Ajker Patrika

করোনায় কষ্টে আছেন ফুটবলাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনায় কষ্টে আছেন ফুটবলাররা

ঢাকা: নিহাত জামান উচ্ছ্বাসকে যখন কাল ফোনে পাওয়া গেল, কণ্ঠটা তাঁর ম্রিয়মান। ফোনের ওপ্রান্ত থেকে ভেসে এল ঘুঘু পাখির ডাক। পাখির ডাকটাই বলে দেয় গ্রামে স্বজনদের সঙ্গে লকডাউনের সময়টা কাটাচ্ছেন আরামবাগের এই ফুটবলার।

প্রায় সারা বছর মাঠের ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় বের করতে পারা মধুর হলেও উচ্ছ্বাসের কণ্ঠে ‘উচ্ছ্বাস’টা আর নেই। দেশজুড়ে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হওয়ায় প্রিমিয়ার লিগ বাতিল—পারিশ্রমিক না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় বিমর্ষ তরুণ এই স্ট্রাইকার।

চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের প্রথম ভাগে যে কজন স্থানীয় স্ট্রাইকার আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন, উচ্ছ্বাস তাঁদের একজন। লিগে ১০ ম্যাচে ৫ গোল করেছেন। আছেন দারুণ ছন্দে। এখন পারফরম্যান্সের কথা বাদ দিয়ে তাঁর পারিশ্রমিক আর ফিটনেস নিয়েই যত চিন্তা। লকডাউনে লিগ স্থগিত মানে মৌসুমের বাকি সময় আর্থিক দুর্ভাবনা নিয়ে কাটানো।
কবে খেলা মাঠে গড়াবে, আপাতত সেটার নিশ্চয়তা নেই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে বড় ক্লাবগুলো নিজ খরচায় খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে রাখলেও তুলনামূলক ছোট ক্লাবগুলোর কাছে এ যেন বিলাসিতা! খরচ বাঁচাতে খেলোয়াড়দের যাঁর যাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে আরামবাগ-ব্রাদার্সের মতো আর্থিকভাবে নড়বড়ে ক্লাবগুলো।

দুই বছর আগে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যেসব ক্লাব, আরামবাগ ক্রীড়াচক্র তাদের একটি। তরুণদের নিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটতে চলা ক্লাবটি কেলেঙ্কারির ধাক্কা সামলাতে না পেরে এক ঝটকায় মুখ থুবড়ে পড়ে মাটিতে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলার চেষ্টা থাকলেও খেলোয়াড়দের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণেও ব্যর্থ আরামবাগ।

গত বছর প্রথম দফা লকডাউনে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক পরিশোধে নড়বড়ে অবস্থানে ছিল আরামবাগ। অবনমন অঞ্চলে থাকলেও করোনায় লিগ বাতিল হওয়ায় সে যাত্রায় রক্ষা। এবার অবস্থা আগের চেয়ে করুণ। ১৩ দলের মধ্যে সবার শেষে থেকে লিগের প্রথম ভাগ শেষ করা ক্লাবটি যখন অবনমন এড়ানোর চেষ্টায়, তখনই করোনা–ধাক্কা।

খরচ বাঁচানোর উপায় হিসেবে আরামবাগের ক্লাব কর্মকর্তারা খেলোয়াড়দের নিজ নিজ শহরে পাঠিয়ে দেওয়াটা শ্রেয় মনে করেছে। ছুটিতে নিজ গ্রামে ফেরার পথে শুধু পকেট খরচাটাই পেয়েছেন ক্লাবের খেলোয়াড়রা। লিগ কবে গড়াবে, নাকি বাতিল হবে গতবারের মতো; আর বাতিল হলে মৌসুমের বাকি টাকাটা আদৌ পাওয়া সম্ভব? নানা প্রশ্ন খেলোয়াড়দের মনে।

আরামবাগের স্ট্রাইকার উচ্ছ্বাস তাই বললেন, ‘আরামবাগের অবস্থা সবাই জানে। চেষ্টা করি ক্লাবটা যেন পরের লিগে থাকতে পারে। দ্বিতীয় ভাগে চেষ্টা চলছে ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু পকেটে যে টাকা এনেছি জানি না কীভাবে কী করব। নিজের ফিটনেস নিয়ে কী করব, কী খাব–না খাব...যদি গতবারের মতো লিগ বাতিল হয় তাহলে কী হবে, জানি না।’

পয়েন্ট টেবিলে আরামবাগের ঠিক ওপর অবস্থান ঐতিহ্যবাহী ব্রাদার্সের। ১২ ম্যাচে মাত্র ৫ পয়েন্ট নিয়ে গোপীবাগের দলটার মাথায় ঝুলে আছে অবনমনের খড়্গ। অবনমন এড়াতে পুরোনো সৈনিক এমিলি-আরিফুলদের ফেরালেও ক্লাবের আর্থিক অবস্থা অনেকটা আরামবাগের মতোই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লাবের এক খেলোয়াড়ের দুশ্চিন্তা, রোজা-ঈদ কীভাবে পার করবেন, সে উত্তর তাঁর কাছে অজানা!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত দুই দলের ৩৫ নেতা

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত