Ajker Patrika

হামজা-শমিতকে নিয়েও নেপালকে হারাতে পারল না বাংলাদেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হামজার জোড়া গোলে সমতায় ফেরার পরও শেষ পর্যন্ত নেপালের বিপক্ষে ড্র করেছে বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
হামজার জোড়া গোলে সমতায় ফেরার পরও শেষ পর্যন্ত নেপালের বিপক্ষে ড্র করেছে বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রথমার্ধে বিবর্ণ বাংলাদেশ বদলে যেতে শুরু করে দ্বিতীয়ার্ধে। নেপথ্যে আর কেউ নন হামজা চৌধুরী। জোড়া গোল করে ৫ বছর পর নেপালকে হারানোর সুবাস এনে দেন ইংল্যান্ড প্রবাসী এই মিডফিল্ডার। কিন্তু হংকং ম্যাচের মতো ঘরের মাঠে শেষের ভূত চেপে ধরল আবারও। হামজা-শমিতকে নিয়েও তাই নেপালকে হারাতে পারল না বাংলাদেশ। জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ প্রীতি ম্যাচটি ড্র হলো ২-২ গোলে।

গত অক্টোবরে সর্বশেষ হংকং ম্যাচের একাদশ থেকে তিনটি পরিবর্তন আনেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। শমিত শোম, শাকিল আহাদ তপু ও চোটে থাকা শেখ মোরসালিনকে বসিয়ে রাখেন তিনি। শুরুর একাদশে রাখেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও সোহেল রানা জুনিয়র।

জাতীয় স্টেডিয়ামে ১০ মিনিটে ফাহিমের ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি সোহেল রানা জুনিয়র। ২৫ মিনিটে রাকিব-ফাহিমের তালমেল ঠিক না হওয়ায় খোলেনি গোলের দুয়ার।২৯ মিনিটে সুমিত শ্রেষ্ঠার কাটব্যাক থেকে নেপালকে এগিয়ে দেন রোহিত চাঁদ। বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা ঝাঁপিয়ে পড়েও মাটি কামড়ানো সেই শট আটকাতে পারেননি। ঠিক পরের মিনিটেই আক্রমণে ওঠে বাংলাদেশ। কিন্তু রাকিব হোসেনের পাস থেকে ফাহিমের নেওয়া শট সহজেই আটকে দেন নেপাল অধিনায়ক কিরণ লিম্বু।

রাকিবের সহজাত পজিশন রাইট উইং হলেও আজ কাবরেরা তাঁকে খেলান বাঁ প্রান্তে। ঠিক কী কারণে সেই উত্তর হয়তো তিনিই দিতে পারবেন। ৪৩ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে রাকিবের ক্রসে ফাহিমের হেড লোপ্পা বলের মতো তালুবন্দী করেন কিরণ লিম্বু।

বিরতির পর শুরুতেই সোহেল জুনিয়রের জায়গায় মাঠে নামন কানাডা প্রবাসী শমিত শোম।৪৬ মিনিটে দর্শনীয় এক গোলে পুরো স্টেডিয়াম কাঁপিয়ে দেন হামজা। ফাহিমের পাঠানো ক্রস নেপালের এক ডিফেন্ডার হেডে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন। বল চলে যায় জামালের কাছে। তাঁর বাড়ানো ভলিতে বক্সের ভেতরে দারুণ এক বাইসাইকেল কিকে কোনাকুনিভাবে বল জালে পাঠান হামজা।

তিন মিনিট পর আবারও চলে আসে গোলের সুযোগ। সুমন শ্রেষ্ঠার করা চার্জে বক্সের ভেতর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রাকিব। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাশি বাঁজান লঙ্কান রেফারি কসুন লাকমাল। যদিও পরে রিপ্লেতে দেখা যায় রাকিবকে সেভাবে কোনো স্পর্শই করেননি। এমন উপহার হামজাই বা কাজে লাগাতে ভুল করেন কীভাবে । ৪৯ মিনিটে স্পট কিক থেকে পানেনকা শটে কিরণকে বোকা বানান তিনি। জাতীয় দলের জার্সিতে এটি তাঁর চতুর্থ গোল।

এগিয়ে যাওয়ার পর নেপালকে আর সেভাবে চড়াও হওয়ার সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ। ৬২ মিনিটে কিছুট কাঁপন অবশ্য ধরিয়ে দেন দীনেশ হেঞ্জন। তাঁর শট বারে লেগে ফিরে আসে বাংলাদেশের অর্ধে।

৭০ মিনিটে একযোগে তিন পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। জায়ান আহমেদ, ফাহিম ও সোহেলের জায়গায় নামেন শাকিল আহাদ তপু, শাহরিয়ার ইমন ও মোহাম্মদ হৃদয়। ইমন বল নিয়ে ছোটার কয়েকটি সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি। ৮০ মিনিটে আসে আরেকটি মুহূর্ত । অভিষেক হয় আরেক প্রবাসী কিউবা মিচেলের। হামজাকে উঠিয়ে মাঠে নামানো হয় তাঁকে। হামজা অবশ্য চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন। তাঁর চেয়ে বেশি ব্যথায় ভুগছিলেন জায়ান।

নেপালকে হারিয়ে হামজা–জায়ানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকার কথা ছিল বাংলাদেশি সমর্থকদের। কিন্তু আবারও যে শেষ মুহূর্তের হতাশায় পুড়তে হবে তা কে জানত। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে দীনেশের কর্নার থেকে দারুণ এক ফ্লিকে নেপালকে সমতা ফেরান অনন্ত তামাং। তা নাগালের মধ্যে পেয়েও ঠেকাতে পারেননি বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা। ভারত ম্যাচের আগে তাই শেষ মুহূর্তের জুজু কাটানোর চিন্তা থেকেই গেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...