ইশতিয়াক হাসান
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইউক্রেনে মানুষকে আকৃষ্ট করে এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় জায়গা কিংবা স্থাপনার অভাব নেই। তবে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্ভবত ক্লেভান শহরের কাছের টানেল অব লাভ বা ভালোবাসার সুড়ঙ্গ। একটি রেললাইনের দুই পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জায়গায় লতা-পাতা-গুল্ম এমনভাবে বিছিয়ে আছে, একটি সবুজ সুড়ঙ্গের মতো মনে হয় জায়গাটিকে। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার প্রিয় গন্তব্য এই টানেল অব লাভ।
বছরের যেকোনো সময় হাঁটতে যেতে পারেন সেখানে। তবে গ্রীষ্ম, শরৎ আর বসন্তে জায়গাটি সবচেয়ে সুন্দর। যখন প্রকৃতি গাছের লতাপাতাকে আশ্চর্যরকম সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলে।
মোটামুটি বছর পনেরো আগে এই সুড়ঙ্গের কথা জানতে পারেন ইউক্রেন তথা গোটা পৃথিবীর মানুষ। এ জন্য ধন্যবাদ পেতে পারেন ওই পর্যটকেরা, যাঁরা ক্লেভানের ঠিক বাইরে ঝোপ-জঙ্গলে ঘোরাফেরা করতে করতে আচমকা গাছগাছালিতে লুকিয়ে থাকা একটি রেললাইন আবিষ্কার করে ফেলেন। তাঁদের তোলা ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পর অনেকেই একে ফটোশপের কারসাজি ভেবেছিলেন। তবে বিষয়টি সত্যি নাকি পরীক্ষা করতে আরও কিছু পর্যটক সেখানে গেলেই নিশ্চিত হয় আশ্চর্য সুন্দর এই জায়গা আসলেই আছে।
সুড়ঙ্গ নিয়ে আছে নানা ধরনের গল্পগাথা। এর একটি অনুযায়ী, কয়েক শ বছর ধরেই সবুজ এ করিডরের অস্তিত্ব আছে। ক্লেভান দুর্গের এক যুগল পরিবারের কর্তাদের নজর এড়িয়ে দেখা করতে যেতেন সেখানে। এ ধরনের আরেকটি গল্প হলো, পোলিশ এক প্রকৌশলী ক্লেভানের এক মেয়ের প্রেমে পড়ে যান। তাই মেয়েটি যে এলাকায় বাস করতেন, মানে ওরজহেভের দিকে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একটি রেললাইন তৈরি করেন পথটিকে সংক্ষিপ্ত করার জন্য। তবে সবচেয়ে যুক্তিসংগত যে কথাটি শোনা যায় তা হলো, সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের যুগে রেললাইনটি তৈরি করা হয়। আর এর গোপনীয়তার স্বার্থে লাইনের চারপাশে রোপণ করা হয় গাছ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামরিক কাজে ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায় জায়গাটি। তারপর প্রকৃতি জায়গাটিকে সাজাতে থাকে বাধাহীনভাবে। ধীরে ধীরে গোটা জায়গাটি রূপ নেয় সবুজ এক সুড়ঙ্গে। পরে ওরজহেভের এক কাঠের কারখানা থেকে যখন একটি মালগাড়ি এ রেলপথ দিয়ে আসা-যাওয়া শুরু করে, এর ধাক্কায় ডালপালা ভেঙে গোটা সুড়ঙ্গটি আরও সুন্দর, সুশৃঙ্খল রূপ নেয়।
ধীরে ধীরে জায়গাটি প্রেমিক-প্রেমিকাদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে ওঠে। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে এখানে আসতে শুরু করেন সবাই। এই সুড়ঙ্গ নিয়ে নানা গল্প ছড়াতে থাকে তাঁদের মধ্যে। তাঁরা বিশ্বাস করেন এই সুড়ঙ্গে একটি চুম্বন সারা জীবনের জন্য মজবুত করে দেবে ভালোবাসাকে। আর তাঁরা যদি লাইনে দাঁড়িয়ে পরস্পরকে আলিঙ্গন করেন, কখনো আলাদা হবেন না।
নববিবাহিতদের কাছেও দারুণ জনপ্রিয় এ সুড়ঙ্গ। এখানে বিয়ের পোশাকে ছবি তুলতে ভালোবাসেন তাঁরা, পরস্পরের প্রতি অনুভূতি প্রকাশ করে বিভিন্ন ফুলগাছ রোপণ করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা আবার বিশ্বাস করেন সুড়ঙ্গে ভ্রমণ সবার জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনে, তাই বছরে অন্তত দুইবার এখানে আসা উচিত।
এবার ভালোবাসার সুড়ঙ্গ নিয়ে কয়েকটি মজার তথ্য দেওয়া যাক। ২০১২ সালে জাপানি কোম্পানি ফুজি ফিল্মের একটি বিজ্ঞাপনচিত্র তৈরি করে সুড়ঙ্গটি নিয়ে। জাপানি পরিচালক আকিয়য়োশি ইমাজাকি একটি ছবির শুটিং করেন এ সুড়ঙ্গে, আর সুড়ঙ্গটি তাকে এতটাই মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলে, একপর্যায়ে ছবিটির নির্ধারিত নাম বদলে রাখেন ‘ক্লেভান-টানেল অব লাভ’। এ জায়গায় অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১৭ সালে চীনে হেফেই শহরের কাছে একটি জায়গার নাম রাখা হয় টানেল অব লাভ।
অনেকের কাছেই টানেল অব লাভ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর রেললাইনগুলোর একটি। আবার এখান থেকে অল্প কিছুটা দূরত্ব পেরোলে পর্যটকেরা দেখার সুযোগ পান ক্লেভান দুর্গের দুর্ভেদ্য দেয়াল, আশ্চর্য সুন্দর সেতু। দুর্গের কাছেই আছে সুন্দর এক গির্জা। সবকিছু মিলিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকেরা তো বটেই, পর্যটকদের কাছে পর্যন্ত এটি খুব প্রিয় এক জায়গা। তবে আজ দিনটিতে নিশ্চয় টানেল অব লাভে শুধু ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়েই যাবেন সবাই।
সূত্র: ভিডভি. ইউএ, এটলাস অবসকিউরা
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইউক্রেনে মানুষকে আকৃষ্ট করে এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় জায়গা কিংবা স্থাপনার অভাব নেই। তবে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্ভবত ক্লেভান শহরের কাছের টানেল অব লাভ বা ভালোবাসার সুড়ঙ্গ। একটি রেললাইনের দুই পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জায়গায় লতা-পাতা-গুল্ম এমনভাবে বিছিয়ে আছে, একটি সবুজ সুড়ঙ্গের মতো মনে হয় জায়গাটিকে। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার প্রিয় গন্তব্য এই টানেল অব লাভ।
বছরের যেকোনো সময় হাঁটতে যেতে পারেন সেখানে। তবে গ্রীষ্ম, শরৎ আর বসন্তে জায়গাটি সবচেয়ে সুন্দর। যখন প্রকৃতি গাছের লতাপাতাকে আশ্চর্যরকম সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলে।
মোটামুটি বছর পনেরো আগে এই সুড়ঙ্গের কথা জানতে পারেন ইউক্রেন তথা গোটা পৃথিবীর মানুষ। এ জন্য ধন্যবাদ পেতে পারেন ওই পর্যটকেরা, যাঁরা ক্লেভানের ঠিক বাইরে ঝোপ-জঙ্গলে ঘোরাফেরা করতে করতে আচমকা গাছগাছালিতে লুকিয়ে থাকা একটি রেললাইন আবিষ্কার করে ফেলেন। তাঁদের তোলা ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পর অনেকেই একে ফটোশপের কারসাজি ভেবেছিলেন। তবে বিষয়টি সত্যি নাকি পরীক্ষা করতে আরও কিছু পর্যটক সেখানে গেলেই নিশ্চিত হয় আশ্চর্য সুন্দর এই জায়গা আসলেই আছে।
সুড়ঙ্গ নিয়ে আছে নানা ধরনের গল্পগাথা। এর একটি অনুযায়ী, কয়েক শ বছর ধরেই সবুজ এ করিডরের অস্তিত্ব আছে। ক্লেভান দুর্গের এক যুগল পরিবারের কর্তাদের নজর এড়িয়ে দেখা করতে যেতেন সেখানে। এ ধরনের আরেকটি গল্প হলো, পোলিশ এক প্রকৌশলী ক্লেভানের এক মেয়ের প্রেমে পড়ে যান। তাই মেয়েটি যে এলাকায় বাস করতেন, মানে ওরজহেভের দিকে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একটি রেললাইন তৈরি করেন পথটিকে সংক্ষিপ্ত করার জন্য। তবে সবচেয়ে যুক্তিসংগত যে কথাটি শোনা যায় তা হলো, সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের যুগে রেললাইনটি তৈরি করা হয়। আর এর গোপনীয়তার স্বার্থে লাইনের চারপাশে রোপণ করা হয় গাছ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামরিক কাজে ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায় জায়গাটি। তারপর প্রকৃতি জায়গাটিকে সাজাতে থাকে বাধাহীনভাবে। ধীরে ধীরে গোটা জায়গাটি রূপ নেয় সবুজ এক সুড়ঙ্গে। পরে ওরজহেভের এক কাঠের কারখানা থেকে যখন একটি মালগাড়ি এ রেলপথ দিয়ে আসা-যাওয়া শুরু করে, এর ধাক্কায় ডালপালা ভেঙে গোটা সুড়ঙ্গটি আরও সুন্দর, সুশৃঙ্খল রূপ নেয়।
ধীরে ধীরে জায়গাটি প্রেমিক-প্রেমিকাদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে ওঠে। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে এখানে আসতে শুরু করেন সবাই। এই সুড়ঙ্গ নিয়ে নানা গল্প ছড়াতে থাকে তাঁদের মধ্যে। তাঁরা বিশ্বাস করেন এই সুড়ঙ্গে একটি চুম্বন সারা জীবনের জন্য মজবুত করে দেবে ভালোবাসাকে। আর তাঁরা যদি লাইনে দাঁড়িয়ে পরস্পরকে আলিঙ্গন করেন, কখনো আলাদা হবেন না।
নববিবাহিতদের কাছেও দারুণ জনপ্রিয় এ সুড়ঙ্গ। এখানে বিয়ের পোশাকে ছবি তুলতে ভালোবাসেন তাঁরা, পরস্পরের প্রতি অনুভূতি প্রকাশ করে বিভিন্ন ফুলগাছ রোপণ করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা আবার বিশ্বাস করেন সুড়ঙ্গে ভ্রমণ সবার জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনে, তাই বছরে অন্তত দুইবার এখানে আসা উচিত।
এবার ভালোবাসার সুড়ঙ্গ নিয়ে কয়েকটি মজার তথ্য দেওয়া যাক। ২০১২ সালে জাপানি কোম্পানি ফুজি ফিল্মের একটি বিজ্ঞাপনচিত্র তৈরি করে সুড়ঙ্গটি নিয়ে। জাপানি পরিচালক আকিয়য়োশি ইমাজাকি একটি ছবির শুটিং করেন এ সুড়ঙ্গে, আর সুড়ঙ্গটি তাকে এতটাই মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলে, একপর্যায়ে ছবিটির নির্ধারিত নাম বদলে রাখেন ‘ক্লেভান-টানেল অব লাভ’। এ জায়গায় অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১৭ সালে চীনে হেফেই শহরের কাছে একটি জায়গার নাম রাখা হয় টানেল অব লাভ।
অনেকের কাছেই টানেল অব লাভ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর রেললাইনগুলোর একটি। আবার এখান থেকে অল্প কিছুটা দূরত্ব পেরোলে পর্যটকেরা দেখার সুযোগ পান ক্লেভান দুর্গের দুর্ভেদ্য দেয়াল, আশ্চর্য সুন্দর সেতু। দুর্গের কাছেই আছে সুন্দর এক গির্জা। সবকিছু মিলিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকেরা তো বটেই, পর্যটকদের কাছে পর্যন্ত এটি খুব প্রিয় এক জায়গা। তবে আজ দিনটিতে নিশ্চয় টানেল অব লাভে শুধু ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়েই যাবেন সবাই।
সূত্র: ভিডভি. ইউএ, এটলাস অবসকিউরা
সাপের কামড়ে মানুষ মারা যাবে—এ তো চিরচেনা খবর! কিন্তু এবার খবর উল্টো। বিহারের এক প্রত্যন্ত গ্রামে ১ বছরের এক শিশু কামড়ে মেরে ফেলেছে বিষধর গোখরাকে! চোখ কপালে তুলে দেওয়া এই ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের পশ্চিম চম্পারণ জেলার মোহাচ্ছি বাংকটওয়া গ্রামে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা তাঁরা জীবনে কখনো দেখেননি—শুধু সিনেমাতে
৪ ঘণ্টা আগে‘নির্ভীক’ শব্দটা অনেকেই গর্বের সঙ্গে ব্যবহার করেন। কিন্তু মানুষ সত্যিকার অর্থে পুরোপুরি নির্ভীক নয়। জন্মগতভাবে মানুষের ভয় খুব সীমিত—মাত্র দুটি। গবেষণা বলছে, মানুষ জন্মগতভাবে যেসব ভয় নিয়ে আসে, তার মধ্যে রয়েছে উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ার ভয় এবং বিকট শব্দে চমকে ওঠা।
১৪ ঘণ্টা আগেবেশির ভাগ বিড়ালপ্রেমীই আতঙ্কে থাকেন, কখন তাদের পোষা বিড়াল কোনো ইঁদুর বা পাখি শিকার করে বাসায় নিয়ে আসে। তবে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড শহরের এক পরিবারের বিড়ালের কর্মকাণ্ড এই সাধারণ দুশ্চিন্তার চেয়েও ভয়াবহ। কারণ, তাদের ১৫ মাস বয়সী বিড়ালটি একা পুরো এলাকায় চুরির রাজত্ব কায়েম করেছে। পুরো এলাকার অপরাধ জগতে
১ দিন আগেভারতের মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে এক নাটকীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। মাঝ রাস্তায় দুই ঘোড়ার লড়াইয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়। এই তাণ্ডবের মধ্যে একটি ঘোড়া একটি অটো রিকশার ওপর লাফিয়ে পড়ে। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। এরপর ঘোড়াটি প্রায় ২০ মিনিট রিকশার ভেতরে আটকে ছিল।
৩ দিন আগে