Ajker Patrika

আমেরিকান কর্মী ছাঁটাই করে বিদেশিদের নেয় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো, দাবি হোয়াইট হাউসের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এইচ-১বি কর্মসূচি মার্কিন নাগরিকদের স্টেম খাতে ক্যারিয়ার গড়ার আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে। ছবি: আনাদুলো এজেন্সি
এইচ-১বি কর্মসূচি মার্কিন নাগরিকদের স্টেম খাতে ক্যারিয়ার গড়ার আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে। ছবি: আনাদুলো এজেন্সি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এইচ-১বি ভিসার আবেদনে নতুন করে এক লাখ ডলারের ফি আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ঘোষণার পরপরই হোয়াইট হাউস একটি তথ্যপত্র প্রকাশ করে এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ব্যাখ্যা দেয়। সেখানে বলা হয়, এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচি ‘ব্যাপক অপব্যবহার’ এবং মার্কিন কর্মসংস্থানের ক্ষতির কারণে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তথ্যপত্রে দাবি করা হয়, একাধিক মার্কিন কোম্পানি হাজার হাজার স্থানীয় প্রযুক্তিকর্মী ছাঁটাই করে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দিয়েছে এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে।

হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫ অর্থবছরে একটি কোম্পানিতে ৫ হাজার ১৮৯ কর্মীর এইচ-১বি ভিসা অনুমোদন পেয়েছে। অথচ ১৬ হাজার মার্কিন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে।

আরেক কোম্পানি ওরেগন ১ হাজার ৬৯৮ কর্মীর এইচ-১বি ভিসার অনুমোদন পেয়েছে। এদিকে জুলাইতে সেই কোম্পানি ২ হাজার ৪০০ মার্কিন কর্মী ছাঁটাই করেছে।

তৃতীয় আরেকটি কোম্পানি ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার মার্কিন কর্মী ছাঁটাই করেছে। অপর দিকে তারা ২৫ হাজার ৭৫ কর্মীর এইচ-১বি ভিসার অনুমোদন পেয়েছে।

অন্য একটি প্রতিষ্ঠান ২০২৫ অর্থবছরে ১ হাজার ১৩৭ কর্মীর এইচ-১বি ভিসা অনুমোদন পেয়েছে, অথচ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার মার্কিন কর্মী ছাঁটাই করেছে।

হোয়াইট হাউস জানায়, অনেক সময় গোপনীয়তা চুক্তির (এনডিএ) অধীনে মার্কিন আইটি কর্মীদের বিদেশি কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতেও বাধ্য করা হয়।

তথ্যপত্রে আরও বলা হয়, ‘মার্কিন কর্মীদের কম মজুরি দেওয়া বিদেশি শ্রমিক দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তার হুমকির মুখে পড়ছে। ২০০৩ অর্থবছরে আইটি খাতে এইচ-১বি ভিসাধারীর হার ছিল ৩২ শতাংশ, যা বর্তমানে ৬৫ শতাংশের বেশি।’

সম্প্রতি কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ, আর কম্পিউটার প্রকৌশলে এই হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এই হার জীববিজ্ঞান বা শিল্প-ইতিহাসের মতো বিষয়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি স্টেম কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, অথচ স্টেম খাতে (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) মোট কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ৪৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

ট্রাম্পের ‘আমেরিকান ফার্স্ট’ নীতির প্রতিফলন

হোয়াইট হাউসের তথ্যপত্রে বলা হয়, ‘এইচ-১বি কর্মসূচি মার্কিন নাগরিকদের স্টেম খাতে ক্যারিয়ার গড়ার আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসার অপব্যবহার বন্ধ, মজুরি কমানোর প্রবণতা থামানো এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় কোম্পানিগুলোর জন্য খরচ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

তথ্যপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ভোটাররা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে মার্কিন কর্মীদের স্বার্থে কাজ করার সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট দিয়েছেন। আর তিনি প্রতিদিন সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কাজ করছেন।’

হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন নতুন বাণিজ্য চুক্তি করে দেশে উৎপাদনশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। কৌশলগতভাবে শুল্ক ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে পুনর্গঠন, সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সেকশন ২৩২-এর আওতায় একাধিক শুল্ক আরোপ করে অন্যায্য বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা থেকে দেশের উৎপাদন খাতকে রক্ষা করা হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধ অভিবাসীরা যেন ফেডারেল কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ বা সংশ্লিষ্ট অনুদান না পায়, সে জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাবজেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী, টিআইবির প্রশ্ন

ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করলেন হাবিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত