Ajker Patrika

‘মনোনয়ন বাণিজ্যের লোভ সামলাতে পারবে না, বিএনপি নির্বাচনে আসবেই’

ঢাবি প্ৰতিনিধি 
‘মনোনয়ন বাণিজ্যের লোভ সামলাতে পারবে না, বিএনপি নির্বাচনে আসবেই’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ করব একদিন এসে দেখে যাবেন। যেতে তো হবেই কারণ সামনে নির্বাচন। যতই বলেন, আমরা তো বুঝি ভেতরে বিশাল মনোনয়ন বাণিজ্য আছে। এ লোভ আপনারা সামলাতে পারবেন না। তখন পদ্মাতে কি নৌকায় যাবেন, নৌকাও তো আমাদের।’

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ‘পিতার শোক, কন্যার শক্তি; বাংলার অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এ আয়োজন করে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব কষ্ট প্রকাশ করে কী করবেন, শেখ হাসিনাকে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছেন, তিনি ভাগ্যবতী। আল্লাহ পাক এ দেশে একজনকে সৃষ্টি করেছেন স্বাধীনতার জন্য, আরেকজনকে সৃষ্টি করেছেন মুক্তির জন্য। মুক্তির লড়াইয়ে আপসহীন কান্ডারি শেখ হাসিনা।’

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আন্দোলন করবেন, ব্যর্থ হলে নন্দ ঘোষ আওয়ামী লীগ। ফখরুল সাহেব কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি ফেলেন। আমাদের কত চোখের পানি কাঁদতে কাঁদতে শুকিয়ে গেছে তার হিসাব কি আছে?’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৩ বছর ধরে কত শুনলাম, রোজার ইদের পর, কোরবানির ইদের পর আন্দোলন। তারপর দিন যায়, বছর যায়, পদ্মা মেঘনায় কত পানি গড়িয়ে যায়। কিন্তু ফখরুল সাহেবদের আন্দোলনের সোনার হরিণের দেখা যায় না। আন্দোলনের সোনার হরিণ দেখা না দিলে ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দেখা দেবে না। আন্দোলনে জয় নিয়েই নির্বাচনে যেতে হয়। এ দেশে আন্দোলনে জিতলে নির্বাচনেও জেতা যায়। ষড়যন্ত্র করে কাউকে হত্যা করতে পারবেন, ক্ষমতায় যেতে পারবেন না। ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দিল্লি এখনো অনেক দূরে।’

বৈশ্বিক সংকটের মূল্য দিতে হচ্ছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখনো আমাদের রিজার্ভ ৪০ বিলিয়নের কাছাকাছি। গত ছয় মাসে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, এর আগে কখনো ছয় মাসে এই পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। আমরা দোষী-অপরাধী নই, আমাদের আর্থিক সংকটে বৈশ্বিক পরিস্থিতির মূল্য দিতে হচ্ছে। শেখ হাসিনাকে মূল্য দিতে হচ্ছে। তাকে রাত জেগে জেগে মানুষের কথা ভাবতে হচ্ছে। সরকার প্রধান হয়েও তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। এই কষ্ট লাঘবে তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ কষ্ট সাময়িক, এ দুর্দিন চলে যাবে। ধৈর্যহারা হবেন না, ইনশা আল্লাহ সুদিন আসবে।’

জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার দুঃসাহস পেত না মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি বলব জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দুঃসাহস পেত না। জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড শেষে মেজর ডালিমকে বলেছিলেন “ওয়েল ডান! মেজর ডালিম। ইউ হ্যাভ ডান এ গ্রেট জব! ” কে যে পাকিস্তানের দালাল সেটার প্রমাণ জিয়াউর রহমান। একদিকে সেক্টর কমান্ডার পরিচয় দিতেন অন্যদিকে জাতির পিতাকে হত্যায় জড়িত ছিলেন। এমনকি খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে, সচিব পদে চাকরি দিয়েছে।’

ইতিহাসবিদ ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে আবদুল গাফফার চৌধুরীকে একটি কবিতা দিয়েছিলেন। কবিতায় বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, “আমার কবিতা নিভৃতে কাঁদে, বাংলার ভদ্র লোকেরা চুরি করে...দেশটাকে লুটেপুটে খাবার জন্য কি এনেছি স্বাধীনতা। ” আজও চুরি লুটপাট, ঠকানো বন্ধ হয়নি। আজ পত্রিকায় দেখলাম ওয়াসার এমডির কথা। নোংরা দুর্গন্ধ ওয়াসার পানির দাম বেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধু যদি আজকে বেঁচে থাকতেন তাহলে তাকে হত্যা করতে হতো না। তিনি আত্মহত্যা করতেন।’

ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে সৈয়দ আনোয়ার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রলীগ হওয়ার চেষ্টা কর। তোমাদের হাতে দেখতে চাই বই-খাতা ও কলম। তোমাদের উপস্থিতি দেখতে চাই শ্রেণিকক্ষে।’

ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত