Ajker Patrika

হামাসের চ্যানেলগুলোর ওপর টেলিগ্রামের কড়াকড়ি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৭: ৩৭
Thumbnail image

স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস-সম্পর্কিত বিভিন্ন চ্যানেলের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে টেলিগ্রাম। গত সপ্তাহ থেকে গুগল প্লে বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করা টেলিগ্রামের বিভিন্ন ভার্সনে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড ও নিউজ অ্যাকাউন্ট গাজা নাও-এ প্রবেশ করা যাচ্ছে না। আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। 

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর অ্যাকাউন্টগুলোতে কয়েক হাজার নতুন ফলোয়ার যুক্ত হয়েছে। টেলিগ্রামের অনলাইন সংস্করণ ও টেলিগ্রামের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি ডাউনলোড করা অ্যাপ ভার্সনে থেকে এখনো চ্যানেলগুলো প্রবেশ করা যাচ্ছে। 

টেলিগ্রাম এই পদক্ষেপের কারণ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। 

যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকোর লিগ্যাল ইনস্টিটিউট ‘ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন’-এর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়। গত সপ্তাহে অ্যাপলকে এই প্রতিষ্ঠান একটি চিঠি লিখে বলে, হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত সাতটি অ্যাকাউন্ট সচল রয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য এই অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক থাকা সত্ত্বেও আইওএসে তা সচল ছিল। প্রতিষ্ঠানটির  চিঠির পর এই নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করা হয়।

গুগল আল জাজিরাকে বলেছে, যেসব কনটেন্ট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রচার, সহিংসতা উসকে দেয় বা সন্ত্রাসী হামলা উদ্‌যাপন করে, সেগুলোকে সব সময় সীমিত বা বন্ধ করে গুগল।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও প্যারাগুয়ে হামাসকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। 

বিভিন্ন খবর প্রচারের জন্য টেলিগ্রামকে ব্যবহার করে হামাস। দক্ষিণ ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের ওপর হামলার হিংসাত্মক ভিডিও ও ছবি সম্প্রচার করতে অ্যাপটি ব্যবহার করা হয়েছে। 

এ ছাড়া আইএসআইএল (আইএসআইএস) ও আল-কায়েদার মতো অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীও তাদের মতাদর্শ প্রচার করতে এবং হামলার দায় স্বীকার করতে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে। 

আটলান্টিক কাউন্সিলের ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ ল্যাবের সহযোগী সম্পাদক লায়লা মাশকুর আল জাজিরাকে বলেন, পর্যাপ্ত নীতির অভাব ও শিথিল নিয়মের জন্য সেদিনের পর থেকে হামাসের খবর প্রচারে সাহায্য করেছে টেলিগ্রাম। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো হত্যাকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে, তার গ্রাফিক ফুটেজ টেলিগ্রামে আপলোড করা হয়। তারপরে সেই কনটেন্ট ইন্টারনেটের অন্যান্য জায়গায়ও ছড়িয়ে যায়। 

৭ অক্টোবরের হামলার পর কাসাম ব্রিগেড ও হামাসের অফিশিয়াল চ্যানেলগুলোতে যথাক্রমে প্রায় অর্ধমিলিয়ন এবং ১০ লাখ গ্রাহক যুক্ত হয়েছে। 

গাজা নাউ চ্যানেলের গ্রাহক ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫০৬ জন থেকে প্রায় ১৯ লাখে পৌঁছেছে। গুগল প্লে ও অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের টেলিগ্রামের সংস্করণগুলোতে বিধিনিষেধের পর ১০ থেকে ৮০ হাজার গ্রাহক হারিয়েছে এসব চ্যানেল। 

মাশকুর বলেন, গাজার সরকার হিসেবে হামাসকে আইএসআইএলের মতো সশস্ত্র গোষ্ঠী থেকে আলাদা করে। কিন্তু উভয়েই টেলিগ্রামের মতো চ্যানেলের মাধ্যমে হিংসাত্মক বিষয়বস্তু শেয়ার করে। 

টেলিগ্রামের সিইও পাভেল দ্রুভ প্ল্যাটফর্মের শিথিল নীতিগুলো সম্পর্কে বলেন, এটি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করেছে এবং ক্ষতিকর কনটেন্ট ছড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা কম এমন চ্যানেল ব্যবহারকারীদের নির্বাচন করতে হবে। 

এই মাসের শুরুতে টেলিগ্রামের এক পোস্টে দ্রুভ বলেন, মডারেটররা প্রতিদিন লাখ লাখ ক্ষতিকর কনটেন্ট সরিয়ে দেয়। 

টেলিগ্রাম থেকে চ্যানেলগুলো অপসারণ হতে পারে। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে হামাস। এ জন্য ফলোয়ারদের একটি বিশেষ অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলেছে। 

মাশকুর বলেন, প্রধান অ্যাকাউন্টগুলো থেকে তথ্য প্রচার বন্ধ করলেও টেলিগ্রামের ছোট চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে তাদের বার্তা প্রচার অব্যাহত রাখতে পারবে হামাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত