Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

প্রতিপক্ষ আমাকে নিয়ে ভাবলে ভালোই লাগে

Thumbnail Image

দুর্দান্ত এক সিরিজ শেষে মোস্তাফিজুর রহমান আছেন ছুটিতে। গতকাল বিকেলে সাতক্ষীরা থেকে মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরে দেখলেন ঐতিহাসিক সিরিজটা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জয়। যত সিরিজ জিতেছেন, এই সিরিজটা কোথায় রাখবেন? 
মোস্তাফিজুর রহমান: আমার কাছে সব সিরিজই সমান গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, সিরিজটা খুব ভালো গেছে। বিশ্বকাপের আগে এমন একটা জয় আমাদের অবশ্যই আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। 

প্রশ্ন: প্রতিপক্ষ যেহেতু অস্ট্রেলিয়া, সিরিজের আগে বিশেষ কোনো লক্ষ্য ঠিক করে রেখেছিলেন? 
মোস্তাফিজ: আমার খুব ভালো করার ইচ্ছে ছিল। কী করলে ভালো হবে, এটাই ভেবেছি। পায়ের চোটে পড়ায় গত সিরিজটা (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে) ঠিকঠাক খেলতে পারিনি। জানেনই টি-টোয়েন্টি সংস্করণটা আমার খুব প্রিয়। অথচ খেলতে পারিনি। দেশে ফেরার পর চেষ্টা করেছি, কীভাবে ভালো করা যায়। সেভাবে তৈরি হয়েছি। আমার ফিট থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নিজের কাজগুলো ঠিকঠাক করেছি। ফিট থাকলেই একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে শতভাগ দেওয়া সম্ভব হয়। 

প্রশ্ন: সিরিজজুড়েই অস্ট্রেলিয়া দল আপনার বোলিং নিয়ে বারবার কথা বলেছে। এটা কতটা উপভোগ করেছেন? 
মোস্তাফিজ: প্রতিপক্ষ যখন আমাকে নিয়ে ভাববে, কথা বলবে, ভালোই তো লাগবে। 

প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়া আপনাকে নিয়ে বেশি সতর্ক থাকায় খুব একটা আক্রমণ করেনি। না হলে আপনার উইকেট সংখ্যা নিশ্চয়ই আরও বেশি হতো?
মোস্তাফিজ: ওরা হয়তো আমাকে উইকেট দেবে না, এটা ভেবেই খেলেছে। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের পরিকল্পনা যেটাই থাক, আমি শুধু চেষ্টা করি ঠিক জায়গায় বলটা করতে। উইকেট থেকে যেহেতু সহায়তা ছিল, ডিসিপ্লিন বোলিং করেছি।

প্রশ্ন: এই সিরিজে আপনার বোলিং নিয়ে এত আলোচনা; একবারও ম্যাচসেরা হননি, সিরিজসেরাও নন। এটা নিয়ে আফসোস আছে? 
মোস্তাফিজ: নাহ, আফসোস নেই। আমার দল ভালো করেছে। দল প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে জিতেছে। আমি এতেই খুশি। আর দল ভালো করেছে মানে বুঝতে হবে আমাদের প্রসেসটা ঠিক ছিল। যেভাবে পরিকল্পনা করেছি, সেটাই কাজে লাগাতে পেরেছি।

প্রশ্ন: মিরপুরের মন্থর উইকেটে স্লোয়ার-কাটারেই সফল হয়েছেন। তবু নতুন কিছু কি যোগ করতে হয়েছে? 
মোস্তাফিজ: কাটার তো আছেই। এখন উল্টো, ব্যাক হ্যান্ডে আরেকটি চেষ্টা করছি। এটা আরও নিখুঁত করার চেষ্টা করছি। তবে হ্যাঁ, এই উইকেটে যদি আমি ধারাবাহিক ভালো জায়গায় বোলিং করতে পারি, আরও সফল হতে পারব।

প্রশ্ন: অনেকে বলছে সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশ শেষ দুই ম্যাচে অন্তত ভালো উইকেটে খেলতে পারত। 
মোস্তাফিজ: এটা নিয়ে মন্তব্য করতে পারব না।

প্রশ্ন: ছন্দ হারিয়ে ফেললেই ফিজের সেই আগের ধার নেই বলে একটা রব ওঠে। এই সময়ে নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখেন কোনো উপায়ে? 
মোস্তাফিজ: এগুলো আমাকে ওভাবে স্পর্শ করে না। আমি আমার মতো কষ্ট করি, পরিশ্রম করি। জানি কষ্ট করলে আল্লাহ কিছু না কিছু দেবেন। আমি আমার দিক থেকে সর্বোচ্চটা দেওয়া চেষ্টা করি। আর জাতীয় দলে খেললে নিজের সর্বোচ্চটাই দিতে হয়। শুধু আমি না, সবাই সর্বোচ্চটা দেওয়ারই চেষ্টা করে।

প্রশ্ন: সিরিজের পর আরেকটা সুখবর পেয়েছেন, টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে আবারও সেরা দশে উঠে এসেছেন। ভালো লাগাটা নিশ্চয়ই দ্বিগুণ হয়েছে? 
মোস্তাফিজ: এক বন্ধু আমাকে ইনবক্স করেছে দেখলাম। র‍্যাঙ্কিং নিয়ে আসলে...কেউ ইনবক্স করলে তখনই শুধু দেখি। তবে বেশি খুশি হয়ে লাভ নেই। যেটা গেছে, সেটা শেষ। এখন সামনে তাকাতে হবে।

প্রশ্ন: সামনে নিউজিল্যান্ড সিরিজ। দেশের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড তো খুবই ভালো। 
মোস্তাফিজ: ওটা বলে লাভ নেই। নতুন করে শুরু করতে হবে, ভালো করতে হবে। তবে সবাই যে ছন্দে আছে, এটা যেন ধরে রাখতে পারি। এটা থাকলে ভালো হবে।

প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। ধীরে ধীরে সিনিয়র হচ্ছেন। তরুণ পেসারদের প্রতি আপনার কি বিশেষ দায়িত্ব থাকে এখন? 
মোস্তাফিজ: ওরা আসে আমার কাছে। আমিও ওদের কাছ থেকে কিছু না কিছু শিখতে পারি। শুধু ওরা না, সবাই যখন এক জায়গায় থাকি, ধরুন খেতে বসলাম বা নেটে বোলিং করি, তখন একজন আরেকজনের কাছে জানি, শিখি। কীভাবে ভালো করা যায়, কোথায় উন্নতি করা যায়, এসব নিয়ে আমরা কথা বলি। আমাদের এই দলের সবারই শেখার আগ্রহটা দারুণ।

প্রশ্ন: গত কিছুদিনে তরুণ ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স আপনাকে কতটা আশাবাদী করে তুলেছে? 
মোস্তাফিজ: নতুন যারা সুযোগ পাবে তারা যদি ধারাবাহিক ভালো করে, আমাদের ম্যাচ জেতা আরও সহজ হবে। যে নতুন আসবে সে যেন লম্বা সময় জাতীয় দলে সার্ভিস দিতে পারে। যেন অনেক দিন থাকতে পারে। দলকে আরও এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত