?
২. ফাও খাওয়া: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরেকটি ব্যর্থতা হলো ফাও খাওয়াকে তারা র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করেনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবহেলার কারণেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ অবস্থা। যা হোক, ফাও খাওয়াকে মানদণ্ড নির্ধারণের উপাদান করতে হবে। এদিক থেকেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে টেক্কা দিতে পারবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। টপাটপ ১০টা মিষ্টি গিলে খাতায় একটি মিষ্টি লিখে রাখার দক্ষতা কি অন্যদের আছে? অন্যদিকে খাওয়ার কলাকৌশল এতটা নিঁখুত যে, তা সিসিটিভি ক্যামেরাও ধরতে পারে না। অবশ্য সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে তাদের নিখুঁত কলাকৌশল দেখতেও যান না দোকানদার। কারণ, জলে বসে কুমিরের খাবারের ওপর খবরদারি চলে নাকি।
ক্যান্টিনেও তাদের একই অসাধারণ রূপ দেখা যায়। একটু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলা যাক। আমি মাঝেমধ্যে খেতে গিয়ে অবাক হতাম। ছোট সময় থেকে জমিদারদের সম্পর্কে শুনেছি। তাদের রাজকীয় খাবারের কথা শুনেছি। তখন থেকেই জমিদার দেখার ইচ্ছা ছিল। সেই সাধ পূরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যান্টিনে আমি প্রায় সময়ই দু-চারজনকে দেখতাম, যারা আমার চোখে ‘জমিদার’ ছাড়া অন্য কিছু হতেই পারে না। তারা ঢুকলেই ক্যান্টিন বয় দৌড়ে এসে বলত, ‘আসসালামু আলাইকুম, ভাই কী খাইবেন বলেন।’ এতটা সম্মান মার্কিন কোনো প্রেসিডেন্টও পান কিনা সন্দেহ। ক্যান্টিন বয়ের কথা শুনে ‘জমিদার’ বলে, ‘কী কী রান্না হয়েছে?’ বয় খুব বিনয়ের সাথে সবগুলো আইটেমের নাম বলে। জমিদার সাহেব পছন্দমতো কয়েকটি আইটেমের খাবার আনতে বলে। আবার বলে দেয়, ‘ভাজি ভর্তাও নিয়ে আসিস।’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো এদের বিল আসত আমার থেকেও কম। অথচ আমি ৫ বছরে কখনো দুটি তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছি বলে মনে পড়ে না।
যাই হোক ফাও খাওয়াও যে একটা আন্তর্জাতিক ধরনের দক্ষতা, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুঝতে হবে।
৩. ফেসবুকে অভিনন্দন জানানো। ফেসবুক বানিয়েছে এক আমেরিকান, কিন্তু ফেসবুকে আমাদের থেকে বেশি অভিনন্দন তারা জানাতে পারেনি। এটিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদণ্ড নির্ধারণের পন্থা হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রেও আমরা বেশ অগ্রসর। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে, যারা সারা জীবনে যতগুলো বাক্য পড়েছে, তার থেকে বেশি লিখেছে ‘অভিনন্দন’। তবে তারা আবার সবাইকে অভিনন্দন জানায় না। তারা অভিনন্দন জানায় কিছু নেতাকে ও একই গোয়ালের গরু টাইপের কিছু বন্ধু-বান্ধবকে। সেই তালিকায় নেতার যত আত্মীয়স্বজন আছে, তাদেরও নাম থাকে। নেতাকে ট্যাগ করে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, ‘আপনার এই কৃতিত্ব দেখে আমরা অভিভূত। সামনে এগিয়ে যান ভাই।’ কিন্তু কত আগে? তা অবশ্য কেউ বলে না!
৪. অলরাউন্ডার শিক্ষক। সবাই যেন সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডাররা কী না পারে? বল করতে পারে, ব্যাট করতে পারে, ফিল্ডিং করতে পারে। সব কাজের কাজি তারা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা অলরাউন্ডার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৬১ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন ৮৪ জন (সূত্র: https://www.bestmastersprograms.org/most-nobel-prize-winners/) । দেখা যাবে স্টানফোর্ড বা হার্ভার্ডের শিক্ষকেরা তেমন অলরাউন্ডার নন। তাঁরা শুধু পড়ালেখা বা গবেষণা নিয়েই আছেন। রাজনীতি করার মতো সময় তাঁদের হাতে নেই, কিংবা ইচ্ছাটাও নেই। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা কেবল পড়াশোনা বা গবেষণাই করেন না, তাঁরা আরও অনেক কিছু করেন। টেলিভিশনে টক শো, রাজনীতিতে নিয়মিত উপস্থিতি, এই সংগঠনের মিটিং, সেই সংগঠনের মিটিং—কী না করেন তাঁরা। কিন্তু প্রথাগত র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গুণ বিবেচনা করা হয় না। অলরাউন্ডারের দিক থেকে বিবেচনা করলে বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবস্থান হার্ভার্ড, স্টানফোর্ড, অক্সফোর্ড কিংবা এমআইটির শিক্ষকদের ওপরেই থাকবে।
৫. বাসের প্রেসিডেন্ট। বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প বা জো বাইডেনের নাম শোনেননি–রাজনীতি সচেতন এমন ব্যক্তি হয়তো পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা তিনজনই আমেরিকা নামক একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বা আছেন। প্রথম দুজন সাবেক, শেষের জন্য বর্তমান। অথচ এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই অনেক প্রেসিডেন্ট। এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য যেসব বাস আছে, সেগুলোতেও প্রেসিডেন্ট আছে। আপনি সেসব বাসে উঠলেই বুঝতে পারবেন বাসের প্রেসিডেন্ট কে। তাঁর দাঁড়ানো ও চালচলনের ভঙ্গি দেখলে স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভড়কে যেতে পারেন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে গোণায় ধরা হয় না? ভাবা যায়!
৬. আনুগত্য। অসংখ্য অনুগত প্রাণীর সন্ধান এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়া যাবে। বড় ভাইদের সব কথাতেই এরা ‘জি ভাই, ঠিক বলছেন ভাই’ বলে ওঠে। শুনেছিলাম, এমন শ্রেণিভুক্ত একজন নাকি বলেছিল, ‘অমুক যদি বলে সূর্য পশ্চিম দিকে ওঠে, তাহলে সূর্য পশ্চিম দিকেই ওঠে।’ এতটা অনুগত প্রাণীর কি তুলনা হয়? অথচ বিশ্বসম্প্রদায় এ বিষয় নিয়ে এখনো জানতে পারেনি। জানতে পারলে গিনেস বুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠতে কি বেশি সময় লাগত? তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়েরও কি উন্নতি ঘটত না? কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার হীন প্রচেষ্টায় তা দেখেও দেখছে না। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রদর্শন করা কি উচিত? বলুন একবার বুকে হাত দিয়ে।
৭. ফেসবুক গবেষক। ১০ বছর আগে কোনো নেতার ছবিতে আপনি ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন, তা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুঁজে বের করার মতো অসংখ্য গবেষক আছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেই রিঅ্যাক্ট দেখেই আপনার সম্পর্কে তাঁরা অনুমান করে ফেলতে পারবেন, আপনি কোন দল করেন। আপনি চেতনাবাদী নাকি বিরোধী, তা তাঁদের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডার ধরে ফেলতে পারবে নিমেষে। এমনকি আপনার চৌদ্দ গুষ্টির চেতনাও রেহাই পাবে না। এরা শুধু কাগজ-কলমে গবেষক নয়, এদের হাতে ডান্ডাও আছে। শুধু গবেষণা করেই এরা ক্ষান্ত থাকে না, বরং তার প্রয়োগ ঘটাতে ডান্ডা নিয়ে সব ঠান্ডা করে দিতে মাঠেও নেমে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গবেষকদের মানদণ্ডের হিসাবে আনতে হবে। সেই সঙ্গে ফেসবুক গবেষণায় নোবেল পুরস্কারের মতো কিছু একটা চালু করলেও মন্দ হয় না।
উফ, হাঁপিয়ে গেছি। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। দ্বিতীয় পর্বে আরও কিছু মান ও তার দণ্ড নিয়ে আলোচনা করা যাবে। সে পর্যন্ত, বিদায়!

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা কী?
কোনো কোনো বিজ্ঞজন অবশ্য বলছেন, এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে ভালো অবস্থানে আসে না, তার দোষ তো বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। দোষ হলো যারা র্যাংকিং তৈরি করে, তাদের। তারা যেসব মানদণ্ড দিয়ে র্যাংকিং করে, দোষ সেই মানদণ্ডের। ওই সব মানের দণ্ডগুলো পরিবর্তন করলেই বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় এক লাফে প্রথমে চলে আসবে। এতে নাকি কোনো সন্দেহ নেই। অক্সফোর্ড কিংবা হার্ভার্ডের স্থান বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনায়াসেই দখল করতে পারবে। র্যাংকিংয়ে ‘২ নম্বর’ অক্সফোর্ড, ‘১ নম্বর’ অক্সফোর্ডের আগে চলে আসতে পারে। তার জন্য দরকার শুধু মানদণ্ডের পরিবর্তন।
তাই বাংলাদেশ থেকে মানদণ্ডগুলো পরিবর্তনের জোর দাবি জানানো দরকার। এসব নিয়ে রাজপথেও নামা উচিত। আশা করি এ নিয়ে আন্দোলন একদিন না একদিন হবে এবং গড়া হবে বিশ্বরেকর্ড। নতুন মানদণ্ড কী হতে পারে, তার কিছু নমুনা নিচে দেওয়া হলো—
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে রাতের মিছিলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি রাতে যেই অসাধারণ মিছিল হয়, তা কি হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ডে হয়? মনে হয় সেখানে হয় না। রাত যখন গভীর হয়, হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হয়তো পড়াশোনা করে। কিন্তু এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো এত বোকা নয় যে, তারা রাতে বসে বই পড়বে বা পড়তে পারবে! অনেকে তখন নেমে যায় শারীরিক কসরত দেখাতে। রাতে যেভাবে গলা উচিয়ে মিছিল হয়, পৃথিবীর আর কোথাও হয় বলে মনে হয় না। মিছিলের শব্দে যেকোনো পথ কাঁপতে থাকে। মিছিল করতে করতে তাদের গলা পর্যন্ত বসে যায়, কিন্তু তারা বসে না। হাঁটার ধরন তামিল সিনেমার অ্যাকশনকেও হার মানায়। তারা হাঁটার সময় পুরো রাস্তা নিয়ে হাঁটে, বিপরীত দিক থেকে আসা মানুষ নামক অন্য প্রাণীগুলো তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অভিব্যক্তি দেখলে মনে হবে, তাদের প্রত্যেকে একেকজন ড্যানিয়েল ক্রেইগ কিংবা টম ক্রজ অথবা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। এই বুঝি পুরো পৃথিবী তাদের দখলে চলে এল! বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল আছে বলেই তো এত শত শত ড্যানিয়েল ক্রেইগ, টম ক্রজ বা আলেকজান্ডারদের একদম ফাও ফাও (বিনা টাকায়) দেখতে পাওয়া যায়। এটা জাতির জন্য কত বড় গর্বের, ঐতিহ্যের—একবার ভাবুন তো! তাহলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড কেন হবে না?
২. ফাও খাওয়া: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরেকটি ব্যর্থতা হলো ফাও খাওয়াকে তারা র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করেনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবহেলার কারণেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ অবস্থা। যা হোক, ফাও খাওয়াকে মানদণ্ড নির্ধারণের উপাদান করতে হবে। এদিক থেকেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে টেক্কা দিতে পারবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। টপাটপ ১০টা মিষ্টি গিলে খাতায় একটি মিষ্টি লিখে রাখার দক্ষতা কি অন্যদের আছে? অন্যদিকে খাওয়ার কলাকৌশল এতটা নিঁখুত যে, তা সিসিটিভি ক্যামেরাও ধরতে পারে না। অবশ্য সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে তাদের নিখুঁত কলাকৌশল দেখতেও যান না দোকানদার। কারণ, জলে বসে কুমিরের খাবারের ওপর খবরদারি চলে নাকি।
ক্যান্টিনেও তাদের একই অসাধারণ রূপ দেখা যায়। একটু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলা যাক। আমি মাঝেমধ্যে খেতে গিয়ে অবাক হতাম। ছোট সময় থেকে জমিদারদের সম্পর্কে শুনেছি। তাদের রাজকীয় খাবারের কথা শুনেছি। তখন থেকেই জমিদার দেখার ইচ্ছা ছিল। সেই সাধ পূরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যান্টিনে আমি প্রায় সময়ই দু-চারজনকে দেখতাম, যারা আমার চোখে ‘জমিদার’ ছাড়া অন্য কিছু হতেই পারে না। তারা ঢুকলেই ক্যান্টিন বয় দৌড়ে এসে বলত, ‘আসসালামু আলাইকুম, ভাই কী খাইবেন বলেন।’ এতটা সম্মান মার্কিন কোনো প্রেসিডেন্টও পান কিনা সন্দেহ। ক্যান্টিন বয়ের কথা শুনে ‘জমিদার’ বলে, ‘কী কী রান্না হয়েছে?’ বয় খুব বিনয়ের সাথে সবগুলো আইটেমের নাম বলে। জমিদার সাহেব পছন্দমতো কয়েকটি আইটেমের খাবার আনতে বলে। আবার বলে দেয়, ‘ভাজি ভর্তাও নিয়ে আসিস।’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো এদের বিল আসত আমার থেকেও কম। অথচ আমি ৫ বছরে কখনো দুটি তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছি বলে মনে পড়ে না।
যাই হোক ফাও খাওয়াও যে একটা আন্তর্জাতিক ধরনের দক্ষতা, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুঝতে হবে।
৩. ফেসবুকে অভিনন্দন জানানো। ফেসবুক বানিয়েছে এক আমেরিকান, কিন্তু ফেসবুকে আমাদের থেকে বেশি অভিনন্দন তারা জানাতে পারেনি। এটিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদণ্ড নির্ধারণের পন্থা হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রেও আমরা বেশ অগ্রসর। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে, যারা সারা জীবনে যতগুলো বাক্য পড়েছে, তার থেকে বেশি লিখেছে ‘অভিনন্দন’। তবে তারা আবার সবাইকে অভিনন্দন জানায় না। তারা অভিনন্দন জানায় কিছু নেতাকে ও একই গোয়ালের গরু টাইপের কিছু বন্ধু-বান্ধবকে। সেই তালিকায় নেতার যত আত্মীয়স্বজন আছে, তাদেরও নাম থাকে। নেতাকে ট্যাগ করে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, ‘আপনার এই কৃতিত্ব দেখে আমরা অভিভূত। সামনে এগিয়ে যান ভাই।’ কিন্তু কত আগে? তা অবশ্য কেউ বলে না!
৪. অলরাউন্ডার শিক্ষক। সবাই যেন সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডাররা কী না পারে? বল করতে পারে, ব্যাট করতে পারে, ফিল্ডিং করতে পারে। সব কাজের কাজি তারা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা অলরাউন্ডার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৬১ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন ৮৪ জন (সূত্র: https://www.bestmastersprograms.org/most-nobel-prize-winners/) । দেখা যাবে স্টানফোর্ড বা হার্ভার্ডের শিক্ষকেরা তেমন অলরাউন্ডার নন। তাঁরা শুধু পড়ালেখা বা গবেষণা নিয়েই আছেন। রাজনীতি করার মতো সময় তাঁদের হাতে নেই, কিংবা ইচ্ছাটাও নেই। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা কেবল পড়াশোনা বা গবেষণাই করেন না, তাঁরা আরও অনেক কিছু করেন। টেলিভিশনে টক শো, রাজনীতিতে নিয়মিত উপস্থিতি, এই সংগঠনের মিটিং, সেই সংগঠনের মিটিং—কী না করেন তাঁরা। কিন্তু প্রথাগত র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গুণ বিবেচনা করা হয় না। অলরাউন্ডারের দিক থেকে বিবেচনা করলে বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবস্থান হার্ভার্ড, স্টানফোর্ড, অক্সফোর্ড কিংবা এমআইটির শিক্ষকদের ওপরেই থাকবে।
৫. বাসের প্রেসিডেন্ট। বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প বা জো বাইডেনের নাম শোনেননি–রাজনীতি সচেতন এমন ব্যক্তি হয়তো পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা তিনজনই আমেরিকা নামক একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বা আছেন। প্রথম দুজন সাবেক, শেষের জন্য বর্তমান। অথচ এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই অনেক প্রেসিডেন্ট। এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য যেসব বাস আছে, সেগুলোতেও প্রেসিডেন্ট আছে। আপনি সেসব বাসে উঠলেই বুঝতে পারবেন বাসের প্রেসিডেন্ট কে। তাঁর দাঁড়ানো ও চালচলনের ভঙ্গি দেখলে স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভড়কে যেতে পারেন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে গোণায় ধরা হয় না? ভাবা যায়!
৬. আনুগত্য। অসংখ্য অনুগত প্রাণীর সন্ধান এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়া যাবে। বড় ভাইদের সব কথাতেই এরা ‘জি ভাই, ঠিক বলছেন ভাই’ বলে ওঠে। শুনেছিলাম, এমন শ্রেণিভুক্ত একজন নাকি বলেছিল, ‘অমুক যদি বলে সূর্য পশ্চিম দিকে ওঠে, তাহলে সূর্য পশ্চিম দিকেই ওঠে।’ এতটা অনুগত প্রাণীর কি তুলনা হয়? অথচ বিশ্বসম্প্রদায় এ বিষয় নিয়ে এখনো জানতে পারেনি। জানতে পারলে গিনেস বুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠতে কি বেশি সময় লাগত? তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়েরও কি উন্নতি ঘটত না? কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার হীন প্রচেষ্টায় তা দেখেও দেখছে না। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রদর্শন করা কি উচিত? বলুন একবার বুকে হাত দিয়ে।
৭. ফেসবুক গবেষক। ১০ বছর আগে কোনো নেতার ছবিতে আপনি ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন, তা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুঁজে বের করার মতো অসংখ্য গবেষক আছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেই রিঅ্যাক্ট দেখেই আপনার সম্পর্কে তাঁরা অনুমান করে ফেলতে পারবেন, আপনি কোন দল করেন। আপনি চেতনাবাদী নাকি বিরোধী, তা তাঁদের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডার ধরে ফেলতে পারবে নিমেষে। এমনকি আপনার চৌদ্দ গুষ্টির চেতনাও রেহাই পাবে না। এরা শুধু কাগজ-কলমে গবেষক নয়, এদের হাতে ডান্ডাও আছে। শুধু গবেষণা করেই এরা ক্ষান্ত থাকে না, বরং তার প্রয়োগ ঘটাতে ডান্ডা নিয়ে সব ঠান্ডা করে দিতে মাঠেও নেমে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গবেষকদের মানদণ্ডের হিসাবে আনতে হবে। সেই সঙ্গে ফেসবুক গবেষণায় নোবেল পুরস্কারের মতো কিছু একটা চালু করলেও মন্দ হয় না।
উফ, হাঁপিয়ে গেছি। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। দ্বিতীয় পর্বে আরও কিছু মান ও তার দণ্ড নিয়ে আলোচনা করা যাবে। সে পর্যন্ত, বিদায়!
নাজমুল ইসলাম, ঢাকা

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা কী?
কোনো কোনো বিজ্ঞজন অবশ্য বলছেন, এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে ভালো অবস্থানে আসে না, তার দোষ তো বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। দোষ হলো যারা র্যাংকিং তৈরি করে, তাদের। তারা যেসব মানদণ্ড দিয়ে র্যাংকিং করে, দোষ সেই মানদণ্ডের। ওই সব মানের দণ্ডগুলো পরিবর্তন করলেই বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় এক লাফে প্রথমে চলে আসবে। এতে নাকি কোনো সন্দেহ নেই। অক্সফোর্ড কিংবা হার্ভার্ডের স্থান বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনায়াসেই দখল করতে পারবে। র্যাংকিংয়ে ‘২ নম্বর’ অক্সফোর্ড, ‘১ নম্বর’ অক্সফোর্ডের আগে চলে আসতে পারে। তার জন্য দরকার শুধু মানদণ্ডের পরিবর্তন।
তাই বাংলাদেশ থেকে মানদণ্ডগুলো পরিবর্তনের জোর দাবি জানানো দরকার। এসব নিয়ে রাজপথেও নামা উচিত। আশা করি এ নিয়ে আন্দোলন একদিন না একদিন হবে এবং গড়া হবে বিশ্বরেকর্ড। নতুন মানদণ্ড কী হতে পারে, তার কিছু নমুনা নিচে দেওয়া হলো—
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে রাতের মিছিলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি রাতে যেই অসাধারণ মিছিল হয়, তা কি হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ডে হয়? মনে হয় সেখানে হয় না। রাত যখন গভীর হয়, হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হয়তো পড়াশোনা করে। কিন্তু এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো এত বোকা নয় যে, তারা রাতে বসে বই পড়বে বা পড়তে পারবে! অনেকে তখন নেমে যায় শারীরিক কসরত দেখাতে। রাতে যেভাবে গলা উচিয়ে মিছিল হয়, পৃথিবীর আর কোথাও হয় বলে মনে হয় না। মিছিলের শব্দে যেকোনো পথ কাঁপতে থাকে। মিছিল করতে করতে তাদের গলা পর্যন্ত বসে যায়, কিন্তু তারা বসে না। হাঁটার ধরন তামিল সিনেমার অ্যাকশনকেও হার মানায়। তারা হাঁটার সময় পুরো রাস্তা নিয়ে হাঁটে, বিপরীত দিক থেকে আসা মানুষ নামক অন্য প্রাণীগুলো তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অভিব্যক্তি দেখলে মনে হবে, তাদের প্রত্যেকে একেকজন ড্যানিয়েল ক্রেইগ কিংবা টম ক্রজ অথবা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। এই বুঝি পুরো পৃথিবী তাদের দখলে চলে এল! বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল আছে বলেই তো এত শত শত ড্যানিয়েল ক্রেইগ, টম ক্রজ বা আলেকজান্ডারদের একদম ফাও ফাও (বিনা টাকায়) দেখতে পাওয়া যায়। এটা জাতির জন্য কত বড় গর্বের, ঐতিহ্যের—একবার ভাবুন তো! তাহলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড কেন হবে না?
২. ফাও খাওয়া: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরেকটি ব্যর্থতা হলো ফাও খাওয়াকে তারা র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করেনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবহেলার কারণেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ অবস্থা। যা হোক, ফাও খাওয়াকে মানদণ্ড নির্ধারণের উপাদান করতে হবে। এদিক থেকেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে টেক্কা দিতে পারবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। টপাটপ ১০টা মিষ্টি গিলে খাতায় একটি মিষ্টি লিখে রাখার দক্ষতা কি অন্যদের আছে? অন্যদিকে খাওয়ার কলাকৌশল এতটা নিঁখুত যে, তা সিসিটিভি ক্যামেরাও ধরতে পারে না। অবশ্য সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে তাদের নিখুঁত কলাকৌশল দেখতেও যান না দোকানদার। কারণ, জলে বসে কুমিরের খাবারের ওপর খবরদারি চলে নাকি।
ক্যান্টিনেও তাদের একই অসাধারণ রূপ দেখা যায়। একটু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলা যাক। আমি মাঝেমধ্যে খেতে গিয়ে অবাক হতাম। ছোট সময় থেকে জমিদারদের সম্পর্কে শুনেছি। তাদের রাজকীয় খাবারের কথা শুনেছি। তখন থেকেই জমিদার দেখার ইচ্ছা ছিল। সেই সাধ পূরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যান্টিনে আমি প্রায় সময়ই দু-চারজনকে দেখতাম, যারা আমার চোখে ‘জমিদার’ ছাড়া অন্য কিছু হতেই পারে না। তারা ঢুকলেই ক্যান্টিন বয় দৌড়ে এসে বলত, ‘আসসালামু আলাইকুম, ভাই কী খাইবেন বলেন।’ এতটা সম্মান মার্কিন কোনো প্রেসিডেন্টও পান কিনা সন্দেহ। ক্যান্টিন বয়ের কথা শুনে ‘জমিদার’ বলে, ‘কী কী রান্না হয়েছে?’ বয় খুব বিনয়ের সাথে সবগুলো আইটেমের নাম বলে। জমিদার সাহেব পছন্দমতো কয়েকটি আইটেমের খাবার আনতে বলে। আবার বলে দেয়, ‘ভাজি ভর্তাও নিয়ে আসিস।’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো এদের বিল আসত আমার থেকেও কম। অথচ আমি ৫ বছরে কখনো দুটি তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছি বলে মনে পড়ে না।
যাই হোক ফাও খাওয়াও যে একটা আন্তর্জাতিক ধরনের দক্ষতা, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুঝতে হবে।
৩. ফেসবুকে অভিনন্দন জানানো। ফেসবুক বানিয়েছে এক আমেরিকান, কিন্তু ফেসবুকে আমাদের থেকে বেশি অভিনন্দন তারা জানাতে পারেনি। এটিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদণ্ড নির্ধারণের পন্থা হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রেও আমরা বেশ অগ্রসর। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে, যারা সারা জীবনে যতগুলো বাক্য পড়েছে, তার থেকে বেশি লিখেছে ‘অভিনন্দন’। তবে তারা আবার সবাইকে অভিনন্দন জানায় না। তারা অভিনন্দন জানায় কিছু নেতাকে ও একই গোয়ালের গরু টাইপের কিছু বন্ধু-বান্ধবকে। সেই তালিকায় নেতার যত আত্মীয়স্বজন আছে, তাদেরও নাম থাকে। নেতাকে ট্যাগ করে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, ‘আপনার এই কৃতিত্ব দেখে আমরা অভিভূত। সামনে এগিয়ে যান ভাই।’ কিন্তু কত আগে? তা অবশ্য কেউ বলে না!
৪. অলরাউন্ডার শিক্ষক। সবাই যেন সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডাররা কী না পারে? বল করতে পারে, ব্যাট করতে পারে, ফিল্ডিং করতে পারে। সব কাজের কাজি তারা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা অলরাউন্ডার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৬১ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন ৮৪ জন (সূত্র: https://www.bestmastersprograms.org/most-nobel-prize-winners/) । দেখা যাবে স্টানফোর্ড বা হার্ভার্ডের শিক্ষকেরা তেমন অলরাউন্ডার নন। তাঁরা শুধু পড়ালেখা বা গবেষণা নিয়েই আছেন। রাজনীতি করার মতো সময় তাঁদের হাতে নেই, কিংবা ইচ্ছাটাও নেই। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা কেবল পড়াশোনা বা গবেষণাই করেন না, তাঁরা আরও অনেক কিছু করেন। টেলিভিশনে টক শো, রাজনীতিতে নিয়মিত উপস্থিতি, এই সংগঠনের মিটিং, সেই সংগঠনের মিটিং—কী না করেন তাঁরা। কিন্তু প্রথাগত র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গুণ বিবেচনা করা হয় না। অলরাউন্ডারের দিক থেকে বিবেচনা করলে বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবস্থান হার্ভার্ড, স্টানফোর্ড, অক্সফোর্ড কিংবা এমআইটির শিক্ষকদের ওপরেই থাকবে।
৫. বাসের প্রেসিডেন্ট। বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প বা জো বাইডেনের নাম শোনেননি–রাজনীতি সচেতন এমন ব্যক্তি হয়তো পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা তিনজনই আমেরিকা নামক একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বা আছেন। প্রথম দুজন সাবেক, শেষের জন্য বর্তমান। অথচ এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই অনেক প্রেসিডেন্ট। এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য যেসব বাস আছে, সেগুলোতেও প্রেসিডেন্ট আছে। আপনি সেসব বাসে উঠলেই বুঝতে পারবেন বাসের প্রেসিডেন্ট কে। তাঁর দাঁড়ানো ও চালচলনের ভঙ্গি দেখলে স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভড়কে যেতে পারেন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে গোণায় ধরা হয় না? ভাবা যায়!
৬. আনুগত্য। অসংখ্য অনুগত প্রাণীর সন্ধান এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়া যাবে। বড় ভাইদের সব কথাতেই এরা ‘জি ভাই, ঠিক বলছেন ভাই’ বলে ওঠে। শুনেছিলাম, এমন শ্রেণিভুক্ত একজন নাকি বলেছিল, ‘অমুক যদি বলে সূর্য পশ্চিম দিকে ওঠে, তাহলে সূর্য পশ্চিম দিকেই ওঠে।’ এতটা অনুগত প্রাণীর কি তুলনা হয়? অথচ বিশ্বসম্প্রদায় এ বিষয় নিয়ে এখনো জানতে পারেনি। জানতে পারলে গিনেস বুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠতে কি বেশি সময় লাগত? তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়েরও কি উন্নতি ঘটত না? কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার হীন প্রচেষ্টায় তা দেখেও দেখছে না। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রদর্শন করা কি উচিত? বলুন একবার বুকে হাত দিয়ে।
৭. ফেসবুক গবেষক। ১০ বছর আগে কোনো নেতার ছবিতে আপনি ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন, তা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুঁজে বের করার মতো অসংখ্য গবেষক আছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেই রিঅ্যাক্ট দেখেই আপনার সম্পর্কে তাঁরা অনুমান করে ফেলতে পারবেন, আপনি কোন দল করেন। আপনি চেতনাবাদী নাকি বিরোধী, তা তাঁদের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডার ধরে ফেলতে পারবে নিমেষে। এমনকি আপনার চৌদ্দ গুষ্টির চেতনাও রেহাই পাবে না। এরা শুধু কাগজ-কলমে গবেষক নয়, এদের হাতে ডান্ডাও আছে। শুধু গবেষণা করেই এরা ক্ষান্ত থাকে না, বরং তার প্রয়োগ ঘটাতে ডান্ডা নিয়ে সব ঠান্ডা করে দিতে মাঠেও নেমে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গবেষকদের মানদণ্ডের হিসাবে আনতে হবে। সেই সঙ্গে ফেসবুক গবেষণায় নোবেল পুরস্কারের মতো কিছু একটা চালু করলেও মন্দ হয় না।
উফ, হাঁপিয়ে গেছি। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। দ্বিতীয় পর্বে আরও কিছু মান ও তার দণ্ড নিয়ে আলোচনা করা যাবে। সে পর্যন্ত, বিদায়!

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা কী?
কোনো কোনো বিজ্ঞজন অবশ্য বলছেন, এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে ভালো অবস্থানে আসে না, তার দোষ তো বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। দোষ হলো যারা র্যাংকিং তৈরি করে, তাদের। তারা যেসব মানদণ্ড দিয়ে র্যাংকিং করে, দোষ সেই মানদণ্ডের। ওই সব মানের দণ্ডগুলো পরিবর্তন করলেই বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় এক লাফে প্রথমে চলে আসবে। এতে নাকি কোনো সন্দেহ নেই। অক্সফোর্ড কিংবা হার্ভার্ডের স্থান বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনায়াসেই দখল করতে পারবে। র্যাংকিংয়ে ‘২ নম্বর’ অক্সফোর্ড, ‘১ নম্বর’ অক্সফোর্ডের আগে চলে আসতে পারে। তার জন্য দরকার শুধু মানদণ্ডের পরিবর্তন।
তাই বাংলাদেশ থেকে মানদণ্ডগুলো পরিবর্তনের জোর দাবি জানানো দরকার। এসব নিয়ে রাজপথেও নামা উচিত। আশা করি এ নিয়ে আন্দোলন একদিন না একদিন হবে এবং গড়া হবে বিশ্বরেকর্ড। নতুন মানদণ্ড কী হতে পারে, তার কিছু নমুনা নিচে দেওয়া হলো—
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে রাতের মিছিলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি রাতে যেই অসাধারণ মিছিল হয়, তা কি হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ডে হয়? মনে হয় সেখানে হয় না। রাত যখন গভীর হয়, হার্ভার্ড কিংবা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হয়তো পড়াশোনা করে। কিন্তু এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো এত বোকা নয় যে, তারা রাতে বসে বই পড়বে বা পড়তে পারবে! অনেকে তখন নেমে যায় শারীরিক কসরত দেখাতে। রাতে যেভাবে গলা উচিয়ে মিছিল হয়, পৃথিবীর আর কোথাও হয় বলে মনে হয় না। মিছিলের শব্দে যেকোনো পথ কাঁপতে থাকে। মিছিল করতে করতে তাদের গলা পর্যন্ত বসে যায়, কিন্তু তারা বসে না। হাঁটার ধরন তামিল সিনেমার অ্যাকশনকেও হার মানায়। তারা হাঁটার সময় পুরো রাস্তা নিয়ে হাঁটে, বিপরীত দিক থেকে আসা মানুষ নামক অন্য প্রাণীগুলো তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অভিব্যক্তি দেখলে মনে হবে, তাদের প্রত্যেকে একেকজন ড্যানিয়েল ক্রেইগ কিংবা টম ক্রজ অথবা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। এই বুঝি পুরো পৃথিবী তাদের দখলে চলে এল! বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল আছে বলেই তো এত শত শত ড্যানিয়েল ক্রেইগ, টম ক্রজ বা আলেকজান্ডারদের একদম ফাও ফাও (বিনা টাকায়) দেখতে পাওয়া যায়। এটা জাতির জন্য কত বড় গর্বের, ঐতিহ্যের—একবার ভাবুন তো! তাহলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড কেন হবে না?
২. ফাও খাওয়া: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরেকটি ব্যর্থতা হলো ফাও খাওয়াকে তারা র্যাংকিংয়ের মানদণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করেনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবহেলার কারণেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ অবস্থা। যা হোক, ফাও খাওয়াকে মানদণ্ড নির্ধারণের উপাদান করতে হবে। এদিক থেকেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে টেক্কা দিতে পারবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। টপাটপ ১০টা মিষ্টি গিলে খাতায় একটি মিষ্টি লিখে রাখার দক্ষতা কি অন্যদের আছে? অন্যদিকে খাওয়ার কলাকৌশল এতটা নিঁখুত যে, তা সিসিটিভি ক্যামেরাও ধরতে পারে না। অবশ্য সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে তাদের নিখুঁত কলাকৌশল দেখতেও যান না দোকানদার। কারণ, জলে বসে কুমিরের খাবারের ওপর খবরদারি চলে নাকি।
ক্যান্টিনেও তাদের একই অসাধারণ রূপ দেখা যায়। একটু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলা যাক। আমি মাঝেমধ্যে খেতে গিয়ে অবাক হতাম। ছোট সময় থেকে জমিদারদের সম্পর্কে শুনেছি। তাদের রাজকীয় খাবারের কথা শুনেছি। তখন থেকেই জমিদার দেখার ইচ্ছা ছিল। সেই সাধ পূরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যান্টিনে আমি প্রায় সময়ই দু-চারজনকে দেখতাম, যারা আমার চোখে ‘জমিদার’ ছাড়া অন্য কিছু হতেই পারে না। তারা ঢুকলেই ক্যান্টিন বয় দৌড়ে এসে বলত, ‘আসসালামু আলাইকুম, ভাই কী খাইবেন বলেন।’ এতটা সম্মান মার্কিন কোনো প্রেসিডেন্টও পান কিনা সন্দেহ। ক্যান্টিন বয়ের কথা শুনে ‘জমিদার’ বলে, ‘কী কী রান্না হয়েছে?’ বয় খুব বিনয়ের সাথে সবগুলো আইটেমের নাম বলে। জমিদার সাহেব পছন্দমতো কয়েকটি আইটেমের খাবার আনতে বলে। আবার বলে দেয়, ‘ভাজি ভর্তাও নিয়ে আসিস।’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো এদের বিল আসত আমার থেকেও কম। অথচ আমি ৫ বছরে কখনো দুটি তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছি বলে মনে পড়ে না।
যাই হোক ফাও খাওয়াও যে একটা আন্তর্জাতিক ধরনের দক্ষতা, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুঝতে হবে।
৩. ফেসবুকে অভিনন্দন জানানো। ফেসবুক বানিয়েছে এক আমেরিকান, কিন্তু ফেসবুকে আমাদের থেকে বেশি অভিনন্দন তারা জানাতে পারেনি। এটিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদণ্ড নির্ধারণের পন্থা হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রেও আমরা বেশ অগ্রসর। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে, যারা সারা জীবনে যতগুলো বাক্য পড়েছে, তার থেকে বেশি লিখেছে ‘অভিনন্দন’। তবে তারা আবার সবাইকে অভিনন্দন জানায় না। তারা অভিনন্দন জানায় কিছু নেতাকে ও একই গোয়ালের গরু টাইপের কিছু বন্ধু-বান্ধবকে। সেই তালিকায় নেতার যত আত্মীয়স্বজন আছে, তাদেরও নাম থাকে। নেতাকে ট্যাগ করে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, ‘আপনার এই কৃতিত্ব দেখে আমরা অভিভূত। সামনে এগিয়ে যান ভাই।’ কিন্তু কত আগে? তা অবশ্য কেউ বলে না!
৪. অলরাউন্ডার শিক্ষক। সবাই যেন সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডাররা কী না পারে? বল করতে পারে, ব্যাট করতে পারে, ফিল্ডিং করতে পারে। সব কাজের কাজি তারা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা অলরাউন্ডার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৬১ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন ৮৪ জন (সূত্র: https://www.bestmastersprograms.org/most-nobel-prize-winners/) । দেখা যাবে স্টানফোর্ড বা হার্ভার্ডের শিক্ষকেরা তেমন অলরাউন্ডার নন। তাঁরা শুধু পড়ালেখা বা গবেষণা নিয়েই আছেন। রাজনীতি করার মতো সময় তাঁদের হাতে নেই, কিংবা ইচ্ছাটাও নেই। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক আছেন, যাঁরা কেবল পড়াশোনা বা গবেষণাই করেন না, তাঁরা আরও অনেক কিছু করেন। টেলিভিশনে টক শো, রাজনীতিতে নিয়মিত উপস্থিতি, এই সংগঠনের মিটিং, সেই সংগঠনের মিটিং—কী না করেন তাঁরা। কিন্তু প্রথাগত র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গুণ বিবেচনা করা হয় না। অলরাউন্ডারের দিক থেকে বিবেচনা করলে বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবস্থান হার্ভার্ড, স্টানফোর্ড, অক্সফোর্ড কিংবা এমআইটির শিক্ষকদের ওপরেই থাকবে।
৫. বাসের প্রেসিডেন্ট। বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প বা জো বাইডেনের নাম শোনেননি–রাজনীতি সচেতন এমন ব্যক্তি হয়তো পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা তিনজনই আমেরিকা নামক একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বা আছেন। প্রথম দুজন সাবেক, শেষের জন্য বর্তমান। অথচ এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই অনেক প্রেসিডেন্ট। এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য যেসব বাস আছে, সেগুলোতেও প্রেসিডেন্ট আছে। আপনি সেসব বাসে উঠলেই বুঝতে পারবেন বাসের প্রেসিডেন্ট কে। তাঁর দাঁড়ানো ও চালচলনের ভঙ্গি দেখলে স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভড়কে যেতে পারেন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে গোণায় ধরা হয় না? ভাবা যায়!
৬. আনুগত্য। অসংখ্য অনুগত প্রাণীর সন্ধান এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়া যাবে। বড় ভাইদের সব কথাতেই এরা ‘জি ভাই, ঠিক বলছেন ভাই’ বলে ওঠে। শুনেছিলাম, এমন শ্রেণিভুক্ত একজন নাকি বলেছিল, ‘অমুক যদি বলে সূর্য পশ্চিম দিকে ওঠে, তাহলে সূর্য পশ্চিম দিকেই ওঠে।’ এতটা অনুগত প্রাণীর কি তুলনা হয়? অথচ বিশ্বসম্প্রদায় এ বিষয় নিয়ে এখনো জানতে পারেনি। জানতে পারলে গিনেস বুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উঠতে কি বেশি সময় লাগত? তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়েরও কি উন্নতি ঘটত না? কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার হীন প্রচেষ্টায় তা দেখেও দেখছে না। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রদর্শন করা কি উচিত? বলুন একবার বুকে হাত দিয়ে।
৭. ফেসবুক গবেষক। ১০ বছর আগে কোনো নেতার ছবিতে আপনি ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দিয়েছেন, তা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুঁজে বের করার মতো অসংখ্য গবেষক আছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেই রিঅ্যাক্ট দেখেই আপনার সম্পর্কে তাঁরা অনুমান করে ফেলতে পারবেন, আপনি কোন দল করেন। আপনি চেতনাবাদী নাকি বিরোধী, তা তাঁদের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাডার ধরে ফেলতে পারবে নিমেষে। এমনকি আপনার চৌদ্দ গুষ্টির চেতনাও রেহাই পাবে না। এরা শুধু কাগজ-কলমে গবেষক নয়, এদের হাতে ডান্ডাও আছে। শুধু গবেষণা করেই এরা ক্ষান্ত থাকে না, বরং তার প্রয়োগ ঘটাতে ডান্ডা নিয়ে সব ঠান্ডা করে দিতে মাঠেও নেমে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করার ক্ষেত্রে এই গবেষকদের মানদণ্ডের হিসাবে আনতে হবে। সেই সঙ্গে ফেসবুক গবেষণায় নোবেল পুরস্কারের মতো কিছু একটা চালু করলেও মন্দ হয় না।
উফ, হাঁপিয়ে গেছি। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। দ্বিতীয় পর্বে আরও কিছু মান ও তার দণ্ড নিয়ে আলোচনা করা যাবে। সে পর্যন্ত, বিদায়!

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১৬ ঘণ্টা আগে
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
২ দিন আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
২ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর বুঝে উঠতে পারছে না, কী তার ভুল। পুলিশের নির্দেশ মানার পর হাতে পড়ল হাতকড়া।
টাকি অ্যালেনকে কিশোর বয়সে এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। অ্যালেনের হাতে থাকা চিপসকে বন্দুক হিসেবে শনাক্ত করেছে এক এআই সিস্টেম!
স্থানীয় গণমাধ্যম ডব্লিউএমএআর-২ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাকি অ্যালেন বলে, ‘হঠাৎ দেখি প্রায় আটটা পুলিশ কার এসে গেল। তারপর সবাই বন্দুক তাক করে আমাকে মাটিতে শুতে বলছে।’
অ্যালেন বলতে থাকে, ‘ফুটবল অনুশীলনের পর এক প্যাকেট ডোরিটোস চিপস খেয়ে খালি প্যাকেটটি পকেটে রেখে দিই। এর ২০ মিনিট পরই এই ঘটনা। একজন অফিসার আমাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, তারপর আমাকে আটক করে হাতকড়া পরান।
তবে বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ বিবিসি নিউজের কাছে দাবি করে, অ্যালেনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল, গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, কোনো হুমকি নেই নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিরাপদে সমাধান করা হয়।
এই ঘটনার পর থেকে ফুটবল অনুশীলন শেষে স্কুলের ভেতরে চলে যায় অ্যালেন। সে জানায়, বাইরে যাওয়া নিরাপদ নয়, বিশেষ করে চিপস খাওয়া বা কিছু পান করা।
বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ জানায়, সেই মুহূর্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যথোপযুক্ত ও আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদের কর্মকর্তারা।
বিভাগটি আরও জানায়, এআই সতর্কবার্তাটি মানব পর্যালোচকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা এতে কোনো হুমকি পাননি। এই বার্তা স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে পাঠানো হলেও তিনি এ তথ্যটি দেখেননি এবং স্কুলের নিরাপত্তা টিমকে জানান। তারা পুলিশকে ডাকে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে এক চিঠিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল কেট স্মিথ বলেন, স্কুলের নিরাপত্তা দল দ্রুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এবং কোনো অস্ত্র না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রাথমিক সতর্কতা বাতিল করে।
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের স্কুল রিসোর্স অফিসারকে (এসআরও) বিষয়টি জানানো হলে তিনি অতিরিক্ত সহায়তার জন্য স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্কুলে এসে ওই শিক্ষার্থীকে তল্লাশি করেন এবং দ্রুত নিশ্চিত হন যে তার কাছে কোনো অস্ত্র নেই।’
এআই টুল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওমনিলার্ট এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বিবিসি নিউজকে জানায়, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের উদ্বেগ জানাতে চাই।’
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের সিস্টেম প্রথমে এমন কিছু শনাক্ত করে যা দেখতে আগ্নেয়াস্ত্রের মতো লাগছিল। ছবিটি পরে তাদের পর্যালোচনা দল যাচাই করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেই তথ্য ও ছবি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুলের নিরাপত্তা দলের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়।
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের সিস্টেমে ‘সমাধান হয়েছে’ বলে চিহ্নিত হওয়ার পরই এ বিষয়ে তাদের সম্পৃক্ততা শেষ হয়। তাদের সিস্টেম ‘যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেভাবেই কাজ করেছে।’
অ্যালেন মন্তব্য করেছে, ‘আমার মনে হয় না কোনো চিপসের প্যাকেটকে কখনো বন্দুক হিসেবে ভুল ধরা উচিত।’
এই ঘটনায় স্কুলগুলোতে এমন প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে অনেকে। স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাল্টিমোর কাউন্টির স্থানীয় কাউন্সিলর ইজি পাকোটা ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তাদের এআই-চালিত অস্ত্র শনাক্তকরণ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করতে।’

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর বুঝে উঠতে পারছে না, কী তার ভুল। পুলিশের নির্দেশ মানার পর হাতে পড়ল হাতকড়া।
টাকি অ্যালেনকে কিশোর বয়সে এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। অ্যালেনের হাতে থাকা চিপসকে বন্দুক হিসেবে শনাক্ত করেছে এক এআই সিস্টেম!
স্থানীয় গণমাধ্যম ডব্লিউএমএআর-২ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাকি অ্যালেন বলে, ‘হঠাৎ দেখি প্রায় আটটা পুলিশ কার এসে গেল। তারপর সবাই বন্দুক তাক করে আমাকে মাটিতে শুতে বলছে।’
অ্যালেন বলতে থাকে, ‘ফুটবল অনুশীলনের পর এক প্যাকেট ডোরিটোস চিপস খেয়ে খালি প্যাকেটটি পকেটে রেখে দিই। এর ২০ মিনিট পরই এই ঘটনা। একজন অফিসার আমাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, তারপর আমাকে আটক করে হাতকড়া পরান।
তবে বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ বিবিসি নিউজের কাছে দাবি করে, অ্যালেনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল, গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, কোনো হুমকি নেই নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিরাপদে সমাধান করা হয়।
এই ঘটনার পর থেকে ফুটবল অনুশীলন শেষে স্কুলের ভেতরে চলে যায় অ্যালেন। সে জানায়, বাইরে যাওয়া নিরাপদ নয়, বিশেষ করে চিপস খাওয়া বা কিছু পান করা।
বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ জানায়, সেই মুহূর্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যথোপযুক্ত ও আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদের কর্মকর্তারা।
বিভাগটি আরও জানায়, এআই সতর্কবার্তাটি মানব পর্যালোচকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা এতে কোনো হুমকি পাননি। এই বার্তা স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে পাঠানো হলেও তিনি এ তথ্যটি দেখেননি এবং স্কুলের নিরাপত্তা টিমকে জানান। তারা পুলিশকে ডাকে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে এক চিঠিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল কেট স্মিথ বলেন, স্কুলের নিরাপত্তা দল দ্রুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এবং কোনো অস্ত্র না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রাথমিক সতর্কতা বাতিল করে।
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের স্কুল রিসোর্স অফিসারকে (এসআরও) বিষয়টি জানানো হলে তিনি অতিরিক্ত সহায়তার জন্য স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্কুলে এসে ওই শিক্ষার্থীকে তল্লাশি করেন এবং দ্রুত নিশ্চিত হন যে তার কাছে কোনো অস্ত্র নেই।’
এআই টুল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওমনিলার্ট এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বিবিসি নিউজকে জানায়, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের উদ্বেগ জানাতে চাই।’
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের সিস্টেম প্রথমে এমন কিছু শনাক্ত করে যা দেখতে আগ্নেয়াস্ত্রের মতো লাগছিল। ছবিটি পরে তাদের পর্যালোচনা দল যাচাই করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেই তথ্য ও ছবি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুলের নিরাপত্তা দলের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়।
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের সিস্টেমে ‘সমাধান হয়েছে’ বলে চিহ্নিত হওয়ার পরই এ বিষয়ে তাদের সম্পৃক্ততা শেষ হয়। তাদের সিস্টেম ‘যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেভাবেই কাজ করেছে।’
অ্যালেন মন্তব্য করেছে, ‘আমার মনে হয় না কোনো চিপসের প্যাকেটকে কখনো বন্দুক হিসেবে ভুল ধরা উচিত।’
এই ঘটনায় স্কুলগুলোতে এমন প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে অনেকে। স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাল্টিমোর কাউন্টির স্থানীয় কাউন্সিলর ইজি পাকোটা ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তাদের এআই-চালিত অস্ত্র শনাক্তকরণ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করতে।’

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা আসলে কি?
২৮ নভেম্বর ২০২১
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
২ দিন আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
২ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান গেয়ে হাস্যরসাত্মক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
গত সপ্তাহের রোববার সকালে ল্যুভর মিউজিয়াম খোলার পরই চোরেরা একটি ট্রাক মিউজিয়ামের অ্যাপোলো গ্যালারির নিচে থামায়। এই ট্রাকে লাগানো ছিল বোকার কোম্পানির তৈরি একটি ভাঁজযোগ্য মই। দিনের আলোয় তারা সেই মই বেয়ে ওপরে উঠে যায়, জানালা কেটে ভেতরে ঢোকে এবং ডিসপ্লে কেস ভেঙে গয়না চুরি করে।
পুরো অপারেশনটি শেষ করতে চোরদের সময় লেগেছিল মাত্র সাত মিনিট। চুরি হওয়া অলংকারগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্টের দেওয়া একটি পান্না ও হীরার নেকলেস এবং সম্রাজ্ঞী ইউজিনির মুকুট। এই মুকুটে প্রায় ২ হাজার হীরা খচিত।
জার্মানির ডর্টমুন্ডের কাছে অবস্থিত লিফটিং সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোকারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলেক্সান্ডার বোক এবং তাঁর স্ত্রী রোববার খবরটি দেখার সময়ই ব্যবহৃত মইটি চিনতে পারেন।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলেক্সান্ডার বোক জানান, তাঁর স্ত্রী, যিনি কোম্পানির বিপণন প্রধানও, তিনিই প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন। তিনি বলেন, ‘যখন পরিষ্কার হলো যে চুরির ঘটনায় কেউ আহত হয়নি, তখন আমরা বিষয়টিকে একটু হালকা চালে নিই।’
আলেক্সান্ডার স্বীকার করেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ! সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সর্বাধিক পরিদর্শন করা জাদুঘরটির খ্যাতি কাজে লাগিয়ে আমাদের কোম্পানির জন্য কিছুটা দৃষ্টি আকর্ষণ করার এ-ই সুযোগ।’ তবে তিনি এ-ও স্পষ্ট করেন, ‘এই অপরাধ অবশ্যই নিন্দনীয়, এটা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই।’
এই সুযোগে বোকার দ্রুতই একটি প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ল্যুভরের বাইরে লাগানো সেই মইয়ের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছে: ‘যখন আপনার দ্রুত ফেরার তাড়া থাকে!’
বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, তাদের তৈরি ‘Agilo’ নামের ডিভাইসটি ২৩০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক মোটর এবং ‘ফিসফিসানির মতো শান্ত’ শব্দের ইঞ্জিনের সাহায্যে ৪০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মালপত্র বহন করতে পারে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চোরেরা মইটির ডেমোনস্ট্রেশন নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল এবং প্রদর্শনের সময়ই এটি তারা চুরি করে নিয়ে যায়। তারা গাড়ির লাইসেন্স প্লেট ও গ্রাহকের লেবেলিং পর্যন্ত সরিয়ে ফেলেছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোকারের পোস্টগুলো সাধারণত ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার বার দেখা হয়। তবে এই বিতর্কিত বিজ্ঞাপনটি ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে ৪৩ লাখের বেশি ভিউ পেয়েছে। যদিও প্রচারণার প্রতিক্রিয়া মিশ্র। অনেকে এটিকে ‘স্মার্ট’ ও মজার বলে অভিহিত করেছেন, আবার অনেকে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আলেক্সান্ডার বোক বলেন, তিনি জানেন এটি ‘খুবই সূক্ষ্ম ভেদরেখা’, কিন্তু কেউ আহত না হওয়ায় তাঁরা এই পথে এগিয়েছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, এই প্রচারণার অর্থ অপরাধকে সমর্থন করা নয়।
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিরোধী। আমরা নিঃসন্দেহে সিরিয়াস কোম্পানি। জার্মানিতে আমাদের ৬২০ জন কর্মচারী আছে। সবকিছু জার্মানিতেই তৈরি হয়। আমরা নিরাপত্তার পক্ষে।’

প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান গেয়ে হাস্যরসাত্মক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে।
গত সপ্তাহের রোববার সকালে ল্যুভর মিউজিয়াম খোলার পরই চোরেরা একটি ট্রাক মিউজিয়ামের অ্যাপোলো গ্যালারির নিচে থামায়। এই ট্রাকে লাগানো ছিল বোকার কোম্পানির তৈরি একটি ভাঁজযোগ্য মই। দিনের আলোয় তারা সেই মই বেয়ে ওপরে উঠে যায়, জানালা কেটে ভেতরে ঢোকে এবং ডিসপ্লে কেস ভেঙে গয়না চুরি করে।
পুরো অপারেশনটি শেষ করতে চোরদের সময় লেগেছিল মাত্র সাত মিনিট। চুরি হওয়া অলংকারগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্টের দেওয়া একটি পান্না ও হীরার নেকলেস এবং সম্রাজ্ঞী ইউজিনির মুকুট। এই মুকুটে প্রায় ২ হাজার হীরা খচিত।
জার্মানির ডর্টমুন্ডের কাছে অবস্থিত লিফটিং সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কোম্পানি বোকারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলেক্সান্ডার বোক এবং তাঁর স্ত্রী রোববার খবরটি দেখার সময়ই ব্যবহৃত মইটি চিনতে পারেন।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলেক্সান্ডার বোক জানান, তাঁর স্ত্রী, যিনি কোম্পানির বিপণন প্রধানও, তিনিই প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন। তিনি বলেন, ‘যখন পরিষ্কার হলো যে চুরির ঘটনায় কেউ আহত হয়নি, তখন আমরা বিষয়টিকে একটু হালকা চালে নিই।’
আলেক্সান্ডার স্বীকার করেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ! সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সর্বাধিক পরিদর্শন করা জাদুঘরটির খ্যাতি কাজে লাগিয়ে আমাদের কোম্পানির জন্য কিছুটা দৃষ্টি আকর্ষণ করার এ-ই সুযোগ।’ তবে তিনি এ-ও স্পষ্ট করেন, ‘এই অপরাধ অবশ্যই নিন্দনীয়, এটা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই।’
এই সুযোগে বোকার দ্রুতই একটি প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ল্যুভরের বাইরে লাগানো সেই মইয়ের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছে: ‘যখন আপনার দ্রুত ফেরার তাড়া থাকে!’
বিজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, তাদের তৈরি ‘Agilo’ নামের ডিভাইসটি ২৩০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক মোটর এবং ‘ফিসফিসানির মতো শান্ত’ শব্দের ইঞ্জিনের সাহায্যে ৪০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত মালপত্র বহন করতে পারে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চোরেরা মইটির ডেমোনস্ট্রেশন নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল এবং প্রদর্শনের সময়ই এটি তারা চুরি করে নিয়ে যায়। তারা গাড়ির লাইসেন্স প্লেট ও গ্রাহকের লেবেলিং পর্যন্ত সরিয়ে ফেলেছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোকারের পোস্টগুলো সাধারণত ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার বার দেখা হয়। তবে এই বিতর্কিত বিজ্ঞাপনটি ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে ৪৩ লাখের বেশি ভিউ পেয়েছে। যদিও প্রচারণার প্রতিক্রিয়া মিশ্র। অনেকে এটিকে ‘স্মার্ট’ ও মজার বলে অভিহিত করেছেন, আবার অনেকে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আলেক্সান্ডার বোক বলেন, তিনি জানেন এটি ‘খুবই সূক্ষ্ম ভেদরেখা’, কিন্তু কেউ আহত না হওয়ায় তাঁরা এই পথে এগিয়েছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, এই প্রচারণার অর্থ অপরাধকে সমর্থন করা নয়।
তিনি যোগ করেন, ‘আমরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিরোধী। আমরা নিঃসন্দেহে সিরিয়াস কোম্পানি। জার্মানিতে আমাদের ৬২০ জন কর্মচারী আছে। সবকিছু জার্মানিতেই তৈরি হয়। আমরা নিরাপত্তার পক্ষে।’

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা আসলে কি?
২৮ নভেম্বর ২০২১
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১৬ ঘণ্টা আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
২ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
এই ঘটনা অনলাইন শপ থেকে কেনা শিশুদের পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দিন ধরে পেটে তীব্র ব্যথা নিয়ে কিশোরটিকে নর্থ আইল্যান্ডের টরাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিশোরটি ভর্তির প্রায় এক সপ্তাহ আগে প্রায় ৮০ থেকে ১০০টি (৫ x ২ মিলিমিটার আকারের) শক্তিশালী নিওডিমিয়াম চুম্বক গিলে ফেলেছিল। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়, এই চুম্বকগুলো তার অন্ত্রের ভেতরে চারটি সরলরেখায় জড়ো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, চুম্বকীয় শক্তির কারণে অন্ত্রের বিভিন্ন অংশ একসঙ্গে আটকে যাওয়ায় তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে টিস্যু মারা যায়।
সার্জনরা দ্রুত অপারেশন করে মৃত টিস্যু অপসারণ করেন এবং আটকে থাকা চুম্বকগুলো বের করে আনেন। চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন, কিশোরটির ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদন্ত্রের অংশ ক্যাসেম-এর চারটি জায়গায় টিস্যু মারা গিয়েছিল। আট দিন হাসপাতালে থাকার পর শিশুটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনের লেখক ড. বিনুরা লেখামালেজ, লুসিন্ডা ডানক্যান-ওয়ার এবং নিকোলা ডেভিস সতর্ক করেছেন, এই ঘটনা কেবল চুম্বক গিলে ফেলার বিপদই নয়, বরং শিশুদের জন্য অনলাইন শপের বিপদকেও তুলে ধরে।
উল্লেখ্য, এই শক্তিশালী চুম্বকগুলো নিউজিল্যান্ডে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে নিষিদ্ধ।
চিকিৎসকেরা আরও জানিয়েছেন, চুম্বক গিলে ফেলার জন্য অস্ত্রোপচার ভবিষ্যতে অন্ত্রে বাধা, পেটে হার্নিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার মতো জটিলতা তৈরি করতে পারে।
এদিকে, চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট টেমু এই ঘটনা জানার পর দুঃখ প্রকাশ করেছে। একজন মুখপাত্র বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা শুরু করেছি এবং নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালের লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
টেমু আরও জানায়, তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি যে চুম্বকগুলো টেমু থেকেই কেনা হয়েছিল কি না। তবে তারা প্রাসঙ্গিক পণ্য তালিকা খতিয়ে দেখছে। অবৈধ পণ্য প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাজারেও টেমু ইতিমধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
এই ঘটনা অনলাইন শপ থেকে কেনা শিশুদের পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দিন ধরে পেটে তীব্র ব্যথা নিয়ে কিশোরটিকে নর্থ আইল্যান্ডের টরাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিশোরটি ভর্তির প্রায় এক সপ্তাহ আগে প্রায় ৮০ থেকে ১০০টি (৫ x ২ মিলিমিটার আকারের) শক্তিশালী নিওডিমিয়াম চুম্বক গিলে ফেলেছিল। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়, এই চুম্বকগুলো তার অন্ত্রের ভেতরে চারটি সরলরেখায় জড়ো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, চুম্বকীয় শক্তির কারণে অন্ত্রের বিভিন্ন অংশ একসঙ্গে আটকে যাওয়ায় তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে টিস্যু মারা যায়।
সার্জনরা দ্রুত অপারেশন করে মৃত টিস্যু অপসারণ করেন এবং আটকে থাকা চুম্বকগুলো বের করে আনেন। চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন, কিশোরটির ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদন্ত্রের অংশ ক্যাসেম-এর চারটি জায়গায় টিস্যু মারা গিয়েছিল। আট দিন হাসপাতালে থাকার পর শিশুটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনের লেখক ড. বিনুরা লেখামালেজ, লুসিন্ডা ডানক্যান-ওয়ার এবং নিকোলা ডেভিস সতর্ক করেছেন, এই ঘটনা কেবল চুম্বক গিলে ফেলার বিপদই নয়, বরং শিশুদের জন্য অনলাইন শপের বিপদকেও তুলে ধরে।
উল্লেখ্য, এই শক্তিশালী চুম্বকগুলো নিউজিল্যান্ডে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে নিষিদ্ধ।
চিকিৎসকেরা আরও জানিয়েছেন, চুম্বক গিলে ফেলার জন্য অস্ত্রোপচার ভবিষ্যতে অন্ত্রে বাধা, পেটে হার্নিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার মতো জটিলতা তৈরি করতে পারে।
এদিকে, চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট টেমু এই ঘটনা জানার পর দুঃখ প্রকাশ করেছে। একজন মুখপাত্র বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা শুরু করেছি এবং নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নালের লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
টেমু আরও জানায়, তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি যে চুম্বকগুলো টেমু থেকেই কেনা হয়েছিল কি না। তবে তারা প্রাসঙ্গিক পণ্য তালিকা খতিয়ে দেখছে। অবৈধ পণ্য প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাজারেও টেমু ইতিমধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে।

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা আসলে কি?
২৮ নভেম্বর ২০২১
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১৬ ঘণ্টা আগে
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
২ দিন আগে
তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ও ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আপনি কি আপনার স্ত্রীকে ‘মোটু বা গুলুমুলু’ ডাকেন? তাহলে এখনই সাবধান হয়ে যান। কারণ, তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ওই ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের ওই ব্যক্তি তাঁর মোবাইল ফোনের কনট্যাক্টে স্ত্রীর নাম সেভ করেছিলেন ‘চাবি’ নাম দিয়ে। এই ঘটনাকে আদালত ‘অসম্মানজনক’ ও ‘বিবাহের জন্য ক্ষতিকর’ বলে রায় দিয়েছেন।
পশ্চিম তুরস্কের উশাক প্রদেশের ওই নারী এই ঘটনার পর স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। অন্যদিকে স্বামী পাল্টা মামলা করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন। তাঁদের সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে, তবে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
আদালতের শুনানিতে ওই নারী জানান, তাঁর স্বামী বারবার তাঁকে হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠাতেন। এক বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, ‘দূর হও, তোমাকে আর দেখতে চাই না।’ আরেকটিতে বলেছিলেন, ‘তোমার মুখ শয়তানকে দেখাও গে।’ এ ছাড়া তিনি নিজের বাবার অস্ত্রোপচারের খরচ বাবদ স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা দাবি করেন।
শুনানির সময় আদালতে সবচেয়ে আলোচিত হয় স্বামীর ফোনে স্ত্রীর নাম ‘তোম্বিক—তুর্কি ভাষার এই শব্দের অর্থ মোটা) নামে সংরক্ষিত থাকার বিষয়টি। ওই নারীর দাবি, এই ডাকনাম তাঁকে অপমান করেছে এবং তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে। আদালত তাঁর দাবিকে সমর্থন করে জানায়, ওই নাম ও বার্তাগুলো ‘মানসিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতা’র শামিল।
অন্যদিকে স্বামী দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী অন্য এক পুরুষকে বাড়িতে এনেছিলেন। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তি কেবল একটি বই পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে কোনো অনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ মেলেনি। আদালত রায়ে বলে, স্বামীর অপমানজনক ভাষা ও অর্থনৈতিক চাপ ছিল আরও গুরুতর। তাই মূল দায় তাঁরই।
তুর্কি আইনে কারও মর্যাদা বা ব্যক্তিগত সম্মান আঘাত করে এমন ভাষা বা আচরণের জন্য, সেটা বার্তা মারফত হোক বা সরাসরি, দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। শেষ পর্যন্ত দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। স্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা পরকীয়ার অভিযোগ খারিজ করা হয়। স্বামীকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে মানসিক ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে আদেশ দেওয়া হয়। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক প্রকাশ করা হয়নি।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একজন লিখেছেন, ‘মোটু বা গুলুমুলু ডাক আসলে বেশ মিষ্টি শোনায়। মোটা হওয়া কোনো অপরাধ না, আর মোটা বলে ডাকা সব সময় অপমানও নয়।’ আরেকজন বলেছেন, ‘এটা ন্যায্য রায়। স্বামী তাঁর স্ত্রীকে একের পর এক অপমানজনক বার্তা পাঠিয়েছে—সেখানেই সীমা অতিক্রম করেছে।’ তৃতীয় এক ব্যক্তি মজা করে লিখেছেন, ‘আমার বন্ধুদের নম্বরগুলো এখনই যাচাই করব, যেন কোনো আপত্তিকর কিছু না থাকে।’
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক ব্যক্তি প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন। কারণ, প্রেমিকার ফোনটি তাঁদের প্রথমবার একসঙ্গে যাওয়া এক হোটেলের কামরায় ওয়াইফাইয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়।
এর ফলে ওই পুরুষি মনে করেন, এর মানে ওই নারী আগে অন্য কারও সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন এবং তাঁকে প্রতারণা করেছেন। অপমানিত হয়ে ওউ নারী স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য।

আপনি কি আপনার স্ত্রীকে ‘মোটু বা গুলুমুলু’ ডাকেন? তাহলে এখনই সাবধান হয়ে যান। কারণ, তুরস্কের এক ব্যক্তি তাঁর ফোনে স্ত্রীর ফোন নম্বর সেভ করেছিলেন, ‘Chubby-চাবি’ দিয়ে। যার অর্থ প্রচলিত বাংলায় দাঁড়ায় ‘মোটু বা গুলুমুলু।’ অনেক সময় এই ডাকনাম আদুরে শোনালেও বিষয়টি মোটেও ভালো লাগেনি তুর্কি ওই ব্যক্তির স্ত্রীর। তিনি সোজা আদালতে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এমনকি তাঁদের বিচ্ছেদ হয়েও যায়।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের ওই ব্যক্তি তাঁর মোবাইল ফোনের কনট্যাক্টে স্ত্রীর নাম সেভ করেছিলেন ‘চাবি’ নাম দিয়ে। এই ঘটনাকে আদালত ‘অসম্মানজনক’ ও ‘বিবাহের জন্য ক্ষতিকর’ বলে রায় দিয়েছেন।
পশ্চিম তুরস্কের উশাক প্রদেশের ওই নারী এই ঘটনার পর স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। অন্যদিকে স্বামী পাল্টা মামলা করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন। তাঁদের সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে, তবে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
আদালতের শুনানিতে ওই নারী জানান, তাঁর স্বামী বারবার তাঁকে হুমকি দিয়ে বার্তা পাঠাতেন। এক বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, ‘দূর হও, তোমাকে আর দেখতে চাই না।’ আরেকটিতে বলেছিলেন, ‘তোমার মুখ শয়তানকে দেখাও গে।’ এ ছাড়া তিনি নিজের বাবার অস্ত্রোপচারের খরচ বাবদ স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা দাবি করেন।
শুনানির সময় আদালতে সবচেয়ে আলোচিত হয় স্বামীর ফোনে স্ত্রীর নাম ‘তোম্বিক—তুর্কি ভাষার এই শব্দের অর্থ মোটা) নামে সংরক্ষিত থাকার বিষয়টি। ওই নারীর দাবি, এই ডাকনাম তাঁকে অপমান করেছে এবং তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে। আদালত তাঁর দাবিকে সমর্থন করে জানায়, ওই নাম ও বার্তাগুলো ‘মানসিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতা’র শামিল।
অন্যদিকে স্বামী দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী অন্য এক পুরুষকে বাড়িতে এনেছিলেন। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তি কেবল একটি বই পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে কোনো অনৈতিক সম্পর্কের প্রমাণ মেলেনি। আদালত রায়ে বলে, স্বামীর অপমানজনক ভাষা ও অর্থনৈতিক চাপ ছিল আরও গুরুতর। তাই মূল দায় তাঁরই।
তুর্কি আইনে কারও মর্যাদা বা ব্যক্তিগত সম্মান আঘাত করে এমন ভাষা বা আচরণের জন্য, সেটা বার্তা মারফত হোক বা সরাসরি, দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। শেষ পর্যন্ত দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। স্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা পরকীয়ার অভিযোগ খারিজ করা হয়। স্বামীকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে মানসিক ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে আদেশ দেওয়া হয়। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক প্রকাশ করা হয়নি।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একজন লিখেছেন, ‘মোটু বা গুলুমুলু ডাক আসলে বেশ মিষ্টি শোনায়। মোটা হওয়া কোনো অপরাধ না, আর মোটা বলে ডাকা সব সময় অপমানও নয়।’ আরেকজন বলেছেন, ‘এটা ন্যায্য রায়। স্বামী তাঁর স্ত্রীকে একের পর এক অপমানজনক বার্তা পাঠিয়েছে—সেখানেই সীমা অতিক্রম করেছে।’ তৃতীয় এক ব্যক্তি মজা করে লিখেছেন, ‘আমার বন্ধুদের নম্বরগুলো এখনই যাচাই করব, যেন কোনো আপত্তিকর কিছু না থাকে।’
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক ব্যক্তি প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন। কারণ, প্রেমিকার ফোনটি তাঁদের প্রথমবার একসঙ্গে যাওয়া এক হোটেলের কামরায় ওয়াইফাইয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়।
এর ফলে ওই পুরুষি মনে করেন, এর মানে ওই নারী আগে অন্য কারও সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন এবং তাঁকে প্রতারণা করেছেন। অপমানিত হয়ে ওউ নারী স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য।

কয়েক বছর ধরে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকতে পারছে না, তলানিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আসল ঘটনা আসলে কি?
২৮ নভেম্বর ২০২১
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১৬ ঘণ্টা আগে
প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মহামূল্যবান অলংকার চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত বিশেষ একটি ফার্নিচারের প্রস্তুতকারক জার্মান কোম্পানি বোকার। এই চুরির ঘটনাকে এখন নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। তারা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের পণ্যের গুণগান...
২ দিন আগে
নিউজিল্যান্ডে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের পেট থেকে প্রায় ১০০টি শক্তিশালী চুম্বক অপসারণ করেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার অন্ত্রের কিছু টিস্যুও অপসারণ করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা গতকাল শুক্রবার এই অস্ত্রোপচারের কথা প্রকাশ করেন। চুম্বকগুলো কেনা হয়েছিল জনপ্রিয় অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম টেমু থেকে।
২ দিন আগে