Ajker Patrika

ওডিশাকে হারিয়ে কিংস অ্যারেনায় অপরাজিতই থাকল বসুন্ধরা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ৩২
Thumbnail image

শুরুটা হলো নড়বড়ে, গোল হজমের মধ্য দিয়ে। সঙ্গে পাঁচ খেলোয়াড়ের নিষেধাজ্ঞা তো ছিলই। সব চাপ আর বিতর্ককে এক পাশে রেখে নিজেদের মাঠে জ্বলে উঠল বসুন্ধরা কিংস। ক্লাব ফুটবলে কিংস অ্যারেনার আন্তর্জাতিক অভিষেকটা স্মরণীয় থাকল দারুণ এক জয়ে। 

মাজিয়ার কাছে হারে শুরু হয়েছিল বসুন্ধরা কিংসের ২০২৩-২৪ এএফসি কাপ। জয়ে ফিরতে মরিয়া বসুন্ধরার জন্য অনুপ্রেরণা ছিল নিজেদের মাঠ কিংস অ্যারেনায় অপরাজেয় থাকার রেকর্ড। সেই রেকর্ডটা অক্ষুণ্ন রইল আজকেও। পিছিয়ে পড়েও ওডিশা এফসির সঙ্গে ৩-২ গোলের জয়ে এএফসি কাপে জয়ে ফিরল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা। 

কিংস অ্যারেনায় দলকে সমর্থন জোগাতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন পাঁচ হাজারের বেশি দর্শক। নিজেদের মাঠ আর সমর্থকদের সমর্থনে উজ্জীবিত বসুন্ধরা আক্রমণে শুরু থেকেই। ম্যাচের পাঁচ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ স্বাগতিকদের। মাঝমাঠ থেকে রবসন রবিনহোর তুলে দেওয়া বলে বাঁ প্রান্ত ধরে শট নিয়েছিলেন দরিয়েলতন গোমেজ। শট ঠেকিয়ে দেন ওডিশা গোলরক্ষক অমরিন্দর সিং। 

মাজিয়া ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও বলের দখল নিজেদের পায়ে রেখেও প্রথম গোল খেয়েছে বসুন্ধরাই। ১৯ মিনিটে মাভিমিংথাঙ্গা জেরির সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে বক্সে বল বাড়ান লালডিনলিয়ানা। বাড়ানো বলে ডান প্রান্ত ধরে দ্রুতই কোনাকুনি শট নেন ওডিশার ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ডিয়েগো মউরিসিও। জিকোর পরিবর্তে গোলপোস্টের নিচে থাকা গোলরক্ষক মেহেদি হাসান ঠেকাতে পারেননি সেই শট। 

শুরুতে পিছিয়ে পড়ায় মাজিয়া ম্যাচের মতো ফল হওয়ার একটা শঙ্কা ছিল। প্রথমার্ধে চার মিনিটের ব্যবধানে দুবার সুযোগ নষ্ট হওয়ায় শঙ্কাটা এক প্রকার ঝেঁকেও বসেছিল বলতে গেলে। ৩২ মিনিটে বক্সে দরিয়েলতনের কাটব্যাক থেকে ভালো শট নেওয়ার সুযোগ ছিল রবসনের। খানিকটা দ্বিধা নিয়ে রবসন যে শট নিলেন সেটি ঠেকিয়ে দেন ওডিশা ডিফেন্ডার লালডিনলিয়ানা। ৩৬ মিনিটে দরিয়েলতনের শট খুঁজে পায়নি জাল। 

তবে তিন মিনিট পরেই গোল না পাওয়ার আক্ষেপ মিটে গেছে স্বাগতিকদের। ৩৯ মিনিটে বাঁ প্রান্ত ধরে দারুণ দক্ষতায় ওডিশার ফুটবলারকে পরাস্ত করে টাচ লাইন থেকে বক্সে চিপ করেন রবসন রবিনহো। রবসনকে ঠেকাতে গোলরক্ষক অমরিন্দর সিংও চলে গিয়েছিলেন, তাতে গোলপোস্ট হয়ে যায় ফাঁকা। ফাঁকা পোস্টে রবসনের চিপ ধরে হেডে সোজা পোস্টে বল ঢোকান আরেক ব্রাজিলিয়ান মিগেল দামাশিনা। 

প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে বসুন্ধরার দর্শকদের আনন্দে ভাসান দরিয়েলতন গোমেজ। ডান প্রান্ত ধরে রাকিব হোসেনের ক্রস ধরে ওডিশার দুই ফুটবলারের মাঝ দিয়ে হেড নেন ব্রাজিলিয়ান দরিয়েলতন। ওডিশার গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে হেডে বল জালে জড়াতেই ব্যবধান বড় হয় বাংলাদেশ সেরাদের। 

দ্বিতীয়ার্ধে দরিয়েলতনের দ্বিতীয় গোলেই নিশ্চিত হয়ে যায় বসুন্ধরার জয়। ৫৪ মিনিটে অধিনায়ক রবসনের বুদ্ধিদীপ্ত এক পাস ধরে ওডিশা গোলরক্ষকের পায়ের মাঝখান দিয়ে গোল করে জার্সি খোলা উদ্‌যাপন করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। জার্সি খুলে অবশ্য হলুদ কার্ডও দেখেছেন পরে। 

চার মিনিট পরেই এক গোল প্রায় শোধই করে ফেলেছিল ওডিশা। আহমেদ জাওয়ার ফ্রিকিক থেকে মাভিমিংথাঙ্গা জেরির হেড আটকায় গোলপোস্টে। 

  পিছিয়ে পড়েও তিন পয়েন্টের স্বস্তি বসুন্ধরা কিংসের৬৬ মিনিটে অবশ্য ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলে ওডিশা। বসুন্ধরার বক্সের ভেতর জটলাকে কাজে লাগিয়ে বাঁ পায়ের শটে গোলের ব্যবধান কমান বদলি ডিফেন্ডার জেরি লালরিনজুয়ালা। 

ব্যবধান ৩-২ হওয়ায় ম্যাচটা হেলে ছিল দুই দলের দিকেই। রক্ষণাত্মক খেললে বিপদ বাড়তে পারে এমন শঙ্কা থেকে আক্রমণে গতি বাড়ায় বসুন্ধরা। শেষ দিকে স্বাগতিকেরা সুযোগ নষ্ট করেছে হালিখানেক। ৬৮ মিনিটে বক্সের ভেতর দারুণ ড্রিবলিংয়ে ওডিশার তিন খেলোয়াড়কে হার মানালেও রবসন শট রাখতে পারেননি পোস্টে। ৭৩ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও হ্যাটট্রিকের সুযোগ নষ্ট করেন দরিয়েলতন। ৭৫ মিনিটে ববুরবেকের হেড আটকায় ক্রসবারে। শেষ পর্যন্ত কোন দল গোল না পাওয়ায় কিংস অ্যারেনায় ম্যাচ শেষ হয় বসুন্ধরার তিন পয়েন্ট পাওয়ার মধ্য দিয়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত