Ajker Patrika

কঠিন পথ, তবু এশিয়ান কাপ খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের কাছে হারলেও এশিয়ান কাপে খেলার আশা এখনো আছে বাংলাদেশের। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের কাছে হারলেও এশিয়ান কাপে খেলার আশা এখনো আছে বাংলাদেশের। ছবি: আজকের পত্রিকা

হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের লবিটা কাল ভাঙা হাট মনে হলো। গত দুই সপ্তাহ ঢাকার এই পাঁচতারকা হোটেলে নিবদ্ধ ছিল ফুটবলপ্রেমীদের দৃষ্টি। ভুটান আর সিঙ্গাপুর ম্যাচ সামনে রেখে এখানেই যে ঘাঁটি গেড়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। গতকাল টিম হোটেলের লবি ছিল কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা। ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা পর হোটেল ছেড়ে গেছেন দলের বড় দুই তারকা হামজা চৌধুরী আর শমিত শোম।

হামজার গন্তব্য ইংল্যান্ড আর শমিত ফিরে যাচ্ছেন কানাডায়। তবে সকালে লবিতে দেখা মিলল ফাহামিদুল ইসলামের। বাংলাদেশ দলের তরুণ ফরোয়ার্ডকে নিতে টিম হোটেলে এসেছেন তাঁর মা-বাবা। ফাহামিদুল তাঁদের সঙ্গে কদিন ফেনীতে কাটিয়ে ফিরবেন ইতালিতে। স্বল্পভাষী ফাহামিদুল কালই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেন। বললেন, ‘(গত কদিনে) অসাধারণ সময় কেটেছে। সবকিছুই দারুণ ছিল। তবে ম্যাচের ফল (সিঙ্গাপুর ম্যাচ) আমাদের পক্ষে আসেনি। দিনটা আমাদের ছিল না। সর্বোচ্চটা দিয়ে পরের ম্যাচ জিতব ইনশা আল্লাহ।’

দলের প্রায় সব খেলোয়াড়ই সদ্য ঘরোয়া ফুটবলের ব্যস্ত মৌসুম শেষে এসেছিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলতে। সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে প্রস্তুতির কোথাও কমতি ছিল না। এ ম্যাচ ঘিরে নতুন করে ফুটবল নিয়ে মানুষের উন্মাদনা, আশা, নবজোয়ার—সংস্কারের পর জাতীয় স্টেডিয়ামে জমকালো আয়োজন। তবে স্বাগতিকদের আফসোস একটাই, ম্যাচটা জেতা হলো না। সিঙ্গাপুরের কাছে বাংলাদেশ হেরেছে কোথায়? বাংলাদেশের সাবেক স্ট্রাইকার জাহিদ হাসান এমিলি আজকের পত্রিকাকে বললেন, ‘বাংলাদেশ চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে। যে চাপ দিয়েছে তাদের প্রতিপক্ষকে, কেন সেটা দ্বিতীয়ার্ধে? প্রথমার্ধে কেন নয়? দুই গোল হজমের পর না দিয়ে চাপটা প্রথমার্ধে দিলে হয়তো গোল আদায় করা যেত। যদি দেখেন, প্রথমার্ধে আমরা যে খেলেছি, কী অ্যাপ্রোচ ছিল?’

এমিলির চোখে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার অনেক ভুল ধরা পড়েছে, ‘সেন্টার ব্যাকের খেলোয়াড়কে রাইট ব্যাকে খেলিয়েছেন। মিডফিল্ডের খেলোয়াড় খেলিয়েছেন রাইট উইংয়ে। শাকিল আহাদ তপু সেন্টার ব্যাকের খেলোয়াড়। তাকে খেলিয়েছেন রাইট ব্যাকে। কাজেম শাহ মিডফিল্ডার। সে খেলেছে রাইট উইংয়ে। শুরুতেই অ্যাপ্রোচ ছিল রক্ষণাত্মক খেলা। মাঠে সলিড চার ডিফেন্ডার। শুরুতে প্রতিপক্ষকে ভালো করে বুঝে করণীয় ঠিক করতে চেয়েছেন। অথচ অ্যাপ্রোচ হওয়া উচিত ছিল শুরুতেই হাই প্রেসিং ফুটবল। যেটা দ্বিতীয়ার্ধে করেছেন গোল হজমের পরে। যদি আপনি প্রথমার্ধে করতে পারতেন, মনে হয় সিঙ্গাপুর বিপদে পড়ত। সিঙ্গাপুর তখন গুছিয়ে উঠতে পারত না।’

ৃূীূঅ

সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হারের পর বাংলাদেশ দলের এশিয়ান কাপ খেলার স্বপ্নে বড় ধাক্কা লেগেছে। সামনের পথ আরও কঠিন হলেও ২০২৭ এশিয়ান কাপে খেলার আশা শেষ হয়ে যায়নি হামজাদের। বাংলাদেশের ‘সি’ গ্রুপে ভারত, সিঙ্গাপুর ও হংকং দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। সিঙ্গাপুর ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে, সমান পয়েন্ট নিয়েও গোল পার্থক্যের কারণে দুইয়ে হংকং। বাংলাদেশ ও ভারতের পয়েন্ট ১ হলেও গোল পার্থক্যে তিনে বাংলাদেশ, চারে ভারত। বাংলাদেশকে গ্রুপের চূড়ায় থাকতে হলে বাকি চার ম্যাচই জিততে হবে। তখন হামজাদের পয়েন্ট হবে ১৩। ১৩ পয়েন্ট হলেও চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত হবে না। বাকি দলগুলোকে পয়েন্টে বাংলাদেশের নিচে থাকতে হবে। সমান পয়েন্ট হলে গোলের দিক থেকে এগিয়ে থাকতে হবে হামজাদের। এত কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে বাংলাদেশ কি পারবে এশিয়ান কাপ খেলার স্বপ্ন পূরণ করতে? ফাহামিদুল বললেন, ‘আমাদের শুধু নিজেদের কাজের ওপর মনোযোগ রাখতে হবে। এর বাইরে আর কিছুই নয়।’

সাবেক ফরোয়ার্ড এমিলি বললেন, ‘হাতে যে চার ম্যাচ বাকি, তার দুটি বিদেশের মাঠে। আগামী কয়েক মাসে কোচ কীভাবে দলকে সুসংগঠিত করবেন, আর তিনি কী করতে চান, তার ওপরই সবকিছু নির্ভর করবে।’ বাফুফের কমপিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস জানালেন, লম্বা বিরতির পর যেন খেলতে না হয়, অক্টোবরের আগে তাঁরা চেষ্টা করবেন নতুন প্রোগ্রাম ঠিক করতে। এর মধ্যে প্রীতি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করবে বাফুফে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত