Ajker Patrika

বাফুফে নির্বাচনে পার্থক্য গড়ে দেবে জেলার ভোটাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ৩২
Thumbnail image

নানা কারণে এবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনে চোখ দেশের সাধারণ মানুষের। দীর্ঘ ১৬ বছর কাজী সালাহউদ্দিন ও তাঁর কমিটির আধিপত্য শেষে বাফুফেতে এখন   নতুনের জয়োধ্বনির অপেক্ষা। এরই মধ্যে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন তাবিথ আউয়াল ও তরফদার রুহুল আমিন। শেষ পর্যন্ত তরফদার নির্বাচন থেকে সরে না গেলে লড়াইটা বেশ জমবে বলে আশা করছেন ফুটবল-সংশ্লিষ্টদের। গতকাল বৃহস্পতিবার বাফুফের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে অনুমোদন পায় ১৩৩ ডেলিগেট। তাতে ২৬ অক্টোবরের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেল এই ১৩৩ জন। এর মধ্যে বড় অংশের ভোট জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন থেকেই আসবে। তারা নির্বাচনে পার্থক্য গড়ে দেবে বলে মনে করছেন সাবেক এবং বর্তমান সংগঠক ও ক্রীড়ানুরাগীরা।

শেখ মোহাম্মদ আসলাম, আশি ও নব্বইয়ের দশকে দেশের ফুটবলে দ্যুতি ছড়িয়েছেন। খেলেছেন দর্শকনন্দিত দুই ক্লাব ঢাকা আবাহনী ও ঢাকা মোহামেডানে। জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলার ২০১৬ ও ২০২০ সালের বাফুফে নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে গতকাল আজকের পত্রিকাকে তিনি জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে এক্স ফ্যাক্টর হতে পারে জেলার ভোটাররাই, ‘ক্লাবের ভোট যেগুলো আছে এগুলো তো কেনাবেচা প্রথমেই হয়ে যায়। যারা কাউন্সিলর হয়ে আসে, তাদের ক্লাব সুবিধা পায় অনেক ক্ষেত্রে। এমনও আছে খুব একটা খেলাধুলা হয় না, কিন্তু তারা ভোটে লাখ লাখ টাকা দিয়ে নিজেদের বেঁচে দেয়। এই পদ্ধতি যত দিন চালু থাকবে তত দিন নির্বাচনে তো নয়ই, ক্রীড়াঙ্গনেও সুবাতাস বইবে না। জেলার ভোটাররাই পার্থক্য গড়ে দেবে। তারা যেদিকে ভোট দেয়, তারাই জিতে যায়।’

১৩৩ ভোটারের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৮ ভোটার জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের। যদিও সংখ্যাটা ৬২ ছিল। অভিযোগ থাকায় বুধবার বাফুফে ভবনে দিনভর শুনানি চলে। সেখানে বাদ পড়ে গোপালগঞ্জ, লালমনিরহাট, ফেনী ও শেরপুরের নাম। যে কারণে জেলার ভোটসংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৫৮। তবু এই ৫৮ জনের ভোট টানতে হয়তো মরিয়া হয়ে নির্বাচনের মাঠে নামতে হবে দুই প্রার্থীকে।

৬৪ বছরের পুরোনো ক্লাব ফকিরেরপুলের ইয়ংমেন্স থেকে এবার বাফুফে নির্বাচনে ডেলিগেট হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান মাইনু। দীর্ঘদিনের এই সংগঠক এবং ইয়ংমেন্সের সাধারণ সম্পাদকও বাফুফে নির্বাচনে জেলার ভোটারদের মূল প্রভাবক মনে করছেন, ‘আমি ১৫-২০ বছর ধরে তো এমনটাই দেখে আসছি। জেলার ভোট এবার ৫৮টি। তারাই কিন্তু মেজরিটি। সেদিক থেকে অবশ্যই আমি বলল, জেলার ভোটাররা এবারের নির্বাচনেও বড় একটা প্রভাব ফেলবে। তাদের সিংহভাগ যেদিকে ঝুঁকবে, তাদের পাল্লাই ভারী হবে। আমার অভিজ্ঞতা সেটাই বলছে।’

তবে ভোটারদের কথার ওপর মোটেও ভরসা খুঁজে পান না জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক কামরুন নাহার ডানা। সবাই এক রকম না হলেও বেশির ভাগই নাকি টাকার বিনিময়ে ভোট বেঁচে দেয়। তিনি নিজেও বাফুফে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সেই অতীত অভিজ্ঞতা এবং সাম্প্রতিক সময়কাল বিবেচনা করে হতাশার কথাই শোনালেন তিনি, ‘কী আর বলব। ভোটারদের মতামতের কথা বলা মুশকিল। তারা তো সবার থেকে টাকা খায়। রাতে একরকম সকালে আরেক রকম। এ জন্য ফুটবলের উন্নতি হয় না। জেলার সবাই আবার এ রকম না। তবে যারা বিক্রি হয়ে যায়, তারা কখনো ফুটবলের উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে না। নির্বাচিতরাও তাদের নিজের লোক ভাবে। আসলে এই জায়গায়ও (জেলা কাউন্সিলরশিপ) পরিবর্তন দরকার। তৃণমূলে সত্যিকারের ক্রীড়াপ্রেমী না থাকলে ফুটবল এগোবে কী করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত