Ajker Patrika

চীনে চিপ পাচারের শঙ্কা, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের ওপর বিধিনিষেধ দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
চীন যাতে এসব চিপ মধ্যবর্তী দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মাধ্যমে না পায়, তা নিশ্চিত করতেই এই নিয়ন্ত্রণ আনা হচ্ছে। ছবি: গ্লোবাল ফাইন্যান্স
চীন যাতে এসব চিপ মধ্যবর্তী দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মাধ্যমে না পায়, তা নিশ্চিত করতেই এই নিয়ন্ত্রণ আনা হচ্ছে। ছবি: গ্লোবাল ফাইন্যান্স

চীনে গোপনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চিপ পাচারের আশঙ্কায় মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এনভিডিয়া করপোরেশনসহ অন্যান্য কোম্পানির উন্নতমানের এআই চিপ রপ্তানিতে বিধিনিষেধ দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এ তথ্য জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি খসড়া নিয়মে বলা হয়েছে—চীন যাতে এসব চিপ মধ্যবর্তী দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মাধ্যমে না পায়, তা নিশ্চিত করতেই এই নিয়ন্ত্রণ আনা হচ্ছে। তবে এই খসড়া এখনো চূড়ান্ত নয়, পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

নতুন এই বিধিনিষেধের সঙ্গে ‘এআই ডিফিউশন রুল’ নামের একটি আগের বৈশ্বিক নিয়ম বাতিল করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন আমলে চালু হওয়া এই নিয়মে আপত্তি তুলেছিল মিত্র দেশ ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো, যার মধ্যে এনভিডিয়াও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সালে চীনের ওপর যে সেমিকন্ডাক্টর (চিপ) বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল, তা এখনো বহাল থাকবে। কয়েক দফায় চীনের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০২৩ সালে ৪০টির বেশি দেশের ওপর যে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছিল, তা বহাল রাখা হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির আওতায় এআই প্রযুক্তির বৈশ্বিক বাজারে স্বচ্ছতা আনতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন।

তবে নতুন খসড়া আইন এআই চিপ রপ্তানিতে বাইডেন প্রশাসনের নীতি পুরোপুরি বদলে ফেলছে না। তবে এই নীতি নিয়ে অনেক প্রশ্ন এখনো স্পষ্ট নয়। বিশেষত বিদেশি ডেটা সেন্টারে মার্কিন এআই চিপ ব্যবহারে নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। মধ্যপ্রাচ্যে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে মন্ত্রণালয়ের সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক সম্প্রতি কংগ্রেসে বলেছেন, ‘আমাদের মিত্ররা এআই চিপ কিনতে পারবে, যদি তা অনুমোদিত কোনো মার্কিন ডেটা সেন্টার অপারেটরের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং সংশ্লিষ্ট ক্লাউড অপারেটরও মার্কিন অনুমোদিত হয়।’

এর আগে এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং বলেছিলেন, সাধারণভাবে কোনো চিপ পাচারের প্রমাণ নেই। তবে তিনি কোনো নির্দিষ্ট দেশের কথা বলেননি।

থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া এখনো মার্কিন খসড়া বিধিনিষেধ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। থাই কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রয়েছে। মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রযুক্তি খাতের জন্য স্বচ্ছ ও ধারাবাহিক নীতি দরকার।

এদিকে, মালয়েশিয়ায় এআই চিপের প্রবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ এখনো কাটেনি। ওরাকল করপোরেশনসহ অনেক কোম্পানি মালয়েশিয়ায় ডেটা সেন্টারে বিপুল বিনিয়োগ করছে। বাণিজ্যিক তথ্য বলছে, দেশটিতে চিপ রপ্তানি সম্প্রতি অনেক বেড়েছে।

এ ছাড়া, সিঙ্গাপুরে একটি মামলায় তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে এনভিডিয়া চিপ সমৃদ্ধ সার্ভার মালয়েশিয়ায় পাঠানোর বিষয়ে গ্রাহকদের প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। যদিও এনভিডিয়া এই মামলার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও আনা হয়নি।

নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে চাপ কমাতে যুক্তরাষ্ট্র কিছু শিথিলতাও রাখছে। জানা গেছে, বিশেষ লাইসেন্স ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্রভুক্ত দেশগুলোর কোম্পানি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এআই চিপ পাঠাতে পারবে।

চিপ উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেমন—প্যাকেজিংয়ের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওপর অনেক কোম্পানির নির্ভরতা থাকায় কিছু রপ্তানি ছাড়ও থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত