Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

‘চুরির ভোটে এমপি হওয়াই সাকিবের অপরাধ’

‘চুরির ভোটে এমপি হওয়াই সাকিবের অপরাধ’
জহির উদ্দিন মিশু, ঢাকা
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২: ২৯

প্রায় এক যুগ বাংলাদেশ ফুটবল দলের গোলপোস্ট সামলেছেন আমিনুল হক। এখন তিনি রাজনীতির মাঠের খেলোয়াড়! বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক তিনি। ফুটবল ছেড়ে রাজনীতিতে আসা সাবেক এই গোলকিপার শুনিয়েছেন তাঁর দুই অধ্যায়—খেলোয়াড় ও রাজনীতিতে আলোছায়ার গল্প। সেই গল্পের উল্লেখযোগ্য অংশ আজকের পত্রিকার পাঠকদের সামনে তুলে ধরেছেন জহির উদ্দিন মিশু। 

প্রশ্ন: খেলার মানুষ আপনি। দীর্ঘদিন ফুটবলের সঙ্গে ছিলেন, সফল গোলকিপারও। কিন্তু ফুটবল ছেড়ে কেন রাজনীতিকে বেছে নিলেন? 
আমিনুল হক: ১৯৯১ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় আসে স্বৈরাচার এরশাদকে হটিয়ে, তখন আমার বয়স ১১ কি ১২ হবে। মনে আছে, সে সময় বিজয় মিছিল করেছিলাম পল্লবীতে। তখন থেকে বিএনপি ও জিয়াউর রহমানের প্রতি একটা ভালো লাগা, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) প্রতি একটা ভালো লাগা কাজ করে। অন্য রকম অনুভূতি কাজ করত জিয়া পরিবারের জন্য। সেখান থেকে বিষয়টা লালন করতে থাকি। যখন ফুটবল থেকে বিদায় নিই, তখন চিন্তা করেছি, যেহেতু এত দিন দেশের মানুষের জন্য খেলেছি, ভবিষ্যতে দেশের মানুষের পাশে থেকে কিছু করা যায় কি না, সেই চিন্তাভাবনা থেকেই রাজনীতিতে যোগ দিই। এভাবেই রাজনীতির সঙ্গে জড়ানো। আর যেদিন থেকে রাজনীতিতে যোগ দিই, চেষ্টা করেছি সততা আর নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার। 

প্রশ্ন: সাকিব আল হাসানকে হত্যা মামলার আসামি করা নিয়ে অনেক আলোচনা। আপনাকে কারাগারে থাকতে হয়েছে। বহু রাজনৈতিক, হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে আপনার বিরুদ্ধে। একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে এমনটা হওয়া কতটা সমীচীন? 
আমিনুল: দেখুন, প্রায় ১৭ বছর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে যেসব মামলা দিয়েছে, সবই তো মিথ্যা, বানোয়াট, সাজানো। নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার নামে ৪২টার ওপরে মামলা আছে, এগুলোর একটারও ভিত্তি নেই। আমরা তো আর গাড়ি ভাঙচুর করিনি, বোমা ফাটাইনি কিংবা মেট্রোরেলে বা সেতু ভবনে আগুন দিইনি। এ ধরনের হাজার হাজার মামলা দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হয়েছে। আসলে স্বৈরাচার সরকার নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বছরের পর বছর এমন বহু মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমি চাই না এ ধরনের মিথ্যা মামলার শিকার আর কেউ হোক। আর কেউ যদি অপরাধী হয়, তার বিচার হোক, সেটা আমরা চাই। এখন হচ্ছে কী, এই স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় থাকতে যেভাবে ছাত্রদের আন্দোলনে গুলি চালিয়েছে, যেভাবে হত্যা করেছে, এটা তো শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সকল এমপি-মন্ত্রীর নির্দেশনায় হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার জন্য তারা সবাই দায়ী, তাই না? সেদিক থেকে যদি চিন্তা করি, সাকিব বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি ক্রিকেটার। তার বোঝা উচিত ছিল, আমাকে তো বাংলাদেশের মানুষ একভাবে চেনে। আমরা জানি, আওয়ামী সরকার জনগণের ভোট চুরি করে জোর করে ক্ষমতায় বসে—এই ধরনের একটি সংসদে সাকিবের মতো একজন খেলোয়াড়ের এমপি হওয়া—এটাই ছিল তার বড় অপরাধ। তার ভাবা উচিত ছিল, যেখানে তাকে মানুষ ভিন্নভাবে চেনে, সেখানে বিনা ভোটে সংসদ সদস্য হওয়ার চেয়ে না হওয়া তো ভালো ছিল। শেষ পর্যন্ত দেখুন, শেখ হাসিনার দাম্ভিকতা, স্বৈরাচারী ক্ষমতার পতন হয়েছে। আর সেই সংসদে সাকিব-মাশরাফির থাকা—এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভালোভাবে নেয়নি। আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে, গত ১৫ বছর আমি বহু মামলার শিকার হয়েছি, হয়রান করা হয়েছে, রক্তাক্ত করা হয়েছে। আপনারা দেখেছেন। এমন কিছু কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে হোক, কখনোই চাই না। 

প্রশ্ন: রাজনীতির মাঠে যদি গোলকিপারের মতো কোনো দায়িত্ব পান, নেবেন? এই ধরুন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কিংবা বাফুফে সভাপতি...। 
আমিনুল: এটা নিয়ে এখন কথা বলতে চাই না। দেশের অবস্থা, সবকিছুতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসুক। আমার যেটা প্রত্যাশা, বাংলাদেশের মানুষ একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। দেখুন, এই কয়েক বছরে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছে, অনেকে জীবন দিয়েছে। এখন চাওয়া, সবাই ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে পাক, এ দেশের জনগণই বেছে নেবে সেটা। তারাই সব ক্ষমতার মালিক। তারপর কী পাব না পাব, সেটা দেখা যাবে। এখন আপাতত এটা নিয়ে ভাবছি না। 

প্রশ্ন: ক্রীড়াঙ্গন এখন অনেকটাই স্থবির। ক্রিকেট-ফুটবল বাদে আর কিছুই ঠিকঠাক চলছে না। এ ব্যাপারে কী বলবেন? 
আমিনুল: এত বছরের স্বৈরাচার সরকারকে হটাতে আমাদের বহু নেতা-কর্মী গুম, খুন এবং হত্যার শিকার হয়েছে। ছাত্র, সাধারণ মানুষ এবং বিএনপি নেতা-কর্মী নির্যাতিত, খুন হয়েছে। এত বড় একটা দুর্যোগের পর স্থবিরতা থাকাটা স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। ক্রিকেটে পরিবর্তন হয়েছে, ফুটবলেও হবে। এভাবে ধীরে ধীরে ক্রীড়াঙ্গনে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। 

প্রশ্ন: আপনি ভবিষ্যতে কেমন ক্রীড়াঙ্গন চান? 
আমিনুল: এককথায় যদি বলি, দুর্নীতিমুক্ত, রাজনীতির প্রভাবের বাইরে সুন্দর একটা ক্রীড়াঙ্গন চাই। যেখানে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক লোকজন থাকবে না, যেখানে মাঠের মানুষ থাকবে। যারা গত ১৭ বছর বঞ্চিত হয়েছে, তারা থাকবে; খেলার মানুষ থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হারমার ঘূর্ণিতে বিপদে পাকিস্তান

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ২০
হারমার ঘূর্ণিতে বিপদে পাকিস্তান
হারমার ঘূর্ণিতে বিপদে পাকিস্তান

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিন দুই দল মিলে হারিয়েছে ১০ উইকেট। এর মধ্যে চারটা পাকিস্তানের। দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ২ উইকেট কম হারালেও বিপদে আছে স্বাগতিক দল। শেষ বিকেলে অফস্পিনার সাইমন হারমানের ঘূর্ণিতে স্বস্তিতে নেই শান মাসুদের দল।

