Ajker Patrika

নতুন মাঠে নতুন যুগে বাংলাদেশ 

আহমেদ রিয়াদ, গোয়ালিয়র থেকে
নতুন মাঠে নতুন যুগে বাংলাদেশ 

সাদা পোশাক খুলে এবার রঙিন পোশাকের লড়াই। লাল বল থেকে খেলাটা সাদা বলে আসতেই দুই দলে বড় পরিবর্তন। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ভারতীয় দলে, টেস্ট দলের একজন সদস্যও নেই তাদের টি-টোয়েন্টি দলে। একেবারে ভিন্ন একটি দল মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের। বাংলাদেশ অবশ্য সাকিব-পরবর্তী যুগে নতুন মুখের সন্ধানে না গিয়ে অভিজ্ঞতায় ভরসা রেখেছে।

কানপুর থেকে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে এসে প্রথম যে নামটি মস্তিষ্কে ঘুরপাক খেতে থাকে—শচীন টেন্ডুলকার। এই শহরেই ২০১০ সালে তিনি যেন এডমন্ড হিলারি হয়েছিলেন। এ শহরেই তিনি প্রথম ওয়ানডেতে ‘২০০’ রানের শৃঙ্গে উঠেছিলেন। টেন্ডুলকার অবশ্য ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন ক্যাপ্টেন রূপ সিং স্টেডিয়ামে। আর আগামী রোববার বাংলাদেশ-ভারতের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই স্টেডিয়ামের নতুন যাত্রা শুরু হচ্ছে এই ম্যাচ দিয়ে। এর মধ্য দিয়ে ১৪ বছর পর গোয়ালিয়রে ফিরছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। আশ্চর্য, ২০১০ সালে টেন্ডুলকারের বিখ্যাত ইনিংসটার পর এই শহরে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচই হয়নি!

শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামের মতো নতুন এক যাত্রা শুরু হচ্ছে বাংলাদেশেরও। যাত্রাটা সাকিব-পরবর্তী যুগের। ১৮ বছর পর বাংলাদেশের নির্বাচকদের একটি  টি-টোয়েন্টি দল করতে হলো, যেখানে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে সামান্যতম ভাবতে হয়নি তাঁদের। ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে যে বিদায় জানিয়েছেন সাকিব।

সাকিব-পরবর্তী যুগে পা দিলেও এখনই টি-টোয়েন্টি দলের চেহারায় আমূল পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে না বাংলাদেশের; যতটা হয়েছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের পর বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মা বিদায় জানানোর পর ভারতীয় দলে। ঘরের মাঠে ২০২৫ এশিয়া কাপ আর ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে নতুন একটি টি-টোয়েন্টি দল দাঁড় করানোর চেষ্টায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিন্তা অন্য। ভারতের বিপক্ষে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে অন্তত কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিংবা নতুন মুখের সন্ধানে যেতে চায়নি তারা। এ কারণে অভিজ্ঞতায় ভরসা তাদের। সে কারণেই মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে দলে রাখা।

যদিও ২০ ওভারের ক্রিকেটে মাহমুদউল্লাহকে কেন রাখতে হবে—এ রকম একটা প্রশ্ন উঠেছে। এখানে নির্বাচক প্যানেলের এক সদস্য পাল্টা প্রশ্নও ছুড়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘একটা নাম বলতে পারবেন যে এই মুহূর্তে মাহমুদউল্লাহর পজিশনে যোগ্য বিকল্প? তার ভালো কোনো বিকল্প আমরা অন্তত এই সিরিজে দেখছি না। হ্যাঁ, দু-একজন খেলোয়াড়ের নাম আসছে। কিন্তু তাদের পরখ করে দেখতে ভারতের মতো শক্তিশালী দল নয়, চেষ্টা করতে হয় জিম্বাবুয়ে, ‘এ’ দল, ইমার্জিং টিমের মতো দলে খেলিয়ে। অনেক সময় প্রতিপক্ষও বুঝতে হবে। শামীম পাটোয়ারীকে এ কারণে আমরা ইমার্জিং টিমে দেখে বুঝতে চাইছি।’

নির্বাচকেরা স্বীকার করে নিচ্ছেন, তাঁদের হাতে এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত ‘রিসোর্স’ নেই, যাঁদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবেন, যে বিলাসিতা ভারত দেখাতে পারছে। তবে তাঁরা আশাবাদী, সামনে ডিসেম্বরে জাতীয় লিগের (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি আছে, এরপর শুরু বিপিএল। এই দুই টুর্নামেন্টে কিছু নতুন মুখের সন্ধান পেয়ে গেলে তাদের ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব হবে। কদিন আগে বাংলাদেশ  টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেছিলেন, আগামী ১৬ মাসে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ২টি এনসিএল টি-টোয়েন্টি, ২টি বিপিএল ও ২০-২২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পাবেন। সব মিলিয়ে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ৫০-৬০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সুযোগ মিলবে একজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটারের। তাতেই দারুণ একটি টি-টোয়েন্টি দল দাঁড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী লিপু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত