Ajker Patrika

লঙ্কানদের জয়ে বাংলাদেশ এখন খুশিতে নাচছে, বলছেন রমিজ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ২১
শ্রীলঙ্কার জয়ে এবার এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠেছে বাংলাদেশ। ছবি: ক্রিকইনফো
শ্রীলঙ্কার জয়ে এবার এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠেছে বাংলাদেশ। ছবি: ক্রিকইনফো

‘এ’ গ্রুপ থেকে ভারত-পাকিস্তানের সুপার ফোরে ওঠা আগেভাগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গতকাল শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচের আগ পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি, ‘বি’ গ্রুপ থেকে কারা উঠবে পরের রাউন্ডে। শেষ পর্যন্ত আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আফগানদের ৬ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে লঙ্কানরা।

শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ফেসবুক পেজে বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকেরা মন্তব্য করেছিলেন, ‘জেগে ওঠো লঙ্কান সিংহ।’ কারণ, শ্রীলঙ্কা জিতলে বাংলাদেশ সরাসরি উঠে যাবে সুপার ফোরে। কিন্তু আফগানিস্তান জিতলে নেট রানরেটের মারপ্যাঁচে বাংলাদেশের বাদ পড়ার সম্ভাবনা ছিল বেশি। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচের ফল এল বাংলাদেশের পক্ষেই।

আফগানদের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেটে জয়ের পর নিজের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ম্যাচ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন রমিজ রাজা। রমিজের মতে এবার শিরোপা জয়ের দৌড়ে দারুণভাবেই রয়েছে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানি ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘শিরোপার অন্যতম দাবিদার শ্রীলঙ্কা। আমি নিশ্চিত যে লঙ্কানদের জয়ে বাংলাদেশে খুশির ঢেউ বয়ে গেছে। কারণ, আফগানিস্তান যেন না জেতে, বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকেরা সেটা চাচ্ছিলেন।’

শেষ ওভারে লঙ্কান বাঁহাতি স্পিনার দুনিথ ভেল্লালাগেকে আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী ৫ ছক্কা মেরেছেন। নবির তাণ্ডবে (২২ বলে ৬০ রান) আফগানিস্তানের স্কোরটা হয়েছে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৯ রান। নবির পাশাপাশি রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নুর আহমাদ—সব মিলিয়ে গত রাতে খেলেছেন চার আফগান স্পিনার। কিন্তু নবি, রশিদ লঙ্কানদের রানের চাকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেও মুজিব, নুর পারেননি। একটি করে উইকেট মুজিব ও নুর পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু মুজিব ও নুরের ইকোনমি ছিল ১১.৪৫ ও ১২.৩৩।

সুপার ফোরে উঠতে গতকাল কোনোরকমে ১০১ রান করতে পারলেই হতো শ্রীলঙ্কার। সেই গন্ডি পেরোনোর পর শেষ ৪ ওভারে হাতে ৬ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের দরকার হয় ৪২ রান। চারিত আসালাঙ্কার নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কা ম্যাচ জিতেছে ৮ বল হাতে রেখে। আফগানিস্তান গত রাতে লঙ্কানদের কাছে কোথায় হেরেছে, সেই ব্যাখ্যায় রমিজ বলেন, ‘আফগানিস্তানের জন্য খুবই হতাশাজনক একটি ম্যাচ ছিল এটা (লঙ্কানদের বিপক্ষে ম্যাচ)। কারণ, তাদের (আফগানিস্তান) স্পিন বোলিং লাইনআপ ভালো। কিন্তু দুই স্পিনার নুর আহমাদ, মুজিব উর রহমান দুজনেই খরুচে বোলিং করেছে। এই সুযোগটাই লঙ্কানরা কাজে লাগিয়েছে। লঙ্কানদের অসংখ্য অভিনন্দন।’

এবারের এশিয়া কাপে কুশল মেন্ডিস বাংলাদেশ ও হংকংয়ের বিপক্ষে করেছিলেন ৩ ও ১১ রান। হারিয়ে খুঁজতে থাকা মেন্ডিস জ্বলে উঠতে বেছে নিলেন আফগানিস্তানকেই। আবুধাবিতে গত রাতে ওপেনিংয়ে নেমে ৫২ বলে ৮ চারে ৭৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। আফগানদের বিপক্ষে লঙ্কান উইকেটরক্ষক ব্যাটারের হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। কুশল মেন্ডিসের প্রশংসা করে রমিজ বলেন, ‘কুশল মেন্ডিস খুব ভালো কাট শট খেলে। সুইপেও ভালো। বেরিয়ে এসেও খেলতে পারে। স্পিনের বিরুদ্ধে দারুণ খেলে। একারণেই সে ম্যাচসেরা হয়েছে।’

২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তিন বছর আগে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেই আমিরাতেই তিন বছর পর এবার এশিয়া কাপ হচ্ছে টি-টোয়েন্টিতে। সুপার ফোরে তারা আগামীকাল খেলতে নামবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। ম্যাচটি হবে দুবাইয়ে। ২৩ ও ২৬ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা সুপার ফোরের শেষ দুই ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কী কথা হয়েছে গায়ক আসিফের

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ০৫
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে নিয়ে স্মৃতিরোমন্থন করেছেন  আসিফ আকবর। ছবি: সংগৃহীত
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে নিয়ে স্মৃতিরোমন্থন করেছেন আসিফ আকবর। ছবি: সংগৃহীত

এক সভাপতির পদ ছাড়া ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা-পর্ষদে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন নির্বাচনের পর আমিনুল ইসলাম বুলবুল ফের সভাপতি হয়েছেন। ফারুক আহমেদ, খালেদ মাসুদ পাইলট, আবদুর রাজ্জাকের মতো সাবেক ক্রিকেটাররাও আছেন বোর্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর এটাকে ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন।

দীর্ঘ ১২ বছর বিসিবি সভাপতির পদে থাকার পর নাজমুল হাসান পাপন গত বছর পদত্যাগ করেছেন। তিনি পদত্যাগের পরের ১৪ মাসে বোর্ডপ্রধান পরিবর্তন হয়েছে দুইবার। ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট বিসিবি সভাপতি হয়েছেন ফারুক। তাঁর পরিবর্তে বুলবুল এ বছরের মে মাসে বিসিবি সভাপতি হয়েছেন। এমনকি নির্বাচনের পরও বুলবুল সভাপতির দায়িত্বে আছেন। ফারুক ও মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন হয়েছেন সহসভাপতি। শাখাওয়াতের মতো চমক হয়ে বোর্ডে এসেছেন আসিফ আকবর। গায়ক থেকে তিনি বনে গেলেন বিসিবির পরিচালক। পেয়েছেন বিসিবির বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টের দায়িত্ব। খালেদ মাসুদ পাইলট হয়েছেন এইচপির চেয়ারম্যান। আবদুর রাজ্জাক নারী ক্রিকেটের দায়িত্বে এসেছেন।

সাবেক ক্রিকেটাররা বিসিবিতে আসায় দেশের ক্রিকেটে অনেক উন্নতি হবে বলে মনে করেন আসিফ আকবর। বর্তমান সভাপতি বুলবুল ভাইয়ের সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে কী কথাবার্তা হয়েছে, সেই প্রশ্নের উত্তরে মিরপুরে আজ সাংবাদিকদের আসিফ বলেন, ‘বুলবুল ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। এখন তো বোর্ডে ক্রিকেটাররা আসছে। রাজ্জাক, পাইলট এসেছে। ট্যাকটিকাল দিকগুলো উন্নত হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে বের হয়ে ক্রিকেটাররা বোর্ডে আসছে। যারা সংগঠক, ক্লাব কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে কাজ করেন, আমি মনে করছি নতুন একটা জোয়ার তৈরি হবে। সংগঠকেরাই তো আসল। তারা অর্থনৈতিক ব্যাপারে সাপোর্ট দেবেন। অনেকে মাঠ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাদের মাঠমুখী করার চেষ্টা থাকবে অবশ্যই।’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসে আজই মিরপুরে এলেন আসিফ আকবর। দীর্ঘ ২২ বছর পর এখানে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বুলবুল প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিসিবির বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টের প্রধানের দায়িত্বে থাকা আসিফ স্মৃতিরোমন্থন করেছেন। সাংবাদিকদের এই সংগীতশিল্পী বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান যে বুলবুল ভাইয়ের সঙ্গে একটা সময়. . অনেক বড় ক্রিকেটার বুলবুল ভাই। আমি অনেক ছোট। প্রতিপক্ষ হিসেবে খেলেছি। বুলবুল ভাই এক দলে। আমি আরেক দলে। বুলবুল ভাইকে দেখার সুযোগ হয়েছে ছোটবেলা থেকে। তখন আমি ক্লাস টেন-ইলেভেনে পড়ি। নান্নু ভাই কিংবা ফারুক ভাইকে দেখার সুযোগ হয়েছে ছোটবেলা থেকে। পক্ষে ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন, জাভেদ ওমর বেলিম, শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ, জাকারিয়া, জাহাঙ্গীর।’

বয়সভিত্তিক দলে কাজ করতে কী উদ্দীপনা কাজ করছে আসিফ আকবরের—সেই ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে নিজের গানের ক্যারিয়ারের কথা উল্লেখ করেছেন। মিরপুরে সাংবাদিকদের দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই গায়ক বলেন, ‘বাচ্চাদের ব্যাপারটা কী? বাচ্চাদের চিনি না। তারা দেশের ভবিষ্যৎ। আর জ্যেষ্ঠ নাগরিকেরা একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে চলে গেছেন বা এখনো আছেন। বাচ্চাদের ব্যাপারটা হচ্ছে আপনারা যদি আমার গানের ক্যারিয়ার দেখেন, বাংলাদেশের সব তরুণ গায়ক-গায়িকা-পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে এসেছি। তরুণদের সঙ্গে থাকাটা মূলত নিজের তারুণ্য ধরে রাখা।’

বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবীন্দ্র জাদেজার মতো তারকারা গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন। তবু ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের পারফরম্যান্সে কোনো ভাটা পড়েনি। অভিষেক শর্মা, যশস্বী জয়সওয়াল, শুবমান গিল, তিলক ভার্মারা খেলছেন দুর্দান্ত। বাজে পারফরম্যান্স করলে তো বটেই, এমনকি দারুণ খেলার পরও পরের ম্যাচে একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে থাকা অনিশ্চয়তা। ভারতীয় ক্রিকেটের পাইপলাইন যেখানে এত শক্তিশালী, সেই তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা অনেক বাজে।

বয়সভিত্তিক দলে কাজ করেই দেশের ক্রিকেটের পাইপলাইন শক্তিশালী করতে চান আসিফ আকবর। মিরপুরে সাংবাদিকদের আজ তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা খেলবে। বাচ্চারা ভবিষ্যতেই বড় ক্রিকেটার হবে। বয়সভিত্তিক দলে কাজ যারা করেন, তারা ভবিষ্যতের ক্রিকেটার তৈরি করবেন। সেখানে আমাদের বর্তমান ক্রিকেটার, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম থাকবে যাতে পাইপলাইনে মাত্র একজন ক্রিকেটার না থাকে। একটা স্থানের জন্য চার-পাঁচ ক্রিকেটার না থাকলে হবে না।বয়সভিত্তিক পর্যায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভালো একটা কাজ পেলাম। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২২ বছর পর মিরপুরে আসিফ, শক্তিশালী করতে চান বিসিবির পাইপলাইন

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫০
২২ বছর পর মিরপুরে এসেছেন বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর। ছবি: সংগৃহীত
২২ বছর পর মিরপুরে এসেছেন বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর। ছবি: সংগৃহীত

ক্রিকেটের প্রতি গায়ক আসিফ আকবরের ভালোবাসার গল্প সেই অনেক পুরোনো। কিন্তু নানা ব্যস্ততায় গত দুই দশক মিরপুরের আঙিনায় তাঁর কোনো পদচিহ্ন পড়েনি। অবশেষে ২২ বছর পর এলেন মিরপুরে। দেশের ক্রিকেটকে শক্তিশালী করতে কী কী করতে চান, তাঁর একটা রূপরেখা তৈরি করেছেন।

৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের সময় সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর ছিলেন আমেরিকায়। প্রবাসে থেকেই অংশ নিয়েছিলেন বিসিবির নির্বাচনে। তখনই বিসিবির পরিচালক বনে যান। বোর্ডের এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যখন তাঁর কাঁধে, দেশে ফেরার পর তাই আর দেরি করলেন না। আজ চলে এলেন মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় বিসিবির নবনির্বাচিত পরিচালক বলেন, ‘আজ প্রথম বিসিবিতে ঢুকলাম। এখানে এসেছি ২০০৩ সালে। তখন আরাফাত রহমান কোকো সাহেব বিসিবির হাইপারফরম্যান্সের প্রধান ছিলেন। এই মাঠের প্রত্যেকটা ইঞ্চি আমার চেনা। মিরপুর মাঠে প্রথম সাউন্ড সিস্টেম আমিই বাস্তবায়ন করি।’

সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসিফ বাংলাদেশে এসেছেন গতকাল। ক্রিকেটের প্রতি তাঁর যে কতটা অনুরাগ, সেটা প্রকাশ পেয়েছে তাঁর কথায়। মিরপুরে আজ সাংবাদিকদের দেশের অন্যতম এই জনপ্রীয় সংগীতশিল্পী বলেন, ‘বোর্ডের পরিচালক ও কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার সময় ছিলাম যুক্তরাষ্ট্রে। গতকাল আমি দেশে এসেছি। আসার পরে দেখলাম এরই মধ্যে দেরি হয়ে গিয়েছে। এজন্য আজ সকালে চলে এসেছি। মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক বহুদিনের। সেই ২০০৩-০৪ সাল থেকে। মাঠে গেলাম। ঘুরলাম, দেখলাম। যেহেতু একটা দায়িত্বে এসেছি, আমার মনে হয় দেরি করা উচিত হবে না। তাই চলে এসেছি।’

২০২০ সালে আকবর আলীর নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সাফল্য। চ্যাম্পিয়ন সেই দলের শরীফুল ইসলাম, তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, তাওহীদ হৃদয়রা জাতীয় দলে খেলছেন এক বছরের বেশি সময় ধরে। তবু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে তাঁদের। বয়সভিত্তিক দলে ভালো করেও কেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেটা ধরে রাখতে পারেন না—এর ব্যাখ্যায় আসিফ আকবর বলেন, ‘স্কোরবোর্ড একটা ডকুমেন্টেশন। প্রতিভা তো ডকুমেন্টের বাইরের ব্যাপার। আমরা অবশ্যই প্রতিভার দিকে মনোযোগ দেব। স্কোরবোর্ড বা তাৎক্ষণিকভাবে যেখানে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল চ্যাম্পিয়ন হলো, তারা জাতীয় দলে কেন কিছু করতে পারছে না? গ্যাপটা কোথায়? অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের পরে সিনিয়র দলে নেওয়া হয়েছে। এটার জন্য বড় বড় মানুষ আছেন। আপাতত আমি বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করছি। সময় দিন। ভালো কিছু হয়ে যাবে।’

বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবীন্দ্র জাদেজার মতো তারকারা গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন। তবু ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের পারফরম্যান্সে কোনো ভাটা পড়েনি। অভিষেক শর্মা, যশস্বী জয়সওয়াল, শুবমান গিল, তিলক ভার্মারা খেলছেন দুর্দান্ত। বাজে পারফরম্যান্স করলে তো বটেই, এমনকি দারুণ খেলার পরও পরের ম্যাচে একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে থাকা অনিশ্চয়তা। ভারতীয় ক্রিকেটের পাইপলাইন যেখানে এত শক্তিশালী, সেই তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা অনেক বাজে।

বয়সভিত্তিক দলে কাজ করেই দেশের ক্রিকেটের পাইপলাইন শক্তিশালী করতে চান আসিফ আকবর। মিরপুরে সাংবাদিকদের আজ তিনি বলেন, ‘বাচ্চারা খেলবে। বাচ্চারা ভবিষ্যতেই বড় ক্রিকেটার হবে। বয়সভিত্তিক দলে কাজ যারা করেন, তারা ভবিষ্যতের ক্রিকেটার তৈরি করবেন। সেখানে আমাদের বর্তমান ক্রিকেটার, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম থাকবে যাতে পাইপলাইনে মাত্র একজন ক্রিকেটার না থাকে। একটা স্থানের জন্য চার-পাঁচ ক্রিকেটার না থাকলে হবে না।বয়সভিত্তিক পর্যায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভালো একটা কাজ পেলাম। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বলের আঘাতে ১৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারের মৃত্যু

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৩৪
অনুশীলনে বলের আঘাতে মারা গেছে  ১৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার বেন অস্টিন। ছবি: সংগৃহীত
অনুশীলনে বলের আঘাতে মারা গেছে ১৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার বেন অস্টিন। ছবি: সংগৃহীত

বেন অস্টিনের বয়স কেবল ১৭ বছর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে খেলতে পারত কি না বা খেললে কী করতে পারত, সেটা পরের কথা। কিন্তু কথায় আছে ‘মৃত্যুর কোনো দিনক্ষণ নেই’। অনুশীলন করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্ঘটনায় থেমে গেল তাঁর জীবনপ্রদীপ।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে ব্যাটিং অনুশীলনের সময় বলের আঘাতে অস্টিনের মৃত্যু হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মেলবোর্নে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে নেটে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছিল সে। এ সময় থ্রোয়ারের ছোঁয়া এক বলে কাঁধে আঘাত পেলে গুরুতর অবস্থায় অস্টিনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। লাইফ সাপোর্টে রাখা হলেও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার মানতে হয়েছে তাকে। মোনাশ চিলড্রেনস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এই তরুণ ক্রিকেটার।

বলের আঘাত অস্টিন পেয়েছিল পরশু। ফার্নট্রি গালি ক্রিকেট ক্লাবে সেদিন অনুশীলনের সময় হেলমেট পরলেও ছিল না ‘নেক গার্ড’। ওয়াংগার নামে হাতে ব্যবহৃত সাইডআর্ম থ্রোয়ারের মাধ্যমে তাকে বোলিং করা হচ্ছিল। নেক গার্ড না থাকায় কাঁধে বলের আঘাত বেশ জোরেই লেগেছে। এই দুর্ঘটনায় চলে গেছেন না ফেরার দেশে। ফার্নট্রি ক্রিকেট ক্লাব এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বেনের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত আমরা। তার মৃত্যু পুরো ক্রিকেট সম্প্রদায়ের ওপর কতটা গভীর প্রভাব ফেলবে, সেটা আমরা জানি। বেন ও তার পরিবার-বন্ধু বান্ধবদের প্রতি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সমবেদনা জানাচ্ছি। এই সময়ে বেনের পরিবারের প্রাইভেসি রক্ষা করার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ।’

সন্তান বেনের মৃত্যুতে বাবা জেস অস্টিন পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন। জেস অস্টিন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের সুন্দর বেনকে হারিয়ে সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত।বৃহষ্পতিবার সকালে সে মারা গেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছি এই ভেবে যে বন্ধুদের সঙ্গে নেটে এভাবেই গ্রীষ্মে ক্রিকেট খেলত সে। যে তখন নেটে বল করছিল, তার প্রতিও আমাদের সমর্থন রয়েছে।’

বলের আঘাতে বেন অস্টিনের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই ফিল হিউজের কথা মনে পড়বে ক্রিকেটপ্রেমীদের। বেনের দুর্ঘটনা ঘটেছে অনুশীলনের সময়। কিন্তু

২০১৪ সালে ঘাড়ে বলের আঘাতে হিউজ মারা গিয়েছিলেন শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে। সেই ঘটনায় বিশ্ব ক্রিকেটে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। পরবর্তীতে মাথা ও ঘাড়ে আঘাত সামলাতে সুরক্ষা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়। কনকাশন প্রটোকলে আনা হয় অনেক বড় পরিবর্তন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাকের কেন সব সময় লেগে মারতে যান

ক্রীড়া ডেস্ক    
বারবার লেগ সাইডেই শট খেলতে যাচ্ছেন জাকের আলী অনিক। ছবি: ক্রিকইনফো
বারবার লেগ সাইডেই শট খেলতে যাচ্ছেন জাকের আলী অনিক। ছবি: ক্রিকইনফো

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের ক্রিকেটারদের সামাজিক মাধ্যমে জবাব দেওয়া উচিত নয়—ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ ফিল সিমন্স এমন কথা বলেছিলেন। লিটন দাস-জাকের আলী অনিকদের ভালোর জন্যই এমন উপদেশ তিনি দিয়েছিলেন। কারণ, বাজে পারফরম্যান্স করলে নেটিজেনরা ক্রিকেটারদের নিয়ে নানারকম ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেন।

যদি নেটিজেনদের জবাব দিতেই বেশি সময় চলে যায়, মাঠের পারফরম্যান্সে সেটার প্রভাব অবশ্যই পড়বে। ইদানীং যেমন জাকেরকে নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে অনেক বেশি সমালোচনা চলছে। খেলার সময় চুইংগাম চিবোতে থাকেন বলে তাঁর নাম হয়ে গেছে ‘চুইংগাম জাকের’। এ ছাড়া বিদ্রুপ করে জাকেরকে তুলনা হয় গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে। ম্যাক্সওয়েল ‘লেগ সাইডে’ শট খেলে কতটা সফল, সেটা সকলেরই জানা। সামাজিক মাধ্যমের কথাবার্তা না হয় একপাশে সরিয়ে রাখা গেল। সবচেয়ে বড় কথা মাঠের পারফরম্যান্সে জাকেরের খেলার ‘ইমপ্যাক্ট’টা আসলে কী।

একজন ক্রিকেটার এক সাইডে ভালো খেলতেই পারেন। সেক্ষেত্রে টেকনিকটাও তো ঠিক হতে হবে। কিন্তু জাকের তো ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন না। বলের মেরিট না বুঝে লেগ সাইডে মুখস্ত শট খেলতে গিয়ে বারবার সমস্যায় পড়েছেন। কারণ, বোলাররাও তাঁর দুর্বলতা বুঝে ফেলেছেন। অফ সাইডের অনেক বাইরের বল লেগে টানতে গিয়ে ঠিকমতো সংযোগ করতে পারছেন না। এভাবেই বোলাররা তাঁর বিপক্ষে ডটের পর ডট আদায় করে নিচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি যেখানে ‘ধর তক্তা মার পেরেকে’র খেলা, সেক্ষেত্রে অনেক সময় একটা ডটও দলকে বেশ বিপদে ফেলে দেয়। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে গতকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির কথাই ধরে নেওয়া যাক। ১৭ বল খেলে করেছেন ১৮ রান। নায়ক হওয়ার যখন সুবর্ণ সুযোগ ছিল, সেটা তিনি হেলায় হারিয়েছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৭ বলের মধ্যে ৮ বল অফে খেলেছেন। ডিপ কাভার দিয়ে একটি চারও মেরেছেন। এক বল ডট দিয়েছেন ও আরেকটা খেলেছেন সোজা বোলার বরাবর। লেগ সাইডে যে ৭ বল খেলেছেন, তার মধ্যে কেবল একটি বাউন্ডারি মারতে পেরেছেন। কয়েকবার আউট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি পুল করতে গিয়েই ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা খ্যারি পিয়েরের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। জাকের আউট হওয়ার পর ১৩ বলে ২৬ রানের সমীকরণ তৈরি হয় বাংলাদেশের সামনে। স্বাগতিকেরা ম্যাচটা হেরে যায় ১৪ রানে।

চট্টগ্রামে গতকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জাকের যে সুযোগ পেয়েছেন, সেটা নুরুল হাসান সোহানের পরিবর্তে। এর আগে সবশেষ খেলেছিলেন ১১ অক্টোবর আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিটা তাঁর কেটেছে বেঞ্চে বসে। অথচ তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে আফগানিস্তানকে ধবলধোলাই করেছিল। কিন্তু বাজে ফর্মের কারণে একাদশেই এখন তিনি নিয়মিত না। লেগ সাইডে শট খেলতে গিয়ে যেমন লেজেগোবরে করে ফেলছেন, তেমনি অফসাইডে সোজা ফিল্ডার বরাবর শট খেলেন বারবার। ‘ফিনিশার’ তকমা পাওয়া জাকেরের যে ব্যাটিংটা প্রয়োজন, চাহিদা অনুযায়ী সেটা তিনি করতে পারছেন না।

আবুধাবিতে সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ শেষে জাকের দাবি করেছিলেন, বাতাসের কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা একপাশে ঠিকমতো খেলতে পারেননি। সেই জাকের আফগানিস্তানের বিপক্ষে ডেথ ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে টানা তিনটা ডট দিয়েছিলেন। লেগ সাইডে মুখস্ত শট খেলতে গিয়ে যে ডটগুলো দিয়েছিলেন, সেগুলো ছিল দৃষ্টিকটু। সংযুক্ত আরব আমিরাতে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই টুর্নামেন্টে সব মিলিয়ে ৬ ম্যাচে ২৩.৬৭ গড় ও ১০৭.৫৭ স্ট্রাইকরেটে করেছিলেন ৭১ রান। টি-টোয়েন্টির সঙ্গে মানানসই স্ট্রাইকরেটে খেলতে তো পারেননি, এমনকি মারতে পারেননি একটি ছক্কাও। শুধু ২০২৫ এশিয়া কাপই নয়, ২০২৩ এশিয়ান গেমস ক্রিকেট, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ—ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে অনুষ্ঠিত এই চার টুর্নামেন্ট ছক্কাশূন্য হিসেবে কাটিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত