Ajker Patrika

মায়ের স্বপ্ন পূরণ করা জাকের দেশের জন্য বড় কিছু করতে চান

ক্রীড়া ডেস্ক
আপডেট : ২৮ মে ২০২৪, ১৪: ২১
Thumbnail image

জাকের আলী অনিক ক্রিকেটে কীভাবে এলেন জানেন? না জানলে তাঁর মুখ থেকেই শুনুন, ‘ক্রিকেটে আসার গল্পটা...বাংলাদেশের ক্রিকেট দেখে আসা। ২০০৭ থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট খুব ভালোভাবে অনুসরণ করি। তখন থেকেই ইচ্ছে ছিল বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেট খেলব। বিশেষ করে, ২০০৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ—তখন থেকেই আমি ক্রিকেট খুব ভালোভাবে বুঝি। তখন থেকেই আমার ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা।’ 

জাকেরের এই গল্পটা হয়তো অনেকে জানেন। ক্রিকেটের প্রতি তাঁর এই ভালোবাসা দেখা গেছে গত মার্চে, সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও ৩৪ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে সবাইকে মুগ্ধ করেছিলেন। এরপর সিলেটের এই ‘লোকাল হিরো’ই হয়ে ওঠেন ‘জাতীয় হিরো’। ম্যাচের পর তাঁর বোনের মুখে জাকেরের গল্প তো সবাই শুনেছেন। 

বাংলাদেশের হয়ে ২৬ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের অভিষেকটা হয়েছিল গত বছরের অক্টোবরে। তবে ফোকাসটা পান শ্রীলঙ্কা সিরিজে। আর এখন তিনি বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলেও জায়গা করে নিয়েছেন। দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়াটাকে কাজে লাগাতে চান জাকের, ‘দেশের হয়ে খেলাটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। আর সেটা যদি বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে হয়, তাহলে তো আরও ভালো। যখন থেকে শুনলাম (বিশ্বকাপ দলে) আমি আছি, তখন থেকেই ম্যাচ বাই ম্যাচ দেখা শুরু করে দিয়েছি। কার সঙ্গে কী রকম খেলতে হবে, কোন প্রতিপক্ষের সঙ্গে কী রকম স্ট্র্যাটেজি হওয়া উচিত—আমি ও রকম চিন্তাভাবনা করছি, ওভাবে আগাচ্ছি।’ 

জাকেরের এসব পুরোনো দিনের স্মৃতি আর বিশ্বকাপ পরিকল্পনার কথা জানা গেছে আজ। বিশ্বকাপ দলে থাকা সদস্যদের নিয়ে ‘দ্য গ্রিন রেড ডে’ নামে নিয়মিত এক ভিডিও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে বিসিবি। এই পর্বে ছিল জাকেরের আড়াই মিনিটের সাক্ষাৎকার। সেই ভিডিও নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছে বিসিবি। সেখানে জাকের আরও বলেছেন, ‘দল হিসেবে আমি চাইব, আমরা প্রতিটি ম্যাচে ধাপে ধাপে ভালো পারফরম্যান্স করব, জিতব। নিজের দেশের জন্য বড় কিছু করব। সেটাও একটা বিষয় যে, মাথায় রাখতে হচ্ছে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে হবে। আমাকে যেভাবে দলে স্বাগত জানানো হয়েছে, ওই জিনিসটাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে। আমাকে যেভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে, ওটা খুবই স্পেশাল ছিল।’ 

দেশের হয়ে খেলছেন। এটা গর্বের বিষয় জাকের ও তাঁর পরিবারের জন্য। মায়ের স্বপ্নপূরণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক গর্ব অনুভব করে। মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল, আমি দেশের হয়ে খেলব। সব সময় বলত—তোর তামিম ভাই, সাকিব ভাই, মাশরাফি ভাইদের দলে তুই কবে খেলবি। এটাই আমার মায়ের স্বপ্ন ছিল। আসলে আমার মা এই জিনিসগুলোতে খুব গর্ব অনুভব করে। বাবা যখন ছিলেন, মাঠে বসে থাকতেন। বাবা যখন থাকতেন না, আমার বোন নিয়ে যেত। আর সবচেয়ে বড় কথা, আমার বড় ভাইকে দেখেই ক্রিকেটের প্রতি আরও বেশি আগ্রহ জন্মায়। যখন আমি বাংলাদেশের ক্রিকেট দেখা শুরু করি, ওই সময় আমার ভাইও ক্রিকেট খেলত। দুইয়ে মিলে আমি সবার সমর্থন পেয়েছি।’ 

জাকেরের ছোটবেলার স্বপ্নটা বড় হয়েছে বিকেএসপিতে এসে। সেখানের বড় ভাইদের দেখে বড় স্বপ্ন দেখতে শেখেন তিনি, ‘আমি ২০১০ সালে ট্রায়াল দিই বিকেএসপিতে। বিকেএসপিতে আসার পর স্বপ্নগুলো বড় হয় আস্তে আস্তে। আসলে আমার স্বপ্ন শুরুতে এত বড় ছিল না। তখনই বড় ভাইদের কাছ থেকে দেখলাম, আসলে স্বপ্নগুলো বড় করতে হবে। যদি আমি হবিগঞ্জে বসে থাকতাম, আমার কাছে মনে হয় না এত দূরে আসতে পারতাম।’ 

যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। স্বাগতিকদের বিপক্ষে হেরেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। জাকের নিজেও উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। তবে অতীতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে না পারলেও এবার বড় কিছু অর্জনের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি, ‘অবশ্যই ইচ্ছে থাকবে, আমরা আগে যে অর্জনগুলো করতে পারিনি, এ বছর যেন এ রকম কিছু অর্জন করতে পারি, যেটা আগে কখনো হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত