Ajker Patrika

তবু কেন ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আয়োজনের কথা ভেবেছিল আয়োজকেরা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আইসিসি ইভেন্ট, এশিয়া কাপ ছাড়া এখন আর মুখোমুখি হয় না ভারত-পাকিস্তান। ছবি: ক্রিকইনফো
আইসিসি ইভেন্ট, এশিয়া কাপ ছাড়া এখন আর মুখোমুখি হয় না ভারত-পাকিস্তান। ছবি: ক্রিকইনফো

রাজনৈতিক বৈরিতায় যখন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের নিয়মিত দেখা হয় না, তখন কালেভদ্রে যা খেলা হয় ভক্ত-সমর্থকদের সেটা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। এজবাস্টনের মঞ্চ আজ প্রস্তুত ছিল ভারত-পাকিস্তান লড়াই দেখতে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সবকিছু পণ্ড হয়ে যায়।

ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভারতীয় ক্রিকেটাররা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে আপত্তি জানিয়েছেন। শিখর ধাওয়ান নিজের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবি থেকে জানা গেল, ডব্লিউসিএল লিগে পাকিস্তানের বিপক্ষে না খেলতে সতীর্থদের কাছে অনুরোধ করেছেন ধাওয়ান। বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকেই সেখানে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে ধাওয়ান লিখেছেন, ‘১১ মে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেই সিদ্ধান্তের ওপর অনড়। দেশ আমার জন্য সবকিছু। দেশের চেয়ে বড় কিছু না।’ অধিনায়ক যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, ইরফান পাঠান, ইউসুফ পাঠানরাও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বলে শোনা গেছে।

একটা প্রশ্ন তো এখন আসতেই পারে। ১১ মে যেহেতু ধাওয়ান তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন, তবু কেন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডসে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ রাখা? ব্যাখ্যায় ডব্লিউসিএল বলেছে, ‘সংগঠক হিসেবে ডব্লিউসিএল সব সময় ক্রিকেট পছন্দ করে। ভক্ত-সমর্থকদের দারুণ কিছু মুহূর্ত উপহার দেওয়াই ছিল আমাদের লক্ষ্য। আমরা শুনেছিলাম পাকিস্তান হকি দল এ বছর ভারত সফর করবে। কদিন আগে ভারত-পাকিস্তান ভলিবল ম্যাচ হতে দেখেছি। তাই চিন্তা করেছিলাম যদি বিশ্বজুড়ে ভক্ত-সমর্থকদের দারুণ কিছু মুহূর্ত উপহার দেওয়া যায়, একারণেই ডব্লিউসিএলে তাদের ম্যাচ রেখেছিলাম।’

ভারত-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হচ্ছে না ১২ বছর ধরে। আইসিসি ইভেন্ট, এশিয়া কাপ ছাড়া দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এখন। ডব্লিউসিএলে আজ রায়না, হরভজন সিং, যুবরাজ সিংদের বিপক্ষে মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক, কামরান আকমলদের একটা লড়াই দেখার অপেক্ষায় ছিলেন প্রবাসী ভক্ত-সমর্থকেরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সবকিছু ভেস্তে যাওয়ায় ডব্লিউসিএলও ক্ষমা চাইছে ভক্ত-সমর্থকদের কাছে। আয়োজক কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভক্ত-সমর্থকদের হৃদয় ভাঙার কারণে আমরা খুবই দুঃখিত। ক্ষমা চাইছি আপনাদের কাছে।’

ডব্লিউসিএলের সঙ্গে দুই বছর আগে চুক্তি হয়েছিল ইজ মাই ট্রিপ নামে একটি সংস্থার। তবে পাকিস্তান খেললে তারা নিজেদের এখানে অন্তর্ভুক্ত করবে না বলে এক বিবৃতিতে ইজ মাই ট্রিপ সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছে। সুরেশ রায়না এই পোস্ট নিজের এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করেছেন। ধাওয়ান ১১ মে তারিখের কথা উল্লেখ করায় ধারণা করা হচ্ছে পেহেলগাম কাণ্ডই ডব্লিউসিএলের ম্যাচ বাতিলে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হয়েছিলেন।

ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে গত কয়েক বছর ধরে আইসিসি ইভেন্ট, এশিয়া কাপ হচ্ছে হাইব্রিড মডেলে। ২০২৩ এশিয়া কাপ হয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়। এরপর ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত মিলে আয়োজন করা হয়েছে। যদিও এ দুই টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। এবার নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপও হতে যাচ্ছে হাইব্রিড মডেলে। ২০২৫ নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত হলেও পাকিস্তান তাদের ম্যাচগুলো খেলবে শ্রীলঙ্কায়।

শুধু হাইব্রিড মডেলের ব্যাপারই নয়, এ বছর এশিয়া কাপ হওয়ার যে ন্যুনতম আশা ছিল, সেটাও ফিকে হয়ে যাচ্ছে। ২৪ জুলাই ঢাকায় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) পরবর্তী সভা হওয়ার কথা। সভায় এশিয়া কাপের সূচি নির্ধারণ হবে বলেও শোনা গিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ থেকে স্থান বদলের জন্য এসিসিকে অনুরোধ করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। না হলে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে না বলে এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এবার ভারতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ঢাকায় এসিসির সভা বর্জন করেছে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ওমানের ক্রিকেট বোর্ডও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত