আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভের প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দমন-পীড়নে কয়েক শ আন্দোলনকারী প্রাণ হারান। সরকারবিরোধী ক্ষোভ যখন তুঙ্গে, তখন ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানান। কোটাবিরোধী আন্দোলন দ্রুতই আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে সরকার ভেঙে পড়ে এবং তিনি দেশত্যাগ করেন।
এরপর, ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে নাহিদ ইসলাম তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হন। প্রায় ৭ মাস অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নাহিদ পদত্যাগ করেন এবং তিন দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেন।
নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে হাজির হয়েছে এই নতুন দল।
দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম তাঁর নতুন দলের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ, নির্বাচন, বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ কেমন হওয়া উচিত, কিংস পার্টি প্রসঙ্গ এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনি কর্মসূচিভিত্তিক আন্দোলন থেকে সরকারে গিয়েছিলেন। এরপর আবার মাঠের রাজনীতি-আন্দোলনে ফিরে এসেছেন। এই যাত্রায় আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নাহিদ ইসলাম: সরকারের ভেতরে এবং বাইরে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য সময়টা ছিল অত্যন্ত সংকটময়। সেই কঠিন সময়ের মধ্যে সরকারে কাজ করা আমার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরে সময়ের দাবি মেনে আমি পদত্যাগ করি এবং মূলধারার রাজনীতিতে আসি। এখন আমি এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমার ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথ গড়ে তুলতে চাই। আমার কাছে, বিশেষ করে সামনের পথ কঠিন বলে মনে হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ, তবে আমি সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অন্তর্বর্তী সরকারে থাকাকালে আপনি কতটা সংস্কার আনতে পেরেছিলেন?
নাহিদ ইসলাম: আমার স্বল্প সময়ের দায়িত্বকালে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছি। ইন্টারনেট অবকাঠামোর স্তরগুলো পুনর্বিন্যাস করেছি, আইসিটি বিভাগের জন্য একটি সংস্কার রোডম্যাপ তৈরি করেছি এবং তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সেন্সরশিপ আইন পর্যালোচনা করেছি। যদিও এই সংস্কারগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রভাব হয়তো এখনই বোঝা যাবে না, তবে আমি বিশ্বাস করি, দীর্ঘ মেয়াদে দেশ এর সুফল পাবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির পরিকল্পনা কী? এটি কি ডানপন্থী না বামপন্থী দল হবে?
নাহিদ ইসলাম: কোনোটাই নয়। এনসিপি একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শেই অটল থাকব। আমাদের লক্ষ্য হলো, নতুন কণ্ঠস্বরের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি করা। বিশেষ করে, তরুণ এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জন্য, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাজনীতিতে নিজেদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারেননি।
আমরা ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বা ‘দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগোচ্ছি, যার অংশ হিসেবে একটি গণপরিষদ গঠন করতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং ক্ষমতার কাঠামো পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছি। আমরা নতুন নতুন ধারণা (আইডিয়া) অন্বেষণ করছি এবং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও সুগঠিত করতে মতামত সংগ্রহ করছি।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অনেকে বলছেন, এনসিপি ‘কিংস পার্টি’ এবং সরকার থেকে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে। এটা কি সত্যি?
নাহিদ ইসলাম: যদি এনসিপি সত্যিই ‘কিংস পার্টি’ হতো, তাহলে আমি সরকারের পদ থেকে কেন পদত্যাগ করেছি? আমি (সরকারে) থেকে যেতে পারতাম, আমার অবস্থান কাজে লাগিয়ে সরকার থেকেই রাজনীতি করতে পারতাম।
আমরা সরকারের কাছ থেকে কোনো বিশেষ সুবিধা পাচ্ছি না। শুধু আন্দোলনে আমাদের ভূমিকার কারণে সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার কোনো একক দলের সরকার নয়। এখানে নানা মতাদর্শের মানুষ আছেন। ফলে, সরকার সব দলকেই সমানভাবে দেখছে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপি কি জামায়াতে ইসলামীর ঘনিষ্ঠ? তাদের দাবি অনেকটাই এমন শোনায়। এনসিপি বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থানে ভূমিকা রাখবে—এমন আশঙ্কাও আছে!
নাহিদ ইসলাম: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি—আমরা সবাই আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের দাবি জানাই। তাই বলে কি আমরা এক বা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ? একদমই না। যদি তা-ই হতো, তাহলে আমরা জোট গঠন করতাম।
এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ আলাদা দল। আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও ভিন্ন, আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াত আমাদের কাছের দল নয়। আমাদের কিছু দাবি হয়তো মিলে যেতে পারে। যেমন আমরা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিই, গণপরিষদ গঠনের কথা বলি, বড় পরিসরে কাঠামোগত পরিবর্তন চাই। কিন্তু এনসিপি মৌলবাদের সঙ্গে একাত্ম—এমন প্রচারের চেষ্টা একটি মিথ্যা ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার কৌশলমাত্র। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ কেউ জুলাই বিদ্রোহকে সন্ত্রাসী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন, যা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনারা সাধারণ নির্বাচন কবে চান?
নাহিদ ইসলাম: আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো—আগের সরকারের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা, দেশে স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। আমরা সংবিধান ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের পক্ষে, যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। তাই নির্বাচন এখনই আমাদের অগ্রাধিকার নয়। আমরা এই মুহূর্তে নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: নতুন দল হিসেবে আপনাদের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন?
নাহিদ ইসলাম: প্রথমত, বাংলাদেশে বহু পুরোনো ও সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আছে। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আমাদের জন্য কঠিন হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে হাতে সময় কম থাকলে। যদিও নির্বাচন কবে হবে, তা নিশ্চিত নয়, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের দলকে পৌঁছে দেওয়াটাও বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রামাঞ্চলের রাজনীতি শহর বা ক্যাম্পাসের রাজনীতির চেয়ে ভিন্ন এবং এর জন্য ভিন্ন কৌশল দরকার। আমরা আগামী মাস থেকে ঢাকার বাইরে প্রচার শুরু করব।
এ ছাড়া দেশের বর্তমান সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমাদের আন্দোলনেও মনোযোগ দিতে হবে, যাতে জনগণের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারকে চাপ দেওয়া যায়। পাশাপাশি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দলের কার্যক্রমে কি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাচ্ছেন?
নাহিদ ইসলাম: হ্যাঁ। অতীতে যা দেখা যেত, তার চেয়ে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাজনীতির প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাঁরা গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের দল সবার জন্য সমান সুযোগ ও দায়িত্ব নিশ্চিত করে, যাতে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক পরিসর গড়ে তোলা যায়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র নিয়ে এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি কী?
নাহিদ ইসলাম: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের জন্য আমাদের প্রধান দাবি—একটি নতুন সংবিধান, যা প্রণয়নের জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করতে হবে। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শের ভিত্তিতে তৈরি হতে হবে। আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টন ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সীমাহীন ক্ষমতা বিলোপ করা হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ নিয়ে এনসিপির অবস্থান কী? দলটি কি নির্দিষ্ট দেশকেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী?
নাহিদ ইসলাম: আমরা চাই, বাংলাদেশ এমন একটি কূটনৈতিক নীতি অনুসরণ করুক, যা ভারসাম্যপূর্ণ ও দেশের জন্য উপকারী এবং কোনো বিদেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত। অতীতে আমরা দেখেছি, কিছু রেজিম দিল্লির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল ছিল। তবে আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভারত কিংবা পাকিস্তান—কোনো দেশকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হতে দেব না। এনসিপি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশকেন্দ্রিক থাকবে এবং সর্বাগ্রে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দল কি আওয়ামী লীগকে রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেবে?
নাহিদ ইসলাম: না! আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। আগে দলটির ভেতরে যারা অনিয়ম ও অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির রাজনীতির জন্য বর্তমান কোনো দল কি হুমকি হয়ে উঠতে পারে?
নাহিদ ইসলাম: না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দল ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই সমকামী অধিকারকর্মীকে এনসিপির নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর চাপে করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। অন্তর্ভুক্তির নীতির কথা বলা এনসিপি কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিল?
নাহিদ ইসলাম: আমরা অন্তর্ভুক্তিতে বিশ্বাস করি, তবে আমাদের সমাজের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতাকেও গুরুত্ব দিতে হয়। এ কারণেই তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে আমাদের দল বৈচিত্র্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আমাদের অতীত রেকর্ড প্রশংসনীয়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: জুলাই অভ্যুত্থানে নারীরা বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, এর ফলে নারীরা আরও নিরাপদ ও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নারীদের ওপর সহিংসতা ও নীতি পুলিশিংয়ের প্রবণতা বেড়েছে। অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা হিসেবে আপনি কীভাবে এটি ব্যাখ্যা করবেন?
নাহিদ ইসলাম: নারীদের ওপর সহিংসতা বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। শুধু তা-ই নয়, সমাজে প্রচলিত নানা গভীর বদ্ধমূল ধারণা নারীদের অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখছে। দেশে রাজনৈতিক শূন্যতার কারণে অস্থিরতা বেড়েছে। ৫ আগস্ট পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে, যার ফলে এই সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, এখন দেখতে হবে সেগুলো কার্যকর হয় কি না। ব্যক্তি হিসেবে এবং দল হিসেবে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভের প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দমন-পীড়নে কয়েক শ আন্দোলনকারী প্রাণ হারান। সরকারবিরোধী ক্ষোভ যখন তুঙ্গে, তখন ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানান। কোটাবিরোধী আন্দোলন দ্রুতই আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে সরকার ভেঙে পড়ে এবং তিনি দেশত্যাগ করেন।
এরপর, ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে নাহিদ ইসলাম তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হন। প্রায় ৭ মাস অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নাহিদ পদত্যাগ করেন এবং তিন দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেন।
নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে হাজির হয়েছে এই নতুন দল।
দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম তাঁর নতুন দলের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ, নির্বাচন, বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ কেমন হওয়া উচিত, কিংস পার্টি প্রসঙ্গ এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনি কর্মসূচিভিত্তিক আন্দোলন থেকে সরকারে গিয়েছিলেন। এরপর আবার মাঠের রাজনীতি-আন্দোলনে ফিরে এসেছেন। এই যাত্রায় আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নাহিদ ইসলাম: সরকারের ভেতরে এবং বাইরে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য সময়টা ছিল অত্যন্ত সংকটময়। সেই কঠিন সময়ের মধ্যে সরকারে কাজ করা আমার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরে সময়ের দাবি মেনে আমি পদত্যাগ করি এবং মূলধারার রাজনীতিতে আসি। এখন আমি এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমার ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথ গড়ে তুলতে চাই। আমার কাছে, বিশেষ করে সামনের পথ কঠিন বলে মনে হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ, তবে আমি সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অন্তর্বর্তী সরকারে থাকাকালে আপনি কতটা সংস্কার আনতে পেরেছিলেন?
নাহিদ ইসলাম: আমার স্বল্প সময়ের দায়িত্বকালে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছি। ইন্টারনেট অবকাঠামোর স্তরগুলো পুনর্বিন্যাস করেছি, আইসিটি বিভাগের জন্য একটি সংস্কার রোডম্যাপ তৈরি করেছি এবং তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সেন্সরশিপ আইন পর্যালোচনা করেছি। যদিও এই সংস্কারগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রভাব হয়তো এখনই বোঝা যাবে না, তবে আমি বিশ্বাস করি, দীর্ঘ মেয়াদে দেশ এর সুফল পাবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির পরিকল্পনা কী? এটি কি ডানপন্থী না বামপন্থী দল হবে?
নাহিদ ইসলাম: কোনোটাই নয়। এনসিপি একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শেই অটল থাকব। আমাদের লক্ষ্য হলো, নতুন কণ্ঠস্বরের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি করা। বিশেষ করে, তরুণ এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জন্য, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাজনীতিতে নিজেদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারেননি।
আমরা ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বা ‘দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগোচ্ছি, যার অংশ হিসেবে একটি গণপরিষদ গঠন করতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং ক্ষমতার কাঠামো পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছি। আমরা নতুন নতুন ধারণা (আইডিয়া) অন্বেষণ করছি এবং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও সুগঠিত করতে মতামত সংগ্রহ করছি।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অনেকে বলছেন, এনসিপি ‘কিংস পার্টি’ এবং সরকার থেকে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে। এটা কি সত্যি?
নাহিদ ইসলাম: যদি এনসিপি সত্যিই ‘কিংস পার্টি’ হতো, তাহলে আমি সরকারের পদ থেকে কেন পদত্যাগ করেছি? আমি (সরকারে) থেকে যেতে পারতাম, আমার অবস্থান কাজে লাগিয়ে সরকার থেকেই রাজনীতি করতে পারতাম।
আমরা সরকারের কাছ থেকে কোনো বিশেষ সুবিধা পাচ্ছি না। শুধু আন্দোলনে আমাদের ভূমিকার কারণে সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার কোনো একক দলের সরকার নয়। এখানে নানা মতাদর্শের মানুষ আছেন। ফলে, সরকার সব দলকেই সমানভাবে দেখছে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপি কি জামায়াতে ইসলামীর ঘনিষ্ঠ? তাদের দাবি অনেকটাই এমন শোনায়। এনসিপি বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থানে ভূমিকা রাখবে—এমন আশঙ্কাও আছে!
নাহিদ ইসলাম: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি—আমরা সবাই আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের দাবি জানাই। তাই বলে কি আমরা এক বা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ? একদমই না। যদি তা-ই হতো, তাহলে আমরা জোট গঠন করতাম।
এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ আলাদা দল। আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও ভিন্ন, আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াত আমাদের কাছের দল নয়। আমাদের কিছু দাবি হয়তো মিলে যেতে পারে। যেমন আমরা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিই, গণপরিষদ গঠনের কথা বলি, বড় পরিসরে কাঠামোগত পরিবর্তন চাই। কিন্তু এনসিপি মৌলবাদের সঙ্গে একাত্ম—এমন প্রচারের চেষ্টা একটি মিথ্যা ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার কৌশলমাত্র। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ কেউ জুলাই বিদ্রোহকে সন্ত্রাসী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন, যা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনারা সাধারণ নির্বাচন কবে চান?
নাহিদ ইসলাম: আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো—আগের সরকারের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা, দেশে স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। আমরা সংবিধান ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের পক্ষে, যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। তাই নির্বাচন এখনই আমাদের অগ্রাধিকার নয়। আমরা এই মুহূর্তে নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: নতুন দল হিসেবে আপনাদের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন?
নাহিদ ইসলাম: প্রথমত, বাংলাদেশে বহু পুরোনো ও সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আছে। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আমাদের জন্য কঠিন হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে হাতে সময় কম থাকলে। যদিও নির্বাচন কবে হবে, তা নিশ্চিত নয়, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের দলকে পৌঁছে দেওয়াটাও বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রামাঞ্চলের রাজনীতি শহর বা ক্যাম্পাসের রাজনীতির চেয়ে ভিন্ন এবং এর জন্য ভিন্ন কৌশল দরকার। আমরা আগামী মাস থেকে ঢাকার বাইরে প্রচার শুরু করব।
এ ছাড়া দেশের বর্তমান সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমাদের আন্দোলনেও মনোযোগ দিতে হবে, যাতে জনগণের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারকে চাপ দেওয়া যায়। পাশাপাশি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দলের কার্যক্রমে কি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাচ্ছেন?
নাহিদ ইসলাম: হ্যাঁ। অতীতে যা দেখা যেত, তার চেয়ে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাজনীতির প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাঁরা গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের দল সবার জন্য সমান সুযোগ ও দায়িত্ব নিশ্চিত করে, যাতে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক পরিসর গড়ে তোলা যায়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র নিয়ে এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি কী?
নাহিদ ইসলাম: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের জন্য আমাদের প্রধান দাবি—একটি নতুন সংবিধান, যা প্রণয়নের জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করতে হবে। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শের ভিত্তিতে তৈরি হতে হবে। আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টন ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সীমাহীন ক্ষমতা বিলোপ করা হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ নিয়ে এনসিপির অবস্থান কী? দলটি কি নির্দিষ্ট দেশকেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী?
নাহিদ ইসলাম: আমরা চাই, বাংলাদেশ এমন একটি কূটনৈতিক নীতি অনুসরণ করুক, যা ভারসাম্যপূর্ণ ও দেশের জন্য উপকারী এবং কোনো বিদেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত। অতীতে আমরা দেখেছি, কিছু রেজিম দিল্লির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল ছিল। তবে আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভারত কিংবা পাকিস্তান—কোনো দেশকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হতে দেব না। এনসিপি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশকেন্দ্রিক থাকবে এবং সর্বাগ্রে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দল কি আওয়ামী লীগকে রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেবে?
নাহিদ ইসলাম: না! আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। আগে দলটির ভেতরে যারা অনিয়ম ও অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির রাজনীতির জন্য বর্তমান কোনো দল কি হুমকি হয়ে উঠতে পারে?
নাহিদ ইসলাম: না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দল ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই সমকামী অধিকারকর্মীকে এনসিপির নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর চাপে করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। অন্তর্ভুক্তির নীতির কথা বলা এনসিপি কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিল?
নাহিদ ইসলাম: আমরা অন্তর্ভুক্তিতে বিশ্বাস করি, তবে আমাদের সমাজের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতাকেও গুরুত্ব দিতে হয়। এ কারণেই তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে আমাদের দল বৈচিত্র্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আমাদের অতীত রেকর্ড প্রশংসনীয়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: জুলাই অভ্যুত্থানে নারীরা বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, এর ফলে নারীরা আরও নিরাপদ ও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নারীদের ওপর সহিংসতা ও নীতি পুলিশিংয়ের প্রবণতা বেড়েছে। অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা হিসেবে আপনি কীভাবে এটি ব্যাখ্যা করবেন?
নাহিদ ইসলাম: নারীদের ওপর সহিংসতা বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। শুধু তা-ই নয়, সমাজে প্রচলিত নানা গভীর বদ্ধমূল ধারণা নারীদের অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখছে। দেশে রাজনৈতিক শূন্যতার কারণে অস্থিরতা বেড়েছে। ৫ আগস্ট পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে, যার ফলে এই সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, এখন দেখতে হবে সেগুলো কার্যকর হয় কি না। ব্যক্তি হিসেবে এবং দল হিসেবে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভের প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দমন-পীড়নে কয়েক শ আন্দোলনকারী প্রাণ হারান। সরকারবিরোধী ক্ষোভ যখন তুঙ্গে, তখন ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানান। কোটাবিরোধী আন্দোলন দ্রুতই আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে সরকার ভেঙে পড়ে এবং তিনি দেশত্যাগ করেন।
এরপর, ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে নাহিদ ইসলাম তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হন। প্রায় ৭ মাস অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নাহিদ পদত্যাগ করেন এবং তিন দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেন।
নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে হাজির হয়েছে এই নতুন দল।
দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম তাঁর নতুন দলের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ, নির্বাচন, বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ কেমন হওয়া উচিত, কিংস পার্টি প্রসঙ্গ এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনি কর্মসূচিভিত্তিক আন্দোলন থেকে সরকারে গিয়েছিলেন। এরপর আবার মাঠের রাজনীতি-আন্দোলনে ফিরে এসেছেন। এই যাত্রায় আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নাহিদ ইসলাম: সরকারের ভেতরে এবং বাইরে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য সময়টা ছিল অত্যন্ত সংকটময়। সেই কঠিন সময়ের মধ্যে সরকারে কাজ করা আমার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরে সময়ের দাবি মেনে আমি পদত্যাগ করি এবং মূলধারার রাজনীতিতে আসি। এখন আমি এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমার ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথ গড়ে তুলতে চাই। আমার কাছে, বিশেষ করে সামনের পথ কঠিন বলে মনে হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ, তবে আমি সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অন্তর্বর্তী সরকারে থাকাকালে আপনি কতটা সংস্কার আনতে পেরেছিলেন?
নাহিদ ইসলাম: আমার স্বল্প সময়ের দায়িত্বকালে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছি। ইন্টারনেট অবকাঠামোর স্তরগুলো পুনর্বিন্যাস করেছি, আইসিটি বিভাগের জন্য একটি সংস্কার রোডম্যাপ তৈরি করেছি এবং তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সেন্সরশিপ আইন পর্যালোচনা করেছি। যদিও এই সংস্কারগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রভাব হয়তো এখনই বোঝা যাবে না, তবে আমি বিশ্বাস করি, দীর্ঘ মেয়াদে দেশ এর সুফল পাবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির পরিকল্পনা কী? এটি কি ডানপন্থী না বামপন্থী দল হবে?
নাহিদ ইসলাম: কোনোটাই নয়। এনসিপি একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শেই অটল থাকব। আমাদের লক্ষ্য হলো, নতুন কণ্ঠস্বরের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি করা। বিশেষ করে, তরুণ এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জন্য, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাজনীতিতে নিজেদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারেননি।
আমরা ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বা ‘দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগোচ্ছি, যার অংশ হিসেবে একটি গণপরিষদ গঠন করতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং ক্ষমতার কাঠামো পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছি। আমরা নতুন নতুন ধারণা (আইডিয়া) অন্বেষণ করছি এবং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও সুগঠিত করতে মতামত সংগ্রহ করছি।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অনেকে বলছেন, এনসিপি ‘কিংস পার্টি’ এবং সরকার থেকে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে। এটা কি সত্যি?
নাহিদ ইসলাম: যদি এনসিপি সত্যিই ‘কিংস পার্টি’ হতো, তাহলে আমি সরকারের পদ থেকে কেন পদত্যাগ করেছি? আমি (সরকারে) থেকে যেতে পারতাম, আমার অবস্থান কাজে লাগিয়ে সরকার থেকেই রাজনীতি করতে পারতাম।
আমরা সরকারের কাছ থেকে কোনো বিশেষ সুবিধা পাচ্ছি না। শুধু আন্দোলনে আমাদের ভূমিকার কারণে সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার কোনো একক দলের সরকার নয়। এখানে নানা মতাদর্শের মানুষ আছেন। ফলে, সরকার সব দলকেই সমানভাবে দেখছে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপি কি জামায়াতে ইসলামীর ঘনিষ্ঠ? তাদের দাবি অনেকটাই এমন শোনায়। এনসিপি বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থানে ভূমিকা রাখবে—এমন আশঙ্কাও আছে!
নাহিদ ইসলাম: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি—আমরা সবাই আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের দাবি জানাই। তাই বলে কি আমরা এক বা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ? একদমই না। যদি তা-ই হতো, তাহলে আমরা জোট গঠন করতাম।
এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ আলাদা দল। আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও ভিন্ন, আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াত আমাদের কাছের দল নয়। আমাদের কিছু দাবি হয়তো মিলে যেতে পারে। যেমন আমরা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিই, গণপরিষদ গঠনের কথা বলি, বড় পরিসরে কাঠামোগত পরিবর্তন চাই। কিন্তু এনসিপি মৌলবাদের সঙ্গে একাত্ম—এমন প্রচারের চেষ্টা একটি মিথ্যা ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার কৌশলমাত্র। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ কেউ জুলাই বিদ্রোহকে সন্ত্রাসী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন, যা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনারা সাধারণ নির্বাচন কবে চান?
নাহিদ ইসলাম: আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো—আগের সরকারের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা, দেশে স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। আমরা সংবিধান ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের পক্ষে, যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। তাই নির্বাচন এখনই আমাদের অগ্রাধিকার নয়। আমরা এই মুহূর্তে নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: নতুন দল হিসেবে আপনাদের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন?
নাহিদ ইসলাম: প্রথমত, বাংলাদেশে বহু পুরোনো ও সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আছে। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আমাদের জন্য কঠিন হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে হাতে সময় কম থাকলে। যদিও নির্বাচন কবে হবে, তা নিশ্চিত নয়, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের দলকে পৌঁছে দেওয়াটাও বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রামাঞ্চলের রাজনীতি শহর বা ক্যাম্পাসের রাজনীতির চেয়ে ভিন্ন এবং এর জন্য ভিন্ন কৌশল দরকার। আমরা আগামী মাস থেকে ঢাকার বাইরে প্রচার শুরু করব।
এ ছাড়া দেশের বর্তমান সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমাদের আন্দোলনেও মনোযোগ দিতে হবে, যাতে জনগণের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারকে চাপ দেওয়া যায়। পাশাপাশি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দলের কার্যক্রমে কি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাচ্ছেন?
নাহিদ ইসলাম: হ্যাঁ। অতীতে যা দেখা যেত, তার চেয়ে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাজনীতির প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাঁরা গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের দল সবার জন্য সমান সুযোগ ও দায়িত্ব নিশ্চিত করে, যাতে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক পরিসর গড়ে তোলা যায়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র নিয়ে এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি কী?
নাহিদ ইসলাম: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের জন্য আমাদের প্রধান দাবি—একটি নতুন সংবিধান, যা প্রণয়নের জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করতে হবে। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শের ভিত্তিতে তৈরি হতে হবে। আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টন ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সীমাহীন ক্ষমতা বিলোপ করা হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ নিয়ে এনসিপির অবস্থান কী? দলটি কি নির্দিষ্ট দেশকেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী?
নাহিদ ইসলাম: আমরা চাই, বাংলাদেশ এমন একটি কূটনৈতিক নীতি অনুসরণ করুক, যা ভারসাম্যপূর্ণ ও দেশের জন্য উপকারী এবং কোনো বিদেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত। অতীতে আমরা দেখেছি, কিছু রেজিম দিল্লির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল ছিল। তবে আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভারত কিংবা পাকিস্তান—কোনো দেশকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হতে দেব না। এনসিপি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশকেন্দ্রিক থাকবে এবং সর্বাগ্রে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দল কি আওয়ামী লীগকে রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেবে?
নাহিদ ইসলাম: না! আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। আগে দলটির ভেতরে যারা অনিয়ম ও অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির রাজনীতির জন্য বর্তমান কোনো দল কি হুমকি হয়ে উঠতে পারে?
নাহিদ ইসলাম: না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দল ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই সমকামী অধিকারকর্মীকে এনসিপির নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর চাপে করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। অন্তর্ভুক্তির নীতির কথা বলা এনসিপি কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিল?
নাহিদ ইসলাম: আমরা অন্তর্ভুক্তিতে বিশ্বাস করি, তবে আমাদের সমাজের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতাকেও গুরুত্ব দিতে হয়। এ কারণেই তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে আমাদের দল বৈচিত্র্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আমাদের অতীত রেকর্ড প্রশংসনীয়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: জুলাই অভ্যুত্থানে নারীরা বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, এর ফলে নারীরা আরও নিরাপদ ও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নারীদের ওপর সহিংসতা ও নীতি পুলিশিংয়ের প্রবণতা বেড়েছে। অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা হিসেবে আপনি কীভাবে এটি ব্যাখ্যা করবেন?
নাহিদ ইসলাম: নারীদের ওপর সহিংসতা বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। শুধু তা-ই নয়, সমাজে প্রচলিত নানা গভীর বদ্ধমূল ধারণা নারীদের অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখছে। দেশে রাজনৈতিক শূন্যতার কারণে অস্থিরতা বেড়েছে। ৫ আগস্ট পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে, যার ফলে এই সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, এখন দেখতে হবে সেগুলো কার্যকর হয় কি না। ব্যক্তি হিসেবে এবং দল হিসেবে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভের প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দমন-পীড়নে কয়েক শ আন্দোলনকারী প্রাণ হারান। সরকারবিরোধী ক্ষোভ যখন তুঙ্গে, তখন ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি জানান। কোটাবিরোধী আন্দোলন দ্রুতই আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে সরকার ভেঙে পড়ে এবং তিনি দেশত্যাগ করেন।
এরপর, ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে নাহিদ ইসলাম তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হন। প্রায় ৭ মাস অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নাহিদ পদত্যাগ করেন এবং তিন দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেন।
নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে হাজির হয়েছে এই নতুন দল।
দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম তাঁর নতুন দলের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ, নির্বাচন, বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ কেমন হওয়া উচিত, কিংস পার্টি প্রসঙ্গ এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনি কর্মসূচিভিত্তিক আন্দোলন থেকে সরকারে গিয়েছিলেন। এরপর আবার মাঠের রাজনীতি-আন্দোলনে ফিরে এসেছেন। এই যাত্রায় আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নাহিদ ইসলাম: সরকারের ভেতরে এবং বাইরে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য সময়টা ছিল অত্যন্ত সংকটময়। সেই কঠিন সময়ের মধ্যে সরকারে কাজ করা আমার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। পরে সময়ের দাবি মেনে আমি পদত্যাগ করি এবং মূলধারার রাজনীতিতে আসি। এখন আমি এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমার ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথ গড়ে তুলতে চাই। আমার কাছে, বিশেষ করে সামনের পথ কঠিন বলে মনে হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ, তবে আমি সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অন্তর্বর্তী সরকারে থাকাকালে আপনি কতটা সংস্কার আনতে পেরেছিলেন?
নাহিদ ইসলাম: আমার স্বল্প সময়ের দায়িত্বকালে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছি। ইন্টারনেট অবকাঠামোর স্তরগুলো পুনর্বিন্যাস করেছি, আইসিটি বিভাগের জন্য একটি সংস্কার রোডম্যাপ তৈরি করেছি এবং তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সেন্সরশিপ আইন পর্যালোচনা করেছি। যদিও এই সংস্কারগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রভাব হয়তো এখনই বোঝা যাবে না, তবে আমি বিশ্বাস করি, দীর্ঘ মেয়াদে দেশ এর সুফল পাবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির পরিকল্পনা কী? এটি কি ডানপন্থী না বামপন্থী দল হবে?
নাহিদ ইসলাম: কোনোটাই নয়। এনসিপি একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শেই অটল থাকব। আমাদের লক্ষ্য হলো, নতুন কণ্ঠস্বরের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি করা। বিশেষ করে, তরুণ এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জন্য, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাজনীতিতে নিজেদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে পারেননি।
আমরা ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বা ‘দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগোচ্ছি, যার অংশ হিসেবে একটি গণপরিষদ গঠন করতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং ক্ষমতার কাঠামো পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করছি। আমরা নতুন নতুন ধারণা (আইডিয়া) অন্বেষণ করছি এবং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও সুগঠিত করতে মতামত সংগ্রহ করছি।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: অনেকে বলছেন, এনসিপি ‘কিংস পার্টি’ এবং সরকার থেকে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে। এটা কি সত্যি?
নাহিদ ইসলাম: যদি এনসিপি সত্যিই ‘কিংস পার্টি’ হতো, তাহলে আমি সরকারের পদ থেকে কেন পদত্যাগ করেছি? আমি (সরকারে) থেকে যেতে পারতাম, আমার অবস্থান কাজে লাগিয়ে সরকার থেকেই রাজনীতি করতে পারতাম।
আমরা সরকারের কাছ থেকে কোনো বিশেষ সুবিধা পাচ্ছি না। শুধু আন্দোলনে আমাদের ভূমিকার কারণে সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার কোনো একক দলের সরকার নয়। এখানে নানা মতাদর্শের মানুষ আছেন। ফলে, সরকার সব দলকেই সমানভাবে দেখছে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপি কি জামায়াতে ইসলামীর ঘনিষ্ঠ? তাদের দাবি অনেকটাই এমন শোনায়। এনসিপি বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থানে ভূমিকা রাখবে—এমন আশঙ্কাও আছে!
নাহিদ ইসলাম: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি—আমরা সবাই আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের দাবি জানাই। তাই বলে কি আমরা এক বা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ? একদমই না। যদি তা-ই হতো, তাহলে আমরা জোট গঠন করতাম।
এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ আলাদা দল। আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও ভিন্ন, আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াত আমাদের কাছের দল নয়। আমাদের কিছু দাবি হয়তো মিলে যেতে পারে। যেমন আমরা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিই, গণপরিষদ গঠনের কথা বলি, বড় পরিসরে কাঠামোগত পরিবর্তন চাই। কিন্তু এনসিপি মৌলবাদের সঙ্গে একাত্ম—এমন প্রচারের চেষ্টা একটি মিথ্যা ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার কৌশলমাত্র। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ কেউ জুলাই বিদ্রোহকে সন্ত্রাসী আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন, যা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনারা সাধারণ নির্বাচন কবে চান?
নাহিদ ইসলাম: আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো—আগের সরকারের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা, দেশে স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। আমরা সংবিধান ও নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের পক্ষে, যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। তাই নির্বাচন এখনই আমাদের অগ্রাধিকার নয়। আমরা এই মুহূর্তে নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: নতুন দল হিসেবে আপনাদের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন?
নাহিদ ইসলাম: প্রথমত, বাংলাদেশে বহু পুরোনো ও সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আছে। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আমাদের জন্য কঠিন হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে হাতে সময় কম থাকলে। যদিও নির্বাচন কবে হবে, তা নিশ্চিত নয়, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, তৃণমূল পর্যায়ে আমাদের দলকে পৌঁছে দেওয়াটাও বড় চ্যালেঞ্জ। গ্রামাঞ্চলের রাজনীতি শহর বা ক্যাম্পাসের রাজনীতির চেয়ে ভিন্ন এবং এর জন্য ভিন্ন কৌশল দরকার। আমরা আগামী মাস থেকে ঢাকার বাইরে প্রচার শুরু করব।
এ ছাড়া দেশের বর্তমান সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে আমাদের আন্দোলনেও মনোযোগ দিতে হবে, যাতে জনগণের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারকে চাপ দেওয়া যায়। পাশাপাশি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দলের কার্যক্রমে কি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাচ্ছেন?
নাহিদ ইসলাম: হ্যাঁ। অতীতে যা দেখা যেত, তার চেয়ে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাজনীতির প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাঁরা গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের দল সবার জন্য সমান সুযোগ ও দায়িত্ব নিশ্চিত করে, যাতে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক পরিসর গড়ে তোলা যায়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র নিয়ে এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি কী?
নাহিদ ইসলাম: দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের জন্য আমাদের প্রধান দাবি—একটি নতুন সংবিধান, যা প্রণয়নের জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করতে হবে। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শের ভিত্তিতে তৈরি হতে হবে। আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টন ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সীমাহীন ক্ষমতা বিলোপ করা হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: বাংলাদেশের কূটনীতির গতিপথ নিয়ে এনসিপির অবস্থান কী? দলটি কি নির্দিষ্ট দেশকেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী?
নাহিদ ইসলাম: আমরা চাই, বাংলাদেশ এমন একটি কূটনৈতিক নীতি অনুসরণ করুক, যা ভারসাম্যপূর্ণ ও দেশের জন্য উপকারী এবং কোনো বিদেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত। অতীতে আমরা দেখেছি, কিছু রেজিম দিল্লির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল ছিল। তবে আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভারত কিংবা পাকিস্তান—কোনো দেশকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হতে দেব না। এনসিপি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশকেন্দ্রিক থাকবে এবং সর্বাগ্রে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: আপনাদের দল কি আওয়ামী লীগকে রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেবে?
নাহিদ ইসলাম: না! আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। আগে দলটির ভেতরে যারা অনিয়ম ও অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: এনসিপির রাজনীতির জন্য বর্তমান কোনো দল কি হুমকি হয়ে উঠতে পারে?
নাহিদ ইসলাম: না।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: দল ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই সমকামী অধিকারকর্মীকে এনসিপির নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর চাপে করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। অন্তর্ভুক্তির নীতির কথা বলা এনসিপি কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিল?
নাহিদ ইসলাম: আমরা অন্তর্ভুক্তিতে বিশ্বাস করি, তবে আমাদের সমাজের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতাকেও গুরুত্ব দিতে হয়। এ কারণেই তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে আমাদের দল বৈচিত্র্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আমাদের অতীত রেকর্ড প্রশংসনীয়।
দ্য ডিপ্লোম্যাট: জুলাই অভ্যুত্থানে নারীরা বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, এর ফলে নারীরা আরও নিরাপদ ও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নারীদের ওপর সহিংসতা ও নীতি পুলিশিংয়ের প্রবণতা বেড়েছে। অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা হিসেবে আপনি কীভাবে এটি ব্যাখ্যা করবেন?
নাহিদ ইসলাম: নারীদের ওপর সহিংসতা বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। শুধু তা-ই নয়, সমাজে প্রচলিত নানা গভীর বদ্ধমূল ধারণা নারীদের অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখছে। দেশে রাজনৈতিক শূন্যতার কারণে অস্থিরতা বেড়েছে। ৫ আগস্ট পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়ার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে, যার ফলে এই সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, এখন দেখতে হবে সেগুলো কার্যকর হয় কি না। ব্যক্তি হিসেবে এবং দল হিসেবে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে
জুলাই আন্দোলনের পর আমলারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ে চলমান বিসিএসগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি
৮ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতে ইসলামী প্রভাবিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বিএনপির আহ্বানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। আজ রোববার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই দাবিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেন।
১০ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী জোট করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে, যা পূর্বে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। এই সংশোধনীর বিষয়ে এনডিএমও তীব্র আপত্তি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাত্র দেড় মাস আগে এ রকম একটি..
১২ ঘণ্টা আগেসাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
বাম দলগুলো বলেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে। দলীয় প্রার্থীদের বাইরেও প্রগতিশীল, মুক্তমনা মানুষ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদেরও নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
দেশের নিবন্ধিত বামপন্থী দলগুলোর অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অংশ হওয়ায় ৫ আগস্টের পর বামপন্থী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নেতৃত্বাধীন ৬ দলের সমন্বয়ে গড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই জোটের পাশাপাশি অন্য ৭টি বামপন্থী দলের জোট ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা’, বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য ন্যাপ এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণসংগঠনের সমন্বয়ে বড় বামবলয় তৈরির চেষ্টা করছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।
বাম দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক, বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো এবং ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। প্রার্থী বাছাইসহ সার্বিক নির্বাচনী পরিকল্পনার পেছনের অন্যতম ভিত্তি হতে যাচ্ছে দেশের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতাযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেওয়া অনেক মুক্তিযোদ্ধাও এ বলয়ের আওতায় প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
সিপিবির ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দেড় শর বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
অন্যদিকে বাসদের নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যে ১১০ জন প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা করেছেন। অন্যান্য বাম দল, সংগঠন, জোটের নেতারাও প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, দলগুলোর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা সমন্বয়ের লক্ষ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর তাঁরা বৈঠকে বসতে পারেন। সে বিবেচনায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই সব প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ হবে। এরপর আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রাথমিকভাবে কিছু আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দলগুলো বলছে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার, শ্রমিক-কৃষকসহ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা, দুর্নীতিমুক্ত ও জনসম্পৃক্ত রাজনীতির পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং এলাকায় গ্রহণযোগ্যতার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করব। প্রার্থীরা সবাই দলীয় না-ও হতে পারেন। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় সমাজের পরিচিত বা প্রগতিশীল ব্যক্তিরাও থাকতে পারেন। মুক্তিযুদ্ধকে আমাদের নির্বাচনী পরিকল্পনার ভিত্তি বিবেচনা করা হয়েছে। কেউ কেউ ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের বিকল্প হিসেবে দেখাতে চায়। আমরা মনে করি, এটি অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার পরিণতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হয়নি বলেই ’২৪ ঘটেছে।’
একাত্তরে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নেওয়া একাধিক মুক্তিযোদ্ধাও বামবলয়ের প্রার্থী তালিকায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সব সময় আমরা প্রাধান্য দেই। আর মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রাম কল্পনা করা যায় না।’ ’২৪ হলো মুক্তিযুদ্ধের অপরিণত আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।’
জুলাই জাতীয় সনদে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-সংক্রান্ত সংবিধানের মূলনীতি অক্ষুণ্ন রাখার প্রশ্নে জোরালো অবস্থান নিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ। সংবিধানের চার মূলনীতিসহ ৭টি বিষয়ে সমাধান না হলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলগুলো। তাদের অভিযোগ, জুলাই সনদের মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিদ্যমান সংবিধানের চার মূলনীতি বাদ দেওয়াসহ মুক্তিযুদ্ধকে অপ্রাসঙ্গিক করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ কাফি রতনও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি রচিত হয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তা-ই প্রতিফলিত হয়েছে ১৯৭১-এর ১০ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে। সংবিধানের প্রায়োগিক বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বহু বিষয়ে সংস্কার আনায় ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি এর চার মূলনীতি প্রশ্নে আপস করার কোনো সুযোগ নেই।’
প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে মানে এমন দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে নিয়ে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক দল ছাড়াও থাকবে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, ছাত্র, শ্রমিক, খেতমজুর ও কৃষক সংগঠন, দলিত সম্প্রদায়, পাহাড়-সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইত্যাদি। স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় ব্যক্তিদেরও প্রার্থী হিসেবে আমরা সমর্থন দেব।’
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অনুপ্রাণিত গণতন্ত্রমনা এই জোট গঠনের লক্ষ্যে বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ আয়োজনের কথা জানিয়েছেন বাম নেতারা। এ ছাড়াও আগামী ৩১ অক্টোবর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনভেনশন, ২৮ নভেম্বর গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের কনভেনশন, ৫ ডিসেম্বর নারীসমাজের কনভেনশন এবং ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
বাম দলগুলো বলেছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে। দলীয় প্রার্থীদের বাইরেও প্রগতিশীল, মুক্তমনা মানুষ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদেরও নির্বাচনে সমর্থন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
দেশের নিবন্ধিত বামপন্থী দলগুলোর অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অংশ হওয়ায় ৫ আগস্টের পর বামপন্থী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নেতৃত্বাধীন ৬ দলের সমন্বয়ে গড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই জোটের পাশাপাশি অন্য ৭টি বামপন্থী দলের জোট ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা’, বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য ন্যাপ এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণসংগঠনের সমন্বয়ে বড় বামবলয় তৈরির চেষ্টা করছেন দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।
বাম দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক, বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো এবং ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। প্রার্থী বাছাইসহ সার্বিক নির্বাচনী পরিকল্পনার পেছনের অন্যতম ভিত্তি হতে যাচ্ছে দেশের ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতাযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেওয়া অনেক মুক্তিযোদ্ধাও এ বলয়ের আওতায় প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
সিপিবির ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, দেড় শর বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
অন্যদিকে বাসদের নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যে ১১০ জন প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা করেছেন। অন্যান্য বাম দল, সংগঠন, জোটের নেতারাও প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, দলগুলোর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা সমন্বয়ের লক্ষ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর তাঁরা বৈঠকে বসতে পারেন। সে বিবেচনায় ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই সব প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ হবে। এরপর আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রাথমিকভাবে কিছু আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দলগুলো বলছে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার, শ্রমিক-কৃষকসহ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা, দুর্নীতিমুক্ত ও জনসম্পৃক্ত রাজনীতির পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং এলাকায় গ্রহণযোগ্যতার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করব। প্রার্থীরা সবাই দলীয় না-ও হতে পারেন। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় সমাজের পরিচিত বা প্রগতিশীল ব্যক্তিরাও থাকতে পারেন। মুক্তিযুদ্ধকে আমাদের নির্বাচনী পরিকল্পনার ভিত্তি বিবেচনা করা হয়েছে। কেউ কেউ ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের বিকল্প হিসেবে দেখাতে চায়। আমরা মনে করি, এটি অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার পরিণতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হয়নি বলেই ’২৪ ঘটেছে।’
একাত্তরে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নেওয়া একাধিক মুক্তিযোদ্ধাও বামবলয়ের প্রার্থী তালিকায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সব সময় আমরা প্রাধান্য দেই। আর মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রাম কল্পনা করা যায় না।’ ’২৪ হলো মুক্তিযুদ্ধের অপরিণত আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।’
জুলাই জাতীয় সনদে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-সংক্রান্ত সংবিধানের মূলনীতি অক্ষুণ্ন রাখার প্রশ্নে জোরালো অবস্থান নিয়েছে সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ। সংবিধানের চার মূলনীতিসহ ৭টি বিষয়ে সমাধান না হলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলগুলো। তাদের অভিযোগ, জুলাই সনদের মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিদ্যমান সংবিধানের চার মূলনীতি বাদ দেওয়াসহ মুক্তিযুদ্ধকে অপ্রাসঙ্গিক করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ কাফি রতনও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি রচিত হয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তা-ই প্রতিফলিত হয়েছে ১৯৭১-এর ১০ এপ্রিল গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে। সংবিধানের প্রায়োগিক বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বহু বিষয়ে সংস্কার আনায় ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি এর চার মূলনীতি প্রশ্নে আপস করার কোনো সুযোগ নেই।’
প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে সিপিবি সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে মানে এমন দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে নিয়ে একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক দল ছাড়াও থাকবে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, ছাত্র, শ্রমিক, খেতমজুর ও কৃষক সংগঠন, দলিত সম্প্রদায়, পাহাড়-সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইত্যাদি। স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নির্দলীয় ব্যক্তিদেরও প্রার্থী হিসেবে আমরা সমর্থন দেব।’
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অনুপ্রাণিত গণতন্ত্রমনা এই জোট গঠনের লক্ষ্যে বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলোর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ আয়োজনের কথা জানিয়েছেন বাম নেতারা। এ ছাড়াও আগামী ৩১ অক্টোবর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনভেনশন, ২৮ নভেম্বর গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের কনভেনশন, ৫ ডিসেম্বর নারীসমাজের কনভেনশন এবং ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের
২২ মার্চ ২০২৫
জুলাই আন্দোলনের পর আমলারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ে চলমান বিসিএসগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি
৮ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতে ইসলামী প্রভাবিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বিএনপির আহ্বানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। আজ রোববার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই দাবিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেন।
১০ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী জোট করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে, যা পূর্বে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। এই সংশোধনীর বিষয়ে এনডিএমও তীব্র আপত্তি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাত্র দেড় মাস আগে এ রকম একটি..
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই আন্দোলনের পর আমলারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ে চলমান বিসিএসগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সব জায়গায় গুন্ডামি চালাচ্ছে। জুলাই আন্দোলনের পর সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে আমলারা, কিন্তু চাকরি প্রার্থীদের নিয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। পিএসসি চায় আর্থিক ও কার্যকর স্বায়ত্তশাসন, কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসির মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। চাকরি প্রার্থীরা এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নোটবুকের বাইরে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আমলাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ভাগ-বাঁটোয়ারা ও পোস্টিং-প্রমোশন নিয়েই ব্যস্ত। ৫ আগস্টের পর কেউ সবচেয়ে বেশি বেনিফিট পেয়ে থাকলে, তা হলো আমলারা।’
আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সমালোচনা করে হাসনাত বলেন, ‘সচিবালয়ে এখনো মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা চলছে। ২০১ নম্বর রুম থেকে ২০২ নম্বর রুমে একটা চিঠি পাঠাতে গেলেও সেটা প্রথমে জিপিওতে যায়, পরে আবার ফিরে আসে। অথচ তারা একসঙ্গে বসে চা খায়, ব্যবসাও করে, কিন্তু অফিশিয়াল কাজের ক্ষেত্রে এই সনাতনী প্রক্রিয়া বজায় রাখে।’
সচিবালয়ের কর্মকর্তারা প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে জানিয়ে হাসনাত বলেন, ‘একজন সচিব এখনো বাটন ফোন ব্যবহার করেন, এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এই যুগে এসে বাটন ফোন ব্যবহার করাকে অযোগ্যতা হিসেবেই দেখা উচিত।’
হাসনাত বলেন, ‘আমাদের প্রশাসনের পুরো চেহারা বদলাতে হবে। মাঝে মাঝে মনে হয়, মাইলস্টোনে যে বিমানটা পড়েছিল, সেটা যদি সচিবালয়ে পড়ত, তাহলে ভালো হতো।’
রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের নোটবুকেও আমরা নেই। তাঁরা শুধু নির্বাচন, আসন ভাগাভাগি আর মন্ত্রণালয় ভাগাভাগি নিয়েই ব্যস্ত। চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে কেউ ভাবেন না। কোনো আন্দোলন হলে তখনই তাঁরা মাঠে নামেন, যাতে তাঁদের পোর্টফোলিও ভারী হয়।’
এদিন হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে এনসিপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পিএসসির কাছে ১৫ দফা প্রস্তাবনা জমা দেয়। এ সময় হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন ও যুগ্ম সদস্যসচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া।

জুলাই আন্দোলনের পর আমলারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ে চলমান বিসিএসগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সব জায়গায় গুন্ডামি চালাচ্ছে। জুলাই আন্দোলনের পর সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে আমলারা, কিন্তু চাকরি প্রার্থীদের নিয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। পিএসসি চায় আর্থিক ও কার্যকর স্বায়ত্তশাসন, কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসির মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। চাকরি প্রার্থীরা এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নোটবুকের বাইরে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আমলাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ভাগ-বাঁটোয়ারা ও পোস্টিং-প্রমোশন নিয়েই ব্যস্ত। ৫ আগস্টের পর কেউ সবচেয়ে বেশি বেনিফিট পেয়ে থাকলে, তা হলো আমলারা।’
আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সমালোচনা করে হাসনাত বলেন, ‘সচিবালয়ে এখনো মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা চলছে। ২০১ নম্বর রুম থেকে ২০২ নম্বর রুমে একটা চিঠি পাঠাতে গেলেও সেটা প্রথমে জিপিওতে যায়, পরে আবার ফিরে আসে। অথচ তারা একসঙ্গে বসে চা খায়, ব্যবসাও করে, কিন্তু অফিশিয়াল কাজের ক্ষেত্রে এই সনাতনী প্রক্রিয়া বজায় রাখে।’
সচিবালয়ের কর্মকর্তারা প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে জানিয়ে হাসনাত বলেন, ‘একজন সচিব এখনো বাটন ফোন ব্যবহার করেন, এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এই যুগে এসে বাটন ফোন ব্যবহার করাকে অযোগ্যতা হিসেবেই দেখা উচিত।’
হাসনাত বলেন, ‘আমাদের প্রশাসনের পুরো চেহারা বদলাতে হবে। মাঝে মাঝে মনে হয়, মাইলস্টোনে যে বিমানটা পড়েছিল, সেটা যদি সচিবালয়ে পড়ত, তাহলে ভালো হতো।’
রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের নোটবুকেও আমরা নেই। তাঁরা শুধু নির্বাচন, আসন ভাগাভাগি আর মন্ত্রণালয় ভাগাভাগি নিয়েই ব্যস্ত। চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে কেউ ভাবেন না। কোনো আন্দোলন হলে তখনই তাঁরা মাঠে নামেন, যাতে তাঁদের পোর্টফোলিও ভারী হয়।’
এদিন হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে এনসিপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পিএসসির কাছে ১৫ দফা প্রস্তাবনা জমা দেয়। এ সময় হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন ও যুগ্ম সদস্যসচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া।

নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের
২২ মার্চ ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতে ইসলামী প্রভাবিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বিএনপির আহ্বানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। আজ রোববার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই দাবিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেন।
১০ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী জোট করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে, যা পূর্বে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। এই সংশোধনীর বিষয়ে এনডিএমও তীব্র আপত্তি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাত্র দেড় মাস আগে এ রকম একটি..
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতে ইসলামী প্রভাবিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বিএনপির আহ্বানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। আজ রোববার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই দাবিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘গত ২৩ অক্টোবর দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও ইবনে সিনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন সেবামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন—তাতে আমি উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা মনে করি, এ দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অযৌক্তিক ও সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এর পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানগুলো অরাজনৈতিক ও সেবামূলক। তারা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সেবাগ্রহণ করে সন্তুষ্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন—তাঁদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘দেশবাসী মনে করে, যদি রাজনৈতিক দলগুলো এভাবে সেবামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন দাবি উত্থাপন করতে থাকে, তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েই অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। নির্বাচন কমিশন যদি এ ধরনের ঠুনকো, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর দাবি গ্রহণ করে, তবে ভবিষ্যতে আরও অনেক অনর্থক দাবি উঠবে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’
বিএনপির এই ‘বিভ্রান্তিকর, অমূলক, ঠুনকো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি আমলে না নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতে ইসলামী প্রভাবিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বিএনপির আহ্বানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। আজ রোববার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই দাবিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘গত ২৩ অক্টোবর দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও ইবনে সিনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন সেবামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন—তাতে আমি উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা মনে করি, এ দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অযৌক্তিক ও সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এর পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানগুলো অরাজনৈতিক ও সেবামূলক। তারা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ধর্মবর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সেবাগ্রহণ করে সন্তুষ্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন—তাঁদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘দেশবাসী মনে করে, যদি রাজনৈতিক দলগুলো এভাবে সেবামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন দাবি উত্থাপন করতে থাকে, তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েই অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। নির্বাচন কমিশন যদি এ ধরনের ঠুনকো, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর দাবি গ্রহণ করে, তবে ভবিষ্যতে আরও অনেক অনর্থক দাবি উঠবে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’
বিএনপির এই ‘বিভ্রান্তিকর, অমূলক, ঠুনকো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি আমলে না নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের
২২ মার্চ ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে
জুলাই আন্দোলনের পর আমলারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ে চলমান বিসিএসগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি
৮ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী জোট করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে, যা পূর্বে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। এই সংশোধনীর বিষয়ে এনডিএমও তীব্র আপত্তি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাত্র দেড় মাস আগে এ রকম একটি..
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে রাজনৈতিক দলগুলোর জোটের যেকোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ চায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)। আজ রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের বরাবর দলটির চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। এনডিএমের দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি সিইসির কার্যালয়ে এই চিঠি জমা দেন।
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী জোট করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে, যা পূর্বে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। এই সংশোধনীর বিষয়ে এনডিএম তীব্র আপত্তি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাত্র দেড় মাস আগে এ রকম একটি বিধান চালুকে আমরা দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করছি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নির্বাচনী জোট খুবই স্বতঃসিদ্ধ একটি প্রক্রিয়া এবং সাধারণত জোটের নেতৃত্বদানকারী দলের মার্কায় নির্বাচন করার মাধ্যমেই সেই জোটের শক্তিমত্তা প্রকাশ পায়। কোনো আইনের মাধ্যমে এই গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার এখতিয়ার কারও নেই। একটি রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে পারলে কেন জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার জন্য নিজস্ব মার্কায় নির্বাচন করতে আইনগতভাবে বাধ্য থাকবে তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নাই।
চিঠিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নেওয়ার সময় এই শর্ত ছিল না যে, নিজস্ব মার্কায় নির্বাচন করতে বাধ্য থাকবে বরং এটা ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। নির্বাচনের মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে এ ধরনের বিধান চালুর অর্থ হলো পর্যাপ্ত সময় না দিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী কৌশল এবং প্রস্তুতিতে বাধা সৃষ্টি করা। আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করলে রাজনৈতিক দলগুলো যাতে জোটের যেকোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করার স্বাধীনতা লাভ করে—এ-সংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর পূর্বের বিধান বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।
এর আগে বিএনপির দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে জোটের ভোটে দলগুলো ইচ্ছেমতো প্রতীক ব্যবহার করার একই দাবি জানায়।

জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে রাজনৈতিক দলগুলোর জোটের যেকোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ চায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)। আজ রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের বরাবর দলটির চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। এনডিএমের দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি সিইসির কার্যালয়ে এই চিঠি জমা দেন।
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী জোট করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে, যা পূর্বে জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। এই সংশোধনীর বিষয়ে এনডিএম তীব্র আপত্তি এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাত্র দেড় মাস আগে এ রকম একটি বিধান চালুকে আমরা দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করছি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নির্বাচনী জোট খুবই স্বতঃসিদ্ধ একটি প্রক্রিয়া এবং সাধারণত জোটের নেতৃত্বদানকারী দলের মার্কায় নির্বাচন করার মাধ্যমেই সেই জোটের শক্তিমত্তা প্রকাশ পায়। কোনো আইনের মাধ্যমে এই গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার এখতিয়ার কারও নেই। একটি রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে পারলে কেন জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার জন্য নিজস্ব মার্কায় নির্বাচন করতে আইনগতভাবে বাধ্য থাকবে তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নাই।
চিঠিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নেওয়ার সময় এই শর্ত ছিল না যে, নিজস্ব মার্কায় নির্বাচন করতে বাধ্য থাকবে বরং এটা ইচ্ছাধীন বিষয় ছিল। নির্বাচনের মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে এ ধরনের বিধান চালুর অর্থ হলো পর্যাপ্ত সময় না দিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী কৌশল এবং প্রস্তুতিতে বাধা সৃষ্টি করা। আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করলে রাজনৈতিক দলগুলো যাতে জোটের যেকোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করার স্বাধীনতা লাভ করে—এ-সংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর পূর্বের বিধান বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।
এর আগে বিএনপির দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে জোটের ভোটে দলগুলো ইচ্ছেমতো প্রতীক ব্যবহার করার একই দাবি জানায়।

নাহিদ ইসলামের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে। পরে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে উঠে আসেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পড়েন। অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্ব পালনের পর তিনি দলীয় রাজনীতিতে ফিরেছেন। প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প খুঁজছেন এমন নাগরিকদের
২২ মার্চ ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বামপন্থী দলগুলো। এ লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই করে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে দলগুলোর মধ্যে। নেতারা বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভিত্তি ধরে নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে
জুলাই আন্দোলনের পর আমলারা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ে চলমান বিসিএসগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি
৮ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংকসহ জামায়াতে ইসলামী প্রভাবিত চারটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বিএনপির আহ্বানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দলটি। আজ রোববার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই দাবিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেন।
১০ ঘণ্টা আগে