অভিযান–১০

ঝালকাঠির লঞ্চ দুর্ঘটনায় দগ্ধ এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। শিশুটির নাম তামিম হাসান (৮) 

অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে গত ২৪ ডিসেম্বর। ওই সময় ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান খেয়ার ট্রলারে করে। নদীবেষ্টিত গুরুত্বপূর্ণ এ জেলায় নৌপথের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নৌ ফায়ার স্টেশন না থাকায় অভিযান-১০ লঞ্চে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে এবং আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

দুই যমজ বোনের পরে এবার বাড়িতে এল মা সিমু আক্তারের মরদেহ। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর গত কাল সিমু আক্তারের মরদেহ সুগন্ধা নদীতে ভেসে ওঠে। দাফনও হবে পাশাপাশি করবে। বাড়িতে প্রতিবেশীরা সিমুর কবর প্রস্তুত করলেও নেই কন্নার আওয়াজ। সিমুর বাবা আজিজ মেয়ের মরদেহের খাটিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। কিছুই বলার ভাষা নেই তাঁর মু

ডাক্তার দেখিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে সপরিবারে ঢাকা থেকে বরগুনায় ফিরছিলেন আবদুল্লাহ হাই নেছারী। অভিযান-১০ লঞ্চের পেছনের একটি স্টাফ কেবিনে ঘুমাচ্ছিলেন তাঁরা। হঠাৎ কেবিনের বাইরে মানুষের চিৎকারে ঘুম ভাঙে তাঁর। আবদুল্লাহ হাই কেবিন থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখেন আগুনের লেলিহান শিখা। মুহূর্তের মধ্যেই যেন আগুন পুরো

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ শাহিনুর খাতুন স্বপ্না (৪০) নামের আরও এক নারী মারা গেছে।

এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লেগে হতাহতের ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির মেয়াদ আজ বুধবার থেকে আরও তিন কার্যদিবস বাড়ানো হয়েছে।

মোর স্বামীর লাশটা তোমরা আইন্যা দেও। মোর ঘরের লগে কবর দিমু। মুই আর কিছু চাই না, লাশটা চাই... 

ঝালকাঠির বিষখালী নদীতে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিষখালী-সুগন্ধার মোহনার চরের তীর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। 

চার মাস আগে ঢাকা থেকে বরগুনায় যাওয়ার পথে ঝালকাঠির বিষখালী ডুবোচরে আটকে যাওয়ার পর যাত্রীদের রেখে পালিয়েছিলেন অভিযান-১০ লঞ্চের চালক ও কর্মচারীরা। পরে নিজ খরচ ও ব্যবস্থাপনায় গন্তব্য পৌঁছেছিলেন যাত্রীরা।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নি দুর্ঘটনার ৫ দিন পরও নদীতে ভেসে উঠছে লাশ। গতকাল মঙ্গলবার সুগন্ধা ও বিষখালী নদী থেকে ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় লঞ্চটির দুই মাস্টারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

আমার বাবা শহীদ ভাইয়ের সঙ্গে চলে যাওয়ার পর আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ মানুষের কান্নাকাটি শুনে ঘুম ভাঙে। এরই মধ্যে আমার স্ত্রী জানাল লঞ্চে আগুন ধরেছে। চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। পরে আমার স্ত্রী আমাকে ও আমার মাকে নদীতে লাফ দিতে বলে।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুগন্ধা ও বিষখালি নদীতে একের পর এক মরহেদ ভেসে উঠতে শুরু করেছে

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহতদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আহতদের মধ্যে কেউ চিকিৎসায় অর্থ সাহায্য চাইলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা প্রশাসককে তা বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। 

অভিযান-১০ লঞ্চে লাগা আগুনে সব শেষ করে দিয়েছে। তিন সন্তান ও স্ত্রী সবাই নিখোঁজ। তাঁদের বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছেন সুমন। এখন বরগুনা জেলার সদর হাসপাতালে এসেছেন ডিএনএ নমুনা দিতে। শেষ স্মৃতি হিসেবে যদি প্রিয় স্বজনদের মরদেহ অন্তত পাওয়া যায় এই আশায়।

‘মোর মা বুইনে এহন আর বাইচ্চা নাই। পোড়া লাশের ছাই পাইলেও সান্ত্বনা পাইতাম। ছাই হইলেও দ্যান, কবরে দিয়া কবরডা দেখতাম। মোর মা বুইনে কোম্মে আছে কেউ এট্টু সন্ধান আইনা দেন।’

বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ অভিযান-১০ এ ভয়াবহ আগুনে মারা যাওয়া ২৩ জনকে বরগুনা সদরের পোটকাখালিতে দাফন করা হয়েছে। প্রতিটি কবরের সামনে নাম ফলকের বদলে পরিচয় হিসেবে ঝোলানো হয়েছে কয়েক সংখ্যার কোড নম্বর। আগুনের ঘটনার রাত পর্যন্ত যাদের প্রত্যেকেরই ছিলো নাম, পরিচয়, পেশা ও পরিবার।