পাকিস্তানের করা ৩৩৩ রানের জবাবে ৪০৪ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিকরা। এদিন ৩৫ ওভার ব্যাট করেছে তারা। শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। দলীয় ১২ রানে ফেরেন ইমাম উল হক। ৯ রান করা এই ওপেনারকে এলবিডব্লু করেন হারমার। ১৬ রানে জোড়া ধাক্কায় খায় পাকিস্তান। রানের খাতা না খোলা মাসুদকেও একইভাবে আউট করেন এই স্পিনার। ৬ রান করা আব্দুল্লাহ শফিককে ফেরান কাগিসো রাবাদা।

বিপদ সামাল দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন বাবর আজম ও সৌদ শাকিল। দলীয় ৬০ রানে ১১ রান করে শাকিল ফিরে গেলে চতুর্থ উইকেট হারায় পাকিস্তান। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে দিনের বাকি অংশ নির্বিঘ্নে পার করে দেন বাবর। তৃতীয় দিন শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৯৪ রান। ২৩ রানের লিড পেয়েছে তারা। বাবর ৪৯ ও রিজওয়ান ১৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিন ব্যাট করতে নামবেন।

বাকি ৬ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে স্কোরবোর্ড ভারী করতে না পারলে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানের ভাগ্যে খারাপ কিছুই যে আছে তা বলা বাহুল্য। স্বাগতিকদের পতন হওয়া ৪ উইকেটের মধ্যে তিনটাই নিয়েছেন হারমার। ১৩ ওভার তাঁর খরচ ২৬ রান।

প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা লিড নিতে পেরেছে মূলত সেনুরান মুথুসামি ও কাগিসো রাবাদার ব্যাটিং দৃঢ়তায়। দশম উইকেটে ৯৮ রান করেন দুজন। ৭১ রান করে রাবাদার বিদায়ে এই জুটি ভাঙে। দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ইতিহাসে ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে এর চেয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আর কেউ। রেকর্ড গড়ার পর রাবাদা আউট হওয়ায় ৮৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠে ছাড়েন মুথুসামি।

৭৯ রানে ৬ উইকেট নেন অভিষিক্ত আসিফ আফ্রিদি। পাকিস্তানের টেস্ট জার্সি গায়ে জড়ানোর সময় তাঁর বয়স ছিল ৩৮ বছর ২৯৯ দিন। টেস্টের সুদীর্ঘ ১৪৮ বছরের ইতিহাসে এত বেশি বয়সে অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখাতে পারেননি আর কেউ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জিম্বাবুয়ের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হারল আফগানিস্তান

ক্রীড়া ডেস্ক    
বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে লজ্জার হারের সাক্ষী হলো আফগানিস্তান। ছবি: ক্রিকইনফো
বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে লজ্জার হারের সাক্ষী হলো আফগানিস্তান। ছবি: ক্রিকইনফো

হারারে টেস্টে দুই দলের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংয়ের পর ম্যাচের ভবিষ্যত একরকম স্পষ্ট হয়ে উঠে। আফগানিস্তানের বাজে ব্যাটিংয়ের পর লিড নেয় জিম্বাবুয়ে। নাটকীয় সমাপ্তির জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়াতে হতো সফরকারী দলকে।

সেটা করে দেখাতে পারেনি আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসেও তাদের বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনী অব্যাহত ছিল। তাই আর ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি জিম্বাবুয়েকে। একমাত্র টেস্টে আফগানদের ইনিংস ও ৭৩ রানে হারিয়েছে ক্রেইগ আরভিনের দল। দাপুটে জয়ে জিম্বাবুয়ে যেন বুঝিয়ে দিল, ওয়ানডে, টি–টোয়েন্টিতে দারুণ করলেও টেস্টে এখনো অনেক পথ হাঁটা বাকি আফগানিস্তানের।

একমাত্র ইনিংসে ১২১ রান করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন বেন কারান। সিকান্দার রাজার অবদান ৬৫ রান। নিক ওয়েলচ এনে দেন ৪৯ রান। এছাড়া ব্র্যাড ইভান্স ৩৫ ও ব্রেন্ডন টেলরের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। দল হারলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখলেন জিয়াউর রহমান। অভিষেক ম্যাচেই ৭ উইকেট নেন এই ডানহাতি পেসার। তবে ব্যাটারদের ব্যর্থতার কারণে বিফলে গেল তাঁর দারুণ বোলিং।

জিয়ার মতো কেউ ৭ উইকেট নিতে না পারলেও দুই ইনিংসেই বেশ ধারাবাহিক ছিলেন জিম্বাবুয়ের বোলাররা। ব্লেসিং মুজারাবানি, ইভান্স, রিচার্ড এনগারাভাদের বোলিং তোপে মুখ থুবড়ে পড়ে আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইন। প্রথম ইনিংসে ১২৭ রানে অলআউট হয় তারা। ফিফটি পাননি কেউ। সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন রমমানুল্লাহ গুরবাজ। ৩০ রান আসে আব্দুল মালিকের ব্যাট থেকে। ২২ রানে ৫ ব্যাটারকে ফেরান ইভান্স। মুজারাবানির শিকার তিনটি।

ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে আফগানিস্তান। ২৩২ রানে পিছিয়ে ছিল অতিথিরা। এ যাত্রায় তারা গুটিয়ে যায় ১৫৯ রানে। ইবরাহিম জাদরান খেলেন সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস। বাহির শাহ করেন ৩২ রান। ৩৭ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার এনগারাভা। এবারও ৩ উইকেট ঝুলিতে পুরেন মুজারাবানি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হ্যাটট্রিক করে রিয়ালকে ‘হুমকি’ দিয়ে রাখলেন বার্সা তারকা

ক্রীড়া ডেস্ক    
অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন লোপেজ। এটা তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। ছবি: এক্স
অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন লোপেজ। এটা তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। ছবি: এক্স

উয়ফা চ্যাম্পিয়নস লিগে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে বার্সেলোনার ৬–১ গোলের জয়ের নায়ক ফারমিন লোপেজ। দারুণ এক হ্যাটট্রিকে ম্যাচের পুরো আলো নিজের দিকে টেনে নেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কাম উইঙ্গার। এবার রিয়াল মাদ্রিদকে হারানোর হুমকি দিয় রাখলেন এই স্প্যানিশ তারকা।

নিউক্যাসল ইউনাইটেডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের যাত্রা শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে পিএসজির কাছে হেরে বসে বার্সা। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর দরকার ছিল স্প্যানিশ জায়ান্টদের। অলিম্পিয়াকোসকে উড়িয়ে সে কাজটা বেশ ভালোভাবেই করেছে কাতালানরা।

সম্প্রতি হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ম্যাচটা আরও একটা কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বার্সার জন্য। লা লিগায় আগামী ২৬ অক্টোবর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালের আতিথেয়তা নেবে তারা। মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোর আগে এই জয়ের আত্মবিশ্বাস বেশ কাজে দেবে হান্সি ফ্লিকের দলের জন্য।

অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের পর লোপেজ বলেন, ‘দারুণ অনুভূতি নিয়ে আমরা এল ক্লাসিকোতে খেলতে নামব। এই ম্যাচটা সবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করি রিয়ালের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করতে পারব এবং জয় তুলে নেব। আমি সব সময় চেষ্টা করি মাঠে নিজের সেরাটা দেওয়ার। যেন আমি আরও বেশি সুযোগ পাই।’

প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিক করায় একটু বেশিই খুশি লোপেজ। সামনের দিনগুলোতেও দলের জয়ে অবদান রাখতে চান তিনি, ‘আমি সত্যিই খুব খুশি। আমাদের এমন একটা জয়ের প্রয়োজন ছিল। ম্যাচটা আমরা ভালোভাবেই শেষ করেছি। আমাদের নজর এখন এল ক্লাসিকোর দিকে। এখন আমরা ক্লাসিকোর দিকে তাকিয়ে আছি। এটা আমার প্রথম হ্যাটট্রিক। হ্যাটট্রিক করে আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। আমি সামনের ম্যাচগুলোতেও আমার কাজ চালিয়ে যাব।’

দুটি পজিশনে খেলতে পারলেও নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চান না লোপেজ। কোচ যেখানে চাইবেন সেখানেই খেলতে প্রস্তুত তিনি, ‘নিজেদের গতি ধরে রাখার জন্য আমি পুরো দলের প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ। আমি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডে খেলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমার কাজ হলো পারফরম্যান্সের উন্নতি করা। কোচ যেখানে চাইবে আমি সেখানেই খেলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এশিয়া কাপ ট্রফি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের এবার আরেক ‘নাটক’

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৬
ভারতের হাতে এশিয়া কাপের ট্রফি দেওয়ার নতুন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন এসিসি প্রধান মহসিন নাকভি। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের হাতে এশিয়া কাপের ট্রফি দেওয়ার নতুন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন এসিসি প্রধান মহসিন নাকভি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের এশিয়া কাপ জয়ের এক মাস হতে চলল। দুবাইয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নবম এশিয়া কাপের শিরোপা ঘরে তোলে সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারত। কিন্তু সেই ট্রফি যে এখনো বুঝেই পায়নি সূর্যকুমারের দল।

টেলিকম এশিয়া স্পোর্ট নামে এক ওয়েবসাইটের গতকালের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নাকভি নভেম্বরে দুবাইয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছেন। সেখানে ভারতের প্রাপ্য এশিয়া কাপ ট্রফি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। ১০ নভেম্বর হতে যাচ্ছে এই অনুষ্ঠান। ভারতের বার্তা সংস্থা আইএএনএস-এর বরাতে নাকভি বলেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ও এসিসির মধ্যে চিঠি আদানপ্রদান হয়েছে। এসিসি সূর্যকুমার যাদব ও তাঁর দলকে ট্রফি দিয়ে দেবে। বিসিসিআই কর্মকর্তা রাজীব শুক্লা সেখানে থাকবেন।’

এশিয়া কাপের ট্রফি দুবাইয়ে আইসিসির সদর দপ্তরে রাখা হয়েছে। সেই ট্রফি বিসিসিআইয়ের দপ্তরে পাঠিয়ে দিতে হবে বলে দাবি ভারতের। বিসিসিআইয়ের এক সূত্রের বরাতে এনডিটিভি গতকাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নাকভির এমন শর্তে বোর্ড রাজি নয়। এসিসি প্রধানের হাত থেকে কিছুতেই ট্রফি নেবেন না বিসিসিআই কর্মকর্তারা। এখন তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) ওপর নির্ভর করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এদিকে মহসিন নাকভি একই সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ২০২৫ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতের হাতে ট্রফি তুলে দিতে চেয়েছিলেন নাকভি। কিন্তু এসিসি প্রধান মঞ্চে থাকলে শিরোপা নেবেন না সূর্যকুমার, জসপ্রীত বুমরা, হার্দিক পান্ডিয়ারা—এমন শর্ত জুড়ে দিয়েছিল ভারত। কিন্তু নাকভি যে ছিলেন নাছোড়বান্দা। যার ফলে ট্রফি ছাড়া উদযাপন করে ক্রিকেটে বিরল এক ঘটনার জন্ম দিয়েছিল সূর্যকুমারের দল।

এ বছরের এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের গুলিতে পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উত্তপ্ত। মে মাসে যখন দুই দেশ সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছিল, তখন ভারত এর নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। ২৮ সেপ্টেম্বর ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সূর্যকুমার যাদব-তিলক ভার্মাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছিলেন, ‘মাঠের ক্রিকেটেও অপারেশন সিঁদুর। সেই একই ফল। এবারও জিতল ভারত।’ নাকভিও তখন পাল্টা দিয়েছিলেন। পিসিবি চেয়ারম্যান তখন লিখেছিলেন, ‘যদি যুদ্ধেই তোমাদের গর্ব করার মানদণ্ড হয়, তাহলে ইতিহাসের পাতায় এরই মধ্যে পাকিস্তানের কাছে তোমাদের লজ্জাজনক পরাজয়ের কথা লেখা হয়ে গেছে। ক্রিকেট দিয়ে সেটা বদলানো সম্ভব না।’

এশিয়া কাপ শেষে ভারত-পাকিস্তান দুই দলই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। ভারত নিজেদের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই করেছিল। এবার ভারতীয় ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছে তিন ওয়ানডে ও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। আর পাকিস্তান আতিথেয়তা দিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। রাওয়ালপিন্ডিতে আজ চলছে পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত