নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
যেকোনো ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট উভয় পক্ষ যদি একই ধরনের ইনটিগ্রিটি না দেখায়, তাহলে ঘটনার ফেয়ারনেস নষ্ট হয়। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এই, ঢাকার এলিট বাবলগুলোতে যারা মানবাধিকার, জাস্টিস ইত্যাদি নিয়ে প্রচণ্ড উচ্চকিত থাকেন, তারা খেয়াল করেন না কীভাবে তারা জাস্টিস অর্জন করতে গিয়ে নতুন করে ইনজাস্টিস করছেন, কীভাবে তাদের মানবাধিকার তোড়জোড়ের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। নিজের গোষ্ঠীকে জাস্টিফাই করতে উচিত-অনুচিত ন্যারেটিভ এস্টাবলিশ করতে যেমন তারা বদ্ধপরিকর; তদ্রূপ, নিজ গোষ্ঠীর বাইরে (যাদের ব্যাপারে তারা বৈরিভাবাপন্ন) কাউকে নাস্তানাবুদ ও ঘায়েল করতে এমনকি মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করতেও তারা পিছপা হন না।
সাম্প্রতিক সময়ে আমাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ একটা হইচই দেখা যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ করা এবং আমার সম্পর্কে রায় দেওয়া সংশ্লিষ্ট সকলের ‘গণতান্ত্রিক’ অধিকার। এর আগে বছর চারেক আগে আমি একবার কাছাকাছি ধরনের ফেসবুক আদালতের তোপের মুখে পড়েছিলাম। তখন আমার সিদ্ধান্ত ছিল, যা-ই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাজারে আমি ব্যক্তিগত কেচ্ছাকাহিনি নিয়ে চর্চা করব না। উপযুক্ত ফোরামে নিজের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য জানাব। তা-ই করেছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া আক্রমণ তাতে থেমে থাকে নাই। আমি দীর্ঘ তিন বছর একটা প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম; অন্যদিকে আমার ব্যাপারে যা খুশি তাই মন্তব্য করা এবং আমাকে যেকোনো প্রকারে অপদস্থ করাকে অনেকেই নিজেদের ‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম’-এর অংশ বানিয়ে ফেলেছিলেন। নীরবে রক্তক্ষরণ সত্ত্বেও আমি সেসব ওভারলুক করে গেছি। কেউ যদি এখনো ওই ঘটনা জানতে আগ্রহী থাকেন, ফেসবুকে আদালত না বসিয়ে let’s reopen all the documents.
গত দুই দিন ধরে আবারও আমি মহামান্য ফেসবুক আদালতের ব্যাশিং এর শিকার হচ্ছি। আগের পোস্টে লিখেছি, আমি শতভাগ ত্রুটিমুক্ত মানুষ নই। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনের কোনো ঘটনাকে যখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এবং আমার দলকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন তা আর ন্যায্য থাকে না।
পয়লা নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে, আমার সঙ্গে অপর এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করল কে বা কারা? এবং সেটা কীভাবে দেশের বাইরে থাকা অ্যাকটিভিস্টদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটছাঁট করে প্রেক্ষাপটহীনভাবে ভাইরাল করা হলো? এই কাজটা কার করা?
ধরা যাক, সংশ্লিষ্ট অপর ব্যক্তির নাম ‘ক’। তাকে আমি চিনেছি, আপনাদের মতোই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। শুরুতে তার পারিবারিক কোনো ঘটনা আমার নলেজে ছিল না। জাতীয় নাগরিক কমিটির অফিসে (তখনো এনসিপি আত্মপ্রকাশ করেনি) তিনি একদিন আসেন এবং আমার সঙ্গে সামান্য কথা হয়।
একদিন সন্ধ্যায় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে আসেন। তখন শীতকাল। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস। তার ভাষ্যমতে, প্রাক্তন স্বামী তাকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। শুরুতে আমি অফিসে ছিলাম না। তিনি নাকি অফিসে এসে আমাকে খুঁজেছেন। এমনকি লিফটের ১৫ তলা উঠতে উঠতে আমার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। অফিসে যারা সে সময় উপস্থিত ছিলেন, তারা তাকে প্রাথমিক শুশ্রূষা দেন। কিছুক্ষণ পর অফিসে আমি আসি। এবং যার পরামর্শ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না বলে ফেসবুকে জানিয়েছেন, সেই মানবাধিকার লেনিন ভাইও আসেন। জানাক থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসলে পুলিশি প্রটোকলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সঙ্গে আমাদের কমিটির আরও একজন পুরুষ ও নারী কর্মীও ছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাকে দুইটা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তারপর পুলিশ প্রটোকলসহই আমরা তাকে ধানমন্ডির এক বাসায় পৌঁছে দেই। আমরা তাকে মামলা করতে পরামর্শ দেই, তিনি জানান তিনি মামলা করবেন না। যাক, সেটা তার ব্যাপার।
ওই রাতেই আহত অবস্থায় এবং পরে আরেকদিন দেখা হলে তিনি আমাকে বলেন, তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেব।
খেয়াল করবেন, ‘ক’ তার সর্বশেষ পোস্টে এই ঘটনাটার কথা উল্লেখ করেছেন ঠিকই; কিন্তু আমি ও জানাক যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে পুলিশ প্রটোকল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলাম, এই তথ্যটা তিনি বেমালুম চেপে গেছেন। মানবাধিকার লেনিন ভাই, শহিদুল আলম, সারা হোসেন সবার নামই আছে। কিন্তু ওই রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সারোয়ার তুষার ও মুশফিকুর জোহানের নাম নাই। বেশ!
শহিদুল আলম ও সারা হোসেন তার জন্য ওই দিন কি করেছেন আমার জানা নাই। ‘তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব’— তার এ কথার প্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম, আপনি শহিদুল আলম, রেহনুমা, সায়দিয়া গুলরুখ তাদেরকে ঘটনাটা জানান। উনারা এসব ক্ষেত্রে বেশ হেল্পফুল। তখন ‘ক’ আমাকে বলেছিলেন, তিনি সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন, সবাই তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার কোন কথা সত্য বা মিথ্যা আমার জানা নাই, কিন্তু তিনি এটাই বলেছিলেন।
যাই হোক, সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি অনেকগুলো মিথ্যাচার করেছেন। ভুল ও বিকৃত তথ্য দিয়েছেন। তিনি এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ নন। কেন্দ্রীয় বা মহানগর পর্যায়ে তিনি কোনো পদ হোল্ড করেন না। এমনকি তিনি এনসিপির সদস্যও নন। কাজেই তার সঙ্গে আমার কোনো কথাবার্তা বা এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কোনো ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ নাই; সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্কের কোনো হায়ারার্কিও নাই। এটা তিনিও জানেন। কিন্তু এখন গল্প সাজাতে গেলে যেভাবে বললে কাজ হবে, তিনি সেভাবে লিখেছেন বা তাকে সেভাবে লিখে দেওয়া হয়েছে।
তার কিছু বক্তব্য খেয়াল করা যাক:
‘মানবাধিকারকর্মী লেনিন ভাই আমাকে নেপাল পাঠিয়ে দেয়...’
‘ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি...’
‘নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই আমাকে ফোন করত ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে...’
আমি তাকে প্রায়ই ফোন করতাম কি করতাম না— সেটা পরের আলাপ। উল্লিখিত তিন উদ্ধৃতি থেকে কী দেখা যাচ্ছে? তাকে মানবাধিকার ভাইজান নেপাল পাঠিয়ে দেন। কবে? এনসিপি আত্মপ্রকাশের পূর্বে। এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন তিনি দেশে এসেছেন। তার ভাষ্যমতে, তাকে আমি ‘প্রায়ই ফোন করতাম’ তার নেপালে থাকা অবস্থায়।
তখন তো এনসিপির আত্মপ্রকাশই ঘটে নাই। তাহলে ‘তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফরমাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি....’ এনসিপিই যখন গঠিত হয় নাই, তখন সম্পর্ক ‘সাংগঠনিক ও ফরমাল’ রাখতে বলার মানে কী?
এনসিপি আত্মপ্রকাশ করে রমজানের ঠিক আগের দিন। এরপর পুরো রমজান মাসে এনসিপির কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। কে কোথায় কাজ করবে না করবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত তখনো আসেনি। ফলে আমার জানার কথা নয় ‘ক’ এনসিপির কোথায় কাজ করতে চান। বা আদৌ চান কি না। ওই সময়ে আমি এনসিপির ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সবাইকেই ঠিকমতো চিনে উঠতে পারি নাই।
এ কথা বলার মানে হলো, রমজানের আগে, এমনকি রমজান মাসে তার সঙ্গে আমার যতটুকুই যোগাযোগ হয়েছে, তা সাংগঠনিক দায়রা বা আওতার মধ্যে ঘটে নাই। ফলে তার সঙ্গে আমার ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ দেখিয়ে ক্ষমতার যে হায়ারার্কি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অমূলক।
এবার আসি ফাঁসকৃত ভাইরাল অডিও সম্পর্কে। প্রথম অডিওতে, ওই বিশেষ শব্দটি আপনারা তার মুখেই শুনেছেন। আমি শুধু ব্যাখ্যা দিয়েছি মাত্র। ‘না, না, ওই এক মুহূর্তে কথা দিয়ে আমাকে জাজ করো না, প্লিজ’— এ রকম ছিল আমার বক্তব্য। আসলে তিনিই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শব্দটির কাছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কেন? সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ থাকে যে, তিনি যেহেতু কল রেকর্ড করার উদ্দেশ্যেই কলটি করেছেন, কাজেই কথাবার্তাকে একটা সুনির্দিষ্ট দিকে তিনিই নিয়ে গেছেন। এবং এটা ঘটেছে সম্পূর্ণ আমার অগোচরে। অর্থাৎ, আমি কথা বলেছি with good faith; অন্যদিকে, তিনি কথা বলেছেন, কল রেকর্ড করে তা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার মতলবে।
খেয়াল করার মতো বিষয়, ওই অডিও কলটির পরিপ্রেক্ষিত আমলে না নিলে চলে না। তিনি আরও একটি চ্যাট স্ক্রিনশট অন্যদের কাছে চালান করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের মধ্যে ৩২ মিনিটের একটি ভিডিও কল হয়েছে। সেই ভিডিও কলের প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ ইগ্নোর করে পরবর্তী ৪৭ মিনিটের অডিও কল সম্পর্কে কি কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়? নিতান্তই ব্যক্তিগত স্পেসে ধারাবাহিক আলাপচারিতায় করা একটি প্রস্তাব এখন পাবলিক স্পেসে আসায় ‘অশোভন’ মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ওই প্রশ্ন পর্যন্ত যাওয়ার একটি পরম্পরা আছে: ভিডিও কল>চ্যাটিং>অডিও কল।
এই সিকোয়েন্স মার্ক করতে হবে।
এমন কথা আমি না বললেই ভালো করতাম। আমার আরও সংযত হতে হবে। কিন্তু এখন আমার এই চরম চরিত্র হননের মুহূর্তে না বলে পারছি না, নারী-পুরুষ সম্পর্কে ক্ষমতার প্রশ্নটি এত সরল নয়। সম্মতি (কনসেন্ট; যা পুরুষ নারীর থেকে আদায় করে নেয় বলে অনুমান) ও বলপ্রয়োগ (কোয়ের্শন; যা নারীর অসম্মতিতে পুরুষ কর্তৃক প্রযুক্ত হয় বলে অনুমান)— এই দুই বাইনারির বাইরেও সিডাকশন তথা ফুসলানোর ক্ষমতাও যে এক ধরনের ক্ষমতা, নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ সূত্রে এ কথা আমাদের অজানা নয়। অর্থাৎ, এই কনভার্সেশনের ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত তথা উভয়পক্ষের যোগাযোগের ধারাবাহিকতা, ফুসলানো ইত্যাদিকে আমলে না নিলে ঘটনার সার্বিকতায় পৌঁছানো যায় না।
‘ক’-এর সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টের কনশাস-আনকশাস মিলিয়ে যা ধরা পড়ে, যে সকল নাম তিনি নিয়েছেন, তাতেই তার নিয়ত অনেকটা খোলাসা হয়। আমার সঙ্গে তার কথাবার্তার ব্যাপারে নাকি তিনি আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডকে জানান। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ড কি আমার বিচারক নাকি আদালত? তাকে কেন জানাতে হবে? কারণ কি এই যে, তিনি আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় নিয়মিতভাবে আদালত বসান? তারপর কি তার সঙ্গে ফন্দি করেই আপনি কল রেকর্ড করেছেন এবং দেশের বাইরের অ্যাকটিভিস্টদের কাছে পাচার করেছেন? প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।
রোজা ও রোজার আগের ঘটনা তিনি নাকি ‘সাংগঠনিক গোপনীয়তা রক্ষা করে’ মীমাংসা করতে চেয়েছেন। কী কী পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন এই আড়াই মাসে? সংগঠনে কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন? কাউকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন? জানান নাই।
রোজার প্রায় তিন মাস পর, আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়ালের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, কোরবানি ঈদের রাতে এক সামাজিক দাওয়াতের প্রোগ্রামে এসে ‘ক’ এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মৌখিকভাবে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেন। সেটা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না। তবু জনাব আহ্বায়ক ‘ক’-কে ভালো করে না চেনা সত্ত্বেও বলেন, শৃঙ্খলা কমিটি ও মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে যেন জানান। ইতিমধ্যেই কয়েক দিন পর কল রেকর্ড ফাঁস করার পর তিনি সামান্তা শারমিনকে দেখা হলে একই কথা জানান। সেখানে সামান্তা তাকে ‘মাহরাম’ জাতীয় কিছু বলেন নাই, অথচ এই মিথ্যা প্রচারণাটাই চালানো হচ্ছে।
কয়েকটা ব্যাপার পরিষ্কার থাকা জরুরি:
‘ক’ এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ বা ‘কর্মী’ নন। তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্ক বিরাজ করে না। ‘তাকে দূরে রাখেন’— মহানগর বা সেলের কাউকে আমি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেই নাই। আসলে সেই এখতিয়ারই আমার নাই। তার এই দাবির সত্যতা কী? কে তাকে বলেছে আমি এমন নির্দেশনা দিয়েছি?
মহানগর বা কেন্দ্রীয় সেলে কাকে নেওয়া হবে বা না হবে সেটা একান্তই ওই সকল কমিটি ও সেলের সিদ্ধান্ত। আমি এমনকি ঠিকমতো জানি না মহানগরের কোন কমিটি ও সেলের কোন দায়িত্ব কে দেখভালো করছে। পার্টিতে আমার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি তা পালন করতেই এত ব্যস্ত থাকি যে, কমিটি ও সেল নিয়ে মাথা ঘামানো বা প্রভাবিত করার সময় বা সুযোগ কোনোটাই আমার নাই। কেন্দ্রের বাইরে এনসিপির কোনো সেল নাই। সেলে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সদস্য হতে হবে। ‘ক’ এনসিপির কেন্দ্রের সদস্য পর্যন্ত নন। তাহলে তাকে সেলে না নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কীভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারি? সেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা তথা কেন্দ্রীয় সদস্যপদই তো তার নাই! মহানগরের কমিটি যারা দেখেছেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কাকে অন্তর্ভুক্ত করবে না করবে। এ ব্যাপারেও আমি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা রাখি না।
দুটি ব্যাপার খেয়াল করতে হবে:
এক, তিনি আমাকে কোনো ‘বিশেষ সুবিধা’ দিলেও তিনি যে দলে ঢুকতে পারবেন, এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই। কাজেই যেমনটি প্রচার করা হচ্ছে, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দেওয়ার কারণে তিনি এনসিপিতে আসতে পারছেন না— এই দাবি ভিত্তিহীন।
দুই, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দিলেও দল যদি তাকে কোনো স্তরে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, আমি সেখানে বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সংরক্ষণ করি না। ওই একই কারণে ‘দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’ এটা সম্পূর্ণতই আমার কাজের সীমানার বাইরের ব্যাপার।
কাজেই এনসিপিতে তিনি আসতে পারছেন কি পারছেন না এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় বিশেষ নাই। তবে এনসিপির বিভিন্ন ঘোষিত পাবলিক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখেছি। সেখানে তাকে বারণ করা বা উৎসাহিত করার কোনো সুযোগ আমার ছিল না। এ ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে তিনি কখনো আমার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বা কখনো আমার পথ আগলে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না কেন। যতবার তিনি আমাকে এই প্রশ্ন করেছেন, আমি একটাই উত্তর দিয়েছি, কমিটি দেওয়ার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আপনি কোনো কমিটিতে আসতে চাইলে বিষয়টা যারা দেখছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। এ ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু করণীয় নাই।
একপর্যায়ে, সম্ভবত এ বছরের মে মাসের একদম শেষের দিকে অথবা জুনের শুরুতে অফিসে একদিন তার সঙ্গে আমার দেখা হয়ে যায়। তিনি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আমি তার সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ের মিটিং কক্ষে বসি। এটাকেই অডিও কলে তিনি বলছেন, ‘আমি তোমাকে রুমে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি..’
তিনি আমার কাছে জানতে চান, তাকে নেওয়া হচ্ছে না কেন। আমি একই উত্তর দেই। তিনি আমাকে এক প্রকার চাপ প্রয়োগের সুরেই বলেন, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত তথা নেওয়া হবে কি হবে না এটা তাকে জানাতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আমাকে ফোন করবেন। মেসেঞ্জার চেক করে দেখলাম, তিনি ৬ জুন মেসেঞ্জারে কল দিয়েছিলেন। আমি ধরিনি বা ধরতে পারিনি। বাকি ঘটনা আপনাদের চোখের সামনে।
দুই দিন আগে প্রথম যখন অডিও রেকর্ডটি ফাঁস হলো, আমি সত্যি সত্যি ভেবেছিলাম আমাকে বিতর্কিত করতে কাজটা এজেন্সি করেছে। আমি ‘ক’-কে জিজ্ঞেস করি, এই কল রেকর্ড ও ফাঁস কে করল? আপনারা কিন্তু দ্বিতীয় অডিও রেকর্ডে শুনতে পেলেন, তিনি বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনিও আমার কাছ থেকে মাত্র দেখলেন। তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েছেন! আমিও সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করলাম। কি বোকা আমি! সঙ্গে সঙ্গে তাকে অনুরোধ করলাম, যেহেতু কাজটা আপনি করেন নাই, কাজেই আপনি একটা ক্ল্যারিফিকেশন দেন প্লিজ, এবং উদ্বেগ জানান, এভাবে ব্যক্তিগত আলাপ কারা ফাঁস করে! আপনি যে দল করতে চান, সে দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার তো আপনার ভালো লাগার কথা নয়! তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি আমাকে লিখে দাও আমি কী বলব, তবে আমি লেনিন ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
এরপর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, দ্বিতীয় কলটি শেষ হতে না হতেই আধঘণ্টার মধ্যে সেটিও অনলাইনে চলে আসল। এবং দাবি করা হলো আমি তাকে ‘চাপ’ প্রয়োগ করছি আমার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিতে। অথচ নিজের হাতে আমার কলটি আরেক মোবাইল থেকে ভিডিও ধারণ করে সেটা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি নিজেই। তারপর আবার আমি জিজ্ঞেস করার পর আবারও তিনি আকাশ থেকে পড়েছেন। তিনি নাকি কিছুই জানেন না! তার এই ডাবল গেম এবং এর পেছনে ক্রিয়াশীল পুরো সিন্ডিকেটটা শনাক্ত করতে আমার বেশ খানিকটা সময় লেগে গেছে।
এই সিন্ডিকেটের মোটিভ পরিষ্কার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আমার মানহানি ও চরিত্রহনন করা। সেভাবেই তাকে স্ক্রিপ্ট লিখে দেওয়া হয়েছে। দুজন ব্যক্তির কথোপকথনে যদি একজনের নিয়ত থাকে তিনি কল রেকর্ড করবেন এবং তা ফাঁস করবেন; দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি এই পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকেন, তাহলে যা ঘটার কথা, আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা পিক করেছে তা খুব পরিষ্কার। আওয়ামী কালচারাল উইং, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে নাখোশ বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ এই ঘটনাকে লুফে নিয়েছে। তাদের টার্গেট স্রেফ আমি না; বলা ভালো, এনসিপিই তাদের প্রধান টার্গেট। ঈদের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের রাতে আমার বিরুদ্ধে এই সংঘবদ্ধ অনলাইন মব সৃষ্টি, নিছক কাকতাল নয়। তারা খুব ভালোভাবেই অবগত আছেন, এনসিপির পক্ষে আমি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দলের পজিশন তুলে ধরি। গত কয়েক মাসে রাজপথের বক্তৃতায়, টকশোতে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে আমার অনমনীয় অবস্থান সমাজে ওয়েল এস্টাবলিশড। আমি যে টার্গেট হব, এটা আশ্চর্যের নয়। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও না-পছন্দকে ব্যক্তিগত চরিত্রহননের মতো ঘৃণ্য কাজের মাধ্যমে মোকাবিলার মতো জঘন্য কাজ আর হয় না।
জনাবা ‘ক’ অবশ্য তাজনূভার দুঃখে কাতর! কেন অহেতুক তাজনূভাকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চরিত্রহনন ও যৌন আক্রমণ চলছে, তা তাকে বেশ দুঃখিত করেছে বৈকি! অথচ দুইটা দিন তিনি চুপ থাকলেন, হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে বলতে থাকলেন, তিনি কল ফাঁসের ব্যাপারে কিছু জানেন না। এদিকে তাজনূভার সঙ্গে এটা ঘটতে দিলেন। ওই নারীর পরিচয় জানার পরও তাজনূভাসহ এনসিপির নেতা-কর্মীরা তার পরিচয় ফাঁস না করে রাজনৈতিক ভদ্রতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাজনূভা জাবীনও যে তার শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যের কারণে কোনো কোনো পক্ষের চক্ষুশূল, তা বলাই বাহুল্য।
ভালো কথা, গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত নারীদের মৈত্রীযাত্রার একটা ঘটনা শেয়ার করি। সেখানে যাওয়ার কারণে তাজনূভা বেশ আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। আমি তাজনূভার পক্ষে প্রতিবাদ করে ফেসবুকে কিছু কথা লিখেছিলাম। এরপরের দিন, গত ১৭ মে, জনাবা ‘ক’, আমাকে মেসেঞ্জারে লেখেন, ‘তুমি আমার কথাটা উল্লেখ করতে পারতে।’ অর্থাৎ, মৈত্রীযাত্রায় যাওয়ার কারণে তিনিও আক্রমণের শিকার হয়েছেন, সেটা আমি কেন উল্লেখ করলাম না এই নিয়ে তার অনুযোগ! অথচ তার ভাষ্যমতে আমি তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দিয়েছি গত রোজায়, মার্চ বা ফেব্রুয়ারি মাসে!
কল রেকর্ড ফাঁসের পর গত দুই দিন তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নানা কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হচ্ছে তিনি এটা ‘দলের ভেতরেই মিটমাট’ করতে চেয়েছেন, আমি নাকি সেই সেই সুযোগ রাখি নাই। কীভাবে? আমাকে চরমভাবে অপদস্থ করার পর কেউ কেউ যখন তাকে শনাক্ত করতে পেরেছেন, তার বিরুদ্ধেও কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। এগুলো নাকি আমি করিয়েছি! তিনি আর এসব ‘বাড়াতে চান না’।
বাহ! একদিকে আমাকে অনলাইন নাৎসিদের হাতে তুলে দিয়ে চরমভাবে অপদস্থ ও চরিত্রহননের পর তিনি আর ‘বাড়াতে চান না’। আমি তাকে বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ব্রেক হওয়ার পর, সেসব আর কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পক্ষে-বিপক্ষে কথা ছড়ায়। এখানে আমার কোনো হাত নাই। আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন মব সৃষ্টি করার পর আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, ‘তুমি মব সৃষ্টি করছো।’
গত দুই দিন আমি এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে আছি। আমার নামে বিভিন্ন ফেইক স্ক্রিনশট ভাইরাল করা হয়েছে, আমার ছবি বিভিন্ন পর্নো সাইটে তুলে দিয়ে সেসব distorted & edited ছবির স্ক্রিনশট আবার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। আমার আর তাজনূভার ছবি জুড়ে দিয়ে জঘন্য অশ্লীল ও যৌনাত্মক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এতে করে আমার সামাজিক মর্যাদা, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং আমার দলের ইমেজ ভূলুণ্ঠিত। দেখা যাচ্ছে যে, আমার ব্যক্তিগত ও মানবিক মর্যাদা এভাবে ধূলিসাৎ করাটাও অনেকের কাছে ন্যায়ের পরাকাষ্ঠা!
এসবের পরিবেশ তৈরি করেও নাকি ভদ্রমহিলা এই দলকে ‘বিতর্কিত’ করতে চান না, তিনি এই দলের ‘ভালো’ চান, তিনি সব ‘মিটমাট’ করতে চান! তথাস্তু!
যেভাবে এই ঘটনায় জনাব নাহিদ ইসলাম, সামান্তা শারমিন, তাজনূভা জাবীন ও দলের অন্যান্য নারীদের টেনে আনা হয়েছে, তাতে খুবই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে এনসিপিই টার্গেট। এনসিপির ইমেজ ডাউন করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটাই এই পুরো ঘটনাপ্রবাহের মূলে। আমার দল যখন নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে, ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সবচেয়ে ডিসাইসিভ ও বোল্ড পজিশন নিয়েছে, তখনই এই সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঘটানো হলো।
নতুন দল হিসেবে এনসিপি এক মিডিয়া ক্রুসেডের মুখোমুখি। প্রতিদিনই এনসিপির বিরুদ্ধে চরম আপত্তিকর ও ভুলভাল তথ্য অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে। সামনে এটা আরও বাড়বে। ইনশাআল্লাহ, এনসিপি এসব মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে।
আমি দলের কাছে লিখিত জবাব দেব। আমার জবাব অবশ্য আমি নিজেই লিখি, অন্য কাউকে লিখে দিতে হয় না।
সংশ্লিষ্ট অপর নারী নিজ প্রোফাইল থেকে আমার বিরুদ্ধে পোস্ট দিলেও, এখানে আমি তার নাম নিলাম না। এ জন্য চড়া মাশুল দিতে হলেও এটা আমার মডেস্টি আর ইন্টিগ্রিটির একটা স্মারক হয়ে থাক। ব্যক্তিগত যৌন-কেচ্ছার জায়গা অনলাইন পরিসর নয়। যারা সংশ্লিষ্ট নারীকে চিনেছেন, তাদের কাছে আমার আহ্বান, তার ব্যাপারে কোনো কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। এহেন কুৎসা সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা না হওয়াই কাম্য।
আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। Still I believe only truth shall prevail.

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
যেকোনো ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট উভয় পক্ষ যদি একই ধরনের ইনটিগ্রিটি না দেখায়, তাহলে ঘটনার ফেয়ারনেস নষ্ট হয়। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এই, ঢাকার এলিট বাবলগুলোতে যারা মানবাধিকার, জাস্টিস ইত্যাদি নিয়ে প্রচণ্ড উচ্চকিত থাকেন, তারা খেয়াল করেন না কীভাবে তারা জাস্টিস অর্জন করতে গিয়ে নতুন করে ইনজাস্টিস করছেন, কীভাবে তাদের মানবাধিকার তোড়জোড়ের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। নিজের গোষ্ঠীকে জাস্টিফাই করতে উচিত-অনুচিত ন্যারেটিভ এস্টাবলিশ করতে যেমন তারা বদ্ধপরিকর; তদ্রূপ, নিজ গোষ্ঠীর বাইরে (যাদের ব্যাপারে তারা বৈরিভাবাপন্ন) কাউকে নাস্তানাবুদ ও ঘায়েল করতে এমনকি মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করতেও তারা পিছপা হন না।
সাম্প্রতিক সময়ে আমাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ একটা হইচই দেখা যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ করা এবং আমার সম্পর্কে রায় দেওয়া সংশ্লিষ্ট সকলের ‘গণতান্ত্রিক’ অধিকার। এর আগে বছর চারেক আগে আমি একবার কাছাকাছি ধরনের ফেসবুক আদালতের তোপের মুখে পড়েছিলাম। তখন আমার সিদ্ধান্ত ছিল, যা-ই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাজারে আমি ব্যক্তিগত কেচ্ছাকাহিনি নিয়ে চর্চা করব না। উপযুক্ত ফোরামে নিজের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য জানাব। তা-ই করেছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া আক্রমণ তাতে থেমে থাকে নাই। আমি দীর্ঘ তিন বছর একটা প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম; অন্যদিকে আমার ব্যাপারে যা খুশি তাই মন্তব্য করা এবং আমাকে যেকোনো প্রকারে অপদস্থ করাকে অনেকেই নিজেদের ‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম’-এর অংশ বানিয়ে ফেলেছিলেন। নীরবে রক্তক্ষরণ সত্ত্বেও আমি সেসব ওভারলুক করে গেছি। কেউ যদি এখনো ওই ঘটনা জানতে আগ্রহী থাকেন, ফেসবুকে আদালত না বসিয়ে let’s reopen all the documents.
গত দুই দিন ধরে আবারও আমি মহামান্য ফেসবুক আদালতের ব্যাশিং এর শিকার হচ্ছি। আগের পোস্টে লিখেছি, আমি শতভাগ ত্রুটিমুক্ত মানুষ নই। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনের কোনো ঘটনাকে যখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এবং আমার দলকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন তা আর ন্যায্য থাকে না।
পয়লা নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে, আমার সঙ্গে অপর এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করল কে বা কারা? এবং সেটা কীভাবে দেশের বাইরে থাকা অ্যাকটিভিস্টদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটছাঁট করে প্রেক্ষাপটহীনভাবে ভাইরাল করা হলো? এই কাজটা কার করা?
ধরা যাক, সংশ্লিষ্ট অপর ব্যক্তির নাম ‘ক’। তাকে আমি চিনেছি, আপনাদের মতোই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। শুরুতে তার পারিবারিক কোনো ঘটনা আমার নলেজে ছিল না। জাতীয় নাগরিক কমিটির অফিসে (তখনো এনসিপি আত্মপ্রকাশ করেনি) তিনি একদিন আসেন এবং আমার সঙ্গে সামান্য কথা হয়।
একদিন সন্ধ্যায় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে আসেন। তখন শীতকাল। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস। তার ভাষ্যমতে, প্রাক্তন স্বামী তাকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। শুরুতে আমি অফিসে ছিলাম না। তিনি নাকি অফিসে এসে আমাকে খুঁজেছেন। এমনকি লিফটের ১৫ তলা উঠতে উঠতে আমার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। অফিসে যারা সে সময় উপস্থিত ছিলেন, তারা তাকে প্রাথমিক শুশ্রূষা দেন। কিছুক্ষণ পর অফিসে আমি আসি। এবং যার পরামর্শ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না বলে ফেসবুকে জানিয়েছেন, সেই মানবাধিকার লেনিন ভাইও আসেন। জানাক থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসলে পুলিশি প্রটোকলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সঙ্গে আমাদের কমিটির আরও একজন পুরুষ ও নারী কর্মীও ছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাকে দুইটা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তারপর পুলিশ প্রটোকলসহই আমরা তাকে ধানমন্ডির এক বাসায় পৌঁছে দেই। আমরা তাকে মামলা করতে পরামর্শ দেই, তিনি জানান তিনি মামলা করবেন না। যাক, সেটা তার ব্যাপার।
ওই রাতেই আহত অবস্থায় এবং পরে আরেকদিন দেখা হলে তিনি আমাকে বলেন, তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেব।
খেয়াল করবেন, ‘ক’ তার সর্বশেষ পোস্টে এই ঘটনাটার কথা উল্লেখ করেছেন ঠিকই; কিন্তু আমি ও জানাক যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে পুলিশ প্রটোকল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলাম, এই তথ্যটা তিনি বেমালুম চেপে গেছেন। মানবাধিকার লেনিন ভাই, শহিদুল আলম, সারা হোসেন সবার নামই আছে। কিন্তু ওই রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সারোয়ার তুষার ও মুশফিকুর জোহানের নাম নাই। বেশ!
শহিদুল আলম ও সারা হোসেন তার জন্য ওই দিন কি করেছেন আমার জানা নাই। ‘তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব’— তার এ কথার প্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম, আপনি শহিদুল আলম, রেহনুমা, সায়দিয়া গুলরুখ তাদেরকে ঘটনাটা জানান। উনারা এসব ক্ষেত্রে বেশ হেল্পফুল। তখন ‘ক’ আমাকে বলেছিলেন, তিনি সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন, সবাই তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার কোন কথা সত্য বা মিথ্যা আমার জানা নাই, কিন্তু তিনি এটাই বলেছিলেন।
যাই হোক, সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি অনেকগুলো মিথ্যাচার করেছেন। ভুল ও বিকৃত তথ্য দিয়েছেন। তিনি এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ নন। কেন্দ্রীয় বা মহানগর পর্যায়ে তিনি কোনো পদ হোল্ড করেন না। এমনকি তিনি এনসিপির সদস্যও নন। কাজেই তার সঙ্গে আমার কোনো কথাবার্তা বা এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কোনো ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ নাই; সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্কের কোনো হায়ারার্কিও নাই। এটা তিনিও জানেন। কিন্তু এখন গল্প সাজাতে গেলে যেভাবে বললে কাজ হবে, তিনি সেভাবে লিখেছেন বা তাকে সেভাবে লিখে দেওয়া হয়েছে।
তার কিছু বক্তব্য খেয়াল করা যাক:
‘মানবাধিকারকর্মী লেনিন ভাই আমাকে নেপাল পাঠিয়ে দেয়...’
‘ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি...’
‘নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই আমাকে ফোন করত ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে...’
আমি তাকে প্রায়ই ফোন করতাম কি করতাম না— সেটা পরের আলাপ। উল্লিখিত তিন উদ্ধৃতি থেকে কী দেখা যাচ্ছে? তাকে মানবাধিকার ভাইজান নেপাল পাঠিয়ে দেন। কবে? এনসিপি আত্মপ্রকাশের পূর্বে। এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন তিনি দেশে এসেছেন। তার ভাষ্যমতে, তাকে আমি ‘প্রায়ই ফোন করতাম’ তার নেপালে থাকা অবস্থায়।
তখন তো এনসিপির আত্মপ্রকাশই ঘটে নাই। তাহলে ‘তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফরমাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি....’ এনসিপিই যখন গঠিত হয় নাই, তখন সম্পর্ক ‘সাংগঠনিক ও ফরমাল’ রাখতে বলার মানে কী?
এনসিপি আত্মপ্রকাশ করে রমজানের ঠিক আগের দিন। এরপর পুরো রমজান মাসে এনসিপির কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। কে কোথায় কাজ করবে না করবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত তখনো আসেনি। ফলে আমার জানার কথা নয় ‘ক’ এনসিপির কোথায় কাজ করতে চান। বা আদৌ চান কি না। ওই সময়ে আমি এনসিপির ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সবাইকেই ঠিকমতো চিনে উঠতে পারি নাই।
এ কথা বলার মানে হলো, রমজানের আগে, এমনকি রমজান মাসে তার সঙ্গে আমার যতটুকুই যোগাযোগ হয়েছে, তা সাংগঠনিক দায়রা বা আওতার মধ্যে ঘটে নাই। ফলে তার সঙ্গে আমার ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ দেখিয়ে ক্ষমতার যে হায়ারার্কি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অমূলক।
এবার আসি ফাঁসকৃত ভাইরাল অডিও সম্পর্কে। প্রথম অডিওতে, ওই বিশেষ শব্দটি আপনারা তার মুখেই শুনেছেন। আমি শুধু ব্যাখ্যা দিয়েছি মাত্র। ‘না, না, ওই এক মুহূর্তে কথা দিয়ে আমাকে জাজ করো না, প্লিজ’— এ রকম ছিল আমার বক্তব্য। আসলে তিনিই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শব্দটির কাছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কেন? সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ থাকে যে, তিনি যেহেতু কল রেকর্ড করার উদ্দেশ্যেই কলটি করেছেন, কাজেই কথাবার্তাকে একটা সুনির্দিষ্ট দিকে তিনিই নিয়ে গেছেন। এবং এটা ঘটেছে সম্পূর্ণ আমার অগোচরে। অর্থাৎ, আমি কথা বলেছি with good faith; অন্যদিকে, তিনি কথা বলেছেন, কল রেকর্ড করে তা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার মতলবে।
খেয়াল করার মতো বিষয়, ওই অডিও কলটির পরিপ্রেক্ষিত আমলে না নিলে চলে না। তিনি আরও একটি চ্যাট স্ক্রিনশট অন্যদের কাছে চালান করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের মধ্যে ৩২ মিনিটের একটি ভিডিও কল হয়েছে। সেই ভিডিও কলের প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ ইগ্নোর করে পরবর্তী ৪৭ মিনিটের অডিও কল সম্পর্কে কি কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়? নিতান্তই ব্যক্তিগত স্পেসে ধারাবাহিক আলাপচারিতায় করা একটি প্রস্তাব এখন পাবলিক স্পেসে আসায় ‘অশোভন’ মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ওই প্রশ্ন পর্যন্ত যাওয়ার একটি পরম্পরা আছে: ভিডিও কল>চ্যাটিং>অডিও কল।
এই সিকোয়েন্স মার্ক করতে হবে।
এমন কথা আমি না বললেই ভালো করতাম। আমার আরও সংযত হতে হবে। কিন্তু এখন আমার এই চরম চরিত্র হননের মুহূর্তে না বলে পারছি না, নারী-পুরুষ সম্পর্কে ক্ষমতার প্রশ্নটি এত সরল নয়। সম্মতি (কনসেন্ট; যা পুরুষ নারীর থেকে আদায় করে নেয় বলে অনুমান) ও বলপ্রয়োগ (কোয়ের্শন; যা নারীর অসম্মতিতে পুরুষ কর্তৃক প্রযুক্ত হয় বলে অনুমান)— এই দুই বাইনারির বাইরেও সিডাকশন তথা ফুসলানোর ক্ষমতাও যে এক ধরনের ক্ষমতা, নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ সূত্রে এ কথা আমাদের অজানা নয়। অর্থাৎ, এই কনভার্সেশনের ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত তথা উভয়পক্ষের যোগাযোগের ধারাবাহিকতা, ফুসলানো ইত্যাদিকে আমলে না নিলে ঘটনার সার্বিকতায় পৌঁছানো যায় না।
‘ক’-এর সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টের কনশাস-আনকশাস মিলিয়ে যা ধরা পড়ে, যে সকল নাম তিনি নিয়েছেন, তাতেই তার নিয়ত অনেকটা খোলাসা হয়। আমার সঙ্গে তার কথাবার্তার ব্যাপারে নাকি তিনি আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডকে জানান। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ড কি আমার বিচারক নাকি আদালত? তাকে কেন জানাতে হবে? কারণ কি এই যে, তিনি আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় নিয়মিতভাবে আদালত বসান? তারপর কি তার সঙ্গে ফন্দি করেই আপনি কল রেকর্ড করেছেন এবং দেশের বাইরের অ্যাকটিভিস্টদের কাছে পাচার করেছেন? প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।
রোজা ও রোজার আগের ঘটনা তিনি নাকি ‘সাংগঠনিক গোপনীয়তা রক্ষা করে’ মীমাংসা করতে চেয়েছেন। কী কী পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন এই আড়াই মাসে? সংগঠনে কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন? কাউকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন? জানান নাই।
রোজার প্রায় তিন মাস পর, আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়ালের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, কোরবানি ঈদের রাতে এক সামাজিক দাওয়াতের প্রোগ্রামে এসে ‘ক’ এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মৌখিকভাবে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেন। সেটা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না। তবু জনাব আহ্বায়ক ‘ক’-কে ভালো করে না চেনা সত্ত্বেও বলেন, শৃঙ্খলা কমিটি ও মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে যেন জানান। ইতিমধ্যেই কয়েক দিন পর কল রেকর্ড ফাঁস করার পর তিনি সামান্তা শারমিনকে দেখা হলে একই কথা জানান। সেখানে সামান্তা তাকে ‘মাহরাম’ জাতীয় কিছু বলেন নাই, অথচ এই মিথ্যা প্রচারণাটাই চালানো হচ্ছে।
কয়েকটা ব্যাপার পরিষ্কার থাকা জরুরি:
‘ক’ এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ বা ‘কর্মী’ নন। তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্ক বিরাজ করে না। ‘তাকে দূরে রাখেন’— মহানগর বা সেলের কাউকে আমি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেই নাই। আসলে সেই এখতিয়ারই আমার নাই। তার এই দাবির সত্যতা কী? কে তাকে বলেছে আমি এমন নির্দেশনা দিয়েছি?
মহানগর বা কেন্দ্রীয় সেলে কাকে নেওয়া হবে বা না হবে সেটা একান্তই ওই সকল কমিটি ও সেলের সিদ্ধান্ত। আমি এমনকি ঠিকমতো জানি না মহানগরের কোন কমিটি ও সেলের কোন দায়িত্ব কে দেখভালো করছে। পার্টিতে আমার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি তা পালন করতেই এত ব্যস্ত থাকি যে, কমিটি ও সেল নিয়ে মাথা ঘামানো বা প্রভাবিত করার সময় বা সুযোগ কোনোটাই আমার নাই। কেন্দ্রের বাইরে এনসিপির কোনো সেল নাই। সেলে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সদস্য হতে হবে। ‘ক’ এনসিপির কেন্দ্রের সদস্য পর্যন্ত নন। তাহলে তাকে সেলে না নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কীভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারি? সেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা তথা কেন্দ্রীয় সদস্যপদই তো তার নাই! মহানগরের কমিটি যারা দেখেছেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কাকে অন্তর্ভুক্ত করবে না করবে। এ ব্যাপারেও আমি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা রাখি না।
দুটি ব্যাপার খেয়াল করতে হবে:
এক, তিনি আমাকে কোনো ‘বিশেষ সুবিধা’ দিলেও তিনি যে দলে ঢুকতে পারবেন, এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই। কাজেই যেমনটি প্রচার করা হচ্ছে, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দেওয়ার কারণে তিনি এনসিপিতে আসতে পারছেন না— এই দাবি ভিত্তিহীন।
দুই, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দিলেও দল যদি তাকে কোনো স্তরে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, আমি সেখানে বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সংরক্ষণ করি না। ওই একই কারণে ‘দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’ এটা সম্পূর্ণতই আমার কাজের সীমানার বাইরের ব্যাপার।
কাজেই এনসিপিতে তিনি আসতে পারছেন কি পারছেন না এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় বিশেষ নাই। তবে এনসিপির বিভিন্ন ঘোষিত পাবলিক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখেছি। সেখানে তাকে বারণ করা বা উৎসাহিত করার কোনো সুযোগ আমার ছিল না। এ ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে তিনি কখনো আমার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বা কখনো আমার পথ আগলে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না কেন। যতবার তিনি আমাকে এই প্রশ্ন করেছেন, আমি একটাই উত্তর দিয়েছি, কমিটি দেওয়ার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আপনি কোনো কমিটিতে আসতে চাইলে বিষয়টা যারা দেখছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। এ ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু করণীয় নাই।
একপর্যায়ে, সম্ভবত এ বছরের মে মাসের একদম শেষের দিকে অথবা জুনের শুরুতে অফিসে একদিন তার সঙ্গে আমার দেখা হয়ে যায়। তিনি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আমি তার সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ের মিটিং কক্ষে বসি। এটাকেই অডিও কলে তিনি বলছেন, ‘আমি তোমাকে রুমে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি..’
তিনি আমার কাছে জানতে চান, তাকে নেওয়া হচ্ছে না কেন। আমি একই উত্তর দেই। তিনি আমাকে এক প্রকার চাপ প্রয়োগের সুরেই বলেন, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত তথা নেওয়া হবে কি হবে না এটা তাকে জানাতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আমাকে ফোন করবেন। মেসেঞ্জার চেক করে দেখলাম, তিনি ৬ জুন মেসেঞ্জারে কল দিয়েছিলেন। আমি ধরিনি বা ধরতে পারিনি। বাকি ঘটনা আপনাদের চোখের সামনে।
দুই দিন আগে প্রথম যখন অডিও রেকর্ডটি ফাঁস হলো, আমি সত্যি সত্যি ভেবেছিলাম আমাকে বিতর্কিত করতে কাজটা এজেন্সি করেছে। আমি ‘ক’-কে জিজ্ঞেস করি, এই কল রেকর্ড ও ফাঁস কে করল? আপনারা কিন্তু দ্বিতীয় অডিও রেকর্ডে শুনতে পেলেন, তিনি বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনিও আমার কাছ থেকে মাত্র দেখলেন। তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েছেন! আমিও সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করলাম। কি বোকা আমি! সঙ্গে সঙ্গে তাকে অনুরোধ করলাম, যেহেতু কাজটা আপনি করেন নাই, কাজেই আপনি একটা ক্ল্যারিফিকেশন দেন প্লিজ, এবং উদ্বেগ জানান, এভাবে ব্যক্তিগত আলাপ কারা ফাঁস করে! আপনি যে দল করতে চান, সে দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার তো আপনার ভালো লাগার কথা নয়! তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি আমাকে লিখে দাও আমি কী বলব, তবে আমি লেনিন ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
এরপর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, দ্বিতীয় কলটি শেষ হতে না হতেই আধঘণ্টার মধ্যে সেটিও অনলাইনে চলে আসল। এবং দাবি করা হলো আমি তাকে ‘চাপ’ প্রয়োগ করছি আমার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিতে। অথচ নিজের হাতে আমার কলটি আরেক মোবাইল থেকে ভিডিও ধারণ করে সেটা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি নিজেই। তারপর আবার আমি জিজ্ঞেস করার পর আবারও তিনি আকাশ থেকে পড়েছেন। তিনি নাকি কিছুই জানেন না! তার এই ডাবল গেম এবং এর পেছনে ক্রিয়াশীল পুরো সিন্ডিকেটটা শনাক্ত করতে আমার বেশ খানিকটা সময় লেগে গেছে।
এই সিন্ডিকেটের মোটিভ পরিষ্কার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আমার মানহানি ও চরিত্রহনন করা। সেভাবেই তাকে স্ক্রিপ্ট লিখে দেওয়া হয়েছে। দুজন ব্যক্তির কথোপকথনে যদি একজনের নিয়ত থাকে তিনি কল রেকর্ড করবেন এবং তা ফাঁস করবেন; দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি এই পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকেন, তাহলে যা ঘটার কথা, আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা পিক করেছে তা খুব পরিষ্কার। আওয়ামী কালচারাল উইং, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে নাখোশ বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ এই ঘটনাকে লুফে নিয়েছে। তাদের টার্গেট স্রেফ আমি না; বলা ভালো, এনসিপিই তাদের প্রধান টার্গেট। ঈদের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের রাতে আমার বিরুদ্ধে এই সংঘবদ্ধ অনলাইন মব সৃষ্টি, নিছক কাকতাল নয়। তারা খুব ভালোভাবেই অবগত আছেন, এনসিপির পক্ষে আমি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দলের পজিশন তুলে ধরি। গত কয়েক মাসে রাজপথের বক্তৃতায়, টকশোতে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে আমার অনমনীয় অবস্থান সমাজে ওয়েল এস্টাবলিশড। আমি যে টার্গেট হব, এটা আশ্চর্যের নয়। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও না-পছন্দকে ব্যক্তিগত চরিত্রহননের মতো ঘৃণ্য কাজের মাধ্যমে মোকাবিলার মতো জঘন্য কাজ আর হয় না।
জনাবা ‘ক’ অবশ্য তাজনূভার দুঃখে কাতর! কেন অহেতুক তাজনূভাকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চরিত্রহনন ও যৌন আক্রমণ চলছে, তা তাকে বেশ দুঃখিত করেছে বৈকি! অথচ দুইটা দিন তিনি চুপ থাকলেন, হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে বলতে থাকলেন, তিনি কল ফাঁসের ব্যাপারে কিছু জানেন না। এদিকে তাজনূভার সঙ্গে এটা ঘটতে দিলেন। ওই নারীর পরিচয় জানার পরও তাজনূভাসহ এনসিপির নেতা-কর্মীরা তার পরিচয় ফাঁস না করে রাজনৈতিক ভদ্রতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাজনূভা জাবীনও যে তার শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যের কারণে কোনো কোনো পক্ষের চক্ষুশূল, তা বলাই বাহুল্য।
ভালো কথা, গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত নারীদের মৈত্রীযাত্রার একটা ঘটনা শেয়ার করি। সেখানে যাওয়ার কারণে তাজনূভা বেশ আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। আমি তাজনূভার পক্ষে প্রতিবাদ করে ফেসবুকে কিছু কথা লিখেছিলাম। এরপরের দিন, গত ১৭ মে, জনাবা ‘ক’, আমাকে মেসেঞ্জারে লেখেন, ‘তুমি আমার কথাটা উল্লেখ করতে পারতে।’ অর্থাৎ, মৈত্রীযাত্রায় যাওয়ার কারণে তিনিও আক্রমণের শিকার হয়েছেন, সেটা আমি কেন উল্লেখ করলাম না এই নিয়ে তার অনুযোগ! অথচ তার ভাষ্যমতে আমি তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দিয়েছি গত রোজায়, মার্চ বা ফেব্রুয়ারি মাসে!
কল রেকর্ড ফাঁসের পর গত দুই দিন তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নানা কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হচ্ছে তিনি এটা ‘দলের ভেতরেই মিটমাট’ করতে চেয়েছেন, আমি নাকি সেই সেই সুযোগ রাখি নাই। কীভাবে? আমাকে চরমভাবে অপদস্থ করার পর কেউ কেউ যখন তাকে শনাক্ত করতে পেরেছেন, তার বিরুদ্ধেও কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। এগুলো নাকি আমি করিয়েছি! তিনি আর এসব ‘বাড়াতে চান না’।
বাহ! একদিকে আমাকে অনলাইন নাৎসিদের হাতে তুলে দিয়ে চরমভাবে অপদস্থ ও চরিত্রহননের পর তিনি আর ‘বাড়াতে চান না’। আমি তাকে বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ব্রেক হওয়ার পর, সেসব আর কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পক্ষে-বিপক্ষে কথা ছড়ায়। এখানে আমার কোনো হাত নাই। আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন মব সৃষ্টি করার পর আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, ‘তুমি মব সৃষ্টি করছো।’
গত দুই দিন আমি এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে আছি। আমার নামে বিভিন্ন ফেইক স্ক্রিনশট ভাইরাল করা হয়েছে, আমার ছবি বিভিন্ন পর্নো সাইটে তুলে দিয়ে সেসব distorted & edited ছবির স্ক্রিনশট আবার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। আমার আর তাজনূভার ছবি জুড়ে দিয়ে জঘন্য অশ্লীল ও যৌনাত্মক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এতে করে আমার সামাজিক মর্যাদা, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং আমার দলের ইমেজ ভূলুণ্ঠিত। দেখা যাচ্ছে যে, আমার ব্যক্তিগত ও মানবিক মর্যাদা এভাবে ধূলিসাৎ করাটাও অনেকের কাছে ন্যায়ের পরাকাষ্ঠা!
এসবের পরিবেশ তৈরি করেও নাকি ভদ্রমহিলা এই দলকে ‘বিতর্কিত’ করতে চান না, তিনি এই দলের ‘ভালো’ চান, তিনি সব ‘মিটমাট’ করতে চান! তথাস্তু!
যেভাবে এই ঘটনায় জনাব নাহিদ ইসলাম, সামান্তা শারমিন, তাজনূভা জাবীন ও দলের অন্যান্য নারীদের টেনে আনা হয়েছে, তাতে খুবই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে এনসিপিই টার্গেট। এনসিপির ইমেজ ডাউন করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটাই এই পুরো ঘটনাপ্রবাহের মূলে। আমার দল যখন নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে, ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সবচেয়ে ডিসাইসিভ ও বোল্ড পজিশন নিয়েছে, তখনই এই সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঘটানো হলো।
নতুন দল হিসেবে এনসিপি এক মিডিয়া ক্রুসেডের মুখোমুখি। প্রতিদিনই এনসিপির বিরুদ্ধে চরম আপত্তিকর ও ভুলভাল তথ্য অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে। সামনে এটা আরও বাড়বে। ইনশাআল্লাহ, এনসিপি এসব মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে।
আমি দলের কাছে লিখিত জবাব দেব। আমার জবাব অবশ্য আমি নিজেই লিখি, অন্য কাউকে লিখে দিতে হয় না।
সংশ্লিষ্ট অপর নারী নিজ প্রোফাইল থেকে আমার বিরুদ্ধে পোস্ট দিলেও, এখানে আমি তার নাম নিলাম না। এ জন্য চড়া মাশুল দিতে হলেও এটা আমার মডেস্টি আর ইন্টিগ্রিটির একটা স্মারক হয়ে থাক। ব্যক্তিগত যৌন-কেচ্ছার জায়গা অনলাইন পরিসর নয়। যারা সংশ্লিষ্ট নারীকে চিনেছেন, তাদের কাছে আমার আহ্বান, তার ব্যাপারে কোনো কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। এহেন কুৎসা সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা না হওয়াই কাম্য।
আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। Still I believe only truth shall prevail.
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
যেকোনো ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট উভয় পক্ষ যদি একই ধরনের ইনটিগ্রিটি না দেখায়, তাহলে ঘটনার ফেয়ারনেস নষ্ট হয়। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এই, ঢাকার এলিট বাবলগুলোতে যারা মানবাধিকার, জাস্টিস ইত্যাদি নিয়ে প্রচণ্ড উচ্চকিত থাকেন, তারা খেয়াল করেন না কীভাবে তারা জাস্টিস অর্জন করতে গিয়ে নতুন করে ইনজাস্টিস করছেন, কীভাবে তাদের মানবাধিকার তোড়জোড়ের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। নিজের গোষ্ঠীকে জাস্টিফাই করতে উচিত-অনুচিত ন্যারেটিভ এস্টাবলিশ করতে যেমন তারা বদ্ধপরিকর; তদ্রূপ, নিজ গোষ্ঠীর বাইরে (যাদের ব্যাপারে তারা বৈরিভাবাপন্ন) কাউকে নাস্তানাবুদ ও ঘায়েল করতে এমনকি মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করতেও তারা পিছপা হন না।
সাম্প্রতিক সময়ে আমাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ একটা হইচই দেখা যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ করা এবং আমার সম্পর্কে রায় দেওয়া সংশ্লিষ্ট সকলের ‘গণতান্ত্রিক’ অধিকার। এর আগে বছর চারেক আগে আমি একবার কাছাকাছি ধরনের ফেসবুক আদালতের তোপের মুখে পড়েছিলাম। তখন আমার সিদ্ধান্ত ছিল, যা-ই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাজারে আমি ব্যক্তিগত কেচ্ছাকাহিনি নিয়ে চর্চা করব না। উপযুক্ত ফোরামে নিজের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য জানাব। তা-ই করেছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া আক্রমণ তাতে থেমে থাকে নাই। আমি দীর্ঘ তিন বছর একটা প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম; অন্যদিকে আমার ব্যাপারে যা খুশি তাই মন্তব্য করা এবং আমাকে যেকোনো প্রকারে অপদস্থ করাকে অনেকেই নিজেদের ‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম’-এর অংশ বানিয়ে ফেলেছিলেন। নীরবে রক্তক্ষরণ সত্ত্বেও আমি সেসব ওভারলুক করে গেছি। কেউ যদি এখনো ওই ঘটনা জানতে আগ্রহী থাকেন, ফেসবুকে আদালত না বসিয়ে let’s reopen all the documents.
গত দুই দিন ধরে আবারও আমি মহামান্য ফেসবুক আদালতের ব্যাশিং এর শিকার হচ্ছি। আগের পোস্টে লিখেছি, আমি শতভাগ ত্রুটিমুক্ত মানুষ নই। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনের কোনো ঘটনাকে যখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এবং আমার দলকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন তা আর ন্যায্য থাকে না।
পয়লা নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে, আমার সঙ্গে অপর এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করল কে বা কারা? এবং সেটা কীভাবে দেশের বাইরে থাকা অ্যাকটিভিস্টদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটছাঁট করে প্রেক্ষাপটহীনভাবে ভাইরাল করা হলো? এই কাজটা কার করা?
ধরা যাক, সংশ্লিষ্ট অপর ব্যক্তির নাম ‘ক’। তাকে আমি চিনেছি, আপনাদের মতোই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। শুরুতে তার পারিবারিক কোনো ঘটনা আমার নলেজে ছিল না। জাতীয় নাগরিক কমিটির অফিসে (তখনো এনসিপি আত্মপ্রকাশ করেনি) তিনি একদিন আসেন এবং আমার সঙ্গে সামান্য কথা হয়।
একদিন সন্ধ্যায় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে আসেন। তখন শীতকাল। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস। তার ভাষ্যমতে, প্রাক্তন স্বামী তাকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। শুরুতে আমি অফিসে ছিলাম না। তিনি নাকি অফিসে এসে আমাকে খুঁজেছেন। এমনকি লিফটের ১৫ তলা উঠতে উঠতে আমার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। অফিসে যারা সে সময় উপস্থিত ছিলেন, তারা তাকে প্রাথমিক শুশ্রূষা দেন। কিছুক্ষণ পর অফিসে আমি আসি। এবং যার পরামর্শ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না বলে ফেসবুকে জানিয়েছেন, সেই মানবাধিকার লেনিন ভাইও আসেন। জানাক থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসলে পুলিশি প্রটোকলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সঙ্গে আমাদের কমিটির আরও একজন পুরুষ ও নারী কর্মীও ছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাকে দুইটা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তারপর পুলিশ প্রটোকলসহই আমরা তাকে ধানমন্ডির এক বাসায় পৌঁছে দেই। আমরা তাকে মামলা করতে পরামর্শ দেই, তিনি জানান তিনি মামলা করবেন না। যাক, সেটা তার ব্যাপার।
ওই রাতেই আহত অবস্থায় এবং পরে আরেকদিন দেখা হলে তিনি আমাকে বলেন, তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেব।
খেয়াল করবেন, ‘ক’ তার সর্বশেষ পোস্টে এই ঘটনাটার কথা উল্লেখ করেছেন ঠিকই; কিন্তু আমি ও জানাক যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে পুলিশ প্রটোকল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলাম, এই তথ্যটা তিনি বেমালুম চেপে গেছেন। মানবাধিকার লেনিন ভাই, শহিদুল আলম, সারা হোসেন সবার নামই আছে। কিন্তু ওই রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সারোয়ার তুষার ও মুশফিকুর জোহানের নাম নাই। বেশ!
শহিদুল আলম ও সারা হোসেন তার জন্য ওই দিন কি করেছেন আমার জানা নাই। ‘তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব’— তার এ কথার প্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম, আপনি শহিদুল আলম, রেহনুমা, সায়দিয়া গুলরুখ তাদেরকে ঘটনাটা জানান। উনারা এসব ক্ষেত্রে বেশ হেল্পফুল। তখন ‘ক’ আমাকে বলেছিলেন, তিনি সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন, সবাই তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার কোন কথা সত্য বা মিথ্যা আমার জানা নাই, কিন্তু তিনি এটাই বলেছিলেন।
যাই হোক, সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি অনেকগুলো মিথ্যাচার করেছেন। ভুল ও বিকৃত তথ্য দিয়েছেন। তিনি এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ নন। কেন্দ্রীয় বা মহানগর পর্যায়ে তিনি কোনো পদ হোল্ড করেন না। এমনকি তিনি এনসিপির সদস্যও নন। কাজেই তার সঙ্গে আমার কোনো কথাবার্তা বা এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কোনো ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ নাই; সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্কের কোনো হায়ারার্কিও নাই। এটা তিনিও জানেন। কিন্তু এখন গল্প সাজাতে গেলে যেভাবে বললে কাজ হবে, তিনি সেভাবে লিখেছেন বা তাকে সেভাবে লিখে দেওয়া হয়েছে।
তার কিছু বক্তব্য খেয়াল করা যাক:
‘মানবাধিকারকর্মী লেনিন ভাই আমাকে নেপাল পাঠিয়ে দেয়...’
‘ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি...’
‘নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই আমাকে ফোন করত ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে...’
আমি তাকে প্রায়ই ফোন করতাম কি করতাম না— সেটা পরের আলাপ। উল্লিখিত তিন উদ্ধৃতি থেকে কী দেখা যাচ্ছে? তাকে মানবাধিকার ভাইজান নেপাল পাঠিয়ে দেন। কবে? এনসিপি আত্মপ্রকাশের পূর্বে। এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন তিনি দেশে এসেছেন। তার ভাষ্যমতে, তাকে আমি ‘প্রায়ই ফোন করতাম’ তার নেপালে থাকা অবস্থায়।
তখন তো এনসিপির আত্মপ্রকাশই ঘটে নাই। তাহলে ‘তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফরমাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি....’ এনসিপিই যখন গঠিত হয় নাই, তখন সম্পর্ক ‘সাংগঠনিক ও ফরমাল’ রাখতে বলার মানে কী?
এনসিপি আত্মপ্রকাশ করে রমজানের ঠিক আগের দিন। এরপর পুরো রমজান মাসে এনসিপির কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। কে কোথায় কাজ করবে না করবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত তখনো আসেনি। ফলে আমার জানার কথা নয় ‘ক’ এনসিপির কোথায় কাজ করতে চান। বা আদৌ চান কি না। ওই সময়ে আমি এনসিপির ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সবাইকেই ঠিকমতো চিনে উঠতে পারি নাই।
এ কথা বলার মানে হলো, রমজানের আগে, এমনকি রমজান মাসে তার সঙ্গে আমার যতটুকুই যোগাযোগ হয়েছে, তা সাংগঠনিক দায়রা বা আওতার মধ্যে ঘটে নাই। ফলে তার সঙ্গে আমার ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ দেখিয়ে ক্ষমতার যে হায়ারার্কি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অমূলক।
এবার আসি ফাঁসকৃত ভাইরাল অডিও সম্পর্কে। প্রথম অডিওতে, ওই বিশেষ শব্দটি আপনারা তার মুখেই শুনেছেন। আমি শুধু ব্যাখ্যা দিয়েছি মাত্র। ‘না, না, ওই এক মুহূর্তে কথা দিয়ে আমাকে জাজ করো না, প্লিজ’— এ রকম ছিল আমার বক্তব্য। আসলে তিনিই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শব্দটির কাছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কেন? সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ থাকে যে, তিনি যেহেতু কল রেকর্ড করার উদ্দেশ্যেই কলটি করেছেন, কাজেই কথাবার্তাকে একটা সুনির্দিষ্ট দিকে তিনিই নিয়ে গেছেন। এবং এটা ঘটেছে সম্পূর্ণ আমার অগোচরে। অর্থাৎ, আমি কথা বলেছি with good faith; অন্যদিকে, তিনি কথা বলেছেন, কল রেকর্ড করে তা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার মতলবে।
খেয়াল করার মতো বিষয়, ওই অডিও কলটির পরিপ্রেক্ষিত আমলে না নিলে চলে না। তিনি আরও একটি চ্যাট স্ক্রিনশট অন্যদের কাছে চালান করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের মধ্যে ৩২ মিনিটের একটি ভিডিও কল হয়েছে। সেই ভিডিও কলের প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ ইগ্নোর করে পরবর্তী ৪৭ মিনিটের অডিও কল সম্পর্কে কি কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়? নিতান্তই ব্যক্তিগত স্পেসে ধারাবাহিক আলাপচারিতায় করা একটি প্রস্তাব এখন পাবলিক স্পেসে আসায় ‘অশোভন’ মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ওই প্রশ্ন পর্যন্ত যাওয়ার একটি পরম্পরা আছে: ভিডিও কল>চ্যাটিং>অডিও কল।
এই সিকোয়েন্স মার্ক করতে হবে।
এমন কথা আমি না বললেই ভালো করতাম। আমার আরও সংযত হতে হবে। কিন্তু এখন আমার এই চরম চরিত্র হননের মুহূর্তে না বলে পারছি না, নারী-পুরুষ সম্পর্কে ক্ষমতার প্রশ্নটি এত সরল নয়। সম্মতি (কনসেন্ট; যা পুরুষ নারীর থেকে আদায় করে নেয় বলে অনুমান) ও বলপ্রয়োগ (কোয়ের্শন; যা নারীর অসম্মতিতে পুরুষ কর্তৃক প্রযুক্ত হয় বলে অনুমান)— এই দুই বাইনারির বাইরেও সিডাকশন তথা ফুসলানোর ক্ষমতাও যে এক ধরনের ক্ষমতা, নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ সূত্রে এ কথা আমাদের অজানা নয়। অর্থাৎ, এই কনভার্সেশনের ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত তথা উভয়পক্ষের যোগাযোগের ধারাবাহিকতা, ফুসলানো ইত্যাদিকে আমলে না নিলে ঘটনার সার্বিকতায় পৌঁছানো যায় না।
‘ক’-এর সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টের কনশাস-আনকশাস মিলিয়ে যা ধরা পড়ে, যে সকল নাম তিনি নিয়েছেন, তাতেই তার নিয়ত অনেকটা খোলাসা হয়। আমার সঙ্গে তার কথাবার্তার ব্যাপারে নাকি তিনি আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডকে জানান। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ড কি আমার বিচারক নাকি আদালত? তাকে কেন জানাতে হবে? কারণ কি এই যে, তিনি আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় নিয়মিতভাবে আদালত বসান? তারপর কি তার সঙ্গে ফন্দি করেই আপনি কল রেকর্ড করেছেন এবং দেশের বাইরের অ্যাকটিভিস্টদের কাছে পাচার করেছেন? প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।
রোজা ও রোজার আগের ঘটনা তিনি নাকি ‘সাংগঠনিক গোপনীয়তা রক্ষা করে’ মীমাংসা করতে চেয়েছেন। কী কী পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন এই আড়াই মাসে? সংগঠনে কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন? কাউকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন? জানান নাই।
রোজার প্রায় তিন মাস পর, আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়ালের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, কোরবানি ঈদের রাতে এক সামাজিক দাওয়াতের প্রোগ্রামে এসে ‘ক’ এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মৌখিকভাবে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেন। সেটা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না। তবু জনাব আহ্বায়ক ‘ক’-কে ভালো করে না চেনা সত্ত্বেও বলেন, শৃঙ্খলা কমিটি ও মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে যেন জানান। ইতিমধ্যেই কয়েক দিন পর কল রেকর্ড ফাঁস করার পর তিনি সামান্তা শারমিনকে দেখা হলে একই কথা জানান। সেখানে সামান্তা তাকে ‘মাহরাম’ জাতীয় কিছু বলেন নাই, অথচ এই মিথ্যা প্রচারণাটাই চালানো হচ্ছে।
কয়েকটা ব্যাপার পরিষ্কার থাকা জরুরি:
‘ক’ এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ বা ‘কর্মী’ নন। তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্ক বিরাজ করে না। ‘তাকে দূরে রাখেন’— মহানগর বা সেলের কাউকে আমি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেই নাই। আসলে সেই এখতিয়ারই আমার নাই। তার এই দাবির সত্যতা কী? কে তাকে বলেছে আমি এমন নির্দেশনা দিয়েছি?
মহানগর বা কেন্দ্রীয় সেলে কাকে নেওয়া হবে বা না হবে সেটা একান্তই ওই সকল কমিটি ও সেলের সিদ্ধান্ত। আমি এমনকি ঠিকমতো জানি না মহানগরের কোন কমিটি ও সেলের কোন দায়িত্ব কে দেখভালো করছে। পার্টিতে আমার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি তা পালন করতেই এত ব্যস্ত থাকি যে, কমিটি ও সেল নিয়ে মাথা ঘামানো বা প্রভাবিত করার সময় বা সুযোগ কোনোটাই আমার নাই। কেন্দ্রের বাইরে এনসিপির কোনো সেল নাই। সেলে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সদস্য হতে হবে। ‘ক’ এনসিপির কেন্দ্রের সদস্য পর্যন্ত নন। তাহলে তাকে সেলে না নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কীভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারি? সেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা তথা কেন্দ্রীয় সদস্যপদই তো তার নাই! মহানগরের কমিটি যারা দেখেছেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কাকে অন্তর্ভুক্ত করবে না করবে। এ ব্যাপারেও আমি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা রাখি না।
দুটি ব্যাপার খেয়াল করতে হবে:
এক, তিনি আমাকে কোনো ‘বিশেষ সুবিধা’ দিলেও তিনি যে দলে ঢুকতে পারবেন, এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই। কাজেই যেমনটি প্রচার করা হচ্ছে, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দেওয়ার কারণে তিনি এনসিপিতে আসতে পারছেন না— এই দাবি ভিত্তিহীন।
দুই, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দিলেও দল যদি তাকে কোনো স্তরে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, আমি সেখানে বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সংরক্ষণ করি না। ওই একই কারণে ‘দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’ এটা সম্পূর্ণতই আমার কাজের সীমানার বাইরের ব্যাপার।
কাজেই এনসিপিতে তিনি আসতে পারছেন কি পারছেন না এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় বিশেষ নাই। তবে এনসিপির বিভিন্ন ঘোষিত পাবলিক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখেছি। সেখানে তাকে বারণ করা বা উৎসাহিত করার কোনো সুযোগ আমার ছিল না। এ ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে তিনি কখনো আমার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বা কখনো আমার পথ আগলে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না কেন। যতবার তিনি আমাকে এই প্রশ্ন করেছেন, আমি একটাই উত্তর দিয়েছি, কমিটি দেওয়ার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আপনি কোনো কমিটিতে আসতে চাইলে বিষয়টা যারা দেখছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। এ ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু করণীয় নাই।
একপর্যায়ে, সম্ভবত এ বছরের মে মাসের একদম শেষের দিকে অথবা জুনের শুরুতে অফিসে একদিন তার সঙ্গে আমার দেখা হয়ে যায়। তিনি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আমি তার সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ের মিটিং কক্ষে বসি। এটাকেই অডিও কলে তিনি বলছেন, ‘আমি তোমাকে রুমে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি..’
তিনি আমার কাছে জানতে চান, তাকে নেওয়া হচ্ছে না কেন। আমি একই উত্তর দেই। তিনি আমাকে এক প্রকার চাপ প্রয়োগের সুরেই বলেন, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত তথা নেওয়া হবে কি হবে না এটা তাকে জানাতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আমাকে ফোন করবেন। মেসেঞ্জার চেক করে দেখলাম, তিনি ৬ জুন মেসেঞ্জারে কল দিয়েছিলেন। আমি ধরিনি বা ধরতে পারিনি। বাকি ঘটনা আপনাদের চোখের সামনে।
দুই দিন আগে প্রথম যখন অডিও রেকর্ডটি ফাঁস হলো, আমি সত্যি সত্যি ভেবেছিলাম আমাকে বিতর্কিত করতে কাজটা এজেন্সি করেছে। আমি ‘ক’-কে জিজ্ঞেস করি, এই কল রেকর্ড ও ফাঁস কে করল? আপনারা কিন্তু দ্বিতীয় অডিও রেকর্ডে শুনতে পেলেন, তিনি বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনিও আমার কাছ থেকে মাত্র দেখলেন। তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েছেন! আমিও সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করলাম। কি বোকা আমি! সঙ্গে সঙ্গে তাকে অনুরোধ করলাম, যেহেতু কাজটা আপনি করেন নাই, কাজেই আপনি একটা ক্ল্যারিফিকেশন দেন প্লিজ, এবং উদ্বেগ জানান, এভাবে ব্যক্তিগত আলাপ কারা ফাঁস করে! আপনি যে দল করতে চান, সে দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার তো আপনার ভালো লাগার কথা নয়! তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি আমাকে লিখে দাও আমি কী বলব, তবে আমি লেনিন ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
এরপর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, দ্বিতীয় কলটি শেষ হতে না হতেই আধঘণ্টার মধ্যে সেটিও অনলাইনে চলে আসল। এবং দাবি করা হলো আমি তাকে ‘চাপ’ প্রয়োগ করছি আমার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিতে। অথচ নিজের হাতে আমার কলটি আরেক মোবাইল থেকে ভিডিও ধারণ করে সেটা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি নিজেই। তারপর আবার আমি জিজ্ঞেস করার পর আবারও তিনি আকাশ থেকে পড়েছেন। তিনি নাকি কিছুই জানেন না! তার এই ডাবল গেম এবং এর পেছনে ক্রিয়াশীল পুরো সিন্ডিকেটটা শনাক্ত করতে আমার বেশ খানিকটা সময় লেগে গেছে।
এই সিন্ডিকেটের মোটিভ পরিষ্কার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আমার মানহানি ও চরিত্রহনন করা। সেভাবেই তাকে স্ক্রিপ্ট লিখে দেওয়া হয়েছে। দুজন ব্যক্তির কথোপকথনে যদি একজনের নিয়ত থাকে তিনি কল রেকর্ড করবেন এবং তা ফাঁস করবেন; দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি এই পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকেন, তাহলে যা ঘটার কথা, আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা পিক করেছে তা খুব পরিষ্কার। আওয়ামী কালচারাল উইং, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে নাখোশ বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ এই ঘটনাকে লুফে নিয়েছে। তাদের টার্গেট স্রেফ আমি না; বলা ভালো, এনসিপিই তাদের প্রধান টার্গেট। ঈদের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের রাতে আমার বিরুদ্ধে এই সংঘবদ্ধ অনলাইন মব সৃষ্টি, নিছক কাকতাল নয়। তারা খুব ভালোভাবেই অবগত আছেন, এনসিপির পক্ষে আমি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দলের পজিশন তুলে ধরি। গত কয়েক মাসে রাজপথের বক্তৃতায়, টকশোতে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে আমার অনমনীয় অবস্থান সমাজে ওয়েল এস্টাবলিশড। আমি যে টার্গেট হব, এটা আশ্চর্যের নয়। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও না-পছন্দকে ব্যক্তিগত চরিত্রহননের মতো ঘৃণ্য কাজের মাধ্যমে মোকাবিলার মতো জঘন্য কাজ আর হয় না।
জনাবা ‘ক’ অবশ্য তাজনূভার দুঃখে কাতর! কেন অহেতুক তাজনূভাকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চরিত্রহনন ও যৌন আক্রমণ চলছে, তা তাকে বেশ দুঃখিত করেছে বৈকি! অথচ দুইটা দিন তিনি চুপ থাকলেন, হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে বলতে থাকলেন, তিনি কল ফাঁসের ব্যাপারে কিছু জানেন না। এদিকে তাজনূভার সঙ্গে এটা ঘটতে দিলেন। ওই নারীর পরিচয় জানার পরও তাজনূভাসহ এনসিপির নেতা-কর্মীরা তার পরিচয় ফাঁস না করে রাজনৈতিক ভদ্রতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাজনূভা জাবীনও যে তার শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যের কারণে কোনো কোনো পক্ষের চক্ষুশূল, তা বলাই বাহুল্য।
ভালো কথা, গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত নারীদের মৈত্রীযাত্রার একটা ঘটনা শেয়ার করি। সেখানে যাওয়ার কারণে তাজনূভা বেশ আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। আমি তাজনূভার পক্ষে প্রতিবাদ করে ফেসবুকে কিছু কথা লিখেছিলাম। এরপরের দিন, গত ১৭ মে, জনাবা ‘ক’, আমাকে মেসেঞ্জারে লেখেন, ‘তুমি আমার কথাটা উল্লেখ করতে পারতে।’ অর্থাৎ, মৈত্রীযাত্রায় যাওয়ার কারণে তিনিও আক্রমণের শিকার হয়েছেন, সেটা আমি কেন উল্লেখ করলাম না এই নিয়ে তার অনুযোগ! অথচ তার ভাষ্যমতে আমি তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দিয়েছি গত রোজায়, মার্চ বা ফেব্রুয়ারি মাসে!
কল রেকর্ড ফাঁসের পর গত দুই দিন তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নানা কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হচ্ছে তিনি এটা ‘দলের ভেতরেই মিটমাট’ করতে চেয়েছেন, আমি নাকি সেই সেই সুযোগ রাখি নাই। কীভাবে? আমাকে চরমভাবে অপদস্থ করার পর কেউ কেউ যখন তাকে শনাক্ত করতে পেরেছেন, তার বিরুদ্ধেও কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। এগুলো নাকি আমি করিয়েছি! তিনি আর এসব ‘বাড়াতে চান না’।
বাহ! একদিকে আমাকে অনলাইন নাৎসিদের হাতে তুলে দিয়ে চরমভাবে অপদস্থ ও চরিত্রহননের পর তিনি আর ‘বাড়াতে চান না’। আমি তাকে বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ব্রেক হওয়ার পর, সেসব আর কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পক্ষে-বিপক্ষে কথা ছড়ায়। এখানে আমার কোনো হাত নাই। আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন মব সৃষ্টি করার পর আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, ‘তুমি মব সৃষ্টি করছো।’
গত দুই দিন আমি এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে আছি। আমার নামে বিভিন্ন ফেইক স্ক্রিনশট ভাইরাল করা হয়েছে, আমার ছবি বিভিন্ন পর্নো সাইটে তুলে দিয়ে সেসব distorted & edited ছবির স্ক্রিনশট আবার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। আমার আর তাজনূভার ছবি জুড়ে দিয়ে জঘন্য অশ্লীল ও যৌনাত্মক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এতে করে আমার সামাজিক মর্যাদা, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং আমার দলের ইমেজ ভূলুণ্ঠিত। দেখা যাচ্ছে যে, আমার ব্যক্তিগত ও মানবিক মর্যাদা এভাবে ধূলিসাৎ করাটাও অনেকের কাছে ন্যায়ের পরাকাষ্ঠা!
এসবের পরিবেশ তৈরি করেও নাকি ভদ্রমহিলা এই দলকে ‘বিতর্কিত’ করতে চান না, তিনি এই দলের ‘ভালো’ চান, তিনি সব ‘মিটমাট’ করতে চান! তথাস্তু!
যেভাবে এই ঘটনায় জনাব নাহিদ ইসলাম, সামান্তা শারমিন, তাজনূভা জাবীন ও দলের অন্যান্য নারীদের টেনে আনা হয়েছে, তাতে খুবই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে এনসিপিই টার্গেট। এনসিপির ইমেজ ডাউন করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটাই এই পুরো ঘটনাপ্রবাহের মূলে। আমার দল যখন নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে, ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সবচেয়ে ডিসাইসিভ ও বোল্ড পজিশন নিয়েছে, তখনই এই সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঘটানো হলো।
নতুন দল হিসেবে এনসিপি এক মিডিয়া ক্রুসেডের মুখোমুখি। প্রতিদিনই এনসিপির বিরুদ্ধে চরম আপত্তিকর ও ভুলভাল তথ্য অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে। সামনে এটা আরও বাড়বে। ইনশাআল্লাহ, এনসিপি এসব মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে।
আমি দলের কাছে লিখিত জবাব দেব। আমার জবাব অবশ্য আমি নিজেই লিখি, অন্য কাউকে লিখে দিতে হয় না।
সংশ্লিষ্ট অপর নারী নিজ প্রোফাইল থেকে আমার বিরুদ্ধে পোস্ট দিলেও, এখানে আমি তার নাম নিলাম না। এ জন্য চড়া মাশুল দিতে হলেও এটা আমার মডেস্টি আর ইন্টিগ্রিটির একটা স্মারক হয়ে থাক। ব্যক্তিগত যৌন-কেচ্ছার জায়গা অনলাইন পরিসর নয়। যারা সংশ্লিষ্ট নারীকে চিনেছেন, তাদের কাছে আমার আহ্বান, তার ব্যাপারে কোনো কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। এহেন কুৎসা সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা না হওয়াই কাম্য।
আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। Still I believe only truth shall prevail.

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
যেকোনো ঘটনায় জড়িত সংশ্লিষ্ট উভয় পক্ষ যদি একই ধরনের ইনটিগ্রিটি না দেখায়, তাহলে ঘটনার ফেয়ারনেস নষ্ট হয়। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার এই, ঢাকার এলিট বাবলগুলোতে যারা মানবাধিকার, জাস্টিস ইত্যাদি নিয়ে প্রচণ্ড উচ্চকিত থাকেন, তারা খেয়াল করেন না কীভাবে তারা জাস্টিস অর্জন করতে গিয়ে নতুন করে ইনজাস্টিস করছেন, কীভাবে তাদের মানবাধিকার তোড়জোড়ের মধ্য দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। নিজের গোষ্ঠীকে জাস্টিফাই করতে উচিত-অনুচিত ন্যারেটিভ এস্টাবলিশ করতে যেমন তারা বদ্ধপরিকর; তদ্রূপ, নিজ গোষ্ঠীর বাইরে (যাদের ব্যাপারে তারা বৈরিভাবাপন্ন) কাউকে নাস্তানাবুদ ও ঘায়েল করতে এমনকি মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করতেও তারা পিছপা হন না।
সাম্প্রতিক সময়ে আমাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ একটা হইচই দেখা যাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমার চরিত্রের ব্যবচ্ছেদ করা এবং আমার সম্পর্কে রায় দেওয়া সংশ্লিষ্ট সকলের ‘গণতান্ত্রিক’ অধিকার। এর আগে বছর চারেক আগে আমি একবার কাছাকাছি ধরনের ফেসবুক আদালতের তোপের মুখে পড়েছিলাম। তখন আমার সিদ্ধান্ত ছিল, যা-ই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ার বাজারে আমি ব্যক্তিগত কেচ্ছাকাহিনি নিয়ে চর্চা করব না। উপযুক্ত ফোরামে নিজের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য জানাব। তা-ই করেছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সোশ্যাল মিডিয়া আক্রমণ তাতে থেমে থাকে নাই। আমি দীর্ঘ তিন বছর একটা প্রক্রিয়া মেনে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম; অন্যদিকে আমার ব্যাপারে যা খুশি তাই মন্তব্য করা এবং আমাকে যেকোনো প্রকারে অপদস্থ করাকে অনেকেই নিজেদের ‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম’-এর অংশ বানিয়ে ফেলেছিলেন। নীরবে রক্তক্ষরণ সত্ত্বেও আমি সেসব ওভারলুক করে গেছি। কেউ যদি এখনো ওই ঘটনা জানতে আগ্রহী থাকেন, ফেসবুকে আদালত না বসিয়ে let’s reopen all the documents.
গত দুই দিন ধরে আবারও আমি মহামান্য ফেসবুক আদালতের ব্যাশিং এর শিকার হচ্ছি। আগের পোস্টে লিখেছি, আমি শতভাগ ত্রুটিমুক্ত মানুষ নই। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত জীবনের কোনো ঘটনাকে যখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এবং আমার দলকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন তা আর ন্যায্য থাকে না।
পয়লা নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে, আমার সঙ্গে অপর এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করল কে বা কারা? এবং সেটা কীভাবে দেশের বাইরে থাকা অ্যাকটিভিস্টদের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটছাঁট করে প্রেক্ষাপটহীনভাবে ভাইরাল করা হলো? এই কাজটা কার করা?
ধরা যাক, সংশ্লিষ্ট অপর ব্যক্তির নাম ‘ক’। তাকে আমি চিনেছি, আপনাদের মতোই, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। শুরুতে তার পারিবারিক কোনো ঘটনা আমার নলেজে ছিল না। জাতীয় নাগরিক কমিটির অফিসে (তখনো এনসিপি আত্মপ্রকাশ করেনি) তিনি একদিন আসেন এবং আমার সঙ্গে সামান্য কথা হয়।
একদিন সন্ধ্যায় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমাদের অফিসে আসেন। তখন শীতকাল। সম্ভবত ডিসেম্বর মাস। তার ভাষ্যমতে, প্রাক্তন স্বামী তাকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। শুরুতে আমি অফিসে ছিলাম না। তিনি নাকি অফিসে এসে আমাকে খুঁজেছেন। এমনকি লিফটের ১৫ তলা উঠতে উঠতে আমার কথা জিজ্ঞেস করেছেন। অফিসে যারা সে সময় উপস্থিত ছিলেন, তারা তাকে প্রাথমিক শুশ্রূষা দেন। কিছুক্ষণ পর অফিসে আমি আসি। এবং যার পরামর্শ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না বলে ফেসবুকে জানিয়েছেন, সেই মানবাধিকার লেনিন ভাইও আসেন। জানাক থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসলে পুলিশি প্রটোকলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সঙ্গে আমাদের কমিটির আরও একজন পুরুষ ও নারী কর্মীও ছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাকে দুইটা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তারপর পুলিশ প্রটোকলসহই আমরা তাকে ধানমন্ডির এক বাসায় পৌঁছে দেই। আমরা তাকে মামলা করতে পরামর্শ দেই, তিনি জানান তিনি মামলা করবেন না। যাক, সেটা তার ব্যাপার।
ওই রাতেই আহত অবস্থায় এবং পরে আরেকদিন দেখা হলে তিনি আমাকে বলেন, তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেব।
খেয়াল করবেন, ‘ক’ তার সর্বশেষ পোস্টে এই ঘটনাটার কথা উল্লেখ করেছেন ঠিকই; কিন্তু আমি ও জানাক যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে পুলিশ প্রটোকল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলাম, এই তথ্যটা তিনি বেমালুম চেপে গেছেন। মানবাধিকার লেনিন ভাই, শহিদুল আলম, সারা হোসেন সবার নামই আছে। কিন্তু ওই রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সারোয়ার তুষার ও মুশফিকুর জোহানের নাম নাই। বেশ!
শহিদুল আলম ও সারা হোসেন তার জন্য ওই দিন কি করেছেন আমার জানা নাই। ‘তিনি চান আমরা তার প্রাক্তন স্বামীকে উচিত শিক্ষা দেব’— তার এ কথার প্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম, আপনি শহিদুল আলম, রেহনুমা, সায়দিয়া গুলরুখ তাদেরকে ঘটনাটা জানান। উনারা এসব ক্ষেত্রে বেশ হেল্পফুল। তখন ‘ক’ আমাকে বলেছিলেন, তিনি সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন, সবাই তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার কোন কথা সত্য বা মিথ্যা আমার জানা নাই, কিন্তু তিনি এটাই বলেছিলেন।
যাই হোক, সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনি অনেকগুলো মিথ্যাচার করেছেন। ভুল ও বিকৃত তথ্য দিয়েছেন। তিনি এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ নন। কেন্দ্রীয় বা মহানগর পর্যায়ে তিনি কোনো পদ হোল্ড করেন না। এমনকি তিনি এনসিপির সদস্যও নন। কাজেই তার সঙ্গে আমার কোনো কথাবার্তা বা এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কোনো ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ নাই; সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্কের কোনো হায়ারার্কিও নাই। এটা তিনিও জানেন। কিন্তু এখন গল্প সাজাতে গেলে যেভাবে বললে কাজ হবে, তিনি সেভাবে লিখেছেন বা তাকে সেভাবে লিখে দেওয়া হয়েছে।
তার কিছু বক্তব্য খেয়াল করা যাক:
‘মানবাধিকারকর্মী লেনিন ভাই আমাকে নেপাল পাঠিয়ে দেয়...’
‘ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি...’
‘নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই আমাকে ফোন করত ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে...’
আমি তাকে প্রায়ই ফোন করতাম কি করতাম না— সেটা পরের আলাপ। উল্লিখিত তিন উদ্ধৃতি থেকে কী দেখা যাচ্ছে? তাকে মানবাধিকার ভাইজান নেপাল পাঠিয়ে দেন। কবে? এনসিপি আত্মপ্রকাশের পূর্বে। এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন তিনি দেশে এসেছেন। তার ভাষ্যমতে, তাকে আমি ‘প্রায়ই ফোন করতাম’ তার নেপালে থাকা অবস্থায়।
তখন তো এনসিপির আত্মপ্রকাশই ঘটে নাই। তাহলে ‘তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফরমাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি....’ এনসিপিই যখন গঠিত হয় নাই, তখন সম্পর্ক ‘সাংগঠনিক ও ফরমাল’ রাখতে বলার মানে কী?
এনসিপি আত্মপ্রকাশ করে রমজানের ঠিক আগের দিন। এরপর পুরো রমজান মাসে এনসিপির কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। কে কোথায় কাজ করবে না করবে সে ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত তখনো আসেনি। ফলে আমার জানার কথা নয় ‘ক’ এনসিপির কোথায় কাজ করতে চান। বা আদৌ চান কি না। ওই সময়ে আমি এনসিপির ২১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সবাইকেই ঠিকমতো চিনে উঠতে পারি নাই।
এ কথা বলার মানে হলো, রমজানের আগে, এমনকি রমজান মাসে তার সঙ্গে আমার যতটুকুই যোগাযোগ হয়েছে, তা সাংগঠনিক দায়রা বা আওতার মধ্যে ঘটে নাই। ফলে তার সঙ্গে আমার ‘সাংগঠনিক সম্পর্ক’ দেখিয়ে ক্ষমতার যে হায়ারার্কি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা অমূলক।
এবার আসি ফাঁসকৃত ভাইরাল অডিও সম্পর্কে। প্রথম অডিওতে, ওই বিশেষ শব্দটি আপনারা তার মুখেই শুনেছেন। আমি শুধু ব্যাখ্যা দিয়েছি মাত্র। ‘না, না, ওই এক মুহূর্তে কথা দিয়ে আমাকে জাজ করো না, প্লিজ’— এ রকম ছিল আমার বক্তব্য। আসলে তিনিই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শব্দটির কাছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কেন? সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ থাকে যে, তিনি যেহেতু কল রেকর্ড করার উদ্দেশ্যেই কলটি করেছেন, কাজেই কথাবার্তাকে একটা সুনির্দিষ্ট দিকে তিনিই নিয়ে গেছেন। এবং এটা ঘটেছে সম্পূর্ণ আমার অগোচরে। অর্থাৎ, আমি কথা বলেছি with good faith; অন্যদিকে, তিনি কথা বলেছেন, কল রেকর্ড করে তা অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার মতলবে।
খেয়াল করার মতো বিষয়, ওই অডিও কলটির পরিপ্রেক্ষিত আমলে না নিলে চলে না। তিনি আরও একটি চ্যাট স্ক্রিনশট অন্যদের কাছে চালান করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের মধ্যে ৩২ মিনিটের একটি ভিডিও কল হয়েছে। সেই ভিডিও কলের প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ ইগ্নোর করে পরবর্তী ৪৭ মিনিটের অডিও কল সম্পর্কে কি কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়? নিতান্তই ব্যক্তিগত স্পেসে ধারাবাহিক আলাপচারিতায় করা একটি প্রস্তাব এখন পাবলিক স্পেসে আসায় ‘অশোভন’ মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ওই প্রশ্ন পর্যন্ত যাওয়ার একটি পরম্পরা আছে: ভিডিও কল>চ্যাটিং>অডিও কল।
এই সিকোয়েন্স মার্ক করতে হবে।
এমন কথা আমি না বললেই ভালো করতাম। আমার আরও সংযত হতে হবে। কিন্তু এখন আমার এই চরম চরিত্র হননের মুহূর্তে না বলে পারছি না, নারী-পুরুষ সম্পর্কে ক্ষমতার প্রশ্নটি এত সরল নয়। সম্মতি (কনসেন্ট; যা পুরুষ নারীর থেকে আদায় করে নেয় বলে অনুমান) ও বলপ্রয়োগ (কোয়ের্শন; যা নারীর অসম্মতিতে পুরুষ কর্তৃক প্রযুক্ত হয় বলে অনুমান)— এই দুই বাইনারির বাইরেও সিডাকশন তথা ফুসলানোর ক্ষমতাও যে এক ধরনের ক্ষমতা, নৃবিজ্ঞানী তালাল আসাদ সূত্রে এ কথা আমাদের অজানা নয়। অর্থাৎ, এই কনভার্সেশনের ক্ষেত্রে পরিপ্রেক্ষিত তথা উভয়পক্ষের যোগাযোগের ধারাবাহিকতা, ফুসলানো ইত্যাদিকে আমলে না নিলে ঘটনার সার্বিকতায় পৌঁছানো যায় না।
‘ক’-এর সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টের কনশাস-আনকশাস মিলিয়ে যা ধরা পড়ে, যে সকল নাম তিনি নিয়েছেন, তাতেই তার নিয়ত অনেকটা খোলাসা হয়। আমার সঙ্গে তার কথাবার্তার ব্যাপারে নাকি তিনি আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডকে জানান। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ড কি আমার বিচারক নাকি আদালত? তাকে কেন জানাতে হবে? কারণ কি এই যে, তিনি আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় নিয়মিতভাবে আদালত বসান? তারপর কি তার সঙ্গে ফন্দি করেই আপনি কল রেকর্ড করেছেন এবং দেশের বাইরের অ্যাকটিভিস্টদের কাছে পাচার করেছেন? প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক।
রোজা ও রোজার আগের ঘটনা তিনি নাকি ‘সাংগঠনিক গোপনীয়তা রক্ষা করে’ মীমাংসা করতে চেয়েছেন। কী কী পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন এই আড়াই মাসে? সংগঠনে কোনো লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন? কাউকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন? জানান নাই।
রোজার প্রায় তিন মাস পর, আমার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রায়ালের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে, কোরবানি ঈদের রাতে এক সামাজিক দাওয়াতের প্রোগ্রামে এসে ‘ক’ এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মৌখিকভাবে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেন। সেটা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার মতো কোনো পরিবেশ ছিল না। তবু জনাব আহ্বায়ক ‘ক’-কে ভালো করে না চেনা সত্ত্বেও বলেন, শৃঙ্খলা কমিটি ও মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে যেন জানান। ইতিমধ্যেই কয়েক দিন পর কল রেকর্ড ফাঁস করার পর তিনি সামান্তা শারমিনকে দেখা হলে একই কথা জানান। সেখানে সামান্তা তাকে ‘মাহরাম’ জাতীয় কিছু বলেন নাই, অথচ এই মিথ্যা প্রচারণাটাই চালানো হচ্ছে।
কয়েকটা ব্যাপার পরিষ্কার থাকা জরুরি:
‘ক’ এনসিপির কোনো পর্যায়েরই কোনো ‘নেত্রী’ বা ‘কর্মী’ নন। তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সাংগঠনিক ক্ষমতা-সম্পর্ক বিরাজ করে না। ‘তাকে দূরে রাখেন’— মহানগর বা সেলের কাউকে আমি এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেই নাই। আসলে সেই এখতিয়ারই আমার নাই। তার এই দাবির সত্যতা কী? কে তাকে বলেছে আমি এমন নির্দেশনা দিয়েছি?
মহানগর বা কেন্দ্রীয় সেলে কাকে নেওয়া হবে বা না হবে সেটা একান্তই ওই সকল কমিটি ও সেলের সিদ্ধান্ত। আমি এমনকি ঠিকমতো জানি না মহানগরের কোন কমিটি ও সেলের কোন দায়িত্ব কে দেখভালো করছে। পার্টিতে আমার কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমি তা পালন করতেই এত ব্যস্ত থাকি যে, কমিটি ও সেল নিয়ে মাথা ঘামানো বা প্রভাবিত করার সময় বা সুযোগ কোনোটাই আমার নাই। কেন্দ্রের বাইরে এনসিপির কোনো সেল নাই। সেলে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সদস্য হতে হবে। ‘ক’ এনসিপির কেন্দ্রের সদস্য পর্যন্ত নন। তাহলে তাকে সেলে না নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি কীভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারি? সেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা তথা কেন্দ্রীয় সদস্যপদই তো তার নাই! মহানগরের কমিটি যারা দেখেছেন, তাদেরকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে কাকে অন্তর্ভুক্ত করবে না করবে। এ ব্যাপারেও আমি হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা রাখি না।
দুটি ব্যাপার খেয়াল করতে হবে:
এক, তিনি আমাকে কোনো ‘বিশেষ সুবিধা’ দিলেও তিনি যে দলে ঢুকতে পারবেন, এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। কারণ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই। কাজেই যেমনটি প্রচার করা হচ্ছে, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দেওয়ার কারণে তিনি এনসিপিতে আসতে পারছেন না— এই দাবি ভিত্তিহীন।
দুই, আমাকে ‘বিশেষ সুবিধা’ না দিলেও দল যদি তাকে কোনো স্তরে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, আমি সেখানে বাধাগ্রস্ত করার অধিকার সংরক্ষণ করি না। ওই একই কারণে ‘দলের কেন্দ্রীয়, মহানগর বা অন্য কোনো পর্যায়ের কোনো কমিটিতে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা না করার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’ এটা সম্পূর্ণতই আমার কাজের সীমানার বাইরের ব্যাপার।
কাজেই এনসিপিতে তিনি আসতে পারছেন কি পারছেন না এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় বিশেষ নাই। তবে এনসিপির বিভিন্ন ঘোষিত পাবলিক কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে দেখেছি। সেখানে তাকে বারণ করা বা উৎসাহিত করার কোনো সুযোগ আমার ছিল না। এ ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসে তিনি কখনো আমার পাঞ্জাবি টেনে ধরে বা কখনো আমার পথ আগলে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না কেন। যতবার তিনি আমাকে এই প্রশ্ন করেছেন, আমি একটাই উত্তর দিয়েছি, কমিটি দেওয়ার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আপনি কোনো কমিটিতে আসতে চাইলে বিষয়টা যারা দেখছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। এ ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু করণীয় নাই।
একপর্যায়ে, সম্ভবত এ বছরের মে মাসের একদম শেষের দিকে অথবা জুনের শুরুতে অফিসে একদিন তার সঙ্গে আমার দেখা হয়ে যায়। তিনি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আমি তার সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ের মিটিং কক্ষে বসি। এটাকেই অডিও কলে তিনি বলছেন, ‘আমি তোমাকে রুমে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি..’
তিনি আমার কাছে জানতে চান, তাকে নেওয়া হচ্ছে না কেন। আমি একই উত্তর দেই। তিনি আমাকে এক প্রকার চাপ প্রয়োগের সুরেই বলেন, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত তথা নেওয়া হবে কি হবে না এটা তাকে জানাতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আমাকে ফোন করবেন। মেসেঞ্জার চেক করে দেখলাম, তিনি ৬ জুন মেসেঞ্জারে কল দিয়েছিলেন। আমি ধরিনি বা ধরতে পারিনি। বাকি ঘটনা আপনাদের চোখের সামনে।
দুই দিন আগে প্রথম যখন অডিও রেকর্ডটি ফাঁস হলো, আমি সত্যি সত্যি ভেবেছিলাম আমাকে বিতর্কিত করতে কাজটা এজেন্সি করেছে। আমি ‘ক’-কে জিজ্ঞেস করি, এই কল রেকর্ড ও ফাঁস কে করল? আপনারা কিন্তু দ্বিতীয় অডিও রেকর্ডে শুনতে পেলেন, তিনি বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনিও আমার কাছ থেকে মাত্র দেখলেন। তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েছেন! আমিও সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করলাম। কি বোকা আমি! সঙ্গে সঙ্গে তাকে অনুরোধ করলাম, যেহেতু কাজটা আপনি করেন নাই, কাজেই আপনি একটা ক্ল্যারিফিকেশন দেন প্লিজ, এবং উদ্বেগ জানান, এভাবে ব্যক্তিগত আলাপ কারা ফাঁস করে! আপনি যে দল করতে চান, সে দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার তো আপনার ভালো লাগার কথা নয়! তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি আমাকে লিখে দাও আমি কী বলব, তবে আমি লেনিন ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
এরপর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, দ্বিতীয় কলটি শেষ হতে না হতেই আধঘণ্টার মধ্যে সেটিও অনলাইনে চলে আসল। এবং দাবি করা হলো আমি তাকে ‘চাপ’ প্রয়োগ করছি আমার পক্ষে স্টেটমেন্ট দিতে। অথচ নিজের হাতে আমার কলটি আরেক মোবাইল থেকে ভিডিও ধারণ করে সেটা বিদেশে পাচার করেছেন তিনি নিজেই। তারপর আবার আমি জিজ্ঞেস করার পর আবারও তিনি আকাশ থেকে পড়েছেন। তিনি নাকি কিছুই জানেন না! তার এই ডাবল গেম এবং এর পেছনে ক্রিয়াশীল পুরো সিন্ডিকেটটা শনাক্ত করতে আমার বেশ খানিকটা সময় লেগে গেছে।
এই সিন্ডিকেটের মোটিভ পরিষ্কার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আমার মানহানি ও চরিত্রহনন করা। সেভাবেই তাকে স্ক্রিপ্ট লিখে দেওয়া হয়েছে। দুজন ব্যক্তির কথোপকথনে যদি একজনের নিয়ত থাকে তিনি কল রেকর্ড করবেন এবং তা ফাঁস করবেন; দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি এই পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকেন, তাহলে যা ঘটার কথা, আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় কারা পিক করেছে তা খুব পরিষ্কার। আওয়ামী কালচারাল উইং, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে নাখোশ বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ এই ঘটনাকে লুফে নিয়েছে। তাদের টার্গেট স্রেফ আমি না; বলা ভালো, এনসিপিই তাদের প্রধান টার্গেট। ঈদের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের রাতে আমার বিরুদ্ধে এই সংঘবদ্ধ অনলাইন মব সৃষ্টি, নিছক কাকতাল নয়। তারা খুব ভালোভাবেই অবগত আছেন, এনসিপির পক্ষে আমি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দলের পজিশন তুলে ধরি। গত কয়েক মাসে রাজপথের বক্তৃতায়, টকশোতে এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে আমার অনমনীয় অবস্থান সমাজে ওয়েল এস্টাবলিশড। আমি যে টার্গেট হব, এটা আশ্চর্যের নয়। রাজনৈতিক বিরোধিতা ও না-পছন্দকে ব্যক্তিগত চরিত্রহননের মতো ঘৃণ্য কাজের মাধ্যমে মোকাবিলার মতো জঘন্য কাজ আর হয় না।
জনাবা ‘ক’ অবশ্য তাজনূভার দুঃখে কাতর! কেন অহেতুক তাজনূভাকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই চরিত্রহনন ও যৌন আক্রমণ চলছে, তা তাকে বেশ দুঃখিত করেছে বৈকি! অথচ দুইটা দিন তিনি চুপ থাকলেন, হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে বলতে থাকলেন, তিনি কল ফাঁসের ব্যাপারে কিছু জানেন না। এদিকে তাজনূভার সঙ্গে এটা ঘটতে দিলেন। ওই নারীর পরিচয় জানার পরও তাজনূভাসহ এনসিপির নেতা-কর্মীরা তার পরিচয় ফাঁস না করে রাজনৈতিক ভদ্রতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাজনূভা জাবীনও যে তার শক্ত রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্যের কারণে কোনো কোনো পক্ষের চক্ষুশূল, তা বলাই বাহুল্য।
ভালো কথা, গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত নারীদের মৈত্রীযাত্রার একটা ঘটনা শেয়ার করি। সেখানে যাওয়ার কারণে তাজনূভা বেশ আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। আমি তাজনূভার পক্ষে প্রতিবাদ করে ফেসবুকে কিছু কথা লিখেছিলাম। এরপরের দিন, গত ১৭ মে, জনাবা ‘ক’, আমাকে মেসেঞ্জারে লেখেন, ‘তুমি আমার কথাটা উল্লেখ করতে পারতে।’ অর্থাৎ, মৈত্রীযাত্রায় যাওয়ার কারণে তিনিও আক্রমণের শিকার হয়েছেন, সেটা আমি কেন উল্লেখ করলাম না এই নিয়ে তার অনুযোগ! অথচ তার ভাষ্যমতে আমি তাকে ‘কুপ্রস্তাব’ দিয়েছি গত রোজায়, মার্চ বা ফেব্রুয়ারি মাসে!
কল রেকর্ড ফাঁসের পর গত দুই দিন তিনি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নানা কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হচ্ছে তিনি এটা ‘দলের ভেতরেই মিটমাট’ করতে চেয়েছেন, আমি নাকি সেই সেই সুযোগ রাখি নাই। কীভাবে? আমাকে চরমভাবে অপদস্থ করার পর কেউ কেউ যখন তাকে শনাক্ত করতে পেরেছেন, তার বিরুদ্ধেও কেউ কেউ কিছু কথা বলেছেন। এগুলো নাকি আমি করিয়েছি! তিনি আর এসব ‘বাড়াতে চান না’।
বাহ! একদিকে আমাকে অনলাইন নাৎসিদের হাতে তুলে দিয়ে চরমভাবে অপদস্থ ও চরিত্রহননের পর তিনি আর ‘বাড়াতে চান না’। আমি তাকে বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ব্রেক হওয়ার পর, সেসব আর কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পক্ষে-বিপক্ষে কথা ছড়ায়। এখানে আমার কোনো হাত নাই। আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন মব সৃষ্টি করার পর আমার বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, ‘তুমি মব সৃষ্টি করছো।’
গত দুই দিন আমি এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে আছি। আমার নামে বিভিন্ন ফেইক স্ক্রিনশট ভাইরাল করা হয়েছে, আমার ছবি বিভিন্ন পর্নো সাইটে তুলে দিয়ে সেসব distorted & edited ছবির স্ক্রিনশট আবার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। আমার আর তাজনূভার ছবি জুড়ে দিয়ে জঘন্য অশ্লীল ও যৌনাত্মক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এতে করে আমার সামাজিক মর্যাদা, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং আমার দলের ইমেজ ভূলুণ্ঠিত। দেখা যাচ্ছে যে, আমার ব্যক্তিগত ও মানবিক মর্যাদা এভাবে ধূলিসাৎ করাটাও অনেকের কাছে ন্যায়ের পরাকাষ্ঠা!
এসবের পরিবেশ তৈরি করেও নাকি ভদ্রমহিলা এই দলকে ‘বিতর্কিত’ করতে চান না, তিনি এই দলের ‘ভালো’ চান, তিনি সব ‘মিটমাট’ করতে চান! তথাস্তু!
যেভাবে এই ঘটনায় জনাব নাহিদ ইসলাম, সামান্তা শারমিন, তাজনূভা জাবীন ও দলের অন্যান্য নারীদের টেনে আনা হয়েছে, তাতে খুবই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে এনসিপিই টার্গেট। এনসিপির ইমেজ ডাউন করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটাই এই পুরো ঘটনাপ্রবাহের মূলে। আমার দল যখন নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে, ঐকমত্য কমিশনে রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে সবচেয়ে ডিসাইসিভ ও বোল্ড পজিশন নিয়েছে, তখনই এই সংঘবদ্ধ আক্রমণ ঘটানো হলো।
নতুন দল হিসেবে এনসিপি এক মিডিয়া ক্রুসেডের মুখোমুখি। প্রতিদিনই এনসিপির বিরুদ্ধে চরম আপত্তিকর ও ভুলভাল তথ্য অনলাইনে ছাড়া হচ্ছে। সামনে এটা আরও বাড়বে। ইনশাআল্লাহ, এনসিপি এসব মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে।
আমি দলের কাছে লিখিত জবাব দেব। আমার জবাব অবশ্য আমি নিজেই লিখি, অন্য কাউকে লিখে দিতে হয় না।
সংশ্লিষ্ট অপর নারী নিজ প্রোফাইল থেকে আমার বিরুদ্ধে পোস্ট দিলেও, এখানে আমি তার নাম নিলাম না। এ জন্য চড়া মাশুল দিতে হলেও এটা আমার মডেস্টি আর ইন্টিগ্রিটির একটা স্মারক হয়ে থাক। ব্যক্তিগত যৌন-কেচ্ছার জায়গা অনলাইন পরিসর নয়। যারা সংশ্লিষ্ট নারীকে চিনেছেন, তাদের কাছে আমার আহ্বান, তার ব্যাপারে কোনো কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। এহেন কুৎসা সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা না হওয়াই কাম্য।
আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। Still I believe only truth shall prevail.

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তিনি দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ইতিমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এসব প্রতিবেদনে এনসিপির ‘একটি সূত্রের’ বরাতও দেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।
৯ ঘণ্টা আগে
ছাত্রসংগঠনটির নতুন নাম ঘোষণা করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
১১ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় সফররত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসির (এনআইএমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তিনি দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ইতিমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এসব প্রতিবেদনে এনসিপির ‘একটি সূত্রের’ বরাতও দেওয়া হয়।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সংবাদের সত্যতা অস্বীকার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী আমাদের সাথেই আছেন। তিনি কিছুদিন আগেও নির্বাচন কমিশনে পার্টি নিবন্ধন সংক্রান্ত কাজে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও, মুখ্য সমন্বয়ক হিসাবে তিনি বিভিন্ন উইংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। তার পদত্যাগের বিষয়টি কিংবা দল থেকে অব্যাহতি নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’
এর আগে, রাতেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে যে, দুই সপ্তাহ আগে এনসিপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন পাটওয়ারী। যদিও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনো সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পদসংক্রান্ত জটিলতার কারণেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। জানা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি দলে এসে নির্বাচন ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালকের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী। বর্তমানে ওই পদে আছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আসিফের এই প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনানুষ্ঠানিক সমর্থন থাকায় নাসীরুদ্দীন মনঃক্ষুণ্ন হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তিনি দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ইতিমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এসব প্রতিবেদনে এনসিপির ‘একটি সূত্রের’ বরাতও দেওয়া হয়।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সংবাদের সত্যতা অস্বীকার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী আমাদের সাথেই আছেন। তিনি কিছুদিন আগেও নির্বাচন কমিশনে পার্টি নিবন্ধন সংক্রান্ত কাজে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও, মুখ্য সমন্বয়ক হিসাবে তিনি বিভিন্ন উইংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। তার পদত্যাগের বিষয়টি কিংবা দল থেকে অব্যাহতি নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।’
এর আগে, রাতেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে যে, দুই সপ্তাহ আগে এনসিপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন পাটওয়ারী। যদিও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনো সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পদসংক্রান্ত জটিলতার কারণেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। জানা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি দলে এসে নির্বাচন ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালকের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী। বর্তমানে ওই পদে আছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আসিফের এই প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনানুষ্ঠানিক সমর্থন থাকায় নাসীরুদ্দীন মনঃক্ষুণ্ন হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি। ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
১৯ জুন ২০২৫
জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।
৯ ঘণ্টা আগে
ছাত্রসংগঠনটির নতুন নাম ঘোষণা করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
১১ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় সফররত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসির (এনআইএমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে এ সরকার নির্বাচন করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘এখন নির্বাচন করতে গেলে কী হবে? কোনো নির্বাচন হবে না। যে নির্বাচনের জন্য আমরা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ বলি, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিয়েছিলাম। এই সরকার একই কাজ করছে এবং মনে হয়, একটা ঐকমত্য কমিশন করেছে। যেখানে দেশের অর্ধেক লোককে বাদ দিয়ে ঐক্য করার চেষ্টা চলছে।’
আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বাদ দিতে পারে না বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাদ দিতে হলে তাদের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করতে হবে। যারা খারাপ করেছে, তাদেরকে বাদ দিতে পারেন। কিন্তু দলকে কীভাবে বাদ দিতে পারেন বিচার ছাড়া?’
সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললে জাপাকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে দাবি করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, দেশের মানুষ তাদেরকে ক্ষমা করবে না। শেখ হাসিনাকে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান সমর্থন দিয়েছিল। সমস্ত প্রতিষ্ঠান নিজের কবজায় করেও রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ তাদেরকে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ না দাবি করে জি এম কাদের বলেন, তাদের একটা দল আছে। এই সরকার দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চায় দাবি করে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে কখনো এত খারাপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল না।
জাতীয় পার্টির নিষিদ্ধের দাবিতে জামায়াতের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, তারা বলছে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি হলো মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জাতীয় পার্টি থাকলে তো তারা থার্ড পার্টি হতে পারবে না। সেই কারণে জাতীয় পার্টিকে বাদ দেওয়ার কথা বলছে।
বাংলাদেশে আজ গভীর সংকটে দাবি করে জি এম কাদের বলেন, আজকে দেশে কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না। যাঁরা ছোটখাটো ব্যবসা করতেন, সেটাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ বেকার হচ্ছেন।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো এত খারাপ ছিল না বলেও মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুর নিরাপত্তা নেই। মানুষের জীবনের যেমন নিরাপত্তা নেই, তেমনি বাড়িঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য কোনো কিছুর নিরাপত্তা নেই। মানুষের বাড়িঘর লুটপাট করে নিচ্ছে। মহিলাদের অসম্মান করা হচ্ছে। আমরা যা খবর পাচ্ছি, প্রতিদিন খুন হচ্ছে মানুষ।’
দেশ দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলেও দাবি করেন জাপার এ নেতা। তিনি বলেন, টিসিবির ট্রাকে যতজনের মালামাল থাকে, তারচেয়ে ১০ গুণ বেশি মানুষ সেখানে বসে থাকছেন।
জাপা মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের অভাব দেশে বিভাজন তৈরি করছে। বর্তমান সরকার আগামী নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে শামীম হায়দার পাটোয়ারী আরও বলেন, সুষ্ঠু ভোটের জন্য দরকার নির্দলীয় বা সর্বদলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
এ সময় জাতীয় পার্টিকে ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহতের ঘোষণা দেন মহাসচিব।

জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে এ সরকার নির্বাচন করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘এখন নির্বাচন করতে গেলে কী হবে? কোনো নির্বাচন হবে না। যে নির্বাচনের জন্য আমরা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ বলি, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিয়েছিলাম। এই সরকার একই কাজ করছে এবং মনে হয়, একটা ঐকমত্য কমিশন করেছে। যেখানে দেশের অর্ধেক লোককে বাদ দিয়ে ঐক্য করার চেষ্টা চলছে।’
আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বাদ দিতে পারে না বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে বাদ দিতে হলে তাদের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করতে হবে। যারা খারাপ করেছে, তাদেরকে বাদ দিতে পারেন। কিন্তু দলকে কীভাবে বাদ দিতে পারেন বিচার ছাড়া?’
সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললে জাপাকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে দাবি করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, দেশের মানুষ তাদেরকে ক্ষমা করবে না। শেখ হাসিনাকে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান সমর্থন দিয়েছিল। সমস্ত প্রতিষ্ঠান নিজের কবজায় করেও রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ তাদেরকে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ না দাবি করে জি এম কাদের বলেন, তাদের একটা দল আছে। এই সরকার দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চায় দাবি করে তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে কখনো এত খারাপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল না।
জাতীয় পার্টির নিষিদ্ধের দাবিতে জামায়াতের চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, তারা বলছে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি হলো মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। জাতীয় পার্টি থাকলে তো তারা থার্ড পার্টি হতে পারবে না। সেই কারণে জাতীয় পার্টিকে বাদ দেওয়ার কথা বলছে।
বাংলাদেশে আজ গভীর সংকটে দাবি করে জি এম কাদের বলেন, আজকে দেশে কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না। যাঁরা ছোটখাটো ব্যবসা করতেন, সেটাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ মানুষ বেকার হচ্ছেন।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো এত খারাপ ছিল না বলেও মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুর নিরাপত্তা নেই। মানুষের জীবনের যেমন নিরাপত্তা নেই, তেমনি বাড়িঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য কোনো কিছুর নিরাপত্তা নেই। মানুষের বাড়িঘর লুটপাট করে নিচ্ছে। মহিলাদের অসম্মান করা হচ্ছে। আমরা যা খবর পাচ্ছি, প্রতিদিন খুন হচ্ছে মানুষ।’
দেশ দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলেও দাবি করেন জাপার এ নেতা। তিনি বলেন, টিসিবির ট্রাকে যতজনের মালামাল থাকে, তারচেয়ে ১০ গুণ বেশি মানুষ সেখানে বসে থাকছেন।
জাপা মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের অভাব দেশে বিভাজন তৈরি করছে। বর্তমান সরকার আগামী নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে শামীম হায়দার পাটোয়ারী আরও বলেন, সুষ্ঠু ভোটের জন্য দরকার নির্দলীয় বা সর্বদলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
এ সময় জাতীয় পার্টিকে ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহতের ঘোষণা দেন মহাসচিব।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি। ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
১৯ জুন ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তিনি দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ইতিমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এসব প্রতিবেদনে এনসিপির ‘একটি সূত্রের’ বরাতও দেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
ছাত্রসংগঠনটির নতুন নাম ঘোষণা করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
১১ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় সফররত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসির (এনআইএমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) নাম বদলে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আদর্শিক ও সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে ছাত্রশক্তি।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের জাতীয় সমন্বয় সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ছাত্রসংগঠনটির নতুন নাম ঘোষণা করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল। আর যেন কেউ গণরুম-গেস্টরুম বানাতে না পারে, সে জন্য ছাত্রসংসদকে সোচ্চার থাকতে হবে।
এ সময় জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে দলীয় অবস্থানও ব্যাখ্যা করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা পেলে তবেই স্বাক্ষর করবে এনসিপি।
আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার পর দুটা পক্ষ হয়ে গেছে। এক পক্ষ স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে চায়, আরেক পক্ষ কালি দিয়ে গেড়ে দিতে চায়।
আওয়ামী লীগ নানা শক্তির মধ্য দিয়ে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন আখতার।
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, যে আওয়ামী লীগ চব্বিশে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, গুলি করেছে, ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে গুম করেছে, আয়নাঘর তৈরি করেছে; তাদের বাংলাদেশে পুনর্বাসনের সুযোগ নেই। কেউ যদি পুনর্বাসনের চেষ্টা করে, জীবন দিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।
সভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর সংস্কার নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, আমাদের কনভেনশনাল (প্রথাগত) রাজনৈতিক দলগুলো সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এখনো সেই কাঙ্ক্ষিত সংস্কার আমরা আনতে পারিনি। সেই সংস্কারকাজকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এই ছাত্রদের।’
দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানান, অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশের জেলা ও মহানগরে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া শুরু হবে।
এ সময় দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সারজিস বলেন, যাঁরা লোভ সংবরণ করতে পারেননি, তাঁদের এনসিপির মতো সংগঠনের প্রয়োজন নেই। এনসিপি ‘মাই ম্যানের’ পলিটিকস করবে না। যোগ্য ও পার্টির প্রতি বিশ্বস্তদের নেতৃত্বেই এগিয়ে যাবে দল।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, যাঁরা স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের অনেকে এখন স্বাক্ষর প্রত্যাহারের চেষ্টা করছেন।’
অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা কেন রাজনৈতিক দল গঠন করল—এর কারণ সম্পর্কে তুষার বলেন, যেহেতু অতীতে ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক দলগুলো বারবার ‘বিট্রে’ (প্রতারণা) করেছে, সে জন্য ছাত্ররা এখন নিজেরাই রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন।
নাম উল্লেখ না করে তুষার বলেন, ‘বাপ-ছেলে’ নিয়ে সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য ‘অশ্লীল ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত’।
এনসিপির কাছ থেকে তাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার শেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সভায় জাতীয় ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আট মাসে আহ্বায়ক হিসেবে আমার অনেক ব্যর্থতা থাকতে পারে। কিন্তু আমি এই সময়ে কোনো কম্প্রোমাইজ (আপস) করি নাই। কোনো অপকর্মে থাকি নাই। এনসিপি গঠনের দুদিন আগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি গঠনের পর আমাদের যেমন সফলতা আছে, তেমনি ব্যর্থতাও আছে। একটা সংগঠন পরিচালনার জন্য নিয়মিত ফান্ডিংয়ের প্রয়োজন হয়। আমি মাথা নিচু করে ক্ষমা চাচ্ছি, আমাদের যেসব জায়গায় কার্যক্রম চলছে, নিয়মিত ফান্ড সেখানে দিতে পারি নাই।’
ছাত্রশক্তি এনসিপির সহযোগী আদর্শিক সংগঠন হিসেবে কাজ করবে জানিয়ে আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমরা একটি স্বতন্ত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করব। পরবর্তী নেতৃত্বে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা জানানো হবে।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
রাকিব বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে আমাদের বিরুদ্ধে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমরা নাকি গেস্টরুম বা গণরুম করব। এটা ছিল নিছক মিথ্যাচার। গত এক বছরে একটি সংগঠন এসব মিথ্যাচার করে পার পেয়ে গেছে। আগামী ২০২৬-২৭ সালে আমরা প্রমাণ করব, ছাত্রদল নতুন ধারার ছাত্ররাজনীতির পথ তৈরি করেছে। ছাত্রদল গেস্টরুম বা গণরুম সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। একদিন অবশ্যই ছাত্রসমাজ এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।’
এ সময় ছাত্রশক্তির নেতাদের উদ্দেশে রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে আপনারা ছাড় দেবেন না।’

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) নাম বদলে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আদর্শিক ও সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করবে ছাত্রশক্তি।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের জাতীয় সমন্বয় সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ছাত্রসংগঠনটির নতুন নাম ঘোষণা করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল। আর যেন কেউ গণরুম-গেস্টরুম বানাতে না পারে, সে জন্য ছাত্রসংসদকে সোচ্চার থাকতে হবে।
এ সময় জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে দলীয় অবস্থানও ব্যাখ্যা করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা পেলে তবেই স্বাক্ষর করবে এনসিপি।
আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার পর দুটা পক্ষ হয়ে গেছে। এক পক্ষ স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে চায়, আরেক পক্ষ কালি দিয়ে গেড়ে দিতে চায়।
আওয়ামী লীগ নানা শক্তির মধ্য দিয়ে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন আখতার।
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, যে আওয়ামী লীগ চব্বিশে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, গুলি করেছে, ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে গুম করেছে, আয়নাঘর তৈরি করেছে; তাদের বাংলাদেশে পুনর্বাসনের সুযোগ নেই। কেউ যদি পুনর্বাসনের চেষ্টা করে, জীবন দিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।
সভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর সংস্কার নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, আমাদের কনভেনশনাল (প্রথাগত) রাজনৈতিক দলগুলো সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এখনো সেই কাঙ্ক্ষিত সংস্কার আমরা আনতে পারিনি। সেই সংস্কারকাজকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এই ছাত্রদের।’
দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানান, অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশের জেলা ও মহানগরে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া শুরু হবে।
এ সময় দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সারজিস বলেন, যাঁরা লোভ সংবরণ করতে পারেননি, তাঁদের এনসিপির মতো সংগঠনের প্রয়োজন নেই। এনসিপি ‘মাই ম্যানের’ পলিটিকস করবে না। যোগ্য ও পার্টির প্রতি বিশ্বস্তদের নেতৃত্বেই এগিয়ে যাবে দল।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, যাঁরা স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের অনেকে এখন স্বাক্ষর প্রত্যাহারের চেষ্টা করছেন।’
অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা কেন রাজনৈতিক দল গঠন করল—এর কারণ সম্পর্কে তুষার বলেন, যেহেতু অতীতে ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক দলগুলো বারবার ‘বিট্রে’ (প্রতারণা) করেছে, সে জন্য ছাত্ররা এখন নিজেরাই রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন।
নাম উল্লেখ না করে তুষার বলেন, ‘বাপ-ছেলে’ নিয়ে সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য ‘অশ্লীল ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত’।
এনসিপির কাছ থেকে তাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার শেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সভায় জাতীয় ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আট মাসে আহ্বায়ক হিসেবে আমার অনেক ব্যর্থতা থাকতে পারে। কিন্তু আমি এই সময়ে কোনো কম্প্রোমাইজ (আপস) করি নাই। কোনো অপকর্মে থাকি নাই। এনসিপি গঠনের দুদিন আগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি গঠনের পর আমাদের যেমন সফলতা আছে, তেমনি ব্যর্থতাও আছে। একটা সংগঠন পরিচালনার জন্য নিয়মিত ফান্ডিংয়ের প্রয়োজন হয়। আমি মাথা নিচু করে ক্ষমা চাচ্ছি, আমাদের যেসব জায়গায় কার্যক্রম চলছে, নিয়মিত ফান্ড সেখানে দিতে পারি নাই।’
ছাত্রশক্তি এনসিপির সহযোগী আদর্শিক সংগঠন হিসেবে কাজ করবে জানিয়ে আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমরা একটি স্বতন্ত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করব। পরবর্তী নেতৃত্বে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা জানানো হবে।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
রাকিব বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে আমাদের বিরুদ্ধে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আমরা নাকি গেস্টরুম বা গণরুম করব। এটা ছিল নিছক মিথ্যাচার। গত এক বছরে একটি সংগঠন এসব মিথ্যাচার করে পার পেয়ে গেছে। আগামী ২০২৬-২৭ সালে আমরা প্রমাণ করব, ছাত্রদল নতুন ধারার ছাত্ররাজনীতির পথ তৈরি করেছে। ছাত্রদল গেস্টরুম বা গণরুম সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। একদিন অবশ্যই ছাত্রসমাজ এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।’
এ সময় ছাত্রশক্তির নেতাদের উদ্দেশে রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে আপনারা ছাড় দেবেন না।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি। ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
১৯ জুন ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তিনি দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ইতিমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এসব প্রতিবেদনে এনসিপির ‘একটি সূত্রের’ বরাতও দেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।
৯ ঘণ্টা আগে
ঢাকায় সফররত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসির (এনআইএমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
১৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকায় সফররত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসির (এনআইএমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটির যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বৈঠকে অংশ নেন।
অন্যদিকে এনআইএমডির প্রোগ্রাম ও নলেজ অ্যাডভাইজার তাইউহ নেঙ্গে, হেড অব পজিশনিং হেলিন শ্রোয়েন প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।

ঢাকায় সফররত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেসির (এনআইএমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটির যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বৈঠকে অংশ নেন।
অন্যদিকে এনআইএমডির প্রোগ্রাম ও নলেজ অ্যাডভাইজার তাইউহ নেঙ্গে, হেড অব পজিশনিং হেলিন শ্রোয়েন প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও কল ভাইরালের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, আমি এক ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক ওয়ালে এমন কথা জানান তিনি। ফেসবুক স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।
১৯ জুন ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তিনি দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ইতিমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এসব প্রতিবেদনে এনসিপির ‘একটি সূত্রের’ বরাতও দেওয়া হয়।
১২ মিনিট আগে
জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।
৯ ঘণ্টা আগে
ছাত্রসংগঠনটির নতুন নাম ঘোষণা করেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
১১ ঘণ্টা আগে